অধ্যায়-৭
মানুষ-পরিবেশ আন্তঃসম্পর্ক
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়
--------------------------------------------
MCQ
1. ক্রমান্বয়িক পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হল-
a) এল নিনো (✔)
b) উল্কাপাত
c) ভূমিকম্প
d) সাইক্লোন
2. অভ্যন্তরীণ বিপর্যয় ঘটে যে কারণে, সেটি হল-
a)এল নিনো
b) উল্কাপাত
c) ভূমিকম্প (✔)
d) সাইক্লোন
3.উল্কাপাত হল একটি
a) পুঞ্জিভূত বিপর্যয়
b) পার্থিব বিপর্যয়
c) বায়ুমণ্ডলীয় বিপর্যয়
d) অপার্থিব বিপর্যয় (✔)
4. প্রকৃতি ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগকে বলে-
a) প্রাকৃতিক দুর্যোগ
b) আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ (✔)
c) মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ
d) এগুলির কোনোটিই নয়
5.বিপর্যয় দুর্যোগের যে অবস্থা নির্দেশ করে
a) পূর্ববর্তী অবস্থা
b) পরবর্তী অবস্থা (✔)
c) সাময়িক অবস্থা
d) এগুলির সবকটিই ঠিক
6. বিপর্যয় হল এমন 'গুরুতর ঘটনা যার পরিণতি হল কবরখানা'-উক্তিটি করেছেন-
a) ওয়েবকুটার
b) মুরে
c) স্মিথ
d) ওয়েবস্টারস (✔)
7. প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলোর মেখলা ভাড়া অন্য সর্বাধিক ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হল
a) ক্যাব়িবিয়ান সাগব়
b) হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল
c) মধ্য মহাদেশীয় বলয় (✔)
d) ইটালির ভিসুভিয়াস
8. ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা একটি
a) জৈব বিপর্যয়
b) ভৌত বিপর্যয়
c) রাসায়নিক বিপর্যয় (✔)
d) বিপর্যয় নয়।
9. ভোপালে ভয়াবহ গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল
a) 1980 সালের ও ডিসেম্বর
b) 1982 সালের ও ডিসেম্বর
c) 1984 সালের ও ডিসেম্বর (✔)
d) 1986 সালের 3 ডিসেম্বর
10. ভারতের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড কোম্পানির কারখানা থেকে নির্গত গ্যাসটি ছিল
a) মিথাইল আলকোহল
b) ইথাইল অ্যালকোহল
c) মিথাইল আইসোসায়ানেট (✔)
d) ইথাইল আইসোসায়ানেট
11. বিপর্যয় লঘুকরণ দিবসটি হল
a) 10 জুন
b) 10 জুলাই
c) 10 সেপ্টেম্বর
d) 10 অক্টোবর (✔)
12. যে গলে ভারতীয় সন্তান ভাথেসের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল 'Coping with Natural Disaster : In Integrated Approach তা হল-
a) 1990 সালে
b) 1991 সালে (✔)
c) 1992 সালে
d) 1993 সালে
13. ভারতবর্ষে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের পরিমাণ হল
a) 40%
b) 50%
c) 60%
d) 65% (✔)
14. দেশের মোট কৃষি জমির সাপেক্ষে খরাপ্রবণ অঞ্চল হল-
a) 60%
b) 65%
c) 67%
d) 68% (✔)
15. মরুভূমির সম্প্রসারণ যে ধরনের দুর্যোগ, তা হল-
a)প্রাকৃতিক দুর্যোগ
b)মহাজাগতিক দুর্যোগ
c) মানবকর্মজাত দুর্যোগ
d) আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ (✔)
16. প্রত্যেক বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়ে এমন মানুষের পরিমাণ হল-
a) 5%
b) 6% (✔)
c) 8%
d)10%
17. একটি ধসপ্রবণ এলাকা হল-
a) রাজমহল পাহাড়
b) নীলগিরি পর্বত (✔)
c) ছোটোনাগপুর মালভূমি
d) আরাবল্লি পর্বত
18. ভারতের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার মধ্যে একটি হল-
a) দক্ষিণ বিহার
b) সুন্দরবনের বদ্বীপ সমভূমি
c) উত্তরাখণ্ড (✔)
d) ছোটোনাগপুর মাভূমি
19.ভূমিকম্পের দেশ হল-
a) ইন্দোনেশিয়া
b) ভারত
c) চিন
d) জাপান (✔)
অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তব়ভিত্তিক প্ৰশ্নাবলি
1. মানুষ ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মানুষ ও পরিবেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, নির্ভরশীলতা এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে মানুষ ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া বলে।
2. দুর্যোগ কাকে বলে?
উত্তর: NO-এর প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক এবং মানুষের কার্যাবলির মাধ্যমে সৃষ্ট যে সকল ঘটনাবলি জীবন ও সম্পত্তির হানি ঘটায়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি অথবা পরিবেশের গুণগত মানের অবনমন ঘটায়, তাকে দুর্যোগ বলে।
3. বিপর্যয় বলতে কী বোঝ?
উত্তর: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট যে-কোনো তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদি ঘটনাবলি যা মানুষের জীবন ও সম্পদের হানি ঘটায় এবং অপরের সাহায্য ছাড়া যা প্রতিরোধযোগ্য নয়, তাকে বিপর্যয় বলে।
4. WHO-এর মতে বিপর্যয়ের সংজ্ঞা কী?
উত্তর: WHO (World Health Organisation)-এর মতে বিপর্যয় হল-এমন যে-কোনো ঘটনা যার জন্য অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি, মানুষের মৃত্যু এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
5. দুর্যোগকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: দুর্যোগকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- (i) প্রাকৃতিক দুর্যোগ, (ii) মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ ও (iii) আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
6. কোন বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি?
উত্তর:ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি।
7. দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের প্রধান পার্থক্য কী?
উত্তর: দুর্যোগ মূলত ক্ষুদ্র স্কেলে সংঘটিত হয় এবং অনেকক্ষেত্রেই এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। অন্যদিকে, বিপর্যয় বৃহৎ স্কেলে সংঘটিত হয় এবং এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয়।
৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগ (Natural Hazard) কী?
উত্তর: প্রকৃতির স্বাভাবিক অবস্থা বিঘ্নিত হওয়াকে বলা হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
9. আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ (Quasi-Natural Hazard) কী?
উত্তর: প্রকৃতি ও মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগকে একসাথে আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে।
10. দুর্যোগ কী পরিসরে সংঘটিত হয়?
উত্তর:দুর্যোগ ক্ষুদ্র স্কেলে সংঘটিত হয়।
11. বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তর:বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা তিনপ্রকার, যথা- (i) বিপর্যয় পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা, (ii) বিপর্যয়কালীন ব্যবস্থাপনা ও (iii) বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাপনা।
2. নিবারণ (Prevention) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ভবিষ্যতে বিপর্যয়ের মাত্রা কমানোকে বলা হয় নিবারণ।
3. বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: পর্যয় প্রতিরোধ অথবা বিপর্যয় পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়াকে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বলে।
14. বিপর্যয়-পূর্ব ব্যবস্থাপনা কী?
উত্তর:জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে কোনো এলাকার বিপর্যয় কমানোর জন্য বিপর্যয়ের পূর্বে গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থা হল বিপর্যয়-পূর্ব ব্যবস্থাপনা।
15. বিপর্যয়কালীন ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: পর্যয়কালে বিপর্যয় কবলিত মানুষদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য এবং সরকারি উদ্যোগে তাদের ত্রাণ পরিসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়, তাকে বিপর্যয়কালীন ব্যবস্থাপনা বলে।
16. বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?
উত্তর:বিপর্যয় কবলিত মানুষদের দ্রুত উদ্ধার করে তাদের বিপর্যয়প্রবণ এলাকা থেকে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাদের বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাপনা বলে।
17. প্রশমন (Mitigation) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:বিপর্যয় কমাতে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করাকে প্রশমন বলে।
18. দুটি Risk Zonation মানচিত্রের নাম লেখো।
উত্তর: দুটি Risk Zonation মানচিত্র হল-Hazard Zonation মানচিত্র এবং Vulnerability Zonation মানচিত্র।
19. বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে কী করা প্রয়োজন?
উত্তর:বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।
20. মানুষ ও প্রকৃতির যৌথ প্রভাবে সৃষ্ট বিপর্যয়ের উদাহরণ দাও
উত্তর:মানুষ ও প্রকৃতির যৌথ প্রভাবে সৃষ্ট বিপর্যয় হল-ধস, নদীপাড়ের ভাঙন, মরুভূমির সম্প্রসারণ, মাটির লবণতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।
21. পশ্চিমবঙ্গে কত সালে 'আয়লা' নামক ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব ঘটেছিল?
উত্তর:পশ্চিমবঙ্গে 2009 সালে 'আয়লা' নামক ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব ঘটেছিল।
22. দুটি বায়ুমণ্ডলীয় দুর্যোগের নাম লেখো।
উত্তর:দুটি বায়ুমণ্ডলীয় দুর্যোগের নাম হল-ঘূর্ণিঝড় ও তুষারঝড়।
23. 2014 সালে অক্টোবর মাসে ভারতে যে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব হয়েছিল, তার নাম কী?
উত্তর:2014 সালে অক্টোবর মাসে ভারতে যে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব হয়েছিল, তার নাম হুদহুদ।
24. সাম্প্রতিককালে (2020 সালে) মে মাসে ভারতে যে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব হয়েছিল, তার নাম কী?
উত্তর:সাম্প্রতিককালে (2020 সালে) মে মাসে ভারতে যে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব হয়েছিল, তার নাম আমফান।
25. ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য গৃহীত ব্যবস্থাপনাগুলি কী?
উত্তর:ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য গৃহীত ব্যবস্থাপনাগুলি হল-ঝড়ের পূর্বাভাস ও সতর্কবাণী বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করা, উপকূলবর্তী অঞ্চলে সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা প্রভৃতি।
26. একটি জৈব বিপর্যয়ের উদাহরণ দাও।
উত্তর:একটি জৈব বিপর্যয়ের উদাহরণ হল-ইউট্রোফিকেশন।
27. বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাতে জনসমষ্টির কী কী থাকা প্রয়োজন?
উত্তর:বিপর্যয় ব্যবস্থাপনাতে জনসমষ্টির সদিচ্ছা, জ্ঞান এবং দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
28. দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের ফলে সৃষ্ট অসহায় অবস্থাকে কী বলে?
উত্তর:দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের ফলে সৃষ্ট অসহায় অবস্থাকে বিপন্নতা বলে।
29. বন্যা পরিচালনা ব্যবস্থায় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন?
উত্তর:বন্যা পরিচালনা ব্যবস্থায় নদীর উপযুক্ত অংশে বাঁধ নির্মাণ, জলাধার নির্মাণ, নদী পাড়ের ভাঙন রোধ এবং জলসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন।
30. বিপর্যয় প্রশমনে গ্রামভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকা কী কী?
▶প্রাক্ বিপর্যয়কালে পরিকল্পনা গ্রহণ করা, বিপর্যয়কালে উদ্ধার ও চিকিৎসা শিবির গড়ে তোলা। এ ছাড়া বিপর্যয় পরবর্তীকালে গৃহ নির্মাণ, সংক্রমণ নিবারণ, মহামারি প্রতিরোধ করা হল গ্রামভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকা।
31. জীব-সংশ্লিষ্ট বিপর্যয়ের উদাহরণ দাও।
▶জীব-সংশ্লিষ্ট বিপর্যয়ের উদাহরণ হল-মহামারি, কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ও জীবাণুর আক্রমণের ফলে শস্যহানি প্রভৃতি।
32. সামাজিক বিপর্যয়ের উদাহরণ দাও।
▶সামাজিক বিপর্যয়ের উদাহরণ হল-যুদ্ধ, দাঙ্গা, সন্ত্রাসবাদ প্রভৃতি।
33. মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ কাকে বলে?
▶মানুষের অবিবেচক কার্যাবলির দ্বারা, পরিবেশে যেসব দুর্যোগ ঘটে, তাকে মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ বলে।
34. দুটি ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়ের নাম লেখো।
▶ দুটি ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়ের নাম হল-ভূমিকম্প ও সুনামি।
35. দুটি ভূতাত্ত্বিক দুর্যোগের নাম লেখো।
▶ দুটি ভূতাত্ত্বিক দুর্যোগের নাম হল-ভূমিকম্প ও ভূমিধস।
36. ইউট্রোফিকেশন (Eutrophication) কী ধরনের দুর্যোগ?
▶ ইউট্রোফিকেশন হল মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ।
37. আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোথায় ঘটে?
▶আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেবল ভূপৃষ্ঠে ঘটে থাকে।
38. বিপর্যয় কী পরিসরে সংঘটিত হয়?
▶বিপর্যয় সাধারণত বৃহৎ স্কেলে সংঘটিত হয়।
39. দুটি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের উদাহরণ দাও।
▶দুটি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ হল-পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ও যুদ্ধ।
40. ভূমিরূপগত বিপর্যয়ের উদাহরণ দাও।
▶ভূমিরূপগত বিপর্যয়ের উদাহরণ হল ধস, নদীপাড়ের ভাঙন, উপকূলের ভাঙন প্রভৃতি।
প্ৰশ্ন 1.প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উৎপত্তি ও শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উৎপত্তি
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উৎপত্তিতে মানুষের কোনো ভূমিকা থাকে না। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক শক্তি এর উৎপত্তির প্রধান কারণ। তবে প্রতিটি বিপর্যয়ের সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উৎপত্তিগত কারণগুলি হল-
[1] আবহাওয়া সংক্রান্ত উৎপত্তি :
(i) বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ সংক্রান্ত:
বজ্রঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডো, হ্যারিকেন, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি।
(ii) বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত: বন্যা, খরা, দাবানল, জোয়ার ইত্যাদি।
[2] ভূতত্ত্ব ও ভূমিরূপ সংক্রান্ত : ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণ, ধস, হিমানী সম্প্রপাত, সুনামি ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শ্রেণিবিভাগ
প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে মূলত প্রধান 2টি ভাগে ভাগ করা যায়- [1] পার্থিব
বিপর্যয় এবং [2] অপার্থিব বিপর্যয়।
[1] পার্থিব বিপর্যয়: ভূমিরূপ গঠনকারী নানান প্রক্রিয়া, যা পৃথিবীর [
বায়ুমণ্ডল, ভূপৃষ্ঠ বা ভূ-অভ্যন্তরে অর্থাৎ পৃথিবীতেই সৃষ্ট হয় এবং ক্রিয়াশীল হয়, সেই সব প্রক্রিয়াকে পার্থিব প্রক্রিয়া বলে। এই পার্থিব প্রক্রিয়াগুলির প্রভাবে যখন বিপুল পরিমাণে প্রাণহানি ও সম্পদহানি ঘটে তখন তাকে পার্থিব বিপর্যয় বলে।
এই পার্থিব বিপর্যয়কে আবার 2 টি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল-(i) অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়, (ii) বাহ্যিক বিপর্যয়। নিম্নে তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল-
(i) অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়: পৃথিবীর অভ্যন্তরে সৃষ্ট সংকোচন, প্রসারণ, উত্থান, অবনমন, বিচ্ছেদ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার ফলে ভূপৃষ্ঠে যদি বিপর্যয় নেমে আসে তাকে অভ্যন্তরীণ বিপর্যয় বলে।
অভ্যন্তরীণ বিপর্যয় আবার ও প্রকার ① আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণজনিত বিপর্যয়, ② ভূমিকম্পজনিত বিপর্যয়, ③ ধসজনিত বিপর্যয়।
আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণজনিত বিপর্যয়: আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণের মাধ্যমে যদি ভূপৃষ্ঠে বিপর্যয় নেমে আসে তখন তাকে আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণজনিত বিপর্যয় বলে। যেমন- 2006 সালের মে মাসে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে মাউন্ট মেরানি আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণের কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয় ও বহু মানুষ গৃহচ্যুত হয়।
ভূমিকম্পজনিত বিপর্যয়: ভূমিকম্পজনিত কারণে বিপর্যয় নেমে এলে তাকে ভূমিকম্পজনিত বিপর্যয় বলে। যেমন- 2001 সালের আমেরিকার সিয়াটল শহরে ভূমিকম্পের ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ধসজনিত বিপর্যয়: ধসজনিত কারণে বিপর্যয় নেমে এলে তাকে ধসজনিত বিপর্যয় বলে। যেমন-সিকিম অঞ্চলে ধসজনিত কারণে মাঝে মধ্যেই বিপর্যয় নেমে আসে।
(ii) বাহ্যিক বিপর্যয়: পৃথিবীতে বিভিন্ন অস্বাভাবিক ঘটনা ও পরিবেশগত কারণে যে সব বিপর্যয় নেমে আসে তাকে বাহ্যিক বিপর্যয় বলে।
বাহ্যিক বিপর্যয়কে আবার দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-① অস্বাভাবিক ঘটনাজনিত বিপর্যয়, ② ক্রমান্বয়িক পরিবেশগত বিপর্যয়।
① অস্বাভাবিক ঘটনাজনিত বিপর্যয়: শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত এবং
সাইক্লোন ইত্যাদি হল অস্বাভাবিক ঘটনার অর্ন্তগত। এদের কারণে বিপর্যয় নেমে এলে তা অস্বাভাবিক ঘটনাজনিত বিপর্যয়রূপে বিবেচিত হয়।
② ক্রমান্বয়িক পরিবেশগত বিপর্যয়: বন্যা, খরা, শীতল ও উন্ন স্রোতের কারণে কোনো বিপর্যয় নেমে এলে তাকে ক্রমান্বয়িক পরিবেশগত বিপর্যয় বলে।
[2] অপার্থিব বিপর্যয়: অপার্থিব বিপর্যয় বলতে পৃথিবী বহিস্থ্য
বিপর্যয়কে বোঝায়। অনেক সময় উল্কা পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে এবং তার ফলে ভূমিকম্প হয়। এ ছাড়া উল্কাতে চাপা পড়েও অনেক ক্ষতি হয়। এগুলি অপার্থিব বিপর্যয় রূপেই পরিচিত।
নিম্নে ছকের সাহায্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শ্রেণিবিভাগ দেখানো হল-
প্রশ্ন 2. বিপর্যয়পূর্ব ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে আলোচনা করো।
বিপর্যয়পূর্ব ব্যবস্থাপনা
বিপর্যয় কমানোর জন্য বিপর্যয়ের পূর্বে বিভিন্ন ব্যবস্থা বা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এইসব পরিকল্পনাগুলি পূর্বজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়। বিপর্যয়প্রবণ এলাকায় বিপর্যয়পূর্ব ব্যবস্থাপনা রূপে যে সমস্ত বিষয়গুলি মেনে চলা প্রয়োজন সেগুলি হল-
[ 1] বিপর্যয় সম্পর্কিত গবেষণা: বিপর্যয় সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণার
বিশেষ প্রয়োজন। এর জন্যে (ⅰ) বিপর্যয়প্রবণ এলাকার মানচিত্র প্রস্তুত, (ii) উচ্চমাত্রার বিপর্যয় এলাকা নির্ধারণ, (iii) অতীতের বিপর্যয় সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ, (iv) ঝুঁকির সঠিক মূল্যায়ন ইত্যাদি বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
[2] ঝুঁকির মূল্যায়ন: কোনো একটি অঞ্চলে বিপর্যয়ের ঝুঁকি কী ধরনের [
বা কতটা পরিমাণ তা মূল্যায়ন করতে হবে। এ ছাড়া সম্ভাব্য কারণ ও প্রতিকার সম্বন্ধেও মূল্যায়ন প্রয়োজন। কারণ মূল্যায়ন থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হয়।
[3] পরিকল্পনা: বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ের ত্রাণকার্য, উদ্ধারকার্য ইত্যাদির
সম্পাদনার জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা এই স্তরে গ্রহণ করতে হবে। এই পরিকল্পনাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-(ⅰ) সঠিক উদ্ধারকার্য (ii) আশ্রয় প্রদান ও খাদ্য সরবরাহ (iii) বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ (iv) বিদ্যুৎ সরবরাহ (v) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ইত্যাদি।
[4] সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উন্নতি: বর্তমানে বিজ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তিকে
কাজে লাগিয়ে দ্রুত সতর্কীকরণ ব্যবস্থা (Early Warning System or EWS) চালু হয়েছে। এই ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি হল-
(i) ট্রেস ইন্ডিকেটর: বায়ুমণ্ডল সংক্রান্ত তথ্যাবলী সংগ্রহ করা।
(ii) দ্রুত সতর্কীকরণ উপকরণ: রেডার, টেলিভিশন, বেতার, খবরের কাগজ, মোবাইল ইত্যাদি।
(iii) বিপর্যয় সতর্কীকরণ কেন্দ্র: আঞ্চলিক, স্থানীয়, জাতীয় ও বিশ্ব স্তরে বিভিন্ন সতর্কীকরণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে।
[5] সহযোগিতা: বিপর্যয় অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দাদের খাদ্য, অর্থ, ওষুধ, বস্ত্র এবং প্রশাসনিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
[6] শিক্ষা ও সচেতনতা: সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের মধ্যে বিপর্যয় সংক্রান্ত শিক্ষা ও সচেতনতা সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করতে হবে।
[7] মহড়া প্রদান: বিপর্যয়ের পূর্বে বিপর্যয়প্রবণ এলাকার অধিবাসীদের নিয়মিত মহড়া প্রদান করা উচিত, যাতে বিপর্যয় চলাকালীন তারা ঠিকমতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
[৪ ] পরিকাঠামোগত উন্নয়ন: বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বিপর্যয় সংক্রান্ত
সরকারি, বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির উন্নতি ঘটাতে হবে। এ ছাড়া, তাদের সংখ্যাও বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ আবহাওয়া দপ্তর, সেনাবাহিনী, পুলিশবাহিনী, দমকল বিভাগ, পূর্ত দপ্তর ইত্যাদির সাহায্যে সহজেই বিপর্যয় মোকাবিলা করা যায়।
প্ৰশ্ন 3 বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে লেখো।
বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাপনা
বিপর্যয় কবলিত মানুষদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য এবং তাদের স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব বিপর্যয় পরবর্তী ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা হয় সেগুলি আলোচনা করা হল-
[ 1] পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন: বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মানুষদের
সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। বিপর্যস্ত অঞ্চলে নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিভিন্ন পরিসেবা দ্রুত কার্যকরি করা উচিত। এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংগঠন, বিশ্বব্যাংক খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা খুবই প্রশংসনীয়। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা একটি চক্রের মাধ্যমে দেখানো হল। যাকে Disaster Management Cycle বলে।
[2] জাতীয় নীতি অবলম্বন: দুর্যোগ ও বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে যেসব জাতীয় নীতি গ্রহণ করা হয় সেগুলি হল-
(i) যে-কোনো বিপর্যয়ের সময় দ্রুত উদ্ধার কার্য এবং ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো।
(ii) বিপর্যয়ের প্রকৃত কারণ নির্ধারণ করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো এবং সামাজিক ঐক্যমত গড়ে তোলা।
(iii) প্রতিবিধানমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ।
(iv) মানুষ ও সম্পদের উন্নয়ন।
(v) জনশিক্ষা বৃদ্ধি ও মানুষের বিপর্যয় মোকাবিলায় অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা।
(vi) পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামস্তরে বিপর্যয় মোকাবিলা পদ্ধতি প্রয়োগ করা।
(vii) বিভিন্ন গবেষণায় সাহায্য করা।
[3] রোগ প্রতিরোধী স্বাস্থ্য পরিসেবা: বিপর্যয়ের পরবর্তী পর্যায়ে
আহত মানুষদের চিকিৎসা এবং রোগ প্রতিরোধ করার জন্য এক সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধী স্বাস্থ্য পরিসেবার দ্বারা বিপর্যয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করা যেতে পারে।
[4] কার্যকরী পুষ্টির সংস্থান: বিপর্যয়ের পরবর্তী সময়ে সম্পত্তির
ক্ষয়ক্ষতির ফলে মানুষের খাবারের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়। তাই অনেক সময় প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব দেখা যায়। তাই উপযুক্ত কার্যকরী পুষ্টির সংস্থান যাতে হয় তার দিকে লক্ষ রাখা উচিত।
[5] সংক্রমণ নিবারণ: বিপর্যয়ের পরবর্তী অবস্থায় মৃত জীবজন্তুর দেহ পচে যায় এবং উক্ত এলাকায় তা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই সংক্রমণ নিবারণের দিকে লক্ষ রাখা উচিত।
[6] মহামারি প্রতিরোধ: বিপর্যয়ের পরবর্তী সময়ে কোনো মহামারি যাতে
ছড়াতে না পারে তার দিকে লক্ষ রাখা উচিত এবং প্রয়োজনে তা দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করা উচিত।
প্রশ্ন6বিপর্যয়ের প্রশমন বলতে কী বোঝ? বিপর্যয় প্রশমনের বিভিন্ন কৌশলগুলি আলোচনা করো।
বিপর্যয় প্রশমন
যে-কোনো বিপর্যয় রোধে ধারাবাহিক কর্মসূচি গ্রহণ করাকে বিপর্যয় প্রশমন বলে। গৃহনির্মাণ, ভূমিব্যবহার, পরিবহণ ব্যবস্থা বিষয়ক নিয়মাবলি প্রভৃতি এইসব কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। প্রশমন প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হল বিপর্যয়ের প্রভাব হ্রাস বা নিয়ন্ত্রণ করা।
বিপর্যয় প্রশমনের বিভিন্ন কৌশল
বিপর্যয় প্রশমনের জন্য যে সমস্ত কৌশল বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-
[1] প্রস্তুতি বা প্রতিক্রিয়া: সরকার, সমাজ ও ব্যক্তিকে পরিবর্তিত
পরিস্থিতিতে যে-কোনো অবস্থায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করাই হল প্রস্তুতির মূল কথা। বিপর্যয় প্রশমনে এই স্তরটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে অ্যাকশন প্ল্যান (Action Plan) বলা যেতে পারে। সঠিক প্রস্তুতি বিপর্যয় প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
[2] পূরণ: বিপর্যয় প্রশমনে এবং বিপর্যয়ের পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার প্রক্রিয়ায় দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রথমটি হল বিপর্যয় প্রশমন বিষয়ক পরিকল্পনা এবং বিপর্যয় পরবর্তী
পুনর্গঠন বিষয়ক পরিকল্পনা। এই প্রক্রিয়ায় জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে যাতে জনসমর্থনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়।
[ 3] ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থার ভূমিকা (GIS): প্রাকৃতিক দুর্যোগের
পূর্বাভাস দেওয়া থেকে শুরু করে তার মোকাবিলা ও প্রশমন এবং পরবর্তী স্তরের সব কাজে Geographic Information System বা GIS গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বিপর্যয় সম্পর্কে উপযুক্ত তথ্য পাওয়া যায়।
[4] সেনাবাহিনীর ভূমিকা: ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, ধস-সহ যে-কোনো [
ধরনের বিপর্যয়ে দুর্গম জায়গায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ তারা বিপর্যয় মোকাবিলায় ব্যবহৃত সবরকমের সরঞ্জামের সাথে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত থাকেন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজে নেমে পড়তে পারেন। উদ্ধার ও অত্যাবশ্যক সামগ্রীর সরবরাহ অব্যাহত রাখা, ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে বিপর্যয়কে প্রশমন করতে সাহায্য করেন।
[5] সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা: বিপর্যয় মোকাবিলা, ত্রাণ, পুনর্বাসন এসব
কাজে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রচার। তাই এই জন্য সংবাদ মাধ্যম, বেতার, টেলিভিশন প্রভৃতির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ এইসব মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ জনমানসে খুবই প্রভাব বিস্তার করে।
[6] গণসংগঠন: বিপর্যয় প্রশমনের ক্ষেত্রে গণসংগঠন দরকার। তবে এই গণসংগঠনের জন্য একাত্মবোধ ও নীতি নির্ধারণ খুবই প্রয়োজন। বিপর্যয় প্রশমনের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গণসংগঠন তৈরি করতে পারে।
সুতরাং, বিপর্যয় হলে তার প্রশমন এবং উল্লিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
👉Paid Answer (For Membership User)