অধ্যায় ৮ 

 মুঘল সাম্রাজ্যের সংকট

---------------------------------------------------------------------------------


    👉Paid Answer (For Membership User)


১। নীচের নামগুলির মধ্যে কোন্টি বাকিগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও:


(ক) পুনে, কোঙ্কাণ, আগ্রা, বিজাপুর


উত্তরের পক্ষে যুক্তি: আগ্রা ছাড়া বাকি তিনটি অঞ্চল মারাঠাদের বাসস্থান ছিল।


(খ) বান্দা বাহাদুর, আফজল খান, শায়েস্তা খান, মুয়াজ্জম


উত্তরের পক্ষে যুক্তি: বান্দা বাহাদুর বাদে বাকি তিনজনকে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গদেব শিবাজীকে দমন করার জন্য পাঠিয়েছিলেন।


(গ) অষ্টপ্রধান, বর্গি, মাবলে, খালসা


উত্তরের পক্ষে যুক্তি: খালসা ছাড়া বাকি তিনটি হল শিবাজীর অধীনস্থ কর্মচারী


(ঘ) রামদাস, তেগবাহাদুর, জয়সিংহ, হরগোবিন্দ


উত্তরের পক্ষে যুক্তি: জয়সিংহ বাদে বাকি তিনজন হলেন শিখ ধর্মগুরু


(ঙ) কেশ, কৃপাণ, কলম, কথা


উত্তরের পক্ষে যুক্তি: কলম ছাড়া বাকি তিনটি শিখদের পঞ্চ 'ক'-এর অন্তর্ভুক্ত।




সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:


(কে) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে কী কী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছিল?


উত্তর: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।


• অর্থনৈতিক পরিবর্তন:


(i) ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্য বিশাল আকার ধারণ


করে। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ অনেক বেড়ে যায়।


(ii) মনসব নিয়ে অভিজাতদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছিল।


(iii) এই সময়ে জাঠ এবং সৎনামি বিদ্রোহ কৃষিব্যবস্থার সংকটকে আরও তীব্র করে তোলে।


• রাজনৈতিক পরিবর্তন:


(i) কেন্দ্রীভূত মুঘল শক্তির দুর্বলতার সুযোগে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে মারাঠাদের উত্থান ঘটে।


(ii) শিখ শক্তির সঙ্গ মুঘলদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছিল।


(2) কবে, কাদের মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল? এই সন্ধির ফল কী হয়েছিল?


উত্তর: ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে মুঘলদের তরফে রাজা জয়সিংহ এবং মারাঠা নেতা শিবাজির মধ্যে পুরন্দরের সন্ধি হয়েছিল।


• এই সন্ধির ফলে-


(1) শিবাজি মুঘলদের ২৩ টি দুর্গ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।


(ii) শিবাজি মুঘল দরবারে গেলে অপমানিত ও বন্দি হন। তাঁকে আগ্রা দুর্গে বন্দি করে রাখা হয়। সেখান থেকে পালিয়ে এসে শিবাজি-পুনরায় দাক্ষিণাত্যের মুঘলদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন।


(৩) জাঠদের সঙ্গে মুঘলদের সংঘাত কেন বেধেছিল?


উত্তর: জাঠরা তাদের বাসভূমি দিল্লি-আগ্রা অঞ্চলে বসবাস করত। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের আমলে রাজস্ব দেওয়া নিয়ে তাদের সঙ্গে মুঘলদের সংঘাত বাধে। জাঠরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। এই বিদ্রোহ ছিল মুঘল সাম্রাজ্য পতনের অন্যতম কারণ।


(ঘ) শিবাজির সঙ্গে মুঘলদের দ্বন্দ্বের কারণ কী?


উত্তর: ভূমিকা: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে শিবাজি মারাঠাদের ঐক্যবদ্ধ করেন। এই সময় মুঘল সম্রাট ছিলেন ঔরঙ্গজেব। বিভিন্ন কারনে শিবাজির সঙ্গে মুঘলদের দ্বন্দু শুরু হয়েছিল। •


শিবাজির সঙ্গে মুঘলদের দ্বন্দ্বের কারণ :


• শিবাজি বিজাপুরের সুলতানের অসুস্থতার সুযোগে বিজাপুরের বেশ কিছু জমিদারকে নিজের দলে নিয়ে আসেন। বিজাপুরের সুলতান শিবাজিকে দমন করতে আফজল খানকে পাঠান। আফজল খান শিবাজিকে হত্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিবাজি বাঘনখ দিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। শিবাজির এই ক্ষমতাবৃদ্ধি ঔরঙ্গজেবের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না।


• শিবাজি দু-বার বন্দরনগরী সুরাট আক্রমণ করে লুঠপাট করেন।


• শিবাজিকে দমন করতে ঔরঙ্গজেব শায়েস্তা খানকে পাঠান, কিন্তু শিবাজি তাঁকেও পরাজিত করেন।


• ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিবাজি মুঘলদের সঙ্গে পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন। শিবাজি মুঘল দরবারে এলে তাঁকে বন্দি করা হয়। ফলে আবার তাঁদের মধ্যে দ্বন্দু শুরু হয়।


(ঙ) বিজাপুর ও গোলকোন্ডা জয়ের ফলে মুঘলদের কী সুবিধা হয়েছিল?


উত্তর: ভূমিকা: মুঘলসম্রাট ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকুন্ডা জয় করেন। এর ফলে মুঘলদের অনেক সুবিধা হয়েছিল।


(i) বিজাপুর ও গোলকোন্ডা জয়ের পর দাক্ষিণাত্যের বিশাল অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।


(ii) বিজাপুর ও গোলকোন্ডা অঞ্চলের সব থেকে ভালো জমিগুলি ঔরঙ্গজেব খাস জমি বা খালিসা হিসাবে রেখেছিলেন। এই জমি থেকে যে আয় হতো তা সরাসরি কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা হতো।


বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:


(ক) মুঘলদের বিরুদ্ধে শিখরা কীভাবে নিজেদের সংগঠিত করেছিল।


উত্তরটা ভূমিকা: শিখ ধর্ম প্রবর্তন করেন গুরু নানক। শিখদের


সঙ্গে জাহাঙ্গির এবং শাহজাহানের আমলে মুঘলদের সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাতের চরিত্র ছিল রাজনৈতিক। তাই শিখরা মুঘলদের বিরুদ্ধে নিজেদের সংগঠিত করে।


• মিখদের সংগঠিত হওয়ার পটভূমি:


• শিখরা তাদের গুরুর প্রতি অনুগত ছিল। তাই নিয়ে মুঘল রাষ্ট্রের সঙ্গে শিখদের সংঘাত বাঁধে।


• গুরু অর্জুনের ছেলে গুরু হরগোবিন্দ ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা বোঝানোর জন্য দুটি তলোয়ার ব্যবহার করতেন। ফলে এক স্বাধীন শক্তি হিসেবে শিখদের উত্থান মুঘল সম্রাটের পক্ষে


মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি।


• নবম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় নীতির বিরোধিতা করায় মুঘলরা তাঁকে হত্যা করেন। ফলে শিখদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।


• খালসা বাহিনীর গঠন: ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে দশম শিখ গুরু গোবিন্দ সিংহ খালসা নামক একটি সংগঠন তৈরি করে শিখদের সংঘবদ্ধ করেন।


• খালসার কাজ: খালসার প্রধান কাজ ছিল শিখদের নিরাপদে রাখা।


• সংগঠিত শিখদের কর্তব্য গুরু গোবিন্দ সিংহ শিখদের পালনীয় কর্তব্য নির্দিষ্ট করে দেন। তাঁর নির্দেশ অনুসারে-


(1) সামরিক প্রশিক্ষণ শিখদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ ছিল।


(ii) গুরু গোবিন্দ সিংহ শিখদের 'পন্থ' বা পথ ঠিক করে দেন। গুরু তাদের পাঁচটি জিনিস সবসময় কাছে রাখতে বলেন। এগুলি হলো-কেশ, কঙ্খা (চিরুনি), কচ্ছা, কৃপাণ এবং কড়া। এই পাঁচটি জিনিসের নামই 'ক' দিয়ে শুরু।


(iii) খালসাপন্থী শিখদের পদবি 'সিংহ' রাখা হয়। শিখদের সংগঠিত আন্দোলনের ফলে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে মুঘলদের নিয়ন্ত্রণ অনেক শিথিল হয়ে যায়।

আদায়ের জন্য মুষল মনসবদাররা মারাঠা সর্দারদের সাহার নিত। তার ফলে ঐ সব অঞ্চলে মুঘলদের নিয়ন্ত্রণ।। শিথিল হয়ে গিয়েছিল।


(iii) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: জিনিসপত্রের খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে প বেড়ে গিয়েছিল। এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে অভিজাতরা ৮৭। থেকে তাঁদের আয় বাড়াতে চেয়েছিলেন। কৃষকদের বেশি রাজস্ব দেওয়ার জন্য চাপ ও বাড়িয়েছিলেন।


(iv) কৃষক বিদ্রোহ: একদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আর একদিকে রাজ্জ দেওয়ার চাপ-এর ফালে কৃষকরা ক্ষুদ্ধ হয় এবং বিদ্রোহ যোদ করে। অনেক সময় জমিদাররাও কৃষকদের মদত দিত।


• কৃষি সংকটের কারণ: মুঘল যুগের শেষ দিকে কৃষি সংকটের ফলে-


(1) কৃষকরা বিভিন্ন জায়গায় বিদ্রোহ করতে শুরু করে। আবার কোনো কোনো অঞ্চলের কৃষকরা রাজস্ব দিতে না পেরে গ্রাম। ছেড়ে পালিয়ে যেত। তাদের জমিতে চাষ হতো না। চাষ না হলে রাজস্ব আদায় করা যেত না।


(ii) এর ফলে জায়গিরদারি ও মনসবদারি সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, বা মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ডেকে এনেছিল।


(গ) মুঘল যুগের শেষ দিকে জায়গির দারি ও মনসবদারি ব্যবস্থায় কেন সংকট তৈরি হয়েছিল? মুঘল সাম্রাজ্যের উপর এই সংকটের কী প্রভাব পড়েছিল?


উত্তর: ভূমিকা: মুঘল আমলে জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থা ছিল শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি। মুঘল আমলে মনসবদাররা নগদ বেতন এবং জায়গিরদাররা জায়গির বা জমি পেতেন। শাহজাহানের সময় থেকে জায়গিরদারি ও মনসবদারি ব্যবস্থার


সমস্যা দেখা দেয়।


• সংকটের কারণ:


• মনসবদাররা তাদের পদ অনুযায়ী যা বেতন পাওয়ার কথা, তা পেত না। তার ফলে তাদের যতজন ঘোড় সওয়ারের দেখাশোনা করার কথা, ততজনের দেখাশোনা তারা করতে পারত না।


• দাক্ষিণাত্যে যুদ্ধের সময় মনসবদাররা মারাঠা সর্দারদের সাহায্যে


রাজস্ব আদায় করত। তার ফলে সঠিক রাজস্ব তারা পেত না।


• ঔরঙ্গজেব ভালো জমিগুলিকে খাস জমি বা খালিসা হিসাবে রেখে দেওয়ার জন্য জায়গিরদাররা ভালো জমি পেত না।


• সংকটের প্রভাব জায়গিরদারি সংকটের ফলে-


(i) মুঘল সাম্রাজ্যোর আর্থিক অবনতি ঘটে।


(ii) মনসবদারদের বেতন কমে যাওয়ায় ফলে তারা সেনাবাহিনী এবং ঘোড়সওয়ারদের সঠিকভাবে দেখাশোনা করতে পারত না।


(iii) ভালো জায়গির লাভের জন্য জায়গিরদারদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দু শুরু হয়ে যায়, যা মুঘল সাম্রাজ্যের পতনকে অনিবার্য করে তোলে।


কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে)


ধরো তুমি একজন মারাঠা সর্দার। তোমার সঙ্গে একজন জাঠ কৃষকের দেখা হয়েছে। মুঘল শাসনের নানা দিক নিয়ে ওই জাঠ কৃষকের সঙ্গে তোমার একটি কথোপকথন লেখো।


উত্তর: স্থান: দাক্ষিণাত্য


• সময়কাল: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকাল।


• মারাঠা সর্দার: এই যে ভাই শুনছ, তুমি কি এখানেই বসবাস করো?


• জাঠ কৃষক: হ্যাঁ, আমরা দিল্লি-আগ্রা অঞ্চলে বসবাসকারী জাঠকৃষক সম্প্রদায়। আপনি কি দিল্লিতে নতুন এসেছেন?


• মারাঠা সর্দার হ্যাঁ, আমি দাক্ষিণাত্যের বিজাপুরের একজন মারাঠা সর্দার। তোমাদের এখানকার পরিস্থিতি কেমন?


• জাঠ সর্দার: আমাদের এখানকার পরিস্থিতি ভালো নয়। মুঘল সম্রাটরা যেভাবে রাজস্বের হার বৃদ্ধি করেছে, তা আমাদের পক্ষে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে।


• মারাঠা সর্দার: আমরা শুনেছি মুঘল শাসকরা স্বৈরাচারী হলেও প্রজা কল্যাণকামী। সম্রাট নিজেই শাসন, বিচার, সামরিক বিভাগ তথা সমস্ত বিভাগের প্রধান।


• জাঠ কৃষক: হ্যাঁ, তা ঠিক।


• মারাঠা সর্দার: মুঘল সম্রাটরা তো নিজেদেরকে প্রজাদের অভিভাবক ও পালক বলে মনে করেন এবং মুঘল শাসনের মূল লক্ষ্যই হলো জনকল্যাণ।


• জাঠ কৃষক: মুঘল সম্রাট আকবরের সময় পর্যন্ত এটা ছিল। জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের আমল থেকেই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। ঔরঙ্গজেবের আমলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত আমরা স্থানীয় এক জমিদারের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহ করি। আমরা একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম।


• মারাঠা সর্দার: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সময় থেকেই তো আমাদের নেতা শিবাজির সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়। ঔরঙ্গজেব শিবাজিকে দমন করার চেষ্টা করলেও শেষপর্যন্ত শিবাজি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। আমরা এখন শিবাজির রাজ্যে খুব ভালো আছি।


(খ) ধরো তুমি সম্রাট ঔরঙ্গজেবের দরবারের একজন ঐতিহাসিক। তুমি মারাঠা, শিখ, জাঠ ও সৎনামিদের লড়াইয়ের ইতিহাস লিখছ। কীভাবে তুমি তোমার লেখায় এই লড়াইগুলির ব্যাখ্যা

করবে?


উত্তর: আমি মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের দরবারের একজন ঐতিহাসিক। তাঁর আমলে মারাঠাদের উত্থান হয়। শিখরা ধর্মীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। জাঠ ও সৎনামি কৃষকরা বিদ্রোহ করে। ঔরঙ্গজেব কিভাবে দক্ষতার সঙ্গে এই বিদ্রোহগুলি দমন করার চেষ্টা করেন, সেই সম্বন্ধে আমি আমার গ্রন্থে লিখব।


(1) মারাঠাদের লড়াই: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে দাক্ষিণাত্যে শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠাদের উত্থান হয়। শিবাজির নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনী অন্যায়ভাবে মুঘল অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে আক্রমণ চালায় ও সেগুলি দখল করে। ঔরঙ্গজেব বাধ্য হয়ে শিবাজিকে বন্দি করেন এবং মারাঠাদের কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রতিরোধ করেন।


(ii) শিখদের লড়াই: শিখদের সঙ্গে মুঘলদের লড়াই ছিল রাজনৈতিক। শিখরা তাদের গুরুর প্রতি অনুগত ছিল। তাই নিয়ে মুঘলদের সঙ্গে শিখদের লড়াই শুরু হয়। শিখ কৃষকরা মুঘল শাসকদের কর দিত না। শিখ গুরু তেগবাহাদুর ও গোবিন্দ সিংহ শিখ পন্থ তৈরির নামে জোর করে শিখদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন। তেগবাহাদুর ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় নীতির বিরোধিতা করেন। শুধু তাই নয়, তেগবাহাদুর এক পাঠানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাঞ্জাবে মুঘল শাসনের বিরোধিতা করেন। গুরু গোবিন্দ সিংহ খালসা বাহিনী গঠন করে মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। তাই বাধ্য হয়ে ঔরঙ্গজেব শিখ বিরোধী নীতি গ্রহণ করেন।


(iii) জাঠদের লড়াই: দিল্লি-আগ্রা অঞ্চলের জাঠরা কৃষিজীবী হলেও মুঘল সরকারকে তারা কোনো কর দিত না। এদের কাছ থেকে মুঘল কর্মচারীরা কর চাইতে গেলে এরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। বিদ্রোহের নামে ব্যাপক লুঠতরাজ চালায়। মুঘল রাজ্যের মধ্যে থেকেও এরা অন্যায়ভাবে ভরতপুরে এক স্বাধীন রাজ্য গড়ে তোলে।


(iv) সৎনামিদের লড়াই: বিভিন্ন কারণে সৎনামি কৃষকরা মুঘল কর্মচারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে সৎনামিরা কর আদায় করতে শুরু করে। তারা একটি আলাদা থানাও তৈরি করে। শেষে বাধ্য হয়ে ঔরঙ্গজেব সৎনামিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালান এবং সৎনামিদের পরাজিত করেন।


(গ) ধরো তুমি একজন অভিজাত জায়গিরদার। খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকের শেষ দিকে তোমার সঙ্গে তোমার জমির কৃষকদের সম্পর্ক নিয়ে একটি সংলাপ লেখো।


উত্তর: একজন অভিজাত জায়গিরদার ও কৃষকের সংলাপ: স্থান: দাক্ষিণাত্য।


• সময়কাল: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকের শেষদিক।


• কৃষক: হুজুর, আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।


• জায়গিরদার: তোমাদের চাষবাস কেমন হচ্ছে জানার জন্য ডেকে পাঠিয়েছি।


• কৃষক: প্রতি বছর জমিতে ভালো ফসল উৎপন্ন হচ্ছিল। এবছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ার জন্য বেশি ফসল উৎপন্ন হয়নি।


• জায়গিরদার: জলসেচের মাধ্যমে জমিতে জল দেওয়ায় ব্যবস্থা করোনি কেন?


• কৃষক: হুজুর, আমাদের এলাকায় জলসেচের কোনো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টির জলই আমাদের ভরসা।


• জমিদার: কিন্তু তোমার ওপর যে রাজস্বের হার নির্ধারণ করা আছে তা তোমাকে তো দিতে হবে।


• কৃষক: হুজুর, এ বছরের মতো রাজস্ব কিছুটা মকুব করুন।


অঞ্চলগুলিতে আক্রমণ চালায় ও সেগুলি দখল করে। ঔরঙ্গজেব বাধ্য হয়ে শিবাজিকে বন্দি করেন এবং মারাঠাদের কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রতিরোধ করেন।


(ii) শিখদের লড়াই: শিখদের সঙ্গে মুঘলদের লড়াই ছিল রাজনৈতিক। শিখরা তাদের গুরুর প্রতি অনুগত ছিল। তাই নিয়ে মুঘলদের সঙ্গে শিখদের লড়াই শুরু হয়। শিখ কৃষকরা মুঘল শাসকদের কর দিত না। শিখ গুরু তেগবাহাদুর ও গোবিন্দ সিংহ শিখ পন্থ তৈরির নামে জোর করে শিখদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন। তেগবাহাদুর ঔরঙ্গজেবের ধর্মীয় নীতির বিরোধিতা করেন। শুধু তাই নয়, তেগবাহাদুর এক পাঠানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাঞ্জাবে মুঘল শাসনের বিরোধিতা করেন। গুরু গোবিন্দ সিংহ খালসা বাহিনী গঠন করে মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। তাই বাধ্য হয়ে ঔরঙ্গজেব শিখ বিরোধী নীতি গ্রহণ করেন।


(iii) জাঠদের লড়াই: দিল্লি-আগ্রা অঞ্চলের জাঠরা কৃষিজীবী হলেও মুঘল সরকারকে তারা কোনো কর দিত না। এদের কাছ থেকে মুঘল কর্মচারীরা কর চাইতে গেলে এরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। বিদ্রোহের নামে ব্যাপক লুঠতরাজ চালায়। মুঘল রাজ্যের মধ্যে থেকেও এরা অন্যায়ভাবে ভরতপুরে এক স্বাধীন রাজ্য গড়ে তোলে।


(iv) সৎনামিদের লড়াই: বিভিন্ন কারণে সৎনামি কৃষকরা মুঘল কর্মচারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে সৎনামিরা কর আদায় করতে শুরু করে। তারা একটি আলাদা থানাও তৈরি করে। শেষে বাধ্য হয়ে ঔরঙ্গজেব সৎনামিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালান এবং সৎনামিদের পরাজিত করেন।



সঠিক উত্তরটি বেছে লেখো (MCQ):



১.১ মারাঠা শক্তির উত্থান হয়-


(ক) আকবরের শাসনকালে

(খ) জাহাঙ্গিরের শাসনকালে

(গ) শাহজাহানের শাসনকালে

ঘ) ঔরলাজেবের শাসনকালে


উত্তর: ঘ ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে।


১.২ শিবাজি বাঘনখ দিয়ে হত্যা করেন-


(ক) শায়েস্তা খানকে

খ) মুয়াজ্জমকে

(গ) আফজল খানকে

(ঘ) রাজা জয়সিংহকে


উত্তর: গ আফজল খানকে।


১.৩ শিবাজির শিক্ষক ছিলেন-


(ক) দাদাজি কোন্ডদেব

খ) বৈরাম খান

(গ) শাহজি ভোঁসলে

(ঘ) জিজাবাঈ


উত্তর: ক দাদাজি কোন্ডদেব।


১.৪ পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল-


ক) ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে

(খ) ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে

(গ) ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে

(ঘ) ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে


উত্তর: (গ) ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে।


১.৫ পুরন্দরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল শিবাজির সঙ্গে-


ক) বাবরের

(খ) আকবরের

(গ) ঔরঙ্গজেবের

(ঘ) জয়সিংহ-এর


উত্তর: ঘ জয়সিংহ-এর।



Editing By:- Lipi Medhi