কোনি- মতি নন্দী
বিশ্লেষণধৰ্মী ও ব়চনাধৰ্মী প্ৰশ্ন ও উওব়
১ "হঠাৎ তার চোখে ভেসে উঠল '৭০' সংখ্যাটা”-কোন ঘটনায় এমন হয়েছিল? কোনির কাছে এই সংখ্যাটার তাৎপর্য কী ছিল?
উত্তর: কোনি একা চিপকের সুইমিং পুলে নিজের ইচ্ছেমতো অনুশীলন করে উঠে আসার সময় একটি মেয়ের মুখোমুখি হয়। পরিচয় হলে জানতে পারে তার নাম রমা যোশি। সেই সময়েই কোনির চোখে '৭০' সংখ্যাটা ভেসে ওঠে।
কোনির চোখে '৭০' সংখ্যাটা এক গভীর তাৎপর্য নিয়েই ভেসে উঠেছিল। এই সংখ্যাটা আসলে '৭০' সেকেন্ড। মহারাষ্ট্রের সাঁতারু রমা যোশি ৭০ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করে রেকর্ড তৈরি করেছিল। এই রমা যোশিই ছিল কোনির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই ক্ষিতীশ সিংহ কোনির অনুশীলনের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক, হিসেবি এবং কঠোর হয়ে উঠেছিলেন। তিনি কোনির প্রতিদিনের অনুশীলনের পাশাপাশি তার খাওয়া, বিশ্রাম, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সব কিছুতে নজর রাখা শুরু করেছিলেন। ক্ষিতীশ কালিতে বড়ো বড়ো অক্ষরে '৭০' সংখ্যাটা লিখে ক্লাবের বারান্দার দেয়ালে রেখে কোনিকে উৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন। প্রতিদিন চোখের সামনে ওই সময়টি কোনিকে দেখিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, "এক মিনিট ১০ সেকেন্ডে কোনিকে এই বছরই সাঁতরাতে হবে।" অসম্ভবকে সম্ভব করতেই হবে। সময়ই যে কোনির একমাত্র শত্রু তা প্রতিমুহূর্তে ওই সংখ্যাটি সামনে রেখে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন। চিপকে আচমকা রমা যোশির সাথে পরিচয়ে যখন কোনির মনে প্রথম ভেসে উঠল '৭০' সংখ্যাটা, তখনই বোঝা যায়, ক্ষিতীশ তাঁর উদ্দেশ্যে অনেকখানি সফল হয়েছেন।
২ "আপনারা ক্ষিতীশ সিঙ্গিকে জব্দ করার জন্য ওকে ভিক্টিমাইজ করলেন।” বক্তা কে? ক্ষিতীশ সিংহকে জব্দ করার জন্য কাকে কীভাবে ভিক্টিমাইজড করা হয়েছিল?
উত্তর: আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বক্তা বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাব তথা হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাস।
প্রণবেন্দু বিশ্বাসের ধারণা হয়েছিল ক্ষিতীশ সিংহকে জব্দ করার জন্য কোনিকে ভিক্টিমাইজ করা হয়েছে। জুপিটারের ধীরেন ঘোষদের সঙ্গে অনেক লড়াই করে প্রণবেন্দু বিশ্বাস কোনিকে বাংলা দলে ঢুকিয়েছিলেন। কিন্তু হরিচরণ-ধীরেন ঘোষরা চক্রান্ত করে কোনিকে প্রতিযোগিতায় নামার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। যদিও প্রকাশ্যে হরিচরণরা সংগঠকদের ওপরেই দায় চাপায়। এদিকে হিয়া মিত্র ২০০ ও ৪০০ মিটারে না নামার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যখন হরিচরণ প্রণবেন্দুর বিরুদ্ধে বাংলার কথা না ভাবার অভিযোগ আনে। তখন প্রণবেন্দু গ্যালারিতে বসা কোনির দিকে আঙুল তুলে বলে হরিচরণরা যদি বাংলার কথা ভাবত তাহলে কোনি গ্যালারিতে বসে থাকত না। ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ঘৃণ্য চক্রান্ত করে কোনিকে দল থেকে বাদ দিতে সচেষ্ট হয়েছিল ধীরেন ঘোষরা, তা সফল না হওয়ায় প্রতিযোগিতায় নামার সুযোগ থেকেই কোনিকে বঞ্চিত করা হয়। ধীরেন ঘোষ কোনিকে সান্ত্বনা দেন, "মন খারাপ করিসনি ন্যাশানাল তো বছর বছরই হয়, সামনের বছর আবার আসবি।" এই লোক-দেখানো সহানুভূতির আড়ালে যে ষড়যন্ত্র ছিল প্রণবেন্দু বিশ্বাস তা স্পষ্ট করে দেন।
৩ মাদ্রাজ জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ অনুষ্ঠান কীভাবে জমে উঠেছিল লেখো?
উত্তর: মাদ্রাজ জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার শেষ দিনে শেষ প্রতিযোগিতা ৪×১০০ মিটার রিলেতে। ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে না পারলে বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব ছিল না। অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার শেষ ভরসা হয়ে ওঠে কোনি। কিন্তু উপেক্ষিত কোনি কুদ্ধ কণ্ঠে 'আমি নামব না' বলে প্রতিবাদ জানায়। হিয়া কোনিকে 'আনস্পোরটিং' (আনস্পোর্টিং) বললে কোনির ভিতরের সংগ্রামী খেলোয়াড়ের সত্তা জেগে ওঠে। বাংলার হয়ে শুরুটা করে হিয়া। পরবর্তী প্রতিযোগী পুষ্পিতাকে তিন মিটার এগিয়ে থাকার সুযোগ দিয়ে হিয়া নিজের রাউন্ড শেষ করে। বাংলার পরবর্তী প্রতিযোগী বেলা যথাসাধ্য চেষ্টা করে এবং বিপক্ষ প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে দেয়। বাংলার চতুর্থ প্রতিযোগী কোনি জলে নামার ঠিক আগেই বিধ্বস্ত ক্ষিতীশ সিংহ উপস্থিত হন। তাঁর গলায় আবার শোনা যায় "ফাইট, কোনি ফাইট।" মহারাষ্ট্রের রমা যোশির তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্যান্থারের ক্ষিপ্রতায় ধাওয়া করে কোনি রমা যোশির আগেই বোর্ড স্পর্শ করে। ভিকট্রি স্ট্যান্ডে কোনির গলায় ঝোলানো হয় সোনার মেডেল। এই মেডেল হয়ে ওঠে এতদিনের সব অপমানের জবাব।
৪ মাদ্রাজে দুটি ঘটনার আকস্মিকতা কোনিকে বিভ্রান্ত এবং ব্যথিত করেছিল। এই ঘটনা দুটি সম্পর্কে সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখো?
উত্তর: মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়ন প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে গিয়ে দুটি ঘটনা কোনিকে হতবাক, ব্যথিত এবং বিভ্রান্ত করে।
কোনি অনেক স্বপ্ন নিয়ে মাদ্রাজ গিয়েছিল বাংলা দলের সাঁতারু হিসেবে। কিন্তু প্রশিক্ষক হরিচরণ মিত্তির কোনিকে জানান, যে চারটে ইভেন্টে তার নাম পাঠানো হয়েছিল, তার কোনোটাতেই তার নাম ওঠেনি। এই কথাগুলো কোনির কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই ছিল। একইভাবে কোনিকে দেওয়া হয় ক্রিম চুরির অপবাদ। হোটেলের বাইরে যাওয়ার সময় বেলা এই সন্দেহ প্রকাশ করে যায় যে তার ক্রিমের কৌটো থেকে ক্রিম কেউ মেখে নিয়েছে। কোনি ছাড়া ঘরে যখন আর কেউই ছিল না তখন হিয়া বেলার ক্রিম কিছুটা মেখে নেয় ও জোর করে কোনির মুখেও কিছুটা লাগিয়ে দেয়। ফিরে এসে আবার ক্রিম কম দেখে বেলা কোনিকেই অভিযুক্ত করে। কোনির গালে ক্রিমের গন্ধ পেয়ে চোর ধরার আবিষ্কারে উত্তেজিত হয়ে ওঠে সকলো। বিস্মিত কোনি প্রকৃত ঘটনা বললেও সে-কথা বিশ্বাস না করে তার গালে চড় মারে বেলা। সত্য বিচার না করেই সবাই কোনিকে নিয়ে হাসাহাসি করে। এই দুটি ঘটনা কোনিকে বিভ্রান্ত, অপমানিত এবং ব্যথিত করে তুলেছিল।
৫ "অভিনন্দন আর আদরে সে ডুবে যাচ্ছে।"-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? অভিনন্দন আর আদরের কারণ বিশ্লেষণ করো?
উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে গৃহীত। আলোচ্য অংশে কোনির কথাই বলা হয়েছে।
মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় কোনি বাংলা দলে সুযোগ পেয়েছিল। সেইমতো বাংলার অন্য সাঁতারুদের সঙ্গে কোনিও যায় মাদ্রাজে। কিন্তু সেখানেও আগের মতোই সে চক্রান্তের শিকার হয়। কোনো প্রতিযোগিতাতেই তাকে নামানো হয় না। শেষপর্যন্ত দায়ে পড়ে, প্রায় বাধ্য হয়েই তাকে ৪×১০০ মিটার রিলেতে নামানো হয়। এই প্রতিযোগিতায় জিততে না পারলে বাংলা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না। আড়ষ্টতা নিয়েও কোনি শেষপর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় নামে। তারপর শুরু হয় প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ সাঁতার। শেষে সকলকে অবাক করে দিয়ে কোনি চ্যাম্পিয়ন হয়। সে হারিয়ে দেয় প্রখ্যাত সাঁতারু রমা যোশিকে। কোনির এই সাফল্যে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে উপস্থিত দর্শকরা। সবাই এসে বাহবা দিতে থাকে কোনিকে। রমা যোশিও তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে যায়। কোনিকে ঘিরে একটা ভিড়ের বৃত্ত রচিত হয়। বাংলার মেয়েরাও তাকে অভিনন্দন জানাতে আসে। জুপিটারের ধীরেন ঘোষ পর্যন্ত আবেগে কোনিকে জড়িয়ে ধরেন। এভাবেই অভিনন্দন আর আদরে কোনি ডুবে যেতে থাকে।
৬ "ওইটেই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি।"-কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো?
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটি মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাস থেকে গৃহীত হয়েছে। মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ দিনের ৪×১০০ মিটারে রমা যোশির মতো প্রখ্যাত সাঁতারুকে হারিয়ে কোনি জয়লাভ করে। কোনিকে অভিনন্দন জানাতে আসা বহু মানুষের ভিড়ে সে ক্ষিতীশকে দেখতে পায়নি। শেষে ক্ষিতীশকে দেখতে পেয়ে সে রেগে গিয়ে তার বুকে দুমদুম করে ঘুসি মারতে থাকে আর বলে যে, সে যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছিল। এই কথার প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
দীর্ঘদিনের কঠিন পরিশ্রমের ফল পেয়েছে কোনি। এই কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্যই ক্ষিতীশ সংসার ভুলেছেন, নিজের ব্যক্তিসুখ বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁকে বহু লাঞ্ছনা-অপমান সহ্য করতে হয়েছে। তবু তিনি কখনও ভেঙে পড়েননি। ক্ষিতীশ সবসময় বুকের মধ্যে অনুভব করেছেন জুপিটারের সতীর্থদের কাছ থেকে পাওয়া অপমানের তীব্র যন্ত্রণা। হয়তো এই যন্ত্রণাটা না থাকলে ক্ষিতীশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারতেন না, তৈরি করতে পারতেন না কোনিকে। ক্ষিতীশ নিজেই যেন একটা প্রতিজ্ঞার নাম। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ক্ষিতীশের প্রচেষ্টা আর ধৈর্য ছিল অবিচল। যন্ত্রণার আগুনে পুড়ে ক্ষিতীশ হয়ে উঠেছেন ইস্পাতকঠিন। আলোচ্য উক্তিটি প্রকৃতপক্ষে ক্ষিতীশের সংগ্রামী চেতনারই উদ্ভাসিত রূপ।
৭ "ওইটেই তো আমি রে, যন্ত্রণাটাই তো আমি।”-বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো?১+৪
উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন ক্ষিতীশ সিংহ।
৮ "পাগলাটে একটা লোকের বুকে মুখ ঘষতে ঘষতে ফোঁপাচ্ছে যে মেয়েটি এইমাত্র আশ্চর্য সাঁতার দিল, আর তার মাথায় টপটপ করে জল ঝরে পড়ছে।"-উপন্যাসের শেষের এই ছবিটি তোমার ভাষায় বর্ণনা করো?
উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি একটি অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস। "গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে" এবং "চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে শুধু শিষ্যকেই নয়, গুরুকেও কঠোর জীবনযাপন করতে হবে" এই দুই ভাবনা যে মানুষটির মনে সদা জাগ্রত ছিল তিনি হলেন কোনির সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ। সাঁতার-অন্তপ্রাণ ক্ষিতীশ সংসারের কথা বিন্দুমাত্র না ভেবে তিলে তিলে বস্তির দরিদ্র মেয়ে কোনিকে চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু হিসেবে গড়ে তোলেন। তাঁরই হাতে গড়া কোনি মাদ্রাজ জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় শত অপমান, শত লাঞ্ছনার জবাব দিয়ে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করে। উপন্যাসের শেষ অংশে দেখা যায় সোনার মেডেল পরা মেয়েটি নিজেকে সম্পূর্ণ সঁপে দিয়েছে তার গুরুর কাছে। গুরুও তার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করে সুদূর মাদ্রাজে উপস্থিত হয়েছিলেন। একটা ময়লা পাঞ্জাবি পরে দুর থেকেই "ফাইট, কোনি ফাইট" মন্ত্রে কোনিকে ক্ষিতীশ উজ্জীবিত করে চলেছিলেন। শীর্ণ শরীরের একটা পাগলাটে লোকের বুকে মুখ ঘষতে ঘষতে কোনি তার সমস্ত যন্ত্রণা, আনন্দ, অভিমান, বঞ্চনা উজাড় করে নিজে মুক্ত হয়েছে। ক্ষিতীশও সমস্ত বঞ্চনা ও বিদ্রুপের উপযুক্ত জবাব দিয়ে তৃপ্তি লাভ করেছেন।
৯ "দেখা যাক সত্যিই ফুরিয়ে গেছে কিনা, অমিয়া ভাবল, কাল আমাকে দেখাতেই হবে।”-এই উক্তির মধ্য দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে যাওয়ার হাহাকার কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে অমিয়া ছিল বাংলা দলের মেয়েদের মধ্যে সেরা সাঁতারু। বেঙ্গল চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড তার দখলেই ছিল। কিন্তু মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার ২০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল এবং ১০০ মিটার বাটারফ্লাইতে অমিয়া পিছিয়ে পড়ে। প্রথমটিতে অমিয়া তৃতীয় স্থান অধিকার করে। ৪০০ মিটার প্রতিযোগিতাতেও অমিয়া রমা যোশির কাছে হেরে যায়। অমিয়া যখন বাংলাকে হতাশ করতে শুরু করে ঠিক সেইসময় হিয়া মিত্র সেই জায়গায় উঠে আসে। ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে হিয়া প্রথম বাংলাকে সোনা এনে দেয়। ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকেও হিয়া সোনা জেতে। এর ফলে বাংলার ভাগ্য নির্ভরশীল হয়ে পড়ে হিয়ার ওপর। অমিয়া উপলব্ধি করে যে "তার মাথা থেকে মুকুট তুলে নিয়েছে হিয়া।" এবার সব প্রশংসা, সব মনোযোগ হিয়ার প্রাপ্য। হিয়াই এবার সকলের মধ্যমণি হবে, "তার দিন ফুরিয়ে গেছে।” শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার তাগিদ থেকেই অমিয়া ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল এবং ৪×১০০ রিলেতে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে। শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে যাওয়ার যে যন্ত্রণা তা অমিয়ার ভাবনায় এখানে ধরা পড়েছে।
১০ "জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে"-কোনির এই অভিমানের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করো?
উত্তর: মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়ন প্রতিযোগিতায় কোনি বাংলা দলে সুযোগ পেলেও আসল সময়ে তাকে চক্রান্ত করে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ট্রেনে যাত্রা থেকে শুরু করে হোটেল পর্যন্ত সবাই কোনিকে অবহেলার চোখে দেখেছে। বাংলার সম্মান বাঁচানোর জন্য দায়ে পড়ে ৪×১০০ মিটার রিলে প্রতিযোগিতায় কোনিকে নামতে বলা হল সে অভিমানে আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
মাদ্রাজে প্রতিযোগিতার শেষ বিষয় ছিল ৪×১০০ মিটার রিলে। মহারাষ্ট্র তখন তিন পয়েন্টে এগিয়ে। বাংলাকে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করতেই হবে। নাহলে চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন সফল হবে না। অমিয়া অসুস্থ থাকার জন্য বিকল্প সাঁতারু হিসেবে কোনির ডাক পড়ে। বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার শেষ ভরসা হয়ে ওঠে কোনি। কিন্তু বঞ্চনা আর অবহেলায় অভিমানী কোনি জলে নামতে চায় না। এই সময় হিয়া কোনিকে 'আনস্পোর্টিং' বলে অপমান করলে কোনির মাথায় জেদ চেপে যায়। দাঁতে দাঁত চেপে, চোয়াল শক্ত করে কোনি নেমে পড়ে জলে। মহারাষ্ট্রের প্রখ্যাত সাঁতারু রমা যোশির ঝাঁপ দেওয়ার তিন সেকেন্ড পরে কোনি জলে ঝাঁপ দেয়। তবুও তীব্র মনোবল আর হৃদয়ে পুষে রাখা অভিমানকে সম্বল করে কোনি রমা যোশিকে পিছনে ফেলে দেয়। ক্ষিতীশের মরিয়া চিৎকার 'ফাইট, কোনি ফাইট' শেষপর্যন্ত সত্যে পরিণত হয়। কোনির গলায় ওঠে সোনার মেডেল, তা যেন সমস্ত অপমানের জবাব।
সামগ্ৰিক বিষয়ভিওিক প্ৰশ্নোওব়
১ কোনি রচনার নামকরণ কতদূর সার্থক হয়েছে বিচার করো?
উত্তর: বাংলা সাহিত্য়ে কেন্দ্ৰীয় চব়িএেব় নামানুসাবে গল্প-উপন্য়াস নামকরণের রীতি বিশেষভাবে প্রচলিত। মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসটিও সেই চরিত্রকেন্দ্রিক নামকরণের রীতিকেই অনুসরণ করা হয়েছে।
কোনি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ের কাহিনি। কঠিন পরিশ্রম ও সমস্যার সাথে মোকাবিলা করে কীভাবে সে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছে, সেই কাহিনিই এই উপন্যাসটি জুড়ে আছে।
পারিবারিক দারিদ্র্য বারবার কোনির স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। অসহায় মেয়েটিকে নামকরা সাঁতারু বানানোর প্রতিজ্ঞায় মনপ্রাণ ঢেলে দিয়েছিলেন ক্ষিতীশ সিংহ। “ফাইট কোনি, ফাইট”-এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে কোনির সঙ্গে তিনিও হয়ে উঠেছেন জীবনযুদ্ধের এক জন 'ফাইটার'। শেষপর্যন্ত যাবতীয় অবহেলা, বঞ্চনা, ষড়যন্ত্র আর সীমাহীন দারিদ্র্যকে উপেক্ষা করে কোনি পৌঁছে গেছে সাফল্যের চূড়ায়। ক্ষিতীশও দেখেছেন দীর্ঘ আঁধার শেষে ভোরের লাল আলো ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর স্বপ্নের ভূমিতে। গঙ্গার ঘাট থেকে কুড়িয়ে আনা কোনি একদিন জাতীয় সাঁতারে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ান করেছে। আর তার আড়ালে থেকেছে তার খিদের যন্ত্রণা, চোয়াল চাপা লড়াই, অজস্র ষড়যন্ত্র ইত্যাদি। সমগ্র উপন্যাসে কোনির জীবনসংগ্রামের এই বাস্তব গল্পটি সুসংহত প্লট তৈরি করেছে। তাই উপন্যাসটির নামকরণ যথাযথ ও সার্থক হয়েছে।
২ কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও? অথবা, লীলাবতী চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো?
উত্তর:
৪ কোনি উপন্যাসে লেখকের যে সমাজসচেতন দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায় তা নিজের ভাষায় লেখো?
উত্তর: শুরুর কথা: মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসটিতে সাঁতার ও সাঁতারকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর সমাজের ছবি ফুটে উঠেছে। গোষ্ঠী রাজনীতির শিকার: উপন্যাসটিতে দেখা যায় ক্লাবের গোষ্ঠী রাজনীতির শিকার হন সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ। লড়াই ও সংগ্রাম: একইসাথে শুরু হয় ক্ষিতীশের অন্য এক লড়াই। শ্যামপুকুরের বস্তিতে থাকা হতদরিদ্র, প্রায় অশিক্ষিত, কালো, শীর্ণকায় কোনির মধ্যেই তিনি সমস্ত লড়াই ও সংগ্রামের অস্ত্র খুঁজে পান। অভাব ও প্রতিকূলতা: এই লড়াই শুধু ক্ষিতীশের স্বপ্নপূরণের নয়, এই লড়াই অভাব ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধেও। ডিম-কলা খাওয়ার পরিবর্তে ক্ষিতীশ সিংহের থেকে পয়সা নিয়ে যখন কোনি
সেটা দিয়ে তাব় পব়িবাব়কে সাহায্য় কব়তে চায় তাব় মাধ্য়মে অভাবেব় তীব্ৰতম ব়ূপই প্ৰকাশিত হয়। অভাবেব় কাব়ণেই কোমিব় দাদা কমলেব় মতো প্ৰতিভাব় মৃত্য়ু ঘটে যায়। অথনৈতিক বিভাজন: মুখ দিয়ে যখন লেখক বলেন "বড়োলোকরা গরিবদের ঘেন্না করে", তখন সমাজের অর্থনৈতিক বিভাজনটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অবহেলিত কোনির ওপরেই যখন সমগ্র বাংলার সম্মান নির্ভর করে, তখন কোনি বলে "আমি গরীব, আমাকে দেখতে খারাপ, লেখাপড়া জানি না, কত কথা শুনলাম।...এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে।" শেষের কথা: সমগ্র সমাজের বিরুদ্ধে এ হল কোনির প্রতিবাদ। তার সাফল্য যেন সমস্ত অন্যায় বৈষম্যের উপযুক্ত জবাব হয়ে উঠেছে।
৫ লড়াকু এবং অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস হিসেবে কোনি তোমার মনকে কতটা স্পর্শ করেছে লেখো?
উত্তর:
৯ প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো?
উত্তর: কথামুখ: মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দু বিশ্বাস একটি পার্শ্বচরিত্র হওয়া সত্ত্বেও নিজস্বতায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছেন।
দক্ষতা ও বিচক্ষণতা: প্রণবেন্দু বিশ্বাস একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষক। এই দক্ষ সাঁতার প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণে হিয়া মিত্র বাংলার অন্যতম সেরা সাঁতাবুতে পরিণত হয়। ঠিক তেমনই বিচক্ষণতা দিয়ে কোনির মতো প্রতিভাকে চিনতেও ভুল করেননি।
সৎ ও নিরপেক্ষ: প্রণবেন্দুর সৎ ও নিরপেক্ষ মানসিকতার জন্যই কোনি মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় বাংলা দলে সুযোগ পায়। তিনিই প্রতিবাদী কণ্ঠে বলেন "বেঙ্গলের স্বার্থেই কনকচাঁপা পালকে টিমে রাখতে হবে।” ক্লাবের সংকীর্ণ দলাদলি ও হীন চক্রান্তের ঊর্ধ্বে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
দৃপ্তকণ্ঠী: হিয়ার ট্রেনার হওয়া সত্ত্বেও কোনির পক্ষ নিয়ে তিনি বলেছিলেন যে, "যে রকম রোখা জেদী সাঁতার ও দেখাল, তাতে স্প্রিন্ট ইভেন্টে ওর সমকক্ষ এখন বাংলায় কেউ নেই।” মাদ্রাজে বাংলার চ্যাম্পিয়ন হওয়া বং অনিশ্চিত হয়ে পড়লে প্রণবেন্দু দৃপ্তকণ্ঠে বলেন "ভাবাভাবির কিছু নেই, কনকচাঁপা পালকে নামান, অমিয়ার জায়গায়।"
স্বাজাত্যবোধ: বাংলার সম্মানের জন্যই যে কোনিকে প্রয়োজন তা দৃপ্তকণ্ঠে জানান প্রণবেন্দু। বাংলার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থেকেই তিনি বলেন "রমা যোশির সোনা কুড়োনো বন্ধ করা ছাড়া আমার আর কোনো স্বার্থ নেই।” উপন্যাসে উল্লেখিত প্রণবেন্দু বিশ্বাস তাই সততা, প্রতিবাদ এবং বিচক্ষণতার মিশেলে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
১০. দারিদ্র্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো?
উত্তর: কথামুখ: মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কনকচাঁপা পাল। কোনির লড়াই ছিল একইসঙ্গে সংসারে দারিদ্র্যের সঙ্গে অন্যদিকে জলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে। স্বাভাবিক জড়তা: অভাবের সংসারে দাদার মৃত্যুর পর কোনির বুক ঠেলে একটিই প্রশ্ন ওঠে "এবার আমরা কী খাব?” আর এই খিদের যন্ত্রণাই কোনিকে সর্বত্র তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। কখনও তা নেহাতই বেঁচে থাকার খিদে কখনও-বা তা জেতার খিদে। গরিব ঘরে জন্ম হওয়ায় স্বাভাবিক একটা জড়তা অনেকের মধ্যেই থাকে। কোনিও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই অমিয়া বা হিয়ার মতো মেয়েদের কথাবার্তা আর কাজকর্মে সে সহজেই অপমানিত বোধ করে। শ্রেষ্ঠত্বের পদকপ্রাপ্তি: হিয়ার 'আনস্পোর্টিং' শব্দটা কোনিকে বিজয়িনীর মঞ্চে পৌঁছে দিয়েছে। কোনি জেদি, একরোখা, পরিশ্রমী আর কষ্টসহিয়। জীবনে ও জলে সর্বত্রই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত সে জেতে। শত বঞ্চনা, অজস্র অপমানের পরও সাফল্যের পদক ঝোলে কোনিরই গলায়। লড়াকু ও পরিশ্রমী মানসিকতা: সমস্ত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে, কঠোর জীবনযাপন করে কোনির জীবনে এসেছে সাফল্য। ক্লাবের রাজনীতি, চূড়ান্ত অপমান, অবহেলার বিপক্ষে সে শুধুই অনুশীলন চালিয়ে গেছে। লড়াকু,পরিশ্রমী মানসিকতা তাকে বিজয়িনী করে তুলেছে।
১১. ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে সাঁতারের চ্যাম্পিয়ন করানোর জন্য যে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন তার পরিচয় দাও? অথবা, ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল সে সম্পর্কে আলোচনা করো?
উত্তর: নির্দেশক ও অনুপ্রেরণা: গঙ্গার ঘাট থেকে মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতাব প্ৰতিযোগিতাব় ভিকট্ৰি স্ট্য়ান্ড পৰ্যন্ত কোনিব় যে যাএা সেখানে ক্ষিদ্দাই কোনির প্রথম ও প্রধান নির্দেশক ও অনুপ্রেরণা। অনুশীলনের ব্যবস্থা: ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করানোর জন্য কঠোর অনুশীলনই ব্য়বস্থা কব়েছিলন। এই অনুশীলনে সাঁতাব়েব় বিভিন্ন কৌশল ক্ষিতীশ কোনিকে শিখিয়েছিলেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ছ-টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত কোনির প্র্যাকটিস চলত। ছকে বাঁধা জীবন: ক্ষিতীশ কোনির জীবনযাত্রাকে একটা ছকে বেঁধে দিয়েছিলেন। কোনি কখন কী কী খাবে সেই ব্যাপারেও ক্ষিতীশ নিয়ম জারি করেছিলেন। কোনিকে প্রতিদিন দুটো ডিম, দুটো কলা এবং দুটো টোস্ট খাওয়ার কথা ক্ষিতীশ বলেন। এগুলি কোনিকে খেতে দেওয়ার বদলে আরও এক ঘণ্টা কোনির জলে থাকতে হবে বলে ক্ষিতীশ জানান। অমানুষিক পরিশ্রম: লোভ দেখিয়ে অমানুষিক পরিশ্রম করিয়ে নেওয়া অন্যায় জেনেও যন্ত্রণা আর সময় দুটোকেই হারানোর জন্য ক্ষিতীশ এমনটা করেছিলেন। কোনি টিফিনের বদলে টাকা চাইলে ক্ষিতীশ আর কোনির মধ্যে বোঝাপড়া হয়। ক্ষিতীশ কোনিকে নানা উদাহরণ দিয়ে তাকে উজ্জীবিত করেন। সফলতা অর্জন: ক্ষিতীশই দেয়ালে '৭০' লিখে টাঙিয়ে দিয়ে কোনির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে দিনের পর দিন কোনির এই কঠোর অনুশীলনই তাকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যায়।
১২. কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও?
উত্তর: শুরুর কথা: মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনি। উপন্যাসে তাদের দারিদ্র্যপীড়িত পারিবারিক জীবনের করুণ কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। অভাবী সংসার: পিতার মৃত্যুর পর কোনির দাদা কমল তাদের সংসারের হাল ধরেছে। একটা গারেজে মাসে দেড়শো টাকা মাইনেতে কমল কাজ করে। এই সামান্য আয়েই মা আর ভাই-বোনদের মুখে সে খাবার তুলে দেয়। বাসস্থান: থাকার জন্য উপযুক্ত ঘরও কোনিদের নেই। একটামাত্র তক্তাপোশ, তাতেও তোশক নেই। শুধু চিটচিটে ছোটো কয়েকটা বালিশ। দেয়ালের দড়িতে টাঙানো জামা-প্যান্ট। তাদের খোলার চালের ঘরে একটিমাত্র জানালা। তার নীচে থকথকে পাঁকে ভরা নর্দমা। দারিদ্র্যের: চাপ: কমল নিজেও স্বপ্ন দেখত একদিন সে বড়ো সাঁতারু হবে। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর দারিদ্র্যের চাপে তার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। সে জানে কোনির ভিতর লুকিয়ে আছে প্রতিভা। কিন্তু সাধ থাকলেও কমলের সাধ্য নেই। দু-বেলা দু-মুঠো খাবার জোগাড় করাই তারপক্ষে কঠিন। কঠিন রোগে আক্রান্ত কমলের লড়াইও মৃত্যুতে শেষ হয়ে গিয়েছে। রোজগারহীন সংসারে সাহায্যের হাত: সম্পূর্ণ রোজগারহীন কোনিদের সংসারে এরপর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ক্ষিতীশ। 'প্রজাপতি' দোকানে কাজ করে কোনি পায় চল্লিশ টাকা। অপরদিকে ছাঁট কাপড় কেটে কোনির মায়ের সামান্য আয় হয়। এভাবেই দারিদ্র্যকে নিত্যসঙ্গী করে নিয়ে কোনিদের সংসার চলতে থাকে।