Lesson 9 

মরশুমের দিনে সুভাষ মুখোপাধ্যায়
--------------------------
 
 ১. অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
 
১.১ বাঙালির প্রিয় উৎসব কী?
উত্তর: বাঙালির প্রিয় উৎসব দুর্গোৎসব। 

১.২ বাঙালির প্রিয় উৎসব কোন্ মরশুমে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর:  বাঙালির প্রিয় উৎসব শরৎকালে অনুষ্ঠিত হয়। 

১.৩  নতুন ধানের ফলন উপলক্ষ্যে যে উৎসব হয়তাকে কী বলে?
উত্তর: নতুন ধানের ফলন উপলক্ষ্যে যে উৎসব হয়তাকে 'নবান্নবলে। 

১.৪ ম ধানের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু কে?
উত্তর: ধানের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু হল বৃষ্টি। 

১.৫ 'মরশুমের দিনেরচনাংশে কোন্ ফসলকে 'ধনবলা হয়েছে?
উত্তর: মরশুমের দিনেরচনাংশে ধানকে 'ধনবলা হয়েছে। 

১.৬ "কেউ যেন ঝকঝকে তকতকে করে মেজে রেখেছে"-কী মেজে রাখার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: শরৎকালে যতদূর দৃষ্টি যায় নীলরঙের আকাশটাকে মেজে রাখার কথা বলা হয়েছে।

১.৭ মফস্সল শহরে বাস কোথায় দাঁড়িয়ে থাকে?
উত্তর: মফস্সল শহরে বাস ডিপোয় দাঁড়িয়ে থাকে। 

১.৮ মসলা মাটি ও আকাশ কী কী দেয়?
উত্তর: মাটি ফসল দেয়আকাশ জল দেয়। 

১.৯ ফলার কী কী দিয়ে খাওয়া হয়?
উত্তর:  ফলার চিঁড়ে-গুড়-মুড়ি-খই আর দই দিয়ে খাওয়া হয়। 

১.১০ শিলাবৃষ্টির সময় ছেলেরা হইহই করে কোথায় ছোটে?
উত্তর:  শিলাবৃষ্টির সময় ছেলেরা হইহই করে আমবাগানে ছোটে। 

২. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

১)কাজল-বৃষ্টির সময় এককালে বছর শুরু হত বলে মরশুমের নাম কী ছিল?
উত্তর:  জল বৃষ্টির সময় এককালে বছর শুরু হত বলে মরশুমের নাম ছিল 'বর্ষ'

২)কীসের রং তামার হাঁড়ির মতো?
উত্তর: আকাশের রং তামার হাঁড়ির মতো।

৩)কোন্ সময় আকাশের জল চেয়ে 'বসুধারাব্রত পালন করা হয়?
উত্তর:  যখন কালবৈশাখী রোদে পুড়ে আগুন ঝরেতখন 'বসুধারাব্রত পালন করা হয়।

৪)বৃষ্টির মধ্যে চাষিরা কীভাবে মাঠে যায়?
উত্তর: বৃষ্টির মধ্যে হোগলার তৈরি মাথালে মাথা-পিঠ ঢেকেদুরন্ত জলের মধ্যেই গামছা পরে চাষিরা বেরিয়ে পড়ে মাঠের কাজে।

৫)"বাস যাবে দূরের শহরের কী গঞ্জে।” -বাস কোথা থেকে যাবে?
উত্তর: বাস ছোটো মফস্সল শহরের ডিপো থেকে যাবে।

৬)"সেদিকে নজর রেখে যাত্রীর দল কাছেপিঠে ঘুরঘুর করে।” -কোন্দিকে নজর রাখার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর:  বাসের যাত্রীরা তাদের মালপত্র নিজেদের জায়গায় রেখে যখন দীর্ঘক্ষণের জন্য কোনো স্টপেজে নামেতখন সেইদিকে তারা নজর রাখে।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:

১) বাস-ডিপোয় অপেক্ষমান যাত্রীদের ছবি কীভাবে পাঠ্যাংশে ধরা পড়েছে?
উত্তর:   লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায় তাঁর 'মরশুমের দিনেগদ্যাংশে বাস-ডিপোয় অপেক্ষমাণ যাত্রীদের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। ছোটো মফস্সল শহরের ডিপোয় দাঁড়িয়ে থাকা বাসের ছাদে • ধরাধরি করে মাল তোলে বাসের কনডাক্টর আর ক্লিনার। বাসের ভিতরে নিজের নিজের জায়গায় হাতের জিনিস রেখে অনেকেই তখন বাইরে এসে দাঁড়ায়। সামনে চায়ের দোকানে বেঞ্চির ওপর বসে চা খেতে থাকা ড্রাইভারকে নজরে রেখেযাত্রীর দল কাছেপিঠে ঘুরঘুর করে। গরমের সময় তারা যেমন গায়ে হাওয়া লাগায়তেমনই শীতের সময় বসে রোদ পোহায়।

২)"ধান কাটার পর একবারে আলাদা দৃশ্য”-এই দৃশ্যে কোন্ ঋতুর ছবি ফুটে উঠেছেসেই ঋতু সম্পর্কে কয়েকটি বাক্যে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো। 
উত্তর: ধান কাটার পর গ্রীষ্ম ঋতুর ছবি এই দৃশ্যে ফুটে উঠেছে। গ্রীষ্মকালে শূন্য মাঠে যতদূর চোখ যায়চারিদিক তখন খাঁ খাঁ করে। মাটি রুক্ষমাঠ-প্রান্তর কঙ্কালসারশুকনো। আলগুলি
জেগে থাকে বুকের হাড়-পাঁজরের মতো। অন্যদিকেমাটির ওপরে আকাশের রং তখন তামার হাঁড়ির মতো। রোেেদর দিকে তাকানো যায় না। গোরুর গাড়ির চাকায়মানুষের পায়ে মাটির ডেলাগুলি ভেঙে গুঁ যারা মাঠে গিয়েছিলবেলা বাড়তেই তারা তাড়াতাড়ি ঘরে ফেরে। নদী- পুকুরখালবিল শুকিয়ে যাড়ো গুঁড়ো হয়ে ধুলো হয়ে যায়। সেই ধুলো কখনও ঘূর্ণি হাওয়ায়দমকা বাতাসে উড়ে উড়ে দৃষ্টি আড়াল করে দেয়। ভোরবেলায়। গাছে পাতা থাকে না। নদীনালার ধার ছাড়া কোথাও ঘাসের ডগা পর্যন্ত দেখা যায় না। রাখাল বালক ছড়ি হাতে গাছের ছায়ায় বসে থাকে। মাঝে মাঝে হাওয়া বয়-দেন আগুনের হলকা। জলের জন্য চারদিকে হাহাকার ওঠে।


৩) ত "শহর ছাড়ালেই দু-পাশে দেখা যাবে”-শহরের চিত্রটি কেমনতা ছাড়িয়ে গেলে কোন্ দৃশ্য দেখা যাবে?
উত্তর: 'মরশুমের দিনেপাঠ্যাংশের লেখকের কথা অনুযায়ীশহর - ছাড়ালেই দু-পাশে দেখা যাবে মাথার ওপর দরাজ আকাশ। বাস- রাস্তার দু-ধারে বট-পাকুড়শাল-সেগুনের গাছ। তার ডালে মাঝে - মাঝে দৃষ্টি আটকে যাবে। দেখা যাবেকালো কুচকুচে বাঁধানো রাস্তা মাঝে মাঝে বাঁক নিয়ে চলে গিয়েছে সোজা সামনের দিকে।
গরমকালে আবার শহরের এই রাস্তায় দেখা যায় অন্য দৃশ্য। যেতে যেতে মনে হয়দূরে যেন জল চিকচিক করছে আর সেই জলে উলটো হয়ে পড়েছে দু-পাশের গাছের ছায়া। কিন্তু আসলেতা যেন মরীচিকা।

অন্যদিকে শহর ছাড়িয়ে গ্রামে ঢুকলেই বদলে যায় দৃশ্যপট। বাসরাস্তার ধারে ধারে লোকালয়। বড়ো গ্রামে দেখা যাবেইটের দালানবাড়িছোটো গ্রামে খড় কিংবা টিনের চালাবিশিষ্ট মাটির বাড়ি। - লোকালয় পার হলেই আবার দিগন্তবিস্তৃত মাঠ। এক-এক ঋতুতে দেখা যায় তার এক-এক রূপ-রূপান্তর।

ঋতুভেদেও গ্রামে দৃশ্যান্তর ঘটে। শরতের আকাশে যতদূর চোখ চলে যায়মনে হয় আকাশটাকে কেউ যেন ঝকঝকে-তকতকে করে মেজে রেখেছে। নীচে কোথাও মাটি দেখা যায় না। সামনে-পিছনে একটানা সবুজ ধান। তার ওপর দিয়ে মাঝে মাঝে হাওয়া-ঢেউ খেলে যায়। দূরে দাঁড়িয়ে থাকে একটা-দুটো তাল-খেজুর কিংবা শিশুপলাশ। আবার শরতের শেষে মাঠের সে আর-এক চেহারা। যতদূর চোখ যায় দেখা যায় রুক্ষ মাটিগ্রামের শুকনো কঙ্কালসার চেহারা। আলগুলি জেগে থাকেবুকের হাড়-পাঁজরের মতো। গ্রামে যাওয়ার মেঠো পথ জেগে ওঠে। একটু বেলা বাড়লে মাটি তেতে ওঠে।

চাষিরা তাই সকাল সকাল দ্রুত পায়ে বাড়ি ফেরে। প্রখর গ্রীষ্মে নদী-পুকুরখালবিল শুকিয়ে যায়। গাছের পাতা ঝরে যায়। যেন এলোমেলো শুকনো কয়েকটি কাঠির কঙ্কাল উড়তে থাকে। রাখালের দল ছড়ি হাতে বট-অশখের তলায় বসে থাকে। মাঝে মাঝে আগুনের হলকার মতো হাওয়া দেয়।

৪)"গ্রামের সঙ্গে শহরের যে এখনও নাড়ির টান"-এই নাড়ির টানের প্রসঙ্গ রচনাংশে কীভাবে এসেছে?
উত্তর: মরশুমের দিনে ফসল উঠলে বাসের ভিড় হয় দেখার মতো। মেয়ে দেখতেপুজো দিতেজিনিস কিনতেসিনেমা দেখতেমামলার তদবির-তদারক করতে তখন লোকজনেরা শহরে যায়। উকিল-মোক্তারবামুন-পুরুতদর্জি-দোকানি সকলেই বিভিন্ন প্রয়োজনে জীবিকার তাগিদে শহরমুখী হয়। ফসল উঠলেহাতে পয়সা এলে তখনই দেখা যায় এই তৎপরতা। এই কর্মব্যস্ততার বর্ণনা প্রসঙ্গেই কবির রচনাংশে নাড়ির টানের কথা এসেছে।

৫)"ধানের সবচেয়ে বড়ো বন্ধু বৃষ্টি"-বৃষ্টির সময়ে ধানখেতের ছবিটি কেমন হয়অন্য যে যে সময়ে ধান চাষ হয়ে থাকেতা লেখো।
উত্তর: বৃষ্টির সময়ে ধানখেতের ছবিটি হয় মনোরম। নববর্ষায় ক-দিনের মধ্যেই বৃষ্টির জলে খেত ভরে যায়। হোগলার তৈরি মাথালে বা তালপাতায় তৈরি শার্সিতে চাষিরা মাথা-পিঠ ঢেকে দুরন্ত জলের মধ্যেই গামছা পরে বেরিয়ে পড়ে মাঠের কাজে। ধান রোয়াআল বাঁধার কাজ সেরে ফেলতে শুরু করে। এ ছাড়াও আছেপাটের জমি। তার জন্যেও প্রচুর কাজ থাকে।

অন্য সময়েও ধানের চাষ হয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে ধানের চারা বপণ করে শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে ফসল কাটা হয়। একে বলা হয় আউশ ধান। আর পৌষ-মাঘ মাসে ধানের চারা পুঁতে বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠ মাসে যে ফসল কাটা হয় তাকে বলা হয় বোরো ধান। বছরে মোট তিনবার ধান চাষ করা হয়।

৪. শুদ্ধ বানানটিতে'' চিহ্ন দাও:

১)এক মুহূর্ত/মূহূর্ত/মুহূর্ত,
উত্তর: মুহূর্ত

২) অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ন/অগ্রহায়ণ,
উত্তর: অগ্রহায়ণ

৩)এত বিলক্ষণ/বিলক্ষন/বিলখ্যন,
উত্তর: বিলক্ষণ

৪) মরিচিকা/মরীচিকা/মরীচীকা।
উত্তর: মরীচিকা।

৫. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১)সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম 'পদাতিক' (১৯৪০)।

২)তাঁর লেখা একটি গদ্যের বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর:  তাঁর লেখা একটি গদ্যের বইয়ের নাম 'ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন'

৬. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

১)ধান শব্দটি কোন্ শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর: 'ধান্যশব্দ থেকে 'ধানশব্দটি এসেছে।

২)'অগ্রহায়ণবলতে কী বোঝায়?
উত্তর: 'অগ্রহায়ণবলতে বোঝায়বছরের শুরু বা মার্গশীর্ষ মাস। বর্তমানে বাংলা সালের অষ্টম মাস হলেও আগে প্রথম মাস হিসেবে একে গ্রাহ্য করা হত। 'অগ্রশব্দটির অর্থ শুরু বা গোড়া। আর 'হায়নমানে বছর।'হায়নশব্দের আর-একটি অর্থ হচ্ছে ফসল।

৩)কত এদেশের সমস্ত পালাপার্বণআনন্দ-উৎসব-এসবের মূলে কী রয়েছে?
উত্তর: এদেশের সমস্ত পালাপার্বণআনন্দ-উৎসব-এসবের মূলে রয়েছে চাষবাস।

৭. নীচের বাক্যগুলি থেকে শব্দবিভক্তি এবং অনুসর্গ খুঁজে নিয়ে লেখো:

১)এক কেউ এসেছিল দোকানের জন্য মাল তুলতে।
উত্তর: দোকানের- 'এরবিভক্তি। মাল- 'শূন্যবিভক্তি। জন্য- অনুসর্গ।

২)বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে অন্য সমস্ত আওয়াজ ডুবে যায়।
উত্তর: বৃষ্টির-'বিভক্তি। শব্দে-'বিভক্তি। ডুবে-'বিভক্তি। আওয়াজ-'শূন্যবিভক্তি।

৩)সন্ধে নাগাদ উলু দিয়ে ব্রত শেষ হয়।
উত্তর: ব্রত 'শূন্যবিভক্তি। উলু 'শূন্যবিভক্তি। দিয়ে- অনুসর্গ।

৮. সঠিক উত্তরটি বেছে নাও:

১.) "এদেশের যত পালা-পার্বণউৎসব-আনন্দসব- কিছুরই মূলে আছে..."- কী? (বর্ষা/চাষবাস/ জলসেচ/ শস্যরোপণ)।
উত্তর: চাষবাস;

২) শরতের রোদ যেন কাঁচা (তামা/রুপো/হীরে/সোনা)-র মতো।
উত্তর: সোনা;

৩) কখনো-কখনো বিকালে ঝিম-ধরা আকাশে দেখা দেয় (কালো/সাদা/ধূসর/বেগবান) মেঘ।
উত্তর: বেগবান

৪) ধানের সব থেকে বড়ো বন্ধু হল (রোদ/কৃষক/সার/বৃষ্টি)।
উত্তর: বৃষ্টি

৫) আকাশের জল চেয়ে (ভাদুলি/ক্ষেত্র/পুণ্যিপুকুর/বসুধারা) ব্রত করা হয়।
উত্তর: বসুধারা।

৬) "খুকু খাবে পেট ভরে/নিয়ে যাবে ঘর।"- কী নিয়ে যাবে? (জাম/আনারস/আম/কাঁঠাল)।
উত্তর: আম

৭)"ছেলেরা ছড়ার ঝুলি উপুড় করে দেয়।" -কী কারণে? (আম কুড়োনোর আনন্দে/বনভোজনে মেতে উঠে। বৃষ্টির ছন্দে/পরীক্ষাশেষের আনন্দে)।
উত্তর: বৃষ্টির ছন্দে;

৮)"আজ সেই সওদাগরও নেই" -আর কী নেই? (নৌকো/জাহাজ/বাণিজ্য/মালপত্র)।
উত্তর: বাণিজ্য;

৯)এদেশে সওদাগররা কতগুলি ডিঙা ভাসিয়ে সমুদ্রে বাণিজ্যে যেত? (পাঁচ/সাত/নয়/এগারো)।
উত্তর: সাত;
 
👉Paid Answer (For Membership User)
👉Download Books PDF
 
Editing By:- Lipi Medhi