অধ্যায়-৯
ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার
শিশুদের
---------------------------------
1. ব্যতিক্রমী এবং ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশুর অর্থ কী?
(a) একই
(b) কিছু পার্থক্য আছে
(c) ব্যতিক্রমী শিশুর অর্থ নেতিবাচক
(d) ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশুর অর্থ ইতিবাচক
উত্তর: (a) একই
2. নীচের কোন্ কমিশনে ভিন্নপ্রকৃতির সক্ষমতার অধিকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
(a) রাধাকৃয়ণ কমিশনে
(b) মুদালিয়র কমিশনে
(c) কোঠারি কমিশনে
(d)ওপরের সবগুলি
উত্তর: (c) কোঠারি কমিশনে
3. স্বাভাবিক শিশুদের নিরিখে ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের অবস্থান বর্ণনা করো।
(a) স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষা তারা উচ্চস্থানে অবস্থান করে
(b) স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষা তারা নিম্নস্থানে অবস্থান করে
(c) স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষা তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণে ন্যূনতম পার্থক্য থাকে
(d) স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষা তারা উচ্চস্থান বা নিম্নস্থানে অবস্থান করে
উত্তর:(c) স্বাভাবিক শিশুদের অপেক্ষা তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণে ন্যূনতম পার্থক্য থাকে
4. ভিন্ন সক্ষমতাসম্পন্ন শিশু বলতে কী বোঝায়?
(a) ব্যাহত শিশু
(b) অক্ষম শিশু
(c) প্রতিবন্ধী শিশু
(d) ওপরের সবগুলি
উত্তর:(d) ওপরের সবগুলি
5. ব্যাহত শিশু কাদের বলা হয়?
(a) যাদের বিশেষ কাজে অসুবিধা হয়, কিন্তু সব কাজে নয়
(b) যারা নির্দিষ্ট যন্ত্র বা কৌশল ব্যবহার করলে স্বাভাবিক শিশুর মতো কাজ করতে পারে
(c) স্বাভাবিকভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে অনতিক্রম্য বাধার সম্মুখীন হয়
(d) ওপরের কোনোটিই নয়
উত্তর:(a) যাদের বিশেষ কাজে অসুবিধা হয়, কিন্তু সব কাজে নয়
6. শব্দ সৃষ্টি করা বইয়ের সাহায্যে কাদের পড়ানো হয়?
(a) বধিরদের
(b) বোবাদের
(c) দৃষ্টিহীনদের
(d) স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের
উত্তর:(c) দৃষ্টিহীনদের
7. বাক্ পঠনের অপর নাম কী?
(a) স্পর্শ পঠন
(b) ওষ্ঠ পঠন
(c) দ্রুত পঠন
(d) দ্বার পঠন
উত্তর:(b) ওষ্ঠ পঠন
8. ব্রেইল পদ্ধতি চালু হয়-
(a) 1820 সালে
(b) 1830 সালে
(c) 1810 সালে
(d) 1829 সালে
উত্তর:(d) 1829 সালে
9. 'বিশেষ শিক্ষা' শব্দটি সাধারণত কাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়?
(a) প্রতিভাবানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে
(b) ব্যাহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে
(c) মানসিক সমস্যাক্রান্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে
(d) চঞ্চল ও অমনোযোগী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে
উত্তর:(b) ব্যাহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে
10. ইন্দ্রিয়গত ত্রুটিযুক্ত ব্যক্তিদের কী বলা হয়?
(a) মানসিক প্রতিবন্ধী
(b) দৈহিক প্রতিবন্ধী
(c) শিখনে অক্ষম শিক্ষার্থী
(d) আংশিক প্রতিবন্ধী
উত্তর:(b) দৈহিক প্রতিবন্ধী
Short Answer Question
1. তীব্রতা অনুযায়ী ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের কটি ভাগে ভাগ করা হয় এবং তা কী কী?
উত্তর: তীব্রতা অনুযায়ী ভিন্ন ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়-ব্যাহত, অক্ষম এবং প্রতিবন্ধী।
2. উদাহরণ সহকারে ব্যাহত শিশুর সংজ্ঞা উল্লেখ করো।
উত্তর: অনেক সময় দৈহিক গঠন, ইন্দ্রিয়-সংক্রান্ত বিষয়, অঙ্গসঞ্চালনগত বা পেশিগত অসুবিধার কারণে কোনো শিশু কোনো বিশেষ কাজ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হয়, অথচ সামগ্রিকভাবে তার কোনো অসুবিধা থাকে না। এই ধরনের প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশুকে ব্যাহত শিশু বলা হয়। যেমন- কোনো শিশু বাঁ চোখে খুব কম দেখে,তার জন্য তার বিশেষ কাজে অসুবিধা হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে অসুবিধার কারণ হয় না।
3. উদাহরণ সহকারে অক্ষম শিশুর সংজ্ঞা দাও।
উত্তর:শারীরিক কোনো ত্রুটির ফলে শিশু যখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না, কিন্তু চিকিৎসা এবং যন্ত্র ব্যবহারের সাহায্যে যখন সে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়, তখন তাকে অক্ষম বলে। যেমন-উপযুক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন চশমা ব্যবহারে যখন একটি শিশু দৃষ্টিশক্তির অভাব পূরণ করতে পারে, তখন তাকে অক্ষম শিশু বলে।
4. প্রতিবন্ধী কাকে বলে?
উত্তর:অক্ষমতার ফলে কোনো ব্যক্তি বা শিশু যখন পরিবেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে অনতিক্রম্য বাধার সম্মুখীন হয়, তাকে প্রতিবন্ধী বলে।
5. আন্তর্জাতিক স্তরে দৃষ্টিহীন কাদের বলা হয়?
উত্তর: ব্যাবহারিক দিক থেকে যে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি ২০ 1 ভাগের কম, ব বা যে ব্যক্তি দেড় মিটার দূরত্ব থেকেও আঙুল গুণতে পারে না, তাকে দৃষ্টিহীন বলে।
6. লোয়েনফেল্ডের মতে দৃষ্টিগত ত্রুটিজনিত ব্যক্তিদের ক-টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর: লোয়েনফেল্ডের মতে, দৃষ্টিশক্তির ত্রুটিজনিত ব্যক্তিদের চারটি ভাগে ভাগ করা যায়- (a)জন্মগত দৃষ্টিহীন, (b) পাঁচ বছর বয়সের পর সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন, (c) জন্মগতভাবে আংশিক দৃষ্টিহীন এবং (d) অর্জিত আংশিক দৃষ্টিহীন।
7. ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার চারটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য উল্লেখ। করো।
উত্তর: ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার চারটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল- (a) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা,(b) সংগতিবিধানে সহায়তা,(c) বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার এবং (d) বৃত্তিমুখী শিক্ষাদান।
8. সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা যে পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণ করে তাকে কী বলে?
উত্তর: সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা যে পদ্ধতিতে শিক্ষা গ্রহণ করে, তাকে বলা হয় ব্রেইল পদ্ধতি।
9. ব্রেইল পদ্ধতির সাহায্যে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা কীভাবে শিক্ষালাভ করে?
উত্তর: ব্রেইল পদ্ধতিতে পুরু কাগজ বা কার্ডবোর্ডের ওপর উঁচু উঁচু ছয়টি বিন্দুকে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে পাঠ্য বিষয়গুলিকে উপস্থাপিত করা হয়। সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা হাতের স্পর্শের মাধ্যমে বিষয়গুলির পাঠোদ্ধার করে সেগুলিকে আয়ত্ত করে।
10. ব্রেইলে ক-টি বিন্দু থাকে?
উত্তর:ব্রেইলে 6 টি বিন্দু থাকে।
11. ব্রেইলের স্টাইলাস কী?
উত্তর: ব্রেইল ব্যবস্থায় পুরু কার্ডবোর্ড বা কাগজের ওপর যে শক্ত জিনিস দিয়ে উঁচু উঁচু ডট বা বিন্দু দেওয়া হয়, তাকে স্টাইলাস বলা হয়।
12. সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমের বিশেষত্ব কী?
উত্তর:সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে ব্রেইল পদ্ধতির ওপর নির্ভর করতে হয়।
13. আংশিক দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:আংশিক দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ পদ্ধতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-উপযুক্ত লেন্সসম্পন্ন চশমার ব্যবহার,বড়ো হরফের মুদ্রণ, দর্শন ও শ্রুতি সহায়ক যন্ত্রের ব্যবহার এবং শ্রেণিকক্ষে বিশেষ কৌশল প্রয়োগ।
14. পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে প্রাচীন সরকারি ব্লাইন্ড স্কুলের নাম কী?
উত্তর: 1899 খ্রিস্টাব্দে বেহালায় প্রতিষ্ঠিত 'ক্যালকাটা ব্লাইন্ড স্কুল' পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে প্রাচীন সরকারি ব্লাইন্ড স্কুল।
15. পশ্চিমবঙ্গের কোন্ স্থানে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে?
উত্তর:পশ্চিমবঙ্গের নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে।
Long Answer Question
1.মূক ও বধির শিশু কাদের বলে? সাধারণত কী কারণে এরা মুক ও বধির হয়?
উত্তর: মুক ও বধির শিশু
[1] যেসব শিশু কথা বলতে পারে না, তাদের মুক বা বোবা (dumb) বলে এবং যেসব শিশু শুনতে পায় না, তাদের বধির বা কালা (deaf) বলে।
[2] একটি শিশু যে স্বল্প শ্রবণশক্তি নিয়ে অথবা একেবারে শ্রবণশক্তিহীন অবস্থায় জন্মায় কিংবা যে শিশুর শ্রবণশক্তি তার ভাষা ও বাচনিক ভঙ্গি বিকাশের আগেই নষ্ট হয়ে গেছে, তাকেই মূক ও বধির বলা হয়।
মুকত্ব ও বধিরতার কারণ
মূক ও বধির শিশুরা মূলত শ্রবণজনিত কারণে এবং কথা বলতে না পারার জন্য সাধারণ ছেলেমেয়েদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে। তাদের এই শারীরিক ত্রুটির পিছনে নানা কারণ থাকে।
মৃকত্বের কারণ
[1] স্বরযন্ত্রের ত্রুটির কারণে অনেকের কথার মধ্যে আড়ষ্টতা বা অস্পষ্টতা দেখা দেয়।
[2] স্বরযন্ত্রের ত্রুটির মাত্রা খুব বেশি হলে ছেলেমেয়েরা একেবারেই কথা বলতে পারে না। এইজাতীয় ছেলেমেয়েদের সম্পূর্ণ মূক বলে।
[3] স্বরযন্ত্র ত্রুটিহীন হওয়া সত্ত্বেও শ্রবণশক্তির ত্রুটির কারণে বহু ছেলেমেয়ে মূক হয়।
বধিরতার কারণ
[1] শ্রবণ ইন্দ্রিয় তথা কানের কোনো অংশে ত্রুটি দেখা দিলে শ্রবণক্রিয়া ব্যাহত হয়।
[2] শ্রবণজনিত ত্রুটি থেকেই ছেলেমেয়েরা বধির বা আংশিক বধির হয়।
[3] শ্রবণজনিত ত্রুটি অনেক সময় জন্মগত হয়।
[4] স্বাভাবিক শিশু বিভিন্ন রোগব্যাধির কারণে বা দুর্ঘটনার ফলে শ্রবণক্ষমতা হারায়।
[5] শ্রবণজনিত ত্রুটির ফলে ছেলেমেয়েরা একদিকে যেমন শুনতে পায় না, অন্যদিকে কথা বলতে না শেখায় বোবায় পরিণত হয়। বোবা ছেলেমেয়েদের ভাষাগত বিকাশও ঘটে না।
2. কোনো শিশু বধির কি না তা নির্ণয় করার জন্য কী কী যন্ত্র ব্যবহার করা হয়? বিভিন্ন প্রকার শ্রবণজনিত ত্রুটিসম্পন্ন শিশুর সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: শ্রবণজনিত ত্রুটির পরিমাপ
কোনো শিশু বধির কি না তা নির্ণয় করার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন-সাউন্ড লেবেল মিটার, অক্টেভ ব্যান্ড, ফ্রিকোয়েন্সি অ্যানালাইজার, অডিয়োমিটার ইত্যাদি।
বিভিন্ন প্রকার শ্রবণজনিত ত্রুটিসম্পন্ন শিশুর সংজ্ঞা
[1] কোনো ব্যক্তি যদি 25 ডেসিবেল তীব্রতাসম্পন্ন শব্দ শুনতে পায়, তাহলে তাকে স্বাভাবিক শ্রবণযুক্ত ব্যক্তি বলে।
[2] আবার কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি শ্রবণের জন্য 25 ডেসিবেলের অধিক তীব্রতাসম্পন্ন শব্দের প্রয়োজন হয়,তাহলে সেই ব্যক্তিকে শ্রবণের দিক থেকে ত্রুটিসম্পন্ন বলা হয়।
[3] যেসব শিশুদের শ্রবণের জন্য 26 ডেসিবেল থেকে ৪০ ডেসিবেল তীব্রতাসম্পন্ন শব্দের প্রয়োজন হয়, তাদের ব্যাহত শ্রুতিসম্পন্ন শিশু বলা হয়।
[4] যাদের শ্রবণের ক্ষেত্রে 26 ডেসিবেল থেকে 40 ডেসিবেল তীব্রতাসম্পন্ন শব্দের প্রয়োজন হয় তাদের স্বল্প ব্যাহত শ্রুতিসম্পন্ন বলে।
[5] যাদের ক্ষেত্রে শ্রবণের জন্য 41 ডেসিবেল থেকে ৪০ ডেসিবেল তীব্রতাসম্পন্ন শব্দের প্রয়োজন হয়, তাদের গুরুতর ব্যাহত শ্রুতিসম্পন্ন বলে।
[6] যাদের শ্রুতিশক্তি ৪০ ডেসিবেলের ওপরে তাদের পূর্ণবধির বলে।
3.মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর: মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য
মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদানের পিছনে যে উদ্দেশ্যগুলি কাজ করে সে সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-
[1] বাচনিক ক্ষমতার বিকাশ: মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হল তাদের বাচনিক ক্ষমতার বিকাশে সহায়তা করা। অর্থাৎ, তাদের মধ্যে কথা বলার ক্ষমতার বিকাশ ঘটানো এবং যথাযথভাবে ভাষাশিক্ষা দেওয়া। বিশেষ করে অন্যের ভাষা বুঝতে পারা এবং নিজে বলতে পারার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
[2] সামাজিক বিকাশ: মূক ও বধির
ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল তাদের সামাজিক বিকাশে
সহায়তা করা। সামাজিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন সমাজের অন্য সদস্যদের ভাষা বোঝা এবং তাদের নিজের ভাষা বোঝানো।
[3] শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দান: মূক ও বধির ছেলেমেয়েরা যেহেতু শুনতেপায় না, তাই তাদের বিভিন্ন ধরনের বিকাশের জন্য প্রয়োজন শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। এদের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা উপযুক্ত শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া।
[4] অভিভাবক-অভিভাবিকাদের
প্রশিক্ষণ দান: এই প্রকার
শিক্ষার আর- একটি উদ্দেশ্য হল মূক ও বধির
ছেলেমেয়েদের অভিভাবক-অভিভাবিকাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে তাঁরা বাড়িতে নিজেদের মুক ও বধির সন্তানদের যথাযথভাবে সাহায্য করতে পারবেন।
[5] আত্মবিশ্বাস গঠন: মূক ও বধির ছেলেমেয়েরা নিজেদের শ্রবণজনিত ত্রুটির কারণে সর্বদা হীনম্মন্যতায় ভোগে। তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সাহায্য করা এইপ্রকার শিক্ষার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠলে তারা সমাজের অন্যান্য শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।
[6] উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ: মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যেমন- শ্রেণিকক্ষে সামনের সারিতে তাদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা, পড়ানোর সময়ে স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করা যাতে ছেলেমেয়েরা তা বুঝতে পারে, সর্বোপরি শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র ও অন্যান্য প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের শুনতে সাহায্য করা ইত্যাদি।
[7] বৃত্তিমূলক
প্রশিক্ষণ দান: মূক ও বধির
ছেলেমেয়েরা যাতে বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী জীবনে
স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করতে পারে, সে বিষয়ে সাহায্য করাও এইপ্রকার শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।
[৪] সহপাঠক্রমিক
কার্যাবলির ব্যবস্থা: মূক ও বধির
ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল তাদের জন্য উপযুক্ত সহ-পাঠক্রমিক
কার্যাবলির
ব্যবস্থা করা। খেলাধুলা, জিমনাস্টিকস্, হস্তশিল্প, ছবি আঁকা প্রভৃতির ব্যবস্থা করলে তারা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়। তাদের মধ্যে থেকে হীনম্মন্যতা দূর হয়।
4.মূক ও বধির শিশুদের পাঠক্রম সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: মূক ও বধির শিশুদের পাঠক্রম ও শিক্ষণ পদ্ধতি
মানবসমাজে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন হল ভাষা। মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ভাষামূলক প্রতিবন্ধকতাই যোগাযোগের সবচেয়ে বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাদের পাঠক্রমে ও শিক্ষণ পদ্ধতিতে ভাষাশিক্ষা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।
পাঠক্রম
নির্দিষ্ট শিক্ষামূলক পরিবেশে বিশেষ শিক্ষাদান কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকশিক্ষিকার দ্বারা মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তাদের পাঠক্রমে যে বিষয়গুলি রাখা হয়, তা হল- [1] বাচনিক ভঙ্গিমার বিকাশের জন্য ওষ্ঠপঠন বা বাক্-পঠন (lip-reading), [2] শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের যথাযথ ব্যবহার শেখা, [3] গণিত, [4] সমাজবিজ্ঞান, [5] নানা প্রকারের হস্তশিল্প বা হাতের কাজ।
মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের জন্য নানা প্রকারের সৃজনশীল কাজ বিশেষভাবে উপযোগী। এ ছাড়া পরিবেশ পরিচিতি, বাগান করা প্রভৃতিও পাঠক্রমে রাখা হয়। বর্তমানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণও মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষার পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। বিদেশে এ বিষয়ে প্রচুর গবেষণাও হয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশের মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া আলপনা, রঙের সাহায্যে ছবি আঁকা, বই বাঁধানো,পোশাক- পরিচ্ছদ তৈরি, সূচিশিল্প, বয়নশিল্প প্রভৃতি বিষয়েও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
5. মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার পদ্ধতি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: শিক্ষার পদ্ধতি
মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে যারা আংশিকভাবে বধির তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে শ্রুতি সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করলে এবং তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে তারা স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের মতো কথাবার্তা বলতে এবং শুনতে পারে। কিন্তু যারা সম্পূর্ণরূপে মূক ও বধির তাদের জন্য নিম্নলিখিত শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়-
[1] ওষ্ঠপঠন: বক্তার কথা বলার সময় তার ঠোঁটের নড়াচড়া দেখে কথা বা ভাব বুঝতে পারাকে ওষ্ঠপঠন বা বাক্-পঠন বলা হয়। মূক ও বধির ছেলেমেয়েরা বক্তার মুখের সামগ্রিক পরিবর্তন, নড়াচড়া ইত্যাদি লক্ষ করে বক্তার কথা বোঝার চেষ্টা করে থাকে। পরে একইভাবে ঠোঁটের সঞ্চালন দেখে তারা ভাষা শিখে থাকে। এই পদ্ধতির আর-এক নাম মৌখিক পদ্ধতি। এর প্রবর্তক হলেন জুয়ান পাবলো বনে।
[2] আঙুলের দ্বারা বানান শেখা: যেসব ছেলেমেয়ে সম্পূর্ণরূপে বধির তারা মনের ভাব প্রকাশের জন্য আঙুল সঞ্চালনের সাহায্য নেয়। তাদের এই বিষয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আঙুল সঞ্চালনের মাধ্যমে এই ছেলেমেয়েদের অক্ষর, শব্দ, বাক্য ও বানান লেখা সহজে শেখানো যায়। এই সঞ্চালন পদ্ধতির প্রবর্তক হলেন পেরিয়ার। ভারতে এই পদ্ধতি করপল্লবী (Kara Pallavi) নামে পরিচিত।
[3] কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে মূক ও বধির ছেলেমেয়েরা অভিজ্ঞ শিক্ষকের কথা বলার সময় তাদের মুখে হাত বুলিয়ে, গলা স্পর্শ করে শব্দ উচ্চারণ করতে শেখে। কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন কেটি অ্যালকর্ন ও সোফিয়া অ্যালকর্ন।
[4] শ্রবণ সহায়ক পদ্ধতি: এই পদ্ধতিটি মূলত আংশিকভাবে বধির ছেলেমেয়েদের পড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।উচ্চশক্তিসম্পন্ন শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের সাহায্যে আংশিক বধিরদের বধিরতা অনেকটা দূর করা যায়।
[5] দর্শনভিত্তিক পদ্ধতি: মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের দর্শনভিত্তিক পদ্ধতিতেও মনের ভাব প্রকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে কয়েকটি প্রতীক ব্যবহার করা হয়। শিক্ষক মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের এইসব প্রতীকের ব্যবহার শিখিয়ে দেন। তারা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষকের মতো মুখভঙ্গি করে শব্দ উচ্চারণ করার চেষ্টা করে এবং ধীরে ধীরে তা আয়ত্ত করে। উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলির দ্বারা মূক ও বধিরদের শিক্ষাদান করতে গেলে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধৈর্যশীল শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধরনের ছেলেমেয়েদের ভাষা বিকাশ ও পাঠদানের জন্য গবেষণা চলছে।
6. ভারতে মূক ও
বধিরদের শিক্ষার বর্তমান অবস্থা আলোচনা করো।
উত্তর: ডারতে মূক ও বধিরদের শিক্ষার বর্তমান অবস্থা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতে মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নিয়ে যতটা কাজ হয়েছে, আমাদের দেশে সেই তুলনায় কাজ হয়েছে খুব কম।
[1] বেসরকারি উদ্যোগ: এদেশে প্রাথমিকভাবে
মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদান শুরু হয় মূলত মানবতা
ও দাতব্যের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনগুলি এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। ধীরে ধীরে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও শিক্ষাপ্রসারের উদ্দেশ্যে প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
[2] সরকারি উদ্যোগ: পরবর্তীকালে সরকারিভাবেও সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়। ভারতে সর্বপ্রথম 1884 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে (মুম্বই) মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় 1893 খ্রিস্টাব্দে প্রথম মূক ও বধিরদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। পরবর্তীকালে কলকাতায় মূক ও বধিরদের জন্য আরও কয়েকটি বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।
[3] ভারতে মূক ও বধিরদের সংখ্যা: ভারতে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন এবং কোঠারি কমিশন (1964-64) শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদেসংখ্যা নির্ণয়ে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই দুই সংস্থার পক্ষ থেকে যেসব তথ্য সংগৃহীত হয়,তার ভিত্তিতে অনুমান করা হয় যে, ভারতে 5 থেকে 14 বছর বয়সের প্রায় 1 কোটি 25 লক্ষ ছেলেমেয়ে কমবেশি বধিরতাজনিত ত্রুটিতে ভুগছে। 20 লক্ষেরও বেশি মানুষ মূক ও বধির। এইসব মানুষের মধ্যে 'বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী' ছেলেমেয়ের সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। কিন্তু আমাদের দেশে মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের জন্য বিদ্যালয়ের সংখ্যা মাত্র 270টি। পশ্চিমবঙ্গে মূক ও বধিরদের জন্য বিদ্যালয়ের সংখ্যা মাত্র 15টি।
[4] শিক্ষার সুযোগ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ: পরিসংখ্যান থেকে বলা যায় যে, মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে মাত্র 1% শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি রাজ্যে এদের জন্য কমপক্ষে একটি করে সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। অন্যগুলি সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি বিদ্যালয়। ভারতে মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য মাত্র ছয়টি শিক্ষক- শিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এইসব বিদ্যালয়ে এক বছরের জন্য শিক্ষক-শিক্ষণের ব্যবস্থা হয়। বছরে সত্তর জন শিক্ষক এখান থেকে প্রশিক্ষণ পেতে পারেন। আমেদাবাদ, দিল্লি, লখনউ, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও চেন্নাইতেশিক্ষক-শিক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
[5] কলকাতার মূক ও
বধির বিদ্যালয়: আমাদের রাজ্যের
গুরুত্বপূর্ণ মূক ও বধির বিদ্যালয়টি হল
Calcutta Deaf and Dumb
School। এখানে চার থেকে বারো বছরের মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের ভরতি করা হয়।
এখানে প্রথম চার বছরে যে চারটি শ্রেণি পড়ানো হয় তা হল প্রিপারেটরি-Ⅰ, প্রিপারেটরি-II, জুনিয়র-Ⅰ এবং জুনিয়র-II। এই পর্যায়গুলিতে কীভাবে কথা বলা যায়, তা শেখানো হয়। এরপর যে চারটি শ্রেণিতে পড়ানো হয় তা হল জুনিয়র-III,দ। সিনিয়র-Ⅰ, সিনিয়র-II এবং সিনিয়র-III। এই বিদ্যালয়টি ডিরেক্টরেট অফ টেকনিকাল এডুকেশন-এর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।
7. মূক ও বধিরদের শিক্ষার জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে?
উত্তর:
8. উদাহরণ-সহ শ্রেণিকক্ষে সাধারণ আচরণগত সমস্যা কাকে বলে লেখো। এই প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সাধারণ আচরণগত সমস্যার কারণগুলি উল্লেখ করো। 1+3
উত্তর:
9. আক্রমণধর্মিতা প্রতিকারের উপায়গুলি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর:
10.প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য আলোচনা করো।
উত্তর: প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা দশভাগ প্রতিবন্ধী। এঁরা প্রত্যেকেই এই বিশ্বের সদস্য। এই বিশ্বে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার অধিকার নিয়েই এরা পৃথিবীতে এসেছে। এদেরও সার্বিক বিকাশ প্রয়োজন। তাই প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা। নীচে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-
[1] হীনম্মন্যতাবোধ দূর করে আত্মবিশ্বাস জাগানো: দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, আর্থিক-বিভিন্ন কারণে প্রতিবন্ধীরা হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক সমাজে এরা মানিয়ে নিতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে সরকার থেকে এদের সুযোগ দিলেও হীনম্মন্যতার কারণে এরা সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না। তাই শিক্ষাদানের মাধ্যমে এদের মধ্য থেকে হীনম্মন্যতাবোধ দূর করে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে হবে।
[2] বিচ্ছিন্নতা দূরীকরণের ব্যবস্থা করা: প্রতিবন্ধীরা সবসময় নিজেদেরকে স্বাভাবিকদের থেকে পৃথক করে রাখে। তাদেরকে শিক্ষার মূল প্রবাহে আনতে হলে সমাজ থেকে তাদের এই বিচ্ছিন্নতা দূর করতে হবে। শিক্ষার মধ্য দিয়েই এই বিচ্ছিন্নতা দূর করা সম্ভব।
[3] দারিদ্র্য দূরীকরণের ব্যবস্থা করা: প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে উপযুক্ত শিক্ষাদানের মাধ্যমে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিলে তারা ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। তাদের মধ্যে থেকে দারিদ্র্য দূরীভূত হবে। তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে সক্ষম হবে।
[4] উৎপাদনশীল নাগরিকে পরিণত করা: প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের আর একটি উদ্দেশ্য হল তাদের বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনশীল নাগরিকে পরিণত করা এবং তারা যাতে আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভরশীল হতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
[5] কাজ চালানোর উপযোগী পঠনক্ষমতার বিকাশ ঘটানো: প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদানের অপর একটি উদ্দেশ্য হল তাদের বিভিন্ন কাজ চালানোর উপযোগী পঠন ক্ষমতার বিকাশে সাহায্য করা।
11. শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যামূলক আচরণ হিসেবে স্কুল পালানোর লক্ষণগুলি কী? এই আচরণের কারণ ও প্রতিকারের উপায় লেখো।
উত্তর: শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যামূলক আচরণ হিসেবে স্কুল পালানোর লক্ষণ প্রাক্-অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে বিদ্যালয় ত্যাগ করাকে স্কুল পালানো বলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সমস্যামূলক আচরণের পর্যায়ে না পড়লেও, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটিকে সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শিক্ষক, বিদ্যালয়ের নিয়মনীতি ইত্যাদির সঙ্গে সংগতির অভাব ঘটলে এই ধরনের আচরণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যায়, যা বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
স্কুল পালানোর কারণ:-
সাধারণত যেসব কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল পালানোর প্রবণতা দেখা যায় তা নীচে উল্লেখ করা হল-
[1] পাঠদান পদ্ধতিগত ত্রুটি: অবৈজ্ঞানিক ও ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাদান পদ্ধতি শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঠ্যবিষয়ের প্রতি অনিচ্ছার উদ্রেক করতে পারে এবং শ্রেণিকক্ষে সে উপস্থিত থাকতে চায় না।
[2] শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সামর্থ্যভিত্তিক শিক্ষাদানের অভাব: মেধাবী ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের কাছে গতানুগতিক পুথিগত শিক্ষা বিরক্তির কারণ হয় এবং তারা শ্রেণিকক্ষে থাকতে চায় না। অপরদিকে, অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কাছে শ্রেণিকক্ষের পঠনপাঠন দুরুহ বলে মনে হয় এবং যেতে চায়। সে ক্লাস থেকে পালিয়ে
[3] অমনস্তাত্ত্বিক শৃঙ্খলা এবং শিক্ষকের নির্মম আচরণ: বিদ্যালয়ের কঠোর শৃঙ্খলা, কোনো কোনো শিক্ষকের নির্মম আচরণ ও শাস্তিদানের ব্যবস্থা নিশুর মনে ভীতির সঞ্চার করে, যা তাকে বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে কোনো প্ররোচিত করে।
[4] অন্যান্য কারণ: স্কুল পালানোর উপযুক্ত কারণগুলি ছাড়াও আরও নানারকমের কারণ থাকতে পারে। যেমন-সহপাঠীদের উপহাস, শ্রেণির কাজ না করা, দল বা গ্যাং-এর সঙ্গে সিনেমা যাওয়া বা অবাঞ্ছিত কাজ করা ইত্যাদি।
স্কুল পালানোর প্রতিকারের উপায়:-
এই ধরনের আচরণের প্রতি প্রথম থেকেই দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় শিক্ষার্থী কেবলমাত্র পারদর্শিতার ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়ে না, পরবর্তী সময়ে ব্যক্তি ও সমাজজীবনেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ হয়।
[1] মনোবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতি: এই ধরনের আচরণের প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন হল মনোবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতির সাহায্যে পাঠ্য বিষয়কে শিক্ষার্থীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা।
[2] আনন্দদায়ক বিদ্যালয় পরিবেশ: বিদ্যালয় যাতে শিক্ষার্থীর কাছে 'আনন্দ নিকেতন' হয় সেই দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
[3] শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকরণ: শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব সমবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভাগ গঠন করতে হবে।
[4] আকর্ষণীয় শিক্ষণ: শ্রেণি-শিক্ষণ যাতে প্রাণবন্ত এবং আকর্ষণীয় হয়, সে ব্যাপারে শিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন, যেমন-দক্ষতার সঙ্গে বক্তব্য উপস্থাপন, শিক্ষোপকরণের ব্যবহার ইত্যাদি।
[5] শান্তি রদ: দৈহিক ও মানসিক শাস্তি এবং রূঢ় আচরণ অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
[6] ধৈর্যশীলতা: শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ধৈর্য সহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
12. আক্রমণধর্মিতা প্রতিকারের উপায়গুলি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: আক্রমণধর্মিতা প্রতিকারের উপায়
শিশুর আচরণে আক্রমণধর্মিতা লক্ষ করা গেলে দ্রুত তার প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য যা যা করণীয়, সেগুলি হল-
[1] কারণ নির্ণয়: শিশুর মধ্যে আক্রমণধর্মিতা দেখা দিলে প্রথমে তার কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন। এর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক বা পরামর্শদাতা শিক্ষার্থী এবং তার অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা করবেন। প্রয়োজনবোধে হতাশা পরিমাপক অভীক্ষা ব্যবহার করা যেতে পারে। কেস স্টাডির (case study) সাহায্যেও আক্রমণধর্মিতার কারণ নির্ণয় করা যেতে পরে।
[2] চাহিদার তৃপ্তি: কারণ নির্ণয়ের পরে যে সমস্ত চাহিদা অতৃপ্তির জন্য হতাশা দেখা দিয়েছে তার প্রতিটি পরিতৃপ্তির জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করতে হবে। আন্তরিক স্নেহ ও সহানুভূতিমূলক আচরণের দ্বারা শিশুমন থেকে নিরাপত্তার অভাববোধ দূর করা প্রয়োজন।
[3] আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করা: যে ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলার জন্য শিশু এইজাতীয় আচরণ করে, সেক্ষেত্রে তার আত্মবিশ্বাস যাতে ফিরে আসে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করার জন্য যেসব পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে, তা হল-
i. খেলা চিকিৎসা: খেলার মধ্য দিয়ে আক্রমণধর্মিতায় আক্রান্ত শিক্ষার্থী খেলার বস্তু ছুড়ে বা ভেঙে ফেলে বা চাপ দিয়ে পুতুল ইত্যাদির আকার বিকৃত করে তার আক্রমণধর্মী আচরণ তৃপ্ত করার সুযোগ পায়।
ii . অন্যান্য কৌশল: খেলা চিকিৎসা শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগযোগ্য কৌশল না হওয়ায় সেখানে অভিনয়, বিতর্ক, আবৃত্তি, সংগীত প্রভৃতি সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এর প্রতিকার বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
iii. পরামর্শদান: অনেক সময় পরামর্শদান পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। বিদ্যালয়ে
শ্রেণির কাজ সমাপ্ত হবার পর শিক্ষক-পরামর্শদাতা আক্রমণধর্মী শিশুকে ব্যক্তিগতভাবে
তার অসুবিধাগুলি বক্তব্যের আকারে
প্রকাশের স্বাধীনতা দেন। এই বক্তব্য প্রকাশের মধ্য দিয়েই তার অবদমিত ইচ্ছাগুলির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এ ছাড়া অনেক সময় দলগতভাবে কাজ করার ফলেও শিক্ষার্থী আক্রমণধর্মী আচরণ থেকে মুক্ত হতে পারে। সবশেষে মনে রাখতে হবে, গঠনমূলক এবং সৃজনমূলক কাজের মধ্য দিয়ে আক্রমণধর্মিতার চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
14. বধির শিশুদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।
উত্তর:বধির শিশুদের শ্রেণিবিভাগ
বধির শিশুদের বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। যেমন- [1] মাত্রানুযায়ী শ্রেণিবিভাগ, [2] বয়স অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ, [3] ভাষাগত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ, [4] কর্ণের ত্রুটি অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ এবং [5] কেন্দ্রীয় বধিরতা অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ। এগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-
[1] মাত্রানুযায়ী বধিরতা: শ্রবণজনিত ত্রুটির মাত্রানুযায়ী শিশুদের প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এদের একটি হল বধির (deaf) এবং অন্যটি হল আংশিক বধির (hard of hearing)। বধির বলতে সেইসব শিশুদের বোঝায় যারা সম্পূর্ণরূপে শ্রবণক্ষমতা হারিয়েছে। এইসব শিশুদের শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও এরা শ্রবণের অনুভূতি গ্রহণ করতে পারে না, অর্থাৎ শুনতে পায় না। অন্যদিকে, আংশিক বধির বলতে সেইসব শিশুদের বোঝায় যাদের মধ্যে শ্রবণের ক্ষমতা অল্প হলেও বর্তমান। এসব শিশুদের শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দিলে বা শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করলে এই ধরনের শিশুরা আংশিক হলেও শুনতে পায়।
ভারত সরকারের জনকল্যাণ মন্ত্রকের তথ্যের ভিত্তিতে মাত্রানুযায়ী বধিরতাকে
ছয়ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হল-
[2] বয়স অনুযায়ী
বধিরতা: বয়স অনুযায়ী বধিরতাকে
দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলি হল—
জন্মগতভাবে যারা বধির, তারা জন্মের পর
কোনোদিনই কিছু শুনতে পায় না। অন্যদিকে,
সংগঠিত
বধিরতার ক্ষেত্রে শিশু জন্মের পর ভালোভাবে শুনতে পেলেও পরবর্তীকালে কোনো
রোগব্যাধির জন্য বধিরতাপ্রাপ্ত হয়।
[3] ভাষাগত অভিজ্ঞতা
অনুযায়ী বধিরতা: এই জাতীয়
বধিরতাকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগগুলি হল-
শিশুর জন্মগ্রহণের পর তার ভাষাগত বিকাশের আগেই শ্রবণজনিত ত্রুটির কারণে যে
বধিরতা হয়, তাকে ভাষাগত বিকাশের
পূর্ববর্তী বধিরতা (pre- language deafness) বলে। অন্যদিকে, শিশুর জন্মের পর তার ভাষাগত বিকাশ কিছুটা হওয়ার পর যদি কোনো
বিশেষ কারণে শ্রবণজনিত ত্রুটি ঘটে, তাহলে ভাষাগত
বিকাশের পরবর্তী বধিরতা (post-language
deafness) দেখা যায়।
[4] কর্ণের ত্রুটি
অনুযায়ী বধিরতা: শোনার ক্ষেত্রে
তিন ধরনের ত্রুটি লক্ষ করা যায়, যথা-ⅰ.
বহিঃকর্ণ
ও মধ্যকর্ণের গঠনগত কোনো সমস্যা থেকে শ্রবণ সঞ্চারণের বধিরতা (conductive loss), ii. অন্তঃকর্ণের ককলিয়া
এবং অর্ধবৃত্তাকার নালী থেকে বহির্গত স্নায়ুজনিত বধিরতা (sensory neural loss) এবং iii. প্রথম ও দ্বিতীয় উভয় প্রকার ত্রুটি মিলিয়ে মিশ্র বধিরতা (mixed loss)।
[5] কেন্দ্রীয় বধিরতা: এইপ্রকার বধিরতা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ মস্তিষ্কের শ্রবণকেন্দ্রের ত্রুটির ফলে ঘটে থাকে।
16. দৃষ্টিহীন ও ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম উল্লেখ করো।
উত্তর:দৃষ্টিহীন ও ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম
দৃষ্টিহীন এবং ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ছেলেমেয়েরা স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের মতো সাধারণধর্মী এবং বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা-দুই-ই গ্রহণ করতে পারে। দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ জ্ঞান স্পর্শ ও শ্রবণের মাধ্যমে অর্জন করে। তাই এই দুটি মাধ্যমকে আরও বেশি সংগঠিত ও পরিকল্পিত করতে হবে। এদের পাঠক্রমে চার ধরনের বিষয়কে স্থান দেওয়া হয়। যেমন-
[1] প্রধান বা মূল বিষয়: দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষালাভ করে থাকে। এজন্য শুরুতেই তাদের ব্রেইল পাঠ এবং ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখা শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
[2] সাধারণ বিষয়: সাধারণ বিষয়, যেমন-সাহিত্য ও ভাষা, বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি ছাড়াও দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যাভ্যাস গড়ে তোলার জন্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞান চর্চার ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি তাদের শারীরিক গঠনের যথাযথ বিকাশ ঘটানোর জন্য শারীরশিক্ষার পাঠদানের ব্যবস্থা থাকে।
[3] সহপাঠক্রমিক বিষয়: দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই গানবাজনা, চারুশিল্প, হস্তশিল্প প্রভৃতি বিষয়ে উৎসাহদানের ব্যবস্থা থাকে।
[4] অতিরিক্ত বিষয়: দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের
স্বাভাবিক ছেলেমেয়েদের মতো দক্ষ করার
জন্য ব্রেইল, অ্যাবাকাস (গণনার
উপকরণ), প্রাত্যহিক জীবনযাপনের
শিক্ষা, ইন্দ্রিয়মূলক
প্রশিক্ষণ প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়।
ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রধান বিষয় হিসেবে ব্রেইল লেখা এবং পড়ার ওপর বিশেষ নজর
দেওয়া হয়।
Editing by- Rita Moni Bora