Chapter 4


ভূমিরূপ


                                                                    

[MCQs]


1. পর্বতের আকৃতি-


A) ত্রিকোণাকার


B) বর্গাকার


C) টেবিলাকৃতি


D)বৃত্তাকার


উত্তর: A) ত্রিকোণাকার।


2. দুটি পর্বতের মাঝের নীচু অংশকে বলে-


A) উপত্যকা


B) শৃঙ্গ,


C)  ভাঁজ


D) ঢাল।


উত্তর: A) উপত্যকা।


3. গ্রস্ত উপত্যকা দেখা যায়-


A)ভঙ্গিল পর্বতে দেখা যায়


B) স্তূপ পর্বতে দেখা যায়


C) আগ্নেয় পর্বতে দেখা যায়


D) ক্ষয়জাত পর্বতে দেখা যায়।


উত্তর: B) স্তূপ পর্বতে দেখা যায়।


4. ভঙ্গিল পর্বত প্রধানত গঠিত হয়-


Ⓐ পাললিক শিলায়,


B) আগ্নেয় শিলায়,


C) রূপান্তরিত শিলায়,


D) উদ্বেধী শিলায়।


উত্তর: A) পাললিক শিলায়।


5. পৃথিবীর দীর্ঘতম নবীন ভঙ্গিল পর্বত হল-


A) হিমালয়


B)আল্পস


C) আন্দিজ


D) রকি।


উত্তর: C) আন্দিজ।


6. শিলাস্তরে ফাটল বা চ্যুতির ফলে সৃষ্টি হয়-


Ⓐ ভঙ্গিল পর্বত,


Ⓑ স্তূপ পর্বত,


C) আগ্নেয় পর্বত,


D) ক্ষয়জশত পর্বত।


উত্তর: B) স্তূপ পর্বত।


7. সাতপুরা, ব্ল্যাকফরেস্ট, ভোজ প্রভৃতি পর্বত হল-


Ⓐ ভঙ্গিল পর্বত,


Ⓑ স্তূপ পর্বত,


C) আগ্নেয় পর্বত,


D) সঞ্চয়জাত পর্বত।


উত্তর: B) স্তূপ পর্বত।


8. ভাঁজ, চ্যুতি ও জীবাশ্ম দেখা যায়-


Ⓐ ভঙ্গিল পর্বতে,


Ⓑ স্তূপ পর্বতে,


C) আগ্নেয় পর্বতে,


D) ক্ষয়জাত পর্বতে।


উত্তর: A) ভঙ্গিল পর্বতে।


9. শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয়-


A) স্তূপ পর্বত,


B) ভঙ্গিল পর্বত,


C) আগ্নেয় পর্বত,


D) ক্ষয়জাত পর্বত


উত্তর: (B) ভঙ্গিল পর্বত।


10. ভারতের একটি আগ্নেয় পর্বত হল-


 A) ভিসুভিয়াস


B) ফুজিয়ামা


C) ক্লাকাতোয়া


D) ব্যারেন।


উত্তর: D) ব্যারেন।


11. ভিসুভিয়াস আগ্নেয় পর্বতটি অবস্থিত- 


A) জাপানে


B) জার্মানিতে 


C) ইটালিতে


D) স্পেনে।


উত্তর: C) ইটালিতে।


12. উত্তর ভারতের সমভূমি হল-


Ⓐ পলিগঠিত,


Ⓑ উপকূলীয়,


C) হিমবাহ গঠিত,


D) বায়ুগঠিত।


উত্তর: A) পলিগঠিত।


13. পৃথিবীর প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত-(কন্টাই হাই স্কুল, উঃ মাঃ) অথবা একটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ হল-


A)আরাবল্লি,


B) সাতপুরা,


C) হিমালয়,


D) ফুজিয়ামা।


উত্তর: Ⓐ আরাবল্লি।


14. বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ সমভূমি হল-


A) লোয়েস সমভূমি,


(B) গোদাবরী বদ্বীপ সমভূমি,


C) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি,


D)তরাই সমভূমি।


উত্তর: C) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি।


15. দুটি পর্বতের মাঝের নীচু অংশকে বলে(পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)


A)উপত্যকা


B)শৃঙ্গ


C) ভাঁজ


D) অ্যান্টিক্ললাইন।


উত্তর: Ⓐ উপত্যকা।



B. দু-এক কথায় উত্তর দাও :


1. ভারতের একটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের নাম লেখো।


উত্তর: আরাবল্লি পর্বত।


2. ভারতের বৃহত্তম মালভূমি কোন্টি?


উত্তর: দাক্ষিণাত্য মালভূমি।


3. পামির মালভূমি কী নামে পরিচিত?


উত্তর: পৃথিবীর ছাদ বা বাম-ই-দুনিয়া।


4. হিমালয় ও কুয়েনলুন পর্বতশ্রেণির মধ্যে কোন্ মালভূমি অবস্থিত?


উত্তর: তিব্বত মালভূমি।


5. জাপানের একটি আগ্নেয় পর্বতের নাম লেখো।


উত্তর: ফুজিয়ামা।


6. পর্বতের ক্ষুদ্র প্রতিরূপ কোন্টি?


উত্তর: পাহাড়।


7. মরুভূমি বালি বহুদূরে উড়ে গিয়ে কোন্ সমভূমি সৃষ্টি করে?


উত্তর: লোয়েস সমভূমি।


8. পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার একটি বিখ্যাত পাহাড়ের নাম লেখো।


উত্তর: শুশুনিয়া।


9. ভারতের একটি গ্রস্ত উপত্যকার উদাহরণ দাও।


উত্তর: নর্মদা নদী উপত্যকা।



C শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও :


1. পৃথিবীর ভূমিরূপ মূলত দু-রকমের শক্তির দ্বারা গঠিত হয়েছে। যথা: অভ্যন্তরীণ শক্তি ও—---- শক্তি।


উত্তর: বহির্জাত।


2. শিলামণ্ডলের পাতগুলি—--- স্তরের উপর ভাসে।


উত্তর: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার।


3. উত্তর আমেরিকার একটি —--- ভঙ্গিল পর্বতমালা।


উত্তর: রকি।


4. জার্মানির ব্ল‍্যাক ফরেস্ট একটি —----- এর উদাহরণ। (বেলডাঙা সি.আর জি.এস. হাইস্কুল)


উত্তর: স্তূপ পর্বত।


5. ইটালির এটনা একটি—---- পর্বতের উদাহরণ।


উত্তর: আগ্নেয়।


6. অধিকাংশ—---- সমৃদ্ধ। অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদে


উত্তর: মালভূমি।


7. পৃথিবীর উচ্চতম ও বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি হল—------


উত্তর: মৌনালোয়া।


8. দক্ষিণ আফ্রিকা, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, অ্যান্টার্কটিকা, গ্রিনল্যান্ড-এর বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে আছে মালভূমি


উত্তর: মহাদেশীয়।



D শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লেখো:

.

1. পৃথিবীর ভিতরকার শক্তিকে বহির্জাত শক্তি বলে।


উত্তর: অশুদ্ধ (অভ্যন্তরীণ শক্তি)


2. পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় চারভাগের একভাগ পর্বতময়।


উত্তর: শুদ্ধ


3. আল্পস পর্বতমালা আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত।


উত্তর: অশুদ্ধ (ইউরোপ)


4. ফ্রান্সের ভোজ একটি স্তূপ পর্বত।


উত্তর: শুদ্ধ


5. আগ্নেয় পর্বতের যে অংশ দিয়ে অগ্ন্যুৎপাত হয়, তাকে জ্বালামুখ বলে।


উত্তর: শুদ্ধ


6. তিব্বতের মালভূমি একটি লাভা গঠিত মালভূমি।


উত্তর: অশুদ্ধ (পর্বতবেষ্টিত)


7. পামির মালভূমির উচ্চতা 4873 মিটার।


উত্তর: শুদ্ধ


8. সমভূমির গড় উচ্চতা 300 মিটারের বেশি।


উত্তর: অশুদ্ধ (কম)


9. অধিকাংশ নদীকেন্দ্রিক সভ্যতা সমভূমিতেই গড়ে উঠেছিল।


উত্তর: শুদ্ধ




F বেমানান শব্দটি চিহ্নিত করো:

1. পাহাড়, হিমবাহ, মালভূমি, সমভূমি।


উত্তর: হিমবাহ।


2. নদী, বায়ু, ভূ-আলোড়ন, হিমবাহ।


উত্তর: ভূ-আলোড়ন।


3. ভিসুভিয়াস: মৌনালোয়া : ফুজিয়ামা: সাতপুরা।


উত্তর: সাতপুরা।


4. গঙ্গা নদী, নীলনদ, সিন্ধুনদ, ব্রহ্মপুত্র নদ।


উত্তর: নীলনদ।



G. ভুল সংশোধন করে লেখো:


1. প্রধানত ভঙ্গিল পর্বতের পাশেই গ্রস্ত উপত্যকা দেখা যায়।


উত্তর: প্রধানত স্তূপ পর্বতের পাশে গ্রস্ত উপত্যকা দেখা যায়।


2. আগ্নেয় পর্বতের অপর নাম ক্ষয়জাত পর্বত।


উত্তর: আগ্নেয় পর্বতের অপর নাম সঞ্চয়জাত পর্বত।


3. এশিয়া মহাদেশের হিমালয় একটি সঞ্চয়জাত পর্বতমালা।


উত্তর: এশিয়া মহাদেশের হিমালয় একটি ভঙ্গিল পর্বতমালা।


4. ক্রাকাতোয়া মালয়েশিয়ার একটি আগ্নেয় পর্বত।


উত্তর: ক্রাকাতোয়া ইন্দোনেশিয়ার একটি আগ্নেয় পর্বত।


5. মালভূমি অঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত।


উত্তর: সমভূমি অঞ্চলের পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত।



H. আমি কে?


1. আমি দুটো পর্বতচূড়ার মাঝখানের নীচু স্থানের মতো অংশ। আমি কে?


উত্তর: পার্বত্য উপত্যকা।


2. দুটি পাতের প্রবল চাপে মাঝখানের ভূভাগ ভাঁজ খেয়ে আমার সৃষ্টি হয়। আমি কে?


উত্তর: ভঙ্গিল পর্বত।


3. ভূগর্ভের ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে সঞ্চিত হয়ে আমার সৃষ্টি। আমি অনেক উঁচু। আমি কে?


উত্তর: আগ্নেয় পর্বত।


4. আমি একপ্রকার সমভূমি। নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছি। আমি কে?


উত্তর: পলিগঠিত সমভূমি।


5. আমি ভারতের একটি লাভাগঠিত মালভূমি। আমি কে?


উত্তর: দাক্ষিণাত্যের মালভূমি।



2  সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর


প্রশ্ন-1 ভূ-আলোড়ন কয় প্রকার ও কী কী?


উত্তর: ভূঅভ্যন্তরে সৃষ্ট ভূ-আলোড়ন প্রধানত দুই প্রকার। যথা- Ⓐ মহীভাবক আলোড়ন বা উল্লম্ব আলোড়ন। B গিরিজনি আলোড়ন বা অনুভূমিক আলোড়ন।


প্রশ্ন-2 ভূমিরূপের শ্রেণিবিভাগগুলি লেখো।


উত্তর: পৃথিবীপৃষ্ঠের উচ্চতা, বন্ধুরতা, ভূমির ঢাল, শিলার গঠন প্রভৃতির তারতম্যের উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর সমস্তরকম ভূমিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল- পার্বত্য ভূমি, B মালভূমি ও সমভূমি


প্রশ্ন-3 ভূ-গাঠনিক পাত কাকে বলে?


উত্তর: শিলামণ্ডল কতকগুলি ছোটো বড়ো খণ্ডে বিভক্ত। ক্ষুব্ধমণ্ডল বা অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের সান্দ্র ম্যাগমার উপর ভাসমান ও অতি ধীর গতিতে চলমান এই খণ্ডগুলিকে পাত (plate) বলে। ভূত্বকে মোট 7 টি বড়ো, 20 টি মাঝারি ও অসংখ্য ছোটো ছোটো পাত আছে। উদাহরণ-ভারতীয় পাত, আফ্রিকা পাত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত প্রভৃতি।


প্রশ্ন-4 অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল কাকে বলে?


উত্তর: ভূত্বকের নীচে ও বহিঃগুরুমণ্ডলের উপরে প্রায় 100-150 কিমি গভীরতায় নমনীয় স্থিতিস্থাপক ম্যাগমা দ্বারা গঠিত সান্দ্র প্রকৃতির নমনীয় এবং স্থিতিস্থাপক ভূস্তরকে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল বলে। ভূগাঠনিক পাতগুলি এই অর্ধতরল স্তরের উপর ভাসমান ও গতিশীল আছে।


প্রশ্ন-5 ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে?


উত্তর: ভূপৃষ্ঠের অগভীর জলভাগ সঞ্চিত কোমল পাললিক শিলাস্তরে প্রবল গিরিজনি আলোড়নের ফলে সৃষ্ট অনুভূমিক পার্শ্বচাপের প্রভাবে ভাঁজ পড়ে তরঙ্গাকারে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। উদাহরণ: এশিয়ার হিমালয় (উচ্চতম), দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ (দীর্ঘতম), ইউরোপের আল্পস, উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতমালা প্রভৃতি।


প্রশ্ন-6 স্তূপ পর্বত কাকে বলে?


উত্তর: প্রবল মহীভাবক ভূআলোড়নের ফলে শিলাস্তরে টান বা প্রসারণের জন্য দুটি সমান্তরাল ফাটল বা চ্যুতির মধ্যবর্তী ভূখণ্ড পার্শ্ববর্তী অঞ্চল অপেক্ষা উঁচু হয়ে উপরে উঠে এলে পৃথিবীপৃষ্ঠে হোস্ট বা স্তূপ পর্বতের (Horst or Block Mountain) সৃষ্টি হয়। উদাহরণ : ভারতের সাতপুরা, ফ্রান্সের ভোজ, জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট প্রভৃতি।


প্রশ্ন-7 গ্রস্ত উপত্যকা কাকে বলে?


উত্তর: প্রবল মহীভাবক ভূআলোড়নের প্রভাবে শিলাস্তরে সৃষ্ট দুটি টান বা প্রসারণের জন্য ভূপৃষ্ঠে সমান্তরাল চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ পার্শ্ববর্তী অঞ্চল অক্ষেপা নীচে বসে গিয়ে যে সুদূর বিস্তৃত, গভীর, সংকীর্ণ ও অবনত উপত্যকার সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বা গ্রাবেন (Rift Valley) বলে। উদাহরণ: ভারতের নর্মদা ও তাপ্তি নদী উপত্যকা প্রভৃতি।


প্রশ্ন-8 সঞ্চয়জাত বা আগ্নেয়পর্বত কাকে বলে?


উত্তর: প্রবল ভূ-আলোড়নের প্রভাবে ভূত্বকের দুর্বল অংশে সৃষ্ট ফাটল অথবা দুটি পাতের সংযোগস্থলের মধ্যবর্তী পথ দিয়ে ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত ম্যাগমা, গ্যাস, বাষ্প, ছাই, প্রস্তরখণ্ড প্রভৃতি প্রবল বেগে ভূপৃষ্ঠের উপর বেরিয়ে আসে এবং লাভারূপে ফাটলের চারপাশে সঞ্চিত হয়ে যে সুউচ্চ পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে সঞ্চয়জাত পর্বত বা আগ্নেয় পর্বত বলে। যেমন- ইতালির ভিসুভিয়াস।


প্রশ্ন-9 ক্ষয়জাত বা অবশিষ্ট পর্বত কাকে বলে?


উত্তর: পৃথিবীর প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতমালা, স্তূপ পর্বত, আগ্নেয় পর্বত বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে উচ্চতা হ্রাস পেয়ে কঠিন শিলা গঠিত গম্বুজাকৃতির অনুচ্চ ও বিচ্ছিন্ন পর্বত হিসেবে ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করছে, সেইসব শিলাময় উচ্চভূমিকে ক্ষয়জাত পর্বত বা অবশিষ্ট পর্বত (Erosional or Relict Mountain) বলে। উদাহরণ: ভারতের আরাবল্লি পর্বত, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপালেচিয়ান পর্বত এবং অস্ট্রেলিয়ায় গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ প্রভৃতি।


প্রশ্ন-10 কেবলমাত্র ভঙ্গিল পর্বতেই ভাঁজ কেন দেখা যায়?


উত্তর: ভূত্বক গঠনকারী দুটি অভিসারী পাত অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে ভাসমান অবস্থায় যখন একে অন্যের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে, তখন এদের মধ্যবর্তী অংশে বা পাতের প্রান্তদেশে দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চিত পলিরাশিতে প্রবল পার্শ্বচাপে ভাঁজ পড়ে তরঙ্গাকারে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। একমাত্র এই পর্বত ছাড়া অন্য কোনো প্রকারের পর্বত এভাবে সৃষ্টি হয় না। তাই সেগুলি ভাঁজযুক্ত হয় না এবং শুধুমাত্র ভঙ্গিল পর্বতেই ভাজ সৃষ্টি হয়।


প্রশ্ন-11 মালভূমিকে 'টেবিলল্যান্ড' কেন বলা হয়।


উত্তর: টেবিলের উপরের অংশ সমতল কিন্তু এর পায়াগুলো ঢালু ও খাড়া। মালভূমির উপরের অংশ প্রায় সমতল হলেও এর চারপাশ খাড়া ঢালযুক্ত হয়। টেবিলের আকারের সঙ্গে এর মিল থাকায় মালভূমিকে টেবিলল্যান্ড বলে।



3 • সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর


প্রশ্ন-1 উচ্চতা অনুসারে মালভূমির শ্রেণিবিভাগ করো।


উত্তর: উচ্চতা অনুসারে মালভূমি দুই প্রকার। যথা- (ⅰ) উচ্চ মালভূমি: যে সকল মালভূমির গড় উচ্চতা প্রায় 3000 মিটারের বেশি হয়, তাকে উচ্চ মালভূমি বলে। যেমন-পামির মালভূমি, তিব্বত মালভূমি। (ii) নিম্ন মালভূমি: যে সকল মালভূমির উচ্চতা 300-900 মিটারের মধ্যে থাকে, তাকে নিম্ন মালভূমি বলে। যেমন-ছোটোনাগপুর মালভূমি দাক্ষিণাত্য, আরব মালভূমি।



প্রশ্ন-2 মহাদেশীয় মালভূমি ও ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলতে কী বোঝো?


উত্তর: মহাদেশীয় মালভূমি: সঞ্চরণশীল পাতগুলি বা প্রাচীন


ভূখণ্ডগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যখন বিশাল আয়তন জুড়ে সুস্থায়ী মালভূমি রূপে অবস্থান করে, তখন তাদের মহাদেশীয় মালভূমি বলে। উল্লেখ্য, মহাদেশীয় মালভূমিগুলি মহাদেশের বা দেশের মাঝখানে বা ঢাল বা বর্মের ন্যায় অত্যন্ত কঠিন ও সুস্থায়ীভাবে প্রায় মাঝখানে অবস্থান মালভূমি প্রভৃতি।


করে। উদাহরণ: ব্রাজিল মালভূমি, কানাডীয় শিল্ড মালভূমি, দাক্ষিণাত্য


ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি: কোনো একটি বিস্তীর্ণ প্রাচীন মালভূমি বা উচ্চভূমি


অসংখ্য দীর্ঘদিন নদী দ্বার ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোটো ছোটো নদী উপত্যকা দ্বারা বিভক্ত হলে, তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে। গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত ছোটো ছোটো মালভূমি সম উচ্চতায় অবস্থান করলে, তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে। উদাহরণ: অস্ট্রেলীয় মালভূমি, পশ্চিমবঙ্গে ছোটোনাগপুর মালভূমি।



প্রশ্ন-3 লাভা সমভূমি ও লোয়েস সমভূমি বলতে কী বোঝো?


উত্তর:


প্রশ্ন-4 পর্বত, মালভূমি ও সমভূমির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করো।


উত্তর: লাভা সমভূমি: ভূঅভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের দুর্বল ফাটলের মধ্য দিয়ে লাভারূপে বাইরে বেরিয়ে এসে বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অনুভূমিকভাবে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠন করে, তাকে লাভা সমভূমি বলে। উদাহরণ: গুজরাটের মালব সমভূমি।


লোয়েস সমভূমি: প্রবল গতিবেগসম্পন্ন বায়ু দ্বারা মরুভূমির

অতিসূক্ষ্ম বালুকণা বহু দূরে পরিবাহিত হয়ে কোনো অবনমিত অঞ্চলে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি করে, তাকে লোয়েস সমভূমি বলে। উদাহরণ: চিনের হোয়াংহো অববাহিকা।




4 রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর


প্রশ্ন-1 চিত্রসহ ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি ব্যাখ্যা করো।


উত্তর:ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি- পাতসংস্থান তত্ত্বের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয়।


পাতসংস্থান তত্ত্ব (Plate Tectonic Theory) : ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তির সর্বাধুনিক তত্ত্বটি হল পাতসংস্থান তত্ত্ব। এই তত্ত্বানুসারে ভূত্বক কতকগুলি পাত বা প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত। এই পাতগুলি দুই প্রকারের হয়-মহাদেশীয় পাত ও মহাসাগরীয় পাত। 1968 খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম ডি. মরগান প্রবর্তিত মতবাদ অনুসারে পৃথিবীতে এরকম 7টি বড়ো, 20টি মাঝারি ও অসংখ্য ছোটো ছোটো পাত আছে। পাতগুলি গড়ে প্রায় 100 কিমি পুরু। পাতগুলি সান্দ্র বা গলিত ক্ষুব্ধমণ্ডল বা অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপর ভাসমান ও গতিশীল অবস্থায় আছে। শিলামণ্ডলের নীচে ক্ষুব্ধমণ্ডলে সৃষ্ট পরিচালন স্রোতের প্রভাবে দুটি পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষে মধ্যবর্তী অংশে সঞ্চিত পাললিক শিলাস্তরে প্রবল পার্শ্বচাপে ভাঁজপ্রাপ্ত হয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ: আন্দিজ, রকি। (চিত্র)



প্রশ্ন -2 মালভূমি সৃষ্টির কারণ আলোচনা করো।


উত্তর:মালভূমি সৃষ্টির প্রধান কারণগুলি হল- ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির সময় পর্বতগুলির মধ্যবর্তী নীচে স্থান পার্শ্বচাপে উঁচু হয়ে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি সৃষ্টি করে।


Ⓐ ভূআলোড়ন ও পাতসঞ্চালন: ভূআলোড়নের ফলে ভূপৃষ্ঠের প্রাচীন স্থলভাগগুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে কঠিন, অনুচ্চ ও সুস্থায়ী মালভূমি রূপে অবস্থান করে। একে মহাদেশীয় মালভূমি বলে। উদাহরণ: পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ান, আফ্রিকা, আরব, ব্রাজিল, দাক্ষিণাত্য মালভূমি প্রভৃতি।


Ⓑ ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়সাধন: সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয়কার্যের ফলে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল বা অন্য কোনো উচ্চভূমি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় পেয়ে প্রায় সমতল বা তরঙ্গায়িত শিখরদেশ বিশিষ্ট ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমিতে পরিণত হয়। উদাহরণ: ভারতের ছোটোনাগপুর মালভূমি, বুন্দেলখণ্ড ও বাঘেলখণ্ড মালভূমি প্রভৃতি।


© ভূপৃষ্ঠে লাভা সঞ্চয়: ভূগর্ভস্থ উত্তপ্ত তরল ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের ফাটল পথ দিয়ে নির্গত হয়ে বিস্তৃত অঞ্চলে লাভারূপে বা সঞ্চিত হয়ে মালভূমির সৃষ্টি করে। উদাহরণ: ভারতের মালব ও ডেকান ট্র্যাপ মালভূমি প্রভৃতি।

 



প্রশ্ন 3 পর্বত বেষ্টিত মালভূমি ও ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির চিত্র অঙ্কন করো এবং বৈশিষ্ট্য লেখো। (পর্ষদ নমুনা)


উত্তর:পর্বতবেষ্টিত মালভূমির বৈশিষ্ট্যগুলি হল- (i) এই মালভূমি ভঙ্গিল পর্বত দ্বারা বেষ্টিত হয়। (ii) গিরিজনি আলোড়নের দ্বারা সৃষ্ট হয়। (iii) এগুলি বয়সে নবীন। (iv) এই মালভূমির উচ্চতা বেশি, বিস্তারও বেশি, উদা: তিব্বত মালভূমি। ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির বৈশিষ্ট্যগুলি হল- (ⅰ) এটি মূলত নদী দ্বারা দীর্ঘদিন ক্ষয়ের ফলে তৈরি হয়। (ii) কঠিন শিলা ও কোমল শিলা দ্বারা গঠিত। (iii) কঠিন শিলাগঠিত অংশগুলি সমউচ্চতায় অবস্থান করে। (iv) কোমল শিলাগঠিত অঞ্চলগুলি উপত্যকা দ্বারা অবস্থান করে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়। উদা: দ: ভারতের মালনদে।


প্রশ্ন-4 সমভূমির বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।


উত্তর:সমভূমির প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হলো- অধিকাংশ সমভূমির উপরিভাগ সমতল। ⅱ) সমভূমির ঢাল অনেক কম হয়।


(iii) নদী অববাহিকা এবং সমুদ্র উপকূলে সমভূমির অধিক বিস্তার ঘটে। ✓ পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় 50%-এর বেশি অংশ সমভূমির অন্তর্গত। ✔ সমভূমি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে ⅵ) অধিকাংশ সমভূমি কোমল শিলা বা মৃত্তিকা দ্বারা গঠিত হয়। (vi) কিছু সমভূমি ঢেউ খেলানো বা প্রায় সম হয়। সমুদ্র সমতল থেকে নীচে অবস্থান করে (যেমন, কাস্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল)। সমভূমি সমুদ্র সমতল থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত হয় যেমন- ভারতের তরাই সমভূমি অঞ্চল। (viii) পৃথিবীর বেশির ভাগ সমভূমি নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।



প্রশ্ন-5 চিত্র ও উদাহরণসহ তিন প্রকার সমভূমির পরিচয় দাও।


উত্তর:প্রধান তিন প্রকার সমভূমি হল-


Ⓐ পলল বা পলিগঠিত সমভূমি: নদী তীরবর্তী অঞ্চল এবং হ্রদ বা সমুদ্র মোহনায় দীর্ঘদিন ধরে নদীবাহিত পলি সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে পলিগঠিত বা পলল সমভূমি বলে। এই সমভূমির মৃত্তিকা নবীন ও অপরিণত হয়। উদাহরণ: উত্তর ভারতের সিন্ধু গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি (ভারতের সর্ববৃহৎ সমভূমি)।


Ⓑ লাভাগঠিত সমভূমি: ভূঅভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা কোনোরকম


বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে লাভাস্রোতরূপে ভূপৃষ্ঠের কোনো ফাটল বা ছিদ্র পথ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে জমে শীতল ও কঠিন হয়ে, যে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সমতল ভূমি সৃষ্টি করে, তাকে লাভা সমভূমি বলে। লাভা সমভূমিতে উর্বর কৃষ্ণমৃত্তিকার সৃষ্টি হয়। উদাহরণ: গুজরাটের দক্ষিণাংশের মালব সমভূমি।


© লোয়েস সমভূমি: প্রবল গতিবেগসম্পন্ন বায়ু দ্বারা বাহিত মরুভূমির


অতিসূক্ষ্ম বালুকণা বহুদূরে পরিবাহিত হয়ে কোনো নীচু অঞ্চলে সঞ্চিত হয়ে, যে সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে লোয়েস সমভূমি বলে। এটি খনিজসমৃদ্ধ পলি ও বালুকণা দ্বারা গঠিত হয়। উদাহরণ: চিনের হোয়াংহো নদী অববাহিকায় সৃষ্ট লোয়েস সমভূমি।





👉Download Books PDF

👉Paid Answer ( For Membership User )


Editing by -Lipi Medhi