চতুর্থ অধ্যায় 


ভারতীয়  সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত বিধিসমূহ


--------------------------------------------------------------------------------------------------------- [MCQ]


সঠিক উত্তর নির্বাচন করো


1. ভারতের স্বাধীনতা আইন কবে পাস হয়?


(i) 1947 খ্রিস্টাব্দের 15 মে


(ii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 25 মে


(iii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 18 জুন


(iv) 1947 খ্রিস্টাব্দের 18 জুলাই


উত্তর: (iv) 1947 খ্রিস্টাব্দের 18 জুলাই


2. ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের কত তারিখে ভারত এবং পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে?


(i)  7 আগস্ট


(ii) 9 আগস্ট


(iii) 11 আগস্ট


উত্তর: (iv) 14 আগস্ট


3. ভারতের সংবিধান রচনার জন্য গঠিত গণপরিষদের সভাপতি কে ছিলেন?


(i)  ড. বি আর আম্বেদকর


(ii) মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি


(iii) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ


(iv) জওহরলাল নেহরু


উত্তর: (iii) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ


4. গণপরিষদের দ্বারা খসড়া সংবিধানটি কবে গৃহীত হয়?


(i)  1947 খ্রিস্টাব্দের 15 আগস্ট


(ii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 12 জুলাই


(iii) 1949 খ্রিস্টাব্দের 3 মে


(iv) 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর


উত্তর: (iv) 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর


5. ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত হয়-


(i)  1947 খ্রিস্টাব্দের 18 জুন


(ii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 15 আগস্ট


(iii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর


(iv) 1947 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি


উত্তর: (iv) 1947 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি


6. ভারতবর্ষ কবে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র হিসেবে পরিচিত হয়?


(i) 1947 খ্রিস্টাব্দে


(ii) 1948 খ্রিস্টাব্দে


(iii) 1950 খ্রিস্টাব্দে


(iv) 1976 খ্রিস্টাব্দে


উত্তর: (iv) 1976 খ্রিস্টাব্দে


7. সংবিধানের কত নং ধারায় ধর্মের জন্য 'কর' নেওয়া যাবে না, এ কথা বলা হয়েছে?


(i) 15 নং ধারায়


(ii) 16 নং ধারায়


(iii) 17 নং ধারায়


(iv) 27 নং ধারায়


উত্তর:  (iv) 27 নং ধারায়


৪. সরকারি অনুদানে পরিচালিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় নির্দেশনা দান করা যাবে না, এ বিষয়ে সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?


(i) 15 নং ধারায়


(ii) 16 নং ধারায়


(iii) 27 নং ধারায়


(iv) 28 নং ধারায়


উত্তর:  (iv) 28 নং ধারায়


9. গণপরিষদ ভারতীয় সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের ভার যে কমিটিকে দিয়েছিল, তার সভাপতি ছিলেন-


(i) ড. বি আর আম্বেদকর


(ii) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ


(iii) মহম্মদ আলি জিন্না


(iv) জওহরলাল নেহরু


উত্তর:  (i) ড. বি আর আম্বেদকর


10. খসড়া সংবিধানটি কবে পেশ হয়?


(i) 1947 খ্রিস্টাব্দের 14 আগস্ট


(ii) 1947 খ্রিস্টাব্দের 15 আগস্ট


(iii) 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর


(iv) 1950 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি


উত্তর: (iii) 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর


11. ভারতের সার্বভৌম গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্ররূপে স্বীকৃত হয়-


(i) 1947 সালের 14 আগস্ট থেকে


(ii) 1947 সালের 15 আগস্ট থেকে


(iii) 1949 সালের 26 নভেম্বর থেকে


(iv) 1950 সালের 26 জানুয়ারি থেকে


উত্তর:  (iv) 1950 সালের 26 জানুয়ারি থেকে


12. ভারতীয় সংবিধানের যুগ্ম তালিকায়-


(i) 32টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে


(ii) 42টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে


(iii) 52টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে


(iv) 62টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে


উত্তর: (iii) 52টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে


13. 1976 খ্রিস্টাব্দে 42 তম সংশোধনের সময়ে যে দুটি শব্দ ভারতীয় সংবিধানে সংযুক্ত করা হয়, সে দুটি কী?


(i) সার্বভৌম এবং ধর্মনিরপেক্ষ


(ii) সার্বভৌম এবং সমাজতান্ত্রিক


(iii) গণতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক


(iv) সমাজতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ


উত্তর:  (iv) সমাজতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ


14. বর্তমানে ভারতীয় সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকায়-


(i) 26টি বিষয় আছে


(ii) 62টি বিষয় আছে


(iii) 79টি বিষয় আছে


(iv) 97টি বিষয় আছে

 

উত্তর:  (iv) 97টি বিষয় আছে


15. সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার দশ বছরের মধ্যে 14 বছর বয়সি সব ছেলেমেয়ের শিক্ষা অবৈতনিক করতে হবে?


(i) 22 নং ধারায়


(ii) 45 নং ধারায়


(iii) 42 নং ধারায়


(iv) 62 নং ধারায়


উত্তর:  (iii) 42 নং ধারায়


16. সংবিধানের কত নং ধারায় প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে মাতৃভাষায় নির্দেশনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে?


(i) 26 নং ধারায়


(ii) 28 নং ধারায়


(iii) 27 নং ধারায়


(iv) 350(A) নং ধারায়


উত্তর: (iv) 350(A) নং ধারায়


17. ভারতের সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষা হল-


(i) রাজ্য তালিকাভুক্ত


(ii) কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত


(iii) যুগ্ম তালিকাভুক্ত


(iv) কোনো তালিকাভুক্ত নয়


উত্তর: (iii) যুগ্ম তালিকাভুক্ত


18. ভারতের সংবিধান রচনার জন্য একটি গঠিত হয়।


(i) শিক্ষা পরিষদ


(ii) পুস্তক পরিষদ


(iii) রাজ্য পরিষদ


(iv) গণপরিষদ


উত্তর: (iv) গণপরিষদ


19. খ্রিস্টাব্দে 42 তম সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানে 'সমাজতান্ত্রিক' এবং 'ধর্মনিরপেক্ষ' শব্দ দুটি সংযুক্ত করা হয়।


(i) 1947


(ii) 1948


(iii) 1950


(iv) 1976


উত্তর:  (iv) 1976


20. ভারতীয় সংবিধান হল পৃথিবীর ------- সংবিধান।


(i) সরলতম


(ii) সহজতম


(iii) জটিলতম 


(iv)  প্রাচীনতম


উত্তর: (iii) জটিলতম 


21. অধিকারের মাধ্যমেই ------- স্বীকৃত হয়।


(i) প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ


(ii) গণতন্ত্র


(iii) চাহিদা


(iv) রাজতন্ত্র


উত্তর:  (ii) গণতন্ত্র


22. ভারতীয় সংবিধানে--কে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।


(i) বাংলা


(ii) উর্দু


(iii) হিন্দি


(iv) ইংরেজি


উত্তর:  (iii) হিন্দি


23. সংবিধানের ------নং উপধারায় বলা হয়েছে, সরকারি অর্থে সম্পূর্ণভাবে পরিচালিত কোনো শিক্ষালয়ে ধর্মীয় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রাখা হবে না।


(i) 21(1)


(ii) 23(2)


(iii) 28(1)


(iv) 31(2)


উত্তর:  (iii) 28(1)


24. ভারতে প্রথম জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় যাঁর নেতৃত্বে, তিনি হলেন-


(i) ইন্দিরা গান্ধি


(ii) হংস মেহতা


(iii) দুর্গাবাঈ দেশমুখ


(iv) সরোজিনী নাইডু


উত্তর:  (ii) হংস মেহতা


25. সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে, কর দান বাধ্যতামূলক নয়?


(i) 27 নং ধারায়


(ii) 37 নং ধারায়


(iii) 1962 খ্রিস্টাব্দে


(iv) 1968 খ্রিস্টাব্দে


উত্তর: (ii) 37 নং ধারায়

----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

[SORT ANSWER]


অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর:ভিত্তিক প্রশ্নাবলি


 

1. কেন্দ্রীয় তালিকা কী?


উত্তর: যে সমস্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে থাকে, তাকে ইউনিয়ন লিস্ট বা কেন্দ্রীয় তালিকা বা লিস্ট- বলে।


2. রাজ্য তালিকা কী?


উত্তর: যে সমস্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের কাছে থাকে, তাকে স্টেট লিস্ট বা রাজ্য তালিকা বা লিস্ট-II বলে।


3. যুগ্ম তালিকা কী?


উত্তর: যেসব ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ের কাছেই থাকে, তাকে কন্কারেন্ট লিস্ট বা যৌথ তালিকা বা লিস্ট-III বলে।


4. কেন্দ্রীয় তালিকায় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারা রয়েছে?


উত্তর: কেন্দ্রীয় তালিকায় সংবিধানের 62, 63, 64, 65, 66 নং ধারা রয়েছে।


5. সংবিধানের 15(1) নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 15(1) নং ধারায় সাধারণভাবে নারীদের শিক্ষার অধিকার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, ভারতীয় সমাজে শিক্ষার ব্যাপারে নারীদের সমান অধিকার থাকবে।


6. সংবিধানের 28 নং ধারাটি কী বিষয়ের ওপর রচিত?


উত্তর: সংবিধানের 28 নং ধারাটি যে বিষয়ের ওপর রচিত, তা হল-'বিশেষ ধরনের প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পূজা এবং ধর্মীয় শিক্ষাদানের স্বাধীনতা'।


7. সংবিধানের 28(1) নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 28(1) নং ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি অনুদানে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হবে না।


৪. সংবিধানের 28(2) নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 28(2) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো 'এনডাওমেন্ট' বা ট্রাস্ট দ্বারা স্থাপিত বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে।


9. সংবিধানের 28 (3) নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 28(3) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র অনুমোদিত বা সরকারি অর্থসাহায্যে পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ধর্মশিক্ষার ব্যবস্থা করে বা পূজার ব্যবস্থা করে, তাহলে সেখানে পাঠরত কোনো শিক্ষার্থীকে তার অথবা (নাবালকের ক্ষেত্রে) তার অভিভাবকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধ্য করা যাবে না।


10. নাগরিকদের কর্ম, শিক্ষা ও অনুদানের ব্যবস্থার কথা সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?


উত্তর: নাগরিকদের কর্ম, শিক্ষা ও অনুদানের ব্যবস্থার কথা সংবিধানের 41 নং ধারায় বলা হয়েছে।


11. সংবিধানের 41 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 41 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র তার আর্থিক ক্ষমতা ও উন্নয়নের সীমার মধ্যে সব নাগরিকদের জন্য কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা করবে। বৃদ্ধ, অসুস্থ এবং অক্ষম মানুষদের সরকারি সাহায্য দান করা হবে।


12. সংবিধানের 45 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 45 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার দিন থেকে দশ বছরের মধ্যে, 14 বছর বয়স পর্যন্ত সব ছেলেমেয়ের জন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা হবে।


13. সংবিধানের 337 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 337 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে 1948 সালের মার্চ মাসে যে সাহায্য দেওয়া হত, তা দেওয়া হবে। অতঃপর প্রতি তিন বছর বাদে এই সাহায্য 10 শতাংশ হারে হ্রাস পেতে পারে। যেসব ইঙ্গ-ভারতীয় বিদ্যালয়ে অন্য সম্প্রদায়ের 40 শতাংশ ছাত্রছাত্রী ভরতি করা হবে না, সেখানে সাহায্য দেওয়া হবে না।


14. সংবিধানের 343 নং ধারায় কী বলা হয়েছে? 


উত্তর: সংবিধানের 343 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, ভারতের সরকারি ভাষা হবে দেবনাগরী হরফে হিন্দি ভাষা। তবে সংবিধান চালু হওয়ার পর থেকে 15 বছর পর্যন্ত ইংরেজি ভাষা সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হবে।


15. সংবিধানের 345 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 345 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক রাজ্য আইনের মাধ্যমে এক বা একাধিক ভাষাকে বা হিন্দিকে সরকারি ভাষারূপে ব্যবহার করতে পারবে। যতদিন না আইনের মাধ্যমে রাজ্যের সরকারি ভাষা নির্ধারিত হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত আগে যে ইংরেজি ভাষা চালু ছিল, তা চালু থাকবে।


16. সংবিধানের 346 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 346 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের বা রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের যোগাযোগের মাধ্যম হবে সরকারি ভাষা। তবে দুটি রাজ্য যদি মনে করে তাদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হবে হিন্দি তাহলে তারা তা করতে পারবে।


17. সংবিধানের 347 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 347 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্যের যথেষ্টসংখ্যক মানুষ যদি বিশেষ কোনো ভাষাকে সরকারি কাজে ব্যবহার করতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানায়, রাষ্ট্রপতি সেই ভাষাকে রাজ্যের সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশ দিতে পারেন।


18. সংবিধানের 351 নং ধারায় কী বলা হয়েছে?


উত্তর: সংবিধানের 351 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও প্রসার ভারত সরকারের দায়িত্ব। এই ভাষার মাধ্যমে ভারতের মিশ্র সংস্কৃতির উপাদানসমূহের সমৃদ্ধিকে গ্রহণ ও প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনমতো অন্য ভাষার শব্দসম্পদ চয়ন করা যেতে পারে।


19. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 62 নং ধারার মূল বিষয় উল্লেখ করো। 


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 62 নং ধারার মূল বিষয় হল, জাতীয় গ্রন্থাগার, ভারতীয় জাদুঘর ইত্যাদি সংস্থাগুলি কেন্দ্রের অধীনে থাকবে। 


20. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 63 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 63 নং ধারার মূল বিষয় হল, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের পরিচালনাধীন থাকবে।


21. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 64 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 64 নং ধারার মূল বিষয় হল, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে কেন্দ্রের ওপর।


22. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 65 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 65 নং ধারার মূল বিষয় হল, পেশাগত, বৃত্তিগত, কারিগরি পঠনপাঠন ও গবেষণার উন্নতি সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে কেন্দ্রের ওপর।


23. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 66 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 66 নং ধারার মূল বিষয় হল, উচ্চশিক্ষ অথবা গবেষণাধর্মী বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলির মানোন্নয়ন এবং যোগাযোগের দায়িত্ব কেন্দ্রের।


24. সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 67 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকার 67 নং ধারার মূল বিষয় হল, পার্লামেন্ট কর্তৃক স্বীকৃত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন- স্মৃতিসৌধ, প্রাচীন সৌধ ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রের।


25. সংবিধানের রাজ্য তালিকার 11 নং ধারার মূল বিষয় কী?


উত্তর: সংবিধানের রাজ্য তালিকার 11 নং ধারার মূল বিষয় হল, কেন্দ্র তালিকাভুক্ত 63, 64, 65, 66 এবং যৌথ তালিকাভুক্ত 25 নং ধারা ব্যতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব শিক্ষার বিষয় রাজ্য তালিকাভুক্ত হবে।

-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

[LONG ANSWER]


বিশ্লেষণধর্মী উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নাবলি


1. ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় কী বলা হয়েছে? সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের অভিমত কী?


উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা


"We, the people of India, having solemnly resolved to constitute India into a sovereign socialist secular democratic republic and to secure to all its citizens: Justice, social, economic and political; Liberty of thought, expression, belief, faith and worship; Equality of status and of opportunity and to promote among them all; Fraternity assuring the dignity of the individual and the unity and integrity of the Nation; In our Constituent Assembly this twenty-sixth day of November, 1949, do hereby adopt, enact and give to ourselves this Constitution."


অর্থাৎ, "আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্ররূপে গড়ে তুলতে এবং তার সব নাগরিকই যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম ও উপাসনার স্বাধীনতা পায় এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে, আমাদের গণপরিষদে আজ, 1949 সালের 26 নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ, বিধিবদ্ধ এবং নিজেদের অর্পণ করছি।"


সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারার মধ্যে কোঠারি কমিশন সংবিধানের নির্দেশক নীতির 45 নং এবং 46 নং ধারা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অভিমত প্রকাশ করে।


সংবিধানের নির্দেশক নীতির 45 নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছিল যে, 1950 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে আগামী দশ বছরের মধ্যে 6 থেকে 14 বছর পর্যন্ত সব ছেলেমেয়ের শিক্ষাকে সর্বজনীন, অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই নির্দেশ অনুসারে 1960 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই লক্ষ্যে পৌঁছোনোর কথা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার বাস্তবে তা করে উঠতে পারেনি। কোঠারি কমিশন এর কারণ অনুসন্ধান করেছে এবং জানিয়েছে যে জনসংখ্যার অত্যধিক চাপ, মানুষের আর্থিক দুরবস্থা, বাবা-মায়ের নিরক্ষরতা প্রভৃতি কারণের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছোনো যায়নি।


প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করার উদ্দেশ্যে কমিশন কতকগুলি সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশগুলি হল-


[1] প্রত্যেক রাজ্য সরকারকে প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে,


[2] প্রয়োজনমতো আর্থিক সাহায্য দিতে হবে,


[3] অপচয় এবং অনুন্নয়ন বন্ধ করতে হবে,


[4] প্রত্যেক শিশুর বসবাস অঞ্চলের মধ্যে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে,


[5] অভিভাবকেরা যাতে প্রথম শ্রেণিতে প্রতিটি শিশুকে ভরতি করেন আইনের মাধ্যমে তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

সংবিধানের নির্দেশক নীতির 46 নং ধারায় অনগ্রসর সম্প্রদায়, বিশেষত তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার সুপারিশ করা হয়। কোঠারি কমিশন লক্ষ করেছিল, তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার সেভাবে ঘটেনি। এই বিষয়ে ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশগুলি কোঠারি কমিশন গ্রহণ করে। এই সুপারিশগুলি হল-


[1] তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আগেকার সব সুযোগসুবিধা বলবৎ থাকবে।


[2] যাযাবর ও আধা-যাযাবর সম্প্রদায়ের জন্য আরও বেশি সুযোগসুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।


[3] তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য বিদ্যালয় এবং ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা করতে হবে।


[4] এ ছাড়া, আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণে বৃত্তি হিসেবে আর্থিক সাহায্য প্রদান, উপজাতিদের ভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থাগ্রহণ এবং আদিবাসীদের জীবনের উপযোগী শিক্ষার বিষয়বস্তু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে কমিশন সুপারিশ করে।


সংবিধানের 44 নং ধারায়, সারা ভারতে সকলের জন্য একই আইনের ব্যবস্থা করা হবে ও 30 নং ধারায়, ভাষা ও ধর্মের জন্য শিক্ষায় বৈষম্য করা হবে না বলে উল্লেখ করা আছে। জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংহতির জন্য যে-কোনো বৈষম্য পরিহার করতে হবে।



2 .ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাগুলি উল্লেখ করো। অথবা, ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শিক্ষা সংক্রান্ত সুপারিশগুলি উল্লেখ করো।


উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাসমূহ সংবিধানের নির্দেশক নীতি অংশ থেকে সপ্তম তপশিল পর্যন্ত শিক্ষা ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বহু ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যেমন-


[1] প্রাথমিক শিক্ষা: সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী, সংবিধান চালু হওয়ার দশ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র দেশের প্রতিটি ছেলেমেয়ের জন্য 14 বছর বয়স পর্যন্ত বাধ্যতামূলক, অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে সচেষ্ট হবে।


[2] দুর্বলতর শ্রেণির রক্ষাকবচ: সংবিধানের 46 নং ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্র বিশেষ যত্নের সঙ্গে সমাজের অনগ্রসর, বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির জন্য শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবে।


[3] শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা ও ধর্মীয় উপাসনা প্রসঙ্গে: সংবিধানের 28 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকারি অনুদানে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হবে না।


(3) ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা অনুমোদিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মীয় শিক্ষাদান বা শিক্ষা-অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে, ছাত্রছাত্রীরা সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য নয়।


[4] সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা: 29 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, ভারতে বসবাসকারী সমস্ত নাগরিকদের স্বতন্ত্র লিপি, ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষার অধিকার থাকবে। 29(1) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার পরিচালিত বা সরকারি অনুদানে পরিচালিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভরতির ক্ষেত্রে জাতি, ধর্মসম্প্রদায়, ভাষা অথবা যে-কোনো একটি বিষয়ের অজুহাত দিয়ে ভারতীয় কোনো নাগরিককে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। 29 (2) নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্র পরিচালিত বা সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো বিদ্যালয়ে ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায় কিংবা ভাষার অজুহাতে কোনো ছাত্রছাত্রীকে ভরতি নিতে অস্বীকার করা যাবে না।

[5] সংখ্যালঘুদের নিজস্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের অধিকার: সংবিধানের 30(1) নং ধারা অনুসারে সমস্ত ধর্মগত ও ভাষাগত সংখ্যালঘু মানুষের নিজেদের ইচ্ছামতো বিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার থাকবে। 30(2) অংশে বলা হয়েছে, সাহায্য দানের ক্ষেত্রে ধর্ম ও ভাষার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু, এই অজুহাতে রাজ্য সরকার কোনো বৈষম্য করতে পারবে না।


[6] মাতৃভাষা সংক্রান্ত: 350 (1) নং ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযোগ দিতে হবে।


[7] হিন্দি ভাষার উন্নতির জন্য: 351 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও প্রসার ভারত সরকারের দায়িত্ব।


[৪] অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বিদ্যালয়ে সাহায্য: 337 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান চালু হওয়ার তিন বছর পর্যন্ত অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে 1948 সালের মার্চ মাসে যে সাহায্য দেওয়া হত, তা দেওয়া হবে।


[9] কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা: 239 নং ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক বিধিবদ্ধ আইন ছাড়াও রাষ্ট্রপতি প্রশাসক নিয়োগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।


[10] কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব: 62, 63, 64, শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব ব্যক্ত হয়েছে। 65, 66 ও 67 নং ধারায়,


3.  ভারতীয় সংবিধানে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টনের জন্য যে তালিকার ব্যবস্থা রয়েছে তা আলোচনা করো। ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যগুলি কী? 4+4


উত্তর: আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টনের জন্য তালিকা ব্যবস্থা ভারতের সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ক্ষমতাগুলি তিন ভাগে বিভক্ত-কেন্দ্রীয়, রাজ্য এবং যৌথ। যে সমস্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের, তাকে লিস্ট বা ইউনিয়ন লিস্ট বলে। লিস্ট-II বা স্টেট লিস্টের বিষয়গুলিতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের। যেসব ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়েরই, তাকে লিস্ট-III বা কন্কারেন্ট লিস্ট বলে।


কেন্দ্রীয় তালিকায় আছে সংবিধানের 62, 63, 64, 65 ও 66 নং ধারা। এগুলিতে শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব ব্যক্ত হয়েছে। রাজ্য তালিকার অনুচ্ছেদ 11-তে বলা হয়েছে সপ্তম তপশিলের অন্তর্ভুক্ত 63, 64, 65 ও 66 নং ধারা এবং যৌথ তালিকার 25 নং ধারা বাদে বিশ্ববিদ্যালয়-সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি রাজ্য তালিকাভুক্ত। এ ছাড়া যুগ্ম তালিকায় (ধারা নং 25) রয়েছে বৃত্তিগত ও কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদি।


ভারতীয় সংবিধানে উল্লেখিত নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্য


[1] সংবিধান মান্য করে চলা, তার সব আদর্শ এবং জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা।


[2] যেসব মহান আদর্শের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, সেগুলি অনুসরণ করা।


(3) ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা।


[4] প্রয়োজন হলে দেশকে রক্ষা করা ও জাতীয় পরিসেবা দেওয়া। [5] ধর্ম ও ভাষাগত বিভেদ ভুলে সকলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা,


ভ্রাতৃত্ববোধকে জাগ্রত করা এবং নারীর মর্যাদাহানিকর আচরণ বর্জন করা।


[6] ভারতীয় মিশ্রসংস্কৃতিকে যথাযথ মূল্য দেওয়া এবং তাকে রক্ষা করা।


[7] ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করা এবং তার উন্নতি সাধন করা।

[৪] বিজ্ঞানসম্মত মানসিকতা, মানবতাবোধ এবং অনুসন্ধিৎসা বজায় রাখা।


[9] অপরের প্রতি হিংসা না-করা এবং বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তিকে রক্ষা করা।


[10] জাতিকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছোতে সহায়তা করা।


[11] 6 বছর থেকে 14 বছর বয়সের প্রতিটি ছেলেমেয়েকে শিক্ষালাভের সুযোগ দেওয়া।


4. ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাগুলিতে কী কী অসংগতি লক্ষ করা যায় তা লেখো।


উত্তর:  ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারার অসংগতি


ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সংক্রান্ত ধারাগুলি পর্যালোচনা করলে, বহু অসংগতি বা ত্রুটি ধরা পড়ে। নীচে কয়েকটি অসংগতি উল্লেখ করা হল-


[1] প্রাথমিক শিক্ষার দায়দায়িত্ব: সংবিধানে 45 নং ধারাতে বলা হয়েছে


প্রাথমিক শিক্ষার দায়দায়িত্ব রাজ্য সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সমগ্র দেশের সর্বজনীন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা


সম্প্রসারণের বিশেষ দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের ওপরই ন্যস্ত রয়েছে। [2] মাধ্যমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার বিষয়: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার উদ্ভব, বিকাশ ও প্রশাসনগত কাঠামোগঠনের ক্ষেত্রে যেমন রাজ্য সরকার দায়বদ্ধ থাকবে, তেমনই উচ্চশিক্ষার বিকাশ ও সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রেও সরকার দায়বদ্ধ থাকবে।


[3] বিশেষ রাজ্যকে অতিরিক্ত সহায়তাদান: সংবিধানের 46 নং ধারায় উল্লিখিত যে, আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক বৈষম্য দূরীকরণের জন্য প্রয়োজনবোধে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ কোনো রাজ্য সরকারকে অতিরিক্ত সাহায্য প্রদান করতে পারবে।


[4] রাজ্য সরকারের শিক্ষা ও ভাষানীতিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ: সংবিধানের 350(A) ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাষা ও সাংস্কৃতিক স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে সর্বদা সাহায্য করবে এবং ওই সম্প্রদায়ের সন্তানসন্ততি যাতে মাতৃভাষার মাধ্যমে অন্তত প্রাথমিক স্তরের শিক্ষালাভের সুযোগ পায়, তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এখানে দেখা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারগুলির শিক্ষা ও ভাষানীতির ওপর কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের সুযোগ রাখা হয়েছে।


[5] জাতীয় ভাষার উন্নয়ন: সংবিধানের 351 নং ধারায় জাতীয় ভাষার বিকাশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়েছে, কিন্তু অহিন্দিভাষী রাজ্যগুলি চায় না যে কেন্দ্রীয় সরকার এই দায়িত্ব পালন করুক।


[6] উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়িত্বদান: সংবিধানের কেন্দ্রীয়


তালিকার 66 নং অনুচ্ছেদে বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়সাধন ও শিক্ষার মান নির্ধারণে কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। অথচ এটাও সত্যি যে, রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা সমরূপ প্রতিষ্ঠানে রাজ্য সরকারের সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অস্বীকার করা যায় না।


[7] ধর্ম ও সম্প্রদায়ভিত্তিক নামকরণ: সংবিধানের কেন্দ্রীয় তালিকায় 63 নং অনুচ্ছেদে বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ম ও সম্প্রদায়ভিত্তিক নামকরণ লক্ষ করা যায়। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে এই ধরনের নামকরণ কাম্য নয়।


[৪] রাজ্য সরকারগুলির শিক্ষাক্ষেত্রে তৎপরতা: সংবিধানে শিক্ষাকে বর্তমানে যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং শিক্ষার যে-কোনো দায়িত্ব রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হওয়া উচিত। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সকল রাজ্যকে কেন্দ্র সমানভাবে নজরে রাখতে পারে না। মর্যাদারক্ষার তাগিদে রাজ্যকেই সেক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষা সম্পর্কিত দায়িত্ব পালন করতে হয়।

প্রশ্ন


5. নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কী? স্বাধীন ভারতে নারীশিক্ষা বিষয়ে রাধাকৃষ্ণণ কমিশন, মুদালিয়র কমিশন ও কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি লেখো। 


উত্তর: নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা


[1] শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য মানসিক উৎকর্ষসাধন। এই উৎকর্ষসাধনের ক্ষেত্রে পুরুষসমাজের পাশাপাশি নারীসমাজের কথাও ব্যাপকভাবে চিন্তা করা দরকার। কেন-না যে-কোনো রাষ্ট্রের অগ্রগতিতে সে দেশের নারীদেরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকে।


[2] নারীরা তাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলতে পারে, যারা পরবর্তীকালে দেশকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। শিক্ষাবর্জিত নারী কখনও শিশুকে চরিত্রবান করে গড়ে তুলতে পারে না।


[3] শিক্ষিতা নারী নিজের পরিবার ও সমাজকে সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে উন্নত করে তুলতে পারে।


[4] নারীর শিক্ষাগুণে পরিবারের শান্তিশৃঙ্খলাও বজায় থাকে।


[5] নারী শিক্ষিত হলে জন্মহার কমাতে উদ্যোগী হবে। এর ফলে দেশের জনসংখ্যার চাপ কিছুটা হলেও কমবে।


নারীশিক্ষা বিষয়ে রাধাকুরণ কমিশনের সুপারিশ (1948-49) স্বাধীনতার পর 1948 খ্রিস্টাব্দে ডক্টর সর্বপল্লি রাধাকৃয়ণের সভাপতিত্বে


বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন তথা রাধাকৃয়ণ কমিশন গঠিত হয়। ওই কমিশন নারীশিক্ষার বিষয়ে যে সুপারিশ করে, সেগুলি হল-


[1] সমাজে নাগরিক হিসেবে নারীরা যাতে উপযুক্ত মর্যাদা পায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।


[2] কো-এডুকেশন কলেজে অর্থাৎ যেখানে নারী-পুরুষ একসাথে


পড়াশোনা করে সেখানে নারীদের জন্য সব ধরনের সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।


[3] নারী ও পুরুষদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সাদৃশ্য বজায় রাখা হলেও নারীদের জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।


4] দেশের সর্বত্র নারীশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।


[ [5] পরিবার তথা সমাজকে তুলে ধরার জন্য নারীদের গার্হস্থ্য অর্থনীতি, পরিবার পরিচালনা বা গৃহবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। নারীশিক্ষা বিষয়ে মুদালিয়র কমিশনের সুপারিশ (1952-53)


1952 খ্রিস্টাব্দে ড. লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়রের সভাপতিত্বে যে কমিশন গঠিত হয়,


তা মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন বা মুদালিয়র কমিশন নামে পরিচিত। নারীশিক্ষা বিষয়ে ওই কমিশনের সুপারিশ হল- [1] নারী-পুরুষের জন্য একই ধরনের পাঠক্রম নির্দিষ্ট হবে। তবে যেখানে মেয়েদের স্কুল অথবা সহশিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে, সেখানে মেয়েদের জন্য গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। [2] প্রয়োজনবোধে রাজ্য সরকারকে নারীশিক্ষার বিকাশের জন্য পৃথক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।


[3] নারীশিক্ষার পাঠক্রমে সংগীত, কলা ইত্যাদি বিষয়কে অনুমোদন করার সুপারিশ করা হয়।


[4] কো-এডুকেশন স্কুলে শিক্ষকদের সঙ্গে উপযুক্তসংখ্যক শিক্ষিকা নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। ওইসব বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটিতে উপযুক্তসংখ্যক নারী প্রতিনিধি থাকবে। নারীশিক্ষা বিষয়ে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ (1964-66)


1964 খ্রিস্টাব্দে ডক্টর ডি এস কোঠারির সভাপতিত্বে যে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়, তা কোঠারি কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন নামে পরিচিত। ওই কমিশন নারীশিক্ষার বিষয়ে যে সমস্ত সুপারিশ লিপিবদ্ধ করে, সেগুলি হল-


[1] আগামী কয়েক বছর নারীশিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। নারী-পুরুষের মধ্যে শিক্ষাগত পার্থক্য যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।


[2] নারীশিক্ষার বিকাশে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নারীশিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্য দান করতে হবে।


[3] নারীশিক্ষার বিকাশের জন্য মেয়েদের স্কলারশিপ দিতে হবে এবং তাদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ করতে হবে।


[4] স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে 'মহিলা মহাবিদ্যালয়' স্থাপন করতে হবে। অবশ্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পৃথক ব্যবস্থার দরকার নেই।


[5] নারীশিক্ষার বিষয়ে গবেষণার জন্য দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।


[6] কেন্দ্রে এবং রাজ্যে মহিলাদের শিক্ষার ব্যাপারে তত্ত্বাবধান করার জন্য একটি সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। ওই সংগঠনের কাজ হবে নারীশিক্ষার পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা।


[7] শিক্ষাগ্রহণের পর মহিলারা যাতে চাকুরির সুযোগ পায়, তারজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


[৪] নারীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।


[9] মহিলারা যাতে বাড়ির কাজকর্ম সেরে আংশিক সময়ের চাকুরি পায়, তারজন্য সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।


6. নারীশিক্ষার বিকাশের ক্ষেত্রে NCEW-1959-এর সুপারিশগুলি উল্লেখ করো।


উত্তর: নারীশিক্ষার বিকাশে NCEW-1959-এর সুপারিশসমূহ


NCEW-এর পুরো কথাটি হল National Committee for Women Education। স্বাধীন ভারতে নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যাসমাধানের জন্য ভারত সরকারের উদ্যোগে 1959 খ্রিস্টাব্দে NCEW তথা নারীশিক্ষার জাতীয় পর্ষদ গঠন করা হয়। ওই পর্ষদের সভানেত্রী ছিলেন শ্রীমতী দুর্গাবাঈ দেশমুখ। ওই কমিটির সুপারিশগুলি নীচে উল্লেখ করা হল-


[1] যুগ্ম পরামর্শদানকারী নিয়োগ: নারীশিক্ষার দায়িত্ব এক জন কেন্দ্রীয় যুগ্ম পরামর্শদানকারী (Joint Education Advisor) নারীর হাতে অর্পণ করতে হবে।


[2] মহিলা যুগ্ম আধিকারিক নিয়োগ: প্রতিটি রাজ্যে যুগ্ম আধিকারিক (Joint Director) পদে মহিলা কর্মী নিয়োগ এবং তাঁর হাতে নারীশিক্ষার ভার অর্পণ করতে হবে।


[3] অর্থবরাদ্দ: নারীশিক্ষার বিকাশের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।


[4] স্কুল মাদার নিয়োগ: প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানে যেখানে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মহিলা তথা শিক্ষিকা নেই, সেখানে 'স্কুল মাদার' নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।


[5] পাঠক্রম পরিবর্তন: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠক্রম ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে একপ্রকার হলেও, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য পৃথক পাঠক্রমের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থান করতে হবে।


[6] ছাত্রীনিবাস: নারীশিক্ষার বিকাশের জন্য অধিক সংখ্যায় ছাত্রীনিবাস


[7] যাতায়াত ব্যবস্থা: ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।


[৪] টিফিন প্রদান: বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে টিফিন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।


[9] বৃত্তিশিক্ষা ও পেশাগত শিক্ষা: মেয়েদের জন্য প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিশিক্ষা ও পেশাগত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।


[10] বয়স্ক নারীশিক্ষা: বয়স্ক নারীদের জন্য স্বল্প সময়ের শিক্ষাক্রম চালুর ব্যবস্থা করতে হবে