অধ্যায়.2

মানচিত্র অভিক্ষেপ

-----------------------

Short Question Answer

1. মানচিত্র কাকে বলে?

উত্তব়ঃ নির্দিষ্ট স্কেলে ও নির্দিষ্ট অভিক্ষেপে পৃথিবীপৃষ্ঠের ভৌগোলিক উপাদানের উপস্থাপনাকে মানচিত্র বলে।


2. অভিক্ষেপ বলতে কী বোঝায়?

উত্তব়ঃ একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে আলোর সাহায্যে বস্তুর অবয়বকে পর্দায় দ্বিমাত্রিক তলের ওপর সঠিকভাবে নিক্ষেপ করাকে অভিক্ষেপ বলে। যেমন-প্রেক্ষাগৃহের (Cinema Hall) সামনের পর্দায় যে ছবি ফুটে ওঠে তা-ই হল অভিক্ষেপ।


3. মানচিত্র অভিক্ষেপ কাকে বলে?

উত্তব়ঃ ভূগোলকের সমাক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার জালিকাকে কোনো নির্দিষ্ট তলে (কাগজ) যথাযথ ও শ্রেণিবদ্ধভাবে স্থানান্তর করাকে মানচিত্র অভিক্ষেপ বলে।


4. আলোর উৎস বিন্দু কাকে বলে?

উত্তব়ঃ সৃজনী ভূগোলকে যে বিন্দু থেকে আলোকরশ্মি বিচ্ছুরিত হয়, তাকে আলোর উৎস বিন্দু বা অবলোকন বিন্দু (View Point) বলে।


5. অভিক্ষেপ তল (Plane of Projection) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ যে পৃষ্ঠের ওপর একটি আলোর উৎস বিন্দু থেকে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখাসমূহ অভিক্ষিপ্ত হয় এবং পরস্পরের সামঞ্জস্যপূর্ণ ছেদকগুলির (গ্র্যাটিকিউলের) মাধ্যমে যে তল তৈরি হয়, তাকে অভিক্ষেপ তল বলে।


6. সৃজনী ভূগোলক (Generating Globe) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ সুনির্দিষ্ট স্কেলে অঙ্কিত যে ভূগোলকের গ্র্যাটিকিউলগুলি (সমাক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার জালিকা) একটি বিকাশযোগ্য তলে স্থানান্তরিত হয়, তাকে সৃজনী ভূগোলক বলে।


7. সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ নির্ণয়ের সূত্রটি কী?

উত্তব়ঃ সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ = পৃথিবীর প্রকৃত ব্যাসার্ধ × RF (মেট্রিক স্কেলে পৃথিবীর প্রকৃত ব্যাসার্ধ হল 640,000,000 সেমি।)


৪. বিকাশযোগ্য তল বা পৃষ্ঠ (Developable Surface) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ সৃজনী ভূগোলককে মোটামুটি মুড়ে রাখা যায় এমন সব পৃষ্ঠকে কেটে উন্মুক্ত করলে একটি সমতল পৃষ্ঠের সৃষ্টি হয় এবং যখন ওই সমতল

পৃষ্ঠের ওপর অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার জাল সঠিকভাবে স্থানান্তরিত হয় অথবা বিকশিত হয়, তখন তাকে বিকাশযোগ্য তল বা পৃষ্ঠ বলে। মানচিত্র অভিক্ষেপে একটি বেলন কিংবা একটি শকু হল বিকাশযোগ্য পৃষ্ঠ।


9. সাধারণ ভূগোলক ও সৃজনী ভূগোলকের পার্থক্য কী?

উত্তব়ঃ নির্দিষ্ট স্কেলে তৈরি পিজবোর্ড ও কাগজে মোড়া এবং অস্বচ্ছ গোলাকার বস্তুকে সাধারণ ভূগোলক বলা হয়। এই গোলকের ক্ষেত্রে অক্ষরেখা এবং দ্রাঘিমারেখাগুলি নির্দিষ্ট ব্যবধানে টানা থাকে এবং পৃথিবীর মানচিত্র আঁকা থাকে কিন্তু মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কনে এটি ব্যবহৃত হয় না। অন্যদিকে সৃজনী ভূগোলকও নির্দিষ্ট স্কেলে তৈরি, তবে এটি নির্দিষ্ট ব্যবধানে তৈরি করা অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার কঙ্কালসার কাঠামো। এটি কেবল মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কনে ব্যবহৃত হয়।


10. গ্র্যাটিকিউল (Graticule) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ পরস্পর ছেদকারী দ্রাঘিমারেখা ও অক্ষরেখার জালিকাকে সাধারণত গ্র্যাটিকিউল বলে।



11. অদৃশ্যানুগ অভিক্ষেপ (Non-perspective Projection) কারে বলে?

উত্তব়ঃ কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আলোর উৎস ছাড়াই যখন সুনির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে কোনো তলের ওপর গ্র্যাটিকিউল অঙ্কন করা হয়, তখন তাকে অদৃশ্যানুগ অভিক্ষেপ বলে।


12. অদৃশ্যানুগ অভিক্ষেপের বৈশিষ্ট্যগুলি কী? •

উত্তব়ঃ অদৃশ্যানুপ অভিক্ষেপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-(i) নির্দিষ্ট নীতির ওপর অভিক্ষেপের গুণ বা ধর্ম নির্ভর করে। (ii) ভুগোলকের কোনো বিন্দু অভিক্ষেপ পৃষ্ঠের কোথায় অবস্থান করবে তা নির্ভর করে অভিক্ষেপের নির্দিষ্ট কোনো গুণ বা ধর্ম বজায় রাখার ওপর।


13. প্রচলিত বা কনভেনশনাল অভিক্ষেপ (Conventional  Projection) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণ করতে আলোর উৎস ছাড়াই এবং বিকাশযোগা তল ছাড়াই পুরোপুরি গাণিতিক পদ্ধতি অনুসরণ করে গ্র্যাটিকিউল আঁকা হলে তাকে প্রচলিত বা কনভেনশনাল অভিক্ষেপ বলে।


14. এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার বিন্যাস কীরকম হয়?

 

উত্তব়ঃ (i) অক্ষরেখাগুলি এক কেন্দ্রবিশিষ্ট বৃত্তচাপ নির্দেশ করে এবং পরস্পর সমান্তরালে অবস্থান করে। (ii) দ্রাঘিমারেখাগুলি অভিক্ষেপের কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে সরলরেখায় ছড়িয়ে পড়ে। তাই এগুলি কেন্দ্রবিমুখ সরলরেখা হয়ে থাকে।


15. অক্ষাংশগত ও দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতি কম এমন দেশসমূহের জন্য কোন মানচিত্র অভিক্ষেপ উপযুক্ত?

উত্তব়ঃ অক্ষাংশগত ও দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতি কম এমন দেশসমূহের জন্য এক বা দুই প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ উপযুক্ত।


16. সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপে শঙ্কুর শীর্ষ (Vertex) কোথায় অবস্থান করে?

উত্তব়ঃ সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপে প্রমাণ অক্ষরেখা যে গোলার্ধে অবস্থান করে শঙ্কুর শীর্ষ সেই গোলার্ধের মেরুবিন্দু থেকে উপরে অবস্থান করে।


17. বেলন অভিক্ষেপে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার বিন্যাস কীরূপ হয়?

উত্তব়ঃ বেলন অভিক্ষেপে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখাগুলি সরলরেখায় পরস্পরের সমকোণে অবস্থান করে। এর জন্য বেলন অভিক্ষেপটি আয়তাকৃতি হয়।


18. সৃজনী ভূগোলককে একটি বেলনের মধ্যে স্থাপন করা হলে স্বাভাবিকভাবে কোন্ অক্ষরেখার সঙ্গে বেলন তল স্পর্শক হবে?

উত্তব়ঃ সৃজনী ভূগোলককে একটি বেলনের মধ্যে স্থাপন করা হলে স্বাভাবিকভাবে নিরক্ষরেখার সঙ্গে বেলন তল স্পর্শক হবে।


19. দিগদর্শী অভিক্ষেপ (Azimuthal Projection) কী?

উত্তব়ঃ যে অভিক্ষেপের কেন্দ্রে যে-কোনো সরলরেখা ও নির্দেশকারী দ্রাঘিমারেখার (Reference Meridian) মধ্যে উৎপন্ন কোণ এবং সৃজনী ভূগোলকের অনুরূপ মহাবৃত্ত ও দ্রাঘিমারেখার মধ্যে উৎপন্ন কোণের পরিমাণ যথার্থ এক থাকে, তাকে দিগ্‌দর্শী অভিক্ষেপ বলে।


20. মূল বা প্রধান স্কেল (Principal Scale) কাকে বলে?

উত্তব়ঃ সৃজনী ভূগোলকের যে স্কেল অনুযায়ী মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কন করা হয়, সেই স্কেলকে মূল বা প্রধান স্কেল বলে।


21. কোন স্কেলের অপর নাম নমিনল স্কেল (Nominal Scale)?

উত্তব়ঃ মূল বা প্রধান স্কেলের অপর নাম নমি স্কেল।



Long Question Answer


প্ৰশ্ন.1 মানচিত্র অভিক্ষেপ কাকে বলে? মানচিত্র অভিক্ষেপের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। মানচিত্র অভিক্ষেপ কেন অঙ্কন করা হয়?


মানচিত্র অভিক্ষেপ


আলোর সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট অবলোকন বিন্দু (View Point) থেকে বস্তুর অবয়বকে একটি দ্বিমাত্রিক তলের ওপর নিক্ষেপ করাই হল অভিক্ষেপ। সাধারণ অভিক্ষেপের মতো মানচিত্র অভিক্ষেপেও আলো ও কাগজের প্রয়োজন, তবে এক্ষেত্রে ভূগোলক (Globe)-এরও প্রয়োজন হয়। মানচিত্র অভিক্ষেপে কাগজের ওপর ভূগোলককে সামগ্রিক বা আংশিকভাবে অভিক্ষিপ্ত করা হয়। ভূগোলক প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর ক্ষুদ্র সংস্করণ। তাই ভূগোলকে পৃথিবীর সমস্ত বৈশিষ্ট্যই যথাযথভাবে বিদ্যমান। ভূগোলকের অভিক্ষেপ বলতে বোঝায় কাগজের ওপর অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার একটি জালিকার প্রতিস্থাপন। সুতরাং, ভূগোলকের সমাক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার জালিকাকে কোনো নির্দিষ্ট তলে (কাগজ) যথাযথ ও শ্রেণিবদ্ধভাবে স্থানান্তর করাকে মানচিত্র অভিক্ষেপ বলা হয়।


মানচিত্র অভিক্ষেপের বৈশিষ্ট্য


মানচিত্র অভিক্ষেপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-


(1).মানচিত্র অভিক্ষেপ হল আংশিক বা সামগ্রিকভাবে ভূগোলকের উপস্থাপন।


(2).ভূগোলকের ত্রিমাত্রিক অবস্থা থেকে মানচিত্রকে দ্বিমাত্রিক তলে প্রতিস্থাপন করা হয়।


(3).মানচিত্রকে একটি সুনির্দিষ্ট স্কেলে অঙ্কন করা হয়।


(4).সমাক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার দ্বারা সৃষ্ট জালকের মাধ্যমে অভিক্ষেপকে উপস্থাপন করা হয়।


(5).এক্ষেত্রে ভূগোলকের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের যেমন-আকার, আকৃতি, দিক ও দূরত্ব সংরক্ষণ করা হয়।


(6).অভিক্ষেপের বিভিন্ন বিন্দুতে স্কেলের পরিবর্তন হয়।


অভিক্ষেপের বিভিন্ন বিন্দুতে স্কেলের পরিবর্তন হয়।


মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কনের কারণ


পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলাকৃতি এবং ত্রিমাত্রিক, অথচ যে কাগজে আমরা পৃথিবীকে অঙ্কন করি সেটি সমতল এবং দ্বিমাত্রিক। তাই অভিগত গোলাকৃতি পৃথিবীকে সমতল কাগজে নিখুঁত করে আঁকা সম্ভব নয়। এই কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ নির্ভুলভাবে অঙ্কনের জন্য মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কন করা হয়।



প্ৰশ্ন.2 একই সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কনের সময় কোন কোন বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে?


একই সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের মানচিত্র অভিক্ষেপ অঙ্কনের সময় দুটি বিষয়ের ওপর অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে, যেমন-


(1) 00 দ্রাঘিমারেখার বাঁ-দিকে পশ্চিম গোলার্ধের মান ও ডান দিকে পূর্ব গোলার্ধের মান ক্রমশ বাড়বে।


(2) 1800 দ্রাঘিমারেখার উভয় দিকের অংশ আঁকতে হলে এর ডান দিকে হবে পশ্চিম গোলার্ধ এবং বাঁ-দিকে হবে পূর্ব গোলার্ধ। উভয় গোলার্ধের প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখার মান সবচেয়ে কম হয়। [0 0 দ্রাঘিমারেখাকে সামনে রেখে যদি কোনো ভূগোলক দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে যে তোমাদের ডান দিকে পূর্ব গোলার্ধ এবং বাঁ-দিকে পশ্চিম গোলার্ধ রয়েছে। কিন্তু ভূগোলকের 1800 দ্রাঘিমারেখাকে সামনে রাখলে দেখা যাবে যে বাঁ-দিকে পূর্ব গোলার্ধ ও ডান দিকে পশ্চিম গোলার্ধ রয়েছে।]


পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধ নিয়ে বিস্তৃত অভিক্ষেপের ক্ষেত্রে দ্রাঘিমারেখার দুই প্রান্তের মানের যোগফল 1800 কিংবা এর কম হলে 00 দ্রাঘিমারেখাটি দ্রাঘিমাগত বিস্তারের মাঝে থাকে। কিন্তু যোগফল 1800 র বেশি হলে অভিক্ষেপে 1800 দ্রাঘিমারেখাটি দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতির মাঝে অবস্থান করে।


যেমন 300 থেকে 1300 পূঃ দ্রাঘিমার মানের যোগফল 1600। অতএব এক্ষেত্রে মূলমধ্যরেখা বা 0 0 দ্রাঘিমারেখা ওই দুই বিস্তৃতির মধ্যে অবশ্যই থাকবে। অন্যদিকে, 1500 পূঃ থেকে 500 পঃ দ্রাঘিমারেখার মানের যোগফল 2000 । সুতরাং, এক্ষেত্রে এদের মধ্যে অবশ্যই 1800 দ্রাঘিমারেখাটি অবস্থান করবে এবং ভূগোলকের ওই অংশই অভিক্ষেপে আঁকতে হবে।


সৃজনী ভূগোলকের আংশিক অভিক্ষেপের ক্ষেত্রে (শাঙ্কব অভিক্ষেপ) উত্তর মেরুর অবস্থান ওপরে এবং দক্ষিণ মেরুর অবস্থান নীচে হবে।


প্রশ্ন.3 এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ (Simple Conical Projection with One Standard Parallel) বলতে কী বোঝ এবং এই অভিক্ষেপের নীতি আলোচনা করো। এই অভিক্ষেপের গুণাগুণ (Properties) বা ধর্মগুলি আলোচনা করো। এই অভিক্ষেপটি অঙ্কনের সীমাবদ্ধতাগুলি উল্লেখ করো।


এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ ও এই অডিক্ষেপের নীতি


যে অভিক্ষেপে শঙ্কু বিকাশযোগ্য পৃষ্ঠ হিসেবে সৃজনী ভূগোলকের একটি নির্বাচিত অক্ষরেখাকে স্পর্শ করে, তাকে এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ বলে। অভিক্ষেপের গঠন পদ্ধতি অনুযায়ী একে Perspective বা দৃশ্যানুগ শ্রেণির অভিক্ষেপের অন্তর্গত করা যায়। তবে Non-perspective অভিক্ষেপ হিসেবে এটি প্রচলিত।


নীতি: এই অভিক্ষেপ অঙ্কনের ক্ষেত্রে একটি পূর্ণবৃত্তীয় শঙ্কু ভূগোলকের একটি নির্বাচিত অক্ষরেখাকে স্পর্শ করে। এটি হল প্রমাণ অক্ষরেখা, যার দৈর্ঘ্য ভূগোলকের দৈর্ঘ্যের সমান। দ্রাঘিমারেখাগুলিকে টানার জন্য প্রমাণ অক্ষরেখাকে তার দৈর্ঘ্য অনুযায়ী সমান ভাগে ভাগ করা হয়। অক্ষরেখাগুলির মধ্যে দূরত্ব সমান রাখার জন্য মধ্য দ্রাঘিমারেখাকে তার দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ভাগ করা হয়। প্রতিটি অক্ষরেখার বক্রতা নির্ভর করে প্রমাণ অক্ষরেখার নির্বাচন ও এর ব্যাসার্ধের ওপর।


এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপের গুণাগুণ বা ধর্ম


এই অভিক্ষেপের গুণাগুণ বা ধর্মগুলি হল-


(1) এই অভিক্ষেপে প্রমাণ অক্ষরেখার স্কেল এবং সব দ্রাঘিমারেখার স্কেল সৃজনী ভূগোলকের স্কেলের সঙ্গে সর্বদা সমান হয়।


(2) এই অভিক্ষেপের অক্ষরেখাগুলি এককেন্দ্রিক বৃত্তচাপের ন্যায় ও দ্রাঘিমারেখাগুলি সরলরেখার ন্যায় বিন্যস্ত থাকে।


(3) এই অভিক্ষেপে আকৃতি এবং ক্ষেত্রফল কোনোটিই সঠিকভাবে দেখানো যায় না।


(4) নাতিশীতোয় বা মধ্য অক্ষাংশীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্রাকৃতি দেশের মানচিত্র (ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস) অঙ্কনের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।


এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপের সীমাবদ্ধতা


এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপের সীমাবদ্ধতাগুলি হল-


(1) সৃজনী ভূগোলকের মেরুবিন্দু বিন্দুরূপে অবস্থান করলেও এই অভিক্ষেপে তা বৃত্তচাপরূপে উপস্থাপিত হয়।


(2) এই অভিক্ষেপে আকৃতিগত বিচ্যুতি অধিক ঘটে। তাই কেবল স্বল্প পরিসরের অক্ষাংশগত বিস্তৃতির দেশ ছাড়া এই অভিক্ষেপে অন্যান্য দেশ আঁকা যুক্তিযুক্ত নয়।


(3) এই অভিক্ষেপের সাহায্যে পৃথিবীর মানচিত্র আঁকা যায় না।


(4) মহাদেশ অঙ্কনও এই অভিক্ষেপে যুক্তিযুক্ত নয়।



প্রশ্ন.4 1 : 65,000,000 স্কেলে 5 deg ব্যবধানে এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ অঙ্কন করো, যেখানে অক্ষাংশগত বিস্তৃতি 30 deg দঃ থেকে 60 deg দঃ এবং দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতি 160 deg পূঃ থেকে 160° পঃ এবং এই অভিক্ষেপটির অঙ্কন পদ্ধতি বর্ণনা করো। 4+2


সমাধান


ধাপ 1 সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R) = 640,000,000 সেমি × 1 65,000,000 = 9.85 সেমি


.. সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ = 9.85 সেমি


ধাপ 2 অক্ষাংশগত বিস্তৃতি হল 30° দঃ থেকে 60° দঃ এবং অক্ষরেখাগুলির মধ্যে ব্যবধান 5°।


.. অক্ষরেখাগুলি হল-30° দঃ, 350  দঃ, 40°দঃ, 45° দঃ, 50 deg দঃ, 55 deg দঃ এবং 60° দঃ।


এক্ষেত্রে মাঝের অক্ষরেখাটিকে ( 45 deg overline 7^ ) প্রমাণ অক্ষরেখা ধরা হয়। আবার সূত্রের মাধ্যমেও অক্ষরেখা নির্বাচন করা যায়-

প্রমাণ অক্ষরেখা = নিম্ন প্রান্তীয় অক্ষরেখা + শীর্ষ প্রান্তীয় অক্ষরেখা 2 30° দঃ + 60° দঃ 2 [... নিম্ন প্রান্তীয় অক্ষরেখা = 30° দঃ, শীর্ষ প্রান্তীয় অক্ষরেখা = 60° দঃ] .. প্রমাণ অক্ষরেখা r = 45° দঃ = = 45° দঃ


ধাপ.3 আবার, দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতি 160° পূঃ থেকে 160° পঃ এবং দ্রাঘিমাগুলির মধ্যে ব্যবধান 5°।


.. দ্রাঘিমারেখাগুলি হল—160° পূঃ, 165° পূঃ, 170° পূঃ, 175° পূঃ, 180°, 175° পঃ, 170° পঃ, 165° পঃ এবং 160° পঃ।


এক্ষেত্রে, মাঝের দ্রাঘিমারেখা 180°-কে মূল দ্রাঘিমারেখা ধরা হয়। আবার সূত্রের মাধ্যমেও মূল দ্রাঘিমারেখা নির্ণয় করা যায়-


মূল দ্রাঘিমারেখা = বাম প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা + ডান প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা 2=160° পূঃ + 160° পঃ2 =0=1800


[. যেহেতু, উত্তর গোলার্ধে ০° দ্রাঘিমারেখা এবং দক্ষিণ গোলার্ধের 180° দ্রাঘিমারেখাকে মধ্য দ্রাঘিমারেখা হিসেবে ধরে এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ অঙ্কন করা হয় তাই এক্ষেত্রে 0° = 180° হবে।]

মূল দ্রাঘিমারেখা (theta_{0}) = 1800


পূর্বে অঙ্কিত চিত্রের মাধ্যমে বোঝা যায় যে, VP হল প্রমাণ অক্ষরেখার ব্যাসার্ধ দ্রাঘিমারেখার বিভাজন দৈর্ঘ্য। GT হল প্রমাণ অক্ষরেখার বিভাজন দৈর্ঘ্য এবং EM হল মধ্য


অঙ্কন পদ্ধতি


(i) কাগজের মাঝখান দিয়ে উল্লম্ব সরলরেখা আঁকা হল। এটি হল 1800 মধ্য দ্রাঘিমারেখা।


(ii) ওই সরলরেখার প্রায় মাঝখানে একটি বিন্দু চিহ্নিত করে চিত্র নং 2.7 থেকে VP-র সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্তাংশ আঁকা হল। এটি হল 45° দঃ প্রমাণ অক্ষরেখা।


(iii) EM-র দৈর্ঘ্য নিয়ে ডিভাইডারের সাহায্যে প্রমাণ অক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে মধ্য দ্রাঘিমারেখার ওপর তিনটি করে বিন্দু চিহ্নিত করা হল। এরপর অভিক্ষেপ বা শঙ্কুর কেন্দ্র থেকে ওই চিহ্নিত বিন্দুগুলির মধ্য দিয়ে ছয়টি এককেন্দ্রিক বৃত্তচাপ আঁকা হল। এগুলি যথাক্রমে 300  দঃ, 350 দঃ, 40 dig দঃ, 500  দঃ, 550 দঃ এবং 60° দঃ অক্ষরেখা নির্দেশ করে।


(iv) একইভাবে GT-র দৈর্ঘ্য নিয়ে প্রমাণ অক্ষরেখাকে মধ্য দ্রাঘিমারেখার দু-দিকে চারটি করে অংশে ভাগ করা হল। এরপর অভিক্ষেপের কেন্দ্র থেকে ওই ভাগ বিন্দুগুলির মধ্য দিয়ে 30 dig দঃ অক্ষরেখা পর্যন্ত সরলরেখা আঁকা হল। এগুলি বাঁ-দিক থেকে 160° পূঃ, 165 dig পূঃ, 170 dig পূঃ, 175 dig পূঃ এবং 180 dig , 175 dig পঃ, 170 dig পঃ, 165 dig পঃ, 160 dig পঃ দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে।


এভাবে প্রশ্নের উল্লিখিত এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপটি আঁকার কাজ সম্পূর্ণ হল।


প্রশ্ন.5 :60,000,000 স্কেলে 10 dig ব্যবধানে 35 dig উত্তর থেকে 75 deg উত্তর অক্ষাংশ এবং 20 dig পশ্চিম থেকে 60 dig পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত ইউরোপ মহাদেশের জন্য এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপ অঙ্কন করো এবং অঙ্কন প্রণালীটি বর্ণনা করো।


সমাধান


ধাপ 1 সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ .. সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R)=640,000,000 67% * 1/60000000 = 10.6667 সেমি


ধাপ ২ অক্ষাংশগত বিস্তৃতি হল 35° উঃ থেকে 75 deg উঃ এবং অক্ষরেখাগুলির ব্যবধান 10°। .. অক্ষরেখাগুলি হল 350  উঃ, 450 উঃ, 55° উঃ, 650 উঃ এবং 750 উঃ।


এক্ষেত্রে মাঝের অক্ষরেখাটিকে (55° উঃ) প্রমাণ অক্ষরেখা ধরা হয়। আবার সূত্রের মাধ্যমেও অক্ষরেখা নির্বাচন করা যায়- প্রমাণ অক্ষরেখা (r0/ 0 ) = নিম্ন প্রান্তীয় অক্ষরেখা + শীর্ষ প্রান্তীয় অক্ষরেখা = 35° উঃ + 75° উঃ= 110°2=55° উঃ

... প্রমাণ অক্ষরেখা (r0/0 ) 55° উঃ


ধাপ.3 আবার, দ্রাঘিমাগত বিস্তৃতি 20° পঃ থেকে 60° পূঃ এবং দ্রাঘিমারেখাগুলির ব্যবধান 10°।


.:. দ্রাঘিমারেখাগুলি হল-20° পঃ, 10° পঃ, 0°, 10° পূঃ, 20° পূঃ, 30° পূঃ, 40° পূঃ, 50° পূঃ এবং 60° পূঃ।


এক্ষেত্রে মধ্য দ্রাঘিমারেখাটি হল 20° পূঃ। আবার, মধ্য দ্রাঘিমারেখা নির্বাচনের সূত্র হল-


মধ্য দ্রাঘিমারেখা (0/0) = বাম প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা + ডান প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা -2= -20° পঃ + 60° পূঃ 2= 40°2 =  20° পূঃ


[. দ্রষ্টব্য: দ্রাঘিমারেখার ক্ষেত্রে পশ্চিম গোলার্ধের মানকে ও অক্ষরেখার ক্ষেত্রে দক্ষিণ গোলার্ধের মানকে এ ধরনের হিসাবের জন্য মাইনাস ('-') ধরা হয়। গণনাকৃত মান '+' চিহ্ন নির্দেশ করলে তা পূর্ব গোলার্ধ বা উত্তর গোলার্ধ নির্দেশ করবে। আর '-' চিহ্ন হলে তা পশ্চিম বা দক্ষিণ গোলার্ধ নির্দেশ করবে।]


.. মধ্য দ্রাঘিমারেখা (৪০) = 20° পূঃ


অঙ্কন প্রণালী


(i) কাগজের মাঝখান দিয়ে একটি উল্লম্ব সরলরেখা আঁকা হল। এটি হল 20° পূঃ মধ্য দ্রাঘিমারেখা।


(ii) ওই সরলরেখার প্রায় মাঝখানে একটি বিন্দু চিহ্নিত করে চিত্র নং 2.9 থেকে VP -এর সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে মধ্য দ্রাঘিমারেখার ওপর অভিক্ষেপ বা শঙ্কুর কেন্দ্র স্থাপন করা হল। ওই কেন্দ্র থেকে VP-এর সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্তাংশ আঁকা হল। এটি হল 55° উঃ প্রমাণ অক্ষরেখা।


(iii) ME দৈর্ঘ্য নিয়ে ডিভাইডারের সাহায্যে প্রমাণ অক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে মধ্য দ্রাঘিমারেখার ওপর দুটি করে বিন্দু চিহ্নিত করা হল। এরপর অভিক্ষেপ বা শঙ্কুর কেন্দ্র থেকে ওই চিহ্নিত বিন্দুর মধ্য দিয়ে চারটি এককেন্দ্রিক বৃত্তচাপ আঁকা হল। এগুলি যথাক্রমে 35° উঃ, 45° উঃ, 65° উঃ, ও 75° উঃ অক্ষরেখা নির্দেশ করে।


(iv) একইভাবে GT দৈর্ঘ্য নিয়ে প্রমাণ অক্ষরেখাকে মধ্য দ্রাঘিমারেখার দু-দিকে চারটি করে অংশে ভাগ করা হল। এরপর অভিক্ষেপের কেন্দ্র থেকে ওই ভাগ বিন্দুগুলির মধ্য দিয়ে 35° উঃ অক্ষরেখা পর্যন্ত সরলরেখা আঁকা হল। এগুলি বাঁ-দিক থেকে 20° পঃ, 10° পঃ এবং 0°, 10° পূঃ, 20° পূঃ, 30° পূঃ, 40° পূঃ, 50° পূঃ ও 60° পূঃ দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে।


এভাবে প্রশ্নের উল্লিখিত এক প্রমাণ অক্ষরেখাবিশিষ্ট সহজ শাঙ্কব অভিক্ষেপটি আঁকার কাজ সম্পূর্ণ করা হল যা চিত্র 2.10-এ দেখানো হয়েছে।


প্রশ্ন.6 লৈখিক পদ্ধতিতে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপের অঙ্কন প্রণালীটি আলোচনা করো।


লৈখিক পদ্ধতিতে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপ অঙ্কন


সূত্র


(i) সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R) = পৃথিবীর ব্যাসার্ধ × RF স্কেল


(ii) নিরক্ষরেখা থেকে অক্ষরেখার উচ্চতা নির্ণয় ও বিভিন্ন অক্ষরেখা অঙ্কন: সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R) নিয়ে O-কে কেন্দ্র করে NES অর্ধবৃত্ত

আঁকা হল। OE-কে সংযুক্ত করে আরও বর্ধিত করা হল যা নিরক্ষরেখা নির্দেশ করে। NS রেখার সমান্তরালে E বিন্দুতে একটি সরলরেখা স্পর্শক হিসেবে টানা হল। এটি প্রকৃতপক্ষে পশ্চিম দিকের প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা। সৃজনী ভূগোলকের কেন্দ্রে চাঁদার কেন্দ্রকে স্থাপন করে নিরক্ষীয় তল থেকে উত্তর-দক্ষিণে

যথাক্রমে N₁, N₂ ও N এবং S₁, S₂ ও S ইত্যাদি অক্ষাংশের কৌণিক মান অনুযায়ী বৃত্তাংশের ওপর বিন্দু বসানো হল। বিন্দুগুলিকে কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত করা হল। বৃত্তাংশের ওই ছেদবিন্দুগুলি থেকে নিরক্ষরেখার সমান্তরালে সরলরেখা টানা হল। এগুলি বিভিন্ন অক্ষরেখা নির্দেশ করে।


(iii) নিরক্ষরেখার বিভাজন ও দ্রাঘিমারেখা অঙ্কন: বৃত্তাংশে পরপর যে-কোনো দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব ডিভাইডার দিয়ে মেপে নেওয়া হল এবং ওই পরিমাপ দিয়ে নিরক্ষরেখাকে প্রয়োজনমতো দ্রাঘিমারেখা টানার জন্য ভাগ করা হল। নিরক্ষরেখার বিভাজন বিন্দু দিয়ে মেরু অক্ষ অর্থাৎ NS রেখার সমান্তরালে দুই প্রান্তীয় অক্ষরেখা পর্যন্ত সরলরেখা টানা হল, এগুলি হল দ্রাঘিমারেখা। এভাবে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপের অঙ্কন সম্পন্ন হল।


প্রশ্ন.7 11:80,000,000 স্কেলে 10° অন্তর একটি সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপ অঙ্কন করো, যার অক্ষাংশগত বিস্তৃতি 50° উঃ থেকে 10° দঃ এবং 150° পূঃ থেকে 150° পঃ এবং অঙ্কন প্রণালীটি লেখো। 


সমাধান


সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R) = 640,000,000 সেমি ×180,000,000=8 সেমি


 অক্ষাংশগত বিস্তৃতি = 50° উঃ থেকে 10° দঃ

 অক্ষরেখাগুলি হল-50° উঃ, 40° উঃ, 30° উঃ, 20° উঃ, 10° উঃ, 0°, 10° দঃ এবং দ্রাঘিমারেখাগুলির বিস্তৃতি হল 150° পূঃ থেকে 150° পঃ 

দ্রাঘিমারেখাগুলি হল-150° পূঃ, 160° পূঃ, 170° পূঃ, 180°, 170° পঃ, 160° পঃ, 150° পঃ


অক্ষরেখা এবং দ্রাঘিমারেখা অঙ্কনের মাধ্যমে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপটি অঙ্কন করা হল।


অঙ্কন প্রণালী


(1) O বিন্দুকে কেন্দ্র করে ৪ সেমি ব্যাসার্ধ নিয়ে NST অর্ধবৃত্ত আঁকা হল। ০ বিন্দুতে NOT মেরুঅক্ষের সমকোণে OS রেখা অঙ্কন করে ওই রেখাকে আরও বর্ধিত করা হল। এটি হল নিরক্ষরেখা (0°)।


(2) S বিন্দুতে মেরু অক্ষের সমান্তরালে একটি স্পর্শক টানা হল। এটি বামপ্রান্তে 150° পূঃ দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে।


(3) চাঁদার সাহায্যে সৃজনী ভূগোলকের কেন্দ্রে 10° ব্যবধানে 50° উঃ থেকে 10° দঃ অক্ষাংশ পর্যন্ত কৌণিক মানের পাঁচটি বিন্দু নিরক্ষরেখার ওপর এবং একটি বিন্দু নিরক্ষরেখার নীচে বৃত্তাংশের ওপর চিহ্নিত করা হল। ভূগোলকের কেন্দ্রের সাথে ওই বিন্দুগুলিকে যোগ করা হল।


(4) বিন্দুগুলি থেকে নিরক্ষরেখার সমান্তরালে সরলরেখা টানা হল। এগুলি 50° উঃ, 40° উঃ, 30° উঃ, 20° উঃ, 10° উঃ, 0°, 10° দঃ অক্ষরেখা নির্দেশ করে।


(5) বৃত্তাংশের ওপর পরপর দুটি ছেদবিন্দুর অন্তর্বর্তী দূরত্ব নিয়ে বাম প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা থেকে ডান দিকে নিরক্ষরেখা বরাবর 150° পূঃ থেকে 150° পঃ দ্রাঘিমারেখা অঙ্কনের জন্য ছয়টি ভাগ নেওয়া হল। এইসব ছেদবিন্দুর মধ্য দিয়ে বাম প্রান্তের দ্রাঘিমারেখার সমান্তরালে প্রান্তীয় অক্ষরেখা পর্যন্ত সরলরেখা টানা হল। এগুলি উল্লিখিত দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে। এভাবে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপ অঙ্কনের কাজ সম্পূর্ণ হল।



প্রশ্ন.8 1:1,14,000,000 স্কেলে 100 অন্তর 200 পঃ থেকে 600 পূঃ দ্রাঘিমা এবং 400 উঃ থেকে 400 দঃ অক্ষরেখা পর্যন্ত বিস্তৃত আফ্রিকার জন্য একটি সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপ অঙ্কন করো এবং অঙ্কন প্রণালীটি লেখো।


সমাধান


(1) সৃজনী ভূগোলকের ব্যাসার্ধ (R) = 640000000 দ্রাঘিমারেখাগুলির বিস্তৃতি হল 200 পঃ থেকে 600 পূঃ overline 7 * 1/(1, 14000000) = 5.6 সেমি .. দ্রাঘিমারেখাগুলি হল 200 পঃ, 100 পঃ, 00 , 100 পূঃ, 200 পূঃ, 300 পূঃ, 400 পূঃ, 500 পূঃ এবং 600 পূঃ অক্ষরেখাগুলির বিস্তৃতি হল 400 উঃ থেকে 400 দঃ। .. অক্ষরেখাগুলি হল 400 উঃ, 300  উঃ, 200 উঃ, 100 উঃ, 00 100 দঃ, 200 দঃ, 300 দঃ এবং 400 দঃ


(2) অক্ষরেখা এবং দ্রাঘিমারেখা অঙ্কনের মাধ্যমে সমক্ষেত্রফলবিশিষ্ট বেলন অভিক্ষেপ অঙ্কন করা হল।


অঙ্কন প্রণালী


(i)  ০ বিন্দুকে কেন্দ্র করে 5.60 সেমি ব্যাসার্ধ নিয়ে NES অর্ধবৃত্ত আঁকা হল। ০ বিন্দুতে NOS মেরু অক্ষের সমকোণে OE রেখা অঙ্কন করে ওই রেখাকে আরও বর্ধিত করা হল। এটি হল নিরক্ষরেখা। (চিত্র 2.13)


(ii)  E বিন্দুতে মেরু অক্ষের সমান্তরালে একটি স্পর্শক টানা হল। এটি বাম প্রান্তে 20 deg পঃ দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে।


(iii)  চাঁদার সাহায্যে সৃজনী ভূগোলকের কেন্দ্রে 10 dig ব্যবধানে 10 dig 20 dig , 30 dig ও 40 dig অক্ষাংশ পর্যন্ত কৌণিক মানের চারটি করে বিন্দু নিরক্ষরেখার উভয় দিকে বৃত্তাংশের ওপর চিহ্নিত করা হল। ভূগোলকের কেন্দ্রের সঙ্গে বিন্দুগুলিকে যোগ করা হল।


(iv)  বিন্দুগুলি থেকে নিরক্ষরেখার সমান্তরালে সরলরেখা টানা হল। এগুলি 10 dig উঃ, 20 dig উঃ, 30 dig উঃ ও 40 dig উঃ এবং 10 dig দঃ, 20 dig দঃ, 30 dig দঃ ও 40 dig দঃ অক্ষরেখা নির্দেশ করে।

Poমানচিত্র অভিক্ষেপ


(v) বৃত্তাংশের ওপর পরপর দুটি ছেদবিন্দুর অন্তর্বর্তী দূরত্ব নিয়ে বাম প্রান্তীয় দ্রাঘিমারেখা থেকে ডান দিকে নিরক্ষরেখা বরাবর 20 deg পঃ, 10 deg পঃ এবং ০°, 10 deg পূঃ, 20 deg পূঃ, 30 deg পূঃ, 40 deg পূঃ, 50 deg পূঃ ও 60 deg পূঃ দ্রাঘিমার জন্য আটটি ভাগ নেওয়া হল। এইসব ছেদবিন্দুর মধ্য দিয়ে বাম প্রান্তের দ্রাঘিমারেখার সমান্তরালে প্রান্তীয় অক্ষরেখা পর্যন্ত সরলরেখা টানা হল। এগুলি উল্লিখিত দ্রাঘিমারেখা নির্দেশ করে। এভাবে অভিক্ষেপটি অঙ্কন করার কাজ শেষ করা হল।



Editing by : Liza Mahanta