অধ্যায়-৭
কোঠারি কমিশন (1964-66)
ও ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা
—-------------------------------------------------------------------
MCQ
1.1986 সালের মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের মোট ছাত্রের মধ্যে কত শতাংশের বৃত্তিমুখী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার কথা ছিল?
(a) যথাক্রমে 20% এবং 50%
(b) যথাক্রমে 30% এবং 50%
(c) যথাক্রমে 35% এবং 45%
(d) যথাক্রমে 20% এবং 45%
উত্তর: (a) যথাক্রমে 20% এবং 50%
2. বয়ঃসন্ধিক্ষণকালে শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কোন্ শিক্ষাস্তরে পাঠরত থাকে?
(a) নিম্নপ্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক এবং নিম্নমাধ্যমিক স্তর
(b) উচ্চপ্রাথমিক এবং নিম্নমাধ্যমিক স্তর
(c) উচ্চপ্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর
(d) নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর
উত্তর: (c) উচ্চপ্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর
3. শিক্ষার কোন্ স্তরে তিনটি ভাষা অবশ্যিক হবে?
(a) নিম্নপ্রাথমিক
(b) উচ্চপ্রাথমিক
(c) নিম্নমাধ্যমিক
(d) উচ্চমাধ্যমিক
উত্তর: (c) নিম্নমাধ্যমিক
4. কোঠারি কমিশন কত বছরের সাধারণ শিক্ষার সুপারিশ করেছিল?
(a) আট বছরের
(b) দশ বছরের
(c) এগারো বছরের
(d) বারো বছরের
উত্তর: (b) দশ বছরের
5. শিক্ষার কোন্ স্তরে কোঠারি কমিশন পৃথকভাবে জ্ঞানমূলক বিষয় চর্চার সুপারিশ করেনি?
(a) প্রাক্সাথমিক স্তরে
(b) প্রাক্লাথমিক এবং নিম্নপ্রাথমিক স্তরে
(c) প্রাক্সাথমিক স্তর থেকে উচ্চপ্রাথমিক স্তর পর্যন্ত
(d) ওপরের কোনো স্তরেই নয়
উত্তর: (a) প্রাক্সাথমিক স্তরে
4. নীচের কোন্টি সঠিক নয়?
(a) প্রাথমিক শিক্ষান্তরের শেষে আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা থাকবে
(b) পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখার জন্য শিক্ষকদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া উচিত নয়
(c) পরীক্ষায় নম্বরদানের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত
(d) প্রথম আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পরে
উত্তর: (a) প্রাথমিক শিক্ষান্তরের শেষে আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা থাকবে
5. মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে বৃত্তিশিক্ষা সম্পর্কে কী সুপারিশ করা হয়?
(a) কেবলমাত্র বালকদের জন্য এবং পূর্ণ সময়ের জন্য করা হবে
(b) কেবলমাত্র বালিকাদের জন্য এবং আংশিক সময়ের জন্য করা হবে
(c) বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য এবং পূর্ণ সময়ের জন্য করা হবে
(d) বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য এবং পূর্ণ আংশিক সময়ের জন্য করা হবে
উত্তর: (d) বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য এবং পূর্ণ আংশিক সময়ের জন্য করা হবে
6. নীচের কোনটি সঠিক?
(a) কোঠারি কমিশনে নিম্নপ্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কর্মশিক্ষা চালু করার কথা বলা হয়েছে মুদালিয়র কমিশনে তা বলা হয়নি
(b) মুদালিয়র কমিশন থেকে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ আরও শিক্ষা বিজ্ঞানসম্মত এবং আরও সময়োপযোগী
(c) কোঠারি কমিশনের সুপারিশে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মুদালিয়র কমিশনে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের কথা বলা হয়নি
(d) ওপরের সবগুলি
উত্তর: (d) ওপরের সবগুলি
7. বহিঃপরীক্ষা উন্নয়নের জন্য কমিশন কী ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে?
(a) প্রশ্নের প্রকৃতি পরিবর্তন
(b) প্রশ্নের মানের পরিবর্তন
(c) বিজ্ঞানভিত্তিক নম্বরদানের ব্যবহার
(d) ওপরের সবগুলি
উত্তর:(b) প্রশ্নের মানের পরিবর্তন
8. অপচয় ও অনুন্নয়ন কোন্ শিক্ষাস্তরের ওপর সর্বাধিক প্রভাব বিস্তার করে?
(a) প্রাথমিক শিক্ষা
(b) মাধ্যমিক শিক্ষা
(c) প্রাক্সাথমিক শিক্ষা
(d) উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা
উত্তর:(a) প্রাথমিক শিক্ষা
9. মাধ্যমিক শিক্ষায় কোন্ সুপারিশটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ?
(a) মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার
(b) মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন
(c) মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ
(d) বিদ্যালয়গুচ্ছ গঠন
উত্তর:(c) মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ
10. 'ত্রি-ভাষা' সূত্রের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য কোন্ন্টি?
(a) জাতীয় সংহতি নিশ্চিত করা
(b) ভাষা সমস্যার সমাধান
(c) ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য স্থাপন
(d) আঞ্চলিক ভাষার ওপর গুরুত্ব দান
উত্তর:(b) ভাষা সমস্যার সমাধান
11. প্রতিটি রাজ্যে 'স্টেট ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশন' গঠিত হবে-এটি কোন্ শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ?
(a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(b) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
(c) মুদালিয়র কমিশন
(d) কোঠারি কমিশন
উত্তর:(d) কোঠারি কমিশন
12. নীচের কোন্ট্রি কোঠারি কমিশনের সুপারিশে বিবেচিত হয়নি?
(a) শিক্ষায় বেসরকারিকরণ
(b) শিক্ষা প্রযুক্তি
(c) নির্দেশনা ও পরামর্শ দান
(d) প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা
উত্তর:(b) শিক্ষা প্রযুক্তি
13. বিদ্যালয়ে নির্দেশনা ও পরামর্শদান বিভাগের দায়িত্ব কোন্টি?
(a) শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমস্যাসমাধানে সাহায্য করা
(b) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্যাসমাধানে সাহায্য করা
(c) ভবিষ্যৎ শিক্ষা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সাহায্য করা
(d) ওপরের সবগুলি
উত্তর:(d) ওপরের সবগুলি
14. সাধারণভাবে কোন্ স্তরের বিদ্যালয়ের অধীনে ক-টি করে বিদ্যালয় নিয়ে বিদ্যালয়গুচ্ছ স্থাপিত হবে?
(a) প্রতিটি উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
(b) প্রতিটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি উচ্চপ্রাথমিক
বিদ্যালয়কে নিয়ে
(c) প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
(d) প্রতিটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে পরিস্থিতি অনুযায়ী কয়েকটি উচ্চপ্রাথমিক এবং কয়েকটি
নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
উত্তর:(a) প্রতিটি উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
15. কোঠারি কমিশন অনুযায়ী যে ক-টি ভাষা নিম্নমাধ্যমিক স্তরে শেখাতে হবে, তা হল-
(a) 1
(b) 2
(c) 3
(d) 4
উত্তর:(c) 3
16. কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে নিম্নে প্রদত্ত বিষয়গুলির মধ্যে কোল্টি অন্তর্ভুক্ত ছিল?
(a) ধর্মশিক্ষা
(b) কর্ম অভিজ্ঞতা
(c) কম্পিউটার শিক্ষা-
(d) সমাজ বিজ্ঞান
উত্তর:(b) কর্ম অভিজ্ঞতা
17. শিক্ষাক্ষেত্রে '+2' স্তরের সুপারিশ করে-
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) ভারতীয় শিক্ষা কমিশন
(c) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(d) জাতীয় শিক্ষানীতি, 1986
উত্তর:(b) ভারতীয় শিক্ষা কমিশন
18. স্কুলগুচ্ছ বা স্কুলজোট-এর কথা বলা হয়েছে-
a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনে
(b) সার্জেন্ট রিপোর্টে
(c) কোঠারি কমিশনে
(d) মুদালিয়র কমিশনে
উত্তর:(c) কোঠারি কমিশনে
19. কোঠারি কমিশনের প্রস্তাবমতো উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমে যুক্ত হয়েছিল-
(a) ধর্মীয় শিক্ষা
(b) কর্ম অভিজ্ঞতা
(c) কম্পিউটার শিক্ষা
(d) সমাজশিক্ষা
উত্তর:(b) কর্ম অভিজ্ঞতা
20. কোঠারি কমিশন কোন্ শিক্ষাস্তর থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করার সুপারিশ করেছিল?
(a) নিম্ন প্রাথমিক
(b) উচ্চ প্রাথমিক
(c) নিম্ন মাধ্যমিক
(d) উচ্চ মাধ্যমিক
উত্তর:(c) নিম্ন মাধ্যমিক
21. বঞ্চিত ও সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের পার্থক্য দুর করার জন্য কোঠারি কমিশন যে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে, তার প্রথম অক্ষরটি কী?
(a) D
(b) C
(c) N
(d) O
উত্তর:(b) C
1. নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের শিক্ষা প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করো।
উত্তর: কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সমস্ত সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সম্পর্কিত বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিও এই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।
2. কোঠারি কমিশনের ভারতীয় সদস্যদের নামগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: কোঠারি কমিশনে ভারতীয় সদস্যগণের নাম হল জি পি নায়েক, ড. কে জি সঈউদ্দীন, ড. ত্রিগুণা সেন, মিস. এস পানান্ডিকর, অধ্যাপক এম ভি মাথুর এবং আর এ গোপালস্বামী।
3. কমিশন সুপারিশগুলি সম্পর্কে আলোচনা করার আগে ভারতবর্ষের যে সমস্যাগুলি উল্লেখ করেছে, সেগুলি কী?
উত্তর: কমিশন যে সমস্যাগুলির উল্লেখ করেছে, সেগুলি হল খাদ্য, অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা ও বেকারিত্ব, জাতীয় ও সামাজিক সংহতিসাধন, বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যায় অনগ্রসরতা এবং আধুনিকীকরণের সমস্যা।
4. শিক্ষা সংস্কার সম্পর্কে কমিশনের কী অভিমত?
উত্তর: কমিশন মনে করে, শিক্ষা সংস্কারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল জনগণের জীবন, চাহিদা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে শিক্ষাকে যুক্ত করা।
5. শিক্ষায় উৎপাদনশীলতার জন্য কমিশনে কী কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: শিক্ষায় উৎপাদনশীলতার জন্য কমিশন নীচের কর্মসূচিগ্রহণের কথা বলেছে-
(1) বিজ্ঞানশিক্ষা: বিদ্যালয়ের অপরিহার্য অংশ হবে বিজ্ঞানশিক্ষা, যা অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অংশ হবে।
(2) কর্ম-অভিজ্ঞতা: সমস্ত স্তরের শিক্ষার ক্ষেত্রে কর্ম-অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং এটি সাধারণ শিক্ষার অপরিহার্য অংশ হবে।
6. কমিশনের মতে শিক্ষার মান ক-টি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে এবং সেগুলি কী কী?
উত্তর: কমিশনের মতে শিক্ষার মান নির্ভর করে চারটি বিষয়ের ওপর- ① সমগ্র শিক্ষা কাঠামোয় ক-টি স্তর এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, ② প্রতিটি স্তরের শিক্ষাদান ও মোট শিক্ষাদান, ও শিক্ষার বিভিন্ন উপাদান ও শিক্ষাপোকরণ এবং ④ প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার।
7. কমিশনের ত্রিভাষাসূত্রটি কী?
উত্তর:কমিশনের ত্রিভাষাসূত্র হল-① মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, ② রাষ্ট্রভাষা (হিন্দি) বা সহকারী ভাষা (ইংরেজি), ③ একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা আধুনিক বিদেশি ভাষা যা ① বা ②-এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
8. সাধারণ শিক্ষা কাকে বলে?
উত্তর: যে শিক্ষায় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিধি সকলের কাছে একই রকমের, তাকে সাধারণ শিক্ষা বলে।
9. শিক্ষা কমিশন কীভাবে শিক্ষার্থীদের ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন করার সুপারিশ করেছে?
উত্তর: শিক্ষা কমিশন মনে করে, শিক্ষার মধ্য দিয়ে ভারতীয় ভাষা, দর্শন, ধর্ম,ইতিহাস শিল্পসৃষ্টি, সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে।
10. ধর্মশিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য কী?
উত্তর:কমিশনের মতে, আমাদের মতো বহু ধর্মাবলম্বী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন হল, এমন শিক্ষাব্যবস্থা যার সাহায্যে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্কৃতা এবং সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি করা যায়।
11. কমিশনের মতে মূল্যায়নের দুটি প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করো।
উত্তর: কমিশনের মতে মূল্যায়ন একদিকে যেমন শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা পরিমাপ করে, তেমনি শিক্ষণের উন্নয়ন করে।
12. শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগ প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য কী?
উত্তর: কমিশন বেসরকারি উদ্যোগ প্রসঙ্গে মনে করে, শিক্ষার প্রসার এবং পরিচালনার জন্য বেসরকারি উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
13. হিন্দি ভাষার গুরুত্ব প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য কী?
উত্তর: কমিশন মনে করে, যেহেতু হিন্দি রাষ্ট্রভাষা এবং অধিকাংশ জনগণের যোগাযোগের ভাষা, তাই এই ভাষা প্রচারের জন্য সর্বতোভাবে সচেষ্ট হতে হবে।
14. বিদ্যালয় প্রশাসনে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ উল্লেখ করো।
উত্তর: বিদ্যালয় প্রশাসনে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ভূমিকা প্রসঙ্গে কমিশনের সুপারিশ হল, বিদ্যালয় পরিচালনা এবং আর্থিক সহযোগিতার জন্য গ্রামের পঞ্চায়েত এবং শহরাঞ্চলের পৌরসভা বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
15. 'শিক্ষাবিপ্লব' এই শব্দগুচ্ছটির দ্বারা কোঠারি কমিশন কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: 'শিক্ষাবিপ্লব' এই শব্দগুচ্ছটির দ্বারা কোঠারি কমিশন এই কথাই বলতে চেয়েছে যে, স্বাধীন ভারতের জাতীয় প্রয়োজন মেটাতে হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে যার প্রভাবে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা হবে।
16. 'কমন স্কুল' কাকে বলে?
উত্তর: যে বিদ্যালয়ে জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সকলেই শিক্ষার সুযোগ পায়, তাকে 'কমন স্কুল' বলে।
Long Answer Question(Marks 8)
1. কোঠারি কমিশন কেন গঠন করা হয়? এই কমিশনের গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: কোঠারি কমিশন গঠনের কারণ—
1964 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ড. ভি এস কোঠারির নেতৃত্বে 17 জন সদস্যের একটি শিক্ষা কমিশন নিয়োগ করা হয়। এই কমিশনটি 'কোঠারি কমিশন' নামে অধিক পরিচিত। এই কমিশন গঠনের কারণগুলি ছিল-
[1] পূর্বের কমিশনগুলির সীমাবদ্ধতা: 1948 সালের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। 1952 খ্রি. গঠিত শিক্ষা কমিশনের এক্তিয়ার ছিল শুধু মাধ্যমিক শিক্ষার পর্যালোচনা এবং সুপারিশ করা।
[2] পূর্বের কমিশনের সুপারিশগুলি পূরণে ব্যর্থতা: উপরিউক্ত দুটি কমিশনের সুপারিশসমূহ পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলি থেকেই যায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ দূর করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার 1964 সালের 16 জুলাই ড. ভি এস কোঠারির নেতৃত্বে একটি 'এডুকেশন কমিটি' নিয়োগ করে।
কোঠারি কমিশন গঠন
17 জন সদস্য নিয়ে গঠিত কোঠারি কমিশন 1964 খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর থেকে
কাজ শুরু করে।
[1] কমিশনের প্রধান লক্ষ্য: কমিশনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় স্তরে
শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ও সর্বদিকে উন্নতির জন্য সাধারণ ব্যবস্থা ও নীতিসমূহ সম্পর্কে সরকারকে পরামর্শ দান। অতীতে বিভিন্ন কমিটি এবং কমিশনগুলিতে শিক্ষার নির্দিষ্ট স্তরে এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর পর্যালোচনা করা হয়। এই কমিশনে সামগ্রিকভাবে এবং শিক্ষার সমস্ত দিক পর্যালোচনা করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তবে আইন এবং চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কিত শিক্ষাব্যবস্থা
কমিশনের আওতাভুক্ত হবে না বলে স্থির হয়।
[2] শিক্ষার ভূমিকা সম্পর্কে কমিশনের বিশ্বাস: কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী হাতিয়ার হল শিক্ষা। সেই কারণেই কমিশন তার রিপোর্টের নামকরণ করে 'Education and National
Development' (শিক্ষা এবং জাতীয় বিকাশ)।
[3] কমিশনের অন্তর্ভুক্ত সদস্যবৃন্দ: কমিশনে দেশ ও বিদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। সদস্যদের মোট সংখ্যা ছিল সতেরো। শ্রী জে পি নায়েক ছিলেন সদস্য সম্পাদক (মেম্বার সেক্রেটারি) এবং মি. জি এফ ম্যাকডুগাল ছিলেন সহ-সম্পাদক। ভারতীয় সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ড. কে জি সঈউদ্দীন, ড. ত্রিগুণা সেন, কুমারী এস পানান্ডিকর, অধ্যাপক এম ভি মাথুর, আর এ গোপালাস্বামী প্রমুখ। বিদেশিদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক এইচ এল এলভিন (ইংল্যান্ড), জাঁ টমাস (ফরাসি), রজার রিভেলি (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র), সাদাতোশি ঝোডা (জাপান) প্রমুখ।
[4] কমিশনের কর্মপদ্ধতি: কমিশন প্রায় 90,000 মহিলা এবং পুরুষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল। এদের মধ্যে ছিলেন জনজীবনে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি, শিক্ষাবিদ, বৈজ্ঞানিক, শিল্পবিদ, বিভিন্ন বিষয়ের পণ্ডিত ব্যক্তিসকল এবং শিক্ষা সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিগণ। কমিশন 2,400 মেমোরেন্ডা এবং লিখিত বক্তব্য পেয়েছিল, যেগুলিকে তারা পর্যালোচনা করে। কমিশন বিগত 20 বছরের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর দীর্ঘ 21 মাসব্যাপী কাজ করেছিল। 1964 সালের 2 অক্টোবর (মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন) কমিশনের কাজ শুরু হয় এবং 1966 সালের 29 জুন কমিশনের বিবরণী জমা পড়ে।
[5] কমিশনের আলোচ্য বিষয় এবং টাস্ক ফোর্স গঠন: কমিশনের রিপোর্টে প্রাপ্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তর ও শিক্ষার বিভিন্ন দিকের ওপর পূর্ণাঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। আইন ও চিকিৎসাবিদ্যা এই কমিশনের সুপারিশের আওতায় ছিল না। তবে সুপারিশে এর সমস্যাগুলির দিক নির্দেশ করা হয়েছে।
এই কমিশন 12টি টাস্ক ফোর্স গঠন করে। এগুলি হল-ⅰ. স্কুলশিক্ষা, ii. উচ্চশিক্ষা, iii. টেকনিকালশিক্ষা, iv. কৃষিশিক্ষা, v. বয়স্কশিক্ষা, vi. বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা, vii. শিক্ষক শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা, viii. ছাত্র কল্যাণ, ix. নতুন শিক্ষা কৌশল ও পদ্ধতি, x. জনশক্তি, xi. শিক্ষা প্রশাসন এবং xii. শিক্ষার অর্থনীতি। এ ব্যতীত 7টি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। এগুলি হল- i. নারীশিক্ষা, ii. পশ্চাত্পদ সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা, iii. স্কুল বিল্ডিং, iv. বিদ্যালয় ও সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক, v. স্ট্যাটিস্টিক্স, vi. প্রাক্সাথমিক শিক্ষা এবং vii. বিদ্যালয়ের পাঠক্রম।
এই টাস্ক ফোর্স ও ওয়ার্কিং গ্রুপগুলি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্ট অনুসারেই কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ এডুকেশনাল অ্যান্ড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-এ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
2. পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ উল্লেখ করো।
উত্তর : পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ
কোঠারি কমিশন পরীক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারে একাধিক সুপারিশের কথা ব্যক্ত করে, যা এখানে উল্লেখ করা হল-
[1] নিম্নপ্রাথমিক স্তরের মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হবে শিশুদের মধ্যে সাধারণ দক্ষতা, সঠিক অভ্যাস এবং আগ্রহ গড়ে উঠেছে কি না তা পরিমাপ করা। নিম্নপ্রাথমিক স্তরের জন্য অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে।
[2] উচ্চপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে থাকবে মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষাগুলি হবে অভ্যন্তরীণ। শিক্ষক নিজেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন।
[3] প্রাথমিক স্তরের শেষে শিক্ষার্থীরা জাতীয় মানে পৌঁছেছে কি না তা জানার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন। শিক্ষার মান বজায় রাখার জন্য বিদ্যালয়-পরিদর্শকগণ মাঝে মাঝে রাজ্য মূল্যায়ন সংস্থার তৈরি প্রশ্নপত্রের দ্বারা সমীক্ষা করতে পারেন।
[4] প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মধ্যে তুলনা করার জন্য প্রাথমিক স্তরের শেষে বিভিন্ন জেলায় আদর্শায়িত পারদর্শিতা অভীক্ষা (Standardised Achievement Test)-এর মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তবে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হবে না।
[5] কমিশন বহিঃপরীক্ষার মানকে উন্নত করার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। যেমন- প্রশ্ন প্রস্তুতকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নম্বর দেওয়ার পদ্ধতিকে বিজ্ঞানভিত্তিক করা ইত্যাদি।
[6] কয়েকটি নির্বাচিত বিদ্যালয়কে তাদের নিজেদের ছাত্রদের মূল্যায়নের দায়িত্ব এবং দশম শ্রেণির পর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত। এর মান হবে স্টেট বোর্ড অব্ স্কুল এডুকেশনের সমান।
[7] প্রতিটি শিক্ষাস্তরে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের পরিমাপের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
[৪] উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ হল, দশম শ্রেণির পাঠ শেষ হওয়ার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
[9] উচ্চশিক্ষার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বহিঃপরীক্ষার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ও নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
[10] সর্বস্তরের শিক্ষকদের আধুনিক ও উন্নত মূল্যায়ন ব্যবস্থা সম্বন্ধে ধারণা দেওয়ার জন্য সেমিনার, আলোচনা, ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করতে হবে।
[11] পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য কোনো অর্থ দেওয়া উচিত নয়।
[ 12] নম্বরের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত (যা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে)।
[13] মূল্যায়নের জন্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কয়েকটি সুপারিশ করা হয় যেমন-ⅰ. রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে
মূল্যায়নের জন্য সুসংগঠিত সংস্থার প্রয়োজন। রাজ্যস্তরে এই সংস্থাটি হবে 'স্টেট বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন', যা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করবে। জাতীয় স্তরে থাকবে 'ন্যাশনাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন' যা জাতীয় স্তরে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে। ii. ইউ জি সি 'সেন্ট্রাল এন্জামিনেশন রিফর্ম ইউনিট' (Central Examination Reform Unit) নামে একটি বিভাগ স্থাপন করবে, যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মূল্যায়নের ব্যাপারে সংযোগ রাখবে এবং কতকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য বিশেষ ইউনিট খুলবে।
3.বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
4. কমিশন কী উদ্দেশ্যে সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে? এ ধরনের বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো। কমিশন কেন বিদ্যালয়গুচ্ছ স্থাপনের সুপারিশ করে? 1+2+5
উত্তর:
5. ভাষানীতি এবং ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ উল্লেখ করো।
উত্তর:
👉Paid Answer (For membership User)
Editing by- Rita Moni Bora