CHAPTER--26 

স্বাধীনতা

-------------------

    👉Online MCQs Test

    👉Download Books PDF

    👉Paid Answer (For Membership User)

Short Question Answer

1.ল্যাংস্টন হিউজের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?

উত্তর : ল্যাংস্টন হিউজের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম হল 'The Weary Blues' I

2.তিনি কোন্ দেশের রেনেসাঁর অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত?

উত্তর : বিংশ শতাব্দীর কুড়ির দশকের স্বনামধন্য কবি ল্যাংস্টন হিউজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্লেম রেনেসাঁসের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে পরিচিত।

3.স্বাধীনতা বলতে কী বোঝো? কী কী বিষয়ে মানুষের স্বাধীনতা প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো?

উত্তর : 'স্বাধীনতা' বলতে বোঝায়-

১. বন্ধনমুক্ত


২. শৃঙ্খলমুক্ত


৩. অধীনতামুক্ত


ব্যক্তি যখন সমস্ত বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করে, তখন সেই সর্বাঙ্গীণ মুক্তিকে স্বাধীনতা বলে।


স্বাধীনতার প্রয়োজনঃ স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষের কতকগুলি প্রাথমিক চাহিদা আছে। যেমন-

১. অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের চাহিদা


২. স্বাধীন মতামত প্রকাশের চাহিদা


৩. ধর্ম পালনের অধিকার বা স্বাধীনতা


৪. ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার


৫. শিক্ষার অধিকার


এইসব মৌলিক বিষয়ে চাহিদা থাকা আব্যশ্যক। এগুলি প্রয়োজনীয় বলে আমি মনে করি।

4.মানুষ পরাধীন হয় কখন?

উত্তর: একজন মানুষ যখন অন্যের দ্বারা পদানত; তখন সে পরাধীন। কখনও প্রতিষ্ঠানের দ্বারা, রাষ্ট্রের দ্বারা, কখনও বা অন্য দেশের দ্বারা যখন আমরা আমাদের সার্বভৌম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি, তখন আমরা পরাধীন। অর্থাৎ অন্যের অধীন হলে তাকে পরাধীন বলা হয়।

5.পরাধীন মানুষের স্বাধীনতা পাওয়ার পথগুলি কী কী?

উত্তর: ফরাসি দার্শনিক রুশো বলেছিলেন- "Man is born free, but everywhere he is in chains." মানুষ স্বাধীনভাবে বাঁচতে চায়। ঔপনিবেশিক যুগে আমরা ছিলাম পরাধীন। কোনো মানুষ, কোনো জাতি, কোনো দেশ পরাধীন হলে তখন তা অত্যন্ত লজ্জার। তখন আত্মগ্লানি, আত্মমর্যাদাহীন লাঞ্ছিত জীবন কষ্টের কারণ হয়। এজন্যে প্রয়োজন কতকগুলি বিষয়। যেমন-

১. সংঘবদ্ধ শক্তি


. পারস্পরিক আলোচনা


৩. প্রয়োজনে বিপ্লব বা বিদ্রোহ


৪. কোনো প্রলোভনে পা না দেওয়া


৫. প্রবল দেশাত্মবোধ ও স্বদেশপ্রীতি


এভাবে মানুষ একত্রিত হয়ে দেশের জন্যে আমরণ সংগ্রাম করলে একদিন স্বাধীনতা আসবেই।

6.'স্বাধীনতা' কবিতাটির মধ্যে দুটি 'পক্ষ' আছে- 'আমি-পক্ষ' আর 'তুমি-পক্ষ'। এই 'আমি পক্ষ' আর 'তুমি-পক্ষ'-এর স্বরূপ বিশ্লেষণ করো। এই ক্ষেত্রে 'সে পক্ষ' নেই কেন?

উত্তর : স্বাধীনতা' কবিতায় দুটি 'পক্ষ' আছে। অর্থাৎ শাসক আর শাসিতের স্পষ্ট ভূমিকা আছে। যেমন-


১. আমি-পক্ষ: পরাধীন মানুষ এই পক্ষের অন্তর্ভুক্ত। এরা লাঞ্ছিত, বঞ্চিত ও সর্বহারা।


২. তুমি-পক্ষ: এই পক্ষে অবস্থান করে আগ্রাসী ও পররাজ্যলোভী শাসক। এরা ক্ষমতালোভী। অন্যকে লাঞ্ছনা দিয়ে, বঞ্চনা করে আনন্দ পায়। এই দুটি 'পক্ষ' ছাড়াও 'সে পক্ষ' থাকতে পারত। 'সে' হল এই


দুটি পক্ষের বাইরে তৃতীয় পক্ষ। যে সবকিছুর ঊর্ধ্বে অবস্থান করে দুই পক্ষের ন্যায়-অন্যায়কে প্রত্যক্ষ করে। 'স্বাধীনতা' কবিতায় মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ এই 'সে-পক্ষ'কে রাখতে চাননি।


7.'সময়ে/সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন'- কবিতার মধ্যে উদ্ধৃতিচিহ্নের ভিতরে থাকা কথাটি কার/কাদের কথা বলে তোমার মনে হয়? তারা এ ধরনের কথা বলেন কেন?

উত্তর: প্রথম প্রশ্নের উত্তর: মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ তাঁর 'স্বাধীনতা' নামাঙ্কিত কবিতায় আপসকামী দেশনেতা তথা সুযোগসন্ধানী নেতাদের কথা বলেছেন বলে আমার মনে হয়।


দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর: শাসকদলের তোষামোদকারী একদল দেশনেতা থাকেন, যারা স্বাধীনতা কোনও একদিন আসবে বলে স্বপ্ন দেখান। কিন্তু কবি ল্যাংস্টন হিউজ মনে করেন, স্বাধীনতা স্বপ্ন-বিলাসী মানুষের কল্পনার ফসল নয়। স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। বিপ্লবের সংগ্রামী পথে স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এর জন্যে সংগ্রাম, বিদ্রোহ, বিপ্লব ও আত্মত্যাগের প্রয়োজন হয়।


পৃথিবীর ইতিহাস এই শিক্ষা দিয়েছে যে, স্বাধীনতাকামী মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে একদিন মুক্ত পৃথিবী গঠিত হবে। সাধারণ মানুষের বলিষ্ঠ প্রতিবাদে ফরাসি বিপ্লব, রুশ বিপ্লব কিংবা ইতালির ঐক্য আন্দোলন সম্ভব হয়েছে।


সুতরাং 'সময়ে/সবই হবে'- এই আপসকামী বক্তব্য ঠিক নয়। প্রতিনিয়ত আলাপ-আলোচনা, মিটিং-মিছিল, বিপ্লব-বিদ্রোহের মধ্যে দিয়েই দেশ স্বাধীন হবে- এটাই প্রকৃত সত্য।


8.'আগামীকালের রুটি/দিয়ে কি আজ বাঁচা যায়'-এখানে 'আগামীকাল' আর 'আজ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: 'আগামীকাল' মার্কিন কবি ল্যাংস্টোন হিউজ কোনো মিথ্যা স্বপ্নে বিশ্বাস করেন না। তিনি এমন বক্তব্যে বিশ্বাসী নন যে- "সময়ে সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন।" ভবিষ্যতে আপনা-আপনি দেশ স্বাধীন হবে, মানুষ পরাধীনতা থেকে মুক্তি পাবে-এমন অলীক কল্পনায় কবি বিশ্বাস করেন না।


শুধু স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে পরাধীন, লাঞ্ছিত জাতি বাঁচতে পারে না। কোনো একদিন শুভ সময় আসবে-এ শুধু তত্ত্বকথা মাত্র। কেননা, বিপ্লবের পথে অসংখ্য মানুষের আত্মবলিদানের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হবে-এটাই স্বাভাবিক। 'আগামীকালের রুটি' হল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। কিন্তু তা শুধু স্বপ্নের ফসল নয়। তার জন্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়।


'আজ' 'আজ' বলতে কবি তৎকালীন সময়ের পরাধীন অবস্থাকে নির্দেশ করেছেন। পরাধীনতার গ্লানি মানুষের বেঁচে থাকার আনন্দকে হরণ করেছে। মানবতাকে লাঞ্ছিত করেছে। দেশ যখন লাঞ্ছিত, দেশের মানুষ যখন বঞ্চিত; তখন মিথ্যা স্বপ্ন দেখানোর অর্থই হয় না। কবি ল্যাংস্টন হিউজ বোঝাতে চেয়েছেন, ভবিষ্যতের প্রস্তুতিহীন স্বপ্ন নিয়ে কোনো জাতি, কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। 


9."মৃত্যুর পরে তো আমার... প্রয়োজন হবে না।"

উত্তর: মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ রচিত 'স্বাধীনতা' কবিতায় কবি জানিয়েছেন দাসত্বের শৃঙ্খল নিয়ে কোনো মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না।


যদি কোনো মানুষ মনে করে, স্বাধীনতা আজ না হয় আগামীকাল অর্জিত হবে তাহলে সে ভুল করবে। কেননা, মনে রাখতে হবে যে, স্বাধীনতা সহজেই অর্জিত হওয়ার নয়। মৃত্যুর পর কখনও স্বাধীনতার প্রয়োজন-অপ্রয়োজন কিছুই থাকে না। তাই কবি মনে করেন, জীবিত অবস্থাতেই স্বাধীনতাকে অর্জন করা আবশ্যক।


10. "স্বাধীনতা একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ।”

উত্তর: মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ রচিত 'স্বাধীনতা' কবিতায় কবি জানিয়েছেন, স্বাধীনতা ধারাবাহিক সংগ্রামের ফসল।

তাই কবি স্বাধীনতাকে 'শক্তিশালী বীজপ্রবাহ' বলে চিহ্নিত করেছেন। বীজের মধ্যে যেমন আগামী দিনের একটি অঙ্কুর বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং সেই অঙ্কুর যেমন একসময় বনস্পতিতে রূপান্তরিত হয়; আমাদের স্বাধীনতাও ঠিক তেমন। স্বাধীনতা তাই একটি বহু প্রার্থিত সাধনারই বাস্তব রূপ। বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা কবির মতে একটা 'শক্তিশালী বীজপ্রবাহ' যেন।


11. "আমাদেরও তো অন্য সকলের… জমির মালিকানার।"

উত্তর: মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ রচিত 'স্বাধীনতা' কবিতায় কবি জানিয়েছেন, পরাধীন মানুষের স্বাধীনতা চাই।

বিজয়ী মানুষ তার প্রভূত ক্ষমতার বলে পরাজিত মানুষের উপরে দখলদারীর মতো ভূমিকা পালন করে। কবির মনে হয়েছে, পরাধীন মানুষেরও দীর্ঘদিন সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জনের অধিকার আছে। তাই দেখা যায়, মুক্তিকামী মানুষ দিনের পর দিন সংগ্রাম করেও বেঁচে থাকার অধিকার, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অধিকার, দু-কাঠা জমির মালিকানার অধিকার প্রত্যাশা করে।


12. "স্বাধীনতা আমার প্রয়োজন/তোমার যেমন।"

উত্তর: মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজ রচিত 'স্বাধীনতা' কবিতায় কবি জানিয়েছেন, বেঁচে থাকার জন্যে প্রত্যেকের স্বাধীনতার প্রয়োজন।

‘আমরা’ বলতে মানুষেয় কথা বলা হযেছে। পাশাপাশি ‘তোমার’ বলতে শাসকের কথা বলা হযেছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সবসময় চায় দুর্বল দেশগুলির উপরে আধিপত্য বিস্তার করতে। আর মুক্তিকামী মানুষ চায় বেঁচে থাকার অধিকার অর্জন করতে। তাই স্বাধীনতা সবারই প্রয়োজন। কবি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন- “স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়।"

 :

13. স্বাধীনতা নিয়ে লেখা আরো দুটি কবিতার উল্লেখ করো এবং এই কবিতার সঙ্গে তাদের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তর: স্বাধীনতা নিয়ে আরও দুটি কবিতা হলো-

১. রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়: স্বাধীনতা


২. শামসুর রাহমান: স্বাধীনতা তুমি


উনিশ শতকের প্রেক্ষাপটে রচিত রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'স্বাধীনতা' কবিতায় পরাধীন ভারতবর্ষের স্বদেশ চেতনা প্রকাশ পেয়েছে। ব্রিটিশ শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে দেশ স্বাধীনতা লাভ করুক, তবেই দেশের মানুষ স্বর্গসুখ লাভ করতে পারবে। স্বাধীনতার জন্যে কেউ যদি প্রাণ দেয় তাহলে তার থেকে বড়ো আত্মত্যাগ আর কিছু হতে পারে না।


শামসুর রাহমানের 'স্বাধীনতা তুমি' কবিতায় স্বাধীনতার পক্ষে কবির অপূর্ব দরদ উচ্চারিত হয়েছে। কবি একের পর এক উপমা চয়ন করে স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। যাঁরা মহান পুরুষ তাঁরা স্বাধীনতার জন্যে কীভাবে নিজেদের সঁপে দিয়েছেন তার অনুভূতিও এই কবিতায় ধরা পড়েছে।


সুতরাং স্বাধীনতা নিয়ে ল্যাংস্টন হিউজ, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও শামসুর রাহমান যে বক্তব্য প্রকাশ করেছেন তার একটি গুরুত্ব চোখে পড়ার মতো। স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। সেই স্বাধীনতাকে অর্জন করতে হয় নিঃস্বার্থ লড়াই ও আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। এই কবিতা ও উল্লিখিত কবিতার মূল সুর এটাই।


EDITING BY--Liza Mahanta