অধ্যায়-৬
জীববৈচিত্র্য
---------------------------
MCQ
1. ভারতে জীববৈচিত্র্যের উন্নবিন্দু বলে পরিগণিত হয়-
a)পশ্চিমঘাট পর্বতের ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্য ( ✔
b) গাঙ্গেয় সমভূমি
c) ছোটোনাগপুর মালভূমি
d) থর মরুভূমি
2. 'জীববৈচিত্র্যের উষ্মাকেন্দ্র' (Hotspot)-র একটি উদাহরণ হল-
a) গির অরণ্য
b) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন ( ✔ )
c) করবেট জাতীয় উদ্যান
d) সাইলেন্ট ভ্যালি
3. জীববৈচিত্র্যের উয়কেন্দ্রের (hotspot) একটি উদাহরণ হল-
a) গির অরণ্য
b) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন
c) করবেট জাতীয় উদ্যান
d) সাইলেন্ট ভ্যালি ( ✔ )
4. সংরক্ষণযোগ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীদের সংখ্যা যে পুস্তকের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে-
a) গ্রিন ডাটা বুক ( ✔ )
b) গ্রিন ডেটা কার্ড
c) রেড ডাটা বুক
d) রেড ডেটা কার্ড
5. 'জৈববৈচিত্র্য' শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন-
a) ওয়াল্টার রোজেন ( ✔ )
b) নরম্যান মায়ারস
c) চার্লস ডারউইন
d) রবার্ট হুক
6. যে জলবায়ু অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সর্বাধিক তার নাম-
a) ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্য জলবায়ু অঞ্চল ( ✔ )
b) মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল
c) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল
d) তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চল
7. সর্বাধিক জৈববৈচিত্র্যযুক্ত অঞ্চল হল-
a) নাতিশীতোয় অঞ্চল
b) নিরক্ষীয় অঞ্চল ( ✔ )
c) সাভানা অঞ্চল
d) মরু অঞ্চল
8. বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্যের অন্তর্গত নয় এমন বৈচিত্র্যটি হল
a) আলফা বৈচিত্র্য
b) জিনগত বৈচিত্র্য ( ✔ )
c) বিটা বৈচিত্র্য
d) গামা বৈচিত্র্য
9. যে-কোনো বাস্তুতন্ত্রে শক্তির মূল উৎস হল-
a) প্রাণী
b)চাঁদ
c) উদ্ভিদ
d) সূর্য ( ✔ )
10. পশ্চিমবঙ্গের কুলিক পাখিরালয় কোথায় অবস্থিত?
a) কলকাতা
b) মালদহ ( ✔ )
c) রায়গঞ্জ
d) কোচবিহার
11. বর্তমান ভূতাত্ত্বিক যুগের নাম
a) জুরাসিক
b) ক্রিটোসিয়াস
কোয়াটারনারি ( ✔ )
12. দাচিগাঁও জাতীয় উদ্যান অবস্থিত
a) জম্মু ও কাশ্মীরে ( ✔ )
b) কেরলে
c) ওডিশায়
d) পশ্চিমবঙ্গে
13. সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান অবস্থিত
a) কেরলে
b) ওডিশায় ( ✔ )
c) পশ্চিমবঙ্গে
d)অসমে
14. দাজিপুর বাইসন অভয়ারণ্য অবস্থিত
a) মহারাষ্ট্রে ( ✔ )
b)কেরলে
c) বিহারে
গুজরাতে
15. পৃথিবীর মেগাজীববৈচিত্র্য দেখা যায়
a) নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলে ( ✔ )
b) সাভানা অঞ্চলে
c) নাতিশীতোয় অঞ্চলে
d) উপমেরু অঞ্চলে
16. 'জীববৈচিত্রোর উম্মাকেন্দ্র' (Hotspot)-র একটি উদাহরণ হল-
a) পির অরণ্য
b) শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন ( ✔ )
c) করবেট জাতীয় উদ্যান
d)সাইলেন্ট ভ্যালি
17. ভারতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম জাতীয় উদ্যানটি হল
a)হেইলে বা জিম করবেট জাতীয় উদ্যান ( ✔ )
b) নামদাফা জাতীয় উদ্যান
c) কাজিরাঙা জাতীয়উদ্যান
d) পেরিয়ার জাতীয় উদ্যান
18. কানহা জাতীয় উদ্যানের অবস্থান হল-
a)রাজস্থানে
b) মধ্যপ্রদেশে ( ✔ )
c) কেরলে
d) বিহারে
19. রামসার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়-
a) 1970 সালে
b) 1971 সালে ( ✔ )
c) 1972 সালে
d) 1973 সালে
20. যে পরিবেশকেন্দ্রিক বিশ্ব সম্মেলনে 'জীববৈচিত্রা' (Biodiversity) শব্দটি জনপ্রিয়তা পায় তা হল-
a)রামসার সম্মেলন
b) বসুন্ধরা সম্মেলন ( ✔ )
c) ভিয়েনা সম্মেলন
d) কিয়োটো সম্মেলন
21. ভারতে একটি 'লুপ্ত' প্রাণী প্রজাতি হল
a)তুষার চিতা ( ✔ )
b) হরিণ
c) পেঙ্গুইন
d) হায়না
22. বর্তমানে অবলুপ্ত ডোডো পাখির প্রাকৃতিক বাসভূমি ছিল
a) মরিশাস দ্বীপ ( ✔ )
b)মেঘালয়
c) কাঞ্চনজঙ্ঘা
d) কৃয়া নদীর বদ্বীপ
23. ভারতে বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা
a) 39 ( ✔ )
b) 49
c) 59
d) 61
24. ভারতের কয়েকটি বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ হল
a) সুন্দরী,কলসপত্রী ও চন্দন ( ✔ )
b) আম, জাম ও কাঁঠাল
c) ধান, গম ও বাজরা
d) কোনোটিই নয়
25. যেসব প্রজাতির বিপন্নতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি সেগুলি হল-
a) চরম বিপন্ন প্রজাতি
b) বিপদপ্রবণ প্রজাতি
c) বিলুপ্ত প্রজাতি
d) অনির্ধারিত প্ৰজাতি ( ✔ )
26. বন্য পরিবেশে যেসমস্ত উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির আর কোনো অস্তিত্ব নেই, তাদের বলে
a) বিলুপ্ত প্রজাতি
b) বিপদপ্রবণ প্রজাতি
c) বন্য অবস্থায় বিলুপ্ত প্রজাতি ( ✔ )
d) বিপন্ন প্রজাতি
27. ভারতে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি নয় এমন একটি উদ্ভিদ হল-
a) কলসপত্রী
b) সাইকাস
c) শাল ( ✔ )
d) সর্পগন্ধা
28. একটি অবলুপ্ত প্রজাতি হল
a) উট পাখি
b) ডোডো পাখি ( ✔ )
c) চড়ুই পাখি
d) শকুন
29. কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান অবস্থিত
a) পশ্চিমবঙ্গে
b) কেরলে ( ✔ )
c) রাজস্থানে
d) তামিলনাডুতে
30. বাস্তুতান্ত্রিক দিক থেকে একটি বিলুপ্ত প্রজাতি হল
a) কৃষ্ণসার হরিণ
b) ভাব়তীয় চিতা
c) সিন্ধু ইগল ( ✔ )
d) কোয়ালা
1. বহিঃক্ষেত্রীয় সংরক্ষণ কাকে বলে?
উত্তর:কোনো জীবকে তার প্রাকৃতিক বাসস্থান থেকে সরিয়ে অন্য কোনো
স্থানে (যেমন চিড়িয়াখানায়) সংরক্ষণ করাকে বহিঃক্ষেত্রীয় সংরক্ষণ বা এক্স-সিটু সংরক্ষণ বলে।
2. জীববৈচিত্র্যের উম্মাকেন্দ্র কাকে বলে?
উত্তর:পৃথিবীর যে অঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের মাত্রা অধিক, স্থানিক প্রজাতির সংখ্যা প্রচুর এবং যেখানে বহু প্রজাতি মানুষের কার্যকলাপের ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাকে জীববৈচিত্র্যের উম্মাকেন্দ্র বা উম্মা অঞ্চল (Hotspot) বলে।
3. জীববৈচিত্র্য-এর সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশে উদ্ভিদ, প্রাণী ও আণুবীক্ষণিক জীবসমূহের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে বাস্তুতন্ত্র গড়ে ওঠে, সেই বাস্তুতন্ত্রে নানা ধরনের জীবপ্রজাতির সমাহার বা সমাবেশকে জীববৈচিত্র্য বলে।
4. নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে কী নামে অভিহিত করা যায়?
উত্তর:নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণকে স্বস্থানিক সংরক্ষণ বা ইন-সিটু সংরক্ষণ নামে অভিহিত করা যায়।
5. জীববৈচিত্র্য বিনাশের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর: জীববৈচিত্র্য বিনাশের দুটি কারণ হল- (i) জলবায়ুর পরিবর্তন (ii) বন্যপ্রাণীর সংহার।
6. ভারতের জীববৈচিত্রের উম্মা অঞ্চলের (hotspot) দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: ভারতের জীববৈচিত্র্যের উষ্মা অঞ্চলের (hotspot) দুটি উদাহরণ হল-সাইলেন্ট ভ্যালি ও অগস্ত্যমালাই।
7. UNDP-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: UNDP-এর পুরো নাম হল-United National Development Programme |
7. কোন ধরনের পর্যটন প্রাকৃতিক, নান্দনিক বিষয় উপভোগ ও পরিবেশের ভারসাম্য একত্রে রক্ষা করে?
উত্তর:ইকো ট্যুরিজম
8. ভারতের জীববৈচিত্রের উম্মা অঞ্চলের (hotspot) দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: ভারতের জীববৈচিত্র্যের উষ্মা অঞ্চলের (hotspot) দুটি উদাহরণ হল-সাইলেন্ট ভ্যালি ও অগস্ত্যমালাই।
9. জীববৈচিত্র্যের উম্মাকেন্দ্র কাকে বলে?
উত্তর:পৃথিবীর যে অঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের মাত্রা অধিক, স্থানিক প্রজাতির সংখ্যা প্রচুর এবং যেখানে বহু প্রজাতি মানুষের কার্যকলাপের ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাকে জীববৈচিত্র্যের উম্মাকেন্দ্র বা উম্মা অঞ্চল (Hotspot) বলে।
10. IBWL-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: BWL-এর পুরো নাম হল-Indian Board of Wild Life |
11. IBP-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: IBP-এর পুরো নাম হল-International Biological Programme |
12. IUCN-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: IUCN-এর পুরো নাম হল-International Union for Conservation of Nature and Natural Resources
13. ক্ল্যাড (Clade) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো প্রজাতির প্রাণী বা উদ্ভিদ এবং তার সমস্ত বংশধরকে একসঙ্গে ক্ল্যাড বলা হয়।
14. বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে যে বিশাল বিভিন্নতা লক্ষ করা যায় তাকে কী বলে
উত্তর: বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে যে বিভিন্নতা ও প্রাচুর্য লক্ষ করা যায় তাকে বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য বলে।
15. প্রজাতিভবনের বিপরীত অবস্থাকে কী বলে?
উত্তর: প্রজাতিভবনের বিপরীত অবস্থাকে প্রজাতি বিলুপ্তি বলে।
16. পৃথিবীর কত কত শতাংশ অঞ্চলে অরণ্য থাকা প্রয়োজন?
উত্তর: পৃথিবীর শতাংশ অঞ্চলে অরণ্য থাকা প্রয়োজন।
17. জীববৈচিত্র্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্ত জিন,প্রজাতি ওবাস্তুতন্ত্রের বৈচিত্র্য ও সমগ্রতাকে জীববৈচিত্র্য বলে।
18. বিলুপ্ত প্রজাতি কাকে বলে?
উত্তর: যেসব প্রজাতির প্রমাণ বা অস্তিত্ব বর্তমানে আর নেই তাদের বিলুপ্ত প্রজাতি বলে।
19. দুটি বিলুপ্ত প্রজাতির নাম লেখো।
উত্তর:দুটি বিলুপ্ত প্রজাতি হল-(i) ডোডো পাখি ও (ii) আইরিশ হরিণ।
20. ভারত থেকে বিলুপ্ত এমন দুটি প্রজাতির নাম লেখো।
উত্তর:ভারত থেকে বিলুপ্ত এমন দুটি প্রজাতি হল-(i) গোলাপি মাথাযুক্ত হাঁস, (ii) সুমাত্রার গন্ডার।
21. IFRC-এর পুরো নাম হল
উত্তর: International Federation of Red Cross and Red Crescent Societies |
22. যেসব প্রজাতির জীবকে তথ্যের অভাবের জন্য কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি, তাদের কী বলে?
উত্তর: যেসব প্রজাতির জীবকে তথ্যের অভাবের জন্য কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি, তাদের স্বল্পজ্ঞাত প্রজাতি বলা হয়।
23. গামা বৈচিত্র্য কাকে বলে?
উত্তর: ভিন্ন ভৌগোলিক ক্ষেত্রে একইরকম পরিবেশের প্রজাতির পরিবর্তন বপ্রতিস্থাপনের ফলে যে বৈচিত্র্য তৈরি হয়, তাকে গামা বৈচিত্র্য বলে।
24. মেগা জীববৈচিত্র্যের দেশগুলির বেশিরভাগ কোন্ অঞ্চলের অন্তর্গত?
উত্তর:গা জীববৈচিত্র্যের দেশগুলির বেশিরভাগ নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্গত।
25. বায়োডাইভারসিটি হটস্পট বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
26. বিটা বৈচিত্র্য কাকে বলে?
উত্তর:কটি নির্দিষ্ট বাসস্থানভুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠীসমূহের মধ্যে যে জীববৈচিত্রা লক্ষ করা যায় তাকে বিটা বৈচিত্র্য বলে।
27. বাস্তুতন্ত্র গঠনকারী প্রজাতিসমূহের সংরক্ষণকে কী বলে?
উত্তর:বাস্তুতন্ত্র গঠনকারী প্রজাতিসমূহের সংরক্ষণকে বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ বলে।
28. জীববৈচিত্র্য বিনাশের একটি প্রাকৃতিক কারণ লেখো।
উত্তর: জীববৈচিত্র্য বিনাশের একটি প্রাকৃতিক কারণ হল অগ্ন্যুৎপাত।
29. বাস্তুতান্ত্রিক বিলুপ্তি কাকে বলে?
উত্তর: কোনো জীবপ্রজাতির সংখ্যা যখন হ্রাস পেতে থাকে তখন ওই প্রজাতি ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। এই পরিস্থিতিকে বাস্তুতান্ত্রিক বিলুপ্তি বলে।
30. যেসব প্রজাতির অদূর ভবিষ্যতে বিলুপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে তাদের বলে?
উত্তর: যেসব প্রজাতির অদুর ভবিষ্যতে বিলুপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে তাদের বিপদ্ধ প্রজাতি বলে।
31. বিপদপ্রবণ প্রজাতি কাকে বলে?
উত্তর: যেসব প্রজাতির জীবসংখ্যা দ্রুত হারে হ্রাস পাওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি বিপন্ন প্রজাতিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের বিপদপ্রবণ প্রজাতি বলে।
32. বিশ্ব বিলুপ্তি কী?
উত্তর: কোনো জীবের প্রজাতি বিশ্ব থেকে চিরতরে নষ্ট হয়ে যাওয়াই হল বিশ্ব বিলুপ্তি।
33. জীববৈচিত্র্য বিনাশের একটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ লেখো।
উত্তর:অনিয়ন্ত্রিত হারে বন্যপ্রাণী সংহার জীববৈচিত্র্য বিনাশের একটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ।
34. জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংরক্ষণকে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বলে।
35. জিনবৈচিত্র্য সংরক্ষণ কী?
উত্তর: কোনো একটি প্রজাতির মধ্যে যে জিনভান্ডার থাকে তার সংরক্ষণকে জিনবৈচিত্র্য সংরক্ষণ বলে।
36. জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দ্বারা মানুষ কীভাবে প্রভাবিত হয়?
উত্তর: জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণের মাধ্যমেই মানুষ তার খাদ্য ও অন্যান্য উপাদানের জোগান অব্যাহত রাখে।
37. টিস্যু-কালচার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:পরীক্ষাগারে বর্ধিষ্ণু কান্ডের কোশগুলিকে পোষক পদার্থ দিয়ে বৃদ্ধি করার পদ্ধতি হল টিস্যু-কালচার।
38. স্টকহোম সম্মেলন কত খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর:কহোম সম্মেলন 1972 খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়।
39. WWF-এর পুরো কথাটি কী?
উত্তর: WWF-এর পুরো কথাটি হল World Wide Fund for Nature |
40. ভারতের প্রথম বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ অঞ্চল কোন্টি?
উত্তর:ভারতের প্রথম বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ অঞ্চল হল-নীলগিরি পার্বত্য অঞ্চল।
41. নামদাফা জাতীয় উদ্যান কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: নামদাফা জাতীয় উদ্যান অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত।
42. ভারতের কোন্ বাঁধ প্রকল্প বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে?
উত্তর:ভারতের সাইলেন্ট ভ্যালি বাঁধ প্রকল্প বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে
43. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি উল্লেখ করো।
উত্তর:বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি হল ইন-সিটু সংরক্ষণ।
44. প্রকৃতিতে পাখির সংখ্যা অত্যধিক হারে কমে যাওয়ার প্রধান কারণ কী?
উত্তর:প্রকৃতিতে পাখির সংখ্যা অত্যধিক হারে কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হল পাখিদের বাসস্থানের অভাব।
45. MAB-র পুরো কথাটি কী?
উত্তর: MAB-র পুরো কথাটি হল Man and the Biosphere Programme |
46. পশ্চিমবঙ্গে ব্যাঘ্রপ্রকল্প কোথায় আছে?
উত্তর:পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবন ও বক্সায় ব্যাঘ্রপ্রকল্প আছে।
47. গ্রিন ডাটা বুক কী?
উত্তর:বর্তমানে অ-বিপন্ন বা অবলুপ্তির বিপদ থেকে মুক্ত জীবপ্রজাতি সমূহের তালিকা যে বইতে প্রকাশ করা হয় তাকে গ্রিন ডাটা বুক বলে।
48. ম্যানগ্রোভজাতীয় বনভূমি কোথায় দেখা যায়?
উত্তর:লবণাক্ত জলাভূমিতে ম্যানগ্রোভজাতীয় বনভূমি দেখা যায়।
49. জিন ব্যাংক কাকে বলে?
উত্তর:যেখানে জীবদেহের জিনগত বস্তু (Genetic Material) সংরক্ষণ করে বিপন্ন জীবপ্রজাতির জিনের বৈচিত্র্য রক্ষা করা হয় তাকে জিন ব্যাংক বলে।
প্রশ্ন 1. জীববৈচিত্র্যের জিনগত বৈচিত্র্য ও প্রজাতিগত বৈচিত্র্য সম্বন্ধে টীকা লেখো।
জীববৈচিত্র্য অবক্ষয়ের দুটি প্রভাব লেখো।
উত্তর:জীববৈচিত্র্যের জিনগত বৈচিত্র্য ও প্রজাতিগত বৈচিত্র্য
জীববৈচিত্র্যের উপাদানগুলির মধ্যে জিনগত বৈচিত্র্য ও প্রজাতিগত বৈচিত্র্য
অন্যতম-
জীববৈচিত্র্যের জিনগত বা জন্মগত বৈচিত্র্য (Genetic diversity):
কোনো জীব প্রজাতির মধ্যে জিনের সমবায়গত পার্থক্যের জন্য জীবের যে গঠনগত ও প্রকৃতিগত পার্থক্য লক্ষ করা যায়, তাকে জন্মগত বা জিনগত বৈচিত্র্য বলা হয়। জিনের সমবায়গত পার্থক্যের কারণে মানবজাতির মধ্যে প্রতিটি মানুষ দৈহিক ও মানসিক গঠন অনুযায়ী আলাদা। জিনগত পার্থক্যের কারণে সারা বিশ্বে প্রায় 50,000 প্রকারের ধান (ধান প্রজাতির নাম হল Oryza sativa) দেখা যায়। অন্যদিকে, Magnifera indica হল আম প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম। ভারতে এই প্রজাতির আমের প্রায় 200টি প্রকারভেদ আছে। যেমন-ফজলি, ল্যাংরা, গোলাপখাস, চৌসা, তোতাপুরি প্রভৃতি। কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির জীব জনসংখ্যা সুষম হারে বৃদ্ধি পেলে জন্মগত বৈচিত্র্য রক্ষিত হয় এবং প্রজাতিটি সংশ্লিষ্ট পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে অভিযোজিত হতে পারে। অন্যদিকে প্রজাতির জন্মগত বৈচিত্র্য হ্রাস পেলে প্রজাতিটির বিলোপ ঘটে।
জীববৈচিত্র্যের প্রজাতিগত বৈচিত্র্য (Species diversity):
কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের সমাবেশকে প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলে। প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রে উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা সর্বাধিক। অন্যদিকে মনুষ্য নিয়ন্ত্রিত বাস্তুতন্ত্রে প্রজাতিগত বৈচিত্র্য সর্বাপেক্ষা কম। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাকৃতিক অঞ্চলগুলির মধ্যে নিরক্ষীয় অঞ্চলের প্রজাতিগত বৈচিত্র্য সর্বাপেক্ষা সমৃদ্ধশালী। আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনুপ্রবেশ ঘটায় জীববৈচিত্র্য ভীষণভাবে কমে গেছে। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় কেবল একটি প্রজাতির ফসল উৎপাদনের দিকে জোর দেওয়া হয়। অন্যদিকে আদিম কৃষি পদ্ধতিতে একটি প্রজাতির বীজ বপন না করে কৃষিক্ষেত্রে একই প্রকার বা বহুপ্রকার ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বহু প্রজাতির বীজ বপন করা হয়। তাই আদিম কৃষি ব্যবস্থায় প্রজাতিগত বৈচিত্র্য তুলনামূলকভাবে বেশি। অন্যদিকে স্বাভাবিক বনভূমি অঞ্চলে প্রধান প্রধান উদ্ভিদগোষ্ঠীর সঙ্গে অন্যান্য অনেক নির্ভরশীল উদ্ভিদ প্রজাতি জন্মায়। স্বাভাবিক অরণ্যের উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল বহু প্রজাতির প্রাণীগোষ্ঠীরও সমাবেশ ঘটে। রোপিত বনভূমিতে কেবল নির্দিষ্ট প্রজাতির উদ্ভিদ রোপণ করা হয় বলে এইরূপ বনভূমিতে জীববৈচিত্র্য খুবই কম।
(i) প্রজাতিগত সমৃদ্ধি (Species richness): কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে উপস্থিত প্রজাতি সংখ্যাকে প্রজাতিগত সমৃদ্ধি বলে।
(ii) প্রজাতি প্রাচুর্য (Species abundance): কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে উপস্থিত প্রজাতিসমূহের মধ্যে প্রজাতিগুলির সংখ্যাগত আপেক্ষিক প্রাধান্যকে প্রজাতি প্রাচুর্য বলে।
(iii) আন্তঃসম্পর্কযুক্ত বৈচিত্র্য (Phylogenetic diversity): একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে উপস্থিত প্রজাতিসমূহের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের পার্থক্যকে আন্তঃসম্পর্কযুক্ত বৈচিত্র্য বলে।
জীববৈচিত্র্যের অবক্ষয়ের দুটি প্রভাব:-
বর্তমানে প্রজাতি বিলুপ্তির হার ভয়ংকর। বিগত কয়েক দশকে বিভিন্ন জীব প্রজাতি সংকটময় প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। জীববৈচিত্র্যের এই সংকট বা অবক্ষয়ের ফলে কতকগুলি প্রভাব লক্ষ করা যায়-
[ 1] জন্মগত অবক্ষয়: জীববৈচিত্র্যের অবক্ষয়ের ফলে কৃষি ব্যবস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, বহু কৃষক বেশি উৎপাদনের আশায় বিভিন্ন সংকর প্রজাতিগুলির উপর নির্ভরশীল হওয়ায় দেশীয় প্রজাতিসমূহ অবহেলিত হচ্ছে।
[2] সাংস্কৃতিক অবক্ষয়: জন্মগত ও বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নতুন নতুন প্রজাতি ও ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তির ফলে সমাজজীবনে নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। যার ফলে খাদ্যশৃঙ্খলের অবক্ষয় হচ্ছে। যা মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনে প্রভাব ফেলছে।
প্রশ্ন 2. ভারতে স্বস্থানিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করো। জীববৈচিত্র্য ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা করো।
উত্তর:ভারতে স্বস্থানিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
বিভিন্ন প্রজাতিগুলিকে তাদের নিজ আবাসস্থলে রক্ষা করার পদ্ধতিকে জীববৈচিত্র্যের স্বস্থানিক বা অন্তঃক্ষেত্রীয় সংরক্ষণ (In-Situ Conservation) বলা হয়। যেমন-রয়াল বেঙ্গল টাইগারকে সুন্দরবন অভয়ারণ্যে সংরক্ষণ করা হয়। স্বস্থানিক সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি হল-
[1] জাতীয় উদ্যান: ভারত সরকার প্রণীত আইন দ্বারা জাতীয় উদ্যান (National Park) নিয়ন্ত্রিত হয়। এখানে শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জাতীয় উদ্যানগুলি মূলত গবেষণা, শিক্ষা এবং বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা হয়। 2011 সাল পর্যন্ত ভারতে 102 টি জাতীয় উদ্যান গড়ে উঠেছে। ভারতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য জাতীয় উদ্যানের উদাহরণ হল-উত্তরাখণ্ডের করবেট, মধ্যপ্রদেশের কানহা ইত্যাদি।
[2] অভয়ারণ্য: বণ্যপ্রাণীরা যাতে নির্ভয়ে চলাফেরা করতে এবং প্রজননে লিপ্ত হতে পারে তার জন্য অভয়ারণ্য (Sanctuary) গড়ে তোলা হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশে এখানে শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভারতে বর্তমানে 515 টি অভয়ারণ্য রয়েছে। ভারতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অভয়ারণ্য হল-পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জ, বেথুয়াডহরি; কর্ণাটকের সোমেশ্বর ইত্যাদি।
[3] সংরক্ষিত বনাঞ্চল: Indian Forest Act 1927 অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চল (Reserve Forest)-এ প্রাণী শিকার ও গাছ কাটা নিষিদ্ধ। ভারতের কয়েকটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল হল- পশ্চিমবঙ্গের গোরুমারা, চাপরামারি; অসমের কাজিরাঙা ইত্যাদি।
[4] সুরক্ষিত বনভূমি: জনগণ সরকারি অনুমতিসাপেক্ষে সুরক্ষিত বনভূমি (Protected Forest)-কে ব্যবহার করতে পারে। তবে এখানে পশুশিকার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
[5] জীবমণ্ডল সংরক্ষণ অঞ্চল: জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য UNESCO-এর প্রোগ্রাম অনুযায়ী Man and the Biosphere Reserve (MAB) তৈরি করা হয়েছে। 2011 সাল পর্যন্ত ভারতে জীবমণ্ডল সংরক্ষণ অঞ্চল (Biosphere Reserve)-এর সংখ্যা 18টি, যার মধ্যে 9টি MAB হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। ভারতের অন্যতম জীবমণ্ডল সংরক্ষণ অঞ্চল হল পশ্চিমঘাট পর্বতের নীলগিরি। একটি জীবমণ্ডল সংরক্ষণ অঞ্চলের মধ্যে তিনটি বলয় থাকে-(1) কেন্দ্রীয় অঞ্চল (Core Zone), (ii) মধ্যবর্তী অঞ্চল (Buffer Zone) ও (iii) পরিবর্তনশীল অঞ্চল (Transitional Zone)।
জীববৈচিত্র্য ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক
জীববৈচিত্র্য ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে দু-ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। [1] মানুষের ওপর জীববৈচিত্র্যের প্রভাব ও [2] জীববৈচিত্র্যের ওপর মানুষের প্রভাব।
[1] মানুষের ওপর জীববৈচিত্র্যের প্রভাব: মানুষ জীববৈচিত্র্যনির্ভর প্রাণী। মানুষের খাদ্যের উৎসই হল জীববৈচিত্র্য। তা ছাড়া জীবিকা, বস্ত্র ও বাসস্থানের বিভিন্ন উপকরণগুলিও আসে জীববৈচিত্র্য থেকেই। প্রকৃতপক্ষে জীববৈচিত্র্যের জন্যই পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব বজায় রয়েছে।
[2] জীববৈচিত্র্যের ওপর মানুষের প্রভাব: অতীত থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষের যত উন্নতি ঘটেছে, মানুষ তত বেশি করে জীববৈচিত্র্যকে প্রভাবিত করেছে। মানুষের বিভিন্ন অবিবেচিত ক্রিয়াকলাপ, যেমন-বৃক্ষছেদন, চোরাশিকার, অতিশিকার, কৃষিজমি ও বাসভূমির অপরিকল্পিত সম্প্রসারণ, পরিবেশদূষণ ও শিল্প স্থাপন ইত্যাদি কারণে আজ জীববৈচিত্র্য মহা সংকটের সম্মুখীন। যেখানে একটি উন্নত প্রজাতি সৃষ্টি হতে 2,000 থেকে 1,00,000 প্রজন্ম সময়কাল লেগে যায় সেখানে মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় 50 থেকে 200 টি প্রজাতি প্রকৃতি থেকে লোপ পেয়ে যাচ্ছে, যা ভীষণ উদ্বেগের বিষয়।
Editing by- Rita Moni Bora