৭। মালগাড়ি
লেখক পরিচিতি:
(১৯০৩-১৯৮৮) বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের পরে গদ্যে এবং পদ্যে নতুন রীতি যাঁদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল তাঁদের মধ্যে প্রেমেন্দ্র মিত্র অগ্রগণ্য। তিনি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, শিশু-কিশোর সাহিত্য, নাটক, প্রবন্ধ এবং অনুবাদমূলক , রচনা-সব বিষয়েই ছিলেন সমান দক্ষ। 'কালিকলম' পত্রিকার সম্পাদক প্রেমেন্দ্র মিত্র 'কল্লোল' পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 'প্রথমা', 'সম্রাট', 'সাগর থেকে ফেরা', 'ফেরারি ফৌজ' ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ; 'পাঁক', 'হানাবাড়ি', 'মিছিল', 'বিসর্পিল' ইত্যাদি উপন্যাস; 'তেলেনাপোতা আবিষ্কার', শুধু কেরানি, 'শৃঙ্খল', হয়তো ইত্যাদি ছোটোগল্প তিনি রচনা করেছেন। ছোটোদের জন্য নানান রকমের রহস্য গল্প এবং গোয়েন্দা কাহিনি লিখেছেন। ঘনাদা চরিত্র প্রেমেন্দ্র মিত্রের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। কবি তাঁর 'সাগর থেকে ফেরা' কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার এবং আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
সারাংশ:
কবি দ্রুতগতির তুফান ট্রেন বা মেল ট্রেন হওয়ার চেয়ে মালগাড়ি হওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছেন। কাজের উদ্দেশ্যে চলা ট্রেনগুলির চলাচলে থাকে দুশ্চিন্তা ও আশঙ্কা। পরিবর্তে মালগাড়ি চলে নিজের খেয়ালে। যাত্রী তোলা-নামানোর কোনো পিছুটান তার নেই। মালগাড়ি নিশব্দে চলে অনেক পথেই খুঁজে পায় নিজের আনন্দ।
১ সংক্ষেপে উত্তর দাও :
১। প্রেমেন্দ্র মিত্র কোন্ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন?
উ: প্রেমেন্দ্র মিত্র 'কালি-কলম' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
২। তাঁর সৃষ্ট একটি বিখ্যাত চরিত্রের নাম লেখো।
উ: প্রেমেন্দ্র মিত্রের সৃষ্ট একটি বিখ্যাত চরিত্র হল-ঘনাদা।
৩। একটি বাক্যে উত্তর দাও:
৩.১ 'মালগাড়ি'-র চলাকে কবিতায় কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উ: কবিতায় মালগাড়ির চলাকে নদীর ভাটার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
৩.২ কথকের জীবনে কোন্ বিশেষ দিনটিতে পরির সঙ্গে তার দেখা হতে পারে?
উ: জন্মদিনে কথকের সঙ্গে পরির দেখা হতে পারে।
৩.৩ প্যাসেঞ্জার ট্রেন কোন্ কাজের ধান্দা নিয়ে থাকে?
উ: প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাত্রী ওঠা নামানোর ধান্দা নিয়ে থাকে।
৩.৪ 'মালগাড়ি' কোন্ কাজে ব্যবহৃত হয়?
উ: মালগাড়ি মাল পরিবহণের কাজে ব্যবহৃত হয়।
৩.৫ সত্যিই কি মালগাড়ির টাইমটেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন নেই?
উ: না সত্যিই মালগাড়ির টাইমটেবিল অনুযায়ী চলার প্রয়োজন নেই।
৩.৬ প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেনের তুলনায় মালগাড়ির ধীরগামী হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উ: প্যাসেঞ্জার বা মেল ট্রেনকে একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। অন্যদিকে মালগাড়ির সে দায় নেই। তাই তার গতিবেগ অন্য দুই ধরনের ট্রেনের চেয়ে কম হয়।
৩.৭ আপ ট্রেন আর ডাউন ট্রেন বলতে কী বোঝায়?
উ: সমুদ্রতল থেকে নীচে অবস্থিত স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন যখন সমুদ্রতলের চেয়ে উঁচুতে অবস্থিত স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয় তখন তাকে 'আপ' ট্রেন বলে। আর এর ঠিক উলটো পথে যাওয়া ট্রেনকে 'ডাউন' ট্রেন বলে।
৩.৮ তোমার জানা এমন কয়েকটি যানবাহনের নাম লেখো যেগুলি যাত্রীপরিবহণ করে না।
উ: আমার জানা যাত্রী পরিবহণ করে না এমন কয়েকটি যানবাহন হল- লরি, তেলের ট্যাঙ্কার, জলের গাড়ি, ঠেলাগাড়ি ইত্যাদি।
৪। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
৪.১ জোয়ার আর ভাটায় নদীর চেহারা কেমন হয়?
উ: জোয়ারের সময় নদীর জল বেড়ে যায়। নদীর স্রোত দ্রুত হয়। অন্যদিকে ভাটার সময় নদীর রূপ হয় ঠিক উলটো। তখন সেখানে একটা শান্তভাব বিরাজ করে।
৪.২ এই কবিতায় পরিদের প্রসঙ্গ কীভাবে এসেছে? পরির প্রসঙ্গ তুমি এর আগে কোন্ কোন্ গদ্য, কবিতায় পড়েছ?
উ: কবিতায় কথক নিজের জন্মদিনের প্রসঙ্গে পরিদের কথা এনেছেন। আমি পরির প্রসঙ্গ- বীরু চট্টোপাধ্যায়ের 'ফণীমনসা বনের পরি' গল্পে পড়েছি। এছাড়া সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের 'নীলপরি ও সবুজপরি' কবিতায় পড়েছি।
৪.৩ মালগাড়ি হয়ে কবিতার কথক কোন্ সুখ অনুভব করতে চায়?
উ: মালগাড়ি হয়ে কথক চায় চিন্তাহীনভাবে পথ চলতে। যাত্রী ওঠা নামানোর ঝক্কি এড়িয়ে সে নির্দিষ্ট পথে সীমাহীনভাবে চলতে চায়।
৪.৪ কবিতায় 'ঘটর-ঘটর' শব্দটি মালগাড়ির শব্দ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। তুমি এমন কিছু শব্দ লেখো যা দিয়ে যন্ত্র বা যানবাহনের শব্দকেই বোঝানো হয়ে থাকে।
উঃ
শব্দ
যানবাহন
ক্রিং ক্রিং
সাইকেল
টিক টিক
ঘড়ি
ক্য়াঁচোরম্য়াচোর
গোরুর গাড়ি
ঝিকঝিক
রেলগাড়ি
ঘটাং ঘটং
টাইপরাইটার
৫ গদ্যরূপ লেখো:
৫.১ মালগাড়ি হই একটি শুধু যদি ঘটর ঘটর দিনরাত্তির চলি।
উ: যদি শুধু একটি মালগাড়ি হই, তাহলে দিনরাত্রি ঘটর ঘটর চলি।
৫.২ চেয়ে নেব একটি শুধু বর।
উ: শুধু একটি বর চেয়ে নেব।
৫.৩ ভাবনা শুধু লেট হয়ে যায় পাছে।
উ: শুধু ভাবনা পাছে লেট হয়ে যায়।
৫.৪ যত দূরেই যেখানে যাই নাকো সারা লাইন শুধু আমার একার।
উ: যতদূরে যেখানেই যাই না কেন সারা লাইন শুধু আমার একার।
৫.৫ যাচ্ছি যাবো করেই আমার যাওয়া।
উ: আমার যাওয়া যাচ্ছি যাবো করেই।
৬ প্রতিটি শব্দের সমার্থক শব্দ লেখো ও সেগুলি বাক্যে ব্যবহার করো:
বাড়ি, নদী, ভাবনা, খুশি, ধান্দা, তুফান, রাস্তা।
উ: বাড়ি-ঘর: আমাদের গ্রামে অনেক মাটির ঘর আছে।
নদী- তটিনী : তটিনীর তট চাঁদের আলোয় চিক্চিক্ করছে।
ভাবনা- চিন্তা : অকারণ চিন্তা শরীরের ক্ষতি করে।
খুশি- আনন্দ: এবারের পুজোয় খুব আনন্দ করেছিলাম।
ধান্দা- মতলব : রামুর মতলব ভালো নয়।
তুফান- ঝড়: ঝড়ে বটগাছের মগডালটা ভেঙে গেছে।
রাস্তা- পথ : গ্রামের ধুলোভরা পথে গোরুর গাড়ি করে যেতে মজা লাগে।
৭। 'ভালো-মন্দ'-এর মতো বিপরীত অর্থের শব্দ পাশাপাশি আছে এমন তিনজোড়া শব্দ কবিতা থেকে বের করে লেখো।
উঃ ওঠায়-নামায়, দিন-রাত্তির যাওয়া-আসা
৮। ছক করে নীচের শব্দগুলি থেকে ঘোেষ বর্ণ ও অঘোষ বর্ণ আলাদা করে বসাও:
তুফান, দেখা, ছুটে, কাজ, মিষ্টি, যাত্রী।
শব্দ
ঘোষ
অঘোষ
তুফান
ন
ত,ফ
ছুটে
x
ছ,ট
দেখা
দ
খ
মিষ্টি
ম
ট
কাজ
জ
ক
যাত্রী
x
x
৯। কবিতাটিটে যে কটি ইংরেজি শব্দ ব্য়বহৃত হয়েছে সেগুলি হল—- মেলট্রেন, প্য়াসেঞ্জার, স্টেশন, লেট, লাইন, টাইমটেবিল। শব্দগুলি প্রতিটিই রেলগাড়ি সংক্রান্ত। এবার তুমি বাস ও সেই সংক্রান্ত ইংরেজি শব্দগুলির একটি তালিকা তৈরি করো।
উ: ড্রাইভার, কনডাক্টর, টিকিট, ব্রেক, স্টিয়ারিং, টায়ার, গিয়ার।
১০। তুমি একটি মালগাড়ি দেখতে পেলে। মালগাড়ি সম্বন্ধে তোমার মনে কী কী প্রশ্ন জেগেছে? তার অন্তত পাঁচটি প্রশ্ন খাতায় লেখো।
উ: মালগাড়ি কোথা থেকে কোথায় যাবে?
মালগাড়ির কামরাগুলিতে কী বোঝাই করা আছে?
মালগাড়ি তার গন্তব্যে কত দিনে পৌঁছাবে?
মালগাড়ি মাল খালাস করার পর কী করে?
মালগাড়িতে মালপত্র বোঝাই করতে কত সময় লাগে?
১১। নীচে একটি টাইমটেবিলের অংশ (নমুনা হিসেবে) তোমাদের জন্য দেওয়া রইল। সেখান থেকে বিভিন্ন ট্রেনের নম্বর, কোথা থেকে ছাড়ছে, গন্তব্যস্থলটি কোথায়, বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেনের পৌঁছানোর সময় ইত্যাদি তোমার খাতায় নথিভুক্ত করো। (প্রয়োজনে শিক্ষিকা/শিক্ষকের সাহায্য নাও)।
স্টেশন
৩৭৩৬৫#
৩৭৪১১*
৩৭৩১১
৩৭৩৯৩
৩৭৩১৩
৩৭৩৬৭#
আপ
হাওড়া
শেওড়াফুলি জঁ
0 Comments