৩৬। বই-টই
একটি বাক্যে উত্তর দাও।
১.১ 'বই তো পড়ো টই পড়ো কী?'-'টই' পড়ার কথা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় কবি জানিয়েছেন, 'টই' না পড়লে বিশ্বের কোনোকিছুই জানা যায় না। অর্থাৎ টই না পড়লে বই পড়ার সমস্ত
আনন্দ বৃথা হয়ে যায়।
১.২ 'তাই তো কাটি ছড়া'-
'ছড়া' কাটার কারণ কী?
উত্তর: কবি
প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় কবি জানিয়েছেন, বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে টইও পড়তে হয়। এই 'টই' পড়তে উৎসাহ দেওয়ার জন্যে কবি ছড়া কাটেন।
১.৩ 'টই পড়া যায় কোথায়?'
- কবি এই প্রশ্নের কী উত্তর দিয়েছেন?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় কবি জানিয়েছেন, বই থেকে মুখ তুলে
বাইরের বিশ্বের দিকে তাকালেই টই-এর খোঁজ পাওয়া যায়।
১.৪ আকাশ ছোঁয়া কোন্ জায়গায় টই-এর খোঁজ
পাওয়া যায়?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় দেখা যায় আকাশ ছোঁয়া খোলা মাঠের খাতায় টই-এর খোঁজ পাওয়া
যায়।
১.৫ আঁধার করা মেঘে কী দেখা যায়?
উত্তর: আঁধার
করা মেঘে টই চমকায় বিজলি হয়ে। তখন সে দৃশ্য দেখতে লাগে অপূর্ব।
১.৬ দিঘির জলে কী ফোটে?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র লিখেছেন, দিঘির জলে বৃষ্টি পড়ে
খই-এর মতো টই ফুটতে থাকে। তখন তা দেখে অভিভূত হতে হয়।
১.৭ টই কোথায় কাঁপতে থাকে?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র লিখেছেন, টই ছোট্ট পাখির
রং-বেরঙের পাখায় কাঁপতে থাকে।
১.৮ 'সঙ্গে পড়ো টই'। 'টই' পড়ার কারণ কী?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় কবি লিখেছেন, বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে
টই পড়তে হয়। কেননা, টই না হলে এতরকম বই কোথায় থাকত।
১.৯ খোকা খুকুর মুখে কে মিষ্টি হাসি
মাখায়?
উত্তর: টই ছোট্ট পাখির রং-বেরঙের পাখায় থেকে
খোকা-খুকুর মুখে মিষ্টি হাসি মাখায়।
১.১০' গাছের ডালে কীভাবে টইকে
দেখা যায়?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় লিখেছেন, গাছের ডালে পাতায় রোদ
মেঘে লুটোপুটি হয়। সেই দৃশ্য দেখতে খুব সুন্দর। সেই সুন্দরের মধ্যে টই থাকে।
চারটি পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও।
১. 'বই তো পড়ো টই পড়ো কি?'-কবি কেন এ কথা বলেছেন?
উত্তর: বিরাট এই বিপুলা বিশ্বে অতি সামান্য অংশ
আমরা পারি। শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে জ্ঞানচর্চা করে বিপুলা বিশ্বকে জানা যায়
না। এই জন্যে কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র মনে করেন, শুধু বই নয়; সেই সঙ্গে 'টই'
পড়াও উচিত। অর্থাৎ পাঠ্য বইয়ের বাইরে যে বিরাট এক অজানা বিশ্ব রয়েছে,
সেখান থেকেও জ্ঞান অর্জন করা উচিত। বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে তিনি রোদ
মাখানো ডাল-পাতা, দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠ, অন্ধকার আকাশের মধ্যে প্রকাশিত বিদ্যুৎ, পাখির
রং-বেরঙের পাখা ইত্যাদির মধ্যে টই-এর সৌন্দর্য দেখতে বলেছেন। কবির মনে হয়েছে শুধু
সীমিত জ্ঞানের মধ্যে আবদ্ধ থাকলে এই 'টই'কে উপলব্ধি করা যায় না।
২. 'বই পড়া সব মিছে'-কবি কেন একথা বলেছেন?
উত্তর: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র মনে করেন, শুধু মাত্র পাঠ্য বইয়ের
মধ্যে আবদ্ধ থাকলে আমাদের অর্জিত জ্ঞান পূর্ণ হয় না। তিনি বই-এর মধ্যে লুকিয়ে থাকা
টই-কেও জানবার কথা বলেছেন। ছাপার অক্ষরের বাইরে বিরাট বিস্তৃত যে প্রকৃতি, যেখানে অনবরত প্রাণের খেলা হয়ে চলে; তার মধ্যে আনন্দ
অন্বেষণ করতে বলেছেন কবি। ফলে শুধুমাত্র পাঠ্য বিষয়ের মধ্যে জ্ঞানের জায়গাটুকু না
খুঁজে গাছের ডালে পাতায় যে রোদ পড়ে, অন্ধকার আকাশে যে
বিদ্যুৎ চমকিত হয়, ছোট্ট পাখির পাখায় যে সৌন্দর্য দেখা যায়;
তার মধ্যে অজানা পৃথিবীর অনেক তথ্য জানা যায়। সুতরাং কবি মনে করেন,
শুধু বই পড়া 'মিছে'।
৩. 'বই-এর মাঝে লুকিয়ে থাকে।'-
'বই'-এর মাঝে কে, কীভাবে
লুকিয়ে থাকে?**
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই অংশে বই-এর মাঝে টই লুকিয়ে থাকে বলে কবি
জানিয়েছেন।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: শুধু মাত্র পাঠ্য বইয়ের মধ্যে জ্ঞান
অবস্থান করে না। প্রকৃতির বিরাট বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে রয়েছে জ্ঞানের নানাদিক। তাই
শুধুমাত্র শৃঙ্খলিত বিদ্যাচর্চার মধ্যে আবদ্ধ না থেকে বিরাট বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা 'টই'-এর মধ্যেও জ্ঞানের বিভিন্ন দিক খুঁজে নিতে হয়। তাই বইয়ের মাঝে লুকিয়ে থাকে
কোনো কোনো অজানা টই। এই টই-এর মধ্যে যে অফুরান আনন্দ আছে, তাকেই
কবি গ্রহণ করতে বলেছেন।
৪. 'হঠাৎ যদি বাইরে
চেয়ে/মনটা ওঠে দুলে।'- কোন্ কবির কোন্ কবিতা থেকে নেওয়া
হয়েছে? কবি কেন মন দুলে ওঠার কথা বলেছেন?***
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: রবীন্দ্রপরবর্তী কবি ও কথাকার
প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতা থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত
হয়েছে।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র জানিয়েছেন, বই থাকে ঘরের মধ্যে;
আর টই ছড়িয়ে থাকে বিশ্বের সর্বত্র। কোথায়, কীভাবে
টই অবস্থান করে তার বর্ণনায় কবি জানিয়েছেন-
ক।। টই থাকে রোদ ঝলমল গাছের ডালে-পাতায়।
খ। দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠে টই অবস্থান
করে।
গ। অন্ধকার মেঘের বিদ্যুতের ঝলকানিতে তাকে
পাওয়া যায়।
ঘ। দিঘির জলের বৃষ্টির ফোঁটায় সে থাকে।
ঙ। ছোট্ট পাখির রং-বেরঙের পাখায় তাকে দেখা
যায়।
চ। ছোটোদের মিষ্টি হাসিতে সে লুকিয়ে থাকে।
এভাবে প্রকৃতির বিভিন্ন জায়গায় টই-এর
সন্ধান পাওয়া যায়। আর তার জন্যে বইয়ের পাতা থেকে চোখ রাখতে হয় বাইরের বিশ্বে।
৫. 'টিই চমকায় বিজলি হয়ে।'-
'টই' কীভাবে বিজলি হয়ে চমকায়?
উত্তর: কবি-গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতা টই-এর বিচিত্র অস্তিত্বের কথা বলেছেন কবি। এই টই এমন এক
আনন্দঘন উপলব্ধির জন্ম দেয় যে, মনের মধ্যে তখন অজানা পৃথিবীর
রহস্য উন্মোচনের জন্যে বিরাট আকুতি দেখা যায়। কবি 'টই'-এর অস্তিত্ব বোঝাতে গিয়ে রোদে ঝলমল ডালপালা, দিগন্ত
ছোঁয়া মাঠ, অন্ধকারের বুক চিরে হাসতে থাকা বিদ্যুৎ, ছোট্ট পাখির রঙ-বেরঙের পাখা, খোকা-খুকুর মিষ্টি হাসি
ইত্যাদি প্রসঙ্গের কথা বলেছেন। যখন চারিদিক কালবৈশাখী ঝড়ে অন্ধকার হয়ে আসে,
তখন আঁধার-করা মেঘের মাঝে 'টই চমকায় বিজলি হয়ে'। তখন সে দৃশ্য দেখতে লাগে অপূর্ব।
দশটি বাক্যে উত্তর দাও।
১. 'বই-টই' কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তর: কবি-গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় রয়েছে পাঠ্য পুস্তক বহির্ভূত জগতের নানা সৌন্দর্য। কবি
মনে করেন-শুধু মাত্র পঠিত বিদ্যাচর্চা মানুষের জীবনে পূর্ণতা আনতে পারে খ্য না।
এজন্যে পড়াশোনার বাইরে যে বিরাট অজানা রহস্যের জগৎ আছে কবি সে দিকে ইঙ্গিত দিতে
চেয়েছেন। তাঁর মনে হয়েছে সে দৃশ্যময় ক, জগতের মধ্যে রয়েছে
অপূর্ব প্রাণের আবেগ।
কোথায় এবং কীভাবেই বা কবি বর্ণিত 'টই'-এর অস্তিত্ব আছে সেই ৪' প্রসঙ্গে প্রেমেন্দ্র মিত্র
জানিয়েছেন-
ক। আকাশ ছোঁয়া দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের
মধ্যে রয়েছে টই-এর অবস্থান।
খ। অন্ধকার মেঘের মাঝখানে যে বিদ্যুৎ
চমক দেয়, কবির মতে 'টই' সেই বিদ্যুৎ হয়েও চমকায়।
গ। বড়ো পুকুরের জলে বৃষ্টির ফোঁটা খই
ফোটার মতো যখন সশব্দে পড়ে, তখন তার মধ্যে 'টই'-এর দেখা
পাওয়া যায়।
ঘ। ছোট্ট পাখির অপূর্ব সুন্দর রং-বেরঙের
ডানায় এই টই-এর সন্ধান পাওয়া যায়।
এভাবে 'টই' হয়ে ওঠে 'বই'-এর বিকল্প রূপ। বই দেয় নির্দিষ্ট জ্ঞান। আর 'টই'
দেয় সেই জ্ঞানের পূর্ণতা। তাই 'বই-টই' নামকরণটি হয়েছে সার্থক ও সর্বাঙ্গসুন্দর।
২. 'বই পড়ো খুব যত
পারো/সঙ্গে পড়ো টই'-কোন্ কবির কোন্ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি
গৃহীত হয়েছে? কবি কেন বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে টই সম্পর্কেও
উৎসাহ দিয়েছেন, পাঠ্য কবিতাটি অবলম্বনে লেখো।***
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: রবীন্দ্রোত্তর কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র
প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতা থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ
না থেকে বৃহৎ বিশ্বে জ্ঞানকে প্রসারিত করবার কথা শুনিয়েছেন কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র।
'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় 'বই'কে
শৃঙ্খলিত পাঠ রূপে চিহ্নিত করে কবি জানিয়েছেন, সেই জ্ঞানের
পূর্ণতা মিলবে টই-এর মধ্যে। অর্থাৎ বাইরের প্রকৃতিকে অবলম্বন করে বিস্তৃতি পাবে
টই-এর জগৎ। তাই কবি জানিয়েছেন, রোদ মাখানো গাছে ডালে-পাতায়,
দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠের খাতায়, অন্ধকার
মেঘের মধ্যে বিদ্যুতের চমকে, ছোট্ট পাখির রঙ-বেরঙের পাখাতে,
ছোট্ট শিশুর মিষ্টি হাসির মধ্যে টইকে পাওয়া যাবে। তাই বই পড়ার সঙ্গে
সঙ্গে টই সম্পর্কেও
উৎসাহ দিয়েছেন কবি।
৩. 'টই নইলে থাকত কোথায়/এত
রকম বই।'-কোন্ প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? এই
বক্তব্যের তাৎপর্য লেখো।**
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রণীত 'বই-টই' নামাঙ্কিত কবিতায় কবি পাঠ্যপুস্তকের বাইরে যে বিস্তৃত বিশ্বের পাঠ রয়েছে,
তাকে নির্দেশ করে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র কবিতার প্রথমেই
শুনিয়ে দিয়েছেন, বই পড়া নিতান্তই মিথ্যা
হয়ে যাবে যদি টই পড়া না হয়। তাঁর এমনটি মনে হওয়ার কারণ, টই-এর
মধ্যে রয়েছে জ্ঞানের পূর্ণতা অর্জনের নানা মাত্রা। বই দেয় সীমিত জ্ঞান, আর টই দেয় বিরাট ব্যাপ্ত জ্ঞানের সাম্রাজ্য। প্রকৃতির যে অপরূপ রূপ রয়েছে
তাকে উপলব্ধি করতে হলে টই-এর দারস্থ হতে হয়।
রোদে ঝলমল গাছের ডালপালায়, আকাশ ছোঁয়া দিগন্ত
বিস্তৃত মাঠের খাতায়, অন্ধকার আকাশের বুক চিরে প্রকাশ হওয়া
বিদ্যুতের মধ্যে, ছোট্ট পাখির রং-বেরঙের পাখায়, শিশুর মিষ্টি হাসির মধ্যে এই টই-এর অস্তিত্ব রয়েছে। কবির মনে হয়েছে টই না
হলে বই-এর কোনো প্রয়োজন থাকত না।
Editing By:- Lipi Medhi