৭.অধ্য়ায়
জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি
👉Paid Answer (For Membership User)
১। শূন্যস্থান পূরণ করো।
(ক) (টালি এবং ইট/সিমেন্ট এবং বালি/ শ্বেতপাথর) ব্যবহার করে বাংলায় সুলতানি এবং মুঘল আমলে সাধারণ লোকের বাড়ি বানানো হত।
উত্তর: টালি এবং ইট।
(খ) কবীরের দুই পংক্তির কবিতাগুলিকে বলা হয় (ভজন/কথকতা/দোহা)
উত্তর: দোহা।
(গ) সুফিরা গুরুকে মনে করত। (পীর/মুরিদ/বে-শরা)।
উত্তর: পীর।
(ঘ) কলকাতা/নবদ্বীপ/মুর্শিদাবাদ) ছিল চৈতন্য আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র।
উত্তর: নবদ্বীপ।
(৩) সাধিকা। (নানক/কবীর/মীরাবাঈ) ছিলেন শ্রীকৃল্প বা গিরিধারীর
উত্তর: মীরাবাঈ।
(চ) দীন-ই-ইলাহির বৈশিষ্ট্য ছিল মুঘল সম্রাট এবং তাঁর অভিজাতদের মধ্যে (গুরু-শিষ্যের/ মালিক-শ্রমিকের/রাজা-প্রজার)
উত্তর: গুরু-শিষ্যের।
(ছ) শ্বেতপাথরে রত্ন বসিয়ে কারুকার্য করাকে বলে (চাহারবাগ/পিয়েত্রা দুরা/টেরাকোটা)
উত্তর: পিয়েত্রা দুরা
(জ) মহাভারতের ফারসি অনুবাদের নাম তুতিনামা/রজমনামা) (হমজানামা/
উত্তর: রজমনামা।
(ঝ) (দসবন্ত/মির সঈদ আলি/আবদুস সামাদ) ছিলেন 'শিরিনকলম' নামে। পরিচিত
উত্তর: আবদুস সামাদ।
(ঞ) জৌনপুরি রাগ তৈরি করেন। হোসেন শাহ শরকি/ইব্রাহিম শাহ শরাকি) (বৈজু বাওরা/
উত্তর: হোসেন শাহ শরকি
(ট) 'শ্রীকৃয় বিজয়' কাব্যের লেখকের নাম দাস/কৃত্তিবাস ওঝা/মালাধর বসু) (কাশীরাম
উত্তর: মালাধর বসু।
(ঠ) 'পারসিক চক্র' কাজে লাগানো হত জন্য/কামানের গোলা ছোঁড়ার জন্য/বাগান বানানোর জন্য) (জল তে
উত্তর: জল তোলার জন্য।
৩। সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:
(ক) সুলতানি ও মুঘল যুগে ভারতে কোন্-কোন ফল, সবজি এবং শষ্যের চাষ সবচেয়ে বেশি হত?
উত্তর: সুলতানি ও মুঘল যুগে বিভিন্ন ধরনের ফল, সব্জি এবং শস্যের চাষ হত।
(i) ফল: আম, আঙুর, খেজুর, জাম, কলা, কাঁঠাল, নারকেল
প্রভৃতি ফলের চাষ হত।
(ii) সবজি: বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ডুমুর, বিভিন্ন ধরনের শাক প্রভৃতি সবজির চাষ হত।
(iii) শস্য: ধান, গম, যব, বিভিন্ন ধরনের ডাল, সরষে, তিল প্রভৃতি খাদ্যশস্য চাষ করা হত।
(খ) মধ্যযুগের ভারতে ভক্তি সাধক-সাধিকা কারা ছিলেন? উত্তর : মধ্যযুগের ভারতে এক শ্রেণির সাধক-সাধিকারা ভগবানের প্রতি
ভক্তির কথা প্রচার করেছিলেন, তাদের ভক্তিবাদী সাধক-সাধিকা বলা হয়।
ভক্তিবাদী সাধক: রামানন্দ, কবীর, নানক, শ্রীচৈতন্য প্রমুখ। ভক্তিবাদী সাধিকা: মীরাবাঈ।
(৫) সিলসিলা কাকে বলে? চিশতি সুফিদের জীবনযাপন কেমন ছিল?
উত্তর সুফি সাধকগণ বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত ছিলেন। সুফি সাধকদের গোষ্ঠীকে 'সিলসিলা' বলা হত। ভারতে দুটি সুফি গোষ্ঠী ছিল প্রভাবশালী (1) চিশতি (ii) সুহরাবর্দি।
• চিশতি সিলসিলার সুফিদের জীবনযাপন ছিল খোলামেলা। তাঁরা ধর্ম, অর্থ, ক্ষমতার মাপকাঠিতে মানুষকে বিচার করতেন না। তাঁদের কাছে সব মানুষ ছিল সমান। তাঁরা রাজনীতি এবং রাজদরবার থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতেন। তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে, রাজ্য পরিচালনার কাজে জড়িয়ে পড়লে ঈশ্বরসাধনা সম্ভব নয়। ঈশ্বরের আরাধনা করাই ছিল তাঁদের মূল আদর্শ।
(ঘ) দীন-ই-ইলাহির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কেমন ছিল?
উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর 'দীন-ই-ইলাহি' মতাদর্শ চালু করেন। দীন-ই-ইলাহি গ্রহণে শুরুতে শপথ গ্রহণ করতে হত।
• শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান :
• যিনি দীন-ই-ইলাহি ধর্ম গ্রহণ করতেন, তিনি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর জীবন (জান), সম্পত্তি (মাল), ধর্ম (দীন), সম্মান (নামুস), বিসর্জন (কুরবান) দেওয়ার' শপথ নিতেন।
• শিষ্য (মুরিদ) যেমন তার সুফি গুরুর (পির) পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করে, তাঁকেও তেমনি বাদশাহের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করতে হতো।
• অনুষ্ঠান শেষ হবার পর বাদশাহ তাঁকে দিতেন একটি নতুন পাগড়ি, সূর্যের একটি পদক ও পাগড়ির সামনে লাগাবার জন্য বাদশাহের নিজের ছোটো একটি ছবি।
(৩) স্থাপত্য হিসেবে আলাই দরওয়াজার বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর • সুলতান আলাউদ্দিন খলজি কুতুবমিনারের চত্বরে যে দরওয়াজা নির্মাণ করেছিলেন তা 'আলাই দরওয়াজা' নামে পরিচিত।
• আলাই দরওয়াজার বৈশিষ্ট্য:
(1) এটি ছিল ইন্দো-ইসলামীয় স্থাপত্য শিল্পের অসাধারণ নমুনা।
(ii) এটি লাল বেলে পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে।
(iii) দরওয়াজার গায়ে আল্লাহ-র কথার পরিবর্তে সুলতানের প্রশংসা খোদাই করা হয়েছে।
(iv) এটি কুতুবমিনারের চত্বরেই নির্মিত হয়েছে।
(চ) ক্যালিগ্রাফি এবং মিনিয়েচার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর ক্যালিগ্রাফি (Calligraphy): সুন্দর হস্তলিপি বিদ্যা বা হস্তলিপি শিল্পকে ইংরেজিতে বলে ক্যালিগ্রাফি (Calligraphy)। সুলতানি ও মুঘল আমলে এই শিল্পের খুব চর্চা হত। তখনকার দিনে ছাপখানা ছিল না তাই বইগুলো হাতে লেখা হত। সেই বইগুলোতে এই শিল্পের নমুনা দেখা যায়।
• মিনিয়েচার (Miniature): আকার এবং আয়তনে ছোটো ছবিগুলিকে বলা হয় 'মিনিয়েচার' (Sliniature)। 'মিনিয়েচার' কথাটা ইংরাজি। বাংলায় একে বলা হয় 'অণুচিত্র'। এই ধরনের ছবি আঁকা হত কাগজে বা বইয়ের অলংকরণ হিসেবে।
মুঘল আমলের ক্যালিগ্রাফি
(ছ)শিবায়ন কী? এর থেকে বাংলার কৃষকের জীবনের কী পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর: শিবায়ন: হিন্দুদের দেবতা শিবকে নিয়ে লেখা সাহিত্যগুলি 'শিবায়ন' নামে পরিচিত। পুরাণ বা ধর্মগ্রন্থগুলিতে শিবকে নিয়ে যে কাহিনিগুলি লেখা হয়েছে তার সঙ্গে শিব-দুর্গার ঘর-সংসারের কথা জুড়ে 'শিবায়ন' কাব্যগুলি রচিত হয়েছে।
• শিবায়নে বাংলার কৃষকদের জীবনের পরিচয়: শিবায়নের লেখায় দেখা যায় শিব কৃষক হয়ে চাষবাস করে রোজগারের চেষ্টা করছেন আর দুর্গা কৃষক রমণী হিসেবে শিবকে নানা কাজে সাহায্য করছেন। বাংলার গরিব কৃষক পরিবার যেন শিব-দুর্গার পরিবার হয়ে গেছে।
(জ)কাগজ কোথায় আবিষ্কার হয়েছিল? মধ্যযুগের ভারতে কাগজের ব্যবহার কেমন ছিল তা লেখো।
উত্তর: খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে চিনে প্রথম কাগজ আবিষ্কৃত হয়।
• খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ভারতে কাগজ তৈরির প্রবৃদি চিন থেকে প্রথম নিয়ে আসে মধ্য এশিয়ার মোঙ্গলরা। সময়ের মধ্যে ভারতে কাগজের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে। ৩ ফলে লেখাপড়ার কাজ সহজ হয়। খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতায় ভারতে কাগজ নাকি এতটাই সস্তা ছিল যে, ময়রা মিষ্টি। জন্য কাগজ ব্যবহার করত।