Chapter 13 

দাঁড়াও

---------- 

১। নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

 

 

১.১। শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?

 

উত্তর: রবীন্দ্র-পরবর্তী কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৩ সালে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার অন্তর্ভুক্ত বহড়ু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন

 

 

১.২। তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখো

 

উত্তর : শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা একটি উপন্যাস হল 'কুয়োতলা'

 

 

২। নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

 

 

২.১। 'মতো' শব্দ ব্যবহার করা হয় কখন? তোমার যুক্তির পক্ষে দুটি উহাদরণ দাও

 

উত্তর:উত্তরের প্রথমাংশ : রবীন্দ্রোত্তর কবিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' কবিতায় 'মতো' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। 'মতো' একটি তুলনাবাচক শব্দ। দুটি বিষম বস্তুর মধ্যে তুলনা নির্দেশ করতে 'মতো' শব্দটি ব্যবহৃত হয়। যেমন- 'আকাশের মতো সুন্দর ও প্রশস্ত তোমার কোমল মন।' এখানে 'মতো' হল তুলনাবাচক শব্দ। দুটি বিসদৃশ বস্তুর মধ্যে যখন কোথাও কোনো সূক্ষ্ম সাদৃশ্য

অন্বেষণ করা হয় তখন 'মতো' ব্যবহৃত হয়।


উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: এমন দুটি তুলনাবাচক শব্দ দিয়ে বাক্য নির্মাণের দৃষ্টান্ত হল-


১। অমাবস্যার অন্ধকারের মতো দুর্ভেদ্য তার বাক্যালাপ।


বিশ্লেষণ: এখানে তুলনাবাচক শব্দ হল 'মতো'। অর্থাৎ 'অমাবস্যার অন্ধকার' ও 'বাক্যালাপ'-এই দুইয়ের মধ্যে তুলনা করতে 'মতো' ব্যবহৃত হয়েছে।


২। শিশুরা ফুলের মতো সুন্দর।


বিশ্লেষণ: এখানে শিশুদের সঙ্গে ফুলের তুলনাবাচক শব্দ হিসেবে 'মতো' ব্যবহৃত হয়েছে।


 

২.২। কবি পাখির মতো পাশে দাঁড়াতে বলছেন কেন?

 

উত্তর:বীন্দ্রোত্তর কবিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' কবিতায় সমগ্র বিশ্বে স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ ফাঁদ পেতে রাখে। সে ফাঁদ হল তাদের লোভ, লালসা। শক্তি চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এসব ফাঁদে জড়িয়ে পরে অসংখ্য দরিদ্র অসহায় মানুষ। কবির বক্তব্য-


(ক) পাখি যেমন তার চঞ্চ দিয়ে শিকারির জাল কেটে ফেলতে পারে; তেমন স্বার্থপর মানুষের বিছানো জাল কেটে অসহায় মানুষদের বের করে আনতে হবে।


(খ) অনুরূপে, পাখি যেমন তার বাচ্চাকে আগলে রাখে; তেমনি ভালোবাসা দিয়ে, স্নেহ দিয়ে দরিদ্র মানুষদের কাছে টেনে নিতে হবে। তাই কবি পাখির মতো পাশে দাঁড়াতে বলেছেন।

 

 

২.৩। 'মানুষই ফাঁদ পাতছে'- কবি এ কথা কেন বলেছেন? 'মানুষ' শব্দের সঙ্গে '' ধ্বনি যোগ করেছেন কেন- তোমার কী মনে হয়?

 

উত্তর:উত্তরের প্রথমাংশ: বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' কবিতায় কবি বলছেন স্বার্থপর মানুষ শুধু নিজেদের সুখের কথা ভাবে। লোভী মানুষদের ফাঁদ পেতে থাকা, অর্থাৎ-(১) মানুষকে ঠকানো। (২) মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা। (৩) মানুষের সঙ্গে ছলনা করা মানুষ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যে মানুষের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করে।


উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: মানুষের বিপদের কারণে অন্য আর একজন মানুষ। আসলে একদল মানুষ আছে যারা অত্যন্ত স্বার্থপর ও সংকীর্ণচেতা। শুধু শোষণ ও লোভ-লালসায় অন্যকে সর্বহারা করতে তারা তৎপর। এদের স্বভাবকে সুচিহ্নিত করতে কবি 'ই' ধ্বনিটি যোগ করেছেন। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন-


(ক) মানুষের দুর্দশার মূল কারণ মানুষ-ই। (খ) মানুষের বর্বরতার কারণেই অন্য মানুষ লাঞ্ছিত হয়।


অর্থাৎ, মানুষই মানুষের বিপদের কারণ-এই বিষয়টি জোর দিয়ে বোঝানোর জন্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় অতিরিক্ত একটি 'ই' ধ্বনির ব্যবহার করেছেন।

 

 

২.৪। 'তোমার মতো মনে পড়ছে'-এই পঙ্ক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ কী?

 

উত্তর: একালের অন্যতম বরণীয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত কবিতায় একদল ব্যক্তিগত স্বার্থে অন্য মানুষকে সর্বস্বান্ত করে। অন্য কিছু মানুষ থাকেন যারা চিরন্তন মনুষ্যত্বকে বাঁচিয়ে রাখেন এবং মানবিক মূল্যবোধের কারণে অসহায়, বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান। এই শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের কথা সেই মুহূর্তে মনে পড়েছিল। কবির। মানুষের দুর্দিনে সেই বিবেকবান মানুষকে তাই স্মরণ করেছেন। কবি

 

 

২.৫। 'এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও'-এই পঙ্ক্তিটির বিশেষত্ব কোথায়? এই ধরনের দুটি বাক্যে তুমি তৈরি করো

 

উত্তর:উত্তরের প্রথমাংশ: বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকের জনপ্রিয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত কবিতায় 'দাঁড়াও' ক্রিয়াপদটি ক্রমাগত তিনবার ব্যবহৃত হয়েছে। এর মূল কারণ কবির অসহায় মানুষের পাশে সবসময় থাকার জন্যে আহ্বান করেছেন। সেই আহ্বানের সূত্রে দাঁড়াও ক্রিয়াপদটিকে গুরুত্ব দিয়ে তিনটি বাক্যখণ্ড ব্যবহার করেছেন। যথা-


(১) এসে দাঁড়াও। (২) ভেসে দাঁড়াও। (৩) ভালোবেসে দাঁড়াও অর্থাৎ, একটিই মূল অভিপ্রায় তা হল-নিঃস্বার্থে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কেননা, 'মানুষ বড়ো কাঁদছে'।


উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: এই ধরনের দুটি বাক্য হল-


(১) পাখির সুর চাই, নদীর গান চাই, সমব্যথী বন্ধু শুধু তোমাকে চাই। (২) আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকো, সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থেকো, বাতাসের দিকে তাকিয়ে থেকো, এদের মধ্যে আমাকে পাবে।


 

৩। 'মানুষ বড়ো কাঁদছে'- কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন

 

উত্তর:বিশ শতকের পাঁচের দশকের জনপ্রিয় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত তিন স্তবকের এই কবিতায় কবি মানুষের অসহায়তার কথা তুলে ধরেছেন। সমগ্র বিশ্বজুড়ে তখন চলছে মানুষের উপর মানুষের অবিচার-অত্যাচার-লাঞ্ছনার এক ভয়াবহ দুঃসময়। মানুষের বিপদের কারণ আর একদল মানুষ। কোথাও কারও প্রতি স্নেহ-মায়া-দায়বদ্ধতা নেই। শুধু একদলকে নিঃস্ব করে অন্যদলের আনন্দ ও আখের গুছিয়ে নেওয়া। মানুষের হাতে মানুষের এই অত্যাচার, উৎপীড়ন, অবমাননা, মৃত্যু দেখে শঙ্কিত কবি বারবার উচ্চারণ করেছেন 'মানুষ বড়ো কাঁদছে'।


মানুষের অসহায়তা, বিপন্নতা এবং যন্ত্রণা বোঝাতে কবি 'মানুষ বড়ো কাঁদছে'-এই কথাটি একাধিকবার উচ্চারণ করেছেন।

 

 

৪। 'মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও'-এই পঙ্ক্তিটিকে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে তোমার মনে হয়

 

উত্তর: বরেণ্য কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত কবিতায় মানুষের যন্ত্রণা, দুঃখ-দুর্দশা দেখে ব্যথিত হয়েছেন। তিনটি স্তবকে বিন্যস্ত এই কবিতায় ধ্রুবপদের মতো তিনি লিখেছেন-

 

 

১. প্রথম স্তবকের তৃতীয় পংক্তি

 

উত্তর: মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও

 

 

২. দ্বিতীয় স্তবকের তৃতীয় পংক্তি

 

উত্তর: মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও

 

 

৩. তৃতীয় স্তবকের তৃতীয় পংক্তি

 

উত্তর: মানুষ বড়ো একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও

 


 

৬। কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করছেন বলে তোমার মনে হয়?

 

উত্তর: কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত কবিতায় অসহায়, বিপন্ন মানুষের পাশে ভালোবেসে দাঁড়াতে বলেছেন। তিনি কারও নাম না করে মধ্যমপুরুষে থাকা 'তুমি' নামাঙ্কিত সর্বনামপদে পাঠককেই চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ যে পাঠকের মনের মধ্যে শুভবুদ্ধি কাজ করে, যারা দুঃখ-কষ্টে-যন্ত্রণায় থাকা মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে পারবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ-কবি তাদেরকেই আহ্বান জানিয়েছেন। কবির বিশ্বাস সচেতন ও বিবেকবান মানুষই পারবে সমস্ত বিপন্ন মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে

 

 

৭। কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা, শুধু একটা শব্দ সাধু ভাষার। শব্দটি খুঁজে বার করো এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি?

 

উত্তর:শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রণীত 'দাঁড়াও' নামাঙ্কিত কবিতাটি চলিতভাষায় লেখা। কিন্তু এই কবিতায় ব্যতিক্রমী হল 'তাহার' নামাঙ্কিত একটি সাধু ভাষা। এর মূল কারণ-


(ক) ছন্দের দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় কবিতাটিতে আট ও বার মাত্রা মিলে সর্বমোট কুড়ি মাত্রার মহাপয়ার তৈরি হয়েছে।


(খ) সেক্ষেত্রে 'তাহার' পরিবর্তে যদি 'তার' শব্দটি ব্যবহার করা হতো তাহলে বার মাত্রার পরিবর্তে এগার মাত্রা হতো। এর ফলে ছন্দ সাম্য নষ্ট হত।


তাই কবি 'তার' শব্দটি ব্যবহার না করে 'তাহার' শব্দটি ব্যবহার করেছেন।


👉Online MCQs Test

 👉Download Books PDF

👉Paid Answer (For Membership User)


উত্তর পেতে সদস্যপদ প্রয়োজন



Editing By:- Lipi Medhi