Chapter 3
পাগলা গণেশ
---------------
১. গণেশ কে?
উত্তর: গণেশ হল একজন অদ্ভুত স্বভাবের মানুষ। গভীর তার বিচক্ষণক্ষমতা।
সে আবেগপ্রবণ। লেখালিখি পছন্দ করে।
২. 'পৃথিবী যে উচ্ছন্নে গেল!'
এই উক্তিটির বক্তা কে?
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব।
৩. 'কিছুই বুঝিনি স্যার।'
বক্তা কে?*
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন একজন পুলিশম্যান।
৪. 'আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর
চেষ্টা করছি'। বস্তা কে?
উত্তর: বস্তা হলেন 'পাগলা গণেশ' নামাঙ্কিত গদ্যের মূল চরিত্র গণেশ।
৫. গণেশের কাছে 'পিপে' থেকে কারা নেমে এসেছিলেন?
উত্তর: গণেশের কাছে 'পিপে' থেকে নেমে
এসেছিলেন- একজন পুলিশম্যান ও দুজন মহিলা।
৬. গণেশের দীর্ঘজীবী হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: পঞ্চাশ বছর বয়সে গণেশ মৃত্যুঞ্জয় টনিক খেয়ে ফেলেছিল। তাই তার মৃত্যু বন্ধ
হয়ে গিয়েছিল।
৭. দেড়শো বছর আগে ঘটা কোন্ জিনিস গণেশের পছন্দ হয়নি?
উত্তর: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত 'পাগলা গণেশ' নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় দেড়শো বছর আগে ঘটে যাওয়া সুকুমার শিল্প বিরোধী
আন্দোলন গণেশের পছন্দ হয়নি।
৮. গণেশের মেয়ের বয়স কত?
উত্তর: গণেশের মেয়ের বয়স ১৬৬ বছর।
৯. গণেশের ছেলে মেয়ে কী গণেশের কাছে আসে?
উত্তর: গণেশের ছেলে মেয়ে গত একশো বছরের মধ্যে গণেশের কাছে আসেনি।
১০. 'গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে
গেছে'-কাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে?
উত্তর: প্রায় একশো বছর গণেশ তার সন্তানদের দেখেনি। তাই তাদের মুখশ্রী
ভুলে গেছে।
সংক্ষেপে
উত্তর দাও।'
১. 'পাগলা গণেশ' গল্পের মুখ্যচরিত্র গণেশকে তোমার কেমন
লাগল?
উত্তর: পাগলা গণেশ খুবই পণ্ডিত একজন মানুষ। সে
ছিল দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। তাই সে অনুভব করেছিল শুধু
বিজ্ঞানচর্চার বাড়াবাড়িরফলে মানুষ হারিয়ে ফেলছে তার আবেগ, ভালোবাসা,
দয়া-মায়া। তার। মনে হয়েছে, এর ফলে একদিন
পৃথিবীটা মরে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে জীবনের এই ঘনিষ্ঠ
উপাদানগুলি।তাই সে অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সহ্য করেও পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা
করেছিল। আপাত অর্থে মজার চরিত্র পাগলা গণেশ, কিন্তু
সত্যিকারের অর্থে সে পাগল নয়; আসলে সবচেয়ে বোধ সম্পন্ন মানুষ
সে। জগতের কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল। আর তাই সে একদিন সবার মন জয় করে নিয়েছিল।
আমাদের সবার কাছে পাগলা গণেশ একজন আকর্ষণীয় চরিত্র।
২.৭
"গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন করে বলল"-কে, কী বলেছিল? তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণটি
কী?**
উত্তর:
২.১
"সালটা ৩৫৮৯"- এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে কোন কোন নতুন বৈজ্ঞানিক
আবিষ্কারের কথা গল্পে বলা হয়েছে?***
উত্তর: ৩৫৮৯
সালের মধ্যে পৃথিবীতে নানারকম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছে। যেমন-মাধ্যাকর্ষণ
প্রতিরোধকারী মলম; এর আবিষ্কারের ফলে নানারকম উড়ানযন্ত্রও
আবিষ্কৃত হয়েছে। আলোর চেয়ে গতিবেগ সম্পন্ন মহাকাশযান তৈরি হয়েছে। সূর্যের আরও দুটো
গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কৃত হয়েছে।
২.২
"ওসব 'অনাবশ্যক ভাবাবেগ' কোনো
কাজেই লাগে না"- 'অনাবশ্যক ভাবাবেগ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তাকে সত্যিই তোমার 'অনাবশ্যক' বলে মনে হয় কি?***
উত্তর: 'অনাবশ্যক ভাবাবেগ' হল অর্থহীন আবেগ বা বিহ্বলতা,
যার কোনো দরকার নেই। এখানে কবিতা, গান,
ছবি আঁকা, কথাসাহিত্য, নাটক,
সিনেমা এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কথাকে 'অনাবশ্যক
ভাবাবেগ' বলা
হয়েছে।
এগুলিকে
নিয়ে চিন্তাভাবনা করাকে আমার 'অনাবশ্যক' মনে হয় না। কেননা এগুলি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এগুলি ছাড়া মানুষের
জীবন নিরস হয়ে যায়। মানুষের হৃদয়ের অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা এর মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে মানুষ খুঁজে পায় পরম শান্তি।
২.৩
"চর্চার অভাবে মানুষের মনে আর ওসবের উদ্রেক হয় না"-মানুষের মন থেকে কোন্
কোন্ অনুভূতিগুলি হারিয়ে গেছে?
উত্তর: মানুষের মন থেকে দয়া, মায়া, করুণা, ভালোবাসা ইত্যাদি
অনুভূতি হারিয়ে গেছে।
১.
সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।
১.১. 'পাগলা গণেশ' একটি (বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/রূপকথা)
বিষয়ক গল্প।
উত্তর: 'পাগলা গণেশ' একটি 'কল্পবিজ্ঞান'
বিষয়ক গল্প।
১.২
অবজার্ভেটরি-র বাংলা প্রতিশব্দ (পরীক্ষাগার/ গবেষণাগার/ নিরীক্ষণাগার)।
উত্তর: অবজার্ভেটরির বাংলা প্রতিশব্দ
নিরীক্ষণাগার।
১.৩ সভ্য
সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ (হিমালয়ের গিরিগুহায়/গভীর জঙ্গলে/মহাকাশে) আশ্রয়
নিয়েছিলেন।
উত্তর: সভ্য সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ
হিমালয়ের গিরিগুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
১.৪
গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল (৩৫৩৯/৩৪৩৯/৩৫০০) সালে।
উত্তর: গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক
আবিষ্কার হয়েছিল ৩৪৩৯ সালে।
৯.
রেখাঙ্কিত পদগুলির কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
১. গণেশও
আর সকলের মতো টনিকটা খেয়েছিল।
উত্তর: কর্তৃকারকে 'ও'
বিভক্তি।
২. তার
গানের গলা বেশ ভালোই।
উত্তর:
সম্বন্ধ পদে 'এর' বিভক্তি।
৩. ও মশাই, এমন বিকট শব্দ করছেন কেন?
উত্তর: কর্মকারকে 'শূন্য'
বিভক্তি।
৪.
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব তাঁর বিমান থেকে নামলেন।
উত্তর: অপাদানকারকে 'থেকে'
অনুসর্গ।
৫. তিনজন
মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে রইল।
উত্তর: করণকারকে 'শূন্য'
বিভক্তি।
৬.আকাশে
একটা পিপে ভাসছিল।
উত্তর: অধিকরণকারকে 'এ'
বিভক্তি।
৭.আজ সকালে
গণেশকে কবিতায় পেয়েছে।
উত্তর: অধিকরণকারকে
'এ' বিভক্তি।
৮. আমি
পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।
উত্তর: কর্মকারকে 'কে'
বিভক্তি।
৪.
অর্থ অপরিবর্তিত রেখে নিম্ন রেখাঙ্কিত শব্দগুলির পরিবর্তে নতুন শব্দ বসাও।
১. ওসব
অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।
উত্তর: ওসব অপ্রয়োজনীয় ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে
না।
২. কেউ
ঠাট্টা-বিদ্রুপ করল না।
উত্তর: কেউ ব্যঙ্গ-উপহাস করল না।
৩. লোকে
গান গাইতে লেগেছে, কবিতা মকসো করছে।
উত্তর: লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা অভ্যাস করছে।
৪. হিমালয়
যে খুব নির্জন জায়গা, তা নয়।
উত্তর: হিমালয় যে খুব জনহীন জায়গা, তা নয়।
১.
বিপরীত শব্দ লেখো:
সকাল, কঠিন, লাভ, অনাবশ্যক, ভাবাবেগ, জন্ম, আশ্রয়, আকাশ, কৃত্রিম।
উত্তর: সকাল-সন্ধ্যা; কঠিন-নরম; লাভ-লোকসান; অনাবশ্যক- আবশ্যক; ভাবাবেগ- আবেগহীন/আবেগবর্জিত; জন্ম-মৃত্যু; আশ্রয়-নিরাশ্রয়; আকাশ-পাতাল; কৃত্রিম-অকৃত্রিম।
২.
নিম্নলিখিত পদগুলির পদান্তর কর:
সংগীত, সাহিত্য, শিল্প, আগ্রহ,
বিনীত, বৈজ্ঞানিক, সপ্তাহ,
পৃথিবী, ব্যতিক্রম, স্থাপন,
প্রকৃতি।
উত্তর: সংগীত-সাংগীতিক; সাহিত্য- সাহিত্যিক; শিল্প-শিল্পীত; আগ্রহ-আগ্রহী; বিনীত-বিনয়;
১. 'পাগলা গণেশ' গল্পটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
অথবা
'পাগলা গণেশ' গল্পের এই নামকরণ কতখানি যুক্তিসংগত বলে
মনে করো।
উত্তর: গল্পের
নামকরণ হয়ে থাকে কখনও চরিত্রকে কেন্দ্র করে, কখনওবা
ঘটনাকে কেন্দ্র করে। 'পাগলা গণেশ' নামাঙ্কিত
এই গল্পের নামকরণ হয়েছে মূল চরিত্র গণেশকে কেন্দ্র করে। গণেশের যে পরিকল্পনা,
তার যে আচার-আচরণ, ভাবনা-চিন্তা তা কখনোই
বাস্তব সম্মত নয়। কালের বিচারে তাই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁকে 'পাগলা' বিশেষণে চিহ্নিত করেছেন। ৩৫৮৯ সালে জগৎ যখন উত্তর-আধুনিক হয়ে আরও নতুন পথে চলেছে, তখন গণেশ দিব্যি কবিতা নিয়ে ব্যস্ত। বিজ্ঞানের প্রাণহীন গবেষণা তার পছন্দ
নয়। বরং সে শিল্পকে বাঁচাতে ব্যস্ত। কলকাতার সায়েন্স কলেজের শিক্ষক হয়েও শুধুমাত্র
বিজ্ঞানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়নি। বরং দেখতে চেয়েছিল-পৃথিবীটা যেন সুন্দর হয়ে
ওঠে। তার জন্যে গান চাই, কবিতা চাই, ছবি
চাই। এজন্যে গণেশের শিল্প সাধনাকে তার সময়ের প্রেক্ষিতে অন্যদের মনে হয়েছে পাগলের
কার্যকলাপ। এই জন্যে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে 'পাগলা গণেশ'
নামে। এদিক থেকে এ গল্পের নামকরণ সময়ের প্রেক্ষিতে, লেখকের উদ্দেশ্য অনুসারে সার্থক হয়েছে।
৫.
"এই মৃত্যুহীন জীবন, এই অন্তহীন আয়ু কি
এভাবেই যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে হবে?"- পাগলা গণেশের কেন
একথা মনে হয়েছিল?**
উত্তর: 'পাগলা গণেশ' নামাঙ্কিত
গল্পের মূল চরিত্র গণেশ। পরিবর্তিত বিশ্বে বিজ্ঞানের বিবর্তন দেখে সে বিস্মিত
হয়েছিল। বিব্রত গণেশ হিমালয়ের নির্জন স্থানে জায়গা খুঁজেছিল। সে চেয়েছিল নির্জনে
শিল্প সাধনা করতে। তার মনে হয়েছিল-ভূগর্ভে, ভুপৃষ্ঠে এবং
অন্তরীক্ষে কোথাও নিপাট নির্জনতা নেই। আসলে নির্জনতা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন কাজ।
সে নিজের
মতো করে গাইতে থাকে। ছবি আঁকতে থাকে। কিন্তু তার সেই শিল্প সাধনার অর্থ কেউ বুঝতে
চায় না। আকাশযান যাত্রীদের মনে হয় সে গাইছে না, শুধু 'বিটকেল শব্দ' করছে। তাঁর ছবি আঁকাকে তাঁরা মনে করেন-'সার্কিট ডিজাইন'।
অবাক হয়
গণেশ, তিনি হতাশ হন। সেই হতাশা থেকে আলোচ্য এই
বক্তব্য।
৭. পাগলা
গণেশ চরিত্রটি কেমন। তা আলোচনা করো।++
উত্তর: একালের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক হলেন
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। কথাসাহিত্যের সর্বত্র তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। 'পাগলা গণেশ' শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অসাধারণ একটি
শিল্প সফল রচনা। এটি তাঁর কল্পবিজ্ঞানধর্মী লেখা। এ গল্পের মূল চরিত্র গণেশ। তার
চরিত্র বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্যগুলি উঠে আসে, তা
নিম্নরূপ-
১.
কল্পনাপ্রিয় মানুষ গণেশ : পরিবর্তিত
বিশ্বে সেই মানুষ, যে বিজ্ঞান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বিজ্ঞান
শুধু তথ্য ও গবেষণায় ভারাক্রান্ত। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, সেই সময় মানুষ বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো কিছুর চর্চা করেনি। অবশ্য, ব্যতিক্রম বলে একজন ছিল। সে হল আমাদের আলোচ্য গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র
গণেশ। সে কল্পনাপ্রিয় মানুষ।
২.
নির্জনতার অনুসন্ধানী : গণেশ
নির্জনতা চেয়েছিল। সে দেখেছিল পৃথিবী বড্ড বেশি জটিল। মানুষ সেখানে অত্যন্ত
কর্মব্যস্ত। গণেশ এদের থেকে স্বতন্ত্র হতে চেয়েছিল। তাই হিমালয়ের নির্জন গিরিগুহায়
আশ্রয় নিয়েছিল। সাধকের মতো শিল্প সাধনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
৩.
শিল্প সাধক মানুষ : গণেশ ছিল যথার্থই শিল্পী। মানুষ তখন ভুলে
গিয়েছিল শিল্প, সাহিত্য, সংগীত,
কেননা শীর্ষেন্দু লিখেছেন- বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো চর্চাই নেই।...
ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না। তখন
খেলাধুলোর পাঠ চুকে গিয়েছে। উঠে গিয়েছে অলিম্পিক। বিলুপ্ত হয়েছে বিশ্বকাপ। আছে
শুধু বিজ্ঞান
👉Paid Answer (For Membership User)
উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে সদস্যপদ প্রয়োজন।