অধ্যায় ৩ 
মৌলিক, যৌগিক ও মিশ্র পদার্থ
----------------------------------------------------

1. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো

1. প্রকৃতিতে যৌগিক পদার্থের সংখ্যা-
 
(i) 92টি
(ii) 105টি
(iii) কয়েক লক্ষ
(iv) 1000টি
 
উত্তর:  কয়েক লক্ষ
 
2. 4CO বলতে বোঝায়-
 
(i)  4টি কার্বন ও অক্সিজেন অণু
(ii) ৪টি কার্বন ও অক্সিজেন অণু
(iii) 4টি কার্বন ও ৪টি অক্সিজেন অণু
(iv) কোনোটিই নয়
 
উত্তর:  4টি কার্বন ও অক্সিজেন অণু
 
3. কার্বন টেট্রাক্লোরাইডের সংকেত হল-
 
(i) CaCl4
(ii) PC14
(iii) CCl4
(iv) COCI4
 
উত্তর:  CCl4
 
4. নীচের কোন্ মৌলের একটিমাত্র যোজ্যতা আছে?
 
(i)  অক্সিজেন
(ii) ফসফরাস
(iii)  নাইট্রোজেন
(iv) সালফার
 
উত্তর:  অক্সিজেন
 
5. একটি শক্ত ধাতু হল-
 
(i) পারদ
(ii) সোনা
(iii) সোডিয়াম
(iv) পটাশিয়াম
 
উত্তর:   সোনা
 
6. সবচেয়ে কঠিন মৌল হল-
 
(i)  গ্রাফাইট
(ii) হীরক
(iii)  লিথিয়াম
(iv)  ল্যান্থানাম
 
উত্তর:  হীরক
 
7. আগুন জ্বলতে সাহায্য করে-
 
(i)  অক্সিজেন
(ii)  কার্বন ডাইঅক্সাইড
(iii) নাইট্রোজেন
(iv) হাইড্রোজেন
 
উত্তর:   অক্সিজেন
 
8. এদের মধ্যে কোল্টি মিশ্র পদার্থ?
 
(i) চিনি
(ii)  চিনির শরবত
(iii) জল
(iv)  গন্ধক
 
উত্তর:   চিনির শরবত
 
9. মৌলের একটি অণুতে যত সংখ্যক পরমাণু থাকে, তাকে বলে ওই মৌলের-
 
(i) যোজ্যতা
(ii)  সংকেত
(iii) পারমাণবিকতা
(iv)  তুল্যাঙ্কভার
 
উত্তর:  পারমাণবিকতা
 
10. মৌলিক পদার্থের সবথেকে ক্ষুদ্রতম কণাকে বলে-
 
(i)  অণু
(ii)  পরমাণু
(iii)  আইসোটোপ
(iv) আইসোটোন
 
উত্তর:   পরমাণু
 
11. চিনিতে যে-মৌলটি থাকে না, তা হল-
 
(i)  কার্বন
(ii)  হাইড্রোজেন
(iii)  ক্যালশিয়াম
(iv)  অক্সিজেন
 
উত্তর:  ক্যালশিয়াম 
 
12. ধোঁয়া হল-
 
(i)  কঠিন ও কঠিনের মিশ্রণ
(ii)  কঠিন ও তরলের মিশ্রণ
(iii)  কঠিন ও গ্যাসের মিশ্রণ
(iv)  তরল ও গ্যাসের মিশ্রণ
 
উত্তর:   কঠিন ও গ্যাসের মিশ্রণ
 
13. কোল্টি মৌলিক অণু নয়?
 
(i)  অক্সিজেন অণু
(ii)  কার্বন অণু
(iii) চিনির অণু
(iv) নাইট্রোজেন অণু
 
উত্তর:   চিনির অণু
 
14. পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়-
 
(i) পার্চমেন্ট কাগজ
(ii) চকচকে কাগজ
(iii) ফিলটার কাগজ
(iv) খবরের কাগজ
 
উত্তর:  ফিলটার কাগজ
 
2. বাক্যের পাশে 'x' দাও ঠিক বাক্যের পাশে '' আর ভুল   
 
1. কাঠকয়লা ও প্লাস্টিকের ওপর আলো পড়লে চকচক করে না।
 
2. দুধ হল একটি যৌগিক পদার্থ।
 
3. বাতাসে অনেক নিষ্ক্রিয় গ্যাস থাকে।
 
4. হাইড্রোজেন বাতাসের চেয়ে ভারী আর আগুন জ্বলতে 'সাহায্য করে।
 
5. কালো রঙের কঠিন পদার্থ যা নিজেই জ্বলে আর নানারূপে থাকতে পারে, তা হল কার্বন।
 
6. কার্বন ডাইঅক্সাইড আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে।
 
7. মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে পরমাণু বলে।
 
৪. জল একটি উত্তম দ্রাবক।
 
9. হাইড্রোজেন সালফাইড যৌগটিতে হাইড্রোজেন ও সালফার পরমাণু থাকে।
 
10. অ্যালুমিনিয়াম ও লোহাচূর্ণ পৃথক করার জন্য পাতন পদ্ধতি সবথেকে ভালো।
 
11. ধাতুদের গরম করলে সহজেই উত্তপ্ত হয়ে যায়।
 
12. জল একটি যৌগিক পদার্থ।
 
13. কার্বন কালো রঙের একটি ধাতব কঠিন পদার্থ।
 
14. সাদা ফসফরাসের একটি অণুতে উপস্থিত পরমাণু সংখ্যা ।
 
3. শূন্যস্থান পূরণ করো
 
1. প্রাচীনকালে রূপোকে -------------------- বলা হত।
 
উত্তর:  আর্জেন্টাম
 
2. অ্যামোনিয়া অণুতে তিনটি --------------------- পরমাণু আছে।
 
উত্তর: হাইড্রোজেন
 
3. দ্রবণ তৈরির সময় যে-পদার্থটি গুলে যায়, সেটি হল ----------------- ।
 
উত্তর:  দ্রাব
 
4. পুকুরের জলে -----------------  গ্যাস দ্রবীভূত হয় বলেই মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী বেঁচে থাকে।
 
উত্তর: অক্সিজেন
 
5. নিষ্ক্রিয় গ্যাস ---------------------বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না।
 
উত্তর:   রাসায়নিক
 
6. দুটি মৌলের পরস্পর যুক্ত হওয়ার ক্ষমতাকে ---------------------- বলে।
 
উত্তর:  যোজ্যতা
 
7. ধাতুর সরু খণ্ডকে সহজেই ---------------- যায়।
 
উত্তর:  কঠিন
 
8. কার্বন হল একটি -------------------- অধাতু।
 
উত্তর:   বিশুদ্ধ
 
9. যেসব পদার্থের মধ্যে একাধিক পদার্থ মিশে থাকে না, তারা হল ---------------- পদার্থ।
 
উত্তর:  বাঁকানো
 
10. অক্সিজেন আমাদের ------------- সাহায্য করে।
 
উত্তর:  শ্বাসকার্যে
 
11. হাইড্রোজেন -------------------- থেকে হালকা মৌল।
 
উত্তর: বাতাসের
 
12. অক্সিজেন বিভিন্ন ধাতু ও অধাতুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে ------------------ গঠন করে।
 
উত্তর: অক্সাইড
 
13. যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে ----------------- বলে।
 
উত্তর: অণু
 
14. পিতল হল ---------------- ধাতু।
 
উত্তর:   সংকর
 
15. আলোর প্রতিফলনে সক্ষম অধাতু হল ---------------------।
 
উত্তর:   গ্রাফাইট
 
4. একটি বাক্যে উত্তর দাও  
 
1. দার্থ কাকে বলে?
 
উত্তর:  কোনো বস্তুর মধ্যে যে-উপাদান আছে তা হল পদার্থ।
 
2. কামারশালায় কোন্ ধাতুকে গরম করে ও পিটিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করা হয়?
 
উত্তর:    লোহাকে।
 
3. একটি তরল অধাতুর নাম লেখো।
 
উত্তর:   ব্রোমিন।
 
4. একটি তরল ধাতুর নাম লেখো।
 
উত্তর:   পারদ।
 
5. সবচেয়ে হালকা নিষ্ক্রিয় মৌল কোন্টি?
 
উত্তর:    হিলিয়াম।
 
6. একটি অধাতুর উদাহরণ দাও যেটি তড়িতের সুপরিবাহী।
 
উত্তর:  গ্রাফাইট (কার্বনের রূপভেদ)।
 
7. একটি কঠিন অধাতুর উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:   আয়োডিন।
 
৪ একটি উজ্জ্বল ও চকচকে অধাতুর নাম লেখো।
 
উত্তর:   হীরক।
 
9. একটি তড়িৎ-ধনাত্মক অধাতুর নাম লেখো।
 
উত্তর:   হাইড্রোজেন।
 
10. সর্বাপেক্ষা নমনীয় ধাতু কোন্টি?
 
উত্তর:  সোনা।
 
11. জলের চেয়ে হালকা ধাতু কোন্টি?
 
উত্তর:  সোডিয়াম।
 
12. প্রকৃতিতে স্থায়ী মৌলের সংখ্যা কত?
 
উত্তর:    92টি।
 
13. একটি নিষ্ক্রিয় মৌলের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:    নিয়ন বা আর্গন।
 
14. বিশুদ্ধ পদার্থ কাকে বলে?
 
উত্তর:  যেসব পদার্থের মধ্যে সেই পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ মিশে থাকে না, তাদের বিশুদ্ধ পদার্থ বলে। যেমন- বিশুদ্ধ লোহা, বিশুদ্ধ সোনা ইত্যাদি।
 
15. একটি মিশ্র পদার্থের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  বায়ু।
 
16. কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলের মিশ্রণে তৈরি হয় এমন একটি মিশ্র পদার্থের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  সোডা ওয়াটার।
 
17. একটি হালকা দাহ্য গ্যাসীয় মৌলের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: হাইড্রোজেন।
 
18. খাদ্যলবণে কী কী মৌলের পরমাণু থাকে?
 
উত্তর: সোডিয়াম ও ক্লোরিন।
 
19. পরমাণুকে আরও ভাঙলে কী হবে?
 
উত্তর: পরমাণুকে আরও ভাঙলে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন কণা পাওয়া যাবে।
 
20. এমন দুটি মৌলের নাম লেখো যাদের ইংরেজি নামের বদলে লাতিন নাম ব্যবহার করা হয়।
 
উত্তর: সোনা ও রুপো।
 
21. নাইট্রোজেনের পারমাণবিকতা কত?
 
উত্তর:দুই।
 
22. চিহ্নের দ্বারা কী প্রকাশ করা হয়?
 
উত্তর: কোনো মৌলের নাম বা মৌলটির একটি পরমাণুকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়।
 
23. সংকেত দ্বারা কী প্রকাশ করা হয়?
 
উত্তর: কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের একটি অণুকে প্রকাশ করা হয়।
 
24. অ্যামোনিয়া (NH3) যৌগে নাইট্রোজেনের যোজ্যতা কত?
 
উত্তর: অ্যামোনিয়া (NH3) যৌগে নাইট্রোজেনের যোজ্যতা 3
 
25. দ্রবণ কী ধরনের পদার্থ?
 
উত্তর: মিশ্র পদার্থ।
 
26. একটি শূন্যযোজী মৌলের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: নিষ্ক্রিয় মৌলগুলি শূন্যযোজী মৌল অর্থাৎ, এদের যোজ্যতা থাকে না। যেমন- নিয়ন, আর্গন ইত্যাদি।
 
27. বিশুদ্ধ জল কোন্ পদ্ধতিতে পাওয়া যায়?
 
উত্তর: পাতন পদ্ধতিতে।
 
28. একটি অজৈব দ্রাবকের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  জল।
 
29. পরিস্রাবণের জন্যে কোন্ বস্তুটি অবশ্যই লাগে?
 
উত্তর: ফিলটার কাগজ।
 
30. একটি কেলাস গঠনকারী পদার্থের নাম লেখো।
 
উত্তর: তুঁতে বা ফটকিরি।
 
31. লোহাচূর্ণ ও তামাচূর্ণকে পৃথক করার সহজ উপায় কী?
 
উত্তর: চুম্বকের মাধ্যমে পৃথক করা।
 
32. দুটি কেলাস গঠনকারী যৌগের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  চিনি ও তুঁতে।
 
5. দু-একটি বাক্যে উত্তর দাও 
 
1. বস্তু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: আমাদের চারপাশে যেসব জিনিস আমরা দেখতে পাই সেগুলিকে সাধারণভাবে বস্তু বলে। কিছু পরিমাণ পদার্থ দিয়ে বস্তু গঠিত হয়। উদাহরণ: লোহার কড়াই, কাঠের চেয়ার, চক, বই ইত্যাদি।
 
2. পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: যা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, যার ভর আছে, যা কিছু পরিমাণ স্থান দখল করে থাকে, বা কোনো বস্তু যে-উপাদান দিয়ে গঠিত, তাকে পদার্থ বলে। উদাহরণ: জল, সোনা, বায়ু ইত্যাদি।
 
3. কঠিন পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: সাধারণ অবস্থায় যে-পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে, তাকে কঠিন পদার্থ বলে। উদাহরণ: তামা, পাথর, নুন, চিনি ইত্যাদি।
 
4. তরল পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  সাধারণ অবস্থায় যে-পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু আকার নেই এবং যা ধারক পাত্রের আকার ধারণ করে, তাকে তরল পদার্থ বলে। উদাহরণ: জল, দুধ, তেল ইত্যাদি।
 
5. মৌলিক পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  যে-পদার্থকে বিশ্লেষণ করলে সেই মূল পদার্থ ছাড়া পৃথক ধর্মবিশিষ্ট অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাকে মৌলিক পদার্থ বলে। উদাহরণ: তামা, লোহা, নাইট্রোজেন ইত্যাদি।
 
6. যৌগিক পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  একাধিক মৌলিক পদার্থ নির্দিষ্ট ওজন ও আয়তন অনুপাতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্মবিশিষ্ট যে-পদার্থ উৎপন্ন করে, তাকে যৌগিক পদার্থ বলে। উদাহরণ: চিনি, নুন, জল ইত্যাদি।
 
7. মিশ্র পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: দুই বা তার বেশি মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ যে-কোনো ওজন অনুপাতে নিজ নিজ ধর্ম অক্ষুণ্ণ রেখে সাধারণভাবে মিশ্রিত হয়ে যে-পদার্থ গঠন করে, তাকে মিশ্র পদার্থ বলে। উদাহরণ: বায়ু, মাটি, শরবত ইত্যাদি।
 
8.  বিশুদ্ধ পদার্থ বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের সঙ্গে অপর কোনো পদার্থ মিশে না-থাকলে, তাকে বিশুদ্ধ পদার্থ বলে। উদাহরণ: বিশুদ্ধ জল, বিশুদ্ধ নুন, বিশুদ্ধ লোহা ইত্যাদি।
 
9. ধাতু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  যেসব মৌল সাধারণ উষ্ণতায় কঠিন, উজ্জ্বল, চকচকে ও ভারী, আলোক প্রতিফলনে সক্ষম, তাপ ও তড়িতের সুপরিবাহী, ধনাত্মক তড়িৎধর্মী, তাদের ধাতু বলে। উদাহরণ: লোহা, তামা, পারদ ইত্যাদি।
 
10. অধাতু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  যেসব মৌল সাধারণ উয়তায় কঠিন, তরল বা গ্যাসীয়, ওজনে হালকা, ভঙ্গুর ও অনুজ্জ্বল, আলোর প্রতিফলনে অক্ষম, তাপ ও তড়িতের কুপরিবাহী, ঋণাত্মক তড়িৎধর্মী, তাকে অধাতু বলে। উদাহরণ: অক্সিজেন, কার্বন, গন্ধক ইত্যাদি।
 
11. ধাতুকল্প কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: ধাতু ও অধাতু উভয় শ্রেণির মৌলের কিছু সংখ্যক ধর্মের সঙ্গে যে-সমস্ত মৌলের ধর্মের মিল আছে, তাকে ধাতুকল্প বলে। উদাহরণ: আর্সেনিক, অ্যান্টিমনি ইত্যাদি।
 
12. অক্সিজেনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো।
 
উত্তর: অক্সিজেনের দুটি গুরুত্ব হল-
 
(i) অক্সিজেন জীবের শ্বাসকার্যের জন্য আবশ্যক।
 
(ii) অক্সিজেন আগুন জ্বলতে সাহায্য করে।
 
13. জলের দুটি ধর্ম উল্লেখ করো।
 
উত্তর: জলের দুটি ধর্ম হল-
 
(i) জল বর্ণহীন, গন্ধহীন, সাধারণ অবস্থায় তরল। এর কঠিন (বরফ) ও গ্যাসীয় (জলীয় বাষ্প) অবস্থা আছে।
 
(ii)এটি কোনো কিছু জ্বলতে সাহায্য করে না।
 
14. পরমাণু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  মৌলিক পদার্থের যে-ক্ষুদ্রতম কণার মধ্যে মৌলটির সমস্ত ধর্ম উপস্থিত থাকে এবং যেটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, তাকে পরমাণু বলে। উদাহরণ: নাইট্রোজেন পরমাণু (N), লোহার পরমাণু (Fe) ইত্যাদি।
 
15. অণু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের সবচেয়ে ছোটো যে-কণাটির মধ্যে পদার্থটির সমস্ত ধর্ম বা গুণ বজায় থাকে ও যেটি স্বাধীনভাবে বজায় থাকতে পারে, তাকে অণু বলে। উদাহরণ: নাইট্রোজেন অণু (N), কার্বন ডাইঅক্সাইডের অণু (CO) ইত্যাদি।
 
16. মৌলিক অণু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর: যেসব অণু একই মৌলের সমান ধর্ম ও ওজনযুক্ত এক বা একাধিক পরমাণু দিয়ে গঠিত, তাকে মৌলিক অণু বলে। উদাহরণ: নাইট্রোজেনের অণু ২টি পরমাণু দিয়ে গঠিত একটি মৌলিক অণু N, হিলিয়ামের অণু 1টি পরমাণু দিয়ে গঠিত-He
 
17. যৌগিক অণু বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  যেসব অণু একাধিক মৌলিক পদার্থের দুটি বা তার বেশি সংখ্যক পরমাণু দিয়ে তৈরি, তাদের যৌগিক অণু বলে। উদাহরণ: অ্যামোনিয়া অণু (NH) একটি নাইট্রোজেন (N) ও তিনটি হাইড্রোজেন পরমাণু (H) নিয়ে গঠিত যৌগিক অণু।
 
18. প্রতীক বা চিহ্ন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  মৌলিক পদার্থের নামের একটি বা দুটি ইংরেজি অক্ষরের সাহায্যে সংক্ষেপে মৌলটি প্রকাশ করা হলে, তাকে ওই মৌলের চিহ্ন বা প্রতীক বলে। উদাহরণ: হাইড্রোজেন-H, আয়রন-Fe ইত্যাদি।
 
19. সংকেত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  চিহ্নের সাহায্যে কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের একটি অণুকে সংক্ষেপে প্রকাশ করার পদ্ধতিকে সংকেত বলে। উদাহরণ: জল- HO, কার্বন ডাই অক্সাইড-CO2, মিথেন-CH4, নাইট্রোজেন-N এগুলি হল সংকেত।
 
20.  N2, 2N2 এবং 2N-এর অর্থ কী?
 
উত্তর:  N হল একটি নাইট্রোজেনের অণু যাতে দুটি নাইট্রোজেন পরমাণু আছে, 2N হল দুটি নাইট্রোজেন অণু যাতে চারটি নাইট্রোজেন পরমাণু আছে, 2N হল দুটি নাইট্রোজেন পরমাণু।
 
21. জলের সংকেত HO থেকে কী কী জানা যায়?
 
উত্তর:  HO সংকেত থেকে জানা যায়-
 
i.
জল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।
 
ii. এটি জলের 1টি অণুকে বোঝায় যাতে ২টি হাইড্রোজেন পরমাণু ও 1টি অক্সিজেন পরমাণু আছে।
 
22. যোজ্যতা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  দুটি মৌলের পরস্পর যুক্ত হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার ক্ষমতাকে যোজ্যতা বলে। অন্যভাবে বলা যায় কোনো মৌলের একটি পরমাণু যতসংখ্যক হাইড্রোজেন পরমাণু বা অক্সিজেন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে, সেই সংখ্যাকে ওইসব মৌলের যোজ্যতা বলে।
 
উদাহরণ: হাইড্রোজেনের যোজ্যতা-1, অক্সিজেনের যোজ্যতা-2
 
23. পারমাণবিকতা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  কোনো মৌলের একটি অণুতে যত সংখ্যক পরমাণু থাকে, তাকে ওই মৌলের পারমাণবিকতা বলে। উদাহরণ: নাইট্রোজেনের একটি অণুতে দুটি পরমাণু থাকে অর্থাৎ, নাইট্রোজেনের পারমাণবিকতা-2, সাদা ফসফরাসের একটি অণুতে চারটি পরমাণু থাকে অর্থাৎ, ফসফরাসের পারমাণবিকতা-41
 
24. দ্রবণ কাকে বলে?
 
উত্তর: দুই বা তার বেশি পদার্থ যে-কোনো ওজন বা আয়তন অনুপাতে মিশে যে-সমসত্ত্ব মিশ্রণ গঠন করে, যাতে তার উপাদানগুলির আপেক্ষিক পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে পরিবর্তন করা যায়, তাকে দ্রবণ বলে। উদাহরণ: নুনজল।
 
25. ঘন দ্রবণ ক-টি উপাদান নিয়ে গঠিত ও কী কী?
 
উত্তর: দ্রবণ দুটি উপাদান নিয়ে গঠিত হয়, একটি হল দ্রাবক ও অন্যটি দ্রাব। দ্রবণ = দ্রাবক + দ্রাব।
 
26. ঘর পরিদূত ও অবশেষ বলতে কী বোঝো?
 
উত্তর:  পরিষুত: পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে দ্রবণকে ফিলটার করার পর যে-তরল পদার্থ (দ্রাবক) পাওয়া যায়, তাকে পরিশ্রুত বলে।
 
অবশেষ: পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে দ্রবণকে ফিলটার করার পর ফিলটার কাগজের ওপর পড়ে থাকা কঠিন পদার্থকে (দ্রাব) বলে অবশেষ।
 
6. সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর
 
 
1. কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে লেখো।
 
উত্তর:  কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
 
i. কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে।
 
ii. স্বাভাবিক উন্নতায় কঠিন পদার্থ নিয়তাকার (লবণ, চিনি, বরফ) ও অনিয়তাকার (কাচ, পিচ) হয়।
 
iii. তাপ প্রয়োগের ফলে একটি নির্দিষ্ট উন্নতায় কঠিন পদার্থ তরল পদার্থে পরিণত হয় আর ঠান্ডা করলে পুনরায় কঠিন পদার্থে পরিণত হয়।
 
iv. সাধারণ অবস্থায় বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না-করলে, কঠিন পদার্থের আকার বা আয়তনের বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয় না।
 
2. পদার্থের তরল অবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে লেখো। 
 
উত্তর:  তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
 
i. তরলের নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু আকার নেই।
 
ii.  তাপ প্রয়োগে তরলের আয়তন বাড়ে আর চাপ প্রয়োগে তরলের আয়তন কমে।
 
iii. স্থির অবস্থায় তরলের উপরিতল সর্বদা অনুভূমিক হয়।
 
iv. সাধারণ উয়তায় তরলের উপরিতল থেকে সবসময় বাষ্পায়ন হয়।
 
3. গ্যাসীয় পদার্থের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
 
উত্তর:  গ্যাসীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
 
i.  গ্যাসীয় পদার্থের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে না।
 
ii.  গ্যাসের অণুগুলির মধ্যে আন্তরাণবিক আকর্ষণ খুব কম হওয়ার জন্যে সব গ্যাস প্রসারণশীল।
 
iii গ্যাসের আয়তনের হ্রাসবৃদ্ধি চাপ ও উন্নতার ওপর নির্ভরশীল।
 
iv স্থির চাপে একই উষ্ণতা বৃদ্ধি বা হ্রাসে প্রতিটি গ্যাসের আয়তন একই মাত্রায় বাড়ে কিংবা কমে।
 
V কঠিন ও তরলের মতো গ্যাসের ভর আছে, তবে কঠিন ও তরলের তুলনায় গ্যাসের ঘনত্ব অনেক কম।
 
4. যৌগিক পদার্থের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে লেখো।
 
উত্তর:  যৌগিক পদার্থের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
 
i. একাধিক মৌলিক পদার্থ নির্দিষ্ট ওজন অনুপাতে যুক্ত হয়ে যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন হয়।
 
ii. যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন হওয়ার সময় তাপের উদ্ভব বা শোষণ হবে।
 
iii. যৌগিক পদার্থের মধ্যে তার উপাদান মৌলগুলির নিজস্ব ধর্ম (যেমন- জলের ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের) বজায় থাকে না, নতুন ধর্মের সৃষ্টি হয়।
 
iv. যৌগিক পদার্থের উপাদানগুলিকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে পৃথক করতে হয় সহজ, যান্ত্রিক বা ভৌত উপায়ে পৃথক করা যায় না।
 
5. মিশ্র পদার্থের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
 
উত্তর:  মিশ্র পদার্থের বৈশিষ্ট্য:
 
i.  মিশ্র পদার্থে উপাদানগুলির নিজস্ব ধর্ম বজায় থাকে।
 
ii. দুই বা তার বেশি মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ যে-কোনো ওজন বা আয়তন অনুপাতে মিশে মিশ্র পদার্থ তৈরি করে।
 
iii. মিশ্র পদার্থের উপাদানগুলিকে যে-কোনো সাধারণ পদ্ধতিতে পৃথক করা হয়।
 
iv. মিশ্র পদার্থ গঠিত হওয়ার সময় তাপের উদ্ভব বা শোষণ হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে।
v. মিশ্র পদার্থ সহজ ভৌত পদ্ধতিতেই তৈরি হয়। এর জন্যে তড়িৎ, তাপ বা আলোর প্রয়োজন হয় না।
vi. মিশ্র পদার্থ সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব দু-রকমই হয়।
 
14. পরিস্রাবণ পদ্ধতির সাহায্যে কাদাজলের উপাদানগুলিকে পৃথক করো।
 
উত্তর:  উপকরণ: ফিলটার কাগজ, একটি ফানেল, একটি কাচদণ্ড, একটি কাচের পাত্র, কিছুটা কাদাজল।
 
পরীক্ষা: প্রথমে একটি গোলাকার ফিলটার কাগজ নিয়ে তাকে চারভাঁজ করা হল। তারপর একটি ভাঁজ খুলে শঙ্কু আকৃতির কাগজটিকে একটি ফানেলের মুখে বসিয়ে ওপর থেকে কয়েক ফোঁটা জল ছড়িয়ে ফিলটার কাগজটিকে ফানেলের মুখে ভালোভাবে বসানো হল। এবার ফানেলের গায়ে একটি কাচদণ্ড রেখে তার গা বেয়ে ধীরে ধীরে কাদাজল ঢালা হল।
 
পর্যবেক্ষণ: দেখা যাবে যে, ফিলটার কাগজের গায়ে অসংখ্য কাদার কণা লেগে আছে এবং বিশুদ্ধ পরিষ্কার জল নীচের কাচের পাত্রে জমা হচ্ছে।
 
সিদ্ধান্ত: ফিলটার কাগজের ছিদ্র কাদার কণার থেকেও ছোটো হওয়ায় তা অবশেষরূপে ফিলটার কাগজের গায়ে জমা হয়েছে এবং বিশুদ্ধ জল কাচের পাত্রের মধ্যে পরিদ্রুত হিসেবে জমা হয়েছে। এইভাবে ফিলটার কাগজের সাহায্যে পরিস্রাবণ পদ্ধতিতে কাদাজলের উপাদানগুলিকে আলাদা করা যায়।
 
8. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:
 
1. তরলে গ্যাস মিশে দ্রবণ তৈরি হয়েছে এমন উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:   জলে অক্সিজেন গ্যাসের দ্রবীভূত হওয়া।
 
2. দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু আর একটি হাইড্রোজেন অণু সংকেতের সাহায্যে কীভাবে বোঝাবে?
 
উত্তর: দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু-2H, এবং একটি হাইড্রোজেন অণু-H
 
3. অধাতু হলেও তাপের সুপরিবাহী এমন দুটি পদার্থের উদাহরণ দাও।
 
উত্তর:  হিরে ও গ্রাফাইট।
 
4. HO সংকেত থেকে তুমি কী কী বিষয় জানতে পার?
 
উত্তর:  HO সংকেত:
 
i) জলের সংকেত HO, জানতে পারি।
 
ii) জলের উপাদান মৌল সম্পর্কে অর্থাৎ, এক অণু জলে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ও একটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে-তা জানতে পারি।
 
👉Paid Answer (For Membership User)
    👉Download Books PDF

Editing By:- Lipi Medhi