রূপনারানের কূলে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
—----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
[MCQ]
১. 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে সেটি হল-
(ক) প্রান্তিক
খ জন্মদিনে
গ শেষ লেখা ✔
ঘ) শেষ সপ্তক [বাঁকুড়া ক্রিশ্চিয়ান কলেজিয়েট স্কুল।
২. 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি মূল কাব্যগ্রন্থের কত সংখ্যক কবিতা?
ক) ১১ ✔
খ) ১৩
গ) ১২
ঘ) ১৪
৩. 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি রচিত হয়-
ক) ২৮ ও ২৯ মে, ১৯৪১
খ) ৩০ ও ৩১ মে, ১৯৪১
গ) ১৬ ও ১৭ মে, ১৯৪১
ঘ) ১৩ ও ১৪ মে, ১৯৪১ ✔
৪. ' রূপনারানের কূলে' কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-
ক) জোড়াসাঁকোতে
খ শান্তিনিকেতনে ✔
গ) শিলাইদহে
ঘ) মংপুতে
৫. কবি রবীন্দ্রনাথ জেগে উঠেছেন-
ক) গোদাবরীর কূলে
খ) কাবেরীর কূলে
গ) রূপনারানের কূলে ✔
ঘ) দামোদরের কূলে
৬. 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় রূপনারান হল-
ক) বাংলার একটি নদী
খ) রূপময় জগৎ-সংসার ✔
গ) কল্পলোক
ঘ) বৈতরণী [নাকতলা হাই স্কুল
৭. 'রূপনারানের কূলে জেগে' ওঠা বলতে এই কবিতায় বোঝানো হয়েছে-
ক) দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠা
খ) অচৈতন্য অবস্থা থেকে জ্ঞান লাভ করা
গ) বাস্তব জীবনবোধে উন্নীত হওয়া ✔
ঘ) মানসিকভাবে সচেতন হওয়া
৮. রূপনারানের কূলে জেগে উঠে কবি অনুধাবন করলেন-
ক) আকাশে মেঘ কেটে গেছে
খ) সূর্যালোকে চারদিক ঝলমল করছে
গ) নিদ্রাজগৎ আর বাস্তবজগতের প্রভেদ নেই
ঘ) স্বপ্নের জগৎ আর বাস্তবের বিস্তর তফাত ✔
9. "রূপ-নারানের কূলে/জেগে উঠিলাম,/জানিলাম..."- কবি কী জানলেন?
ক) এ জগৎ স্বপ্নময়
খ) এ জগৎ মায়াময়
গ) এ জগৎ স্বপ্ন নয় ✔
ঘ) এ জগৎ মায়ামুক্ত [সেন্ট লরেন্স হাই স্কুল)
১০. 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় যে অক্ষরের কথা বলা হয়েছে তা
ক) সোনার
খ) রক্তের ✔
গ) জলের
ঘ) শিক্ষার
১১. কবি রবীন্দ্রনাথ নিজের রূপ দেখেছিলেন-
ক) দর্পণে
খ) হৃদয়ে
গ) রক্তের অক্ষরে ✔
ঘ) পল্লিগ্রামে
১২. “রক্তের অক্ষরে দেখিলাম"-কী দেখলেন?
ক) আপনার স্বপ্ন ✔
খ) আপনার জগৎ
গ) আপনার বেদনা
ঘ) আপনার রূপ
১৩ 'রক্তের অক্ষরে দেখিলাম' বলতে কবি বুঝিয়েছেন-
ক) জীবন রঙিন হয়ে দেখা দিল
খ) সুখস্মৃতিগুলি বর্ণময় হয়ে উঠল
গ) আঘাত-সংঘাতের যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে কবি দেখলেন ✔
ঘ) সংগ্রামী জীবনের মধ্য দিয়ে কবি অনুভব করলেন
১৪. 'দেখিলাম আপনার রূপ' বলতে কবি বুঝিয়েছেন-
ক) নিজের অপূর্ব-সুন্দর রূপের সৌন্দর্য কবি অবলোকন করেছেন
(খ) নিজের জীবনদর্শনের স্বরূপ উপলব্ধি করতে পেরেছেন ✔
(গ) প্রকৃতির সঙ্গে নিজের রূপের মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছেন
(ঘ) শাশ্বত সৌন্দর্যচেতনা উপলব্ধি করতে পেরেছেন
১৫. “দেখিলাম আপনার রূপ”- কীসে দেখলেন?
ক) জীবনের মধ্যে
খ) সত্যের মধ্যে
গ) স্বপ্নের মধ্যে
ঘ) রক্তের অক্ষরে ✔
১৬. “চিনিলাম আপনারে”-কবি কীভাবে নিজেকে চিনলেন?
ক) দুঃখে শোকে
খ)সুখে-আনন্দে
গ)বেদনায়-আঘাতে
ঘ) আঘাতে আঘাতে/বেদনায় বেদনায় ✔
১৭. কবি রবীন্দ্রনাথের কাছে সত্যের স্বরূপ হল-
ক) দুর্বোধ্য
খ) অজ্ঞেয়ণ
গ) কঠিনঘ ✔
ঘ) ব্যাখ্যার অতীত
১৮. রূপনারানের কূলে জেগে উঠে কবি ভালোবাসলেন-
ক) জগৎকে
খ) আপনাকে
গ) সত্যকে ✔
ঘ) কঠিনকে
১৯. "কঠিনেরে ভালোবাসিলাম।"-কবি কঠিনকে ভালোবেসেছেন, কারণ-
(ক) সে বঞ্চনা করে না ✔
(খ) সে অপমান করে না
(গ) সে আঘাত করে না
(ঘ) সে সুন্দর
২০. "জানিলাম এ জগৎ"-
ক) মিথ্যা নয়
খ) নিদ্রা নয়
গ) স্বপ্ন নয় ✔
ঘ) কঠিন নয়
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
১. 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি শেষ লেখা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
২. 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটির রচনাকাল ও স্থান উল্লেখ করো।
• শান্তিনিকেতনের উদয়নে অবস্থানকালে ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে এবং ১৪ মে এই দু-দিন ধরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'রূপনারানের কূলে' কবিতাটি রচনা করেন।
৩. "জেগে উঠিলাম”-কে, কোথায় জেগে উঠলেন?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং রূপনারানের তীরে জেগে উঠলেন।
৪. "জেগে উঠিলাম”-জেগে উঠে কবি কী উপলব্ধি করেছিলেন?
> বক্তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রূপনারানের কূলে জেগে উঠে উপলব্ধি করলেন যে, 'এ জগৎ স্বপ্ন নয়'।
৫. "জানিলাম এ জগৎ/স্বপ্ন নয়।"-কখন কবি এ কথা জেনেছিলেন?
• কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবন-সায়াহ্নে যখন রূপনারানের কূলে জেগে উঠেছিলেন, তখনই জেনেছিলেন যে এ জগৎ স্বপ্ন নয়।
৬. রূপনারানের কূলে জেগে উঠে কবি কী জানলেন?
• রূপনারানের কূলে জেগে উঠে কবি জানলেন যে, এ জগৎ স্বপ্ন নয়।
৭. "জানিলাম এ জগৎ/স্বপ্ন নয়।" কবির চোখে এ জগৎ কেমন?
> কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'রূপনারানের কূলে' জেগে উঠে জেনেছিলেন, যে জগতে তিনি ছিলেন তা স্বপ্ন নয়, তা আঘাত-সংঘাতে ভরা কঠিন বাস্তব।
৮. "দেখিলাম আপনার রূপ,"-কবি কীভাবে এই রূপ দেখলেন?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রক্তের অক্ষরে নিজের এই রূপ দেখলেন।
৯. "রক্তের অক্ষরে দেখিলাম" বলতে কীভাবে দেখার কথা বলা হয়েছে?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় 'রক্তের অক্ষরে দেখিলাম' বলতে কবি যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট মৃত্যুর অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন।
১০. "চিনিলাম আপনারে"-কে 'আপনারে' চিনেছিলেন?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং 'আপনারে' অর্থাৎ
নিজেকে চিনেছিলেন।
১১. "চিনিলাম আপনারে"-এই চেনার স্বরূপ কী?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজেকে চেনার অর্থ আসলে সত্যের কঠিন অথচ যথাযথ স্বরূপকে চিনতে বা বুঝতে পারা।
১২. "চিনিলাম আপনারে" কবি কীভাবে নিজেকে চিনলেন?
• দ্বন্দ্ব-সংঘাতমুখর এই বাস্তব পৃথিবীতে কবি আঘাতে-আঘাতে, বেদনায়- বেদনায় নিজেকে চিনলেন।
১৩. "সত্য যে কঠিন" কবি সত্যকে কঠিন বলেছেন কেন? [পাঠভবন] অথবা, 'রূপনারানের কূলে' কবিতার কবি সত্যকে কঠিন বলেছেন কেন?
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় সত্য কঠিন বলতে বুঝিয়েছেন যে, সত্য সব সময় কাঙ্ক্ষিত নাও হতে পারে।
১৪. "সত্য যে কঠিন"-এ কথা বলেও সত্য সম্পর্কে কবির প্রতিক্রিয়া কী?
▶ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় সত্যকে কঠিন জেনেও
তাকে ভালোবেসেছেন।
১৫. "সত্য যে কঠিন"-তবু কবি সত্যকে ভালোবাসেন কেন?
• সত্য কঠিন জেনেও কবি সত্যকে ভালোবাসেন, কারণ সত্য কখনও বঞ্চনা করে না।
১৬. 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি সত্যকে কোন্ বিশেষণে ভূষিত করেন?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি সত্যকে 'কঠিন' বিশেষণে ভূষিত করেছেন।
১৭. "সত্য যে কঠিন"-বক্তা সত্যের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন?
▶ বক্তা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সত্যকে কঠিন জেনেও তাকে ভালোবেসেছেন।
১৮. "কঠিনেরে ভালোবাসিলাম" কবি কেন 'কঠিন'-কে ভালোবাসলেন?
অথবা, "কঠিনেরে ভালোবাসিলাম" কঠিনকে ভালোবাসার কারণ কী?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি 'কঠিন'-কে ভালোবেসেছিলেন কারণ কঠিনই হল সত্যের স্বরূপ এবং সে কখনও কাউকে বঞ্চনা করে না।
১৯. "সে কখনো করে না বঞ্চনা।"-বক্তা কে?
▶ 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় উল্লিখিত পঙ্ক্তিটির বস্তা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং।
২০. "সে কখনো করে না বঞ্চনা।"-এরূপ বলার কারণ কী?
▶ সত্য যেহেতু মায়া বা স্বপ্ন নয়, তা কঠোর ও কঠিন বাস্তব, তাই তা কাউকে মোহাবিষ্ট বা স্বপ্নাবিষ্ট করে প্রবঞ্চনা করে না।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১ "রূপ-নারানের কূলে/জেগে উঠিলাম"-কবির এই জেগে ওঠার তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর. তাৎপর্য: কথামুখ: রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষ লেখা কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা 'রূপনারানের কূলে'-তে জীবনের মধ্য থেকেই জীবনকে উপলব্ধির কথা বলেছেন। 'রূপনারান' শব্দটি এখানে কোনো বিশেষ নদীকে বোঝাতে নয়, এই প্রবহমান জীবনকালকে বোঝাতেই তা ব্যবহৃত হয়েছে। কবির অনুভব: জীবন-সায়াহ্নে উপনীত হয়ে কবি অনুভব করেছেন, এই জগৎ শুধুই স্বপ্ন নয়, বরং আঘাত ও বেদনার মধ্য দিয়ে জীবনের বিকাশই প্রকৃত সত্য। আঘাতে-বেদনায়, 'রক্তের অক্ষরে' অর্থাৎ অজস্র সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্য দিয়ে এই সত্যকে উপলব্ধি করেছেন কবি। সে সত্য কঠিন, দ্বন্দ্বমুখর, কিন্তু সেই কঠিনকেই কবি ভালোবাসতে চেয়েছেন। কারণ কবির কথায়, “সেইখানেই প্রাণের গতি।" অন্য একটি কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন-
"সপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্ত
নাচাও যে ঝংকারে,
আরাম হতে ছিন্ন করে
সেই গভীরে লও গো মোরে
অশান্তির অন্তরে যেথায়
শান্তি সুমহান।"
সত্যের মূল্য: জীবন মানে কবির কাছে 'আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা'। এই দুঃখের তপস্যার উদ্দেশ্য আসলে সত্যের মূল্য দিয়ে জীবনের সমস্ত দেনা শোধ করে দেওয়া। তারপরেই মৃত্যুতে নিজেকে নিশ্চিন্তে সমর্পণ করে দেওয়া সম্ভব। এইভাবেই রবীন্দ্রনাথ অলীক কল্পনা বা ভাবের জগৎ থেকে দুঃখ-আঘাত-সংঘাত মুখর বাস্তব পৃথিবীতেই মানবের মুক্তি প্রত্যক্ষ করেছেন। শেষের কথা: জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে কবি মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মানবসংসারের তীরেই নিজের আশ্রয় খুঁজেছেন। 'রূপনারানের কূলে' জেগে ওঠা আসলে সেই সন্ধানেরই কাহিনি।
প্রশ্ন ২ "জানিলাম এ জগৎ/স্বপ্ন নয়।" কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো।
উত্তর. তাৎপর্য: প্রাক্কথন: শেষ লেখা কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা 'রূপনারানের কূলে'-তে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন। 'জন্মদিনে' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন-
"আমি পৃথিবীর কবি, যেথা তার যত ওঠে ধ্বনি আমার বাঁশির সুরে সাড়া তার জাগিবে তখনি।"
জীবনের যথার্থতা: আলোচ্য কবিতাটিতেও কবির এই মাটির পৃথিবীতে থাকার ইচ্ছাই প্রকাশিত হয়েছে। স্বপ্ন ও কল্পনার মায়া-আবরণকে দূরে সরিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে জগৎকে দেখেছেন তা আঘাত-সংঘাতমুখর, বেদনায় কাতর। সেখানে প্রতিদিনের ব্যক্তিগত জীবনের হতাশা, যন্ত্রণা, নানা সামাজিক এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদির মধ্য দিয়েই জীবনের যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায়। প্রকৃত সত্য: এই জীবন স্বপ্নের রঙে রঙিন নয়, রক্তের অক্ষরেই এর যথার্থ পরিচয়। তাই কবি উপলব্ধি করেছেন এ জীবনে 'দুঃখের তপস্যা'ই সত্য, কিন্তু তার মধ্য দিয়েই ঘটবে জীবনের বিকাশ। এই 'সত্য' হল জীবনের যথাযথ তাৎপর্য বুঝতে শেখা। মানুষের ধর্ম প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন-"তাই বিরাটকে বলি রুদ্র, তিনি মুক্তির দিকে আকর্ষণ করেন দুঃখের পথে।” জীবন দুঃখময়, কিন্তু তার মধ্য দিয়েই মানুষের চেতনার বিকাশ ঘটে। তখনই মানুষ জীবনের প্রকৃত ধর্মকে অনুভব করতে পারে। ইতিকথা: তাই স্বপ্নবিলাসিতায় নয়, দুঃখের তরঙ্গমুখরতার মাঝেই জীবনের 'সত্য'-কে খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ৩ "রক্তের অক্ষরে দেখিলাম/আপনার রূপ,"-এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর. ভূমিকা: শেষ লেখা কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতা 'রূপনারানের কূলে' কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষ বেলায় পৌঁছে জীবন তথা নিজের প্রকৃত স্বরূপটি উপলব্ধি করতে চেয়েছেন। এই কবিতাটি রচনার কিছুদিন আগে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন সভ্যতার সংকট প্রবন্ধটি। এই প্রবন্ধেরই উপসংহারে তিনি লেখেন-
"নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক, এল মহাজন্মের লগ্ন।
আজি অমারাত্রির দুর্গতোরণ যত
ধূলি তলে হয়ে গেল ভগ্ন।"
জীবনের যথার্থ স্বরূপ উপলব্ধি: 'রূপনারানের কূলে' অর্থাৎ 'জীবনকালের শেষপ্রান্তে' যখন উপনীত হন কবি, তখন তিনি স্বপ্নের মায়া থেকে সরে আসেন-আর তখনই জীবন ও জগতের যথার্থ স্বরূপ তাঁর চোখে ধরা পড়ে। মূল সত্য: এ জীবন আঘাত-সংঘাতে পূর্ণ। দ্বন্দ্বময় বাস্তবজগতে অজস্র সামাজিক ও রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্য দিয়েই জীবনের যে বিকাশ-সেটাই সত্য। মায়া, ছলনা বা প্রবঞ্চনার ফাঁদ অতিক্রম করেই মানুষ উপলব্ধি করতে পারে জীবনের যথার্থ স্বরূপ, এই রূপময় বিশ্বের প্রকৃত পরিচয়। জীবনের যে স্বাভাবিক গতি বা বিকাশ, তাকে কল্পনা বা স্বপ্নবিলাসের দ্বারা উপলব্ধি করা যায় না। প্রকৃত সত্য কঠিন হলেও কবি তাকেই গ্রহণ করেছেন, কারণ সেখানে বঞ্চিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। মানবচেতনার স্বরূপ: 'রক্তের অক্ষরে' অর্থাৎ যন্ত্রণার পথ ধরে এই গতিশীল অথচ কঠিন জীবনকেই কবি দেখতে চান। 'আপনার রূপ' বলতে কবি আসলে মানবাত্মার বা মানবচেতনা যথার্থ স্বরূপকেই বোঝাতে চেয়েছেন।
প্রশ্ন ৪চিনিলাম আপনারে”-কে, কখন, কীভাবে নিজেকে চিনেছেন? এর ফলে তাঁর মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো। ৩+২
উত্তর.
প্রশ্ন ৫ "সত্য যে কঠিন”-এই উপলব্ধিতে কবি কীভাবে উপনীত হলেন তা 'রূপনারানের কূলে' কবিতা অবলম্বনে লেখো। [নমুনা প্রশ্ন] অথবা, 'রূপনারানের কূলে' অবলম্বনে কবির উপলব্ধি নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর
0 Comments