Lesson 23
কিশোর বিজ্ঞানী অন্নদাশঙ্কর রায়
-------------------------------
১. এককথায় উত্তর দাও:
১. 'কিশোরবিজ্ঞানী' কবিতাটি কার লেখা?
উত্তরঃ 'কিশোর বিজ্ঞানী' কবিতাটি অন্নদাশঙ্কর রায়ের লেখা।
২. আঁধার হলেও কে বাড়ি ফেরার নাম করত না?
উত্তরঃ আঁধার হলেও কিশোরটি বাড়ি ফেরার নাম করত না।
৩. কিশোরটি ঝিনুক কোথায় কুড়াত?
উত্তরঃ কিশোরটি সমুদ্রের তটে ঝিনুক কুড়াত।
৪. ঝিনুকগুলি কেমন ছিল?
উত্তরঃ ঝিনুকগুলি ছিল নানা রঙের নকশা আঁকা।
৫. সে বড়ো হয়ে কেমন ঝিনুক কুড়াত?
উত্তরঃ বড়ো হয়ে সে. জ্ঞানের সাগরবেলায় বিদ্যারত্নরূপী ঝিনুক কুড়াত।
২. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি:
১. "ঝিনুক তো নয়, বিদ্যা রতন/মাড়িয়ে না যায় হেলায়। বিদ্যাকে এখানে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?? তাকে মাড়িয়ে যায় না?
উত্তরঃ বিদ্যাকে এখানে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কিশোর বিজ্ঞানী বড়ো হয়ে তাকে মাড়িয়ে যায় না।
২. "বলে গেছেন যা নিউটন/পরম বিজ্ঞানী"- নিউটন কে তিনি কী আবিষ্কার করেন?
উত্তরঃ নিউটন হলেন একজন ইংরেজ পদার্থ বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ। তিনি মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বা মহাকর্ষ বল আবিষ্কার করেন।
৩. "তারই বেলায় কুড়িয়ে গেলেম/কয়েক মুঠি নুড়ি।"- 'কুড়িয়ে' শব্দ অর্থ কী? সে কোথা থেকে কয়েক মুঠো নুড়ি সংগ্রহ করেছে?
উত্তরঃ কুড়িয়ে' শব্দের অর্থ হল- সংগ্রহ করা। সে জ্ঞানরূপী সমুদ্রের তট থেকে কয়েক মুঠো নুড়ি সংগ্রহ করেছে।
১. লীলাময় রায় কার ছদ্মনাম?
উত্তরঃ লীলাময় রায় কবি অন্নদাশঙ্কর রায়-এর ছদ্মনাম।
২. কিশোরের মন কী চাইত?
উত্তরঃ 'কিশোর বিজ্ঞানী' কবিতায় কিশোরের মন চাইত একটু অবকাশ পেলেই সমুদ্রের বালুকাবেলায় চলে যেতে।
৩. বড়ো হয়ে সেই কিশোরটি কী করত?
উত্তরঃ বড়ো হয়ে সেই কিশোরটি জ্ঞানসমুদ্রের বালুকাবেলায় ঝিনুকতুল্য জ্ঞানরত্ন আহরণ করত।
৪. বালুকাবেলার ঝিনুকের সঙ্গে কবি কীসের তুলনা করেছেন?
উত্তরঃ বালুকাবেলার ঝিনুকের সঙ্গে কবি জ্ঞানের সমুদ্রতীরে ছড়ানো বিদ্যারত্নের তুলনা করেছেন।
৫. বিজ্ঞানী নিউটনকে কবি কোন অভিধায় ভূষিত করেছেন?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী নিউটনকে কবি অন্নদাশঙ্কর রায় 'পরম বিজ্ঞানী' অভিধায় ভূষিত করেছেন।
৬. বিজ্ঞানী কাদের বলে?
উত্তরঃ বিজ্ঞানশাস্ত্রের পণ্ডিত অর্থাৎ, যুক্তি, প্রমাণ ও পরীক্ষার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানে যাঁরা পন্ডিত তাঁদেরকে বিজ্ঞানী বলা হয়।
৭. "জ্ঞানের সাগরবেলা"- বাক্যটি থেকে বিভক্তিচিহ্ন আলাদা করো।
উত্তরঃ জ্ঞানের = জ্ঞান + এর-'এর' বিভক্তি।
৮. "তার মন লাগে না খেলায়" -তাহলে সে কী করে?
উত্তরঃ খেলায় মন না-লাগলে সে ছুটি পেলেই সমুদ্রতীরে ছুটে যায়।
৯. "সেখানে সে বেড়ায় হেঁটে" -সে কোথায়, কেমনভাবে হাঁটে?
উত্তরঃ সে সমুদ্রতীরে এধার থেকে ওধার হেঁটে বেড়ায়।
১০. "বাড়ি ফেরার নাম করে না"-কে, কেন বাড়ি ফিরতে চায় না?
উত্তরঃ একটি কিশোর সমুদ্রতীরে সর্বত্র হেঁটে বেড়াতে ও নকশা আঁকা ঝিনুক কুড়োতে ভালোবাসে বলে, বাড়ি ফিরতে চায় না।
১১. "নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুক”-কে, কোথায় ঝিনুক পায় এবং এগুলি কেমন?
উত্তরঃ একটি কিশোর সমুদ্রতীরে এইসব নানা রঙের নকশা-আঁকা ঝিনুক কুড়িয়ে পায় এবং এগুলি এক একটি রত্নের মতো।
১২. "কী আপনার বাণী ..." -কাকে, কারা এ কথা বলে?
উত্তরঃ একটি কিশোর একসময় বৃদ্ধ হলে তাকে সাধারণ লোক এই প্রশ্ন করে।
১৩. "বলে গেছেন যা নিউটন/পরম বিজ্ঞানী-" -বিজ্ঞানী কী বলে গিয়েছেন?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী নিউটন বলে গিয়েছেন যে, সীমাহীন জ্ঞানসমুদ্রে প্রচুর রত্ন রয়েছে। তিনি সেই সমুদ্রতীর থেকে কয়েকটি মাত্র নুড়িপাথর কুড়িয়ে পেয়েছেন মাত্র।
৪. নীচের প্রশ্নগুলি নিজের ভাষায় উত্তর লেখো:
১. পাঠ্য ছড়াটির প্রথম পঙ্ক্তিটি শুরু হয়েছে 'এক যে ছিল কিশোর...' -এইভাবে। সাধারণত কোন্ ধরনের রচনা এভাবে শুরু হয়ে থাকে? সেই ধরনের রচনার বিষয়ের সঙ্গে ছড়াটির বিষয়গত সাদৃশ্য/বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ সাধারণত রূপকথা ধরনের গল্প রচনা এভাবে শুরু হয়ে থাকে।
আলোচ্য কবিতায় দেখা গিয়েছে যে, এক ছোট্ট শিশু জ্ঞানের সাগর তটে ঝিনুকরূপী বিদ্যারত্ন কুড়িয়ে বেড়াতে বেড়াতে পরবর্তীকালে পরমজ্ঞানী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। রূপকথার গল্প যেমন কাল্পনিক হয়, তেমনই এই কাহিনিটিও যেন অনেকটাই রূপকথা জাতীয়।
রূপকথার গল্প বাস্তবের সঙ্গে মিল রেখে গড়ে ওঠে না। তা শুধুমাত্র জন-মনোরঞ্জনমূলক কাহিনি। কিন্তু আলোচ্য কবিতাটির সঙ্গে বাস্তবের মিল প্রকট।
২. 'মন লাগে না খেলায়'-কার খেলায় 'মন লাগে না'? কিশোরেরা সাধারণত কোন ধরনের খেলাধুলো করে থাকে? তার পরিবর্তে ছড়ার কিশোরটি কী করতে পছন্দ করত?
উত্তরঃ কিশোর ছেলেটির খেলায় মন লাগে না।
কিশোরেরা সাধারণত ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি ইত্যাদি খেলাধুলো করে থাকে।
ছড়ার কিশোরটি বয়সোচিত অন্যান্য খেলার পরিবর্তে সমুদ্রতটে নকশা আঁকা এবং ঝিনুক কুড়িয়ে বেড়াতে পছন্দ করত। এটিই তার খেলা।
৩. "এক একটি রতন যেন/নাই বা কেউ চিনুক।”- কোন্ জিনিসকে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে? কেনই বা এ ধরনের তুলনা? তাকে চেনা বা না চেনার প্রসঙ্গই বা এল কেন?
উত্তরঃ এখানে বাহ্যিক অর্থে নকশা আঁকা ঝিনুককে রত্নের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু আসলে এখানে বিদ্যাকেই 'রত্ন' বলে বোঝানো হয়েছে।
বিদ্যার মতো খাঁটি রত্ন এ জগতে আর কিছু নেই। যারা এই রত্নকে আহরণ করতে পারে, তারা সর্বত্র সম্মানের অধিকারী হয়। তাই কবি বিদ্যাকে রত্নের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
এই বিদ্যারূপ রত্নকে সকলে চিনতে বা উপলব্ধি করতে পারে না। তাই তো জগতে শিক্ষিত ও মূর্খ দু-ধরনের ব্যক্তি আছে। যারা বিদ্যারূপ রত্নকে না-চিনে, অবহেলা ভরে তাকে মাড়িয়ে যায়, তাদের জীবনটাই থেকে যায় অপূর্ণ। তাই তাকে চেনা বা না-চেনার প্রসঙ্গ এসেছে।
৪. সেদিনের কিশোরটি পরিণত বয়সে উপনীত হলে তাকে কী করতে দেখা যায়?
উত্তরঃ সেদিনের কিশোরটি পরিণত বয়সে উপনীত হয়ে জ্ঞানের সাগরবেলায় ঝিনুকরূপী বিদ্যারত্ন সংগ্রহ করে বেড়ায়। বিদ্যারত্নকে কোনোভাবেই অবহেলায় বা অবজ্ঞায় পায়ে মাড়িয়ে চলে যায় না। অবলীলায় সে বলে, এই জ্ঞানরাজ্য বিদ্যারত্নে পরিপূর্ণ। সেই জ্ঞানরাজ্যে জীবনে চলার পথে দু-এক মুঠো জ্ঞানসামগ্রী সংগ্রহ করেছে মাত্র।
৫. "ঝিনুক কুড়োয়/জ্ঞানের সাগরবেলায়"-অংশের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ বিখ্যাত ছড়াকার অন্নদাশঙ্কর রায়ের 'কিশোর বিজ্ঞানী' কবিতায় বর্ণিত এক কিশোর অবকাশ পেলেই সমুদ্রের ধারে ছুটে গিয়ে নানা রঙের নকশা-আঁকা ঝিনুক কুড়িয়ে বেড়াত। সন্ধে হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরার কথা তার মনে থাকত না। তারপর পরিণত বয়সে সে ঝিনুকরূপী বিদ্যারত্নকে জ্ঞানের সাগরতটে সন্ধান করতে থাকে। এই বিদ্যারত্নকে সে অবজ্ঞা ভরে মাড়িয়ে যায় না। তার পাওয়া এক-একটি ঝিনুক যেন জ্ঞানসাগরের এক-একটি মহামূল্যবান রত্নবিশেষ। তাই সে একমনে জ্ঞানরূপী ঝিনুককে জ্ঞানের সাগরতটে খুঁজে বেড়ায়।
৬. আবিষ্কারের গল্পগুলির পাশে পাশে আবিষ্কারকের নাম উল্লেখ করো এবং তাদের সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করো:
ঘড়ি, এরোপ্লেন, রেডিয়ো, দূরবিন, টেলিভিশন।
উত্তরঃ ঘড়ি: ১৫২৪ খ্রিস্টাব্দে 'পিটার হেনলিন' বা 'হেলেন' ঘড়ি আবিষ্কার করেন। তিনি জার্মানির অধিবাসী ছিলেন। ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং মারা যান ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে।
এরোপ্লেন: এরোপ্লেন আবিষ্কৃত হয় ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে। আবিষ্কার করেন আমেরিকার অধিবাসী 'উইলবার রাইট' এবং 'অরভিল রাইট'। উইলবার ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে ৩০ মে মৃত্যুবরণ করেন। অন্যদিকে অরভিল রাইট জন্মগ্রহণ করেন ১৯ আগস্ট, ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে এবং প্রয়াত হন ৩০ জানুয়ারি, ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে।
রেডিয়ো: রেডিয়ো আবিষ্কৃত হয় ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে। আবিষ্কার করেন 'গুলিয়েলমো মার্কনি'। তিনি ইটালির অধিবাসী ছিলেন। তিনি ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে 'নোবেল পুরস্কার' পান।
দূরবিন: দূরবিন আবিষ্কৃত হয় ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে। আবিষ্কার করেন 'গ্যালিলিয়ো'। গ্যালিলিয়ো ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি তাসকানি রাষ্ট্রের পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি আটাত্তর বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
টেলিভিশন: টেলিভিশন আবিষ্কৃত হয় ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে। আবিষ্কার করেন 'জন লোগি বেয়ার্ড'। তিনি স্কটল্যান্ডের অধিবাসী ছিলেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ আগস্ট। এই প্রখ্যাত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুন।
১. এক যে ছিল কিশোর, তার / মন লাগে না ।
উত্তরঃ খেলায়
২. সেখানে সে বেড়ায় / এধার থেকে ওধার।
উত্তরঃ হেঁটে
৩. কুড়িয়ে তোলে নানা রঙের / নকশা আঁকা ।
উত্তরঃ ঝিনুক
৪. বড়ো হয়ে ঝিনুক কুড়োয় / সাগরবেলায়।
উত্তরঃ জ্ঞানের
৫. অনন্তপার পারাবার/ পুরী।
উত্তরঃ জ্ঞান, রত্নভরা।
উত্তরঃ খেলাধুলা করতে কিশোরের মন লাগে না।
২. কখন কিশোরের মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায়?
উত্তরঃ ছুটি পেলেই কিশোরের মন সমুদ্দুরের বেলায় যেতে চায়।
৩. অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় কী কুড়িয়ে তোলে?
উত্তরঃ অনুসন্ধিৎসু কিশোরটি সাগরবেলায় নানা রঙের নকশা আঁকা ঝিনুক কুড়িয়ে তোলে।
৪. কোন্ পারাবারকে 'অনন্তপার' বলা হয়েছে?
উত্তরঃ জ্ঞানের পারাবারকে 'অনন্তপার' বলা হয়েছে।
৫. দুজন প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানীর নাম লেখো।
উত্তরঃ দুজন প্রখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী হলেন-সত্যেন্দ্রনাথ বসু এবং জগদীশচন্দ্র বসু।