আকাশে সাতটি তারা
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো।
প্রশ্নঃ কিশোরীর চালধোয়া হাত কীরকম ছিল?
(a) শীতল
(b) শীতল অতিউয়
© কবোয়
(d) অতিশীতল।
উত্তরঃ (a) শীতল
প্রশ্নঃ কেশবতী কন্যা কোথায় এসেছে?
(a) প্রান্তরে
(b) মাঠে
© আকাশে
(d) বাতাসে।
উত্তরঃ © আকাশে
প্রশ্নঃ কার চোখের মুখের 'পরে নীল সন্ধ্যার চুল ভাসে?
(a) বনলতা সেনের
(b) কেশবতীর
© লক্ষ্মীপ্রিয়ার
(d) কবির।
উত্তরঃ (d) কবির
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতাটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে?
(a) রূপসী বাংলা
(b) সাতটি তারার তিমির
© মহাপৃথিবী
(d) ঝরা পালক।
উত্তরঃ (a) রূপসী বাংলা
প্রশ্নঃ কবিতায় কীসের ঘ্রাণের কথা বলা হয়েছে?
(a) গোলাপ
(b) ধান
© কলমি
(d) হিন্চে
উত্তরঃ © কলমি
প্রশ্নঃ কী রঙের বটফলের কথা বলা হয়েছে?
(a) লাল
(b) গোলাপি
© সবুজ
(d) নীল।
উত্তরঃ (a) লাল
প্রশ্নঃ কবিতায় নীরবতার বিশেষণ কী?
(a) বিধ্বস্ত
(b) ক্লান্ত
© নিঃশব্দ
(d) নির্জন।
উত্তরঃ (b) ক্লান্ত
প্রশ্নঃ কী রঙের সন্ধ্যা এসেছে?
(a) বেগুনি
(b) নীল
© কালো
(d) ধূসর।
উত্তরঃ (b) নীল
প্রশ্নঃ হাঁসের পালক কীরকম হয়?
(a) তুলতুলে
(b) নরম
© খসখসে
(d) মোলায়েম।
উত্তরঃ মোলায়েম
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি কীসের ঘ্রাণ অনুভব করেন?
উত্তরঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ কলমি শাক, চাঁদা ও সরপুঁটি মাছের গন্ধ অনুভব করেন।
প্রশ্নঃ আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি কীসের গন্ধ পান?
উত্তরঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ নরম ধানের গন্ধ ঘ্রাণেন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করেন।
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি কখন ঘাসে বসে থাকেন?
উত্তরঃ আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠার সময় কবি জীবনানন্দ দাশ ঘাসে এসে বসেন।
প্রশ্নঃ বাংলার বুকে নামা সন্ধ্যাকে কবি কী রঙের বলে বর্ণনা করেছেন?
উত্তরঃ বাংলার বুকে নামা সন্ধ্যাকে কবি নীল রঙের বলে বর্ণনা করেছেন।
প্রশ্নঃ বাংলার বুকে নেমে আসা সন্ধ্যাকে কবি কোন বিশেষণে ভূষিত করেছেন?
উত্তরঃ বাংলার বুকে নামা সন্ধ্যাকে কবি শান্ত, অনুগত, নীল ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করেছেন।
ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ "গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে"- কী ডুবে গেছে? তার বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশের 'আকাশে সাতটি তারা' নামক কবিতায় গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে। অর্থাৎ সাগরজলে মেঘ বিলীন হয়েছে বলে কবি কল্পনা করেছেন।
এই মেঘের রং কামরাঙা ফলের মতো লাল। তাই কবির মনে হয়েছে, মৃত মনিয়া পাখি জলে রক্ত ছড়িয়ে ডুবে গেল।
প্রশ্নঃ "এরই মাঝে বাংলার প্রাণ"- কোন সবের মাঝে বাংলার প্রাণকে অনুভব করেন কবি?
উত্তরঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবির কাছে রূপসি বাংলা যেন প্রাণময়ী মূর্তি। নরম ধানের মিষ্টি গন্ধে, কলমির ঘ্রাণে, জলে ভেজা হাঁসের পালকে, শরবনে, পুকুরের জলে, চাঁদা-সরপুঁটির মৃদু আঁশটে গন্ধে, কিশোরীর চালধোয়া ভিজে শীতল হাতে, কিংবা পাকা বটফলের ব্যথিত গান্ধের ক্লান্ত নীরবতায় তিনি বাংলার চিরন্তন প্রাণকে খুঁজে পান।
প্রশ্নঃ "আমি এই ঘাসে বসে থাকি।" কে, কখন, কোথায় বসে থাকে?
উত্তরঃ 'আকাশে সাতটি তারা' নামক কবিতায় জীবনানন্দ দাশ ঘাসের ওপর বসে থাকেন।। 'যখন আকাশে সাতটি তারা ফুটে ওঠে তখন কবি ঘাসের উপর বসে সান্ধ্য প্রকৃতির রূপ-রস অনুভব করেন।
প্রশ্নঃ "আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি পাই টের।” আমি কে? তিনি কী টের পান?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে 'আমি' অর্থে কবি জীবনানন্দ দাশ।
দিনের শেষে যখন বাংলার বুকে সন্ধ্যা নেমে আসে, তখন কবি টের পান আকাশে এক কেশবতী কন্যার আগমনবার্তা। সেই নারী যেন চুল দিয়ে জাম-কাঁঠাল-হিজলের বনে চুম্বনরত। তিনি নরম ধানের গন্ধ বা কলমির ঘ্রাণে, পুকুরের জলে বা হাঁসের পালকে অনুভব করেন পল্লিবাংলার আসল রূপ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় প্রকৃতি ও মানুষ কীভাবে মিলেমিশে একাকার হয়ে। কবির অনুভূতিতে ধরা পড়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো। অথবা, 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় কবি বাংলার সন্ধ্যার যে চিত্র এঁকেছেন তা উল্লেখ করো।
অথবা, 'বাংলার প্রাণ' কবি কোথায়, কীভাবে অনুভব করেছেন তা 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তরঃ 'রূপসী বাংলা' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় প্রকৃতিপ্রেমিক কবি সান্ধ্য পরিবেশের অপরূপ সৌন্দর্য এবং বিচিত্র গন্ধের মাঝে অনুভব করেছেন রূপসি বাংলার প্রাণের স্পন্দন। আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠলে কবি ঘাসের উপর বসেন বাংলার নিসর্গ প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের অমোঘ টানে। সূর্যাস্তের মুহূর্তে ভাসমান মেঘ কামরাঙা লাল বর্ণ পায়, কবি তার সঙ্গে মিল খুঁজে পান মৃত মনিয়া পাখির। কবি প্রত্যক্ষ করেন শান্ত-অনুগতভাবে বাংলাদেশের বুকে নেমে আসে নীল সন্ধ্যা। তার মায়াবি আলোয় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে বাংলার নিসর্গ প্রকৃতি। কবির কাছে এই প্রকৃতি এক প্রাণময়ী মূর্তি। কবির মনে হয় এই মায়াময় সন্ধ্যা যেন কোনো এলোকেশী কন্যা; যার চুল কবির চোখের উপর, মুখের উপর খেলা করে। আসলে পল্লিবাংলার সান্ধ্য রূপে কবি মোহাবিষ্ট।
কবি জীবনানন্দের মনে হয়, এই বিরল সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত বাকি পৃথিবী। কবি পৃথিবীর আর কোথাও দেখেননি যে কেশবতী কন্যার কেশরাশি অবিরত চুম্বন করে যাচ্ছে হিজল-কাঁঠাল কিংবা জামের পাতা। আসলে বাংলার নীল সন্ধ্যার মায়াবী পরশ ঝরে পড়ছে বঙ্গঙ্গপ্রকৃতির সব স্থানে, কবির মনের সব কোণে। কবি নানা অনুষঙ্গে অনুভব করেছেন সন্ধ্যার স্নিগ্ধ ঘ্রাণ। কখনো নরম ধান, কলমির গন্ধ; আবার কখনো হাঁসের পালক, শরবন, পুকুরের জল, চাঁদা-সরপুঁটিদের। মৃদু সুবাসে বাংলার সন্ধ্যা আমোদিত করে দিয়েছে কবিকে। এসবের মাঝে কিশোরের পায়ে দলা মুথাঘাস কিংবা লাল বটফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতায় কবি স্পর্শ পেয়েছেন বাংলার প্রাণের। বঙ্গপ্রকৃতির নানা তুচ্ছাতিতুচ্ছ অনুষঙ্গে প্রাণময়ী বাংলাকে অনুভব করেছেন কবি।
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তরঃ সাহিত্যে নামকরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবিতার বিষয়বস্তু বা ভাব অনুযায়ী নামকরণ হয়।
জীবনানন্দ দাশের 'আকাশে সাতটি তারা' কবিতায় গ্রামবাংলার গোধূলিলগ্নে সুন্দর বর্ণনা রয়েছে। সূর্য অস্তাচলে গেলেও তার আভায় লাল হয়ে উঠেছে মেঘগুলি। একটু পরে সাগরজলে বিলীন হয়ে যাবে এরাও। এরপরই আকাশে উদিত হবে সপ্তর্ষিমণ্ডল। কবি এসময় ঘাসের উপর বসে উপলব্ধি করছেন সন্ধিক্ষণটি। কবির কল্পনায় এলোকেশী কন্যা দেখা দেয় আকাশে, মাটিতে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে তার চুল। কবির চোখে, মুখেও ছড়িয়ে পড়ে সেই চুল। চারিদিকে তখন ঘন অন্ধকার। সেই এলোকেশী রূপসির চুল হিজল-কাঁঠাল-জামের পাতা চুম্বন করে নামিয়ে আনছে রাত্রির অন্ধকার। এরপর কবি ঘ্রাণেন্দ্রিয় দিয়েও সন্ধ্যাকে অনুভব করেন। কলমি শাক, ধান গাছ, হাঁসের ভেজা পালক, শর ইত্যাদির গন্ধের সঙ্গে মাছের আঁশটে গন্ধ, কিশোরীর চালধোয়া হাতের গন্ধ, কিশোরের পায়ে দলা ঘাসের গন্ধ-সব মিলেমিশে তৈরি হয় সন্ধ্যার নিজস্ব মধুর আবেশ। এভাবে বর্ণ-গন্ধ-স্পর্শে কবি বাংলার সন্ধ্যা অনুভব করেন। আসলে আকাশে সাতটি তারা ফুটলেই কবির এমন অনুভূতি জাগে। তাই কবিতার এই নামটি বিষয়বস্তুর অনুগামী, ইঙ্গিতবাহী। ফলে 'আকাশে সাতটি তারা' নামটি নিঃসন্দেহে সার্থক।
প্রশ্নঃ 'আকাশে সাতটি তারা' নামক কবিতা অবলম্বনে কবি জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতিপ্রেমের পরিচয় দাও।
উত্তরঃ রবীন্দ্র-পরবর্তী কাব্যধারায় কবি জীবনানন্দ দাশের ইতিহাস-প্রেম-মৃত্যু ইত্যাদি চেতনার সঙ্গে প্রকৃতিপ্রেমও প্রকটরূপে উদ্ভাসিত। তাঁর প্রায় সব কবিতায় প্রকৃতি এসেছে অনিবার্যভাবেই কোথাও ইতিহাস বা কোথাও প্রেমের আবশ্যিক অঙ্গ হিসেবে। তাঁর 'রূপসী বাংলা' কবিতাতেও প্রকৃতিপ্রেম অসাধারণ ভাষাবিভঙ্গে বর্ণিত হয়েছে।
প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের কথা এখানে এসেছে সৌন্দর্য বর্ণনার সূত্র ধরে। যেমন-আকাশ, পুকুর, ঘাস, কামরাঙা ফল, মনিয়া পাখি, হিজল, কাঁঠাল, জাম, হাঁসের পালক, চাঁদা-সরপুঁটি মাছের ঘ্রাণ ইত্যাদি। দিনের শেষে সন্ধ্যা নেমেছে বাংলার বুকে। আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠলে কবি সন্ধ্যাকে কেশবতী এক কন্যার প্রতীকে তুলে ধরেন। প্রকৃতি তাঁর কাছে এক জীবন্ত মানবীর রূপে প্রকাশিত হয়। এই প্রকৃতিকন্যা সন্ধ্যায় কবির চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়া এবং জাম-কাঁঠাল গাছে অজস্র চুল দিয়ে চুম্বন করার প্রতীকী কল্পনার মাধ্যমে কবি জীবনানন্দের প্রকৃতির প্রতি অকৃত্রিম অনুরাগের পরিচয় মেলে। প্রকৃতির অনুষঙ্গ বর্ণনা করেও কবি ক্ষান্ত হননি। তিনি জড় প্রকৃতির ওপর জীবন্ত সত্ত্বা আরোপ করে প্রকৃতিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। কিশোরীর চালধোয়া হাত বা কিশোরের পায়ে দলা মুথাঘাসও কবির দৃষ্টি এড়ায়নি। সহজ সরল গ্রাম্য প্রকৃতির অন্যান্য আঙ্গিকও এত প্রাঞ্জলভাবে উদ্ভাসিত যে পাঠকগণ মোহিত না হয়ে পারে না।
উত্তর পেতে সদস্যপদ প্রয়োজন
Paid Answer Link (Membership User)
Editing By- Lipi Medhi