Chapter--27
আদাব
------------------
 
    👉Online MCQs Test
    👉Download Books PDF
    👉Paid Answer (For Membership User)
 
Very Short Question 
 
1.শহরে ১৪৪ ধারা আর কারফিউ অর্ডার জারি হয়েছে
উত্তর: আর= সংযোজক অব্যয়

2. তারা গুলি ছুঁড়ছে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে
উত্তর: ও = সংযোজক অব্যয়

3.উভয়েই একটা আক্রমণের প্রতীক্ষা করতে থাকেকিন্তুখানিকক্ষণ অপেক্ষা করেও কোন পক্ষ থেকেই আক্রমণ এল না
উত্তর: কিন্তু = সংকোচক অব্যয়

4. তোমার মতলবডা তো ভালো মনে হইতেছে না
উত্তর: তো = বাক্যালংকার অব্যয়

5. মাঝি এমনভাবে কথা বলে যেন সে তার কোনো আত্মীয়বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছে
উত্তর: যেন = সংশয়সূচক অব্যয়

6..তা ছাড়া চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে গুপ্তঘাতকের দল
উত্তর: চতুর্দিক = চতুঃ + দিক

7. মৃত্যু-বিভীষিকাময় এই অন্ধকার রাত্রি তাদের উল্লাসকে তীব্রতর করে তুলেছে
উত্তর: উল্লাস = উৎ লাস

8. নির্জীবের মতো পড়ে রইল খানিকক্ষণ
উত্তর: নির্জীব = নিঃ+ জীব

9.দাঁতে দাঁত চেপে হাত পা-গুলোকে কঠিন করে লোকটা প্রতীক্ষা করে রইল এতটা ভীষণ কিছুর জন্য
উত্তর: প্রতীক্ষা = প্রতি ঈক্ষা

10.সমস্ত অঞ্চলটার নৈশ নিস্তব্ধতাকে কাঁপিয়ে দুবার গর্জে উঠল অফিসারের আগ্নেয়াস্ত্র
উত্তর: নিস্তব্ধ = নিঃ স্তব্ধআগ্নেয়াস্ত্র আগ্নেয় অস্ত্র

11.দুদিক থেকে দুটো গলি এসে মিশেছে এ জায়গায়
উত্তর: অধিকরণকারকে 'বিভক্তি

12.সন্দেহের দোলায় তাদের মন দুলছে
উত্তর: অপাদান কারক অথবা নিমিত্তকারকে 'এরবিভক্তি

13.নিষ্ফল ক্রোধে মাঝি দু-হাত দিয়ে হাঁটু দুটোকে জড়িয়ে ধরে
উত্তর: করণ কারকে 'বিভক্তি

14.আমাগো কথা ভাবে কেডা?
উত্তর: সম্বন্ধপদে 'গোবিভক্তি কর্তৃকারকে 'শূন্যবিভক্তি

15.মুহূর্তগুলি কাটে রুদ্ধ নিশ্বাসে
উত্তর: করণ কারকে 'বিভক্তি

16.খানিকক্ষণ চুপচাপ। (না-সূচক বাক্যে)
উত্তর: খানিকক্ষণ কোনো শব্দ নেই

17.পরিচয়কে স্বীকার করতে উভয়েই নারাজ
উত্তর: পরিচয়কে স্বীকার করতে উভয়ের কেউ-ই কি রাজি হতে পারে?

18.শোরগোলটা মিলিয়ে গেল দূরে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: শোরগোলটা শোনা গিয়েছিল কিন্তু তা মিলিয়ে গেল দূরে

19.মাঝি বললচল যেদিকে হউক। (পরোক্ষ উক্তিতে)
উত্তর: মাঝি যেদিকে হোক যাওয়ার কথা বলল

20.কান পেতে রইল দূরের অপরিস্ফুট কলরবের দিকে
উত্তর: সাধারণ অতীত

21.সন্দেহের দোলায় তাদের মন দুলছে
উত্তর: ঘটমান বর্তমান

22.ধারে-কাছেই য্যান লাগছে
উত্তর: পুরাঘটিত বর্তমান

23.অশান্ত চঞ্চল ঘোড়া কেবলি পা ঠুকছে মাটিতে
উত্তর: ঘটমান বর্তমান

24.বাদামতলির ঘাটে কোন অতলে ডুবাইয়া দিছে তারে
উত্তর: পুরাঘটিত বর্তমান

25.তাতে দ্যাশের কী উপকারটা হইব? (নির্দেশক বাক্যে)
উত্তর : তাতে দ্যাশের কোনো উপকার হইব না

26. কথা বলার ভঙ্গিটা মাঝির ভালো ঠেকল না। (জটিল বাক্যে)
উত্তর : যে কথাটা বলা হল তার ভঙ্গিটা মাঝির ভালো ঠেকল না

27. ভালো কথাই কইছি ভাই 
উত্তর: মন্দ কথা কইছি না ভাই

28. মাঝি একটু আশ্বস্ত হলো শুনে 
উত্তর: মাঝি শুনল এবং একটু আশ্বস্ত হলো

29. একটা হালকা বাতাস এসে যেন ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিল কাঠিটা 
উত্তর : একটা হালকা বাতাস এলো এবং ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিল কাঠিটা

30. উভয় উভয়কে ভাবছে খুনি
উত্তর: উভয় উভয়কে খুনি না ভেবে পারেনি

31. দু'জনেই অধৈর্য হয়ে পড়ে 
উত্তর: দু'জনেই কী ধৈর্য হারায় নি?

32. খানিকক্ষণ চুপচাপ
উত্তর: খানিকক্ষণ কথা হয়নি

33. মাথা তুলতে সাহস হলো না 
উত্তর: মাথা তুলতে ভয় হলো

34. বস্তিতে বস্তিতে জ্বলছে আগুন
উত্তর : বস্তিতে বস্তিতে কী আগুন জ্বলছে না?
 
Short Question Answer

1.সমরেশ বসুর ছদ্মনাম কী?
উত্তর: সমরেশ বসুর ছদ্মনাম হলো-'কালকূট'এছাড়া তিনি 'ভ্রমরনামেও লিখতেন

2.তাঁর লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো
উত্তর: সমরেশ বসুর লেখা দুট উপন্যাস হলো-'বি.টি রোডের ধারে 'শ্রীমতী কাফে'

3.কোন্ সময়পর্বের কথা গল্পে রয়েছে?
উত্তর: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে হওয়া দাঙ্গার কালপর্বের কথা গল্পে বলা হয়েছে

4.ডাস্টবিনের দুই পাশে দুটি প্রাণী'-প্রাণীদুটির পরিচয় দাও?
উত্তর: দুটি প্রাণী বলতে একজন মাঝি এবং অন্যজন সুতাকলের মজুরকে বোঝানো হয়েছে

5. 'ওইটার মধ্যে কী আছে?'-বক্তা কীসের প্রতি ইঙ্গিত করে?
উত্তর: বক্তা হলো সুতা মজুর। সে মাঝির বগলে থাকা পুঁটলির প্রতি ইঙ্গিত করেছে

6.গল্পে কোন্ নদীর প্রসঙ্গ রয়েছে?
উত্তর: গল্পে বুড়িগঙ্গা নদীর প্রসঙ্গ রয়েছে

7.'সুতা-মজুরের ঠোঁটের কোণে একটু হাসি ফুটে উঠল…'-তার এই হাসির কারণ কী?
উত্তর: সুতা মজুর মনে মনে ভাবে নৌকার এই মাঝি যখন বাড়ি ফিরবে তখন তার পত্নী আবেগ ভরা গলায় বলবে-মরণের মুখ থেকে সে বেঁচে এসেছেএর উত্তরে মাঝি কী বলবে তা ভেবে সুতা মজুরের ঠোঁটের কোণে একটু হাসির রেখা ফুটে ওঠে

8. রাত্রির নিস্তব্ধতাকে কাঁপিয়ে দিয়ে মিলিটারি টহলদার গাড়িটা একবার ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে একটা পাক খেয়ে গেল 
উত্তর: মিলিটারি টহলদার গাড়িটা যখন একবার ভিক্টোরিয়া  পার্কের পাশ দিয়ে একটা পাক খেয়ে গেল তখন রাত্রির নিস্তব্ধতা কেঁপে উঠল
 
Long Question Answer

1. 'শহরে ১৪৪ ধারা আর কারফিউ অর্ডার জারী হয়েছে'- লেখকের অনুসরণে গল্পঘটনার রাতের দৃশ্য বর্ণনা করো
উত্তর: হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গার প্রেক্ষিতে সমরেশ বসু লেখেন 'আদাবগল্পটি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক নেতারা মানুষের মধ্যে শুধু বিভেদের প্রাচীর গড়ে দিয়েছিল। ফলে একে অন্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে ছুটে এসেছিল। এমন এক অবস্থায় দুজন মানুষ অত্যন্ত ভয়ার্ত হয়ে একটি ডাস্টবিনের পাশে আশ্রয় নেয়

চারপাশে তখন সেনাবাহিনি ও পুলিশ কর্মীর দাপাদাপি। ডাস্টবিনের আড়ালে বসে থাকা দুজন মানুষ একে অপরের সঙ্গে কথা বলেছিল। দুজন-দুজনার প্রতি সহমর্মী হয়ে উঠেছিল। তারা এক ভয়ংকর মৃত্যুমুখী পরিবেশের সামনে দাঁড়িয়ে যেভাবে আতঙ্কিত হয়েছিললেখক সেই রাতের অপূর্ব বর্ণনা করেছেন

2.'হঠাৎ ডাস্টবিনটা একটু নড়ে উঠল'- 'ডাস্টবিন নড়ে ওঠা'র অব্যবহিত পরে কী দেখা গেল?
উত্তর: দুটো রাস্তার সংযোগস্থলে একটি ডাস্টবিন পড়েছিল। সেই ডাস্টবিনের কাছে আশ্রয় নেওয়ার সময় স্পষ্টই বোঝা যায়আর একজন মানুষ সেখানে আছে। তখন একে অন্যের প্রতি সন্দেহ করে। প্রথমে মনে হয় নিশ্চয় কোনো চতুষ্পদ প্রাণী এখানে আছে। একসময় খানিকটা ভয় ও কৌতূহলের সঙ্গে দেখা যায়ডাস্টবিনের ওপাশ থেকে আর একজন মানুষ একই ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে অন্যজনকে বোঝার চেষ্টা করছে। সুতরাং 'আদাবগল্পে ভীতপ্রদ একটি পরিবেশ তৈরি করার জন্যে লেখক ডাস্টবিন নড়ে ওঠার প্রসঙ্গকে গুরুত্ব দিয়েছেন

3. হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির আবহ গল্পে কীভাবে রচিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো 
উত্তর: নেতাদের পারস্পরিক স্বার্থপরতার কারণে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্দেহঅবিশ্বাসভয়ঘৃণাহিংসা এবং রক্তক্ষয়ী পরিবেশের সৃষ্টি হয়। 'আদাবগল্পে দেখা যায় ডাস্টবিনের আড়ালে দুজন মানুষ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। তাদের দুজনের মনে প্রবল সংশয় দেখা যায়। এই সংশয়ের কারণ হলো-তারা একে অন্যকে বোঝার চেষ্টা করে। উভয়ের মনে হয় পাশের মানুষটি গুপ্ত ঘাতকের কাজ করবে কিনা

কিছুক্ষণ একসঙ্গে কাটানোর পর তারা এই সত্যে উপনীত হয় যেতাদের মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্রী মন নেই। সুতা মজুরকে নৌকার মাঝি প্রশ্ন করে-এসব মার-দাঙ্গা-কাটাকুটি-খুনোখুনি করে লাভ কীতারা দুজন দুজনের সঙ্গে কথা বলে। একসময় উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। মাঝি চলে যাওয়ার সময় বলে-এই রাতের কথা সে কখনও ভুলবে না। কপালে থাকলে আবার দেখা হবে
এভাবে উভয়ের মধ্যে গভীর এক সম্প্রীতির বোধ সঞ্চারিত হয়। সমরেশ বসুর 'আদাবহলো বিশুদ্ধ মানবিকতাবোধে উদ্দীপ্ত সম্প্রীতির গল্প

4.'মুহূর্তগুলিও কাটে যেন মৃত্যুর প্রতীক্ষার মতো'।-সেই বুদ্ধ উত্তেজনাকর মুহূর্তগুলির ছবি গল্পে কীভাবে ধরা পড়েছে তা দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো
উত্তর: হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার প্রেক্ষিতে সমরেশ বসু লেখেন 'আদাবগল্পটি। এই গল্পে সমকালের অন্ধ সাম্প্রদায়িকতা ধরা পড়েছে। ডাস্টবিনের পাশে দুজন অপিরিচিত মানুষ প্রবল সংশয় ও সন্দেহ নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলেছে। একে অন্যের জাতি ও ধর্ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। গভীর আতঙ্কে দুজন নিজেদের মধ্যে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করেছে বিপরীত মানুষটি গোপন কোনো অভিসন্ধি নিয়ে ক্ষতি করতে চায় কিনা

তারা যখন একে অন্যের সঙ্গে গল্প করছে এবং পরিস্থিতিটাকে বোঝার চেষ্টা করছে তখন বাইরে প্রবল উত্তেজনা। চারিদিকে সেনাবাহিনীর টহল। পাশাপাশি বন্দুকধারী পুলিশ ঘুরছে। অর্থাৎ চারপাশ জুড়ে রয়েছে মৃত্যুর ইশারাময় সংকেত। সুতরাং 'আদাবগল্পের মধ্যে এমন এক পরিবেশের ছবি অঙ্কিত হয়েছে যেখানে পদে পদে মৃত্যুভয় অপেক্ষা করেছে

এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে মুসলমান মাঝি জানায়তার কাছে ইদের পোশাক পরিচ্ছদ রয়েছে। সুতরাং তাকে বাড়ি ফিরতেই হবে। এই কথাগুলি শুনে হিন্দু সুতাকলের মজুরের মনে কষ্ট হয়। যখন নৌকার মাঝি বিদায় নিয়ে চলে যায়ঠিক সেই সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। মাঝি যেভাবে মৃত্যুর আগে তার আক্ষেপের কথা শোনায় তা আমাদের মনকে ব্যথিত করে
 
5 'এমনভাবে মানুষ নির্মম নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে কী করে?'- উদ্ধৃতিটির আলোকে সেই সময়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটটি আলোচনা করো 
উত্তর: ব্রিটিশ সরকারের 'ডিভাইড অ্যান্ড বুলনীতির ফলে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে পড়ে। শহর জুড়ে শুধু হানাহানি দেখা যায়। গুপ্তহত্যালুঠতরাজ১৪৪ ধারাসেনাবাহিনির অত্যাচার-সব মিলিয়ে এক আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। চারিদিকে চিৎকারকান্নাআর্তনাদ শোনা যায়
এমন এক ভয়ংকর পরিবেশকে সামনে রেখে সমরেশ বসু লিখেছেন 'আদাবগল্পটি। দাঙ্গা বিধ্বস্ত শহরে দুজন অচেনা-অজানা মানুষ মুখোমুখি বসে এমন এক নিষ্ঠুর অবস্থার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে চেয়েছে। বস্তুতএই গল্পে ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা বিধ্বস্ত সময় ও সংকটের বিশ্বস্ত ছবি তুলে ধরেছেন সমরেশ বসু
 
6. 'রাত্রির নিস্তব্ধতাকে কাঁপিয়ে দিয়ে মিলিটারি টহলদার গাড়িটা একবার ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে একটা পাক খেয়ে গেল'
উত্তর: উৎসঃ  'পরিচয়পত্রিকায় প্রকাশিত সমরেশ বসুর 'আদাবগল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে

প্রসঙ্গঃ দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অবস্থান সম্পর্কে এই প্রসঙ্গটি এসেছে
তাৎপর্যঃ দাঙ্গা মোকাবিলার জন্যে শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা। এক-এক সময় শোনা যাচ্ছিল লুঠেরার উল্লাস ধ্বনি। কখনও শোনা যাচ্ছিল মৃত্যু ভয়ে ভীত মানুষের আর্তনাদ। রাত্রির নিস্তব্ধতা নেমে এলে মিলিটারির টহলদার গাড়ির ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে পাক খেয়ে যাওয়ার শব্দ-রীতিমতো পরিবেশের আতঙ্ককে আরও বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছিল
 
7. 'ডাস্টবিনের দুইপাশে দুটি প্রাণীনিস্পন্দ নিশ্চল'
উত্তর: উৎস বিশ শতকের চল্লিশের দশকের প্রখ্যাত কথাকার সমরেশ বসুর 'আদাবগল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে। প্রসঙ্গ ৩ দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে পারস্পরিক সন্দেহ-ভয়- আতঙ্ক থেকে এই প্রসঙ্গটি এসেছে

তাৎপর্য পরস্পর বিপরীত দুদিক থেকে দুটি গলির দুটি মুখ যে বড়ো একটি জায়গায় মিশেছেসেই মোড়ে দুজন ভীত সন্ত্রস্ত লোক পড়ে থাকা একটি ডাস্টবিনের আড়ালে আত্মগোপন করে। দুজন পরস্পরের মধ্যে ভাব বিনিময় করতে চায়। কিন্তু দুজনের মনেই প্রবল সংশয়। কেননাদুজন জানতে চাইছে তারা কে কোন্ জাতি ও ধর্মের মানুষ। দুজনেই দুজনকে সন্দেহ করে-তাদের কে হিন্দুকে মুসলমানসেই অস্বস্তিকর পরিবেশে লেখক উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন
 
8.'স্থান-কাল ভুলে রাগে-দুঃখে মাঝি প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে'
উত্তর: উৎস প্রখ্যাত কথাকার সমরেশ বসুর 'আদাবগল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে
প্রসঙ্গ মাঝির মনে সন্দেহ জাগে। তার মনে হয় সুতা মজুর তাকে আটকে রেখে কোনো বিপদে ফেলতে চায়। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি 

তাৎপর্য বিপদের সম্ভাবনা উপলব্ধি করেই সুতা মজুর মাঝিকে ডাস্টবিনের পাশ থেকে যেতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু মাঝি কোনো কথা শোনেনি। মাঝির জেদ দেখে সুতা মজুরের মনেও তখন প্রবল সংশয় ও সন্দেহ দেখা যায়। মাঝিকে সে বলেমাঝির মতলব ভালো মনে হচ্ছে না। কেননাসে হয়তো কোনো লোকজন ডেকে এনে সুতা মজুরের ক্ষতি করতে পারে। একথা শুনে মাঝি স্থান-কাল ভুলে রাগে-দুঃখে চেঁচিয়ে ওঠে। কেননামাঝি কোনো ক্ষতি করতে চায়নি। মাঝির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট অনুমান করা যায়-মাঝির মধ্যেও ছিল এক দরদি মানুষ

9. 'অন্ধকারের মধ্যে দু'জোড়া চোখ অবিশ্বাসে উত্তেজনায় আবার বড়ো বড়ো হয়ে উঠল'
উত্তর: উৎস সমরেশ বসু প্রণীত 'আদাবগল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে
প্রসঙ্গ অন্ধকারের মধ্যে অপরিচিত দুজন মানুষ পরস্পরের পরিচয় জানতে চেয়েছিল। তাদের মধ্যে অবিশ্বাস ছিলসন্দেহ ছিলসংশয় ছিল। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি
তাৎপর্য ডাস্টবিনের পাশে হিন্দু ও মুসলমান পৃথক সম্প্রদায়ের দুজন মানুষ একে অপরকে চেনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অন্ধকারের মধ্যে কেউ কাউকে বুঝতে পারছিল না। উভয়ের কথোপকথনের সময় মুসলমান মাঝি দেশলাই কাঠি জ্বালিয়ে 'সোহান্ আল্লাবলে উঠলে সুতা-মজুর চমকে ওঠে। কেননাসে বুঝতে পারেতার সামনের মানুষটি মুসলমান। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সামনে দাঁড়িয়ে দুটি মানুষ তখন অসম্ভব অবিশ্বাসে দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে। লেখক এই বিষয়টি বর্ণনা করতে গিয়ে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন
 
10.'সুতো-মজুরের বুকের মধ্যে টনটন করে ওঠে'
উত্তর: উৎস বিশ শতকের চল্লিশের দশকের প্রখ্যাত কথাকার সমরেশ বসুর 'আদাবগল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে
প্রসঙ্গ পরিবারের কাছে ফিরতে চেয়েছে মুসলমান মাঝি। কীভাবে সে ফিরবে এ কথা ভেবে সুতা-মজুরের মনের অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে লেখক এই উক্তি করেছেন
তাৎপর্য সামনে ইদ। ইদ উপলক্ষে বিরাট আয়োজন। ফলে মুসলমান মাঝিকে বাড়ি ফিরতেই হবে। ইতিমধ্যেই আটদিন অতিবাহিত হয়েছে। সে পরিবারের কোনো খবর পায়নি। আজকে বাড়ি ফেরার প্রয়োজনে সে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে যাবে। একদিকে মাঝির বাড়ি ফেরা এবং পাশাপাশি মৃত্যুর হাতছানি-এই দুইয়ের মাঝখানে থেকে সুতা-মজুরের মনের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। দেখার বিষয় এই যেদুজন মানুষ সমস্ত সংশয়-সন্দেহ কাটিয়ে শেষপর্যন্ত একে অন্যের জন্যে মঙ্গল প্রার্থনা করেছে। সুতা-মজুরের বুকের মধ্যে টনটন করে ওঠার অর্থ হলো গভীর এক মমত্ববোধ জেগে ওঠা

11. 'ভুলুম না ভাই এই রাত্রের কথা'
উত্তর: উৎস অসংখ্য কালজয়ী ছোটোগল্প প্রণেতা সমরেশ বসুর 'আদাবগল্প থেকে এই উক্তিটি নেওয়া হয়েছে
প্রসঙ্গ হিন্দু ও মুসলমান পৃথক দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে কী গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক হতে পারে তা বোঝাতে গিয়ে এই উক্তিটি করা হয়েছে
তাৎপর্য দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর মুসলমান মাঝি হিন্দু সুতা-মজুরের কাছ থেকে বিদায় নিতে চেয়েছে। ততক্ষণে তাদের মধ্যে গভীর এক হৃদ্য সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তারা একে অন্যের মঙ্গলকামনা করেছে। অর্থাৎ উভয়ের মধ্যে আর সম্পর্কের কোনো সংকট তৈরি হয়নি। খুশির ইদের আগের রাতে মাঝি অত্যন্ত আপ্লুত হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দু সুতা-মজুরের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে মুসলমান মাঝি
 
 
Paid Answer Link (Membership User)
 
Editing By:- Lipi Medhi