Chapter 3
------------
[MCQs]
1. বিজ্ঞানের যে শাখায় শিলা ও তার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোকপাত করে, তাকে বলে-
(a) জিয়োলজি
(b) জুলজি
(c) পেট্রোলজি
(d) মিনরেলজি
উত্তর: (c) পেট্রোলজি।
2. শিলা একটি-
(a) মৌলিক পদার্থ
(b) যৌগিক পদার্থ
(c) মিশ্র পদার্থ
(d) কোনোটিই নয়।
উত্তর: (b) যৌগিক পদার্থ।
3. হর্নব্লেল্ড একটি-
(a) জৈব পদার্থ
(b) খনিজ পদার্থ
(c) শিলা
(d) মাটি
উত্তর: (b) খনিজ পদার্থ।
4. গ্রানাইট এক প্রকার-
(a) পাললিক শিলা
(b) রূপান্তরিত শিলা
(c) জৈব শিলা
(d) আগ্নেয় শিলা
উত্তর: (d) আগ্নেয় শিলা।
5. নিঃসারী আগ্নেয় শিলার দানাগুলি-
(a) খুব বড়ো
(b) বড়ো
(c) খুব ছোটো
(d) মাঝারি
উত্তর: (c) খুব ছোটো।
6. একটি মাত্র মৌলিক পদার্থ দ্বারা গঠিত একটি শিলা হল-
(a) ব্যাসল্ট
(b) গ্রানাইট
(c) খড়িমাটি
(d) সোনা
উত্তর: (d) সোনা।
7. একটি উপপাতালিক শিলা হল-
(a) ডোলেরাইট
(b) ডলোমাইট
(c) অবসিডিয়ান
(d) গ্যাব্রো
উত্তর: (a) ডোলেরাইট।
৪. একটি পাতালিক শিলা হল-
(a) ডোলেরাইট
(b) ডলোমাইট
(c) চুনাপাথর
(d) গ্রানাইট
উত্তর: (d) গ্রানাইট।
9. অম্লধর্মী শিলায় সিলিকার পরিমাণ-
(a) 45%-এর কম
(b) 46%
(c) 55%
(d) 65% এর বেশি
উত্তর: (d) 65% এর বেশি।
10. ব্যাসল্ট শিলা গঠিত অঞ্চলের ভূমিরূপ সাধারণত-
(a) চ্যাপ্টা
(b) গোলাকার
(c) শঙ্কু আকৃতির
(d) আকৃতিবিহীন হয়
উত্তর: (a) চ্যাপ্টা হয়।
11. মাধ্যমিক শিলা হল-
(a) আগ্নেয় শিলা
(b) পাললিক শিলা
(c) রূপান্তরিত শিলা
(d) ম্যাগমা
উত্তর: (b) পাললিক শিলা।
12. সিমেন্ট তৈরির কাজে লাগে-
(a) ব্যাসল্ট
(b) গ্রানাইট
(c) চুনাপাথর
(d) কোয়ার্টজাইট।
উত্তর: (c) চুনাপাথর।
13. জয়সলমীরের সোনার কেল্লা তৈরি হয়েছে-
(a) চুনাপাথর দ্বারা
(b) বেলেপাথর দ্বারা
(c) কাদাপাথর দ্বারা
(d) ব্যাসল্ট দ্বারা।
উত্তর: (b) বেলেপাথর দ্বারা।
14. মাটি সৃষ্টির হার সবচেয়ে দ্রুত-
(a) উদ্বু-আর্দ্র জলবায়ুতে
(b) উয়-মরু জলবায়ুতে
(c) তৈগা জলবায়ুতে
(d) চিরতুষারাবৃত জলবায়ুতে।
উত্তর: (a) উয়-আর্দ্র জলবায়ুতে।
15. বেলেপাথর রূপান্তরিত হয়ে তৈরি হয় এমন একটি শিলা হল-
(a) কোয়ার্টজাইট
(b) মার্বেল
(c) স্লেট
(d) অ্যাম্ফিবোলাইট।
উত্তর: (a) কোয়ার্টজাইট।
Short Answer Question
প্রশ্ন 1: মৃত্তিকা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর: নানা শক্তির প্রভাবে শিলাসমূহ প্রতিনিয়ত ক্ষয়প্রাপ্ত বা বিশ্লেষিত হয়। যা প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে অপসারিত হয়ে কোনো নী স্থানে স্তরবিহীন ও বর্ণহীন এক আলগা শিলাচূর্ণ গঠন করে যা রেগোলিথ নামে পরিচিত।
★ প্রক্রিয়া: রেগোলিথ থেকে প্রধানত তিনটি পদ্ধতিতে মৃত্তিকা সৃষি হয়। সেগুলি হল-
(A) প্রাথমিক প্রক্রিয়া: (ক) সংযোজন: রেগোলিথের সাথে জল জৈব, খনিজ পদার্থ সংযুক্ত হয়, (খ)
অপসারণ : বাষ্পীভবন দ্বারা জল ও জৈব পদার্থ জারিত হয়ে রেগোলিথ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড অপসৃত হয়, (গ) রূপান্তর : জৈব পদার্থ হিউমাসে ও খনিজে পরিণত হয়।
(ঘ) স্থানান্তর: খনিজ ও জৈব পদার্থ গভীরে স্থানান্তরিত সঞ্চিত হয়।
(B) মৌলিক প্রক্রিয়া: হিউমিফিকেশন, খনিজকরণ, এলুভিয়েশনও ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়ায় রেগোলিথ ধীরে ধীরে মাটিতে পরিণত হয়।
(C) বিশেষ প্রক্রিয়া: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ জলবায়ুগত পরিবেশ ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের তারতম্যে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় বিশে মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন 2: উৎপত্তি অনুসারে আগ্নেয় শিলার শ্রেণিবিভাগ করে আলোচনা করো। (অথবা, পাললিক ও উপপাতালিক শিলার সংজ্ঞা ও উদাহরণ দাও।
উত্তর: সংজ্ঞা: ভূঅভ্যন্তরের ম্যাগমা ও ভূপৃষ্ঠের উপরের লাভা ধীরে ধীরে তাপ বিকিরণ করে শীতল ও জমাটবদ্ধ হয়ে যে শিলার সৃষ্টি হয়, তাকে আগ্নেয় শিলা (Igneous Rock) বলে।
★ শ্রেণিবিভাগ: উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে আগ্নেয় শিলাকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
(A) নিঃসারী বা ভলক্যানিক আগ্নেয় শিলা: ভূঅভ্যন্তরের তাপ, চাপ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে উত্তপ্ত তরল পদার্থ ভূত্বকের ফাটলপথ দিয়ে বা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ দিয়ে ভূপৃষ্ঠের উপর লাভাপ্রবাহ রূপে নির্গত হয়। ক্রমশ শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে দ্রুত শীতল ও কঠিন হয়ে যে শিলা সৃষ্টি করে, তাকে নিঃসারী আগ্নেয় শিলা বলে। উদাহরণ: ব্যাসল্ট, রায়োলাইট, অ্যান্ডিসাইট, অবসিডিয়ান প্রভৃতি।
উপবিভাগ: উৎপত্তি অনুসারে নিঃসারী আগ্নেয় শিলা আবার দুই ভাগে বিভক্ত। যথা- (ⅰ) লাভা শিলা: সাধারণত ভূগর্ভের উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের লাভারূপে নিঃশব্দে নির্গত হয়ে দ্রুত তাপ বিকিরণের মাধ্যমে প্রবাহিত হওয়ার সময় ঠান্ডা হয়ে কঠিন লাভা শিলা গঠন করে। যেমন-ব্যাসল্ট। (ii) পাইরোক্লাসটিক শিলা: আগ্নেয়গিরির প্রধান জ্বালামুখ ও অসংখ্য ছিদ্রপথে পূর্বে জমে থাকা কঠিন প্রস্তরখণ্ড, ছাই, লাভা, অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ফাটিয়ে দিয়ে সশব্দে ভূপৃষ্ঠে এসে শীতল ও কঠিন হয়ে যে শিলার সৃষ্টি করে; তাকে পাইরোক্লাস্টিক শিলা বলে। যেমন-টুফ, ল্যাপিলি।
(B) উদ্বেধী আগ্নেয় শিলা: অনেক সময় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূ পৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে না এসে ভূগর্ভের ফাটলের মধ্যেই ধীরে ধীরে শীতল ও কঠিন হয়ে উদ্বেধী আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। যেমন-গ্রানাইট, গ্যাব্রো, ডলোরাইট প্রভৃতি।
উপবিভাগ: সৃষ্টির সময়, গভীরতা ও প্রকৃতি অনুসারে উদ্বেধী আগ্নেয় শিলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা-
(i) পাতালিক শিলা: উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের অনেক নীচে (10- 14 কিমি.) বিরাট গহ্বর বা কোমল শিলাস্তরের মধ্যে প্রবেশ করে অত্যন্ত ধীরে ধীরে শীতল ও কঠিন হয়, তাকে পাতালিক শিলা বলে। যেমন-গ্রানাইট, গ্যাব্রো, ডায়োেরাইট, পেরিডোটাইট প্রভৃতি।
(ii) উপপাতালিক শিলা: ভূগর্ভের তরল ম্যাগমা যখন ভূপৃষ্ঠের নিকটস্থ কোনো ফাটল বা গহবরের মধ্যে শীতল ও কঠিন হয় তাকে উপপাতালিক শিলা বলে। যেমন- পরফাইরি, ডোলেরাইট প্রভৃতি।
প্রশ্ন 4: ব্যাসল্ট শিলার বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: নিঃসারী ক্ষারকীয় আগ্নেয় শিলা হল ব্যাসল্ট। ব্যাসল্ট জাতীয় শিলা দিয়ে মহাসাগরীয় ভূত্বক গঠিত হয়। ব্যাসল্টের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(i) খনিজ: কোয়ার্টজ, ফেল্ডসপার, অলিভিন, পাইরক্সিন, প্ল্যাজিওক্লেজ, খনিজের সমন্বয়ে ব্যাসল্ট শিলা গঠিত।
(ii) রং: গাঢ় ধূসর থেকে কালো।
(iii) প্রবেশ্যতা: ব্যাসল্ট শিলায় উল্লম্ব দারণ ও ফাটলের সংখ্যা খুব বেশি থাকায় এর প্রবেশ্যতা খুব বেশি।
(iv) ভূমিরূপ: ক্ষারকীয় পাতলা লাভা দ্রুত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় এর দ্বারা গঠিত ভূমিরূপের মাথা চ্যাপটা হয়।
(vi) কাঠিন্য: খুব শক্ত, ভারী ও ক্ষয় প্রতিরোধী হয়।
(vii) রাসায়নিক ধর্ম: সিলিকার পরিমাণ 45%-55% থাকায় এই শিলা ক্ষারকীয় প্রকৃতির।
(viii) ব্যবহার: রেল ও ট্রাম লাইনের মাঝে, ধারে ঝাঁকুনি প্রতিরোধী হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ব্যাসল্ট কংক্রিট নির্মাণের জন্য আদর্শ।
প্রশ্ন 5: স্তরায়ণ তল (Bedding Plane), বলতে কী বোঝো?
উত্তর: পাললিক শিলার একটি স্তর অন্য একটি স্তরের ওপর যোজ দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে স্তরায়ণ তল বলে। পাললিক শি ভাঙলে এই শিলাস্তরের মধ্যে বিভিন্ন স্তর দেখতে পাওয়া যা প্রবল চাপে স্তরায়ণ তল বরাবর একটি স্তর অপর স্তর যো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে ভিন্নতার কার স্তর সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন 6: পাললিক শিলা কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীপৃষ্ঠের আগ্নেয় শিলা বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির দা প্রতিঘাতে প্রতিনিয়ত চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অতি সূক্ষ্ম শিলাক পরিণত হয়ে প্রাকৃতিক শক্তির (নদী, বায়ু, হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা বাহিত হয়ে সমুদ্র, হ্রদ, নদীর তলদেশে সঞ্চিত হা থাকে। কালক্রমে ওই সঞ্চিত পলল রাশি ভূগর্ভের তাপ এ উপরের জলরাশি ও শিলাস্তরের প্রবল চাপে কঠিন হয়ে। শিলায় পরিণত হয়, তাকে পাললিক শিলা বলে। উদাহর কাদাপাথর, চুনাপাথর, বেলেপাথর প্রভৃতি।
প্রশ্ন 7: আঞ্চলিক রূপান্তর কাকে বলে?
উত্তর: প্রধানত চাপের প্রভাবে বিশাল অঞ্চল জুড়ে শিলার আঞ্চলিক বা ব্যাপক রূপান্তর ঘটে। যেমন-ভঙ্গিল পর্বত গঠনের সময় মাঝারি তাপ ও চাপে শেল থেকে স্লেটে রূপান্তরিত হয়।
প্রশ্ন 8: খনিজ কাকে বলে?
উত্তর: প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন এক বা একাধিক অজৈব মৌলিক পদার্থের যৌগ, যার নির্দিষ্ট পারমাণবিক গঠন ও রাসায়নিক সংযুক্তি আছে, যেটি কেলাসিত মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ, তাকে খনিজ বলে। উদাহরণ: মৌলিক খনিজ হল হীরে এবং যৌগিক খনিজ হল ফেল্ডসপার প্রভৃতি।
প্রশ্ন 9: আগ্নেয় শিলা কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবী উত্তপ্ত গ্যাসীয় ও তরল অবস্থা থেকে তাপ বিকিরণ করে শীতল ও কঠিন হওয়ার সময় পৃথিবীর উপর যে শিলা সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়, সেটি আগ্নেয় শিলা। এক বা একাধিক ফাটল দিয়ে নিঃশব্দে বা সশব্দে ভূত্বকের অভ্যন্তরে বা লাভারূপে বাহিরে নির্গত ভূঅভ্যন্তরের উত্তপ্ত তরল ম্যাগমা দুর্বলস্থানে ক্রমাগত তাপ বিকিরণ করে শীতল ও কঠিন হয়ে যে শিলার সৃষ্টি হয়, তাকে আগ্নেয় শিলা বলে।
উদাহরণ: গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, ডলোরাইট, পরফাইরি প্রভৃতি।
প্রশ্ন 10: শিলা কাকে বলে?
উত্তর: ভূবিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর বহিরাবরণ বা ভূত্বক যেসব উপাদান দিয়ে গঠিত হয়েছে, তাদের সাধারণভাবে শিলা বলে। শিলা বলতে শুধুমাত্র শক্ত প্রস্তরখণ্ডকে বোঝায় না-নুড়ি, কাঁকর, পলি, কাদা, মাটি, লৌহ, লবণ, স্বর্ণ প্রভৃতিকেও বোঝায়। অর্থাৎ শিলা এক বা একাধিক খনিজের সমসত্ব বা অসমসত্ব মিশ্রণে গঠিত যৌগিক পদার্থ। উদাহরণ: গ্রানাইট, ব্যাসল্ট, চুনাপাথর, বেলেপাথর, নিস্ ইত্যাদি।
প্রশ্ন 11: গ্রানাইট শিলা চিকচিক করে কেন?
উত্তর: গ্রানাইট শিলা প্রধানত কোয়ার্টজ, অভ্র, ফেল্ডসপার ও হর্নব্লেন্ড খনিজ দ্বারা গঠিত হয়। এইসব খনিজ পদার্থের মধ্যে শ্বেতবর্ণের চকচকে, মসৃণ ও পাতলা অভ্র থাকার কারণেই উজ্জ্বল ও চিকচিক করে।
Editing by:- Lipi Medhi