Chapter — 1
অতীত স্মরণ
—------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
অতীত কল্পনা: পৌরাণিক কাহিনি, কিংবদন্তি, লোককথা, স্মৃতিকথা এবং মৌখিক ঐতিহ্য
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি বা প্রতিটি প্রশ্নের মান
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি বা MCQ
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. গ্রিক পুরাণের 'শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউজদের মন্দির', এটির অর্থ হল-
a) Miuseion শব্দের
b) Mouseion শব্দের
c) Mauseion শব্দের
d) Meuseion শব্দের
উত্তর : d) Meuseion শব্দের
2. মিউজিয়াম সংক্রান্ত বিদ্যাকে বলা হয়-
a) জুলজি
b) মিউজিওলজি
c) মিউজিকোলজি
d) কোনোটিই নয়
উত্তর : b) মিউজিওলজি
3. 'মিউজিয়াম' শব্দটি এসেছে-
a) 'মউসিয়ন' শব্দ থেকে
b) 'মিউসিয়ন' শব্দ থেকে
c) 'মাউসিয়ন' শব্দ থেকে
d) 'মুউসিয়ন' শব্দ থেকে
উত্তর : a) 'মউসিয়ন' শব্দ থেকে
4. ২৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে টলেমি প্রথম সোটার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দর্শন কনস্টান্টিনোপলে মিউজিয়ামটি অবস্থিত ছিল-
a) রোমে
c) প্যারিসে
c) কনস্টান্টিনোপল
d) আলেকজান্দ্রিয়াতে
উত্তর : d) আলেকজান্দ্রিয়াতে
5. ল্যুভর মিউজিয়াম কোথায় অবস্থিত?
a) লন্ডন
b) প্যারিস
c) ফ্লোরেন্স
d) ব্রাসেল্স
উত্তর : b) প্যারিস
6. 'মিউজিয়াম' (Museum) শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ —---------------------- থেকে।
a) Mouseion
b) Musion
c) Mousin
d) Mosem
উত্তর : A
7. হাজারদুয়ারি জাদুঘর একটি—--------------------- জাদুঘর।
a) বিশ্বকোশ
b) শিল্প
c) তিহাসিক
d) প্রত্নতাত্ত্বিক
উত্তর : C
8.--------------------------- সর্বপ্রথম সমালোচনামূলক ইতিহাস লেখার পদ্ধতি শুরু করেন।
a) থুকিডিডিস
b) হোমার
c) হেরোডোটাস
d) র্যাঙ্কে
উত্তর : A
9. 'আধুনিক ইতিহাস চর্চার জনক' হলেন—------------------।
b) সু-মা-কিয়েন
a) হেরোডোটাস
c) ইবন খালদুন
d) লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কে
উত্তর : C
10. ইতিহাস রচনার সূচনা ঘটে
a) রোমে
b) গ্রিসে
c) ইটালিতে
d) জার্মানিতে
উত্তর : B
11. 'What is History' গ্রন্থটির লেখক হলেন—--------------------।
a) মার্ক ব্লখ
b) ই. এইচ. কার
c) বিউরি
d) অ্যাডাম স্মিথ
উত্তর : B
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
1. 'History' শব্দটি কোথা থে কী?
উত্তর : এ 'History' শব্দটি 'Historia' নামক একটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ হল অনুসন্ধান বা তদন্ত।
2. জনশ্রুতি কী?
উত্তর : যখন কোনো ঐতিহাসিক বিবরণের তথ্য ও সন-তারিখের যথার্থতার প্রমাণের অভাব থাকে এবং যে অতীত কাহিনিগুলি বংশপরম্পরায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছোয়, তাকে জনশ্রুতি বলে।
3. কারা প্রথম লোককথা বা সংকলন করেন?
উত্তর : জেকব গ্রিম ও উইলহেম গ্রিম নামে দুই ভাই জার্মানির কৃষকদের জনশ্রুতি ও লোককথার বিভিন্ন কাহিনি সংগ্রহ করে সর্বপ্রথম ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে 'Kinder-und Hausmärchen' নামে একটি সংকলন প্রকাশ করেন।
4. টম থাম্ব কাহিনির লেখক কে?
উত্তর : টম থাম্ব কাহিনির লেখক রিচার্ড জনসন।
5. পৌরাণিক কাহিনি বা মিথস।
উত্তর : সৃষ্টির আদিম কালে অপরিণত বুদ্ধির মানুষ যে সমস্ত ধর্মীয় অলৌকিক কল্পকাহিনি রচনা ও প্রচার করে তাকে পৌরাণিক কাহিনি বা মিথস বলে।
6. কাদের কেন্দ্র করে মিথ গড়ে ওঠে ?
উত্তর : দেবদেবী বা অতিদৈবিক ক্ষমতা সম্পন্ন বীর বা নায়ককে কেন্দ্র করে মিথ গড়ে ওঠে।
7. পৌরাণিক কাহিনি বলতে বিয়ারলেইন কী বুঝিছিল ?
উত্তর : বিয়ারলেইনের মতে, পৌরাণিক কাহিনি হল আমাদের অবচেতন মনের কাহিনি বিশেষ, যা সম্ভবত আমাদের জিন-এ লিপিবদ্ধ।
৪. আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব অনুযায়ী দৃষ্টবাদী পদ্ধতি মেনে ঐতিহাসিককে কী কী কাজ করতে হয়?
উত্তর: আধুনিক ইতিহাস তত্ত্বে দৃষ্টবাদী পদ্ধতি মেনে ঐতিহাসিককে দুটি কাজ করতে হয়, যথা- ঐতিহাসিক তথ্য আবিষ্কার ও ঐতিহাসিক তথ্যসূত্রের দ্বারা ঘটনার ব্যাখ্যা দান।
9. ইতিহাস চর্চায় কার্যকারণ পদ্ধতিটি কী?
উত্তর: ইতিহাসে বলা হয় যে প্রতিটি কাজ ঘটার অন্তরালে কোনো-না-কোনো কারণ থাকে। ইতিহাস চর্চায় এই কাজ বা ঘটনা ঘটার কারণ অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ পদ্ধতিটি হল কার্যকারণ পদ্ধতি।
10. অবয়ববাদ কী?
উত্তর : অবয়ববাদ হল আসলে প্রথাগত ও আচারগত ঐতিহ্যের ওপর নির্ভরশীল মানব ইতিহাস। ঐতিহাসিক ধারণায় অবয়বের পরিবর্তন ঘটলে বিষয়বস্তুরও পরিবর্তন ঘটে।
11. ইতিহাস চর্চায় আপেক্ষিকতাবাদ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ইতিহাস চর্চায় আপেক্ষিকতাবাদ অনুযায়ী ইতিহাসে বিষয়বস্তুর গুরুত্ব, সময়ের গুরুত্ব, ঘটনার পরিণতির গুরুত্ব সবই আপেক্ষিক। এই মতবাদে সময়ের সঙ্গে ইতিহাসের তথ্যসূত্রগুলির সত্যতা আপেক্ষিক বলে প্রমাণিত হয়।
12. সাবলটার্ন গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর: সাবলটার্ন গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ড. রণজিৎ গুহ।
13. 'Founder of Modern Source based History' এর লেখক কে?
উত্তর : 'Founder of Modern Source based History'-এর লেখক হলেন লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কে।
14. পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর : পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের কয়েকটি গুরুত্ব হল-ইতিহাস অতীতের ধারণাদানে, জ্ঞানের বিকাশে, ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুধাবনে, অতীত ও বর্তমানের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে থাকে। এ ছাড়াও ইতিহাস সঠিক সত্য নিরূপণে, আর্থ-সাংস্কৃতিক উন্নতির ধারণালাভে এবং জাতীয়তাবাদের বিকাশে সাহায্য করে থাকে।
15. ইতিহাস রচনা করতে গেলে ঐতিহাসিককে যেসব পদ্ধতি মেনে এগোতে হয় সেগুলির কয়েকটি উল্লেখ করো।
উত্তর : ইতিহাস রচনা করতে গেলে ঐতিহাসিককে যে সমস্ত পদ্ধতি মেনে এগোতে হয়, তার কয়েকটি হল-[i] উৎসের অনুসন্ধান, [ii] উৎস থেকে তথ্য চয়ন, [iii] তথ্যের যাচাইকরণ, [iv] তথ্যসমূহের বিশ্লেষণ, [v] ঘটনা ও বক্তব্যের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন, [vi] ধারাবাহিকতা ও কালানুক্রম, [vii] কার্যকারণ পদ্ধতি, ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব, [viii] তথ্য সংরক্ষণ প্রভৃতি।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
🛶রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর বা LAQ
1. পেশাদারি ইতিহাস বলতে কী বোঝায়? অপেশাদারি ইতিহাসের সঙ্গে পেশাদারি ইতিহাসের পার্থক্য কী?অথবা, পেশাদারি ইতিহাস বলতে কী বোঝ? অপেশাদারি ইতিহাসের সাথে এর বৈসাদৃশ্যগুলি ব্যাখ্যা করো। [Model Question)
Ans :
2.পেশাদারি শাখা (Professional Branch) হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো। অথবা, পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করো। অথবা, ইতিহাস রচনায় ঐতিহাসিকের ভূমিকা লেখো।
👑ইতিহাসের গুরুত্ব
1. অতীতের ধারণাদানে: আর. জি. কলিংউড তাঁর 'দ্য আইডিয়া অব হিস্ট্রি' গ্রন্থে লিখেছেন ঐতিহাসিকের মস্তিষ্ক থেকে অতীতের যে ছবি বেরিয়ে আসে তা হল ইতিহাস। পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব, মানুষের সভ্য দশা, বন্য দশা, সভ্যতার উদয় ও অগ্রগতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, ধর্মনীতি সমস্ত কিছুরই ধারণা দেয় ইতিহাস। জে. বি. বিউরি এবং লিওপোল্ড ভন র্যাঙ্কের মতো ঐতিহাসিকগণ তাই বলেছেন- “ঐতিহাসিকের কাজ হল শুধুমাত্র অতীত পুনর্গঠন করা এবং অতীত ঘটনাগুলিকে পরিবর্তিত বা বিকৃত না করে উপস্থাপিত করা।"
2. জ্ঞানের সুষম বিকাশে: ইতিহাসে আমরা খুঁজে পাই পুরাতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ, দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, ভৌগোলিক অবস্থান, সাহিত্যিক বিবর্তন, ভাষার বৈচিত্র্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের তত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞানের মানবক্রিয়া এবং অর্থনীতির নানারূপ। এ ছাড়াও মানব বিবর্তন, সভ্যতার উত্থানপতন, সাম্রাজ্যের উত্থানপতন, সমকালীন সমাজব্যবস্থা, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্মনীতি, সংস্কারকাজ, মহাপুরুষদের উদ্যোগ, বিদ্রোহ, বিপ্লব, আন্দোলন প্রভৃতি সম্পর্কেও জ্ঞান লাভ করা যায় ইতিহাস থেকে। ঐতিহাসিক তাঁর লেখায় সুস্পষ্টভাবে এই বিষয়গুলি তুলে ধরেন।
3. ঘটনার ধারাবাহিকতার অনুধাবনে: তুর্গো, কনডারসেট প্রমুখের ধারণায় ইতিহাস অনুন্নত থেকে ধীরে ধীরে উন্নত সভ্যতায় গিয়ে পৌঁছোয়। ঐতিহাসিক গিবন বলেন প্রত্যেক যুগেই মানুষের সম্পদ, শক্তি, রান বাড়ছে। ইতিহাস এই সমস্ত কিছুকেই ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করে
স্ব থাকে। প্রাগৈতিহাসিক পর্ব থেকে শুরু করে প্রায়-ঐতিহাসিক ও ঐতিহাসিক স পর্বের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে উঠে আসে। উ ঐতিহাসিক তার ইতিহাস লেখায় প্রাচীন যুগের নিদর্শনগুলি মধ্যযুগে এবং এ মধ্যযুগের নিদর্শনগুলি আধুনিক যুগের মানুষের কাছে উপস্থাপন করে।
4. অতীত ও বর্তমানের মধ্যে সম্পর্কস্থাপনে: ইতিহাস অতীত ও বর্তমানের মধ্যে যোগসূত্র নির্মাণ করে। তাই ঐতিহাসিক এডওয়ার্ড হ্যালেট গ্রিক ইতিহাসবিদ থুকিডিডিস কার (E.H. Carr) বলেছেন, "ইতিহাস হল বর্তমান ও অতীতের মধ্যে অন্তহীন সংলাপ।” ঐতিহাসিক কার আরও বলেছেন, বর্তমান যেমন অতীত থেকে শিক্ষা নেয়। তেমনি অতীতকেও দেখা হয় বর্তমানের আলোকে। এই প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ঐতিহাসিকের মাধ্যমে ইতিহাসে অতীত ও বর্তমানের মধ্যে দেওয়া-নেওয়া চলতে থাকে।
5. বর্তমানের ভিত্তি নির্মাণে: অতীতের ভিতের ওপর বর্তমান দাঁড়িয়ে থাকে। এই বর্তমানকে জানা ও বোঝার জন্য অতীত ইতিহাস অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। আসলে ঐতিহাসিক বর্তমানের চোখে অতীতকে দেখে থাকেন। তিনি বর্তমানের চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা অতীতের ওপর প্রয়োগ করে থাকেন। ফলশ্রুতি হিসেবে অতীত বর্তমানরূপে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
6. আর্থ-সাংস্কৃতিক উন্নতির ধারণায়: প্রাচীনকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষি ও পশুপালনভিত্তিক অর্থনীতি কীভাবে শিল্প ও বাণিজ্যভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হল তা জানা যায় ইতিহাস থেকে। এ ছাড়াও কোন্ ধরনের অর্থনীতি মানুষ ও রাষ্ট্রের পক্ষে কল্যাণকর বা কোন্ ধরনের অর্থনীতি দ্বারা একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব সে সম্পর্কে ধারণা দেয় ইতিহাস। এ ছাড়াও সাংস্কৃতিক অগ্রগতি বা বিবর্তনের ধারা বোঝা যায় ইতিহাস থেকে।
7. সঠিক সত্য নিরূপণে: সভ্যতায় মানুষের অবদানের বিভিন্ন দিকগুলি তুলে ধরতে গিয়ে ইতিহাস সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্যকে অধিক গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপিত করে। অপরদিকে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলিকে যতটা বেশি সম্ভব বাদ দিয়ে চলার চেষ্টা করে। নতুন নতুন সঠিক তথ্যের দ্বারা প্রচলিত তথ্যকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন এবং বর্জন করে নতুন সর্বজনগ্রাহ্য সঠিক তথ্য উপস্থাপনা করে ইতিহাস। ফলে ইতিহাসের ক্ষেত্রে আমরা সহজেই সঠিক সত্যটি নিরূপণ করতে পারি।
৪. জাতীয়তাবাদের ও দেশপ্রেমের বিকাশে: ইতিহাস জনগণকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে ও দেশপ্রেমে জাগ্রত করে। ইতিহাস থেকেই বিভিন্ন দেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের স্বরূপ উন্মোচিত হয়। স্পেনের বিরুদ্ধে ওলন্দাজদের স্বাধীনতা আন্দোলন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সংগ্রাম প্রভৃতি সম্পর্কে ইতিহাস থেকেই জ্ঞান লাভ করি।
উপসংহার: পেশাদারি শাখা হিসেবে ইতিহাসের নানাবিধ গুরুত্ব থাকলেও এর সবচেয়ে বড়ো গুরুত্ব হল-একটি দেশের অতীত সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরা।
3. আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি (Methods of Modern History Writing) সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
Ans:
4. আধুনিক ইতিহাস তত্ত্বের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো। অথবা, আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত আে বিবরণ দাও। অথবা, আধুনিক ইতিহাস রচনার মূল বিষয়গুলি কী কী তা পর্যালোচনা করো।
Ans :
5. জাদুঘর কাকে বলে জাদুঘরের উদ্দেশ্যগুলি লেখো।
👑 জাদুঘরের সংজ্ঞা
1. আন্তর্জাতিক জাদুঘর পর্ষদের অভিমত: আন্তর্জাতিক জাদুঘ পর্ষদ অর্থাৎ আইকম (International Council of Museums বা ICOM) জাদুঘরের সংজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেছে, জাদুঘর হল অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে।
2. বাংলা আকাদেমির অভিমত: পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির 'আকাদেমি বিদ্যার্থী বাংলা অভিধান' অনুসারে, যে-ঘরে নানা অত্যাশ্চর্য জিনিস বা প্রাচীন জিনিস সংরক্ষিত থাকে তা-ই হল জাদুঘর।
3. সাধারণ সংজ্ঞা: সাধারণভাবে বলা যায় জাদুঘর হল বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা, যেখানে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্প-বিষয়ক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে তা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এক কথায়, বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনে সংরক্ষণ করে রাখা হয় সেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনকে জাদুঘর বলে।
👑জাদুঘরের উদ্দেশ্যসমূহ
1. প্রত্ননিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: জাদুঘরের একটি প্রধান উদ্দেশ্য হল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন যুগের নানা নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা। জাদুঘরে প্রাচীন মুদ্রা, লিপি, নানা শিল্পকর্ম (ভাস্কর্য, স্থাপত্য, চিত্রকলা), দুষ্প্রাপ্য পুরাবস্তুসমূহ এবং নানা মডেল ও চার্ট সংরক্ষিত রাখা হয়।
2. প্রতিকৃতি নির্মাণ: জাদুঘরগুলি বিভিন্ন প্রাচীন, আধুনিক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শনের বা ক্রিয়াকলাপের বা বস্তুসমূহের বা ব্যক্তিসমূহের মডেল (Replica) নির্মাণ করে। এই মডেলগুলি দর্শকদের দেখানোর লক্ষ্যে সাজিয়ে রাখা হয়।
3. অতীত সমাজ-সভ্যতার ধারণা দান: জাদুঘরে যে সমস্ত জিনিস সাজিয়ে রাখা হয় সেগুলি থেকে আমরা অতীত সমাজসভ্যতা সম্পর্কে এক সাধারণ ধারণা পেয়ে থাকি। বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে মানবসমাজ ও সভ্যতার যে অগ্রগতি ঘটেছে তার বিভিন্ন নিদর্শন ও স্মৃতিচিহ্নের আভাস মেলে জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন প্রত্ননিদর্শনগুলি থেকে।
4. স্মরণীয় ব্যক্তিত্বদের সংগ্রহশালা নির্মাণ: বিশ্বের বেশ কয়েকটি জাদুঘরকে সম্পূর্ণরূপে বা আংশিকভাবে বিশ্বের জনপ্রিয় ও স্মরণীয় ব্যক্তিত্বদের মূর্তির সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাদাম তুসোর জাদুঘরটির কথা উল্লেখ করা যায়। এই জাদুঘরটিতে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত রাজকীয় ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়াতারকা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতৃবর্গ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের মোমের মূর্তি সংরক্ষিত রয়েছে।
5. জনসচেনতা ও জ্ঞানের প্রসার: জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রত্ননিদর্শনগুলি দর্শকের মনে এক সচেতনতা জাগায়। এগুলি আবার গবেষণার কাজেও ব্যবহৃত হয়। প্রত্ননিদর্শনগুলি দর্শনের ফলে দর্শকের জ্ঞানেরও প্রসার ঘটে।
6. অতীত ইতিহাসের পুনরাবির্ভাবের সাহায্য: জাদুঘরে যে সমস্ত ঐতিহাসিক নিদর্শন বা উপাদান সংগ্রহ করা হয় সেগুলি অতীত ইতিহাসের পুনরাবির্ভাবে সাহায্য করে বলা চলে। বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসা নানা প্রত্ননিদর্শনগুলি আমাদের পাঠ্যকাহিনি বা ইতিহাসকে প্রাণবন্ত বা সজীব করে তোলে। অর্থাৎ বলা যায় জাদুঘর অতীত ইতিহাসের পুনরাবির্ভাবে সাহায্য করে থাকে।
0 Comments