Chapter — 2
ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার
-----------------------------------------------------------------------------------------------
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলি বা MCQ
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
1. "প্রাথমিক স্তরে জাতীয়তাবোধ অন্যদেশে উপনিবেশ গড়ে তোলার প্রেরণা জোগায়, যা পরবর্তীকালে সাম্রাজ্যবাদের রূপ নেয়।”-এই উক্তিটি করেছেন-
a) ভি. আই. লেনিন
b) জন. এ. হবসন
c) মরগ্যানথাউ
d) পামার ও পারকিনস
উত্তর : B
2. "নিজ এলাকার বাইরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সম্প্রসারণই হল সাম্রাজ্যবাদ।”-এই উক্তিটি করেছেন-
a) ভি. আই. লেনিন
b) জন. এ. হবসন
c) মরগ্যানথাউ
d) পামার ও পারকিনস
উত্তর : C
3. "সাম্রাজ্যবাদ বলতে অন্য দেশের স্বাধীনতার ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণকে বোঝায়।”-এই উক্তিটি করেছেন-
a) কার্ল কাউৎস্কির
b) চার্লস হজ
c) এইচ. জি. ওয়েলস
d) চার্লস বেয়ার্ড
উত্তর : B
4. "পুঁজিবাদের জঠরে সাম্রাজ্যবাদের জন্ম”-এই উক্তিটি করেন-
a) স্ট্যালিন
b) লেনিন
c) হবসন
d) ডেভিড টমসন
উত্তর : B
5. সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কিত আলোচনায় ফিনান্স ক্যাপিটালিজম ধারণার প্রবর্তন করেন-
a) অ্যাডাম স্মিথ
b) আলেকজান্ডার রোডস
c) মার্কস
d) রুডলফ হিলফারডিং
উত্তর : D
6. সাম্রাজ্যবাদকে 'পুঁজিবাদের একচেটিয়া পর্যায়' বলেছেন—--------------------।
a) র্ল মার্কস
b) লেনিন
c) এঙ্গেলস
d) ডিজরেলি
উত্তর : B
7. 'Industry and Empire' গ্রন্থটির লেখক হলেন—-------------------।
a) লেনিন
b) এঙ্গেল্স
c) হবসবম
d) ক্লিফোর্ড ডিরেজ
উত্তর : C
8. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের স্থায়ী শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও বিশ্ববাসীর নিরাপত্তারক্ষার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।
a) জাতিসংঘ
b) ইউরোপীয় ইউনিয়ন
c) জাতিপুঞ্জ
d) কমিকন
উত্তর : C
9. সমাজতন্ত্রী অর্থনীতির আদর্শ বিশ্বে কে জনপ্রিয় করে তোলে?
[i] মার্ক ব্লখ
[ii] কার্ল মার্কস
[iii] ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস
[iv] অ্যাডাম স্মিথ
বিকল্পসমূহ • A. [i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল
B. [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল
C. [i], [ii], [iii], [iv] সবকটি সঠিক
D. [i], [ii], [iii], [iv] সবকটি ভুল
উত্তর : B
10. জেমস মিল রচিত গ্রন্থগুলি হল—---------------------।
[i] অ্যান্ এসে অন্ গভর্নমেন্ট
[ii] এলিমেন্টস্ অব পলিটিক্যাল ইকোনমি
[iii] হিস্ট্রি অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
[iv] ওয়েল্থ অব নেশন্স
বিকল্পসমূহ. A. [i], [ii] সঠিক এবং [iii], [iv] ভুল
B. [ii], [iii] সঠিক এবং [i], [iv] ভুল
C. [i], [ii]. [iii] সঠিক এবং [iv] ভুল
D. [i], [ii], [iii], [iv] সবকটি সঠিক
উত্তর : D
11. বার্থেলোমিউ দিয়াজ কোন্ দেশের নাবিক ছিলেন?
a) ইংল্যান্ড
b) ফ্রান্স
c) পোর্তুগাল
d) জার্মানি
উত্তর : C
12. আফ্রিকাকে ইউরোপীয়রা মনে করত —
a) অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশ
b) নদীমাতৃক দেশ
c) সম্পদহীন দেশ
d) আলোক উজ্জ্বল মহাদেশ
উত্তর : A
13. জাপান একুশ দফা দাবি পেশ করেছিল —
a) ভারতে
b) চিনে
c) কোরিয়ায়
d) ফ্রান্সে
উত্তর : B
14. ইনকা সভ্যতা ধ্বংস করেন —-
a) কলম্বাস
b) হার্মান্দো কোটেস
c) ফ্রান্সিসকো পিজারো
d) আমেরিগো ভেসপুচি
উত্তর : C
15. ব্রাজিলে ঔপনিবেশিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল —
a) পোর্তুগাল
b) স্পেন
c) ফ্রান্স
d) ইংল্যান্ড
উত্তর : A
16. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপান চিনের ওপর—------------------ দফা দাবি পেশ করে।
a) সতেরো
b) উনিশ
c) একুশ
d) তেইশ
উত্তর : C
17. —------------- খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পঠিত হয়।
a) ১৬০০
b) ১৬০১
c) ১৬৬৫
d) ১৬৫৭
উত্তর : A
18. ইংরেজ ও ব্রয়দেশের মধ্যে ইয়ান্দাবুর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়—--------------------খ্রিস্টাব্দে।
a) ১৮১৬
b) ১৮২৬
c) ১৮৫৪
d) ১৮৭৯
উত্তর : B
19. —------------------ সন্ধি স্বাক্ষরের পর চিনে বিদেশিদের অবাধ অনুপ্রবেশ শুরু হয়।
a) বার্লিনের
b) অ্যামিয়েন্সের
c) তিয়েনসিন
d) শিমোনোসেকির
উত্তর : D
20. চিনে ইউরোপের বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূত্রপাত হয়—------------------ বন্দরের মধ্যে দিয়ে।
a) ম্যাকাও
b) সাংহাই
c) ক্যান্টন
d) নানকিং
উত্তর : A
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি বা SAQ
1. আটলান্টিক ক্রীতদাস ব্যাবসা কী?
উত্তর : আফ্রিকার কৃস্নাঙ্গ ক্রীতদাসদের আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে আমেরিকায় রপ্তানি করার লাভজনক ব্যাবসাকে আটলান্টিক ক্রীতদাস ব্যাবসা বলে।
2. আফ্রিকার কোন্ কোন্ অঞ্চলে ঔপনিবেশিক শক্তি জাতিগত বৈষম্য কায়েম করেছিল?
উত্তর : আফ্রিকার বুরুন্ডি, লিবেরিয়া, ইথিওপিয়া, নামিবিয়া, মাদাগাসকার, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি অঞ্চলে ঔপনিবেশিক শক্তি জাতিগত বৈষম্য কায়েম করেছিল।
3. হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জটি কত খ্রিস্টাব্দে মার্কিন সাম্রাজ্যভুক্ত হয়?
উত্তর : হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জটি মার্কিন সাম্রাজ্যভুক্ত হয় ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে।
4. উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়কাল থেকে (১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে) কারা আফ্রিকায় আসতে শুরু করেন?
উত্তর : উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়কাল থেকে (১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে) স্কট, স্পেক, লিভিংস্টোন, স্ট্যানলি, পিটার্স, দিব্রাজা প্রমুখ ধর্মপ্রচারক ও অভিযাত্রীরা আফ্রিকায় আসতে শুরু করেন।
5. কোন্ দেশগুলিকে ঔপনিবেশিকতাবাদের প্রতিকৃতি বলা হয়?
উত্তর : পঞ্চদশ শতক নাগাদ পোর্তুগাল ও স্পেন এই দুই দেশ সমুদ্রপথ ধরে বাণিজ্য প্রসারের লক্ষ্যে উপনিবেশ গড়ে তোলায় সচেষ্ট হয়, তাই এই দুই দেশকে ঔপনিবেশিকতাবাদের প্রতিকৃতি বলা হয়।
6. উনিশ শতকের বিশ্বরাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : উনিশ শতকের বিশ্বরাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল ইউরোপের বাইরে ইউরোপীয় শক্তিগুলির বিস্তারলাভ।
7. উপনিবেশবাদের প্রভাব লেখো।
উত্তর : উপনিবেশবাদের প্রভাবে একদিকে যেমন বাণিজ্যিক শক্তিগুলি শাসক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, অপরদিকে তেমন স্বাধীন দেশগুলির অর্থনীতি ও রাজনীতি ঔপনিবেশিক শক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে।
৪. উপনিবেশবাদের অবসানের কয়েকটি কারণ লেখো।
উত্তর : উপনিবেশবাদের অবসানের কয়েকটি কারণ হল জাতীয় মুক্তি আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী চেতনা, বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব, মার্কিন ও সোভিয়েত ভূমিকা, রাষ্ট্রসংঘের গঠন, নির্জেটি আন্দোলন ইত্যাদি।
9. সাম্রাজ্যবাদ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কোনো রাষ্ট্র বা জাতির ওপর অন্য কোনো শক্তিশালী রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই হল সাম্রাজ্যবাদ।
10. লেনিনের মতে পুঁজিবাদের সম্প্রসারিত রূপ কী?
উত্তর : লেনিনের মতে পুঁজিবাদের সম্প্রসারিত রূপ হল সাম্রাজ্যবাদ।
11. 'আফ্রিকা কাড়াকাড়ি' বলতে কী বোঝ?
উত্তর : শিল্পবিপ্লবের পর ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলি কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদিত পণ্যসামন্ত্রী বিক্রয়ের জন্য উপনিবেশ স্থাপনের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। নব আবিষ্কৃত আফ্রিকায় ইউরোপীয়রা উপনিবেশ দখলের যে লড়াই শুরু করে তাকে 'আফ্রিকার কাড়াকাড়ি' বলে।
12. কাদের মধ্যে তেল এল কবির-এর যুদ্ধ বাঁধে?
উত্তর : ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সেনাদের ও আহমেদ উরাবি নেতৃত্বাধীন মিশরের মধ্যে তেল এল কবির-এর যুদ্ধ বাঁধে। এই যুদ্ধে মিশরকে পরাজিত করে সেখানে ব্রিটিশরা নিজেদের আধিপত্য কায়েম করে।
13. কানাগাওয়ার চুক্তি কখন ও কাদের মধ্যে হয়?
উত্তর :১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে জাপানের সোগুন সরকার ও আমেরিকার মধ্যে কানাগাওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
14. কোন্ যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
উত্তর :সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেন্ট লরেন্স ও মিসিসিপি অঞ্চল ফ্রান্সের হাতছাড়া হয়।
15. কার আমলে নতুনভাবে ফরাসি সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে?
উত্তর : ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ানের আমলে নতুনভাবে ফরাসি সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে।
16. কত খ্রিস্টাব্দে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপিত হয়?
উত্তর : ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপিত হয়।
17. আফ্রিকার কোন্ কোন্ অঞ্চল ফরাসি সাম্রাজ্যভুক্ত হয়?
উত্তর : আফ্রিকার আলজিয়ার্স ও টিউনিস অঞ্চল, পশ্চিম উপকূল এবং সেনেগল ফরাসি সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।
18. সিংহল কাদের উপনিবেশ ছিল?
উত্তর : সিংহল ব্রিটিশদের উপনিবেশ ছিল।
19. কোন্ অঞ্চল 'মশলা দ্বীপপুঞ্জ' নামে পরিচিত?
উত্তর : ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জ 'মশলা দ্বীপপুঞ্জ' নামে পরিচিত।
20. ইন্দোনেশিয়াতে কোন্ ঔপনিবেশিক শক্তি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে?
উত্তর : জাভা, সুমাত্রা, বোর্নিয়ো এবং বালি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়া (ইস্ট ইন্ডিজ)-তে ওলন্দাজরা আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর বা LAQ
1. উপনিবেশবাদ বলতে কী বোঝ? উপনিবেশবাদের অবসানের কারণগুলি লেখো।
👑উপনিবেশবাদের পরিচয়
1. শব্দের উৎস এবং অর্থ: উপনিবেশবাদ শব্দটি ইংরেজি 'Colonialism' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ। আবার উপনিবেশবাদ বা 'Colonialism' কথাটি এসেছে লাতিন শব্দ 'Colonia' থেকে যার অর্থ হল বিশাল সম্পত্তি বা এস্টেট (estate) |
2. সংজ্ঞা: সাধারণভাবে বলা যায় কোনো দেশ যদি অন্য দেশের ভূখণ্ড বা অঞ্চলকে নিজের অধীনস্থ করে নেয় তাহলে সেই অঞ্চলটির নাম হয় উপনিবেশ। 'Encyclopaedia of Social Sciences' গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে উপনিবেশবাদ হল অন্য দেশের ভৌগোলিক অঞ্চলের ওপর শাসন প্রতিষ্ঠা ও সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ।
👑 উপনিবেশবাদ অবসানের কারণসমূহ
1. জাতীয় মুক্তি আন্দোলন: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন উপনিবেশে জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য বিরোধী এই মুক্তিসংগ্রাম চরমে পৌঁছোয়। এই উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলন ঔপনিবেশিক শক্তিকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। ব্রিটিশ, ফরাসি, ডাচ, স্পেনীয় শক্তিগুলি উপনিবেশগুলিকে স্বাধীনতা প্রদানে বাধ্য হয়। এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশ জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের সুফল হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করে।
2. জাতীয়তাবাদী চেতনা: ঔপনিবেশিকতাবাদ অবসানের একটি মূল কারণ হল জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ। জাতীয় মুক্তির বাসনা উপনিবেশবাদ বিরোধী মানসিকতাকে তীব্র করে তোলে। ফলে অতীত ঐতিহ্যের জাগরণ শুরু হয়। ঔপনিবেশিক শক্তির শাসন ও শোষণ জাতীয় চেতনার উন্মেষে সাহায্য করে। জাতীয় চেতনার এই জাগরণের ফলেই এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ঔপনিবেশিক শক্তি হার মানে।
3. বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব: ইউরোপের বুকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে মিত্রশক্তি জোটের রাখা প্রতিশ্রুতির অন্যতম শর্ত হিসেবে বলা হয় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর উপনিবেশবাসীরা স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার লাভ করবে। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হবার পর সেই প্রতিশ্রুতি পালিত না হওয়ায় উপনিবেশবাসীরা জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে, যার দরুন উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনগুলি দমন বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তারা হারায়।
4. মার্কিন ও সোভিয়েত ভূমিকা: সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই, মহাশক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে ওঠার লক্ষ্যে উপনিবেশগুলিকে স্বাধীন করে নয়া উপনিবেশবাদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে নিজ নিজ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা শুরু করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত তিনটি কারণে ঔপনিবেশিকতাবাদের অবসান চায়। এই কারণগুলি হল-[i] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায়নি ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং স্পেনের মতো পশ্চিমি শক্তিগুলি পুনরায় উপনিবেশগুলির সাহায্য নিয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠুক। [ii] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ঘোষণা করা হয় যে, মিত্রশক্তিগুলি নিজ নিজ উপনিবেশগুলির প্রতি যুদ্ধের আগে ও পরে যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি রেখেছিল সেগুলি ঠিকমতো পালন করুক। [ii] ঔপনিবেশিক শক্তিগুলির অপসারণের পর বিশ্বরাজনীতির শূন্যতা পূরণে সোভিয়েতের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইচ্ছুক ছিল।
5. রাষ্ট্রসংঘের গঠন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাষ্ট্রসংঘ বা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গড়ে উঠলে উপনিবেশবাদের বিলুপ্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্রসংঘের গৃহীত কর্মসূচিতে উপনিবেশগুলির বিলুপ্তির প্রক্রিয়াকে দ্রুত কার্যকর করার ওপর জোর দেওয়া হয়। রাষ্ট্রসংঘের মহাসনদের একাধিক অনুচ্ছেদে উপনিবেশগুলিকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রদানের কথা বলা হয়। রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবে বলা হয় প্রতিটি জাতি এবং রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও অধিকার লাভ করবে। উপনিবেশগুলির স্বাধীনতা লাভের লড়াইয়ে রাষ্ট্রসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বহু দেশ এগিয়ে আসে। ফলে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি নিজ নিজ উপনিবেশ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়।
6. নির্জোট আন্দোলন: নির্জোট আন্দোলন এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকা থেকে উপনিবেশবাদকে মুছে ফেলতে বিশেষ সাহায্য করে। নির্জেটি সম্মেলনগুলিতে উপনিবেশবাদের বিরোধিতা করা হয়। নির্জেটি দেশগুলির নেতৃবর্গ উপনিবেশবাসীদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়।
2. উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি সম্পর্কে আলোচনা করো। অথবা, সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে নতুন বিশ্বে ঔপনিবেশিকতাবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
Ans :
3. ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির উপনিবেশ বিস্তারের বিবরণ দাও।
👑ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহের উপনিবেশ বিস্তার
1. ব্রিটিশদের উপনিবেশ: ব্রিটিশরা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল এবং সাম্রাজ্যবাদের প্রসার ঘটিয়েছিল।
i) অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে: ব্রিটিশ নাবিক ক্যাপটেন কুক অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি বোটানি হ্রদ-এ সর্বপ্রথম ব্রিটিশ পতাকা ওড়ান। ওয়েক ফিল্ড এর নেতৃত্বে বন্ধু ইংরেজ নিউজিল্যান্ডে এসে বসবাস শুরু করেছিল।
ii) কানাডায়: কানাডায় প্রথম দিকে ফরাসিদের অনুপ্রবেশ ঘটলেও এখানে ব্রিটিশরা সুযোগ বুঝে প্রবেশ করে এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে এখানকার কুইবেক অঞ্চলকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করে।
iii) ভারতে: বাণিজ্যের লক্ষ্য নিয়ে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে পা রাখে। পরবর্তীকালে পলাশি ও বক্সারের যুদ্ধে জিতে এবং দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে ব্রিটিশ বণিক কোম্পানি এদেশের শাসন নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। দীর্ঘ সংগ্রামের পর অবশেষে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষ ভারত ও পাকিস্তান নামে দুই আলাদা রাষ্ট্রে ভাগ হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
iv) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সিংহল, সিঙ্গাপুর, মালাক্কা ও ফিজি দ্বীপপুঞ্জ ব্রিটিশ সরকার নিজের দখলে আনে। দক্ষিণ আফ্রিকায় নাটাল, অরেঞ্জ, ট্রান্সভাল, সুদান, উগান্ডা, বেচুয়ানাল্যান্ড, রোডেশিয়া ইত্যাদি অঞ্চলের ওপর ইংল্যান্ড নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।
2. ফরাসিদের উপনিবেশ: সপ্তবর্ষব্যাপী (১৭৫৬-৬৩ খ্রি.) যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় এবং নেপোলিয়নীয় যুদ্ধের (১৮০৩-১৫ খ্রি.) কারণে আরও জিটনাটি কিছু অধিকৃত অঞ্চল ফ্রান্সের হাতছাড়া হয়। পরবর্তীকালে তৃতীয় সুট নেপোলিয়ানের আমলে নতুনভাবে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের উত্থান ঘটে। ফ্রান্স দূরপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার নতুন নতুন অঞ্চল দখল করতে শুরু করে। আফ্রিকার শনিয় আলজিয়ার্স ও টিউনিস অঞ্চল, পশ্চিম উপকূল এবং সেনেগল ফরাসি সৎ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। আন্নাম, কম্বোজ, টংকিং প্রভৃতি অঞ্চলের ওপর ফরাসি য়ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের নিউ-কেলিডোনিয়া অঞ্চলটিও ইয়ি ফ্রান্স অধিকার করে নেয়।
3. ওলন্দাজদের উপনিবেশ: জাভা, সুমাত্রা, বোর্নিয়ো এবং বালি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়া (ইস্ট ইন্ডিজ)-তে ওলন্দাজরা ঔপনিবেশিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। ওলন্দাজরা আফ্রিকার উত্তমাশা ঘ অন্তরীপ (কেপ কলোনি ও কেপ অব গুড হোপ) দখল করেছিল। পরে • ওলন্দাজরা কেপ কলোনি ইংরেজদের বিক্রি করে দেয়। আফ্রিকায় প্রথমদিকে ওলন্দাজ শক্তির উপনিবেশগুলি ছিল-নাটাল, অরেঞ্জ নদী উপত্যকা অঞ্চল এবং ট্রান্সভাল ইত্যাদি। ওলন্দাজ বণিকশক্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সিংহল বা শ্রীলঙ্কায় নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরে অবশ্য সেখানে ইংরেজদের অনুপ্রবেশ ঘটলে ওলন্দাজরা সিংহল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
4. পোর্তুগিজদের উপনিবেশ: এশিয়ার মধ্যে ভারত এবং চিনে বাণিজ্যিক লক্ষ্য নিয়ে পোর্তুগিজরা প্রবেশ করেছিল। তারা ম্যাকাও বন্দর নাবিক কলম্বাস-যিনি আমেরিকায় প্রথম পদার্পণ করেন দিয়ে প্রবেশ করে এবং সেখানে বাণিজ্যিক অধিকার লাভ করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় আফ্রিকার গিয়ানা উপকূল, শোফালা এবং অ্যাঙ্গোলোতে পোর্তুগিজরা উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল। এ ছাড়াও তারা আফ্রিকার পূর্ব এব পশ্চিম উপকূলের মধ্যে এক যোগসূত্র গড়ে তোলারও প্রচেষ্টা চালায়।
5. মার্কিনিদের উপনিবেশ: উপনিবেশ দখলের প্রতিযোগিত মার্কিনিরা এশিয়ার চিন এবং জাপানে সাম্রাজ্যবাদ কায়েমের উদ্যোগ নে চিনে আফিম যুদ্ধের পরে মার্কিনিরা এবং জাপানে সর্বপ্রথম মার্কিন সেনাপা কমোডোর ম্যাথু পেরি পদার্পণ করেন (১৮৫৪ খ্রি.)। এ ছাড়াও দক্ষিণ-- এশিয়ায় ফিলিপিনস দ্বীপপুঞ্জ এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ মার্কিনিরা নিজেে সাম্রাজ্যভুক্ত করে।
6. রুশদের উপনিবেশ: চিনে বিদেশিদের অনুপ্রবেশ শুরু হলে সুযোগে রাশিয়াও চিনে প্রবেশ করে। উনিশ শতকে মধ্যপ্রাচ্যের পা দখলকে কেন্দ্র করে ইঙ্গ-রুশ দ্বন্দ্ব বাধে। মধ্য এশিয়ার মার্ভ, পাঞ্জুদেহ করে এবং হিরাট অভিযান চালিয়ে রাশিয়া মধ্য এশিয়ায় নিজের বিস্তার ন অব্যাহত রাখে। প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে রাশিয়া ভ্লাডিভস্টক নামে নৌবন্দর প্রতিষ্ঠা করে।
উপসংহার: নৌশক্তিতে শক্তিধর ইউরোপীয় দেশগুলি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ গড়ে তুলে নিজ নিজ আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটিয়েছিল।
4. উপনিবেশ স্থাপনের কারণগুলি আলোচনা করো। নয়া উপনিবেশবাদের কয়েকটি কুফল লেখো। অথবা, উপনিবেশ স্থাপনের কারণসমূহ লেখো। এর কুফল লেখো।
Ans
5. ব্রিটিশের উপনিবেশ বিস্তারের কাহিনি সম্পর্কে লেখো।
1. অস্ট্রেলিয়া: সপ্তদশ শতকে ওলন্দাজ নাবিক ও আবিষ্কারকদের প্রচেষ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় জলপথে অনুপ্রবেশের ধারণা তৈরি হয়। যদিও সেসময়ে অস্ট্রেলিয়ায় উপনিবেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে তেমনভাবে কেউ সাফল্য পায়নি। অষ্টাদশ শতকের শেষপাদে ব্রিটিশ নাবিক ও আবিষ্কারক ক্যাপটেন কুক অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলের সন্ধান পান। তিনি এখানকার বোটানি হ্রদ (Botany Bay)-এ সর্বপ্রথম ব্রিটিশ পতাকা ওড়ান। শেষপর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে বাসোপযোগী করে তুলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয়।
2. নিউজিল্যান্ড: অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে ব্রিটিশ নাবিক ও আবিষ্কারক ক্যাপটেন কুক অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও নিউজিল্যান্ড আবিষ্কার করেন। পরবর্তীকালে ওয়েক ফিল্ড-এর নেতৃত্বে বহু ইংরেজ এখানে এসে বসবাস শুরু করে। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে নিউজিল্যান্ড ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।
3. কানাডা: কানাডার সর্ববৃহৎ অঞ্চল কুইবেকের বেশিরভাগ অধিবাসী ছিল ফরাসি। ফরাসিদের দুর্বলতার সুযোগে এখানে ব্রিটিশদের অনুপ্রবেশ ঘটে। বড়োলাট নর্থ কর্তৃক 'কুইবেক অ্যাক্ট' (১৭৭৪ খ্রি.) নামক আইন • পাসের মাধ্যমে কুইবেকবাসীকে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করা ছাড়াও বেশ কিছু সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়। তবুও কানাডায় বসবাসকারী ব্রিটিশ ও ফরাসিদের মধ্যে বিরোধ লেগে থাকত। এর সুযোগ নিয়ে আমেরিকা সেখানে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে, এই ভয়ে ব্রিটিশ সরকার দ্বিতীয় কানাডা অ্যাক্ট পাস করান। কিন্তু শেষপর্যন্ত কানাডার স্থায়ী বাসিন্দারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার লাভ করে (১৮৬৭ খ্রি.)।
4. ত্রয়োদশ উপনিবেশ: ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট রাজাদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নীতির ফলে সপ্তদশ শতক থেকে ইংল্যান্ডের প্রচুর মানুষ আমেরিকায় সদ্য-প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ উপনিবেশগুলিতে এসে বসবাস শুরু করে। অষ্টাদশ শতকের মধ্যে ব্রিটিশরা বেশ কয়েকটি যুদ্ধে আমেরিকাস্থিত ওলন্দাজ ও ফরাসি শক্তিকে পরাজিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে তেরোটি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করে।
5. ভারত: বিশ্বে ব্রিটিশের সমস্ত উপনিবেশগুলির মধ্যে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশটি ছিল ইংরেজ জাতির কাছে সর্বাধিক মূল্যবান এবং লাভজনক এক উপনিবেশ। প্রায় ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশরা ভারতে ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ চালায়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে
ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাজাজ্যবাদের প্রলার ইংরেজদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তী ১০০ বছর ধরে এদেশে কোম্পানির কর্তৃত্ব বজায় থাকে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর বণিক কোম্পানির হাতে ভারতের শাসনভার রাখা নিরাপদ নয় বিবেচনা করে ভারতের শাসনভার ইংল্যান্ডের রানি ও পার্লামেন্টের হাতে অর্পণ করা হয়। শেষপর্যন্ত ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষকে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুই আলাদা রাষ্ট্রে ভাগ করে স্বাধীনতা দেওয়া হয়।
6. দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিংহলে ওলন্দাজ ণিকশক্তিকে সরিয়ে সেখানে ব্রিটিশ নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ও ব্রহ্মদেশকেও নিজের অধিকারে আনে। এ ছাড়াও সিঙ্গাপুর, মালাক্কা এবং ফিজি দ্বীপপুঞ্জ দখল করে ব্রিটিশ তাঁর উপনিবেশের বিস্তার ঘটায়।
7. দক্ষিণ আফ্রিকা: দক্ষিণ আফ্রিকায় 'কেপ অব গুড হোপ'-এ ইংরেজরা প্রথম উপনিবেশ গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে ওলন্দাজদের কাছ থেকে কেপ কলোনি কেড়ে নিয়ে তারা উত্তর দিকের নাটাল, অরেঞ্জ এবং ট্রান্সভাল অঞ্চলগুলির দখল নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকার এই অঞ্চলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে ব্রিটিশরা ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকা গঠন করে (১৯২০ খ্রি.)। পরবর্তী সময়ে উত্তর মিশর, সুদান, উগান্ডা, বেচুয়ানাল্যান্ড, রোডেশিয়া ইত্যাদি অঞ্চলের ওপর ইংল্যান্ড নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব আফ্রিকা ছাড়াও জাম্বিয়া, সিয়েরা লিয়ন, গোল্ড কোস্ট, নাইজিরিয়া ও সোমালিল্যান্ডের একাংশও ইংল্যান্ডের অধিকারে আসে।
উপসংহার: ছোট্ট একটি দেশ ব্রিটেন যেভাবে বিশ্বের প্রায় সমস্ত অঞ্চলেই পৌঁছে গিয়ে নিজের ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল, তাতে অন্যান্য ঔপনিবেশিক দেশগুলিও অনুপ্রাণিত হয়েছিল।
6. আফ্রিকায় উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার বিবরণ দাও। এর ফলাফল লেখো।
Ans :
0 Comments