Chapter 10
আফ্রিকা মহাদেশ
----------------------------------------------
Short Answer Question
প্রশ্ন-1 আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে অক্ষরেখার অবস্থান জলবায়ুর ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলবে?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের মাঝ-বরাবর নিরক্ষরেখা প্রসারিত হয়েছে বলে এর উভয়দিকে 10° অক্ষাংশ পর্যন্ত নিরক্ষীয় জলবায়ু এবং 23½° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে উয়ুমণ্ডলীয় জলবায়ু এবং আফ্রিকার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে নাতিশীতোয় জলবায়ু বিরাজ করে। কেবল সাহারা, কালাহারি ও নামিব মরুভূমি অঞ্চলে মরু জলবায়ু বিরাজ করে। আবার নিরক্ষরেখার উভয়পাশে 10°-25° (উভয় গোলার্ধে) মধ্যবর্তী স্থানে ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু বিরাজ করে। উল্লেখ্য, আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত মরক্কো, আলজিরিয়া, টিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিশরে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু লক্ষ করা যায়। লিবিয়ার আল আজিজিয়া (58°C) হলো পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উন্নতম স্থান।
প্রশ্ন-2 আফ্রিকা মহাদেশের সমুদ্র উপকূল ও উপকূল থেকে দূরে সমুদ্রের প্রভাব কীভাবে পড়বে?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে লোহিত সাগর ও ভারত মহাসাগর এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থান করছে। ফলে আফ্রিকার সমুদ্রোপকূলবর্তী অঞ্চলের উপর সমুদ্রের উদ্বু ও শীতল স্রোতের কম-বেশি প্রভাব এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি উপস্থিতির জন্য জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয় এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হয়। উপকূল থেকে দূরে সমুদ্রের প্রভাব কমে যায় বলে এবং গ্রীষ্মকালে উদ্বুতা ও শীতকালে ঠান্ডা গিয়ে জলবায়ু চরমভাবাপন্ন হয়। এছাড়াও দিনরাত্রির মধ্যেও উয়তার ব্যাপক হ্রাসবৃদ্ধি অনুভূত হয়।
প্রশ্ন-3 আফ্রিকার উপকূল অঞ্চলে সমুদ্রস্রোতের কী প্রভাব পড়বে?
উত্তর: সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ জলভাগ দ্বারা পরিবেষ্টিত আছে। প্রধানত মহাসাগরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবাহিত উষু ও শীতল সমুদ্রস্রোতের প্রভাব আফ্রিকার উপকূলবর্তী অংশে লক্ষ করা যায়। যেমন-আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্বে উয় সোমালি স্রোেত, দক্ষিণ-পূর্বে উষু মোজাম্বিক ও আগুলহাস স্রোত প্রবাহিত হয় বলে উদ্বুতা বেশি থাকে।
শীতল বেঙ্গুয়েলা স্রোতের প্রভাবে আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে উদ্বুতা যথেষ্ট কম থাকে। আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমে শীতল ক্যানারি স্রোতের প্রভাবে উন্নতা কিছুটা হ্রাস পায়। আফ্রিকার মধ্য-পশ্চিমভাগে উয় গিনিস্রোতের প্রভাবে উষুতা কিছুটা বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন-4 আফ্রিকার উচ্চ পার্বত্য এলাকায় বাতাসের উন্নতার ওপর উচ্চতার প্রভাব কী?
উত্তর: বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর ট্রপোস্ফিয়ারে প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিমি উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর উষ্ণতা 6.4° সে. হারে কমতে থাকে। উয়তা হ্রাসের এই স্বাভাবিক হার পর্বতের পাদদেশে অপেক্ষাকৃত বেশি উষুতা এবং পর্বত শিখরে কম উয়তার সৃষ্টি করে থাকে। যেমন-নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো (দক্ষিণ অক্ষাংশ, 5,895 মিটার) হলো আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। কিন্তু উয়তা হ্রাসের এই স্বাভাবিক হার অনুসারে এই পর্বতশৃঙ্গটি সারাবছর চিরতুষারাবৃত থাকে। এইরকমভাবে আফ্রিকার অন্যান্য উচ্চভূমির পর্বত শিখরের উন্নতা খুব কম থাকে।
ভেবে দেখো..
প্রশ্ন-1 একই সময়ে আফ্রিকার উত্তর ও দক্ষিণ ভাগের জলবায়ু একরকম হয় না কেন?
উত্তর: সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশটি উত্তরে 37°20′ উত্তর অক্ষরেখা থেকে দক্ষিণে 34°52′ দক্ষিণ অক্ষরেখা পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। আফ্রিকা মহাদেশটির মধ্যভাগ দিয়ে নিরক্ষরেখা প্রসারিত হওয়ায় সমগ্র মহাদেশটি দুটি ভাগে ভাগ হয়েছে এবং মহাদেশটি দুটি গোলার্ধে (উত্তর গোলার্ধ, দক্ষিণ গোলার্ধ) অবস্থান করছে। এর মধ্যাংশের বেশির ভাগ অঞ্চল জুড়ে উয়ুমণ্ডলের অবস্থান লক্ষ করা যায়। উত্তর ও দক্ষিণ অংশে নাতিশীতোয় মন্ডলে অবস্থান করে। আবার সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় মহাদেশের দক্ষিণাংশে গ্রীষ্মকাল ও উত্তরাংশে শীতকাল বিরাজ করে। মধ্যভাগে উষু ও আর্দ্র জলবায়ু বিরাজ করলেও সূর্যের উত্তরায়ণ ও ক্ষণায়নের সাথে সাথে সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্যের জন্যই একই সময়ে আফ্রিকার উত্তরভাগ ও দক্ষিণভাগের জলবায়ু একরকম হয় না।
উত্তরাংশে গ্রীষ্মকাল হলে দক্ষিণাংশে শীতকাল এবং দক্ষিণাংশে গ্রীষ্মকাল হলেও উত্তরাংশে শীতকাল হয়।
প্রশ্ন-২ আফ্রিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলে সাহারার মতো বড়ো মরুভূমি সৃষ্টি হলো কেন?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর অংশে পৃথিবীর বৃহত্তম দিগন্ত বিস্তৃত সুবিশাল উষু-শুষ্ক সাহারা (আরবি ভাষায় 'সাহারা' কথার অর্থ 'মরুভূমি') মরুভূমি অবস্থান করছে। উত্তর গোলার্ধের ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থান করলেও এই সাহারা মরুভূমি সৃষ্টির কারণগুলি হলো-
① আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি কর্কটক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের মধ্য ও পশ্চিম ভাগে অবস্থান করায় এখানে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু প্রবাহিত হলেও স্থলভাগের ওপর দিয়ে আসে বলে জল বাষ্পের প্রভাবে বায়ু শুষ্ক হয়। ফলে আফ্রিকার উত্তর অংশে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে।
ভারত মহাসাগর থেকে আগত দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু আফ্রিকার পূর্ব প্রান্তে বৃষ্টিপাত ঘটায়। আফ্রিকার পূর্ব দিকে উচ্চভু মি (পার্বত্য অঞ্চল) অবস্থান করায় উত্তর আফ্রিকার পশ্চিম অংশ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে পরিণত হয়। বাতাসে জলীয় বাষ্প অভাবে বৃষ্টিপাত হয় না। এই দুই-এর কারণে আফ্রিকার উত্তর অংশে পৃথিবীর বৃহত্তম উদ্বু মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্ন-3 আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো পর্বত নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও তার চূড়ায় সারাবছর বরফ জমে থাকতে দেখা যায় কেন?
উত্তর: আমরা জানি, ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পেতে থাকে (প্রতি কিমি উন্নতায় 6.45° সে. হারে উন্নতা হ্রাস পায়)। কিলিমাঞ্জারোর উচ্চতা প্রায় 6000 মিটার (5895 মিটার)। নিরক্ষীয় অঞ্চলের গড় উদ্বুতা 27° সে.। 6000 মিটার উপরে ওঠায় তাপমাত্রা হ্রাস পাবে 6.45° সে.6 38.7° সে.। অর্থাৎ 27° সে.- 38.7° সে. 11.7° সে.। নিক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত হলেও তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে থাকায় কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় সারা বছর বরফ জমে থাকে।
প্রশ্ন-1 কোন্ গাছ কোন্ জলবায়ু অঞ্চলে জন্মায়!
উত্তর: গাছ ও গাছের ধর্ম জলবায়ু অঞ্চল কাঁটাগাছ উয় মরু জলবায়ু অঞ্চল শাল ও বাঁশ গাছ মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল জলপাই গাছ ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল খসখসে সবুজ ঘাস ভেল্ড তৃণভূমি বা নাতিশীতোয় জলবায়ু অঞ্চল। সবুজ ঘাসের সঙ্গে বাওবাব জাতীয় মরু উদ্ভিদ
সাভানা তৃণভূমি বা ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু অঞ্চল
প্রশ্ন-২ ছোটো ছোটো কাগজে আফ্রিকা ভূপ্রকৃতি, নদনদী, জলবায়ু আর স্বাভাবিক উদ্ভিদ সম্পর্কে লেখো। যেমন একটা কাগজে লিখলে 'সাহারা'। এরকম আরও টুকরো কাগজে লিখে ফেলো। সবাই একটা একটা করে ভাঁজ করা কাগজ তোলো। খুলে দেখো, তোমার কী বিষয় পড়েছে। দু মিনিট কিংবা তিন মিনিট সময়ে বিষয়টা নিয়ে যা জান বলো।
উত্তর: তোমার স্কুলের ভূগোল শিক্ষক-শিক্ষিকার উপস্থিতিতে আনন্দের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করো। অথবা, টিফিনের সময় টিফিন খাওয়ার পরে খেলাচ্ছলে বন্ধুদের সঙ্গে নিজ নিজ বক্তব্য জানাও।
প্রশ্ন-1 নীলনদের প্রবাহপথটা কেমন?
উত্তর: ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে সমগ্র নীলনদ অববাহিকাকে প্রধানত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(i) উৎস অঞ্চল বা উৎসের নিকটবর্তী উঁচু মালভূমি ও হ্রদ অঞ্চল: নীলনদের উৎসস্থল তাঞ্জানিয়ার বুরুন্ডি উচ্চভূমি অঞ্চল থেকে ভিক্টোরিয়া হ্রদ পর্যন্ত এই উচ্চ মালভূমি ও হ্রদ অঞ্চলটি আফ্রিকার পূর্বভাগের গ্রস্ত উপত্যকা অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলটির গড় উচ্চতা 600-700 মিটার।
(ii) অববাহিকার উঁচু জলাভূমি বা সাড অঞ্চল: ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে সুদানের মালাকল পর্যন্ত অংশে এই অঞ্চলটি বিস্তৃত। এই অঞ্চলটির গড় উচ্চতা 350-500 মিটার। কচুরিপানা, নল খাগড়া ও বিভিন্ন ধরনের লতাপাতা থাকার কারণে জলের প্রবাহপথে অবরুদ্ধ হয়ে জলাভূমিগুলির সৃষ্টি হয়ে যাদেরকে স্থানীয় ভাষায় সাড (Sudd) বলে।
(iii) মধ্য অববাহিকা বা বিস্তীর্ণ তৃণভূমি অঞ্চল: মালাকল থেকে খার্তুম পর্যন্ত ঈষৎ ঢেউখেলানো ও বন্ধুর অসমতল অঞ্চলটি অবস্থান করছে। এই সমভূমি অঞ্চলে সাভানা জাতীয় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
(iv) নিম্ন অববাহিকা অঞ্চল: খার্তুম থেকে কায়রো পর্যন্ত বিস্তৃত অংশ নীলনদের নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের অন্তর্গত। খার্তুম থেকে আসোয়ান পর্যন্ত অঞ্চলে নীলনদের প্রবাহপথে ছ-টি খরস্রোতার মাধ্যমে ধাপে ধাপে উত্তরদিকে নেমে এসেছে।
(v) বদ্বীপ অঞ্চল: মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ভূমধ্যসাগরের মোহানা পর্যন্ত নীলনদের উর্বর পলি সঞ্চিত হয়ে বিশালাকার বদ্বীপ অঞ্চলটির সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্ন-2 নীলনদের সারাবছর জলপ্রবাহ কোথা থেকে আসে?
উত্তর: নীলনদ হলো আফ্রিকা তথা পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী (6650 কিমি)। নীলনদ নিত্যবহ নদী ও সারাবছর প্রচুর পরিমাণে জল বহন করে থাকে। তার কারণগুলি হলো--(i) হোয়াইট নীল তাঞ্জানিয়ার টাঙ্গানিকা হ্রদের নিকটবর্তী বুরুন্ডি উচ্চভূমি থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। বুরুন্ডির উচ্চভূমি থেকে ভিক্টোরিয়া হ্রদ পর্যন্ত অংশ নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্তর্গত হওয়ায় সারাবছর অপরাহ্নে পরিচলন বৃষ্টিপাতে কাররে প্রচুর পরিমাণে জল পায়। (ii) হোয়াইট নীল ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকেও প্রচুর জল সংগ্রহ করে। (iii) ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে নির্গত হওয়ার পর পুনরায় কিয়োগো অ্যালবার্ট হ্রদে মধ্যে যাওয়ার। ফলে প্রচুর জল সংগ্রহ করে। (iv) এরপর হোয়াইট নীল বার-এল-জেবেল নাম ধারণ করে উত্তরদিকে অগ্রসর হওয়ার সময় মালাকম শহরের নিকটে দুটি উপনদী (বাম দিক থেকে বার-এল-গজল এবং ডানদিক থেকে সোবাট নদী) নীলনদের মূলধারার সঙ্গে যুক্ত হয়ে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। (v) অন্যদিকে, নীলনদের দীর্ঘতম উপনদী বু নীল ইথিওপিয়ার উচ্চভূমিতে অবস্থিত টানা হ্রদ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। (vi) ব্লু নীল ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গ্রীষ্মকালে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করার ফলে নীলনদে বাড়তি জলের আগমন ঘটে। (vii) অতঃপর হোয়াইট নীল ও ব্লু নীল খার্তুম শহরের নিকট মিলিত হয়ে নীলনদ নাম ধারণ করে সুদানের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় আটাবারা উপনদী এসে মিলিত হয়েছে। ফলে এই উপনদীর জলও নীলনদের জল বৃদ্ধি করে। (viii) এছাড়া নীলনদের বিস্তীর্ণ ও প্রশস্ত অববাহিকার জল নানান জলধারার মাধ্যমে নীলনদে এসে পতিত হয়ে নীলনদে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এইসব কারণগুলির জন্য নীলনদ সারাবছর প্রচুর পরিমাণে জল বহনকরে। ফলে নদীটি নিত্যবহ ও নৌবহনযোগ্য।
প্রশ্ন-3 নীলনদে বন্যা হয়। তার কারণ কী?
উত্তর: নীলনদে প্রায়ই বন্যা দেখা দেয়। তার কারণগুলি হলো- ① হোয়াইট নীলের উৎপত্তিস্থল নিরক্ষীয় অঞ্চলে হওয়ায় সারাবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তাই অতিরিক্ত জলের জোগানহেতু এই নদীতে বন্যা হয়। মধ্য নীলনদ অববাহিকা বা ব্লু নীলের প্রবাহপথ ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ায় গ্রীষ্মকালে প্রচুর বৃষ্টির জল। (iii) নীলনদে অতিরিক্ত জলের জোগানে জুন থেকে সেপ্টম্বরে নিম্ন অংশে অববাহিকায় বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন-1 বন্যার অতিরিক্ত জলকে আটকাবার জন্য কী উপায় অবলম্বন করা হয়েছে?
উত্তর: নদীতে বাঁধ দিয়ে জলাধার (Dam) নির্মাণ করে বন্যার অতিরিক্ত জল আটকে রাখা যায়। 1902 খ্রিস্টাব্দে বন্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে মিশরের আসোয়ান নামক স্থানে নীলনদের উপর আসোয়ান বাঁধ নির্মাণ করা হয়। অতঃপর 1936 খ্রিস্টাব্দে ব্ল নীলের প্রবাহপথে জেবেল আউলিয়া বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর 1967 খ্রিস্টাব্দের পৃথিবীর বৃহত্তম নদী বাঁধ উচ্চ আসোয়ান বাঁধ তৈরি করে মিশরে সারাবছর জলসেচের প্রয়োজন মেটানো হয়। বহুমুখী নদী *পরিকল্পনার অন্তর্গত অন্যান্য বাঁধগুলির মধ্যে নীলনদের উপর নির্মিত নাগ হামাদি, ইসনা, অ্যাসিউট ও লেক নাসের বাঁধ এবং সুদানের • ব্লু নীলের ওপর নির্মিত আটাবারা বাঁধ ও সেনার বাঁধ বিশেষ উল্লেখ যোগ্য।
প্রশ্ন-1 নীলনদের অববাহিকা অঞ্চলে মানুষের জীবনে নীলনদের প্রভাব সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করে সুনির্দিষ্ট ধারণা তৈরি করো।
উত্তর: মিশরের উপর দিয়ে নীলনদ প্রবাহিত হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনে সর্বাঙ্গীণ উন্নতি লক্ষ করা গেছে। বিশেষত মিশরের অর্থনৈতিক উন্নতিতে নীলনদের অবদান অপরিসীম। সেগুলি হলো- নীলনদের উভয়তীরের অববাহিকায় বিস্তীর্ণ উর্বর পলি সঞ্চিত সমতলভূমির কারণে কৃষিকাজও পশুপালনের ব্যাপক প্রসারও উন্নতিঘটেছে। ii) নানান ধরনের শিল্পের অভাবনীয় উন্নতি ঘটেছে। (iii) জলাধারগুলির মাধ্যমে প্রচুর জলবিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। সাহারা মরুভূমির আগ্রাসন রোধ করে মিশরসহ অন্যান্য দেশকে শস্যশ্যামলা করে তুলেছে। জলাধার গুলি থেকে খাল খনন করে কৃষিক্ষেত্রে ও পশুচারণ ক্ষেত্রে জলসরবরাহ করা, পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি, প্রচুর মাছ চাষ হয়, যা অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তোলে। এছাড়া ভূমিক্ষয় বা মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং। নীলনদের জল শোধন করে পানীয় জলের চাহিদা মেটানো হয়। (vii) নীলনদের নিম্ন অববাহিকায় শহর, শিল্প ও বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এগুলি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
প্রশ্ন-1 পৃথিবী ক্রমশ উষু হচ্ছে! কিন্তু পৃথিবীর উষু হওয়ার জন্য সাহারার কী পরিবর্তন হচ্ছে? আমাদের ভাবনায় এটাই আসে যে সাহারায় আরও গরম বাড়ছে! সাহারা মরুর আরও বিস্তার হচ্ছে! ঢুকে পড়ছে আশপাশের বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে। গ্রাস করে নিচ্ছে আফ্রিকা সবুজকে! কিন্তু সত্যিই কি তাই?
উত্তর: বিশ্ব উন্নায়নের (Global warming) প্রভাবে বর্তমানে পৃথিবীর সমস্ত জীবকূল আজ বিপন্ন। বিশ্ব উন্নায়ন পৃথিবীকে ক্রমশ উয় থেকে উদ্বুতর করে চলেছে। সেজন্য সাহারা মরুভূমি আরও উত্তপ্ত হবে, মরুভূমির প্রসার ঘটবে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমবে। ফলে স্বাভাবিক উদ্ভিদ (তৃণ, গুল্ম ও বৃক্ষ) ধ্বংস হবে। বালিঝড় মারাত্মক রূপ ধারণ করবে। জীবজন্তুর প্রাণসংশয় ঘটতে পারে। উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে দেখা গেছে যে, বিশ্ব উন্নায়ন সাহারা মরুভূমিকে ক্রমশ অভিশপ্ত করছে না, বরং সেখানে আশীর্বাদ স্বরূপতার প্রমাণগুলি হলো- বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে পার্বত্য হিমবাহ ও মেরু অঞ্চলের চিরস্থায়ী বরফস্তর অতি দ্রুত গলছে। সে কারণে জলভাগের উচ্চতা ও আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রোপকূল ও অবনমিত অঞ্চলগুলি প্লাবিত হয়ে জলাভূমির আয়তন বৃদ্ধি ঘটছে। তার ফলে পৃথিবীর সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাহারা মরুভূমিও তার ব্যতিক্রম নয়। (ii) বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির ফলে সাহারা মরুভূমির বিশাল বিশাল পাথরের উপরে কিছু জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ছাপ লক্ষ করা যাচ্ছে। (iii) সাহারাতে সবুজ তৃণের বিস্তার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি রুক্ষ ও শুষ্ক বালির পরিমাণ কমছে। পশুচারণভূমির বিস্তার ঘটছে। কৃষিক্ষেত্রের আয়তন বাড়ছে। শুধুমাত্র তৃণভূমি নয়, নানান প্রজাতির জেরোফাইট উদ্ভিদ, ক্যাকটাস, গুল্ম, বাবলা, ফণিমনসা, খেজুর, তাল ও ঝোপঝাড় জাতীয় উদ্ভিদের সমারোহের সাথে সাথে কৃষিজ ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। (vii) জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিদেশি পর্যটকরা
সাহারা মরুভূমির আরও ভিতরে যেতে পারছে। (ix) জলবায়ু কিছুটা অনুকূল হওয়ায় উঁচু বহুতল, পাথরের দেয়াল দিয়ে তৈরি বাসগৃহে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, পাকা রাস্তা প্রভৃতি নির্মাণ হচ্ছে। ধূলিঝড় ও বালিঝড়ের প্রকোপ অনেক কমে গেছে। xi সাহারার মরুদ্যানগুলির আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেকদিন পর্যন্ত গভীর জল থাকছে। (xi) বিভিন্ন জীবজন্তুর বংশবৃদ্ধি অতি দ্রুত ঘটছে এবং জীববৈচিত্র্যের প্রাধান্য ঘটছে।হাতেকলমে
প্রশ্ন-2 বিশ্ব উন্নায়ন সাহারা মরুভূমি ছাড়াও পৃথিবীর অন্য অঞ্চলে কী কী পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে, সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করো।
উত্তর: বিশ্ব উষ্ণায়ন সাহারা মরুভূমি ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে যেসব পরিবর্তন এসেছে বা আসতে পারে, সেগুলি হল- ① পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে। শিল্পবিপ্লবের পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর গড় উদ্বৃতা 1.5° সে. গ্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। (ii) উয়তা বৃদ্ধির ফলে মেরু ও পার্বত্য অঞ্চলের হিমবাহ অতি দ্রুত গলে যাচ্ছে। কিলিমাঞ্জারো পর্বতের অধিকাংশ বরফ গলে গেছে। (iii) হিমবাহ ও বরফগলা জল সমুদ্রে মিশে ফলে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি করে নীচু ও দ্বীপ অঞ্চলগুলির নিমজিত করছে। (iv) গ্রীষ্মকাল শীতকালের উষ্ণতাকে বৃদ্ধি পেয়ে গড় উষুতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। (v) গ্রীষ্মকালে ঘন ঘন উয় ও শুষ্ক বায়ুর লু (Heat wave প্রবাহিত হচ্ছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বর্ষাকালের আগমন পিছিয়ে গেছে। ① সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, জোয়ারের জলের উচ্চতা, বান, সামুদ্রিক ঝড় উপকূলভূমিকে ক্ষয় করে, প্রবাল প্রচুর ধ্বংস করছে। কৃষিজমি ও বসতবাড়ি ধ্বংস করছে। (vii) সমুদ্রের লবণাক্ত জল প্রবেশ্য শিলাস্তরকে লবণাক্ত করে। পানীয় জলের সংকট সৃষ্টি করছে। viⅲ বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। (ix) ব্রাজিলের আমান নদীর অববাহিকার 'সেলভা' বনভূমির উচ্চতা ও ঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কালাহারি ও নামিবিয়ার মতো শুষ্ক প্রায় মরুভূমিতেদীর্ঘ ঘাসের পরিমাণ এবং তৃণভোজী প্রাণীরও সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া নাতিশীতোয় তৃণভূমিতে ঘাসের উচ্চতা বাড়ছে। (ii) ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের শীতলতা ও অতি তীব্র ঠান্ডার প্রভাবে স্বাভাবিক উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। (xii) পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে কখনো খরা, আবার কখনো বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। (iii) কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটবে ও শস্য উৎপাদন কম হবে। (xiv) অ্যাসিড বৃষ্টি দাবানলের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীতে আগত ও বিকিরিত তাপের বৈষম্য ঘটবে। ফলে সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি (UV-B) পৃথিবীকে মারাত্মক ক্ষতি করবে। (xvi) বিভিন্ন পতঙ্গবাহিত রোগ এবং জীবাণুবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে।
MCQs
1. আফ্রিকা মহাদেশের মোট দেশ বা রাষ্ট্র সংখ্যা হলো-
(i) 54 টি,
(ii) 56 টি,
(iii) 60টি,
(iv) 65 টি।
উত্তর: B 56 টি। (2020 সালে জাতি সংঘের মতে 54টি স্বাধনি ও টি অন্য দেশ বারা নির্ভরশীল দেশ)
2. আটলাস পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটি হল-
(i) মাউন্ট তৌবকল,
(ii) মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো,
(iii) মাউন্ট রুয়েঞ্জোরি,
(iv) মাউন্ট ক্যামেরুন।
উত্তর: A মাউন্ট তৌবকল।
3. আফ্রিকার উচ্চ মালভূমির তৃণভূমি হল-
(i) ডাউনস,
(ii) পম্পাস,
(iii) ভেল্ড,
(iv) প্রেইরি।
উত্তর: ভেল্ড।
4. আফ্রিকার যে নদী নিরক্ষরেখাকে দুবার অতিক্রম করেছে, তার নাম-
(i) জাম্বেসি নদী,
(ii) কঙ্গো নদী,
(iii) অরেঞ্জ নদী,
(iv) নীল নদ।
উত্তর: B কঙ্গো নদী।
5. আফ্রিকার-
(i) পূর্ব,
(ii) উত্তর,
(iii) পশ্চিম,
(iv) দক্ষিণ দিকে সাহারা মরুভূমি অবস্থিত।
উত্তর: উত্তর দিকে।
6. কঙ্গো নদী আফ্রিকার-
(i) পূর্ব,
(ii) উত্তর,
(iii) দক্ষিণ,
(iv) পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে।
উত্তর: D পশ্চিম দিক।
7. আসোয়ান বাঁধ নির্মিত হয়েছে-
(i) 1901 সালে,
(ii) 1902 সালে,
(iii) 1915 সালে,
(iv) 1912 সালে।
উত্তর: 1902 সালে।
৪. নীলনদের উচ্চ অববাহিকায় আবদ্ধ জলাভূমি-
(i) সাড,
(ii) হ্রদ,
(iii) শৈবাল সাগর,
(iv) ওয়াদি নামে পরিচিত।
উত্তর: সাড।
9. লিবিয়ার শিলাময় সমতল মরু অঞ্চল-
(i) রেগ,
(ii) সেরির,
(iii) আর্গ,
(iv) হামাদা নামে পরিচিত।
উত্তর: সেরির।
10. সাহারা মরুভূমির উয় স্থানীয় বায়ুকে বলা হয়-
(i) খামাসিন,
(ii) চিনুক,
(iii) ফন,
(iv) সিরোক্কো।
উত্তর: খামসিন।
B. দু-এক কথায় উত্তর দাও:
1. আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব দিকে কোন্ মহাসাগর অবস্থিত?
উত্তর: ভারত মহাসাগর।
2. আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে কোন্ মরুভূমি অবস্থিত?
উত্তর: কালাহারি মরুভূমি।
3. আফ্রিকার কোন্ নদী সবচেয়ে বেশি জল বহন করে?
উত্তর: কঙ্গো নদী।
4. আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম উপকূল দিয়ে কোন্ স্রোত প্রবাহিত হয়েছে?
উত্তর: উয় গিনি স্রোত।
5. গ্রস্ত উপত্যকা আফ্রিকার কোন্ দিকে দেখা যায়?
উত্তর: পূর্বদিকে।
6. আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম লেখো।
উত্তর: মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো।
7. লেক নাসের বাঁধ কোন্ দেশে অবস্থিত?
উত্তর: মিশর।
৪. 'সাহারা' কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: জনহীন প্রদেশ।
10. সাহারা মরু অঞ্চলের উটবাহিত পরিবহণ ব্যবস্থা কী নামে পরিচিত?
উত্তর: ক্যারাভান।
11. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী বাঁধের নাম কী?
উত্তর: উচ্চ আসোয়ান বাঁধ।
C.শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও:
1. আফ্রিকা মহাদেশ ও ইউরোপ মহাদেশকে বিচ্ছিন্ন করেছে প্রণালী।
উত্তর: জিব্রাল্টার।
2. অধিক সংখ্যায় পিরামিড দেখা যায়।
উত্তর: মিশরে।
3. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বাদুজলের হ্রদটির নাম হলো-
উত্তর: ভিক্টোরিয়া হ্রদ।
4. অরেঞ্জ নদী পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
উত্তর: ড্রাকেন্সবাগ
5. সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানের জলবায়ু প্রকৃতির।
উত্তর: সমভাবাপন্ন।
6. ভেল্ড তৃণভূমির উঁচু পাহাড়ের ঢালে দেখা যায়। ও উইলো গাছ
উত্তর: পপলার।
7. হোয়াইট নীল ও ব্লু নীল নদ মিলিত হয়েছে। শহরে।
উত্তর: খার্তুম।
৪. মিশরের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহরটি হলো।
উত্তর: আলেকজান্দ্রিয়া।
9. গ্রীষ্মকালে সাহারা মরুভূমি থেকে প্রবাহিত উদ্বু ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ু গিনি উপকূলে নামে
পরিচিত।
উত্তর: হারমাটান।
10. আফ্রিকার গ্রস্ত উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত একটি হ্রদ হল (কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশন)
উত্তর: টাঙ্গানিকা।
D.শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লেখো:
1. জাম্বেসি নদীর গতিপথে ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে।
উত্তর: শুদ্ধ
2. অরেঞ্জ নদীতে 19 টি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে।
উত্তর: অশুদ্ধ (29 টি)
3. চিন দেশীয় জলবায়ুতে কর্ক গাছ বেশি দেখা যায়।
উত্তর: অশুদ্ধ (ওক)
4. টাঙ্গানিকা, মালাউই, রুডলফ, অ্যালবার্ট সবই হলো মালভূমি।
উত্তর: অশুদ্ধ (হ্রদ)
5. পৃথিবীর বৃহত্তম নদী বাঁধটির নাম হলো আটাবারা বাঁধ।
উত্তর: অশুদ্ধ (উচ্চ আসোয়ান)
6. সাহারা মরুভূমিতে গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত বালুকাপূর্ণ অত্যধিক উষু ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ুর নাম হলো সাইমুম।
উত্তর: শুদ্ধ
7. সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের একটি প্রধান উপজাতি গোষ্ঠীর নাম হলো বানজারা।
উত্তর: অশুদ্ধ (তুয়ারেগ)
G.ভুল সংশোধন করে লেখো:
1. রোজউড হালকা কাঠের অথচ টেকসই জাতীয় বৃক্ষ।
উত্তর: উইলো হালকা কাঠের অথচ টেকসই জাতীয় বৃক্ষ।
2. আফ্রিকার মোট জলপ্রবাহের 20% নীলনদ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উত্তর: আফ্রিকার মোট জলপ্রবাহের 10% নীলনদ দিয়ে প্রবাহিত হয়
3. নীলনদের উৎসস্থলে ইথিওপিয়ার উচ্চভূমি অবস্থান করছে।
উত্তর: নীলনদের উৎসস্থলে বুরুন্ডি উচ্চভূমি অবস্থান করছে।
4. সাহারা মরুভূমির একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যকেন্দ্র হলে লুসাফা।
উত্তর: সাহারা মরুভূমির একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য কেন্দ্র বেনগাজি।1. আমি আফ্রিকার একেবারে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি পর্বতমালা।
4. আমি কে?
উত্তর: ড্রাকেন্সবার্গ পর্বতমালা।
2. আমি এক ধরনের স্বাভাবিক উদ্ভিদ। আমি চিনদেশীয় জলবায়ুতে সবচেয়ে বেশি জন্মাই। আমি কে?
উত্তর: ওক গাছ।
3. আমি আফ্রিকার উত্তর দিকে অবস্থিত একটি পৃথিবীবিখ্যাত সাগর। আমি কে?
উত্তর: ভূমধ্যসাগর।
5. আমার কাণ্ডের ভিতর জল থাকে। আমি আফ্রিকার সাভানা তৃণভূমিতেই জন্মাই। আমি কে?
উত্তর: বাওবাব বৃক্ষ।
2. সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন-1 আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত অ্যাটলাস পার্বত্য অঞ্চল সম্বন্ধে লেখো।
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের মরক্কো, আলজিরিয়া ও টিউনিশিয়ায় এই পার্বত্য অঞ্চলটি অবস্থিত। এই মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে প্রায় 2300 কিমি দীর্ঘ অ্যাটলাস পর্বতশ্রেণি বিস্তৃত আছে। অ্যাটলাস পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হলো জেবেল তৌবকল (অ্যাটলাসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, 4165 মিটার), (ii) অ্যাটলাস একটি নবীন ভঙ্গিল পর্বতমালা (হিমালয়ের সমসাময়িক) এবং ইউরোপের আল্পস্ পর্বতেরই অংশবিশেষ।
প্রশ্ন-2 ভেল্ড কী?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের সর্বদক্ষিণে দক্ষিণ আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমির পূর্বদিকের উচ্চভূমিতে অবস্থিত নাতিশীতোয় তৃণভূমি স্থানীয় ভাষায় ভেল্ড নামে পরিচিত। এই তৃণভূমির ঘাসগুলি ছোটো ছোটো ও নরম প্রকৃতির হয়। এই তৃণভূমির উৎকৃষ্ট ঘাসগুলি হলো আলফা-আলফা, হে, ক্লোভার, এস্পাটো প্রভৃতি। এই তৃণভূমিতে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু ও ঘোড়া পালন করা হয়।
প্রশ্ন-3 আফ্রিকা মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ হ্রদের নাম লেখো।
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ হ্রদই পূর্বভাগের বৃহৎ গ্রস্ত উপত্যকায় অবস্থিত। এখানকার প্রধান প্রধান হ্রদগুলি হল- ভিক্টোরিয়া, টাঙ্গানিকা, টানা, চাদ, নিয়াসা, অ্যালবার্ট, মালাউই, রুডলফ, কিভু, মালাভি, মারু প্রভৃতি। এর মধ্যে টাঙ্গানিকা হ্রদ হল আফ্রিকার দীর্ঘতম হ্রদ (680 কিমি) এবং ভিক্টোরিয়া হ্রদ হল পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপেয় জলের হ্রদ।
প্রশ্ন-4 সাভানা কাকে বলে?
উত্তর: সংজ্ঞা: 'সাভানা' কথাটির আক্ষরিক অর্থ তৃণভূমি আফ্রিকা মহাদেশের নিরক্ষীয় বনভূমির উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত ক্রান্তীয় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ তৃণভূমি সাভানা নামে পরিচিত। অবস্থান: আফ্রিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলের সুদান, চাদ, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, ঘানা জাম্বিয়া, তাঞ্জানিয়া প্রভৃতি দেশের অধিকাংশ স্থানে এই তৃণভূমি লক্ষ করা যায়।
বৈশিষ্ট্য: এই তৃণভূমির ঘাসগুলি 1-5 মিটার লম্বা হয়। 5 মিটার দীর্ঘ ঘাসগুলি 'এলিফ্যান্ট গ্রাস' নামে পরিচিত। তৃণভূমির মধ্যে অ্যাকাসিয়া ও বাওবাবজাতীয় গাছ দেখা যায়।
প্রশ্ন-5 আফ্রিকার ভূমধ্যসাগরীয় অরণ্যের অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: অবস্থান: আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ভূমধ্যসাগরীয় অরণ্যভূমি গড়ে উঠেছে। আফ্রিকার আলজিরিয়া, মিশর, টিউনিসিয়া, লিবিয়া, মরক্কো এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে এই ভূমধ্যসাগরীয় অরণ্য লক্ষ করা যায়।
বৈশিষ্ট্য: (i) ভূমধ্যসাগরীয় অরণ্যভূমি সাধারণত চিরহরিৎ বা চিরসবুজ হয়। (ii) গুল্ম ও ঝোপঝাড় জাতীয় গাছপালার প্রাধান্য থাকে। (iii) গাছের কান্ড ও পাতায় মোমের আবরণ থাকে এবং পাতাগুলি সূঁচালো হয়। (iv) গাছের ছাল বা বাকলগুলি পুরু হয়। (v) শিকড় দীর্ঘপ্রসারী হয়। (vi) গাছের পাতাগুলির আকৃতি অপেক্ষাকৃত ছোটো হয়। (vii) গ্রীষ্মকালে ফল ও বীজগুলি যাতে না শুকিয়ে যায়, সেজন্য ফলগুলি রসালো প্রকৃতির হয়।
উদাহরণ: ভূমধ্যসাগরীয় অরণ্যের উল্লেখযোগ্য বৃক্ষগুলি হলো-জলপাই, ওক, কর্ক, জারা, কারি, ডুমুর, আখরোট, রেডউড, ইউক্যালিপটাস, বীচ, তুঁত, লরেল, মার্চেল, ল্যাভেন্ডার, ওলিয়্যান্ডার, রোজমেরি প্রভৃতি।
প্রশ্ন-6 মরূদ্যান (Oasis) কী?
উত্তর: মরু অঞ্চলে বায়ুর অপসারণ কার্যের ফলে সৃষ্ট গর্ত বা ধান্দগুলি ভূগর্ভস্থ জলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি করে, তাকে মরূদ্যান বলে। আফ্রিকার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মরূদ্যান হলো টুয়াট, টিনেরকু, ওয়ানেটা, টিমিমন, বাহারিয়া প্রভৃতি।
প্রশ্ন-7 হারমাট্টান কী?
উত্তর: আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমের আটলাস পার্বত্য অঞ্চলের দক্ষিণ দিক থেকে গিনি উপসাগরের দিকে প্রবাহিত শুষ্ক প্রকৃতির স্থানীয় বায়ু হারমাট্টান নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-৪ আর্গ ও হামাদা কী?
উত্তর: আর্গ: সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে অতি সূক্ষ্ম বালির স্তূপ জমা হয়ে যে ছোটো পাহাড় বা টিলার মতো ভূমিরূপ তৈরি করে, তাকে আর্গ বলে। হামাদা: সাহারা মরুভূমির পশ্চিমাংশের শিলাময় সমতল ভূমিভাগকে হামাদা বলা হয়।
প্রশ্ন-9 বাখান কী?
উত্তর: 'বার্থান' শব্দটির প্রচলন করে এ. ভি. মিডেনডর্ফ, মধু অঞ্চলে বায়ুবাহিত বালি মৃতগাছ, পাথর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে বায়ুর প্রবাহ পথে তির্যকভাবে বা আড়াআড়িভাবে সঞ্চিত হয়ে যে অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়িকে বার্খান বা তির্যক বালিয়াড়ি বলে।
প্রশ্ন-10 ওয়াদি কাকে বলে?
উত্তর: 'ওয়াদি' কথার অর্থ উপত্যকা। সাহারা মরু অঞ্চলের শুষ ও শুষ্ক প্রায় নদী উপত্যকাগুলিকে ওয়াদি (Wadi) বলা হয়। এই নদী খাতগুলিতে স্বল্পকালীন বৃষ্টিপাতের প্রভাবে সামান্য জলপূর্ণ অবস্থায় কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর এই জল বালির মধ্যে হারিয়ে যায় বা অদৃশ্য হয়ে যায়।
প্রশ্ন-11 রেগ কী?
উত্তর: সাহারা মরুভূমির পশ্চিম অংশে বালির সঙ্গে পাথরের টুকরো মিশে থাকে। এই অঞ্চলকে রেগ বলে। সাহারার বেশিটাই রেগ।
👉Paid Answer (For Membership User)
Editing By- Lipi Medhi