Chapter--33
সুভা
-----------------
👉Online MCQs Test
👉Download Books PDF
👉Paid Answer (For Membership User)
Very Short Question Answer
1. তা কেহ বুঝিল না সেটা তাহার দোষ নহে। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর: তা কেহ বুঝিল না এবং সেটা তাহার দোষ নহে।
2. আমাকে সবাই ভুলিলে বাঁচে। (বিস্ময়বোধক বাক্যে)
উত্তর: হায় হায়! আমাকে সবাই ভুলিলে বাঁচে বৈকি।
3. তাহার প্রতি বড়ো বিরক্তি ছিলেন। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর: তাহার প্রতি খুশি ছিলেন না।
4. সকল সময়ে ঠিক হয় না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর: সকল সময়ে বেঠিক হয়।
5. কখনো উজ্জ্বলভাবে জ্বলিয়া উঠে। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর: কখনো ম্লানভাবে জ্বলিয়া উঠে না।
6. তাহার চোখের ভাষা অসীম উদার। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: তাহার যে চোখের ভাষা তাহা অসীম উদার।
7. তাহার চোখের ভাষা অসীম উদার। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর: তাহার যে চোখের ভাষা তাহা অসীম অনুদার নহে।
8. গ্রামের নাম চণ্ডীপুর। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: গ্রামের যে নাম তা চণ্ডীপুর।
9. দুইধারে লোকালয়। (জটিল বাক্যে)
উত্তর: দুই ধারে যাহা আছে তাহা লোকালয়।
10. অভাব পূরণ করিয়া দেয়। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর: অভাব অপূর্ণ রাখো না।
11. উভয়ের মধ্যে সমভাষা ছিল না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর: উভয়ের মধ্যে অসমভাষা ছিল।
12. সুভার প্রকৃত নাম কী?
উত্তর: সুভার প্রকৃত নাম হলো সুভাষিণী।
13.সুভার বাবা কে?
উত্তর: সুভার বাবা হলেন বাণীকণ্ঠ।
14.সুভা কোন্ গ্রামে বাস করত?
উত্তর : সুভা চণ্ডীপুর গ্রামে বাস করত।
15.কে সুভাকে 'সু'বলে ডাকত?
উত্তর: প্রতাপ সুভাকে সু বলে ডাকত।
Short Question Answer
1. জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর: 'ভারতী' পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।
2. ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।
3. গল্পে সুভার কোন্ কোন্ বন্ধুর কথা রয়েছে?
উত্তর : গল্পে সুভার দুই অন্তরঙ্গ বন্ধু অর্থাৎ গোয়ালের দুই গাভী-সর্বশী ও পাঙ্গুলির কথা আছে।
4. 'সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন'- সুভা সম্পর্কে এ রকম উপমা লেখক ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তর : 'সুভা' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভাষিণী। সে মূক অথচ অসাধারণ মানবিক। সে কথা বলতে পারে না ঠিকই, কিন্তু তার চোখের ভাষা বলে দেয় সে কী বলতে চাইছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-
তাহার চোখের ভাষা অসীম উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর। সুভার কথা বলতে গিয়ে লেখক বারবার প্রকৃতির প্রসঙ্গ টেনেছেন। বাক্যহীনা প্রকৃতি আর মূক সুভা অনেকখানি যেন কাছাকাছি। এজন্যে সুভার সমবয়সী ছেলে-মেয়েরা তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইত না। নির্জন দুপুর যেন 'শব্দহীন' ও 'সঙ্গীহীন' সুভাও তেমন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দুটি উপমানকে ব্যবহার করে সুভার চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যকে আলোকিত করেছেন।
5. চণ্ডিপুর গ্রামের বর্ণনা দাও।
উত্তর: লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চন্ডিপুর গ্রামের একটি ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এই গ্রামের পাশ দিয়ে একটি নদী বয়ে যেত। সেই নদীটি গৃহস্থ ঘরের মেয়েটির মতো। নদীর দু-পাশের দুটি গ্রামের সঙ্গে একটি সংযোগ রেখা তৈরি হয়েছিল। গ্রামে বিচিত্র কর্মের মানুষজন থাকত। জেলেরা-মাঝিরা মধ্যাহ্নে বিশ্রাম নিতে যেত। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িগুলি ছিল আটচালা। গ্রাম জুড়ে নানা গাছগাছালি ছিল।
6.সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গলির সম্পর্ক কী রকম ছিল?
উত্তর: সুভার জীবনে সর্বশী ও পাঙ্গুলির বেশ বড়ো ভূমিকা ছিল। সুভা যখন কোনো কারণে কষ্ট পেত তখন এই মুক প্রাণী দুটি সুভার মনের কষ্ট বুঝতে চাইত। সুভা গোয়াল ঘরে প্রবেশ করে দুই বাহুর দ্বারা সর্বশীর গ্রীবা বেষ্টন করে তার কানের কাছে নিজের গলা ঘষত। পাঙ্গুলি স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে সুভাকে দেখত। সুভা নিয়ম করে তিনবার গোয়াল ঘরে যেত। এছাড়া অপ্রয়োজনেও এই গাভী দুটির কাছে আসত। এরা যেন সুভার মর্মবেদনা বুঝতে পারত। সুভার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে এরা যেন সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করত।
7."এইজন্য প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝিত”- প্রতাপের কাছে সুভা কীভাবে মর্যাদা পেত, তা গল্প অবলম্বনে লেখো।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'সুভা' গল্পের তৃতীয় পরিচ্ছেদে লিখেছেন- গোঁসাইদের ছোটো ছেলেটি তাহার নাম প্রতাপ। লোকটি নিতান্ত অকর্মণ্য।
এই অকর্মণ্য প্রতাপের একমাত্র শখ ছিল মাছ ধরা। অপরাহ্নে নদীতীরে তাকে প্রায় দেখা যেত। এই উপলক্ষে সুভার সঙ্গে প্রতাপের প্রায় দিনই সাক্ষাৎ হতো। সে এমন সঙ্গি চাইত, যে অযথা বাক্যব্যয় করবে না। কেননা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-
মাছ ধরার সময় বাক্যহীন সঙ্গিই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এজন্যে সুভাকে পছন্দ করত প্রতাপ এবং আদর করে তাকে 'সু' বলে ডাকত।
Long Question Answer
1. "তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল"- কাদের সম্পর্কে এ কথা লেখক বলেছেন। তাঁর এরূপ মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: যাদের সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে সুভার বাবা ও মায়ের সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে।
এরূপ মন্তব্যের কারণ = সুভা গল্পের চতুর্থ পরিচ্ছেদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন- 'সুভা' গল্পের চতুর্থ পরিচ্ছেদে
১. সুভার বয়স ক্রমেই বাড়িয়ে উঠিতেছে।
২. এ দিকে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতামাতা চিন্তিত হইয়া উঠিয়াছে।
সুভার মা সুভাকে তার গর্ভের কলঙ্ক বলেই মনে করে। সুভার বাবা অবশ্য অন্য সন্তানদের তুলনায় তাকে বেশি স্নেহ করে। সুভার প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে বিবাহ দেওয়া হয়। কিন্তু পাত্রপক্ষকে জানানো হয় না যে, সে মূক ও বধির। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, কন্যার অনিচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিবাহের সমস্ত আয়োজন করে সুভার বাবা-মা নিশ্চিন্তে দেশে ফেরে। তাদের এই ভেবে আনন্দ হয় যে, জাতি ও পরকাল রক্ষা পেয়েছে।
2. "প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়"- মানুষের ভাষার অভাব কীভাবে প্রকৃতি পূরণ করতে পারে তা আলোচনা করো।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'সুভা' গল্পের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে লিখেছেন- প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়। যেন তাহার হইয়া কথা কয়।
প্রকৃতি ও সুভার মধ্যে লেখক বিশেষ একটি মিল দেখিয়েছেন। এরা দুজনেই মূক। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কয়েকটি বিষয় এনেছেন এবং দেখিয়েছেন যে তারা কেউ কথা বলতে পারে না। যেমন-
১. নদীর কলধ্বনি
২. লোকের কোলাহল
৩. মাঝির গান
৪. পাখির ডাক
৫. তরুর মর্মর
এই সব মিলে মিশে সমুদ্রের তরঙ্গের মতো সুভার মনের উপকূলে এসে ভেঙে পড়ত। প্রকৃতি মূক হলেও তারও যে একটা ভাষা আছে; সুভা তা উপলব্ধি করত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বসংসারব্যাপী বিস্তৃত হতে দেখেছেন মূক প্রকৃতির নিজস্ব ভাষা। তৃণভূমি থেকে নক্ষত্রলোক পর্যন্ত বিস্তৃত সে ভাষার মর্ম উপলব্ধি করতে পারে সুভা।
3.সুভার সঙ্গে মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব কেমন ছিল তা লেখো।
উত্তর: চন্ডীপুর গ্রামে সমবয়সী বালক-বালিকারা সুভার কথা না বুঝলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন- "সুভার যে গুটিকতক অন্তরঙ্গ বন্ধুর দল ছিল না, তাহা নহে।" এই অন্তরঙ্গ বন্ধুরা হল-
১. গোয়ালের দুটি গাভী
২. ছাগল
৩. বিড়াল শাবক
শেষের দুটি প্রাণীর সঙ্গে 'সমকক্ষভাবের মৈত্রী' না থাকলেও এরা যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করত। কিন্তু সর্বশী ও পাঙ্গুলির সঙ্গে সুভার আন্তরিক হৃদ্যতা বা অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের গাঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সুভা কখন মিনতি করছে, তা তারা মানুষের অপেক্ষা ভালো বুঝতে পারত। এই দুটি গাভী সুভার মনের সমস্ত অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারত। ফলে সুভার সঙ্গে মনুষ্যেতর প্রাণীর প্রাণের সম্পর্ক রচিত হয়েছিল।
4.শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রিতে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল? তার মনের অবস্থা এরকম হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: সুভার মনের অবস্থা শুক্লা দ্বাদশীর রাতে সুভা শয়নগৃহ থেকে বেরিয়ে এসে তার চিরপরিচিত নদীতটে উপস্থিত হয়। বালিকা সুভার মন তখন ব্যথা-বেদনায় দীর্ণ। প্রকৃতিমাকে সুভা যেন দুই বাহুতে জড়িয়ে ধরে বলতে চেয়েছিল-
তুমি আমাকে যাইতে দিও না মা, আমার মতো দুটি বাহু বাড়াইয়া তুমিও আমাকে ধরিয়া রাখো। যদিও প্রকৃতি মা সুভার এই প্রার্থনায় সাড়া দেননি।
মনের অবস্থা এরকম হওয়ার কারণ = সুভা আবাল্যলালিত গ্রামটিকে ত্যাগ করতে চায়নি। সে বিবাহের বাধ্যবাধকতায় জড়িয়ে পড়তে চায়নি। তাই দেখা যায়-
১. বাবার সামনে বসে অঝোরে কেঁদেছিল।
২. বাল্যসঙ্গি সর্বশী ও পাঙ্গুলির কাছে বিদায় নেওয়ায় সময় অশ্রুপ্লাবিত হয়েছিল।
৩. প্রতাপের মাছ ধরার সময় কাছে যায়নি, দূরে ব্যথিত মনটি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সুভা প্রকৃতির বুক থেকে, তার গ্রাম থেকে চিরকালের মতো বিদায় নিতে চায়নি। তাই তার মন ব্যথায় ভরে উঠেছিল।
5.গল্পের একেবারে শেষ বাক্যটি গল্পের ক্ষেত্রে কতখানি প্রয়োজন আলোচনা করো।।
উত্তর: ছোটোগল্পের সমাপ্তি কেমন হবে সেই প্রসঙ্গে 'সোনার তরী' কাব্যের 'বর্ষাযাপন' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেন, "শেষ হয়ে হইল না শেষ”। 'দেনাপাওনা', 'ত্যাগ', 'নষ্টনীড়' গল্পের মতো সুভা গল্পের শেষে লেখক চমৎকার একটি উপসংহার টেনেছেন।
সুভা যে কথা বলতে পারে না, এই সত্য গোপন করেছিল তার পরিবার। বিবাহের পর পাত্র বুঝতে পারে বিবাহিতা এই বালিকা কথা বলতে পারে না। সুতরাং, তার মনে হয়, সুযোগ বুঝে মেয়েটির বাবা পাত্রস্থ করে মুক্ত হয়েছেন।
সুভা অবশ্য তার মনের কথা বোঝাতে পারেনি। সুযোগসন্ধানী বর পুনরায় বিবাহের বন্দোবস্ত করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-
এবার তাহার স্বামী চক্ষু এবং কর্ণেন্দ্রিয়ের দ্বারা পরীক্ষা করিয়া এক ভাষাবিশিষ্ট কন্যা বিবাহ করিয়া আনিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেখিয়েছেন, সমাজের কাছে পাত্রী যেন সুলভ কোনো পণ্যবস্তু: ইচ্ছামতো তাকে গ্রহণ-বর্জন করা যায়।