হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
👉Download Books PDF
👉Paid Answer (For Membership User)
উত্তর : হীরেন্দ্রনাথ দত্ত রচিত দুটি বই-এর নাম- ইন্দ্রজিতের খাতা ও ইন্দ্রজিতের আসর।
১.২ কোন্ নামে তিনি সমধিক পরিচিত?
উত্তর: 'ইন্দ্রজিৎ' নামে হীরেন্দ্রনাথ দত্ত সমধিক পরিচিত।
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
২.১ শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ের প্রথম যুগে যাঁরা রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে বিদ্যালয়ের কাজে এসে যোগ দিয়েছিলেন, এমন কয়েকজনের কথা আলোচনা করো।
উত্তর: শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ের প্রথম যুগে যাঁরা রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে বিদ্যালয়ের কাজে এসে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই বঙ্গীয় বিদ্যাচর্চার অঙ্গনে নিজেদের যথাযথ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধুশেখর শাস্ত্রী, ক্ষিতিমোহন সেন, নন্দদুলাল সেনগুপ্ত প্রমুখ।
১. হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত স্নেহধন্য ছিলেন হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রহ্মচর্যাশ্রমে সংস্কৃতের অধ্যাপক রূপে • দীর্ঘদিন তিনি পড়িয়েছিলেন। অধ্যাপনাকালেই তিনি কবির অভিপ্রায় অনুসারে ১৩১২ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' সংকলন শুরু করেন। ১৩৫২ বঙ্গাব্দে এই গ্রন্থ রচনার কাজ সমাপ্ত হয়। বিশ্বভারতী তাঁকে ডি.লিট এবং ১৯৫৭ খ্রি. 'দেশিকোত্তম' উপাধি দ্বারা সম্মানিত করে।
২. বিধুশেখর শাস্ত্রী: মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিধুশেখর শাস্ত্রী 'কাব্যতীর্থ' হন। ১৩১১ বঙ্গাব্দে শান্তিনিকতনে যোগ দেন। তিরিশ বছর বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনা করেন। এরপর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং 'আশুতোষ অধ্যাপক' পদে নিযুক্ত হন। তিনি ফরাসি, জার্মান, তিব্বতী, চিনা ও ইংরেজি ভাষা অধ্যয়ন করেন। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭টি। তার মধ্যে ৩টি ইংরেজি ভাষায়। গ্রন্থগুলিতে ন্যায়, দর্শন, ব্যাকরণ, শব্দকোষ, পালি, বৌদ্ধধর্ম-পরিচয় প্রভৃতি নানা বিচিত্র বিষয়ের সমাবেশ আছে।
৩. ক্ষিতিমোহন সেন: ১৯০৮ খ্রি. রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে ক্ষিতিমোহন সেন বিশ্বভারতীর ব্রহ্মচর্যাশ্রমে যোগদান করেন। বিশ্বভারতী বিদ্যাভবনে অধ্যক্ষরূপে কর্মজীবন শেষ করেন। তাঁর 'Hinduism' গ্রন্থটি ফরাসি, জার্মান ও ডাচ্ ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো-'কবীর', 'ভারতীয় মধ্যযুগের সাধনার ধারা', 'দাদু', 'ভারতের সংস্কৃতি', 'বাংলার সাধনা', 'জাতিভেদ', 'ভারতের হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত সাধনা', 'বলাকা কাব্য পরিক্রমা' ইত্যাদি।
উত্তর: কোন্ কৃতিত্ব: এখানে সাধারণ মানুষের দ্বারা অসাধারণ কার্য সম্পাদনের কৃতিত্বের কথা বলা হয়েছে।
এই কৃতিত্ব শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য বলে লেখক মনে করেছেন। কারণ এরূপ মানুষ শান্তিনিকেতন নিজের হাতে তৈরি করেছে।
> 'শান্তিনিকেতনের প্রাপ্য' বলে মনে হবার কারণ: শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রনাথের সাধনার কেন্দ্রস্থল। এই প্রতিষ্ঠানে এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা সাধারণ হয়েও শেষ পর্যন্ত জগৎজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। অর্থাৎ, শান্তিনিকেতনের সান্নিধ্যে এসে তাঁদের জীবনধারা বদলে গিয়েছিল। তাই লেখকের মনে হয়েছে, এইসব বরেণ্য মানুষের বিশ্বজোড়া খ্যাতির মূলে রয়েছে শান্তিনিকেতনের অবদান। তাই উদ্ধৃত বক্তব্যটি প্রকাশ করা হয়েছে।
লেখক এ প্রসঙ্গে শান্তিনিকেতনের কোন্ কোন্ গুরুত্বপূর্ণ অবদানের উল্লেখ করেছেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত শান্তিনিকেতনের অবদানকে আলোচনাকালে কতকগুলি বিষয় তুলে ধরেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তিনিকেতন সমগ্র বিশ্বকে এই বার্তা দিয়েছে-বিদ্যালয় শুধু বিদ্যাদান করে না, বিদ্যাচর্চার পীঠস্থান হয়েও কাজ করে।
শান্তিনিকেতন আসলে বিদ্যা-বিকিরণের স্থান। বিদ্যার্জনের পথ সুগম করে দেওয়া বিদ্যাকেন্দ্রের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। শান্তিনিকেতন এই কর্তব্যটি সম্পন্ন করেছে।
রবীন্দ্রনাথ নিজে তাঁর সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তিনি যাঁদের আহ্বান করেছিলেন তাঁরাও নিজেদের নিঃশর্তে সমর্পণ করেছেন। ফলে বহু নবীন প্রতিভার জন্ম হয়েছে শান্তিনিকেতনে। তাই প্রাবন্ধিক উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।
উত্তর: স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব: লেখক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত এই প্রসঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধুশেখর শাস্ত্রী, ক্ষিতিমোহন সেন প্রমুখ ব্যক্তিদের কথা স্মরণ করেছেন।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় তাঁদের অবদান: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের সাধনপীঠ শান্তিনিকেতনে এসে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জগতের সবথেকে দুর্লভ এক কর্ম করেছেন। তিনি বাংলা ভাষার বৃহত্তম অভিধান রচনা করেছেন। বিধুশেখর শাস্ত্রী ছিলেন বহু ভাষাবিদ। তিনি ১৭টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'মহামহোপাধ্যায়' উপাধি পান। সংস্কৃত পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেন একাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। তাঁর গ্রন্থ হিন্দি, গুজরাটি ও অসমিয়া ভাষায় অনূদিত হয়েছে। 'কবীর', 'দাদু', 'বাংলার বাউল' তাঁর অসামান্য গ্রন্থ।
উত্তর: কাদের কথা হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধুশেখর শাস্ত্রী ও ক্ষিতিমোহন সেন প্রমুখ ব্যক্তিত্বের কথা বলা হয়েছে।
উল্লিখিত দাবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন নিজেকে নিঃশেষে দান করেছিলেন শান্তিনিকেতনের কাজে; তেমন তিনি যাঁদের সেখানে এনেছিলেন, তাঁরাও নিঃশর্তে সর্বস্ব প্রদান করেছিলেন। এখানে সেই দাবির কথা বলা হয়েছে।
নিয়োজিত হবার কারণ: এই দাবি পূরণের লক্ষ্যে প্রাণপণে তাঁদের নিয়োজিত হওয়ার পিছনে কারণ ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণা। কবির সান্নিধ্যে এসে তাঁরা জীবন সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে শেখেন। ফলে নিজেদের সারস্বত সাধনায় সমর্পণ করেন।
উত্তর: শান্তিনিকেতনের সঙ্গে সম্পর্ক জমিদারি মহল্লা পরিদর্শনকালে আমিনের সেরেস্তায় নিযুক্ত হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে রবীন্দ্রনাথ জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি দিনে সেরেস্তার কাজ সেরে রাত্রিতে কী করেন? প্রত্যুত্তরে হরিচরণবাবু বলেছিলেন তিনি সংস্কৃত চর্চা করেন। একখানা বইয়ের পাণ্ডুলিপিও তিনি রবীন্দ্রনাথকে দেখান। সেই পাণ্ডুলিপি দেখে রবীন্দ্রনাথ তার মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন। সেই থেকে শান্তিনিকেতনের সঙ্গে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
সারস্বত-সাধনার পরিচয়: ১৩০৯ সালে হরিচরণ শান্তিনিকেতনে যোগদান করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি অসমাপ্ত গ্রন্থ সমাপ্ত করেন। এরপর কবির আহ্বানে সুবৃহৎ বাংলা অভিধান রচনায় মনোনিবেশ করেন। ১৩১২ সাল থেকে ১৩৫২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ চল্লিশ বছর তিনি এই গ্রন্থ সম্পাদনায় অতিবাহিত করেন। এই মহান কর্মের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরোজিনী স্বর্ণপদক এবং বিশ্বভারতী থেকে দেশিকোত্তম (ডি.লিট) উপাধিতে ভূষিত হন।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অসমাপ্ত 'সংস্কৃত প্রবেশ' নামক পুস্তকটি রচনার ভার হরিচরণবাবুর হাতে অর্পণ করেন। শান্তিনিকেতনে বসবাসের শুরু থেকে বিদ্যাচর্চায় যে উৎসাহ ও প্রেরণা তিনি কবির কাছ থেকে পেয়েছিলেন, হরিচরণবাবুর কাছে তা ছিল দেবতার আশীর্বাদ স্বরূপ।
এক সময় প্রবল আর্থিক সংকটের কারণে হরিচরণবাবু কলকাতায় ফিরে যান। কবি তখন মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্রের কাছে অনুরোধ করে মাসিক পঞ্চাশ টাকা বৃত্তি ধার্য করিয়েছিলেন। ১০৫ খণ্ডে সমাপ্ত অভিধান-মুদ্রণ শেষ হওয়ার পূর্বে কবি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। হরিচরণবাবু জানিয়েছেন, যিনি তাঁর প্রেরণাদাতা, তাঁর হাতে এর শেষ খণ্ড অর্পণ করতে পারেননি।
জীবনের চল্লিশ বছরের সাধনায় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেন এক মহাযোগী হয়ে উঠেছিলেন। হীরেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন, বাঙালির জীবনে ধৈর্য ও নিষ্ঠার যে অভাব দেখা যায়, সেই অভাব হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ছিল না। এভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে হরিচরণবাবুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যের পরিচয় পাওয়া যায়।
উত্তর: কোন্ কাজ এখানে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' রচনার কথা বলা হয়েছে।
বিরাট কাজ বলার কারণ: একে বিরাট কাজ বলার কারণ, এটি হল বাংলা ভাষার বৃহত্তম অভিধান। ৩৭/৩৮ বছর বয়সে তিনি অভিধান গ্রন্থ রচনার কাজে হাত দেন। ১৩১২-১৩৫২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ১০৫টি খণ্ডে এই বৃহদায়তন গ্রন্থটি মুদ্রিত হয়। এই অভিধানে বাংলা এবং সংস্কৃত সাহিত্য থেকে বহু দৃষ্টান্ত তুলে ধরে লেখক ভাষার বৈচিত্র্য দেখিয়েছেন। সুতরাং এমন এক দুঃসাধ্য কর্মপ্রয়াসকে 'বিরাট কাজ' বলাই সংগত।
২.৯ হরিচরণবাবুকে দেখে তাঁর সম্পর্কিত শ্লোকটি আমার মনে পড়ে যেত'- শ্লোকটি কার লেখা? শ্লোকটি উদ্ধৃত করো।
উত্তর: শ্লোকের রচয়িতা উদ্ধৃত শ্লোকটি দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত। শ্লোক শ্লোকটি নিম্নরূপ-
কোথা গো ডুব মেরে রয়েছ তলে
হরিচরণ! কোন গরতে?
বুঝেছি! শরদ-অবধি জলে
২.১০ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংকলিত অভিধানটির নাম কী? গ্রন্থটির রচনা, মুদ্রণ ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে নানাবিধ ঘটনার প্রসঙ্গ প্রাবন্ধিক কীভাবে স্মরণ করেছেন?
উত্তর: অভিধানের নাম: হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংকলিত অভিধানটির নাম 'বঙ্গীয় শব্দকোষ'।
গ্রন্থ রচনার ঘটনা: রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে হরিচরণবাবু এই গ্রন্থটি ১৩১২ সাল থেকে ১৩৫২ সালের মধ্যে রচনাকার্য সমাপ্ত করেন। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে তিনি অক্লান্ত সাধনা করেছিলেন। অর্থকে সুস্পষ্ট করতে বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্য থেকে বহু উদ্ধৃতি গ্রহণ করেছিলেন। গ্রন্থটি মুদ্রণের কাজ শেষ হওয়ার আগে প্রাবন্ধিক তাঁকে শান্তিনিকেতনের লাইব্রেরি গৃহে নিবিষ্ট মনে' কাজ করতে দেখেছেন। তাছাড়াও তিনি অবসর গ্রহণের পরও নিজের কাজে এত অভিনিবিষ্ট থাকতেন যে, কোনো মাস মাহিনার খবর থাকত না।
উত্তর: প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত ব্যক্তিগত স্মৃতির প্রসঙ্গে শান্তিনিকেতনের একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। যখন প্রাবন্ধিক শান্তিনিকেতনের কাজে যোগ দেন, তখন হরিচরণবাবুর অভিধানটির মুদ্রণকার্য সম্পন্ন হয়নি। সেই সময় তিনি হরিচরণবাবুকে লাইব্রেরি গৃহের একটি ছোট্ট কক্ষে একমনে কাজ করতে দেখেছেন।
হরিচরণবাবু যেন শব্দের সমুদ্র থেকে মুঠো মুঠো অর্থ কুড়িয়েছেন। অভিধান ছাপানোর কাজ শেষ হওয়ার পরেও তাঁর সাধনা থামেনি। তাঁর কাজের প্রতি ছিল গভীর নিষ্ঠা। জীবনের শেষপ্রান্তে উপনীত হয়েও কখনো ক্লান্ত হননি। তাঁর গভীর নিষ্ঠা, নিরন্তর বিদ্যাচর্চা ও নিরলস পরিশ্রম নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করে।
২.১২ তিনি অভিধান ছাড়াও কয়েকখানা গ্রন্থ রচনা করে গিয়েছেন।' -হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত অন্যান্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম ও বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর: 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের সবথেকে বড়ো কাজ। এছাড়া তিনি ম্যাথু আর্নল্ডের 'শোরাব রোস্তম' এবং 'বশিষ্ঠ বিশ্বামিত্র', 'কবিকথা মঞ্জুষা' প্রভৃতি গ্রন্থ অমিত্রাক্ষর ছন্দে অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য ছাত্রপাঠ্য গ্রন্থ: 'সংস্কৃত প্রবেশ', 'পালি প্রবেশ', 'ব্যাকরণ কৌমুদী', 'Hints on Sanskrit Translation and Composition'। তাছাড়া 'কবির কথা', 'রবীন্দ্রনাথের কথা' প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
২.১৩ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর অনুরাগ কীভাবে ব্যক্ত করেছেন, তা বিশদভাবে আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাবন্ধিক হীরেন্দ্রনাথ দত্ত ব্যক্তিগতভাবে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজেকে অনেক ঋণী বলে মনে করেছেন। প্রাবন্ধিক খুব কাছের থেকে তাঁকে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। গ্রন্থাগারের ছোটো একটি ঘরে হরিচরণবাবু থাকতেন। তখন 'বঙ্গীয় শব্দকোষ' গ্রন্থের প্রকাশনার কাজ শুরু হয়নি। যদিও গ্রন্থ লেখার কাজ সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। জীবনের সবথেকে মহার্ঘ্য কর্ম তিনি সমাপ্ত করেছেন। প্রাবন্ধিকের মতে, তিনি একজন প্রসন্নচিত্ত ও সাধক মনের মানুষ ছিলেন। আর এজন্য অকৃত্রিম পরিশ্রমের ফসল স্বরূপে ভবিষ্যতের হাতে তুলে দিয়েছেন 'বঙ্গীয় শব্দকোষ'-এর মতো এই মহামূল্যবান সম্পদ।