Chapter
5
পশুপাখির ভাষা
সুবিনয় রায়চৌধুরী
[১৮৯০-১৯৪৫]
----------------------------
১. সুবিনয় রায়চৌধুরী কী কী বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন?
উত্তর: সুবিনয় রায়চৌধুরী হারমোনিয়াম ও এসরাজ বাজাতে পারতেন।
২. সুবিনয় রায়চৌধুরী কোন্ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: সুবিনয় রায়চৌধুরী সন্দেশ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
৩) নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
১. ভাষার প্রয়োজন হয় কেন?
উত্তর: মনের বিশেষ ভাবসমূহকে শব্দ বা বাক্যের মাধ্যমে পরস্পরকে বোঝানোর জন্য ভাষার প্রয়োজন হয়।
২. "পশুপাখিরা অবিশ্যি মানুষের অনেক কথারই অর্থ বোঝে।”-এ কথার সমর্থনে রচনাটিতে কোন, কোন্ প্রসঙ্গের অবতারণা করা হয়েছে? তুমি এর সঙ্গে আর কী কী যোগ করতে চাইবে?
উত্তর: পশুরা মানুষের অনেক কথার অর্থ বোঝে-এ কথার সমর্থনে রচনাটিতে বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। লেখক জানিয়েছেন-কুকুর, বনমানুষ, ঘোড়া ইত্যাদি পশু মানুষের দেওয়া নাম শুনলেই কান খাড়া করে। তাদের নাম করে ডাকলেই কাছে আসে। মুরগি 'তি-তি', হাঁস 'সোই-সোই', ছাগল 'অ-র্' ডাক শুনে মানুষের কাছে আসে। মাহুতের কথা শুনে হাতি সামনে-পিছনে যায়, বসে, কাত হয়-এমনকি সাবধানও হয়। এ ছাড়া কুকুর তো হুকুম পালনে ওস্তাদ। অবশ্য কুকুরকে সেসব কথার অর্থ শেখাতে হয়।
৩. তোমার পরিবেশে থাকা জীবজন্তুর ডাক নিয়ে তুমি একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো।
উত্তর: আমরা পরিবেশে যেসব জীবজন্তু দেখতে পাই তাদের মধ্যে গোরু, ছাগল, কুকুর, বেড়াল, ঘোড়া, হাতি, শিয়াল ইত্যাদি প্রধান। গোরুর ডাককে হাম্বা বলে, তার প্রয়োজন মতো সে 'হাম্বা' বলে ডাক ছাড়ে। ছাগলকে আমরা 'ম্যা ম্যা' বলে ডাকতে শুনি, বাচ্চা ছাগলের এই ডাক বেশ স্পষ্ট। কুকুরের ডাককে বলে 'বুক্কন'। কুকুর 'ঘেউ ঘেউ' করে ডাকে। আবার এটিও দেখা যায় যে, বিভিন্ন অবস্থায় কুকুর আলাদা আলাদাভাবে ডাক ছাড়ে। বিড়ালের ডাককে বলে 'জিবন'। সে 'মিউ মিউ' বা 'মিয়াও মিয়াও' করে ডাকে। ঘোড়ার ডাক হল 'হ্রেষা'। রেগে গেলে সে 'চিঁ হি' করে ডাকে। হাতির ডাক হল 'বৃংহণ'। পাগলা হাতি বা বুনো হাতির ডাক বড়ো ভয়ংকর। শিয়াল 'হুক্কাহুয়া' বলে ডাক ছাড়ে। রাত্রিবেলা কোনো মানুষ যদি শেয়ালের মতো করে ডাকে, তবে তারা রেগে গিয়ে সেরকমই ডাক ছাড়তে থাকে।
৪. এমন একটি গল্প লেখো যেখানে পশুপাখিরা মানুষের সঙ্গে মানুষেরই মতো কথাবার্তা বলেছে আর তাদের মধ্যে অপরূপ বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।
উত্তর: শিউলি গাছের তলায় দোয়েল পাখি দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে আছে। সে ময়ূরের কাছে নালিশ জানাতে এসেছে যে, মুরগিগুলো তার খাবার খুঁটে খেয়ে যাচ্ছে। পাশে থাকা টুনটুনি তার সাক্ষী। সারাদিন ঘুরেও তারা এখন আর খাবার পাচ্ছে না। ফলে তাদের বেঁচে থাকতে কষ্ট হচ্ছে।
মুরগিগুলোকে ডাকা হল। তারা বলল, আমাদের মনিব আমাদের পেট ভরে খেতে দেয় না। তা ছাড়া যেসব শুকনো খাবার দেয়, তা মুখে রোচে না। গলাটাও যেন চিরে যায়। কেঁচো, কেন্নো, উইপোকা- এগুলো তাদের দিতে বলুন, নইলে আমরা খাব না। বিচারক ময়ূর দেখল, ভারি বিপদ। মুরগির কথায় যুক্তি আছে। তারপর এখন মানুষেরাও আর মাঠে-ঘাটে গোবর ফেলে রাখে না, মাঠে কীটনাশক পোকা মারার ওষুধ দেয়, ফলে প্রয়োজনমতো কেঁচো-কেন্নো মেলা ভার। উপস্থিত অন্যান্য শালিক, প্যাঁচা, হাঁড়িচাচা-এরাও ব্যাপারটিকে সমর্থন করল।
সিদ্ধান্ত হল, এই অবস্থার জন্য মানুষই দায়ী। কিন্তু তাদের সঙ্গে বিদ্যাবুদ্ধিতে পাখিরা পারবে না। সুতরাং, তাদের মিলেমিশে থাকাই ভালো। এবার থেকে পাখিরা বরং আলোচনার মাধ্যমেই সহমতের ভিত্তিতে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করবে।
৫. রিউবেন ক্যাস্টাং-এর অভিজ্ঞতার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্থান পেয়েছে, তা আলোচনা করো।
উত্তর: পশুদের ভাষা আছে, ইচ্ছে করলে সেই ভাষা বোঝা যায়-এ কথা জানানোর প্রসঙ্গে রিউবেন ক্যাস্টাং-এর অভিজ্ঞতার কথা পাঠ্যাংশে স্থান পেয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে তিনি পশুদের সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে মিশেছেন। তিনি পশুদের ভাষা বোঝেন আর বোঝেন বলেই জংলি হাতির সামনে থেকে তিনি কয়েকবার বেঁচে ফিরেছেন। একইভাবে বাঘের গরম নিশ্বাস, প্রকাণ্ড ভল্লুকের থাবা এবং গোরিলার জড়িয়ে ধরা অবস্থা থেকেও তিনি রক্ষা পেয়েছেন। তিনি পশুদের ভাষা জানেন বলেই এতবার সাক্ষাৎ যমকে এড়িয়ে যেতে পেরেছেন এবং মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
৬. "একেও ভাষা বলতে হবে।”-কাকে 'ভাষা'র মর্যাদা দিতে হবে বলে বক্তা মনে করেন? তুমি কি এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত? বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: শুধু শব্দের দ্বারা নয়-ইশারা দিয়েও পশুরা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। শব্দ ছাড়া ইশারার সাহায্যে অর্থ বোঝার ব্যাপারটিকেও পাঠ্যাংশের কথক ভাষার মর্যাদা দিতে চেয়েছেন। আমি বক্তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। কারণ, মানুষ কথা বা শব্দের সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করে। সেইসঙ্গে নানান অঙ্গভঙ্গি ও ইশারার সাহায্যেও সে অন্যকে নিজের কথা বলে। এ ছাড়া বিশেষ সংকেত-ধ্বনির মাধ্যমেও মানুষ মনের ভাব বোঝায়। সুতরাং, মানুষ যদি ভাষা ছাড়া অন্য মাধ্যমে ভাব বোঝাতে পারে, তবে পশুরাই বা ভাব বোঝাতে যেসব শারীরিক ভঙ্গি করে, তা ভাষা হবে না কেন?
৪. একটি বাক্যে উত্তর দাও:
(১) কোন্ বিষয়ে নানারকম পরীক্ষা হওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: পশুপাখির ভাষা আছে কিনা, তারা কীভাবে পরস্পরকে বোঝানোর জন্য মনের ভাব প্রকাশ করে, কোন্ শব্দ দিয়ে তারা কোন্ ভাব বোঝায়-সেই বিষয়ে নানান পরীক্ষার কথা পাঠ্যাংশে বলা হয়েছে।
(২) মাহুতের মুখের 'ভোরি' ও 'মাইল' শব্দ শুনে হাতি কী করে?
উত্তর: মাহুতের মুখের 'ভোরি' শব্দ শুনে হাতি পিছনে যায়, আর 'মাইল' শব্দ শুনে সাবধান হয়।
(৩) "সে ভাষা তো তারা বলতে পারে না।"-কারা, কোন্ ভাষায় কথা বলতে অক্ষম?
উত্তর: পশুপাখিরা মানুষের ভাষা বুঝতে সক্ষম হলেও, তারা মানুষের ভাষায় কথা বলতে অক্ষম।
(৪) রেগে যাওয়া বেড়াল কোন্ শব্দ করে?
উত্তর: রেগে যাওয়া বেড়াল 'ওঁয়াওঁ' শব্দ করে।
(৫) 'পশুপাখির ভাষা' গদ্যে যেসব পশু ও পাখির কথা বলা হয়েছে, তাদের নাম আলাদা করো।
উত্তর: পশু-কুকুর, বনমানুষ, ঘোড়া, ছাগল, হাতি, বেড়াল, বাঘ, ভল্লুক, সিংহ, গোরিলা, শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং, বানর, চিতা।> পাখি-মুরগি, হাঁস।
(৬) "বড়ো একটা শোনা যায় না" কী না-শোনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: জংলি কুকুর ও ঘোড়ার শব্দ না-শোনার কথা বলা হয়েছে।
(৭) কোন্ জন্তু খাবারের লোভে ভাব করে না?
উত্তর: আমিষাশী জন্তু কখনও খাবারের লোভে ভাব করে না।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
(১) সঠিক উত্তরটি বেছে নাও:
(১) তি-তি ডাক শুনে কাছে আসে (হাঁস/মুরগি/ছাগল)।
উত্তর: মুরগি
(২) হুকুম পালন করতে ওস্তাদ (হাতি/ঘোড়া/কুকুর)।
উত্তর: কুকুর
(৩) 'পশুপাখির ভাষা' গদ্যে যে-বিদেশি সাহেবের নাম আছে তিনি হলেন-রিউবেন
(কাস্টিং/ক্যাস্টাং/ক্যাটিং)।
উত্তর: ক্যাস্টাং
(৪) "যদি তারই ভাষায় বলতে পারো, তুমি তার বন্ধু।"- তার বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?- (হাতিকে/ সিংহকে / শিম্পাঞ্জিকে)।
উত্তর: সিংহকে
(৫) ক্যাস্টাং সাহেব প্রায় (ত্রিশ/পঁয়ত্রিশ/চল্লিশ) বছর পশুদের সঙ্গে থেকেছেন।
উত্তর: চল্লিশ
👉Paid Answer (For Membership User)
👉Download Books PDF