Lesson 6

বহুরূপী

-------------------------------------

👉Paid Answer (For Membership User)


 [MCQ] 


১. জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী কত দিন ধরে ছিলেন?

ক) আট দিন

খ) সাত দিন

গ) চার দিন

ঘ) দশ দিন

উত্তর: খ) সাত দিন

 

২. সন্ন্যাসী কোথায় থাকতেন

ক) হিমালয়ের গুহাতে

খ) জঙ্গলে

গ) মানস সরোবরের কাছে

ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: ক) হিমালয়ের গুহাতে

 

৩. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স আনুমানিক-

ক) একশো বছর

খ) পাঁচশো বছর 

গ) হাজার বছরের বেশি

ঘ) দু-হাজার বছর

উত্তর: ঘ) দু-হাজার বছর

 

৪. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসী সারা বছর কী খেতেন

ক) একটি আমলকী 

খ) একটি হরীতকী 

গ) চারটি রুটি

ঘ) দুধ ও সাবু

উত্তর: খ) একটি হরীতকী

 

৫. "সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস"-দুর্লভ জিনিসটি

ক) সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ 

খ) সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য 

গ) সন্ন্যাসীর পদধূলি 

ঘ) সন্ন্যাসীর উপদেশ

উত্তর: গ) সন্ন্যাসীর পদধূলি

 

৬. কীসের জন্য হরিদার আক্ষেপ ছিল

ক) সন্ন্যাসীর সঙ্গে না থাকতে পারার

খ) সন্ন্যাসীকে নিজের বাড়ি এনে রাখতে

গ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার না পারার 

ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তর: গ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার

 

৭.  জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলায় ফেলেছিলেন-

ক) পাঁচশো টাকা

খ) পঞ্চাশ টাকা

গ) দুশো টাকা 

ঘ) একশো টাকা

উত্তর: ঘ) একশো টাকা

 

৮. সন্ন্যাসীকে নতুন খড়ম দিয়েছিলেন-

ক) অনাদি 

খ) জগদীশবাবু 

গ) ভবতোষ 

ঘ) হরিদা

উত্তর: খ) জগদীশবাবু

 

৯. জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর কাঠের খড়মে লাগিয়েছিলেন-

ক) রূপোর বোল 

খ) মুক্তোর বোল

গ) মূল্যবান রত্নের বোল

ঘ) সোনার বোল

উত্তর: ঘ) সোনার বোল

 

১০. সন্ন্যাসী নিজের পায়ের ধুলো দেন- 

ক) অনাদিকে 

খ) হরিদাকে 

গ) জগদীশবাবুকে 

ঘ) ভবতোষকে

উত্তর: গ) জগদীশবাবুকে

 

১১. সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদার মুখভঙ্গি কীরকম হয়েছিল

ক) উৎফুল্ল 

খ) কৌতূহলী 

গ) গম্ভীর

ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তর: গ) গম্ভীর

 

১২. কথকদের আড্ডা বসত-

ক) হরিদার ঘরে 

খ) জগদীশবাবুর বাড়িতে 

গ) রাস্তার ধারে 

ঘ) ভবতোষের দালান বাড়িতে

উত্তর: ক) হরিদার ঘরে

 

১৩. হরিদার ঘরে আড্ডা দিতেন-

ক) চার জন 

খ) পাঁচ জন 

গ) সাত জন 

ঘ) তিন জন

উত্তর: ক) চার জন

 

১৪. হরিদার অবস্থা কেমন ছিল

ক) নিম্নমধ্যবিত্ত 

খ) মধ্যবিত্ত 

গ) গরিব 

ঘ) বড়োলোক

উত্তর: গ) গরিব

 

১৫. কোন্ বিষয়ে হরিদার ভয়ানক আপত্তি ছিল?

ক) বহুরূপী সাজতে 

খ) একঘেয়ে কাজ করতে 

গ) অভাব সহ্য করতে

ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তর: খ) একঘেয়ে কাজ করতে

 

১৬. কীভাবে হরিদা অল্প কিছু রোজগার করতেন

ক) গান গেয়ে 

খ) বহুরূপী সেজে 

গ) দোকানে কাজ করে 

ঘ) স্কুলে পড়িয়ে

উত্তর: খ) বহুরূপী সেজে

 

১৭. বিচিত্র সব ছদ্মবেশ ধারণ করে বহুরূপী সাজতেন-

ক) অনাদি 

খ) জগদীশবাবু 

গ) ভবতোষ 

ঘ) হরিদা

উত্তর: ঘ) হরিদা

 

১৮. যারা বহরূপী বেশে হরিদাকে চিনতে পারে তারা কী করে

ক) খেলা দেখাতে বলে

খ) গান শোনাতে বলে 

গ) তাদের বহুরূপী সাজ শিখিয়ে দিতে বলে 

ঘ) এক আনা বা দু-আনা বকশিশ দেয়

উত্তর: ঘ) এক আনা বা দু- আনা বকশিশ দেয়

 

১৯. পাগলকে দেখে আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল- 

ক) বাসস্ট্যান্ডের কাছে 

খ) অটোস্ট্যান্ডের কাছে 

গ) হরিদার বাড়ির কাছে 

ঘ)  জগদীশবাবুর দালান বাড়িতে

উত্তর: ক) বাসস্ট্যান্ডের কাছে

 

২০. বাস ড্রাইভারের নাম ছিল-

ক) হরি 

খ) জগদীশ 

গ) কাশীনাথ 

ঘ) দেবনাথ

উত্তর: গ) কাশীনাথ

 

২১. "খুব হয়েছে হরি, এই বার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও।"-এ কথা বলেছে 

ক) ভবতোষ 

খ) অনাদি 

গ) কাশীনাথ 

ঘ) জনৈক বাসযাত্রী 

উত্তর: গ) কাশীনাথ

 

২২. কীসের ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার একটু বেশি হয়েছিল

ক) পুলিশ

খ) বাউল

গ) কাপালিক

ঘ) বাইজি

উত্তর: ঘ) বাইজি়

 

২৩. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল- 

ক)  বারো টাকা আট আনা 

খ)  দশ টাকা সাত আনা

গ) আট টাকা দশ আনা

ঘ)  মাত্র পাঁচ টাকা

উত্তর: গ) আট টাকা দশ আনা

 

২৪. হরিদা বাইজি সাজলে তাঁকে একটা সিকি দিয়েছিল- 

ক) ভবতোষ 

খ) বাসের ড্রাইভার মাস্টার 

গ) দোকানদাব 

ঘ)  স্কুলের

উত্তর: গ) দোকানদাব 

 

২৫. হরিদা কী সেজে লিচু বাগানে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন? 

ক)  স্কুলমাস্টার

খ) দারোয়ান

গ) পুলিশ

ঘ) কাবুলিওয়ালা

উত্তর: গ) পুলিশ

 

২৬. যার লিচু বাগানে হরিদা পাগল সেজে দাঁড়িয়েছিলেন- 

ক) দয়ালবাবু

খ) জগদীশবাবু 

গ) ভবতোষবাবু 

ঘ) অনাদি

উত্তর: ক) দয়ালবাবুর

 

২৭. কে এসে স্কুলের ছেলেদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেলেন

ক) দারোয়ান 

খ) স্কুলমাস্টার 

গ) হরিদা

ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর: খ) স্কুলমাস্টার

 

২৮. "ঘুষ নিয়ে তারপর মাস্টারের অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন সেই নকল-পুলিশ হরিদা"-ঘুষের পরিমাণ কত?

ক) চার আনা

খ) আট টাকা 

গ) আট আনা

ঘ) পঁচিশ পয়সা

উত্তর: গ) আট আনা

 

২৯. "বরং একটু তারিফই করলেন”- তারিফ করার কারণ-

ক) হরিদা ভালো পাগল সেজেছিলেন

খ) হরিদা ভালো বাইজি

গ) হরিদা ভালো সন্ন্যাসী সেজেছিলেন 

ঘ) হরিদা ভালো পুলিশ সেজেছিলেন

উত্তর: ঘ) হরিদা ভালো পুলিশ সেজেছিলেন


৩০. হরিদা বহুরূপী সেজে যেতে চেয়েছিলেন-

ক) দয়ালবাবুর বাড়ি

খ) ভবতোষের বাড়ি

গ) অনাদির বাড়ি

ঘ) জগদীশবাবুর বাড়ি

উত্তর: ঘ) জগদীশবাবুর বাড়ি

 

৩১. "তোমরা সেখানে থেকো।"-'সেখানে' বলতে বোঝানো হয়েছে-

ক) জগদীশবাবুর বাড়িতে 

খ) স্টেশনে 

গ) খেলার মাঠে 

ঘ) বাসস্ট্যান্ডে

উত্তর: ক) জগদীশবাবুর বাড়িতে

 

৩২. কীসের চাঁদা নেওয়ার জন্য ছেলেদের জগদীশবাবুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে

ক) স্পোর্টের 

খ) দুর্গাপুজোর

গ) কালীপুজোর

ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তর: ক) স্পোর্টের

 

৩৩. সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু দিয়েছিলেন- 

ক) কাঠের খড়ম 

খ) সোনার আংটি 

গ) ধর্মগ্রন্থ 

ঘ) একশো টাকার নোট

উত্তর: ঘ) একশো টাকার নোট

 

৩৪. সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান- 

ক) এক দিন 

খ) দু-দিন 

গ) চার দিন 

ঘ) পাঁচ দিন 

উত্তর: খ) দুপুরবেলায়

 

৩৫. হরিদা চকের বাসস্ট্যান্ডে পাগল সেজেছিলেন- 

ক) সকালবেলায় 

খ) দুপুরবেলায় 

গ) বিকালবেলায়

ঘ) সন্ধেবেলায়

উত্তর: ঘ) সন্ধেবেলায়

 

৩৬. "একটু তারিফই করলেন"-তারিফ করলেন-

ক) জগদীশবাবু 

খ) দোকানদার 

গ) সন্ন্যাসী 

ঘ) মাস্টারমশাই

উত্তর: ঘ) মাস্টারমশাই

 

Short Question Answer


1. লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার কাছে কোন্ ঘটনা শোনাতে এসেছিলেন?

উত্তর: সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে খুব উঁচুদরের এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন এবং তিনি সাত দিন ধরে তাঁর বাড়িতে ছিলেন। এই খবরটাই লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদাকে শোনাতে এসেছিলেন।

 

2. "হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম।”-কীসের গল্প

উত্তর: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন। হরিদার কাছে সেই সন্ন্যাসীর গল্পই করা হয়েছিল।

 

3. “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস”-দুর্লভ জিনিসটি কী?

উত্তর:  সুবোধ ঘোষের লেখা 'বহুরূপী' গল্পের আলোচ্য অংশে দুর্লভ জিনিসটি হল জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো।

 

4. হরিদা সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাঁকে কী বলা হয়েছিল?

উত্তর: 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাঁকে বলা হয়েছিল, সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো দুর্লভ জিনিস। একমাত্র জগদীশবাবু ছাড়া কেউই তাই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পাননি। 

5. কীভাবে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পেয়েছিলেন? 

উত্তর: জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর জন্য একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে খড়মজোড়া সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরতেই সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে নিজের পা এগিয়ে দেন। সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়ে নেন।

 

6. সন্ন্যাসী চলে যাওয়ার আগে জগদীশবাবু কী করেছিলেন? 

উত্তর: সন্ন্যাসী চলে যাওয়ার আগে জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁকে দিয়েছিলেন আর সন্ন্যাসীর ঝোলায় জোর করে একশো টাকার একটা নোট ফেলে দিয়েছিলেন।

 

7. "সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন”-সন্ন্যাসী কী দেখে হাসলেন?

উত্তর: 'বহুরূপী' গল্পে সন্ন্যাসীকে বিদায় দেবার সময় জগদীশবাবু একশো টাকার একটা নোট তাঁর ঝোলায় জোর করে ফেলে দিলেন-তা দেখে সন্ন্যাসী হাসলেন।

 

8. হরিদার ঘরটা কীরকম ছিল এবং সেখানে কী হত?

উত্তর: শহরের সবচেয়ে সরু এক গলির মধ্যে হরিদার ছোটো একটা ঘর ছিল। সেখানে সকাল-সন্ধ্যা লেখকদের আড্ডা বসত। চা, চিনি, দুধ তাঁরাই আনতেন। হরিদা শুধু আগুনের আঁচে জল ফুটিয়ে দিতেন।

 

9. কোন্ ধরনের কাজ হরিদার পছন্দ ছিল না? 

উত্তর: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হরিদার কোনো অফিসের কাজ বা দোকানে বিক্রি করার কাজ পছন্দ ছিল না।

 

10. হরিদা কীভাবে প্রতিদিনের অন্নসংস্থান করেন? 

উত্তর: হরিদা বহুরূপী সেজে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। বহুরুপীর সাজ দেখে কেউ কেউ এক-আনা, দু-আনা বকশিশ দেয়। সেই রোজগারেই হরিদার দিন চলে।

 

11. হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ছিল? 

উত্তর: হরিদা ছিলেন পেশায় বহুরূপী। তিনি কখনও পাগল সাজতেন, কখনও বাউল, কোনোদিন কাপালিক, কখনও-বা বোঁচকা কাঁধে বুড়ো কাবুলিওয়ালা সাজতেন। এটাই ছিল তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য।

 

12. "দুটো একটা পয়সা ফেলেও দিচ্ছে"-কারা, কীজন্য পয়সা ফেলে দিচ্ছে?
উত্তর:
গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা একদিন দুপুরবেলায় চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে পাগল সাজলে বাসের যাত্রীরা দুটো-একটা পয়সা ছুড়ে দিচ্ছিল।

13. "কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে-হরির কান্ড”-হরির কাণ্ডটি কী? 1569

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে আলোচ্য অংশে হরিদার যে কান্ডের কথা বলা হয়েছে তা হল শহরের পথে বাইজি সেজে ঘুঙুরের আওয়াজ তুলে নাচতে নাচতে যাওয়া।

 

14. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা কত টাকা উপার্জন করেছিল

উত্তর: বিশিষ্ট গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা আট টাকা দশ আনা উপার্জন করেছিলেন।

 

15. স্কুলের ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে স্কুলের মাস্টার কী করেছিলেন? 

উত্তর: স্কুলের মাস্টার ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বহুরূপী বেশে নকল পুলিশ হরিদাকে আট আনা ঘুষ দিয়ে তাদেরকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন।

 

16. মাস্টারমশাই যখন জানতে পারলেন হরিদা পুলিশ সেজেছিলেন তখন তিনি কী করলেন?
উত্তর:
মাস্টারমশাই যখন জানতে পারলেন যে হরিদা নকল পুলিশ সেজে ঘুষ নিয়ে ছেলেদের ছেড়েছেন তখন তিনি একটুও রাগ করলেন না বরং হরিদার বহুরূপী সাজের তারিফ করলেন।

 

17. "তোমরা সেখানে থেকো"-কোথায় থাকতে বলা হয়েছে? 

উত্তর: বিশিষ্ট গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পের আলোচ্য অংশে হরিদা বহুরূপী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যাবেন-সেখানেই কথক ও তাঁর বন্ধুদের থাকতে বলা হয়েছে।

 

18." এক সন্ন্যাসী এসে জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন।"- জগদীশবাবুর বাড়িতে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন তাঁর বর্ণনা দাও।
উত্তর:

গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ধরে এক সন্ন্যাসী ছিলেন। খুবই উঁচুদরের এই সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন। তিনি সারাবছরে শুধু একটি হরীতকী খেতেন। এ ছাড়া তিনি আর কিছুই খেতেন না। অনেকেই মনে করত, সন্ন্যাসীর বয়স ছিল হাজার বছরেরও বেশি। তাঁর পায়ের ধুলো ছিল অত্যন্ত দুর্লভ জিনিস; সবাই সন্ন্যাসীর এই পায়ের ধুলো পেত না। একমাত্র জগদীশবাবুই সন্ন্যাসীর পায়ের। ধুলো পেয়েছিলেন।

 

19. "সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।"-কোন্ জিনিসের কথা বলা হয়েছে? তা দুর্লভ কেন

উত্তর: এখানে উল্লিখিত জিনিসটি হল হিমালয় থেকে আগত সন্ন্যাসীর গায়ের ধুলো। নি সন্ন্যাসী ছিলেন হিমালয়ের গুহানিবাসী। হাজার বছরেরও বেশি বয়সি এবং সারা বছর একটি হরীতকী খেয়ে বেঁচে থাকা সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো সাধারণ মানুষের পক্ষে পাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই তাকে 'দুর্লভ' বলা হয়েছে।

 

20. "সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।"-দুর্লভ জিনিসটা কী? কে, কীভাবে তা লাভ করেছিল

উত্তর: সুবোধ ঘোষ রচিত 'বহুরূপী' গল্পের আলোচ্য অংশে দুর্লভ জিনিসটি হল সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো। 

জগদীশবাবুর বাড়িতে একবার এক সন্ন্যাসী এসে সাত দিন ছিলেন। সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ছিল অত্যন্ত দুর্লভ। জগদীশবাবু যে-কোনো মূল্যে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে চেয়েছিলেন। তাই জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেছিলেন। তখন বাধ্য হয়ে সন্ন্যাসী তাঁর পা এগিয়ে দিয়েছিলেন আর সেই ফাঁকে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন।

 

21. "গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।"-হরিদা কে ছিলেন? কোন্ গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল 

উত্তর: 'বহুরূপী' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা ছিলেন পেশায় বহুরূপী।  

লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে, জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী খান। তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। সন্ন্যাসী কাউকেই তাঁর পায়ের ধুলো দেন না। জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই সন্ন্যাসী সেই খড়ম পড়তে গেলে জগদীশবাবু তাঁর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। সন্ন্যাসীর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন। ৫ "খুবই গরিব 

মানুষ হরিদা"-হরিদার দারিদ্র্যের পরিচয় দাও। উত্তর সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে শহরের সবচেয়ে সরু একটা গলির ভিতরে হরিদার ঘর। সময় ধরে কোনো অফিসে বা দোকানে কাজ করা তাঁর পছন্দ নয়। তাই তাঁর সংসার রোজগারহীন। তাঁর উনুনে অনেক সময় শুধু জলই ফোটে, ভাত ফোটে না। এই অভাব তিনি সহ্য করতে পারেন, কিন্তু একঘেয়ে কাজ করতে তাঁর ভয়ানক আপত্তি। বহুরূপী সেজে যেটুকু রোজগার হয় তাতেই কোনোদিন একবেলা-আধবেলা খেয়ে হরিদার দিন চলে যায়।

 

22 "...একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া হরিদার পক্ষে সম্ভব নয়।"- কেন হরিদা কোনোদিন চাকরি করেননি?

উত্তর: ইচ্ছে করলেই হরিদা যে-কোনো অফিসের কাজ অথবা কোনো দোকানের বিক্রিওয়ালার কাজ পেয়ে যেতেন। কিন্তু ঘড়ির কাঁটায় সময় ধরে নিয়ম করে রোজই এক চাকরি করতে যাওয়া হরিদার পক্ষে সম্ভব ছিল না। কোনোদিন তাঁর হাঁড়িতে ভাত চড়ত, কোনোদিন চড়ত না। এই অভাবটা সহ্য করতেও হরিদা রাজি ছিলেন, কিন্তু একঘেয়ে কাজ করতে তাঁর ভীষণ আপত্তি ছিল। তাই হরিদা কোনোদিন চাকরি করেননি।

 

23. "হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে।"-হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ছিল? 

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে হরিদার অভাবী জীবনে একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল। হরিদা মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে রোজগার করতেন। বিচিত্র সব ছদ্মবেশে তিনি রাস্তায় বেরিয়ে পড়তেন। যারা চিনতে পারত তারা এক-আনা কিংবা দু-আনা বকশিশ দিত। আর যারা চিনতে পারত না তাদের মধ্যে কেউ কিছুই দিত না অথবা কেউ বিরক্ত হয়ে দু-একটা পয়সা বাড়িয়ে দিত। নানারকম বেশে রাস্তায় বেরোনোটাই ছিল হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য।

 

24. "ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল।"- কোথায় আতঙ্কের হল্লাটি বেজে উঠেছিল? নিজের ভাষায় তার বর্ণনা দাও। 

উত্তর: একদিন দুপুরবেলা চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে আতঙ্কের হল্লাটিবেজে উঠেছিল। 

চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে একদিন এক পাগলকে দেখা গিয়েছিল। 

কটকটে লাল চোখের সেই পাগলের মুখ থেকে লালা ঝরছিল। তার কোমড়ে ছিল একটা ছেঁড়া কম্বল আর গলায় ছিল টিনের কৌটোর একটা মালা। সেই পাগলটা একটা থান ইট নিয়ে বাসে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল। তাকে দেখে যাত্রীরা চেঁচিয়ে উঠছিল। কেউ কেউ দু-এক পয়সা তার সামনে ফেলে দিচ্ছিল। এভাবেই বাসস্ট্যান্ডে আতঙ্কের হল্লা শুরু হয়েছিল। বাস ড্রাইভার কাশীনাথ অবশ্য বুঝতে পেরেছিল লোকটা আসলে   বহুরূপী হরিদা।

 

25. "কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে-হরির কাণ্ড"-কোন্ কাণ্ডের কথা বলা হয়েছে? 

উত্তর: বহুরূপী হরিদা বিভিন্ন বেশ ধারণ করতেন। একদিন সন্ধেবেলায় যখন আলো সবেমাত্র জ্বলে উঠেছে ঠিক সেইসময় হঠাৎই সবাই ঘুঙুরের শব্দ শুনতে পায়। সবাই দেখে এক রূপসি বাইজি নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছে। এক- একটা দোকানের সামনে গিয়ে তিনি দাঁড়ান আর মুচকি হেসে চোখ টিপে একটা ফুলসাজি এগিয়ে দেন। দোকানিরাও হেসে ফেলে একটা সিকি সেই ফুলসাজিতে দিয়ে দেয়। হরিদা-ই বাইজি সেজে এই কাণ্ড ঘটান আর বাইজিটি যে আসলে এক বহুরূপী, সেটা জানতে পেরে দর্শকদের মোহভঙ্গ হয়।

 

26. "পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচুবাগানের ভিতরে দাঁড়িয়েছিলেন..."-কার কথা বলা হয়েছে? সেখানে কী ঘটনা ঘটেছিল? উত্তর উল্লিখিত অংশে বহুরূপী হরিদার কথা বলা হয়েছে। 

উত্তর:  দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের চারটি ছেলে এসেছিল লিচু নেওয়ার আশায়। সেখানে হরিদা পুলিশ সেজে দাঁড়িয়েছিলেন আর সেই চার জন ছেলেকে তিনি ধরেছিলেন। ছেলেরা তাঁকে সত্যিকারের পুলিশ মনে করে ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। তারপর সেই ছেলেদের স্কুলের মাস্টারমশাই সেখানে এসে ছেলেদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নকল পুলিশের কাছে ক্ষমা চান এবং তাকে আট আনা ঘুষও দেন।

 

27"এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাণ্ডার।"-বক্তা কে? তিনি কোন্ উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছেন?

উত্তর: প্রখ্যাত গল্পকার সুবোধ ঘোষ 'বহুরূপী' গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশটির বক্তা বহুরূপী হরিদা।

বহুরূপী সেজে হরিদার উপার্জন ছিল অতি সামান্য। তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসীর খাতির-যত্ন ও অর্থলাভের কাহিনি শুনে হরিদা সিদ্ধান্ত নেন সেখানে যাওয়ার। মোটা কিছু আদায় করাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। কাঙালের মতো হাত পেতে বকশিশ নয়, একবারে এমন উপার্জন করবে, যাতে তাঁর সমস্ত বছর চলে যাবে-এই উদ্দেশ্য নিয়েই আলোচ্য কথাটি হরিদা বলেছেন।


Long Question Answer


1. "বাঃ, এ তো বেশ মজার ব্যাপার!"-মজার ব্যাপারটি কী? তা বক্তার ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছিল?

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে থাকার জন্য এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন। খুব উঁচুদরের এই সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন। সারাবছর একটা হরীতকী ছাড়া তিনি নাকি আর কিছুই খেতেন না। অনেকের মতে, তাঁর বয়স ছিল হাজার বছরেরও বেশি। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পায়ের ধুলো নিতে দেননি। জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু একশো টাকার একটা নোট জোর করে সন্ন্যাসীর ঝোলার মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। এটাই ছিল মজার গল্প। 

সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদা প্রথমে গম্ভীর হয়ে যান। তিনি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকেন। গরিব হরিদা নির্দিষ্ট কোনো পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন না। তাই মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে তিনি পয়সা রোজগার করতেন। কিন্তু তাতে তাঁর দিন চলত না। জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসীর কথা শুনে হরিদা চিন্তা করেন সাধুভক্ত জগদীশবাবু সন্ন্যাসীকে উদারহস্তে অনেক কিছু দান করেছেন। তাই তিনিও যদি কোনো সাধুসন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে জগদীশবাবুর বাড়ি যান, তবে নিশ্চয় তাঁর দাক্ষিণ্য থেকে বঞ্চিত হবেন না। এই অভিপ্রায়ে হরিদা একদিন সত্যি সত্যি বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন।

 

2. "গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা"- গল্পটি কী ছিল? হরিদার গম্ভীর হয়ে যওয়ার কারণ কী ছিল?

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে অবস্থাপন্ন জগদীশবাবুর বাড়িতে এসে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি হিমালয়ের গুহায় থাকতেন। অনেকে মনে করেন তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী ছাড়া আর কিছুই খেতেন না। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পায়ের ধুলো দেননি। জগদীশবাবুও তা পেয়েছিলেন কৌশল করে। একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন আর সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে তাতে পা গলাতে গেলে সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যসীর পায়ের ধুলো নিয়ে নেন। জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলার ভিতরে একশো টাকার একটি নোট জোর করে ফেলে দেন। সন্ন্যাসী হেসে সেখান থেকে চলে যান। এই গল্পই হরিদাকে শোনানো হয়েছিল।

সন্ন্যাসী এবং জগদীশবাবুর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যান। কথক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার এই গাম্ভীর্যের কারণ বুঝতে পারেন না। এই সময়েই হরিদা তাঁদের জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাতে যাওয়ার কথা বলেন। জগদীশবাবুর কাছ থেকে সারা বছরের প্রয়োজনীয় অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। জগদীশবাবুর ধর্মের প্রতি দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই হরিদা নিজের উদ্দেশ্য সফল করতে চেয়েছিলেন।

 

3 "হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে।”- হরিদার জীবনে নাটকীয় বৈচিত্র্যের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা ছিলেন অত্যন্ত গরিব মানুষ। কিন্তু ধরাবাঁধা ছকে জীবন কাটানো হরিদার পছন্দ ছিল না। তাই অভাবের মধ্যেই তিনি জীবনের বৈচিত্র্য খুঁজতেন। বহুরূপীর বৈচিত্র্যময় পেশাকে সঙ্গী করেই তিনি অন্নসংস্থানের চেষ্টা চালাতেন। হঠাৎ হঠাৎ বিচিত্র ছদ্মবেশে পথে বের হতেন হরিদা। কখনও বাসস্ট্যান্ডের কাছে উন্মাদের বেশে তাঁকে দেখা যেত, আবার কখনও শহরের রাজপথ ধরে বাইজির বেশে ঘুঙুর বাজিয়ে চলে যেতেন। শহরে নতুন আসা মানুষ যারা হরিদাকে চিনত না, তারা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকত আর পরিচিতরা তার কাণ্ড দেখে হেসে ফেলত। কখনও বোঁচকা কাঁধে বুড়ো কাবুলিওয়ালা, কখনও হ্যাট, কোট, প্যান্টালুন পরা ফিরিঙ্গি সাহেব-এরকম অজস্র রূপেই হরিদাকে দেখতে পাওয়া যেত। এমনকি পুলিশ সেজে স্কুলের মাস্টারমশাইকেও তিনি বোকা বানিয়েছিলেন। তাঁর বিচিত্র সব সাজ আর চরিত্রের সঙ্গে মানানসই আচরণে মানুষ কখনও হাসত, কখনও তারিফ করত, কখনও-বা বিরক্ত হত। আর হরিদার যা সামান্য বকশিশ জুটত তাতেই তিনি "তাঁর ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন"। কিন্তু এই দারিদ্র্যের মধ্যেও হরিদা যেন মুক্ত প্রাণের আনন্দ খুঁজে নিতেন।

 

4. "আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব।"-কে, কাদের উদ্দেশে এ কথা বলেছেন? তিনি কোন্ জবর খেলা দেখিয়েছিলেন?

উত্তর: 'বহুরূপী' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা কথক ও তাঁর বন্ধুদের উদ্দেশে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

বহুরূপী সেজে টাকা রোজগার করাই ছিল হরিদার নেশা এবং পেশা। তাই ধর্মভীরু জগদীশবাবুকে বোকা বানিয়ে নিজের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে হরিদা সাদা থান পরে, সাদা উত্তরীয় গায়ে দিয়ে হাজির হন জগদীশবাবুর বাড়িতে। জগদীশবাবু হরিদার নিখুঁত ছদ্মবেশের কারণে তাঁকে চিনতে না পেরে বিনয় ও ভক্তিতে গদগদ হয়ে যান। নিজেকে 'সৃষ্টির মধ্যে এককণা ধূলি' বলে উল্লেখ করে জগদীশবাবুকে নীচে নেমে আসতে বাধ্য করেন তিনি। কণ্ঠস্বরে গাম্ভীর্য, মুখমণ্ডলে প্রশান্তির ছবি ফুটিয়ে তুলে হরিদা নিজের সাজকে পূর্ণাঙ্গতা দান করেন। বিরাগীবেশী হরিদা জানান যে তাঁর কোনো রাগ নেই, তিনি বিষয়ীর ঘরে থাকতে চান না। তীর্থযাত্রার জন্য জগদীশবাবু হরিদাকে একশো এক টাকার থলি দিতে চাইলে তিনি তা ছুঁয়েও দেখেন না এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। হরিদার এরকম ছদ্মবেশ ধারণ করে জগদীশবাবুকে ধোঁকা দেওয়াকেই 'জবর খেলা' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

5. "এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাণ্ডার”- কে, কোন্ প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছেন? তাঁর এই উদ্দেশ্য কী শেষ অবধি সফল হয়েছিল-গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তর: সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্পে মন্তব্যটি করেছেন বহুরূপী হরিদা। কথকদের কাছ থেকে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা হিমালয়ের সাধুর কথা জানতে পারেন। জগদীশবাবু তাঁর পায়ের অতি দুর্লভ ধুলো পাওয়ার জন্য কীভাবে তাঁর খাতির-যত্ন করেছেন-তা-ও শোনেন। এইসব শুনতে শুনতেই হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এক 'জবর খেলা' দেখানোর পরিকল্পনা করেন। উদ্দেশ্য 'মোটা মতন কিছু' আদায় করে নেওয়া। তাই কাঙালের মতো হাত পেতে বকশিশ নেওয়ার বদলে হরিদা চান জগদীশবাবুর ধর্মবিশ্বাস আর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সারাবছরের রোজগার একদিনে করে নিতে। এই প্রসঙ্গেই তিনি মন্তব্যটি করেছেন। ।

. এক ফুরফুরে সন্ধ্যায় বিরাগীর বেশে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হন। আদুড় গা, ধবধবে সাদা উত্তরীয়, সাদা থান পরা হরিদার আধ্যাত্মিক এবং দার্শনিক কথাবার্তায় জগদীশবাবু মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি বিরাগীকে তীর্থভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা প্রণামি দিতে চান। কিন্তু হরিদাকে এখানে পাওয়া যায় সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর ভূমিকায়। সব কিছু প্রত্যাখ্যান করে তিনি চলে যান। পরে কথকদের তিনি বলেন যে বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা স্পর্শ করলে তার বহুরূপীর 'ঢং' নষ্ট হয়ে যেত। নিজের পেশার প্রতি সততা থেকেই হরিদা অর্থ উপার্জনের অসাধু ইচ্ছাকে ত্যাগ করেন।


Paid Answer Link (Membership User)


EDITING BY--Liza Mahanta