Chapter--2
ভাত
মহাশ্বেতা দেবী
--------------------------------------------------
MCQ
1. বুড়োকর্তার বাঁচার কথা ছিল-
ক) চুরাশি বছর
খ) আটানব্বই বছর ✔
গ) নব্বই বছর
ঘ) বিরাশি বছর
2. "তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু!”- সতীশবাবুর যা বোঝার কথা নয়, তা হল-
ক) অভাব কাকে বলে
খ) ভাত না খেতে পারার জ্বালা
গ) দুর্যোগে মানুষের কতখানি কষ্ট হয়
ঘ) উপরের সবগুলিই ✔
3. "দেহে ক্ষমতা ছিল না।”- দেহের ক্ষমতাকে ছাপিয়ে উৎসবের কাঠ কাটার কারণ-
ক) একমুঠো ভাতের আশা ✔
খ) সামান্য কিছু টাকা পাওয়া যাবে
গ) সে তার গ্রামে ফিরতে পারবে
ঘ) আর কেউ এই কাজটি করতে রাজি ছিল নাম
4. "উচ্ছবের চোখের কোলে জল গড়ায়।"-তার এমন পরিস্থিতির কারণ-
ক) সে সতীশবাবুর দুঃখের কথা শুনেছে
খ) যজ্ঞের ধোঁয়া তার চোখে এসে লেগেছে
গ) স্ত্রী-ছেলেমেয়ের কথা তার মনে পড়ে গেছে ✔
ঘ) মন্দিরের চাতালের ছেলেরা তাকে অপমান করেছে
5. "ফোন করোচো?”-বক্তা কোথায় ফোন করার কথা বলেছেন?
ক) বড়োবাজারে
খ) শ্যামবাজারে
গ) বাগবাজারে ✔
ঘ) বিলেতে
6. যজ্ঞের জন্য উচ্ছব কাঠ কেটেছিল-
ক) পাঁচ মন
খ) আড়াই মন ✔
গ) দেড় মন
ঘ) এক মন
7. মন্দিরের চাতালে কতগুলি ছেলে তাস খেলছিল?
ক) দুজন
খ) তিন জন ✔
গ) চার জন
ঘ) পাঁচ জন
8. "মানুষ থাকলে ও ঠিকই বুঝত যে-” কী বোঝার কথা বলা হয়েছে?
ক) বড়ো বাড়িতে যজ্ঞের আয়োজন চলছে
খ) বড়োপিসিমা অবিবাহিত
গ) বুড়োকর্তা মারা গেছে
ঘ) জলের টানে মানুষ ভেসে গেছে ✔
9. "একন চান করব না।"-উৎসব চান করতে চায়নি কেন?
ক) বুড়োকর্তার দাহের পরই সে চান করবে
খ) মাথায় জল পড়লে তার পেট মানতে চায় না ✔
গ) অবেলায় চান করলে শরীর খারাপ হবে
ঘ) সব কাজ সেরেই সে চান করবে।
10. "রাতে রাতে কাজ সারতে হবে।"-কারণ-
ক) নইলে মৃতদেহে পচন ধরবে
খ) নইলে দোষ লাগবে ✔
গ) নইলে সৎকারে বাধা আসবে
ঘ) নইলে শববাহকদের পাওয়া যাবে না
11. হোমযজ্ঞ করা সত্ত্বেও বুড়োকর্তাকে বাঁচানো না যাওয়ার কারণ হিসেবে তান্ত্রিক বলেছিল যে-
ক) বুড়োকর্তার তিন ছেলে হোম ছেড়ে উঠে গিয়েছিল ✔
খ) হোমের আগে রান্না করা হয়েছিল
গ) হোমের আগে অনেকেই খেয়ে নিয়েছিল
ঘ) হোমের কাঠগুলো সমানভাবে কাটা হয়নি
12. উচ্ছব বাড়িতে ঢুকে বড়োপিসিমার কী শোনে?
ক) খেদ
খ) কান্না
গ) আক্ষেপ
ঘ) বিলাপ ✔
13. 'অন্ন লক্ষ্মী'-এ কথা কে বলত?
ক) পিসিমা
খ) বাসিনী
গ) ঠাকুমা ✔
ঘ) বড়োবউ
14. "ভাত খাবে সে, ভাত।"-কে?
ক) বাসিনী
খ) চন্নুনীর মা
গ) বড়োবউ
ঘ) উচ্ছব ✔
15. "তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল"-
ক) হোমের জন্য এক টিন গাওয়া ঘি লাগবে
খ) হোমের সময় কেউ পিছন ফিরে তাকাতে পারবে না
গ) হোমের আগে সব কিছু রান্না করতে হবে, হোম শেষে তবে খাওয়া যাবে ✔
ঘ) হোমের দিন বাড়িতে অন্ন স্পর্শ করা যাবে না
16. “সতীশবাবু বলেছে, উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে বই তো নয়।”- তাঁর এমন মন্তব্যের কারণ-
ক) উচ্ছব তার স্ত্রী-সন্তানকে দেখার জন্য অস্থির হচ্ছিল
খ) বড়ো বাড়ি থেকে উচ্ছবের কাজ চলে গিয়েছিল
গ) বাড়ি ভাঙার শোকে উচ্ছব হাহাকার করছিল
ঘ) উচ্ছব একমুঠো ভাতের জন্য পাগল হয়ে উঠেছিল ✔
17. “এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।"-কারণ-
ক) ভাত খেতে পাবে সে ✔
খ) স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে ফিরে পাবে সে
গ) সে বাদাটার খোঁজ পাবে
ঘ) বাড়িতে ফিরবে সে
18. “.. উচ্ছব তাড়াতাড়ি হাত চালায়।"-কেন-না-
ক) অতি দ্রুত তাকে বাইরে যেতে হবে
খ) এখনই রান্না করা প্রয়োজন
গ) কাঠ কাটলে হোম, হোম হলে ভাত ✔
ঘ) হোমের কাঠের তখনই প্রয়োজন
19. “উচ্ছব আবার কাঠ কাটতে থাকে।" -
ক) প্রতিটি কাঠ লম্বায়ক দেড় হাত ✔
খ) দুই হাত
গ) আড়াই হাত
ঘ) এক হাত
20. বাসিনী লুকিয়ে উচ্ছবকে কী খেতে দিয়েছিল?
ক) চিড়ে
খ) মুড়ি
গ) বাতাসা
ঘ) ছাতু ✔
Short Answer Question
1. "লোকটার চাহনি বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি।"- কার চাহনির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আলোচ্য অংশে মহাশ্বেতা দেবীর 'ভাত' ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া ওরফে উচ্চবের চাহনির কথা বলা হয়েছে।
2. বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি কেন?
উত্তর:উচ্ছবের বন্য চেহারা, উগ্র চাহনি এবং তার খাটো করে পরা নোংরা লুঙ্গি দেখে বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি।
3. বামুন ঠাকুর বড়োবটকে কী বলেছিল।
উত্তর:বামুন ঠাকুর বড়োবউকে বলেছিল যে, উচ্ছব ভাত খাওয়ার বিনিময়ে বড়ো বাড়িতে কাজ করবে।
4. বড়োপিসিমা বড়ো বাড়ির কে ছিলেন?
উত্তর: বড়োপিসিমা ছিলেন বাড়ির বুড়োকর্তার অবিবাহিত বৃদ্ধা বোন এবং বড়োবউমা সহ বাড়ির অন্য বউমাদের পিসিশাশুড়ি।
5. বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে 'নাটা-ঝামটা' হচ্ছিলেন কখন?
উত্তর: অল্পবয়সে স্ত্রী মারা যাওয়ায় বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে 'নাটা-ঝামটা' হচ্ছিলেন।
6. বড়োপিসিমা সংসারের কোন্ কোন্ দায়িত্ব সামলাতেন?
উত্তর: বড়োপিসিমা বাড়ির রান্নাঘর, ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগানো, দাদা অর্থাৎ বুড়োকর্তার সেবা করা-এসব দায়িত্ব সামলাতেন।
7. "সে জন্যেই হোম-যজ্ঞি হচ্ছে।"- হোম-যজ্ঞির কারণ কী?
উত্তর: বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা লিভার ক্যানসারে মৃত্যু আসন্ন, তাই তাঁকে বাঁচাতেই হোমযজ্ঞ হচ্ছিল।
8. বুড়োকর্তার কী রোগ হয়েছিল?
উত্তর: বুড়োকর্তার লিভার ক্যানসার অর্থাৎ যকৃতে কর্কট রোগ হয়েছিল।
9. মেজোবউ শাশুড়ির জন্য কী কী মাছ রান্না করছিল?
উত্তর:মেজোবউ শাশুড়ির জন্য ইলিশ, পাকাপোনা, চিতল, ট্যাংরা এবং বড়ো ভেটকি মাছ রান্না করছিল।
10. বড়োবউ শ্বশুরের ঘরে কিছুক্ষণের জন্য ঢুকেছিল কেন?
উত্তর:শ্বশুরের দেখভালে নিযুক্ত নার্স চা খেতে বাইরে গেলে শ্বশুরকে দেখাশোনার জন্য বড়োবউ তাঁর ঘরে ঢুকেছিল।
11. "সেই জন্যেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।"-কী জন্য কাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?
উত্তর: বড়ো বাড়ির বড়ো, মেজো ও ছোটো ছেলে সকাল এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না বলেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।
12. বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার দরকার ছিল না কেন?
উত্তর: আঠারোটি দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের প্রচুর উর্বর জমির মালিক হওয়ার জন্য বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার প্রয়োজন ছিল না।
13. বড়োবউ শ্বশুরের জন্য কী কী করত?
উত্তর: ঘরে পাতা দই ও ইসবগুল দিয়ে শরবত বানিয়ে দেওয়া, শ্বশুরের জন্য রুটি বা লুচি তৈরি করা, তাঁর বিছানা পাতা এবং তাঁর পা টেপার কাজ করত বড়োবউ।
14. বড়ো বাড়িতে তান্ত্রিক কে এনেছিলেন?
উত্তর: বড়ো বাড়িতে ছোটো বউয়ের বাবা তান্ত্রিক ডেকে এনেছিলেন।
15. যজ্ঞিহোমের জন্য কত পরিমাণ করে কাঠ লেগেছিল? অথবা, যজ্ঞের জন্য কী কী কাঠ আনা হয়?
উত্তর: যজ্ঞের জন্য বেল, ক্যাওড়া, তেঁতুল, বট, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছের আধ মন করে কাঠে লেগেছিল।
16. ভজন চাকর কী করছিল?
উত্তর: বড়ো বাড়ির ভজন চাকর যজ্ঞের জন্য কালো বিড়ালের লোম সংগ্রহ করতে গিয়েছিল।
17. তান্ত্রিক শ্মশান থেকে কী আনার ফরমাশ করেন?
উত্তর: তান্ত্রিক শ্মশান থেকে বালি আনার ফরমাশ করেন।
18. “দেখো না একতলায় গিয়ে।"-একতলায় গেলে কী দেখা যায়?
উত্তর:বড়ো বাড়ির একতলায় গেলে দেখা যায় গোলায় গোলায়, স্তরে স্তরে বহু রকম চাল সাজানো রয়েছে।
19. হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে তান্ত্রিক কী করছিলেন?
উত্তর: হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে তান্ত্রিক বড়ো বাড়ির নীচের হলঘরে বসেছিলেন।
20. বড়ো বাড়িতে কনকপানি এবং পদ্মজালি চাল রান্না হয় কী জন্য?
উত্তর: বড়োবাবু কনকপানি চাল ছাড়া এবং মেজো ও ছোটোবাবু পদ্মজালি চাল ছাড়া ভাত খায় না বলে, তাদের জন্য এই দু-রকমের চাল রান্না করা হত।
Long Answer Question
প্রশ্ন.1 মহাশ্বেতা দেবীর 'ভাত' ছোটোগল্প অবলম্বন করে ঝড়জল- বন্যার রাতটির বর্ণনা দাও
উত্তর: ঝড়জল-বন্যার রাতের বর্ণনা: প্রশ্নে উদ্ধৃত ঝড়জল-বন্যার রাত উচ্ছবকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল। সেদিন সন্ধ্যাতেই অনেকদিন পর সপরিবারে উচ্ছব পেট পুরে ভাত খেয়েছিল। খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছিল, তাদের নৌকা-সহ ডুবে মরে যাওয়ার আশঙ্কাও সে প্রকাশ করেছিল। এরপরই শুরু হয় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। ঝড়- বৃষ্টিতে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝ-খুঁটিটি 'মাতাল আনন্দে টলছিল' ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই উচ্ছব সর্বশক্তি দিয়ে ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা মাটির দিকে চেপে ধরে ছিল। কিন্তু তার মনে হচ্ছিল মা বসুন্ধরা যেন সেই খুঁটি রাখতে চাইছেন না, ঠেলে বের করে দিতে চাইছেন। তাই ভয়ে ভগবানের নাম নিতে থাকে সে। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েকে জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় এবং ভয়ে |
কাঁপতে থাকে। এ সময়েই হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানিতে উচ্ছব দেখতে পায় মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। পরে একসময় জল নেমে গেলেও উচ্ছবের ঘরের সব কিছু এবং তার পরিবারকে উচ্ছব আর খুঁজে পায়নি, সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় সেই জল। বানের জলে ভেসে যাওয়া উচ্ছব গাছে বেধে কোনোক্রমে প্রাণে বাঁচে। এভাবে ঝড়জল- বন্যার সেই রাত উচ্ছবের জীবনে সর্বনাশ ডেকে এনেছিল।
প্রশ্ন.2 "লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে তা কাঁদব না এতটুকু?”-বক্তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
উত্তর. : প্রেক্ষাপট: মহাশ্বেতা দেবীর 'ভাত' ছোটোগল্পে উচ্ছব নাইয়া ছিল গ্রামের এক ভূমিহীন কৃষক। সে কাজ করত সতীশ মিস্তিরির জমিতে। বন্যার জলে বাড়িঘর ও সংসার ভেসে যাওয়া উচ্ছবের মাঝেমাঝেই মনে পড়ে যায় তার কৃষকজীবনের স্মৃতি। প্রাথমিক দিশেহারা অবস্থায় সে শুধুই তার স্ত্রী আর
সন্তানদের খুঁজেছিল, কিন্তু পরে যখন তার অস্থিরতা কমে, তখনই উচ্ছবের | দেখি খিদের যন্ত্রণা তীব্রতর হয়ে ওঠে। কর্মজীবনের কথা, ফসল ফলানোর স্মৃতি, তখনকার উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তার স্মৃতি তার মনের মধ্যে ভিড় করে আসে। মাথার ভেতরটা তার দপদপ করতে, কোনো কথা গুছিয়ে ভাবতে পারে না সে। কিছু ভাবতে গেলেই তার মনে হয় ধানের গোছা হওয়ার আগেই ধানগাছের সবুজ রং চলে যাচ্ছে; কার্তিক মাসেই ধান খড়ে পরিণত হয়ে গেল-এসব দেখে মাথায় হাত পড়ে উচ্ছবের। সে দেখল যে সতীশ মিস্তিরির হরকুল, পাটনাই এবং মোটা-এই তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লেগেছে। সতীশ মিস্তিরির জমিতেই তো বছরের ক-মাস কাজ করে উচ্ছব। তাই উচ্ছব সতীশের খেতে হওয়া ধানের দশা দেখে কাঁদতে থাকে। সাধনবাবু উচ্ছবকে মনিবের ধান নষ্ট হওয়ায় তার কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করে। উচ্ছব তার উত্তরেই সাধনবাবুকে বলে যে, লক্ষ্মীর আবাহনের আগেই তার বিসর্জন হয়ে যাচ্ছে বলে সে কাঁদছে, কারণ গ্রামের মানুষদের কাছে ফসলই লক্ষ্মী।
দেখি, দুর্যোগের দিন সন্ধ্যাবেলায় চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। তারপরে রাত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল দুর্যোগে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝখানের খুঁটিটি 'মাতাল আনন্দে টলছিল' ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা উচ্ছব মাটির দিকে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরেছিল এবং ভয়ে ভগবানের নাম নিচ্ছিল। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েদের জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় আর ভয়ে কাঁপছিল। এসময় হঠাৎ বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে উচ্ছব দেখে, মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। নিমেষের মধ্যে সেই বানের জল উচ্ছবের বউ-ছেলেমেয়েকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। গাছে বেঁধে কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যায় উচ্ছব।
উচ্ছবের উপরে দুর্যোগের প্রভাব: দুর্যোগের আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। বউ-ছেলেমেয়ে-সহ সবকিছু ফিরে পাবার আশায় শুনসান বাড়ি ছেড়ে তাই সে নড়ে না। লঙ্গরখানায় দেওয়া খিচুড়ি তাই তার খাওয়া হয় না। কয়েকদিন পর সরকার শুকনো চাল দিলে দীর্ঘদিন যাবৎ উপোসি উচ্ছব তা চিবিয়েই কয়েকদিন কাটায়। এ সময় মাঝে-মাঝেই তার মনে পড়ে সেই দুর্যোগের রাতটার কথা। তার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেয়ে সে ভূত হয়ে যাচ্ছে, ভাত খেলেই সে পুনরায় মানুষ হবে এবং বউ-ছেলেমেয়ের দুঃখে কাঁদতে পারবে। তাই কয়েকদিন পেট পুরে ভাত খেতে সে কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
👉Online MCQs Test
👉Download Books PDF