Chapter 2 

অস্থিত পৃথিবী 

----------------------

MCQs


1. সর্বাধিক সুনামি লক্ষ করা যায় ।


(a) জাপানে


(b) ফ্রান্সে


(c) ভারতে


(d) আমেরিকায়।


উত্তর: (a) জাপানে।


2. হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মৌনালোয়া আগ্নেয়গিরি হল একটি              ।


(a) সক্রিয় আগ্নেয়গিরি


(b) নিষ্ক্রিয় আগ্নেয়গিরি


(c) সুপ্ত আগ্নেয়গিরি


(d) মৃত আগ্নেয়গিরি


উত্তর: (a) সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।


3. মহাদেশীয় পাত ও মহাসাগরীয় পাতের সংযোগস্থলে সৃষ্টি হয়েছে-


(a) কুয়েনলুন পর্বত


(b) তিব্বত মালভূমি


(c) রকি পর্বত


(d) হিমালয় পর্বত


উত্তর: (c) রকি পর্বত।


4. যখন দুটি পাত একে অপরের বিপরীত দিকে চালিত হয়, তখন সেই পাত সীমান্তকে বলে ।


(a) অভিসারী পাত সীমান্ত 


(b) অপসারী পাত সীমান্ত


(c) নিরপেক্ষ পাত সীমান্ত 


(d) সংরক্ষণশীল পাত সীমান্ত


উত্তর: (b) অপসারী পাত সীমান্ত।


5. 'পাত' শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন-


(a) ম্যাকেঞ্জি


(b) উইলসন


(c) জেফ্রি


(d) পিঁচো


উত্তর: (b) উইলসন।


                                

Short Answer Question



প্রশ্ন 1: অগ্ন্যুদ্গম কীভাবে হয়?


উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় ভূগর্ভের গলিত ম্যাগমা, গ্যাস, বাষ্প ভূত্বকের কোনো ফাটল বা চ্যুতি বা গহ্বরের ছিদ্রপথ দিয়ে বিস্ফোরণসহ প্রচন্ড জোরে অথবা ধীর গতিতে ভূপৃষ্ঠে নির্গত হয়ে বা ভূত্বকে অনুপ্রবেশ করে সঞ্চিত ও শীতল হয়ে বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠন করে, সেই প্রক্রিয়াকে অগ্ন্যুদ্গম বলে। অগ্ন্যুদ্গমের প্রধান কারণগুলি হল- (i) ভূগর্ভের মাত্রাতিরিক্ত চাপ ও তাপ, (ii) প্রবল চাপে ভূগর্ভস্থ শিলার গলনাঙ্ক বৃদ্ধি, (iii) পাত বা প্লেটের ইতস্তত বিক্ষিপ্ত সঞ্চরণ, (iv) ভূগর্ভস্থ ম্যাগমার গ্যাস ও জলীয় বাষ্পে রূপান্তরিত হওয়া, (v) ভূপৃষ্ঠের দুর্বল ফাটল বা চ্যুতির উপস্থিতি; (vi) ভূপৃষ্ঠস্থ জল ফাটল পথ দিয়ে ভূগর্ভে প্রবেশ করলে সেখানকার প্রচণ্ড উন্নতার প্রভাবে জল বাষ্পীভূত হয় এবং প্রবল ঊর্ধ্বমুখী চাপের প্রভাবে সান্দ্র ম্যাগমা বাইরে বেরিয়ে আসে।


প্রশ্ন 2: পাত সঞ্চালন আমরা বুঝতে পারি না কেন?


উত্তর : বহিঃগুরুমণ্ডলের চারপাশে অবস্থিত অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে সৃষ্ট ম্যাগমা স্রোত বা পরিচলন স্রোতের প্রভাবে সুবিশাল পাতগুলি অনুভূমিকভাবে সর্বদাই চলমান আছে। পাতগুলির ওজন বা ভর এবং আয়তন বেশি হওয়ায় এরা সুদীর্ঘকাল ধরে অত্যন্ত ধীর গতিতে সঞ্চারিত হচ্ছে। যেমন-আমেরিকান পাত প্রতি বছর 2-3 সে.মি. এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট প্রতি বছর প্রায় 10 সে.মি. করে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে চলেছে। এছাড়াও ভারতীয় পাত প্রতি বছর 7-10 সে.মি. করে উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। খুব ধীরে পাত চলনের জন্য এদের সঞ্চরণ বোঝা যায় না।


প্রশ্ন 3: 'আ-আ' কী?


উত্তর: ভূপৃষ্ঠের ওপর কোথাও কোথাও অতি সান্দ্র গাঢ় লাভা প্রবাহ দেখা যায়। লাভা গাঢ় হওয়ায় বেশি দূর প্রবাহিত হতে পারে না। এই লাভা দিয়ে তৈরি লাভাক্ষেত্রের পৃষ্ঠদেশ অমসৃণ ঝামা ইটের মতো দেখতে হয় এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল অপেক্ষা কিছুটা উঁচু হয়ে অবস্থান করে। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় ভাষায় একে 'আ-আ' লাভা বলে।


প্রশ্ন 4: গুরুমণ্ডলের পদার্থগুলো প্লাস্টিকের মতো আচরণ করে কেন? 


উত্তর: ভূঅভ্যন্তরে গভীরতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেকারণে পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ অত্যন্ত উত্তপ্ত অবস্থায় আছে। গুরুমণ্ডলের উন্নতা প্রায় 2000°-3000° সে.। এই অতি তীব্র উন্নতায় সমস্ত শিলা গলে যাওয়ার কথা, কিন্তু ওপরের স্তরের প্রচণ্ড চাপে গলনাঙ্ক বেড়ে যায়। ফলে শিলা আংশিক গলে, পিচ্ছিল হয়ে প্লাস্টিকের মতো বা গলিত পিচের মতো আচরণ করে।


প্রশ্ন 5: 'পা হো হো' কী? (চুঁচুড়া দেশবন্ধু মেমোরিয়াল হাইস্কুল) 


উত্তর: 'পা হো হো' হল এক ধরনের লাভা। অত্যন্ত পাতলা ক্ষারকীয় লাভা আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত হয়ে বহুদূর প্রসারিত হয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে লাভাক্ষেত্র সৃষ্টি করে। এর উপরিভাগ পাকানো দড়ির মতো দেখতে লাগে। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় ভাষায় একে 'পা হো হো' লাভা বলে। 

                                

Long Answer Question 


প্রশ্ন 1: বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে? 


উত্তর: যে সব ঘটনায় মানুষ ও প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি, জীবের মৃতু ঘটে, বাইরের সাহায্যের প্রয়োজন হয় এবং পরিবেশের ক্ষতি সহজেই মেটে না তা হল বিপর্যয়। বিপর্যয় প্রশমনের জন বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে, সেগুলি হল-


(i) জরুরিকালীন জিনিসপত্র যেমন খাদ্য, ঔষধ, আলো, শুকনে খাবার, চাল-ডাল, জামা-কাপড়, পানীয় জল ইত্যাদি গুছিয়ে রাখা।


(ii) বাড়ির ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্বল স্থান চিহ্নিত করা এবং মেরামত করা।


(iii) ভূমিকম্প চলাকালীন বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসা, অথবা শস্ত আসবাবপত্রের নীচে আশ্রয় নেওয়া।


(iv) রেডিয়ো ও টিভির মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়/বন্যার আগাম সতর্কবার্তা জারি করা ও বিপর্যয় সংক্রান্ত গুজব প্রতিরোধ করা।


(v) অঞ্চলভেদে ধরণ, সম্ভাবনা বিপর্যয়ের ধরন, সম্ভাবনা ও তার ফলাফল সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।


(vi) প্রচুর বৃক্ষরোপণ করা, মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা ও বনভূমিতে পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা।


(vii) বিপর্যয় প্রশমনে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাও পরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়ন করা।


(viii) বিপর্যয় প্রতিরোধে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দল গঠন করতে হবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা।


(ix) বিপর্যয় পরবর্তী প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতির অনুসন্ধান করা।


প্রশ্ন 2: অগ্ন্যুৎপাতের কারণগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।


উত্তর: সংজ্ঞা: যে প্রক্রিয়ার দ্বারা ভূঅভ্যন্তরের গলিত ম্যাগমা, গ্যাস, ধোঁয়া, বাষ্প, রাসায়নিক উপাদান ভূত্বকের কোনো ফাটল বা দুর্বল স্থানের মধ্য দিয়ে নিঃশব্দে বা বিস্ফোরণ সহকারে ধীরে গতিতে বা প্রচন্ড দ্রুতবেগে ভূপৃষ্ঠে নির্গত হয়ে সঞ্চিত হয় বা ভূত্বকের বিভিন্ন ফাটলে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠন করে, সেই প্রক্রিয়াকে অগ্ন্যুৎপাত বলে।


অগ্ন্যুৎপাতের বা অগ্ন্যুদ্গমের কারণসমূহ:


1. পাত সঞ্চালন: ভূবিজ্ঞানী জেভিয়া লি পিঁচো-র 'পাত সংস্থান তত্ত্ব' অনুসারে বলা যায় যে, একটি মহাসাগরীয় পাত ও একটি মহাদেশীয় পাত যখন অভিসারী হয়, তখন উভয় পাতের মিলন স্থলে প্রবল চাপের বৃদ্ধির ফলে সেখানকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নিম্নগামী মহাসাগরীয় পাতসহ সেই স্থানের ম্যাগমা গলে গিয়ে অধিক তরল হয়ে হালকাও প্রসারিত হয়ে ওই তরল ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের দুর্বল স্থান দিয়ে নির্গত হয়ে এসে সঞ্চয়জাত পর্বত বা আগ্নেয় পর্বতের সৃষ্টি হয়।


2. উয়তা বৃদ্ধি: ভূঅভ্যন্তরে গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উন্নতা বৃদ্ধির প্রভাবে সেখানে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের পদার্থসমূহ আরও তরল এবং গ্যাসীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে এবং আয়তনে প্রসারিত ও হালকা হয়ে ভূপৃষ্ঠের ফাটল দিয়ে নির্গত হয়।


3. চাপের হ্রাসবৃদ্ধি: ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে কোথাও ক্ষয় ও কোথাও সঞ্চয় কাজ হলে তার প্রভাব ভূগর্ভের ম্যাগমার উপর পড়ে। চাপের ফলে ম্যাগমার গলনাঙ্ক বৃদ্ধিতে ঘনত্ব বাড়ে এবং চাপমুক্ত হলে ঘনত্ব কমে ম্যাগমা প্রসারিত প্রসারিত ও হালকা হয়। চাপের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটলে শিলাস্তরে ফাটল সৃষ্টি হয় এবং সেখান থেকে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।


4. ভূমিকম্প: প্রবল শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে ভূপৃষ্ঠে সৃষ্ট ফাটল পথে ম্যাগমা নির্গত হয়।


5. তেজস্ক্রিয় পদার্থ: ভূঅভ্যন্তরের তেজস্ক্রিয় পদার্থের ভাঙনে সৃষ্ট তাপ বিকিরণের ফলে ম্যাগমা গলে গিয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পায় ও প্রসারিত হয়ে পার্শ্ববর্তী অর্ধগলিত শিলার তুলনায় হালকা বলে ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে।


6. ভূত্বকের দুর্বল স্থান: ভূত্বকের দুর্বল স্থান বা ফাটল বা চ্যুতির উপস্থিতি থাকলে সেখান থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়।


7. ম্যাগমার প্রকৃতি: ম্যাগমা ক্ষারকীয় হলে তা আয়তনে বৃদ্ধি পেয়ে হালকা হয়ও ঊর্ধ্বমুখী চাপ দেয়। ক্রমে তা ভূপৃষ্ঠে নির্গত হয়।


৪. ভূগর্ভে জলের অনুপ্রবেশ: ভূগর্ভে জল প্রবেশ করলে সেখানকার অক্ষোকৃত বেশি তাপে জল বাষ্পে পরিণত হয় ও ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করে। যা ভূত্বকের দুর্বল স্থান দিয়ে নির্গত হয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়।


9. প্লিউমের অবস্থান: ভূগর্ভের তপ্ত অঞ্চল (Hotspot) থেকে ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহের ফলে ভূত্বক প্রথমে ফুলে ওঠে। তারপর ভূত্বকে সৃষ্ট একাধিক ফাটল থেকে ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা নির্গত হয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়।


প্রশ্ন 3: ভূমিকম্পের কারণগুলি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।


উত্তর: ভূমিকম্পের নানাবিধ কারণগুলিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল-


(ক) প্রাকৃতিক কারণ:


(1) পাত সঞ্চালন: আধুনিক ভৌগোলিক মতে ভূত্বক কতকগুলি সঞ্চরণশীল পাতের সমন্বয়ে গঠিত। গতিশীল পাতগুলি যখন পরস্পর থেকে দূরে সরে যায়, বা পরস্পরের কাছে এলে বা পাশাপাশি চলনের ফলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।


(2) ভূআলোড়ন: ভূঅভ্যন্তরে ম্যাগমা গহ্বরের পরিচলন স্রোতের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের কোথাও সংকোচন, আবার কোথাও প্রসারণে ভূপৃষ্ঠের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে ভূমিকম্প সংঘঠিত হয়।


(3) অগ্ন্যুৎপাত: অগ্নুৎপাতের সময় আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে উত্তপ্ত লাভার প্রবল চাপে ভূমিকম্প হয়।


(4) নবীন ভঙ্গিল পর্বতমালা: নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে গঠন প্রক্রিয়া চলায় ভূপৃষ্ঠের স্থিতিশীলতা এখনও না আসায়, মাঝে মাঝে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।


(5) ধস: সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ধস নামলে ভূমিকম্প হয়।


(6) বাষ্পরাশিতে চাপ: কোনো কারণে ভূগর্ভে সঞ্চিত বাষ্পরাশিতে চাপের কম বা বেশিতে ভূমিকম্প হয়।


(7) হিমানী সম্প্রপাত: পার্বত্য অঞ্চলে হিমানী সম্প্রপাতের ফলে ভূ মিকম্প হয়।


(৪) কার্স্ট অঞ্চলে ছাদের ধস: চুনাপাথর যুক্ত অঞ্চলে ভূঅভ্যন্তরের জলধারা ক্ষয়ে পাতলা হওয়া গুহার ছাদ ধসে পড়ে, ভূমিকম্প ঘটায়।


(9) উল্কাপাত: উল্কা বা ধুমকেতুর মতো বিশাল বস্তুর সঙ্গে পৃথিবীপৃষ্ঠের সংঘাতের ফলে ভূমিকম্প হয়।


(10) ভূগর্ভস্থ তাপ বিকিরণ: ভূগর্ভ ক্রমাগত তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হচ্ছে। ফলে শিলাস্তরের উপরে টান ও পীড়নের পরিমান বৈশি হলে ফাটলের সৃষ্টি হয় ফলে ভুপৃষ্ঠের স্থিতিশীলতা না ও ভূমিকম্প ঘটে।


(খ) অপ্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণ:


(1) জলাধার নির্মাণ: নদীতে বাঁধ নির্মাণের ফলে পৃষ্ঠ জলাধারে জলরাশির চাপে ভূকম্পন হতে পারে।


(2) পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ: বর্তমানে বিভিন্ন রাষ্ট্র ভূ-অভ্যন্তরে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবার সময় পার্শ্ববর্তী অঞ্চয়ে ভূমিকম্প হয়।


(3) অন্যান্য: প্রকৃতিকে মানুষ নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে গিয়ে কৃত্রিমভাবে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে। যেমন-ডিনামাই দিয়ে পাহাড় ফাটিয়ে পাহাড় কেটে রাস্তা, গিরিপথ, সুড়ঙ্গ তৈরি করার সময় বা, অবৈজ্ঞানিকভাবে খনিজ পদার্থ উত্তোলন করার সময়ও ভূমিকম্প হয়ে থাকে।


প্রশ্ন 4: পাত সংস্থান তত্ত্বটি (Plate Tectonic Theory) বিশ্লেষণ করো।


উত্তর: মহাসাগর ও মহাদেশের উৎপত্তি ও বণ্টন, পর্বত, পর্বতশ্রেণি মালভূমি, আগ্নেয়গিরি, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প প্রভৃতি বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়ার সর্বাধুনিক ও সর্বজনগ্রাহ্য তত্ত্বটি হল পাত ভূগাঠনিক তত্ত্ব।


(i) প্রবক্তা: কানাডার প্রখ্যাত ভূপদার্থবিদ জে. তুজো, উইলসন (সর্বপ্রথম 'প্লেট' কথাটি ব্যবহার করেন), ডি.পি. ম্যাকেঞ্চি আর.এল পার্কার, উইলিয়াম জে. মরগ্যান, বি. ঈশাক, হোমস, জে অলিভার, ফ্রান্সের জেভিয়া লি. পিঁচো প্রমুখ এই তত্ত্বটিকে সমৃশ করেন। উল্লেখ্য, জেভিয়া লি পিঁচোকে 'পাত সংস্থান তত্ত্বের প্রকৃত জনক বা স্রষ্টা বলা হয়। কারণ তিনি এই তত্ত্বকে সরলীকৃর করেন।


(ii) তত্ত্বের মূল বিষয়: এই তত্ত্ব অনুসারে সমগ্র শিলামন্ডল 6 টি বৃহদাকার প্রধান পাত, ৪টি মাঝারি পাত ও 20টি ছোটো ছোটো পাতের সমন্বয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি পাত অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপর ভাসমান ও সঞ্চরণশীল অবস্থায় আছে।


(iii) পাতের গতিশীলতার কারণ: অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে সান্দ্র ম্যাগমায় সৃষ্ট পরিচলন স্রোতের প্রভাবে পাতগুলি গতিশীল হয়। পরিচলন ঊর্ধ্বমুখী অপসারী স্রোতে পাতগুলি দুদিকে সরে যায় এবং নিম্নমুখী টানে পাতগুলি একে অপরের কাছাকাছি আসে। ভূগর্ভে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ভাঙনের ফলে সৃষ্ট তাপশক্তির দ্বারা সৃষ্ট পরিচলন স্রোত পাতের সঞ্চলন ঘটায়।


(iv) পাত সীমান্তের (Plate Boundary) উৎপত্তি: পাতগুলির সঞ্চরণশীলতার বৈচিত্র্য অনুসারে তিন ধরনের সীমানা গঠন করে। সেগুলি হল- (1) পাতগুলি পরস্পরের দিকে এগিয়ে আসলে তাকে (→), যা অভিসারী পাতসীমানা, (2) পাতগুলি কখনো কখনো পরস্পরের থেকে দূরে (←→) সরে যায়, যা অপসারী পাত সীমানা, (3) কখনো কখনো পাতগুলি পরস্পরের সমান্তরালে ধাক্কা না খেয়ে (4) বিপরীত দিকে যায়, যা নিরপেক্ষ পাত সীমানা বলে।


উত্তর পেতে সদস্যপদ প্রয়োজন



Editing By- Rita Moni Bora







1. উত্তরহীন প্রশ্ন ও উত্তর সেখানে দেখা যাবে

2 বিনামূল্যে উত্তর পান থেকে এটি প্রয়োগ করুন 

3. এটি পণ্য কোড (Product Code) ব্যবহার করুন :  DAM000061