নদীর বিদ্রোহ- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

[MCQ]


১. নদেরচাঁদ কোথায় বসে নদীকে দেখত?- 


(ক) নদীর ধারে 

(খ) গাছতলায় 

(গ) ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে 

(ঘ) নদীর ঘাটে


উওব়:  (গ) ধারকস্তম্বের শেষপ্রান্ত



২. "তাহাকে বিশ্বাস নাই।"- 'তাহাকে' বলতে বোঝানো হয়েছে-


(ক) মানুষকে

(খ) রেলগাড়িকে 

(গ) নদীকে 

(ঘ) নদীর ব্রিজকে


উওব়: (গ) নদীকে



৩. নদীর চাঞ্চল্য যেন-


(ক) পরিপূর্ণতার প্রকাশ 

(খ) বিদ্রোহের প্রকাশ 

(গ) জীবনের প্রকাশ 

(ঘ) প্রাণের উচ্ছ্বলতা


উওব়: (ক) পরিপূর্ণতার প্রকাশ



৪. নদেরচাঁদের চিঠিটি ছিল-


(ক) আনন্দের

(খ )অভিজ্ঞতার

(গ) কৌতুকের

(ঘ) বিরহবেদনার


উওব়: (ঘ) বিরহবেদনা



৫. যে পুরাতন চিঠিটা নদীর স্রোতের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলেছিল নদেরচাঁদ, সেই চিঠিটি সে লিখেছিল-


(ক) তার মায়ের উদ্দেশ্যে 

(খ) তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে

(গ) তার বাবার উদ্দেশ্যে

(ঘ) তার বোনের উদ্দেশ্যে


উওব়: (খ) তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে 



৬. নদেরচাঁদের স্ত্রীকে লেখা চিঠির পৃষ্ঠা সংখ্যা কত ছিল?


(ক) পাঁচ

(খ) তিন 

(গ) দুই

(ঘ) ছয়


উওব়: (ক) পাঁচ



৭. "এই ভীষণ মধুর শব্দ শুনিতে শুনিতে সর্বাঙ্গ অবশ" শব্দটি হল-


(ক) নদীর

(খ) বৃষ্টির 

(গ) ট্রেনের 

(ঘ) নদীর ও বৃষ্টির


উওব়: (ঘ) নদীর ও বৃষ্টির



৮. কতক্ষণ বিরতির পর আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছিল?


(ক) দুঘণ্টা 

(খ) ছ-ঘণ্টা 

(গ) তিন ঘণ্টা 

(ঘ) তিরিশ মিনিট


উওব়: (গ) তিন ঘণ্টা



৯. "বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের"-ভয়ের কারণ- 


(ক) নদী যদি আবার বন্দি হয়ে পড়ে 

(খ) যদি ব্রিজ ভেঙে যায়

(গ) যদি নদী তাকে ভুলে যায়

(ঘ) আবার যদি নদী শুকিয়ে যায়


উওব়: (খ) যদি ব্রিজ ভেঙে যায়



১০.উন্মত্ততার জন্য নদেরচাঁদের কাকে জীবন্ত মনে হয়েছিল?-


(ক) প্রবল বাতাসকে 

(খ) সামুদ্রিক ঝড়কে

(গ) বৃষ্টিকে 

(ঘ) জলপ্রবাহকে


উওব়: (ঘ) জলপ্রবাহকে



১১.অন্ধকারে অতি সাবধানে নদেরচাঁদ রেললাইন ধরে হাঁটছিল-


(ক) বাড়ির দিকে 

(খ) স্টেশনের দিকে 

(গ) নদীর দিকে 

(ঘ) নদীর উৎসের দিকে


উওব়:(খ) স্টেশনে দিকে 



১২.কিন্তু পারিবে কি?"-এখানে কী পারার কথা বলা হয়েছে?-


(ক) নদীর বাঁধ ভাঙতে 

(খ) চিরকাল স্বাধীনভাবে চলতে 

(গ) নদীকে বাঁধ দিয়ে বন্দি করতে

 (ঘ) নদীকে নিজের করে নিতে


উওব়: (খ) চিরকাল  স্বাধীনভেবে চলতে



১৩.-এতকাল নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে।"-নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করত- 


(ক) নদীর জন্য 

(খ) জন্মভূমির জন্য 

(গ) নিজের পেশার জন্য 

(ঘ) নূতন রং করা ব্রিজটির জন্য


উওব়: (ঘ) নূতন রং করা ব্রিজটি জন্য



১৪."আজ তার মনে হইল কী প্রয়োজন ছিল


(ক) নদীর

(খ) বৃষ্টির

(গ) ব্রিজের

(ঘ) চঞ্চলতার


উওব়: (গ) ব্রিজের



১৫. কীসের আকস্মিক আঘাত নদেরচাঁদের চেতনাকে দিশাহারা করে দিয়েছিল?


(ক) ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দ

(খ) বাতাসের প্রবল শব্দ

(গ) বৃষ্টির ঝাপটা

(ঘ) ব্রিজ ভাঙার শব্দ


উওব়: (ক) ট্রেন চ যাওয়াব় শব্দ



১৬. নদেরচাঁদের মৃত্যু হয়েছিল-


(ক) দুরারোগ্য ব্যাধিতে

(খ) বাসের ধাক্কায়

(গ) ট্রামের ধাক্কায়

(ঘ) ট্রেনের ধাক্কায়


উওব়: (ঘ) ট্রেনেব় ধাক্কায়



১৭. কোন্ ট্রেনের ধাক্কায় নদেরচাঁদ মারা গিয়েছিল?


(ক) ৩ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

(খ) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

(গ) ১০ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

(ঘ) ৫ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার


উওব়: (খ) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার



১৮.নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারি করেছিল-


(ক) পাঁচ বছব়

(খ) তিন বছর

(গ) চার বছর

(ঘ) ছয় বছর


উওব়: (গ) চার বছব়



১৯. "নদেরচাঁদকে পিষিয়া দিয়া চলিয়া গেল”


(ক) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

(খ) ৫ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

(গ) ৭ নং অ্যাপ প্যাসেঞ্জার

(ঘ) ৫ নং অ্যাপ প্যাসেঞ্জার


উওব়:  (ক) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার


Short Answer Question


১. “এক একখানি পাতা ছিঁড়িয়া দুমড়াইয়া মোচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল।”-উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল?

        

উত্তর: নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা পাঁচ পৃষ্ঠার 'বিরহ বেদনা পূর্ণ' চিঠির এক- একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে নদীর জলে ফেলতে লেগেছিল।



২. "নদেরচাঁদ সব বোঝে"-নদেরচাঁদ কী বোঝে?

        

উত্তর: নিজের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে নদীর প্রতি নদেরচাঁদের অস্বাভাবিক মায়া যে এক ধরনের পাগলামি, তা নদেরচাঁদ বোঝে।



৩. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম কী?       


উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।



৪. "বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের।"-নদেরচাঁদের কেন ভয় করতে লাগল? অথবা, "বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের।”-নদেরচাঁদের ভয় করার কারণ কী? 


উত্তর: নদীর তীব্র আর্তনাদ এবং রোষে-ক্ষোভে উন্মত্ত জলরাশি নদীর অতি নিকটে বসে থাকা নদেরচাঁদের মনে ভয়ের অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল।


১. "নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।"-নদেরচাঁদের স্তম্ভিত হওয়ার কারণ কী?


উওব়: ব্রিজের কাছে এসে নদীর দিকে প্রথমবার তাকিয়ে নদীর উন্মত্ত চেহারা দেখেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল।



২. "... ফেনিল আবর্ত রচনা করিতেছে।"-কীভাবে নদীতে আবর্ত রচনা হয়েছিল?


উওব়: নদীর জল বর্ষায় অনেকটা বেড়ে গেছিল। তাই নদীর স্রোত ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে আবর্ত রচনা করছিল।



৩. "জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল।"-কেন নদেরচাঁদের নদীর জলপ্রবাহকে জীবন্ত মনে হল?


উওব়: বৃষ্টির জল পেয়ে নদীর জলপ্রবাহ উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল। আর এই উন্মত্ততার জন্যই নদেরচাঁদের নদীর জলপ্রবাহকে জীবন্ত বলে মনে হল।



৪. "চিঠি পকেটেই ছিল।"-কোন্ চিঠির কথা বলা হয়েছে?


উওব়: নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে পাঁচ পৃষ্ঠার যে বিরহ-বেদনাপূর্ণ চিঠিটি লিখেছিল এখানে সেই চিঠির কথা বলা হয়েছে।



৫. কীসের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে চিঠি লিখেছিল?


উওব়: অবিরাম হয়ে চলা বৃষ্টিধারার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে চিঠি লিখেছিল।



৬. পুরোনো চিঠিটি নদীর জলস্রোতে ফেলার পর নদেরচাঁদের কী মনে হল?


উওব়: স্ত্রীকে লেখা পুরোনো চিঠিটি নদীর জলস্রোতে ফেলার পর নদেরচাঁদের মনে হল নদীর জীবন্ত জলপ্রবাহ চিঠিটাকে যেন তাড়াতাড়ি লুকিয়ে ফেলেছে।



৭. নদেরচাঁদের কখন মনে হল তার সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হয়ে আসছে?


উওব়: নদী থেকে উঠে আসা অশ্রুতপূর্ব একটা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ মিশে যেন একটা সংগত পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। ওই শব্দ শুনে নদেরচাঁদের মনে হল তার সর্বাঙ্গ যেন অবশ ও অবসন্ন হয়ে আসছে।



৮. "বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদের চাঁদের" নদেরচাঁদ কেন ভয় পেয়েছিল?


উওব়: নদীর অবস্থা ভয়ংকর ছিল, নদী যেন রোষে, ক্ষোভে উন্মত্ত ছিল। নদেরচাঁদ নদী থেকে এক হাত উঁচুতেই বসেছিল। তাই বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে ওঠা নদী যে-কোনো মুহূর্তে বিপদ ঘটাতে পারে-এই ভেবে নদেরচাঁদ ভয় পেয়েছিল।



৯. "তাহাকে বিশ্বাস নাই।"-কাকে, কেন বিশ্বাস নেই? 


উওব়: নদেরচাঁদ নদীকে বিশ্বাস করতে পারেনি তার উন্মত্ত চেহারার জন্য।



১০. নদী কী চায় বলে নদেরচাঁদের মনে হল?


উওব়: ব্রিজ ও মানুষের হাতে-গড়া বাঁধ ভেঙে নদী নিজের স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে চায় বলে নদেরচাঁদের মনে হল।



১১. "নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।"-নদীর বিদ্রোহের কারণ নদেরচাঁদ বুঝতে পারল কীভাবে?


উওব়: শুকনো নদী পাঁচ দিনের বৃষ্টির জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। উন্মত্ত নদীর তীব্র স্রোতযুক্ত জলধারা দেখে নদেরচাঁদ নদীর বিদ্রোহের কারণ বুঝতে পারল।



১২. ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে ফেললেও নদী কেন রেহাই পাবে না বলে নদেরচাঁদের মনে হল?


উওব়: ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে ফেললেও নদী রেহাই পাবে না বলে নদেরচাঁদের মনে হল। কারণ, মানুষ আবারও নতুন করে ব্রিজ ও বাঁধ গড়ে তুলে নদীকে বন্দি করবে।



১৩. "নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে"-নদেরচাঁদ কীসের জন্য গর্ব অনুভব করেছে?


উওব়: স্টেশনের কাছে নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করেছিল।



১৪. কীভাবে নদেরচাঁদের মৃত্যু হয়েছিল?


উওব়: অন্ধকারে অন্যমনস্কভাবে লাইন ধরে স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় নদেরচাঁদের মৃত্যু হয়েছিল।



১৫. পাঁচ দিন পর নদীকে দেখে নদেরচাঁদ কেন স্তম্ভিত হয়েছিল?


উওব়: পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টির জল পেয়ে নদী যেন ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল, বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। নদীর এই উন্মত্ত রূপ দেখেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল।



১৬. "আজও সে সেইখানে গিয়ে বসল।"-কোথায় গিয়ে বসল?


উওব়: নদেরচাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্ট দিয়ে গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে গিয়ে বসল।



১৭. “এক একখানি পাতা ছিঁড়িয়া দুমড়াইয়া মোচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল।” উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল?


উওব়: নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা পত্রখানি নদীর জলে ছিঁড়ে ফেলতে লাগল।



১৮. "নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে" নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল? 


উওব়: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নদীর বিদ্রোহ' গল্পে আমরা দেখি, নদেরচাঁদ অনুভব করে নদীর ওপরে ব্রিজ তৈরি করা ও বাঁধ দেওয়ার কারণেই নদী যেন বিদ্রোহ করেছে।



১৯. "ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষিয়া দিয়া চলিয়া গেল”-কোন্ ট্রেনটি?


উওব়: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নদীর বিদ্রোহ' গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কথা বলা হয়েছে।



২১.নদেরচাঁদের দেশের নদী আর স্টেশনমাস্টারি করতে এসে পরিচিত নদী- এই দুই নদীকে ভালোবাসার প্রকৃতি বা স্বরূপ কীরকম ছিল?


উত্তর:নদেরচাঁদের দেশের ক্ষীণস্রোতা নদী যেন অসুস্থ, দুর্বল আত্মীয়ের মতোই তার মমতা পেয়েছিল। তাই নদীর জল শুকিয়ে এলে নদেরচাঁদ পরমাত্মীয় মারা গেলে মানুষ যেভাবে কাঁদে ঠিক সেভাবেই কেঁদেছিল। অন্যদিকে স্টেশনমাস্টারি করতে এসে পরিচয় হওয়া গভীর, প্রশস্ত নদীটি ছিল নদেরচাঁদের পরমবন্ধু। একদিনও সে ওই নদীকে না দেখে থাকতে পারত না। নদীর স্রোতে নিজের স্ত্রীকে লেখা চিঠি ফেলে এক অদ্ভুত খেলায় নদেরচাঁদ মেতে উঠত।



২২. "আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে।"-কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে? নদীর এই খেপে যাওয়ার মধ্যে নদেরচাঁদ কোন্ সত্য উপলব্ধি করেছে?      


উত্তর: এখানে নদেরচাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছের নদীটির কথা বলা হয়েছে। 


বর্ষায় নদীটি টইটুম্বুর হয়ে উঠেছিল। প্রবল তার জলস্রোত। পরিপূর্ণতার আনন্দে সে যেন মাতোয়ারা। কোনো বাধা সে মানতে চায় না। উত্তাল জলের ঘূর্ণিতে পঙ্কিল আবর্ত সৃষ্টি হয়েছে। চার বছরের চেনা নদীকে সেদিন নদেরচাঁদের আরও বেশি ভয়ংকর এবং অপরিচিত বলে মনে হয়েছিল।



২৩. "চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই যেন আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল।"-কেন নদেরচাঁদের কাছে নদীর মূর্তি অপরিচিত বলে মনে হল আলোচনা করো?


উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃতাংশে নদেরচাঁদের স্টেশনমাস্টারি করতে এসে পরিচয় হওয়া বাঁধে বন্দি নদীটির কথা বলা হয়েছে। এই নদী ছিল গভীর, প্রশস্ত ও জলপূর্ণ। কিন্তু প্রবল বর্ষায় পাঁচ দিন সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি। পাঁচ দিন পরে গিয়ে নদেরচাঁদ দেখল, নদী যেন তার বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদ্রোহ করছে। নদীর গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে উঠেছে। নদীর এই ভয়ংকর রূপ নদেরচাঁদ আগে কখনও দেখেনি। তাই নদীকে তার অপরিচিত বলে মনে হয়েছিল।


২৪. "নদেরচাঁদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল।"-কী কারণে এদেরচাঁদের এমন অবস্থা হয়েছিল লেখো।


উত্তর: নদেরচাঁদ নদীকে বড়ো বেশি ভালোবাসত। বর্ষায় নদী জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। সে মুগ্ধ চোখে নদীর সেই রূপ দেখছিল। নদীর উন্মত্ত জলস্রোত পাগলের মতো ছুটে চলেছিল। জলস্তর এত উঁচুতে উঠে এসেছিল যে, নদেরচাঁদ হাত বাড়িয়ে তা ছুঁতে পারত। নদী যেন তখন পূর্ণযৌবনা। কোনো কিছু দিয়েই তার সেই গতি রোধ করা অসম্ভব। নদীর এই পরিপূর্ণ রূপ দেখে নদেরচাঁদের ভারি আমোদ বোধ হয়েছিল।



২৫. নদেরচাঁদ নদীর সঙ্গে যে খেলায় মেতে উঠেছিল, সেই খেলাটি কীরকম ছিল?


উত্তর: এক বর্ষার দিনে নদীর কাছে গিয়ে নদেরচাঁদ দেখল নদীর জল ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে এক ফেনিল আবর্ত তৈরি করেছে। সে পকেট থেকে অনেকদিন আগের একটা চিঠি বার করে নদীর স্রোতে ছুঁড়ে ফেলল। চোখের পলকে তা অদৃশ্য হয়ে গেল। এরপরে স্ত্রীকে লেখা চিঠির এক একটি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে-মুচড়ে সে নদীর মধ্যে ফেলতে লাগল আর নদীও যেন সেগুলি নিজের মধ্যে লুকিয়ে ফেলতে লাগল। এইভাবে নদেরচাঁদ নদীর সঙ্গে এক অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছিল।



২৬. "বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের"-কী কারণে নদেরচাঁদের ভয় করতে লাগল?


উত্তর: নদেরচাঁদ মুশলধারে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই নদীর পরিপূর্ণ রূপ দেখছিল। এরমধ্যেই চারিদিকে নেমে এল ঘন অন্ধকার। বৃষ্টি একটু থেমে আবার প্রবল বেগে শুরু হল। নদীর কলতান আর বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ মিলে সংগীতের ঐকতান সৃষ্টি করল। নদেরচাঁদের মন থেকে ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গেল। এরকম পরিবেশে তার সর্বাঙ্গ যেন অবশ, অবসন্ন হয়ে এল। নদীর রহস্যময়তা দেখে নদেরচাঁদের ভয় করতে লাগল।



২৭. "নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।” কার কথা বলা হয়েছে? নদীর বিদ্রোহের কারণ কী?     


উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।


পাঁচ দিন টানা বৃষ্টির পর নদীর কাছে গিয়ে নদেরচাঁদ দেখল নদীর পঙ্কিল জলস্রোত যেন রোষে ক্ষোভে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। নদীর জলস্রোত প্রায় ব্রিজের কাছাকাছি উঠে এসে ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে যেতে চাইছে। তা দেখে নদেরচাঁদ নদীর বিদ্রোহের কারণ বুঝতে পারল। তার মনে হল, নদী যেন তার এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে চাইছে, ফিরে পেতে চাইছে তার স্বাভাবিক গতি, আর তাই সে এভাবে বিদ্রোহ জানাচ্ছে।



২৮. "নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।”-কে বুঝতে পেরেছে? 'নদীর বিদ্রোহ' বলতে সে কী বোঝাতে চেয়েছে?      


উত্তর: উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদের বুঝতে পারার কথা বলা হয়ছে।


প্রবল বৃষ্টির কারণে পাঁচ দিন অদর্শনের পরে নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ চমকে ওঠে। তার মনে হয় নদী যেন খেপে গেছে। নদেরচাঁদ উপলব্ধি করে, নদীর ওপর তৈরি রং করা নতুন ব্রিজ, নদীর বাঁধ যেন নদীর প্রবাহের পথে প্রবল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী সেসব ভেঙে চুরমার করে দিতে চায়। নদী যেন উদ্দামতার মধ্য দিয়ে তার বিদ্রোহের প্রকাশ ঘটাচ্ছে।



২৯."পারিলেও মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে?”-কার, কী পারার কথা বলা হয়েছে? মানুষ কীভাবে তাকে রেহাই দেবে না?      


উত্তর: নদেরচাঁদ মনে করেছে যে, নদী ইচ্ছা করলে তার তীব্র জলস্রোতে মানুষের গড়া বাঁধ ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে।


একইসঙ্গে নদেরচাঁদের মনে হয়েছে, মানুষ নদীকেও রেহাই দেবে না। তারা আবার নতুন করে বাঁধ তৈরি করবে, প্রবহমান জীবন্ত নদীকে বন্দি করবে নিজেদের স্বার্থে। আবার নদীকে মেনে নিতে হবে এই বন্দিদশা। গভীর প্রশস্ত জলপূর্ণ নদী পরিণত হবে ক্ষীণস্রোতা নদীতে।



৩০. "... নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে।”—কীসের জন্য নদেরচাঁদের গর্ব অনুভব হয়েছে এবং কেন?      


উত্তর: স্টেশনের কাছে নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য নদেরচাঁদ দীর্ঘকাল গর্ব অনুভব করেছে।


কর্মক্ষেত্রের নদীটির সঙ্গে নদেরচাঁদের যে মনের যোগাযোগ সেখানে ব্রিজটিরও একটা ভূমিকা ছিল। ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্টে গাঁথা ধারকস্তম্ভের একেবারে শেষপ্রান্তে বসেই সে প্রতিদিন নদীকে দেখত। নদীর ওপরে নির্মিত উন্নত যন্ত্রসভ্যতার চিহ্ন ব্রিজটিকে নিয়ে নদেরচাঁদের গর্ব হয়েছিল।



৩১. "কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের?"-কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির তা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়েছে কেন?     


উত্তর: নদেরচাঁদের কর্মক্ষেত্রের কাছে অবস্থিত নদীটির ওপর যে কংক্রিটের ব্রিজ ছিল, এখানে সেই ব্রিজটির কথাই বলা হয়েছে।


আগে নদেরচাঁদ নদীর ওপর তৈরি নতুন রং করা ব্রিজটিকে নিয়ে গর্ব অনুভব করত। কিন্তু পরে বর্ষায় নদী জলে পরিপূর্ণ হলে নদেরচাঁদের মনে হল ব্রিজটি যেন নদীর পায়ের শেকল। ব্রিজের থামগুলো যেন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। যন্ত্রসভ্যতার ফসল কংক্রিটের ব্রিজটি নদীর স্বাধীন গতিকে রুদ্ধ করছে। তাই নদেরচাঁদের নতুন করে উপলব্ধি হয়েছিল যে, ওই ব্রিজটির কোনো প্রয়োজন ছিল না।



৩২. "বন্দি নদীকে ভালোবাসিয়াছে,"-এখানে কার ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে? কেন নদীকে বন্দি বলা হয়েছে?     


উত্তর: উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদের নদীর প্রতি ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে।


নদেরচাঁদের স্টেশনমাস্টারি করতে এসে পরিচিত হওয়া নদীটি ছিল গভীর, প্রশস্ত ও জলপূর্ণ। তার প্রবল গতিবেগ রুদ্ধ করা হয়েছিল বাঁধ দিয়ে, আর নদীর ওপরে ছিল একটি ব্রিজ। এই বাঁধ আর ব্রিজ যেন নদীর প্রবল জলস্রোতকে আটকে নদীকে বন্দি করে রেখেছিল।



৩৩. "বোধহয়, এই প্রশ্নের জবাব দিবার জন্যই...."-কোন্ প্রশ্ন? এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য কী হয়েছিল?     


উত্তর: নদীর কাছ থেকে ফেরার সময় নদেরচাঁদের মনে হয়েছিল-“কী প্রয়োজন ছিল ব্রিজের?"-এখানে এই প্রশ্নের কথাই বলা হয়ছে।


.এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্যই যেন যন্ত্র সভ্যতার প্রতীক ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষে দিয়ে চলে যায় স্টেশনের দিকে। বন্দি নদীটি তথা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার খেসারত এভাবেই দিতে হয় নদেরচাঁদকে।




    👉Paid Answer (For Membership User)


Editing By- Lipi Medhi