Chapter 6

একুশের কবিতা
  
১. 'একুশের কবিতা' রচনার প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

উত্তর: ১৯৪৭-এ স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু দেশ ভাগ হয়েছিল। হিন্দুস্থান ও পাকিস্তান- দুটি সমান্তরাল বিভাজন ঘটেছিল। এই পাকিস্তানকে আবার ভৌগোলিক সীমারেখা অনুসারে দুটি বর্গে ভাগ করা হয়েছিল-পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিম-পাকিস্তান।

পূর্ব-পাকিস্তানে বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালানো হয়। লাঞ্ছিত হয় বাংলা ভাষা। প্রতিবাদে গর্জে ওঠে সহস্রটি প্রাণ। শুরু হয় মিটিং-মিছিল-প্রতিবাদী আন্দোলন।
১৯৫২-এর ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল করেন। সেই মিছিলের উপর খাজা নাজিমুদ্দিন সরকারের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান যাঁরা, তাঁরা হলেন-

১. আব্দুল সালাম

২. রফিক-উদ্দিন আহমেদ

৩. সফিউর রহমান

৪. আব্দুল বরকত

৫. আব্দুল জব্বর

এই মৃত্যুর প্রতিবাদে সমস্ত দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। পশ্চিম- পাকিস্তান বাধ্য হয় পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলনকে মেনে নিতে। ১৯৭১-এ স্বাধীন জন প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের মধ্যে দিয়ে

২. কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তর: ১৯৪৭-এ স্বাধীনতা পাবার পর তৎকালীন ভারতবর্ষকে দুটি দেশে ভাগ করে দেওয়া হয়-ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান দেশটাকে গড়া হয় ভারতবর্ষের পূর্ব ও পশ্চিমদিকের অংশ নিয়ে। যাদের মধ্যে ভৌগোলিক কিংবা ভাষা-সংস্কৃতিগত কোনো যোগাযোগ ছিল না। এই দেশের মূল শাসনের ভার পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর।

ফলস্বরূপ পূর্ব পাকিস্তানেও বাংলার বদলে উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে চালানোর চেষ্টা চলে। মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতায় উত্তাল হয়ে ওঠে পূর্ববঙ্গা তথা পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে খাজা নাজিমুদ্দিন সরকারের পুলিশ গুলি চালায়। মারা যান আব্দুল সালাম, রফিক উদ্দিন আহমেদ, সফিউর রহমান, আবদুল বরকত এবং আব্দুল জব্বার। এঁরাই প্রথম ভাষা শহিদ।

এঁদের মৃত্যুতে পরবর্তী সময়ে গণআন্দোলন তুঙ্গে ওঠে এবং ১৯৭১-এ স্বাধীন জন প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের মধ্যে দিয়ে এই আন্দোলন সমাপ্ত হয়। কবি আশরাফ সিদ্দিকী সেই ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে এবং ওই দিনে শহিদদের স্মরণ করে উক্ত কবিতাটি রচনা করেন। তাই 'একুশের কবিতা' নামকরণের মধ্যে দিয়ে কবি যেন অঞ্জলি দিয়েছেন। তাই নামকরণও সম্পূর্ণরূপে সার্থকতা লাভ করেছে।

Very Short Answer Question

১.তোমার জানা দুটি পৃথক লোকসংগীতের ধারার নাম লেখো।

উত্তর:
বাউল, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, তরজাগান, কবিগান।

২. 'ইতিহাস থমকে দাঁড়িয়ে লিখে নিল সব' 'সব' বলতে এখানে কী কী বোঝান হয়েছে?

উত্তর: বিন্নি ধানের মাঠের পাশে কয়েকটা গুলির শব্দ এবং সেই সঙ্গে কয়েকটি পাখির অর্থাৎ মাতৃভাষা প্রেমিকদের গান শেষ না হতেই ঝরে মাটিতে পড়ে যাওয়া। সেই শোকে কালবৈশাখীর ঝড় ওঠা ও মাঠ, হাট, ঘাট, বন, মন কাঁপা-এই সমস্ত কিছুকেই 'সব' বলা হয়েছে, যা ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে।

৩. 'তাই তো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর'- 'সহস্র পাখি' কাদের বলা হয়েছে?

উত্তর: তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান যখন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের উপরে জোর করে উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেয়, তখন বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ একযোগে প্রতিবাদ করেছিল। পরবর্তীকালে বাংলা ভাষা যখন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পায়, তখন হাজার হাজার মানুষ আনন্দে মুখরিত হয়েছিল। আনন্দে আপ্লুত এই মানুষদের 'সহস্র পাখি' বলা হয়েছে।

৩. নিম্নরেখ অংশগুলির কারকবিভক্তি নির্ণয় করো।

১. পাখি সব করে রব।

উত্তর: কর্তৃকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

২. কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল।

উত্তর:
অধিকরণকারকে '' বিভক্তি।

৩. তিনি বাংলা ভাষায় কথা বলতে বড়ো ভালোবাসেন।

উত্তর: কর্মকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।

৪.রাখাল গোরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।

উত্তর:
কর্তৃকারকে 'শূন্য' বিভক্তি।
 
৪. ব্যাখ্যা করো।

১. 'কয়েকটি পাখির গান শেষ না হতেই তারা ঝরে গেলো পড়ে
গেল মাটিতে'

উত্তর: উৎস: আশরাফ সিদ্দিকীর লেখা 'একুশের কবিতা' থেকে উদ্ধৃত
পঙ্ক্তিটি নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ: কবি মাতৃভাষার রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে উক্ত পঙ্ক্তিটি যোজনা করেছেন।

ব্যাখ্যা: ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে খাজা নাজিমুদ্দিন সরকারের পুলিশ গুলি চালায়। মারা যান আব্দুল সালাম, রফিকউদ্দিন আহমেদ, সফিউর রহমান, আব্দুল বরকত এবং আব্দুল জব্বার এর মতো কত পাখি। উপরিউক্ত পঙ্ক্তিতে সেই ঘটনার বর্ণনা আছে।.

২. 'সেই শোকে কালবৈশাখীর ঝড় উঠলো আকাশে।'

উত্তর:
আশরাফ সিদ্দিকীর লেখা 'একুশের কবিতা' থেকে আলোচ্য
অংশটি গৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গ: পাখির কলগান অর্থাৎ মাতৃভাষা প্রেমিকদের গান থেমে যাওয়া
এবং মৃত্যু ঘটার শোক প্রকাশ করতে গিয়ে উদ্ধৃতিটি উল্লেখ করেছেন
কবি।

ব্যাখ্যা: ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের অকথ্য অত্যাচার করে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। তারই শোক প্রকাশ করতে পাখিকে গুলিবিদ্ধকরে মারলে যে অবস্থা হয় ওই আন্দোলনের শরিকদেরও সেভাবে হত্যা করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীকালে বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা রূপে স্বীকৃতি দিলে সহস্র পাখির মতো সহজ বাংলার জনগণ মুক্ত কণ্ঠে কলকাকলিতে মেতে ওঠেন। তাই কবিতায় 'পাখি' শব্দের ব্যবহার যথাযথ হয়েছে।
 
 
    👉Download Books PDF

উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে সদস্যপদ প্রয়োজন।
 
 Editing By:- Lipi Medhi