১. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১.১ আষাঢ়ের ভেজা পথে কে এসেছে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার লিখেছেন, আষাঢ়ের ভিজে পথে এসেছে দুরন্ত শ্রাবণ।
১.২ কোথায় চর পড়েছে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন চূর্ণি নদীর ঘূর্ণিপাকে চর পড়েছে।
১.৩ কবির মনের কূলে কখন ভাঙন লেগেছে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' নামাঙ্কিত গানে জানিয়েছেন, কবির মনের কূলে যখন ঘর ভাঙা শ্রাবণ আসে, তখন ভাঙন লাগে।
১.৪ কে উদাস চোখে শ্রাবণে বন্যা দেখেছিল?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' নামাঙ্কিত গানে জানিয়েছেন, হিজল গাছে বসে থাকা এক জলপরি কন্যা উদাস চোখে শ্রাবণের বন্যা দেখেছিল।
১.৫ শ্রাবণকে কবি কেন 'ঘরভাঙা' বলেছেন?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, শ্রাবণের বন্যা তাঁর স্বপ্নের ঘরটিকে ভেঙে দিয়েছিল। তাই শ্রাবণকে কবি 'ঘরভাঙা' বলে অভিহিত করেছেন।
১.৬ 'জলপরি কন্যা' কোথায় থাকে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, ছায়াভিটে হিজল গাছে জলপরি কন্যা থাকে।
১.৭ মেঠো আগুন কীভাবে নেভে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, জলের ছিটে লেগে মেঠো আগুন নেভে।
১.৮ শ্রাবণের মেঘেও কী নিভে যায় না?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, শ্রাবণের মেঘে 'রাবণের চিতা' নেভে না।
১.৯ 'রাবণের চিতা' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, 'রাবণের চিতা' হল মানুষের মনের মধ্যে জায়মান থাকা দুঃখ-কষ্ট।
১.১০ 'আমি কাঁদি তাহার কান্না...'- 'আমি' কে?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে 'আমি' বলতে গীতিকার-কবি বিজয় সরকারকে বোঝানো হয়েছে।
১.১১ 'শ্রাবণ ফিরে এলেও'-কার ফিরে আসার আশা নেই?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, শ্রাবণ মাস পুনরায় ফিরে এলেও বানে ভেসে যাওয়া ঘরের ফিরে আসার কোনো আশা নেই।
১.১২ 'এলো আমার দুরন্ত শ্রাবণ'-শ্রাবণকে 'দুরন্ত' বলার কারণ কী?
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, শ্রাবণের প্রবল বন্যা কবির স্বপ্নের গৃহটি ভেসে যায়। শ্রাবণের এই প্লাবনকে চিহ্নিত করতে কবির 'দুরন্ত' শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো:
২.১ 'এলো আমার দুরন্ত শ্রাবণ'-শ্রাবণকে 'দুরন্ত' বলার কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে শ্রাবণকে 'দুরন্ত' বলেছেন। শ্রাবণের অফুরাণ বর্ষণে কবির ভালোবাসার গৃহপ্রাঙ্গণটি ভেসে গিয়েছে। কবি আশ্রয়চ্যুত হয়েছেন। তাঁর জীবনের ছন্দ নষ্ট হয়েছে। হিজল গাছের ছায়াবৃত ভিটে মাটি থেকে হারিয়ে গিয়েছে 'জলপরি কন্যা' তথা কবির ভালোবাসার মানুষটি। এখনও কবি তাঁর জন্যে কাঁদেন। কবির বুকে যেন সবসময়ই 'রাবণের চিতা' জ্বলতে থাকে। শ্রাবণের মেঘ আসে এবং তখন 'আগুন জ্বলে দ্বিগুণ বেগে'। শ্রাবণ তাঁর ভালোবাসাকে যেন সমূলে উচ্ছেদ করেছে। তাই শ্রাবণকে 'দুরন্ত' বলা হয়েছে।
২.২ 'সেই চরেতে বেঁধেছিলাম বসতি এক ঘর।' কে, কোথায় ঘর বেঁধেছিলেন? সেই ঘর বাঁধার পরিণতি কী হয়েছিল?
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, চূর্ণি নদীতে ঘূর্ণিপাকের ফলে যে পলি জমে চর সৃষ্টি হয়েছিল; সেই ভাসমান চরের বুকে কবি তাঁর ভালোবাসার ঘরটি বেঁধেছিলেন।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: অনেক স্বপ্ন নিয়ে কবি ঘর বেঁধেছিলেন। সেই ঘরে বাস করত অসাধারণ সুন্দরী এক 'জলপরি কন্যা'। সেই ঘরটি শ্রাবণের প্রচণ্ড বন্যায় ভেসে যায়। ফলে কবির স্বপ্ন ভেঙে যায়। দূরত্ব শ্রাবণের জলের তাণ্ডবে বসতবাড়িটি নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কবির সমস্ত সুখ-স্বপ্ন-স্বস্তি কোথায় যেন ভেসে যায়।
২.৩ 'ফিরে আসার আশা নাই রে'-কার ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে? তার ফিরে না আসার কারণ কী ছিল?
উত্তর: উত্তরের প্রথমাংশ: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, চূর্ণি নদীর ঘূর্ণিপাকে জেগে ওঠা চরে তিনি ভালোবাসার ঘর বেঁধেছিলেন। 'দুরন্ত শ্রাবণ' এসে তাঁর সেই ঘরটিকে ভাসিয়ে দেয়। ঘরের মানুষটিও হারিয়ে যায়। সেই ঘর আর সেই অসামান্য সুন্দরী 'জলপরি কন্যা'র আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশঃ যে চলে যায় সে আর ফিরে আসে না। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় শ্রাবণ ফিরে আসে; কিন্তু শ্রাবণ ফিরে এসে কবির ভালোবাসার ঘরটিকে ফিরিয়ে দিতে পারে না। তাই কবির মনে হয়েছে সেই সুখী গৃহকোণটি ফিরে আসার আর কোনো আশা নেই।
২.৪ 'এমনই তোর বিধাতার বাধন'-কে, কোন্ প্রসঙ্গে একথা বলেছেন? 'বিধাতার বাধন' প্রসঙ্গটি আসার কারণ কী?
উত্তরের প্রথমাংশ: কবি বিজয় সরকার 'আষাঢ়ের কোনো ভেজা পথে' গানে জানিয়েছেন, চূর্ণি নদীর ঘূর্ণিপাকে যেখানে চর পড়েছিল, সেই চরেতে কবি তাঁর বসতি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু শ্রাবণের বন্যায় কবির সর্বস্ব ভেসে যায়। সেই প্রসঙ্গে বিধাতাকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তিটি করেছেন কবি।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ভারতীয় দর্শনে 'অদৃষ্টবাদ', 'কর্মফলবাদ' বিশেষভাবে প্রচলিত রয়েছে। কবি বিজয় সরকার এই গানের শেষাংশে বিধাতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন এই কারণে যে, মানুষ স্বপ্ন দেখে এক আর লাভ করে অন্য আর এক। অর্থাৎ প্রত্যেকেই যেন বিরহী যক্ষের মতো তাঁর সুখ-স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত। অর্থাৎ বিধাতার অভিপ্রায়ই কবি যেন তাঁর ঘর হারিয়ে ফেলেছেন। এখানে কবির গভীর দুঃখ ও প্রগাঢ় বিষণ্ণতা ধরা পড়েছে।
৩. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো।
৩.১ চূর্ণি নদীর ঘূর্ণিপাকে যেথা পড়ল চর, সেই চরেতে বেঁধেছিলাম বসতি এক ঘর। (সরল বাক্যে)
উত্তর: চূর্ণি নদীর ঘূর্ণিপাকে জেগে ওঠা চরেতে বেঁধেছিলাম বসতি এক ঘর।
৩.২ এল আমার দুরন্ত শ্রাবণ। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: যে শ্রাবণ এল, তা দুরন্ত।
৩.৩ রাবণের চিতা নেভে না বন্ধু। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: উরাবণের চিতা কী 'নেভে?
৩.৪ এল আমার ঘরভাঙা শ্রাবণ। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: আমার ঘরভাঙা শ্রাবণ আসেনি কী?
৩.৫ এল আমার ঘরভাঙা শ্রাবণ। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: যা এল তা হল আমার ঘরভাঙা শ্রাবণ।
৩.৬ আগুন জ্বলে দ্বিগুণ বেগে। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর: দ্বিগুণ বেগে আগুন না জ্বলে পারে না।
৩.৭ শ্রাবণ আবার আসিল ফিরে একটি বছর পর। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: শ্রাবণ কী আবার একটি বছর পর ফিরে আসেনি?
৩.৮ ফিরে আসার আশা নাই। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর: ফিরে আসার আশা আছে কী?