Lesson
10
হাট যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
------------------------------
১)'হাট' কবিতায় বিকেলবেলায় হাটের দৃশ্য কেমন থাকে?
উত্তর:মালপত্র বেচাকেনা করে বিকেলবেলা লোকজন সব নিজের নিজের বাড়ি ফিরে যায় বলে সমগ্র হাট ফাঁকা থাকে।
২)'হাট' কবিতায় ক্লান্ত কাক কী করে?
উত্তর: 'হাট' কবিতায় ক্লান্ত কাক দলছুট হয়ে দূর থেকে একা একা উড়ে আসে আর তার পাখায় ভর করে নেমে আসে রাতের অন্ধকার।
৩)"একক কাকের ডাকে"-কবি এখানে কোন্ ঘটনার কথা বলেছেন?
উত্তর:কবি এখানে একক কাকের ডাকে নির্জন হাটে রাত্রি নামার কথা বলেছেন।
৪)"ছড়ানো সে ঠাঁই ঘিরে।" -কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: কবি হাটে বিভিন্ন মানুষের পায়ের ছাপ পড়ে থাকার কথা বলেছেন।
৫)"দিবসে থাকে না কথার অন্ত”- কোথাকার কথা বলেছেন কবি? এ কথার অর্থ কী?
কবি আলোচ্য প্রসঙ্গে হাটের কথা বলেছেন।
উত্তর: এ কথার অর্থ-দিনের বেলার হাটে বহু মানুষের সমাগম ঘটে আর মালপত্র কেনাবেচা বা আরও অন্যান্য বিষয় নিয়ে পরস্পরের মধ্যে বহু কথাবার্তা-বিনিময় হয়। কবি এখানে সেই কথাই আলোচ্য পক্তির মাধ্যমে বলেছেন।
৬) 'হাট' কবিতায় কবি লোকের আনাগোনা সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর:'হাট' কবিতায় কবি বলেছেন, হাটে বহু লোক এসেছে, বহু লোক আসছে এবং পরবর্তীকালেও বহু লোক আসবে।
৭)এর "ছুটে এপারের ক্রেতা”- ক্রেতা কোথায় ছুটে যায়?
উত্তর:(নদীর) ওপারের লোক পসরা নামালে এপারের ক্রেতার সেদিকে ছুটে যায়।
৮)'শিশির-বিমল প্রভাতের ফল'-এর শেষপর্যন্ত কী অবস্থা হয়?
উত্তর:এই ফল শত লোকের হাতে পরীক্ষার ছলনায় নীরব ব্যথা সহ্য করে শেষ পর্যন্ত বিকালবেলা অবহেলায় বিক্রীত হয়।
৯)'হাট' কবিতায় 'ঘরে ফিরিবার বেলা-য়' কী দেখা যায়?
উত্তর: 'ঘরে ফিরিবার বেলা-য়' দেখা যায়, কারও মালপত্র বিক্রি হয়নি বা লোকসান হয়েছে বলে সে কাঁদছে। আবার কেউ লাভবান হয়েছে বলে লাভের টাকা গাঁটে বাঁধছে।
১০)"জীর্ণ বাঁশের ফাঁকে" -'হাট' কবিতায় বর্ণিত এই বাঁশের সঙ্গে হাটের সম্পর্ক কী?
উত্তর: হাটের দোচালার নীচেই সাধারণত মালপত্র কেনাবেচা করা হয় আর দোচালা তৈরি করতে প্রয়োজন হয় বাঁশ।
১১)"হাটের দোচালা মুদিল নয়ান" -এ কথার অর্থ কী? কবি এখানে কোন্ সময়ের কথা বলেছেন?
উত্তর:উদ্ধৃত কথার অর্থ হল হাটের দোচালা চোখ বা চোখের পাতা বন্ধ করল। আসলে হাটের নানা ছোটো-বড়ো দোকানের
১২)ঝাঁপ বন্ধ করার ছবি আলোচ্য প্রসঙ্গে কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে।
উত্তর:দিনের-বেলায় হাটে মালপত্র কেনাবেচার পর যখন সন্ধ্যা নেমে আসে, কবি সেই সময়ের কথা বলেছেন।
১৩) "ওপারের লোক নামালে পসরা..."- কবি কোথায় এ কথা বলেছেন? 'পসরা' কী? পসরা নামানোর পর কী হয়?
উত্তর: 'পসরা' কথার অর্থ হল বিক্রয়যোগ্য দ্রব্য বা পণ্যদ্রব্য। পসরা নামানোর পর এপারের সমস্ত ক্রেতা তা কেনার জন্য ছুটে যায়।
উত্তর:হাটে সকাল থেকে বিকাল অবধি কেনাবেচা হয়। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ফিরে যায় ঘরে।
১৫) প্রভাতে গাছ থেকে তোলা টাটকা ফলের বিকালে কী অবস্থা হয়?
উত্তর: প্রভাতে গাছের টাটকা ফল হাটে সারাদিন ধরে সকলের হাতে পরীক্ষিত হওয়ার পর দিনের শেষে মলিন হয়ে সস্তায়, অবহেলাভরে বিক্রীত হয়।
১৬) "উদার আকাশে মুক্ত বাতাসে/ চিরকাল একই খেলা” -কেন?
উত্তর: উদার আকাশের নীচে, মুক্ত বাতাসে, ফাঁকা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে, এই হাট যেমন চিরকাল বসবে, তেমনই বিশ্বসংসারে চলবে হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের খেলা।
১৭). প্রকৃতির ছবি কীরূপ অসীম মমতায় কবিতায় আঁকা হয়েছে-তা আলোচনা করো।
উত্তর: কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত তাঁর 'হাট' কবিতায় অসীম মমতায় প্রকৃতির ছবি এঁকেছেন। দশ-বারোখানি গ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি হাট। সন্ধেবেলায় যখন নিবিড় অন্ধকার হাটকে জড়িয়ে ধরে, তখন প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে গ্রামগুলি।
এই হাটে প্রভাতে যেমন ঝাঁট পড়ে না, তেমনই সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বলে না। বেচা-কেনা সেরে বিকেলবেলায় যখন সকলে ঘরে ফিরে যায়, তখন বকের পাখা সঞ্চালনের সঙ্গে প্রকৃতির বুকে নেমে আসে নিবিড় অন্ধকার। সেই অন্ধকার পুবের মাঠকেও ঢেকে দেয়। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা পাকুড় গাছের ডালে বাতাসের ধাক্কায় এমন শব্দ ওঠে, যেন মনে হয় নদী তার প্রশ্বাস ছাড়ছে।
হাটের দোচালা বা দোকান সারাদিন যেখানে ব্যস্ত মানুষের ভিড় ছিল, এখন সেই দোচালা বন্ধ হয়েছে। সেই দোচালায় বাঁশের ফাঁকা অংশে বাতাস ঢুকে এমন শব্দ তৈরি করে, যেন মনে হয়, কেউ বুঝি বিদ্রুপের বাঁশি বাজাচ্ছে। এরকমই এক নির্জনতার মধ্যে একটি নিঃসঙ্গ কাকের আর্ত ডাক রাত্রির সূচনাকে স্বাগত জানায়। রাতে যে-হাট শুনসান, নির্জন, দিনের বেলা সেই স্থানে চেনা-অচেনা মানুষের ভিড়ে আর তাদের বিচিত্র কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে।
সপ্তাহের নির্দিষ্ট দুটি বা একটি দিনে এই হাটের মেলা বসে আবার ভেঙেও যায় নির্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু প্রত্যেক হাটবারেই আবার নতুন উদ্যোগ-উদ্যমে বসে এই পুরোনো হাট। বাতাস যেমন হয় স্বাধীন-মুক্ত, এই হাটও তেমনই মুক্ত সকলের কাছে। মুক্ত এবং উদার আকাশের তলে বরাবর বসছে এই হাট।
১৮)"বাজে বায়ু আসি বিদ্রূপ-বাঁশি" কবির এমন মনে হওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: হাটের দোচালার বাঁশ অযত্নে রক্ষিত হয়। কেবলমাত্র যেদিন হাট বসে, সেই দিনই দোকানদাররা সামান্য পরিষ্কার করে কোনোমতে দোকান বসায়। দীর্ঘ অযত্নে হাটের চালাঘরের বাঁশে ঘুণ ধরে, ফাটল ধরে। রাতে যখন নদীর গতিশীল বাতাস জীর্ণ বাঁশের সেই ছিদ্রে প্রবেশ করে, তখন এক ধরনের শব্দ শোনা যায়, যা আচমকা কোনো পথিক শুনলে তার সমস্ত শরীর ও মনে শিহরণ খেলে যাবে।
প্রসঙ্গত, কবির ব্যবহৃত এই শব্দবন্ধ 'বিদ্রূপ বাঁশি' বলার মধ্যে এক ধরনের ব্যঙ্গের স্বর যেন মিশে আছে। তিনি দিনমান অর্থ ও ফসলের আদানপ্রদানের কেন্দ্রস্থল হয়ে থাকা হাটের জীর্ণতা, দীনতাকে এ প্রসঙ্গে প্রকট করে তুলেছেন। হাটের দোচালার এই ভগ্ন রূপ গভীর অর্থে অর্থ ও সম্পদের অস্থায়িত্বকেও সুনিপুণভাবে বিশেষায়িত করে।
উত্তর: ওপারের লোক জিনিসপত্র নামালে এপারের লোক সেখানে যায়।
উত্তর: তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হল 'মরীচিকা', ও 'মরুশিখা'।
উত্তর: দিনেরবেলা-দিবসেতে (দিবসেতে সেথা কত কোলাহল।)
👉Download Books PDF
