অধ্যায় ২
ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ
 যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন
---------------------------------------------------------

MCQs
 
1. জাঁতার মতো যন্ত্র দেখা গেছে-

(i) সোয়ান উপত্যকাতে
(ii) সরাই নহর রাইতে
(iii) আদমগড়ে

উত্তর: (ii) সরাই নহর রাইতে

2. আদিম মানুষ প্রথম কৃষিকাজ শেখে-

(i) নতুন পাথরের যুগে
(ii) পুরোনো পাথরের যুগে 
(iii) মাঝের পাথরের যুগে

উত্তর: (iii) মাঝের পাথরের যুগে

3. পুরোনো পাথরের যুগের মাঝের পর্বে প্রধান হাতিয়ার ছিল-

(i) গাছের ডাল
(ii) ছুরি
(iii) তিরধনুক

উত্তর: (iii) তিরধনুক

4. আফ্রিকা মহাদেশের ইথিয়োপিয়ার হাদার নামক জায়গায় যে-ছোটো মেয়ের কঙ্কাল পাওয়া গেছে তার নাম-

(i) হোমো হাবিলিস
(ii) লুসি
(iii) ট্যরো ট্যরো

উত্তর: (ii) লুসি

5. আদিম মানুষের জীবনে প্রথম জরুরি আবিষ্কার-

(i) ধাতু
(ii) আগুন
(iii) চাকা

উত্তর: (iii) চাকা

6. ভীমবেটকা অবস্থিত-

(i) পশ্চিমবঙ্গে
(ii) রাজস্থানে
(iii) রজস্থান 

উত্তর: (ii) রাজস্থানে

7. হুন্সগি উপত্যকা অবস্থিত-

(i) কেরলে
(ii) দিল্লিতে
(iii) কর্ণাটকে 

উত্তর: (ii) দিল্লিতে

8. ট্যরো কথার অর্থ হল-

(i) ঘোড়া
(ii) ষাঁড়
(iii) বন্যপ্রাণী 

উত্তর: (iii) বন্যপ্রাণী 

9. হাতকুঠার বানিয়েছিল-

(i)  এপ মানুষ
(ii)  দক্ষ মানুষ
(iii) হোমো ইরেকটাস

উত্তর: (iii) হোমো ইরেকটাস

10. আদিম মানুষ স্থায়ী বসতি নির্মাণ করেছিল, কারণ তারা-

(i)  কৃষিকাজ শিখেছিল
(ii)  পশুপালন শিখেছিল
(iii)  হাতিয়ারের ব্যবহার শিখেছিল

উত্তর: (i)  কৃষিকাজ শিখেছিল
 
শূন্যস্থান পূরণ করো

11. সবচেয়ে পুরোনো আদিম মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে----------------

(i) পূর্ব আফ্রিকাতে
(ii) ভারতে
(iii)পশ্চিম চিনে

উত্তর: (i) পূর্ব আফ্রিকাতে

12. লেজহীন এক ধরনের বড়ো বানরদের -------------------- বলা হত

(i) গিবন
(ii) ওরাং ওটাং
(iii) এপ

উত্তর:  (ii) ওরাং ওটাং

13. মূলত ------------এর আকারের ওপর ভিত্তি করে আদিম মানুষকে অস্ট্রালোপিথেকাস, হোমো হাবিলিস, হোমো ইরেকটাস ও হোমো স্যাপিয়েন্স প্রভৃতি বিভাগে ভাগ করা যায়

(i)  মস্তিষ্ক
(ii) দেহ
(iii)  মুখ

উত্তর: (i)  মস্তিষ্ক
14. দলবদ্ধভাবে গুহায় থাকতৃ ------------------। 

(i) হোমো হাবিলিস
(ii)  হোমো ইরেকটাস
(iii) হোমো স্যাপিয়েন্স

উত্তর: (ii)  হোমো ইরেকটাস

15. বনে লাগা আগুনকে বলা হয়--------------------

(i) অগ্ন্যুৎপাত
(ii) ভূমিকম্প
(iii)দাবানল

উত্তর:  (iii)দাবানল

16. লুসি নামক কঙ্কালটি পাওয়া গেছে-------------------------

(i)   ভারতে
(ii)  ইথিয়োপিয়ায়
(iii)  চিনে

উত্তর:  (ii)  ইথিয়োপিয়ায়

17. পুরোনো পাথরের অস্ত্র পাওয়া গেছে কাশ্মীরের —-------------উপত্যকায়

(i)  সোয়ান
(ii)  উলার
(iii)  ডাল

উত্তর:  (i)  সোয়ান

18. -----------------তে পুরোনো গুহাবসতির নজির রয়েছে

(i) ভীমবেটকা
(ii) অজন্তা
(iii) ইলোরা

উত্তর:  (i) ভীমবেটকা

19. ----------------- খ্রিস্টাব্দে হুন্সগিতে পুরোনো পাথরের যুগের হাতিয়ার পাওয়া গেছে

(i)  ১৯৫৭
(ii)  ১৯৮৩
(iii)  ১৯৯৩

উত্তর:  (ii)  ১৯৮৩

20. রাজস্থানের দিদওয়ানা অঞ্চলে ------------------ মানুষের প্রত্নতাত্ত্বিক সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রজাতির

(i)  হোমো ইরেকটাস
(ii)  হোমো হাবিলিস
(iii)  হোমো স্যাপিয়েন্স

উত্তর: (i)  হোমো ইরেকটাস
21. উত্তরপ্রদেশের সরাই নহর রাইতে ধারওলা -------------------পাওয়া গেছে

(i)   তিরের ফলা
(ii)   তুরপুন
(iii)   ছুরি

উত্তর:  (ii)   তুরপুন

22. রাজস্থানের—------------এর মানুষ গৃহপালিত পশুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল

(i)  মহাদহা
(ii)  বাগোড়
(iii)  দমদমা
উত্তর: (ii)  বাগোড়

23. নর্মদা নদীর আদমগড়ের মানুষেরা —--------------শিখেছিল

(i)  পশুপালন
(ii)  কৃষিকাজ
(iii)  কুমোরের চাকার ব্যবহার

উত্তর:  (i)  পশুপালন
24. —-------------------পাথরের যুগে মানুষেরা পাথরের উন্নত হাতিয়ার বানানোর কৌশল শিখেছিল

(i)  পুরোনো 
(ii)  মাঝের
(iii)  নতুন

উত্তর:  (iii)  নতুন

25. আদিম মানুষের যাযাবর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে ----------------এর ফলে

(i) চাকার আবিষ্কার 
(ii) কৃষির আবিষ্কার
(iii) আগুন আবিষ্কার

উত্তর:  (ii) কৃষির আবিষ্কার
 
সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো: 

26. এপ থেকে আলাদা হয়ে যে-মানব পরিবার তৈরি হয়েছিল তার নাম হল-

(i) হোমো স্যাপিয়েন্স
(ii) হোমো হাবিলিস
(iii)হোমিনিড

উত্তর:  (iii)হোমিনিড

27. কোনোভাবে দাঁড়াতে পারা প্রথম মানুষকে বলা হত-

(i) অস্ট্রালোপিথেকাস
(ii) হোমো ইরেকটাস
(iii) হোমো হাবিলিস

উত্তর: (i) অস্ট্রালোপিথেকাস

28. দক্ষ মানুষ বলা হত-

(i) হোমো ইরেকটাসকে
(ii) হোমো হাবিলিসকে
(iii) হোমো স্যাপিয়েন্সকে

উত্তর: (ii) হোমো হাবিলিসকে

29. অস্ট্রালোপিথেকাসের বৈশিষ্ট্য হল-

(i) এরা ছোটো ও তীক্ষ্ণ অস্ত্র ব্যবহার করত
(ii) এরা হাতকুঠার ব্যবহার করত
(iii) এরা পাথর ও গাছের ডাল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত

উত্তর: (iii) এরা পাথর ও গাছের ডাল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত

29. হোমো হাবিলিস মানব গোষ্ঠীর একটি বৈশিষ্ট্য হল-

(i) কোনোরকম দাঁড়ানো
(ii) পাথরের অস্ত্রের ব্যবহার
(iii) মাংস পুড়িয়ে খাওয়া

উত্তর: (ii) পাথরের অস্ত্রের ব্যবহার

30. বর্শা জাতীয় পাথরের অস্ত্র বানাতে পারত-

(i) হোমো স্যাপিয়েন্সরা
(ii) হোমো ইরেকটাসরা
(iii) হোমো হাবিলিসরা

উত্তর: (i) হোমো স্যাপিয়েন্সরা

31. বুদ্ধিমান মানুষ হল-

(i) হোমো হাবিলিস
(ii) হোমো ইরেকটাস
(iii) হোমো স্যাপিয়েন্স

উত্তর: (iii) হোমো স্যাপিয়েন্স

32. পাথরের যুগকে সাধারণভাবে ভাগ করা হয়-

(i)  তিনটি পর্যায়ে
(ii)  চারটি পর্যায়ে
(iii) পাঁচটি পর্যায়ে

উত্তর: (i)  তিনটি পর্যায়ে

32. হোমো ইরেকটাস কথার অর্থ হল-

(i) দণ্ডায়মান মানুষ
(ii)  দক্ষ মানুষ
(iii) বুদ্ধিমান মানুষ

উত্তর: (i) দণ্ডায়মান মানুষ
 
Short Answer Question

১)এপ ও মানুষের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী ছিল?
 
উত্তর:  এপ ও মানুষের মধ্যে প্রধান পার্থক্য ছিল এই যে, মানুষ হাতিয়ার তৈরি করতে পারত; কিন্তু এপরা তা পারত না
 
 ২)ভারতীয় উপমহাদেশে পুরোনো পাথরের যুগের কী কী হাতিয়ার পাওয়া গেছে?
 
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশে পুরোনো পাথরের যুগে পাওয়া কয়েকটি হাতিয়ার হল-হাতকুঠার, বল্লম, ছুরি, হারপুন, র‍্যাঁদা প্রভৃতি
 
৩)ন নতুন পাথরের যুগের মানুষের হাতিয়ারগুলি কীরূপ ছিল?
 
উত্তর: নতুন পাথরের যুগের মানুষের হাতিয়ারগুলি ছিল অনেক মসৃণ, হালকা ও ধারালো। পুরোনো ও মাঝের পাথরের যুগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত
 
 ৪)নতুন পাথরের যুগের কয়েকটি হাতিয়ারের নাম করো
 
উত্তর: নতুন পাথরের যুগের কয়েকটি হাতিয়ারের নাম হল- ফসল কাটার কাস্তে, কোদাল। এ ছাড়া কুলো, শিলনোড়া, হামানদিস্তা, জাঁতা, হাতুড়ি, বাটালি প্রভৃতি
 
 ৫)পুরোনো পাথরের যুগ বলতে কোন সময়কালকে ধরা হয়?
 
উত্তর: আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০ লক্ষ বছর থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০ হাজার বছর পর্যন্ত মানবসভ্যতার সময়কালকে পুরোনো পাথরের যুগ হিসেবে ধরা হয়
 
 ৬)লুসির কঙ্কাল কবে, কোথায় খুঁজে পাওয়া যায়?
 
উত্তর: ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রায় ৩২ লক্ষ বছর আগের একটি ছোটো মেয়ের কঙ্কালের কিছু অংশ আফ্রিকার ইথিয়োপিয়ার হাদার নামক স্থানে খুঁজে পাওয়া যায়। এর নাম দেওয়া হয়েছিল লুসি
 
৭)ভারতীয় উপমহাদেশে কোথায় কোথায় হোমো ইরেকটাস প্রজাতির প্রমাণ পাওয়া গেছে?
 
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশে কর্ণাটকের হুন্সগি উপত্যকায়, রাজস্থানের দিদওয়ানা ও মহারাষ্ট্রের নেভাসাতে হোমো ইরেকটাস প্রজাতির প্রমাণ পাওয়া গেছে
 
৮)ভীমবেটকা গুহা কীজন্য বিখ্যাত?
 
উত্তর: মধ্যপ্রদেশের ভীমবেটকা গুহা বিখ্যাত তার কারণ হল, এই গুহার দেয়ালে পুরোনো পাথরের যুগের মানুষের আঁকা বিভিন্ন পশু-পাখির ছবি ও পশুশিকারের দৃশ্য রয়েছে। যা প্রাচীনকালে মানুষের জীবিকা ও শিল্প রসবোধের কথা স্মরণ করায়
 
৯)ভারতীয় উপমহাদেশের কোথায় মাঝের পাথরের যুগের হাতিয়ার পাওয়া গেছে?
 
উত্তর: ভারতীয় উপমহাদেশে উত্তরপ্রদেশের মহাদহা, মধ্যপ্রদেশের আদমগড় প্রভৃতি অঞ্চলে মাঝের পাথরের যুগের হাতিয়ার পাওয়া গেছে
 
১০)উপমহাদেশে নতুন পাথরের যুগের মানুষ কীভাবে ফসল উৎপাদন করতে শিখেছিল?
উত্তর: একসময়ে মেয়েরা গাছপালা দেখতে দেখতে বুঝতে পারে কীভাবে বীজ থেকে চারাগাছ হয়, আবার চারাগাছ থেকে বড়ো গাছ হয়। তখন তারা মাটিতে বীজ পুঁতে ফসল উৎপাদন করতে শিখেছিল
 
১১)আদিম মানুষ কীভাবে আগুন জ্বালাতে শিখেছিল?
উত্তর:  প্রাণীদের মধ্যে একমাত্র মানুষই আগুন জ্বালাতে ও ব্যবহার করতে পারে। প্রথম দিকে তারা বনে লাগা আগুন (দাবানল) বা অন্যভাবে জ্বলে ওঠা আগুন দেখত। কোনো একসময় তারা জ্বলন্ত গাছের ডাল গুহায় নিয়ে আসত এবং তা নিভতে দিত না। এইভাবে হঠাৎ একদিন পাথরের হাতিয়ার তৈরি করতে গিয়ে চকমকি জাতীয় পাথরের ঠোকাঠুকিতে আগুন জ্বালিয়ে ফেলে। এভাবেই তারা আগুনের ব্যবহার শিখেছিল। আবার অনেকে মনে করেন শুকনো কাঠে কাঠ ঘষে তারা আগুন জ্বালাতে শিখেছিল

১২) ভীমবেটকা গুহার চিত্রগুলির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উত্তর:   ভীমবেটকা গুহার চিত্রগুলির বৈশিষ্ট্য ছিল-

(i) ভীমবেটকা গুহায় ছবিগুলির অধিকাংশ ছিল বন্য পশু, পাখি, মাছ প্রভৃতির

(ii) একা কিংবা দলবদ্ধভাবে মানুষের শিকারের ছবি এখানে আঁকা রয়েছে

(iii) এখানকার ছবিগুলিতে সবুজ ও হলুদ রঙ ব্যবহার হলেও সাদা এবং লাল রং-এর ব্যবহার বেশি দেখা যায়
 
১৩)মানবজাতির বিবর্তনের ইতিহাস আলোচনা করো
উত্তর: এটি মনে করা হয় যে, মানব সদৃশ্য জীবের প্রথম আবির্ভাব হয়েছিল প্রায় ৫.৬ লক্ষ বছর আগে। আর আধুনিক মানবের জন্ম হয়েছিল প্রায় ৬০ হাজার বছর আগে। মাঝখানের এই দীর্ঘ পথ ধরে চলেছিল মানববিবর্তন। এই বিবর্তনের পথে জন্ম নিয়েছিল বিভিন্ন মানব প্রজাতি বা গোষ্ঠী। এই প্রজাতি বা গোষ্ঠীগুলি ছিল-

হোমিনয়েড: হোমিনয়েড হল 'এপ' জাতীয় প্রাণী- গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর আবির্ভাব প্রায় ৪০ লক্ষ বছর আগে হয়েছিল। এদের বৈশিষ্ট্য হল মস্তিষ্ক ছোটো, চার পায়ে হাঁটা এবং সামনের অংশের (হাতের) নমনীয়তা ছিল

হোমিনিড : হোমিনয়েড বিবর্তিত হয়ে এসেছিল হোমিনিড নামক গোষ্ঠী। এদের বৈশিষ্ট্য হল বড়ো মস্তিষ্ক, তারা দু-পায়ে দেহের ভার রক্ষা করতে অভ্যস্থ ছিল এবং হাতের ব্যবহার করতে পারত
অস্ট্রালোপিথেকাস: অস্ট্রালোপিথেকাস গোষ্ঠীর সদস্যরা বেশিরভাগ সময় গাছে থাকত। তাদের হাত দুটি ছিল লম্বা, বাঁকা এবং এরা দু-পায়ে ভর দিয়ে কোনোক্রমে দাঁড়াতে পারত। প্রায় ৪০ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ বছর পূর্বে এই প্রজাতির উদ্ভব ঘটে

হোমো হাবিলিস: হোমো হাবিলিস গোষ্ঠীর উৎপত্তি হয়েছিল প্রায় ২৬ লক্ষ থেকে ১৭ লক্ষ বছর আগে। এই প্রজাতি হাতিয়ার তৈরিতে অধিক পারদর্শী ছিল। হোমো ইরেকটাস: প্রায় ২০ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে হোমো ইরেকটাস গোষ্ঠীর আবির্ভাব হয়েছিল। হোমো হাবিলিস গোষ্ঠীর বিবর্তনের মাধ্যমে হোমো ইরেকটাস প্রজাতির আবির্ভাব হয়েছিল। এদের মস্তিষ্কের আকার ছিল বড়ো (১০০০ ঘনসেমি) এবং এদের পেশিশক্তি ছিল বেশি

হোমো স্যাপিয়েন্স: হোমো ইরেকটাস প্রজাতি বিবর্তনের মাধ্যমে হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতিতে পরিণত হয়। এই প্রজাতি প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার বছর পূর্বে আবির্ভূত হয়। এরা অনেক বেশি বুদ্ধিমান ও হাতের ব্যবহারে তুলনামূলকভাবে পারদর্শী ছিল। এদের থেকেই আধুনিক মানুষের উৎপত্তি হয়েছে

জেনে রাখো :

চিনের পিকিং অঞ্চলের আদিম মানুষ সর্বপ্রথম আগুনের ব্যবহার করতে শেখে

সর্বপ্রাচীন মানবের নিদর্শন পাওয়া গেছে পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়ার ওন্ড্রুভাই জর্জ-এ। এই নিদর্শনটি অন্তত ৩৮ লক্ষ বছরের প্রাচীন বলে পণ্ডিতগণ মনে করেন

তুষার যুগে গোটা পৃথিবী বরফের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। এই যুগে কয়েকবার পর্যায়ক্রমে উয় ও শীতল যুগ এসেছে। মোট চারবার তুষার যুগের আবির্ভাব হয়েছিল। এই পরিবেশে খাপ খাওয়াতে না- পেরে পৃথিবী থেকে বেশ কিছু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যেমন-ম্যামথ, বিশালাকার পাখি প্রভৃতি

মাঝের পাথরের যুগে হাতিয়ারগুলি ক্ষুদ্র আকার ধারণ করেছিল, তাই একে 'ক্ষুদ্র প্রস্তর যুগ' বলা হয়

একনজরে : 

আফ্রিকা মহাদেশের লেজহীন এক ধরনের বড়ো বানরকে এপ বলে

আদিম কথার অর্থ পুরোনো

অস্ট্রালোপিথেকাস জাতীয় মানুষ দু-পায়ে ভর দিয়ে কোনোক্রমে দাঁড়াতে পারত এবং এরা পাথর ছুঁড়তে চেষ্টা করত

হোমো স্যাপিয়েন্স জাতীয় বুদ্ধিমান মানুষ লজ্জা 
নিবারণের জন্য পশুর চামড়া ব্যবহার করত এবং পাথরের অস্ত্র বানাত

আদিম মানুষ পাথর ঠোকাঠুকিতে আগুনের ফুলকি দেখতে পায়। তারপর থেকে আগুনের ব্যবহার শেখে

১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভীমবেটকায় বেশ কিছু গুহার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে

রাজস্থানের বাগোড়ে আদিম মানুষের বসবাসের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে
 
১৪)পুরোনো পাথরের যুগ ও নতুন পাথরের যুগের মানুষের জীবনযাত্রার পার্থক্যগুলি উল্লেখ করো
উত্তর:  মানুষের ইতিহাসের একটি বড়ো অংশ হল পাথরের যুগ। এই যুগ প্রধানত তিনটি ভাগে বিভক্ত, যথা-পুরোনো পাথরের যুগ, মাঝের পাথরের যুগ এবং নতুন পাথরের যুগ। ওই যুগগুলিতে আদিম মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন ঘটেছিল। পুরোনো পাথরের যুগ ও নতুন পাথরের যুগে মানুষের জীবনযাত্রার যেসব পরিবর্তন ঘটেছিল তার ওপর ভিত্তি করে কতকগুলি পার্থক্য লক্ষ করা যায়। যথা-

বাসস্থানজনিত পার্থক্য: পুরোনো পাথরের যুগে মানুষের বাসস্থান ছিল খোলা আকাশের নীচে, কখনও-বা পাহাড়ের গুহায়। কিন্তু নতুন পাথরের যুগে মানুষ স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে কৃষিজমির পাশে কিংবা জলাশয়ের ধারে
 
খাদ্যজনিত পার্থক্য: পুরোনো পাথরের যুগে মানুষ ছিল খাদ্যসংগ্রাহক অর্থাৎ, খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য তারা পশুশিকার ও ফলমূল জোগাড় করত। কিন্তু নতুন পাথরের যুগে মানুষ হয়ে উঠেছিল খাদ্য উৎপাদক। কৃষিকাজ জানার ফলে তারা নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করতে শিখেছিল এবং সেই সঙ্গে পশুপালন করতে শুরু করেছিল
 
হাতিয়ারজনিত পার্থক্য: পুরোনো পাথরের যুগে পাথরের তৈরি মানুষের হাতিয়ারগুলি ছিল বড়ো, এবড়োখেবড়ো ও ভোঁতা। কিন্তু নতুন পাথরের যুগে মানুষের হাতিয়ার ছিল অনেক মসৃণ, হালকা ও ধারালো
 
 জীবনযাত্রাজনিত পার্থক্য: পুরোনো পাথরের যুগে মানুষের জীবন ছিল খুবই কষ্টের ও বিপদে ভরা। নিজেদের বাঁচাতে ও খাদ্য জোগাড় করতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হত। অন্যদিকে নতুন পাথরের যুগে মানুষ কৃষিকাজ জানার ফলে তাদের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল। এই সময় মানুষের চিন্তাশক্তি নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবনে সাহায্য করেছিল
 
👉Paid Answer (For Membership User)
👉Download Books PDF
 

Editing By:- Lipi Medhi