Chapter--11

সিন্ধুতীরে



 👉Paid Answer (For Membership User) 

 

1. 'সিন্ধুতীরে' শীর্ষক কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের যে খন্ড থেকে নেওয়া হয়েছে-

(ক) রত্নসেন-বন্ধনখণ্ড

(খ) বাদশাহ- আক্রমণখণ্ড 

(গ পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড 

(ঘ) পদ্মাবতী-রত্নসেন ভেটখণ্ড

উওব়: (গ) পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড


 

2. 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড'-টি জায়সীর কাব্যে ছিল- 

(ক) লক্ষ্মী-সমুদ্রখন্ড নামে 

(খ) লক্ষ্মী-রত্নসেনখণ্ড নামে 

(গ) রাজা-বাদশাহ সন্ধিখণ্ড নামে

(ঘ) রত্নসেন সাথীখণ্ড নামে

উওব়: (ক) লক্ষ্মী-সমুদ্রখণ্ড নামে

 

3. "কন্যারে ফেলিল যথা..."-এই 'কন্যা' হলেন- 

(ক) রত্নসেনের কন্যা 

(খ) রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতী 

(গ) পদ্মাবতীর পঞ্চম সখী 

(ঘ) সমুদ্রকন্যা পদ্মা

উওব়: (খ) রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতী

 

4. "জলের মাঝারে তথা...."-জলের মধ্যে রয়েছে-

(ক) সাপ 

(খ) নগরী

(গ)পাহাড়

(ঘ) রাক্ষস

উওব়: (খ) নগরী 

 

5. 'অতি মনোহর দেশ' বলতে বোঝানো হয়েছে- 

(ক) সমুদ্রকে 

(খ) চিতোরকেন 

(গ) সিংহলকে 

(ঘ) সমুদ্রের পাশে পার্বত্য অঞ্চলকে

উওব়: (ঘ) সমূদ্রের পাশে পার্বত্য অঞ্চলকে


 

6. "সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান...” সিন্ধুতীরে দিব্যস্থান দেখেছেন- 

(ক) চন্দ্রপ্রভা

(খ) রোহিণী 

(গ) বিধুন্নলা 

(ঘ)পদ্মা 

উওব়: (ঘ) পদ্মা


 

7. "তার পাশে রচিল উদ্যান..."-সমুদ্রতীরে উদ্যান রচনা করেছেন- 

(ক) বিজয়া 

(খ) লক্ষ্মী

(গ) পদ্মা 

(ঘ) পদ্মাবতী

উওব়: (গ) পদ্মা


 

8. "তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি..." -‘টঙ্গি' শব্দের অর্থ- 

(ক) ছবি 

(খ) গাছপালা 

(গ) তিরধনুক 

(ঘ) প্রাসাদ

উওব়: (ঘ) প্রাসাদ


 

9. "হেমরত্বে নানা রঙ্গি..."-'হেম' শব্দের অর্থ- 

(ক) উজ্জ্বল 

(খ) রঙিন 

(গ) সোনা 

(ঘ) নকল

উওব়: (গ) সোনা


 

10. "সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস..." -'মাঞ্জস' শব্দের অর্থ-

(ক) এক ধরনের সুতো 

(খ) ভাঙা নৌকো 

(গ) ভেলা 

(ঘ) জাহাজ

উওব়: (গ) ভেলা


 

11. সিন্ধুতীরের ওপরের পর্বত ছিল- পূর্ণ 

(ক) ঘর-বাড়িতে পূর্ণ 

(খ) ফল-ফুলে সজ্জিত 

(গ) পশুপাখিতে ভরা 

(ঘ) জল-মানুষে

উওব়: (খ) ফল-ফুলে সজ্জিত


 

Short Question Answer

 

১. 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি কার রচনা?

উওব়: 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওলের রচনা

 

২. কবি সৈয়দ আলাওল কোন্ রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন

 

৩. সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত

 

৪. 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের কোন্ খণ্ডের অংশ?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড'র অংশ

 

৫. পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ সময়ে রচিত?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওলের লেখা পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি ১৬৪৫ থেকে ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত

 

৬. পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত?

উওব়: পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি হিন্দি কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত

 

৭. জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান কে ছিলেন?

উওব়: জাইস নগরে বসবাসকারী সিদ্দিকি বংশোদ্ভূত কবি মালিক মহম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান ছিলেন শেরশাহ

 

৮. পদুমাবৎ কাব্যটি কোন্ সময়ের রচনা?

উওব়: কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যটি 'সন নব সৈ সেতাঁলিস অহা' অর্থাৎ ৯৪৭ হিজরি বা ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের রচনা

 

৯. পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি কে ছিলেন?

উওব়: পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি ছিলেন রাজা রত্নসেন

 

১০. রাজা রত্নসেন কার মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন?

উওব়:  চিতোরের রাজা রত্নসেন এক শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন

 

১১. রাজা রত্নসেন কীভাবে পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছোন?

উওব়: শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের প্রশস্তি শুনে চিতোররাজ রত্নসেন ষোলোশো রাজকুমারকে সঙ্গে নিয়ে যোগীবেশে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছোন

 

১২. সিংহলে যাত্রাকালে কে রত্নসেনকে সাহায্য করেছিলেন?

উওব়: ষোলোশো রাজকুমার-সহ চিতোররাজ রত্নসেন সিন্ধুতীরে পৌঁছোলে রাজা গজপতি তাঁকে সিংহলে যাবার জন্য নৌকো দিয়ে সাহায্য করেছিলেন

 

১৩. চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম কী?

উওব়:  চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম নাগমতী

 

১৪. আরাকান রাজ্যটি কোথায় অবস্থিত?

উওব়: আরাকান রাজ্যটি ব্রহ্মদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমায় এবং বাংলাদেশের পূর্বে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত একটি সমুদ্রতীরবর্তী স্থান

 

১৫. আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম কী?

উওব়: আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম রক্ষতুঙ্গ বা রোসাঙ। আইন-ই- আকবরী-তে একে 'আখরঙ' বলা হয়েছে। বাহারিস্তান গারী-তে মীর্জা নাথান এই দেশকে বলেছেন 'আর খঙ'-এর থেকেই 'আরাকান' নামটি এসেছে

 

১৬. আরাকানের অধিবাসী মগেরা কোন্ ধর্মাবলম্বী ছিলেন?

উওব়: আরাকানের অধিবাসী মগেরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন

 

১৭. আলাওল কোন্ কোন্ রাজার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন?

উওব়: সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওল থদো-মিন্ডারের পুত্র সান্দ-যু- ধম্মা বা চন্দ্রসুধর্মার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন

 

১৮. আরাকানে কার রাজত্বকালে আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন?

উওব়: আরাকানে থদো-মিন্তারের রাজত্বকালে কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন

 

১৯. আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের মূল কাহিনি কয়টি?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের মূল কাহিনি দুটি-একটি নাগমতী-পদ্মাবতী রত্নসেনের মিলনান্তক কাহিনি, আর অন্যটি হল রত্নসেন-আলাউদ্দিন-পদ্মাবতীর ত্রিভুজপ্রেমের কাহিনি, যাতে যুদ্ধের উত্তেজনাই প্রধান

 

২০. পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম কী ছিল?

উওব়: পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম ছিল হীরামন

 

২১. পদ্মাবতীর পিতার নাম কী?

উওব়: পদ্মাবতী কাব্যে পদ্মাবতীর পিতার নাম গন্ধর্বসেন

 

২২. পদ্মাবতীকে বিবাহ করে দেশে ফেরার সময় রত্নসেন কীভাবে বিপর্যস্ত হন?

উওব়: পদ্মাবতীকে বিবাহ করে স্বদেশে ফেরার সময় নিজ অহংকারের জন্য রাজা রত্নসেন সমুদ্রের দ্বারা বিপর্যস্ত হন এবং অবশেষে বহু দুর্যোগ ও দুর্বিপাক পেরিয়ে দেশে ফেরেন

 

২৩. পদ্মাবতী কাব্যে অলৌকিকতা কীভাবে স্থান পেয়েছে?

উওব়: পদ্মাবতী কাব্যে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী সমুদ্রের রত্নসেনকে পরীক্ষা, সমুদ্রে নৌকাডুবি, পদ্মাবতীর পাতালপুরীতে যাওয়া এবং সমুদ্রের কৃপায় আবার ধনরত্ন-সহ রত্নসেনকে ফিরে পেয়ে চিতোরে পৌঁছোনো-প্রভৃতি অলৌকিক বা রূপকথাধর্মী বিবরণ রয়েছে

 

২৪. পদ্মাবতী কাব্যের 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড' মূল পদুমাবৎ কাব্যে কোন্ নামে ছিল?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড' মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যে 'লক্ষ্মী- সমুদ্রখণ্ড' নামে ছিল

 

২৫. জায়সীর কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম কী ছিল?

উওব়: মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম ছিল লক্ষ্মী, যা আলাওলের কাব্যে হয়েছে 'পদ্মা'

 

২৬. 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড'-টির অন্তর্গত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি কোন হয়ে রচিত?

উওব়: 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড'-টির অন্তর্গত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশটি ত্রিপদী হয়ে রচিত

 

২৭. “কন্যারে ফেলিল যথা..."-কন্যাটি এক্ষেত্রে কে?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের অন্তর্গত 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড রে' শীর্ষক কাব্যাংশে উল্লিখিত 'কন্যা'-টি হলেন থেকে নেওয়া 'সিন্ধুতীরে' সিংহলরাজ গন্ধর্বসেনের কন্যা তথা চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী

 

২৮. "..দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার"-'দিব্য পুরী'র অর্থ কী?

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে 'দিব্য পুরী'র অর্থ অলৌকিক স্বর্গীয় নগরী

 

২৯. 'সমুদ্রনৃপতি সুতা' কে? 

উওব়: কবি সৈয়দ আলাওল রচিত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে 'সমুদ্রনৃপতি সুতা' হলেন পদ্মা

 

৩০. “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ"-কার, কোথায় থাকার কথা বলা হয়েছে?

 উওব়: 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মার পাহাড়ের পাশে ফুল- ফলে ভরা, বিচিত্র প্রাসাদময় এক বাগানে থাকার কথা বলা হয়েছে

 

৩১. "যদি হৈল সময় প্রত্যুষ"-সকাল হতে পদ্মা কী দেখলেন?

উওব়: 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশে বর্ণিত কাহিনি অনুযায়ী সকাল হতে পদ্মা দেখলেন সমুদ্রের ধারে একটি মান্দাস রয়েছে


 

৩২ "দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার।”-কোন্ পুরীকে 'দিব্য পুরী' বলা হয়েছে? তাকে 'দিব্য' বলার কারণ কী?

উত্তর: সমুদ্রের ঢেউ পদ্মাবতীর মান্দাসকে যেখানে পৌঁছে দেয়, সেখানে জলের মধ্যে এক সুন্দর নগরী ছিল। সেটিকেই 'দিব্য পুরী' বলা হয়েছে

 

সেই পুরী 'দিব্য', কারণ সেখানে মানুষের কোনো দুঃখকষ্ট ছিল না। সমুদ্রকন্যা পদ্মার নিজস্ব বিচরণক্ষেত্র সেই স্থানের ফলফুলে শোভিত প্রাকৃতিক শোভা ছিল অতুলনীয়। সেখানে বসবাস করা মানুষদের সকলেই ধর্ম মেনে চলত এবং সবসময় সদাচার করত। অর্থাৎ নৈতিক আদর্শের উচ্চতা সেই নগরীকে অলৌকিক মহিমা দিয়েছিল

 

৩৩ "অতি মনোহর দেশ।”-এই 'মনোহর দেশে'-র সৌন্দর্যের পরিচয় দাও। অথবা, 'সিন্ধুতীরে' কবিতা অবলম্বনে দেশটির বর্ণনা দাও।  অথবা, কোন্ স্থানকে কেন মনোহর দেশ বলা হয়েছে?

উত্তর: পদ্মাবতীর মাঞ্জস সমুদ্রের ঢেউর দ্বারা জলের মধ্যে যে 'দিব্য পুরী'- তে গিয়ে পৌঁছোয় তাকেই 'মনোহর দেশ' বলা হয়েছে। কবির বর্ণনানুসারে এই দিব্য পুরী অতি মনোহর। কেন-না সেখানে কোনো দুঃখকষ্ট নেই; আছে শুধু সত্যধর্ম এবং সদাচার। সেখানে আছে একটি পর্বর্ত এবং নানা ফুলে ভরা অপূর্ব এক উদ্যান। সেখানকার গাছগুলিতে নানা ফলও ফুলের সমারোহ। একদিকে প্রকৃতির শোভা, অন্যদিকে সুস্থ জীবনাদর্শ দেশটিকে মনোহর করে তুলেছিল

 

৩৪ "সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান।”-সিন্ধুতীরে এই দিব্যস্থানে কে থাকেন? স্থানটিকে দিব্যস্থান বলা হয়েছে কেন?

উত্তর: সৈয়দ আলাওল রচিত 'সিন্ধুতীরে' কাব্যাংশে সিন্ধুতীরের দিব্যস্থানে থাকেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা

 

'দিব্যস্থান' কথাটির অর্থ হল সুন্দর, মনোহর স্থান। সমুদ্রঘেরা এই স্থানটি খুব মনোহর। সেখানে দুঃখকষ্ট নেই। সত্য এবং সদাচার স্থানটিকে স্বর্গীয় মহিমা দান করেছে। সেখানে রয়েছে একটি পর্বত এবং সুরম্য এক উদ্যান। গাছগুলোতে বিচিত্র ফুল ও ফলের সমারোহ। তাই সবদিক থেকে সুন্দর হওয়ার কারণেই স্থানটিকে দিব্যস্থান বলা হয়েছে

 

৩৫ তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ”- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ নির্দেশ করো। ল্যাটি কে? কোথায় সে সর্বক্ষণ থাকে?

উওব়: সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্য়গ্ৰন্থ থোকে গূহীত ‘সিন্ধুতীব়ে’ কবিতাংশে মান্দাস ভাসতে ভাসতে পদ্মাবতীকে যেখানে নিয়ে গিয়ে ফেলে, তা ছিল অত্যন্ত মনোহর এক দেশ। সেখানে বহুমূল্য রত্নে সাজানোএক প্রাসাদে পদ্মা থাকতেন। সেই প্রসঙ্গেই উক্ত কথাটি বলা হয়েছে

 

কন্যাটি হলেন সমুদ্রকন্যা পদ্মা

 

আলোচ্য মনোহর দেশে যে রত্নসজ্জিত প্রাসাদ ছিল, সেই প্রাসাদেই পদ্মা সর্বক্ষণ থাকতেন

 

Long Question Answer

 

১ "দেখিয়া রূপের কলা বিস্মিত হইল বালা/অনুমান করে নিজ জিবির চিতে।"-কে, কাকে দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন? সেই কন্যা সেখানে এারীর কীভাবে এসেছিল? তাঁকে দেখে কী মনে হয়েছিল?                                                                                                                           

উত্তর: সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড' থেকে নেওয়া 'সিন্ধুতীরে' কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মা অচেতন সিংহল-রাজকন্যা কথা পদ্মাবতীর রূপ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন

 

ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করে রত্নসেনের কাছে দান ভিক্ষা করে প্রত্যাখ্যাত হয় সমুদ্র। তখন সমুদ্রের অভিশাপে রত্নসেনের নৌকা ভেঙে টুকরো টুকরো এর হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে একটি মান্দাসে রত্নসেন ও সখী-সহ পদ্মাবতী আশ্রয় নিলেও সেটিকে রক্ষা করা যায়নি। মান্দাস দু-টুকরো হয়ে পদ্মাবতী  রত্নসেন থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। প্রবল ঢেউ পদ্মাবতীদের মান্দাসটিকে তীরে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছোনোর আগেই ভয়ে সখী-সহ পদ্মাবতী চেতনা হারান। যেখানে তাঁরা পৌঁছোন তা ছিল এক মনোরম পুরী

 

পদ্মাবতীকে দেখে পদ্মার মনে হয়েছিল যে, ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের নর্তকী বিদ্যাধরী যেন স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মাটিতে অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। পদ্মাবতীর ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ এবং আলুথালু বেশ দেখে পদ্মা এ-ও অনুমান করেন যে, ওই কন্যার ওপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে গেছে। এলোমেলো চুল এবং বেশ-বাসের এই অবস্থা দেখে পদ্মার মনে হয় যে, হয়তো সমুদ্রযাত্রার পথে দুরন্ত ঝড়ে বাতাসে নৌকা ভেঙে তাঁরা এই বিপদে পড়েছিলেন। সমুদ্রের কষ্টেই তাঁর এই অজ্ঞান অবস্থা

 

২ "অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে।"-কার কথা বলা হয়েছে? তাকে দেখে কার, কী মনে হয়েছিল? তিনি এই অবস্থায় কোন্ ভূমিকা নিয়েছিলেন?                                                                

উত্তর: সৈয়দ আলাওল অনূদিত পদ্মাবতী কাব্যের 'পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড' থেকে সংকলিত 'সিন্ধুতীরে' নামক কাব্যাংশের উল্লিখিত অংশে পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে


পদ্মাবতীর বিস্ফারিত চোখ, এলোমেলো পোশাক এবং চুল দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা অনুমান করেন যে, সমুদ্রের প্রবল বাতাসে নৌকা ভেঙেই বোধহয় মেয়েটির এই কষ্ট। শুধু তা-ই নয়, গভীর সহানুভূতি দিয়ে পদ্মা দেখেন যে মেয়েটির শ্বাস তখনও অল্প অল্প পড়ছে। স্নেহশীল পদ্মা বিধাতার কাছে মেয়েটির জীবন প্রার্থনা করেন। তিনি প্রত্যাশা করেন তাঁর পিতার পুণ্যের ফলে এবং তাঁর নিজের ভাগ্যের কারণে যেন মেয়েটির জীবন ফিরে আসে


পদ্মাবতীর প্রাণ ফিরে পাওয়ার আশায় পদ্মা শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেই থেমে থাকেননি, তাঁর চিকিৎসারও যথাসাধ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সখীগণ-সহ পদ্মাবতীকে বস্ত্র দিয়ে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি তাঁর সখীদের নির্দেশ দেন। সেখানে তন্ত্রাচারের মাধ্যমে, বিধিমতো মন্ত্রপাঠ করে নানা মহাগুণসম্পন্ন ঔষধের দ্বারা তাঁদের চিকিৎসা করা হয়। আগুন জ্বালিয়ে পায়ে মাথায় সেঁক দেওয়া হয়। চার দণ্ড এরকম যত্নের সঙ্গে শুশ্রুষা হওয়ার পরে চার সখী-সহ পদ্মাবতী চেতনা ফিরে পান

 

৩ "পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।"- পঞ্চকন্যা কে কে? তাদের অচৈতন্যের কারণ কী? কীভাবে তারা চেতনা ফিরে পেয়েছিল?                                                                                                            

উত্তর: সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের অংশবিশেষ 'সিন্ধুতীরে' কাব্য-কাহিনিতে বর্ণিত পঞ্চকন্যার মধ্যমণি হলেন সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতী। আর তাঁর চার জন সখী হল চন্দ্রকলা, বিজয়া, রোহিণী ও বিধুন্নলা


স্বামী রত্নসেনের সঙ্গে রাজকন্যা পদ্মাবতী সমুদ্রপথে চিতোরে ফেরার সময় হঠাৎ তাঁদের জলযানটি সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে এবং ডুবে যায়। রত্নসেন এবং সখী-সহ রাজকন্যা কোনোরকমে একটি মান্দাসে আশ্রয় নেন। শেষপর্যন্ত মান্দাস দ্বিখণ্ডিত হয়ে চার সখী-সহ রাজকন্যা রত্নসেনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। খণ্ডিত ভেলায় ভাসতে ভাসতে তাঁরা সমুদ্রতীরের ভূমিতে পৌঁছোন। কিন্তু প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে অসম লড়াই, দৈহিক ক্লেশ ইত্যাদির প্রভাবে রাজকন্যা ও তাঁর সখীরা জ্ঞান হারান


পঞ্চকন্যার এই অবস্থায় দেবতা সমুদ্রকন্যা পদ্মা নিরঞ্জনকে স্মরণ করেন এবং তাঁর সখীদের চিকিৎসাকর্মে ব্রতী হওয়ার নির্দেশ দেন। প্রাণপণ সেবাশুশ্রুষা করে পঞ্চকন্যার জীবনরক্ষাই ছিল তাঁর মনের ইচ্ছা। সেইমতো শুকনো কাপড় দিয়ে সখী-সহ রাজকন্যার শরীর আবৃত করা হয়। আগুন জ্বেলে সর্বাঙ্গ সেঁক দেওয়া হয় এবং তন্ত্রমন্ত্র সহকারে মহৌষধ প্রয়োগ করা হয়। একটানা চার দণ্ড সেবাশুশ্রুষার পর পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পান। দয়ালু পদ্মার আন্তরিক সেবাযত্নে সখী-সহ পদ্মাবতীর জ্ঞান ফিরে আসে



EDITING BY--Liza Mahanta