Chapter--10

নানা রঙের দিন  

                                                                

MCQ


1. অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়েছিল- 

(ক) ব্রাহ্মণ বংশে 

(খ) প্রাচীন রাজবংশে 

(গ) কায়স্থ বংশে 

(ঘ) দরিদ্র পরিবারে


2. কালীনাথ রাতে গ্রিনরুমে কী করছিলেন

(ক) রজনীবাবুকে খুঁজতে এসেছিলেন 

(খ) তাঁর ফেলে যাওয়া কিছু খুঁজতে এসেছিলেন 

(গ) রাতে গ্রিনরুমে থাকার দায়িত্ব পড়েছিল তাঁর 

(ঘ) রোজ রাতে তিনি গ্রিনরুমে ঘুমোতেন 

 

3. কালীনাথ কী কারণে রজনীবাবুকে বলেছিলেন যে, 'মিছে কথা বলব না'? 

(ক) রজনীবাবু সত্যবাদী 

(খ) রজনীবাবু বৃদ্ধ  

(গ) রজনীবাবু ব্রাহ্মণ 

(ঘ) রজনীবাবু সৎ

 

4. "...এ কথাটা মালিকের কানে তুলবেন না চাটুজ্জেমশাই," -কারণ- 

(ক) মালিক দুঃখ পাবেন  

(খ) মালিক তাঁর মাইনে কমিয়ে দেবেন 

(গ) বক্কা একেবারে বেঘোরে মারা পড়বেন 

(ঘ) মালিক তাঁকে তাড়িয়ে দেবেন

 

5. রজনীকান্ত 'নানা রঙের দিন' নাটকে সেদিনের শো-তে যা পেয়েছিলেন-

(ক) পাঁচটা ক্ল্যাপ্  

(খ)  প্রীতি উপহার 

(গ) সাতটা ক্ল্যাপ 

(ঘ) তিরস্কার

 

6. "আসলে যতক্ষণ স্টেজে দাঁড়িয়ে থাকি ততক্ষণ"-কী

(ক) আদর 

(খ) কদর 

(গ) ভালোবাসা 

(ঘ) শ্রদ্ধা

 

7. 'নানা রঙের দিন' নাটকে রজনী চাটুজ্জে 'ধু-ধু করা দুপুরে জ্বলন্ত মাঠে বাতাস'-এর সঙ্গে নিজের তুলনা করেছেন-   

(ক) একাকিত্ব বোঝাতে

(খ) উত্তাপ বোঝাতে 

(গ) বেপরোয়া স্বভাব বোঝাতে 

(ঘ) জীবনের ঝড়ঝাপটা বোঝাতে 

 

8. "পাবলিক তো আপনাকে ভালোবাসে চাটুজ্জেমশাই..."-এই 'পাবলিক' হল-

(ক) সাধারণ মানুষ 

(খ) সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ 

(গ) নাটকের সাধারণ দর্শক 

(ঘ) নাটকের সাধারণ কলাকুশলীরা

 

9. রজনীকান্তের মতে তাঁর শিরায় প্রবাহিত হচ্ছে- 

(ক) অভিনয়ের নেশা 

(খ) সদ্বংশের পবিত্র রক্ত   

(গ) শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা  

(ঘ) প্রায়শ্চিত্ত করার আকাঙ্ক্ষা

 

10. অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়েছিল- 

(ক) ব্রাহ্মণ বংশে 

(খ) প্রাচীন রাজবংশে 

(গ) কায়স্থ বংশে 

(ঘ) দরিদ্র পরিবারে

 

11. রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় থিয়েটারে আসার আগে চাকরি করতেন- 

(ক) পুলিশে

(খ) জাহাজে 

(গ) ডাক বিভাগে 

(ঘ) স্কুলে

 

12. "একদিন একটা মেয়ে থিয়েটার দেখে...।"-রজনীকান্তের থিয়েটার দেখে মেয়েটির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল

(ক) দর্শকাসনে বসে চোখের জল ফেলেছিল 

(খ) তাঁর প্রেমে পড়েছিল 

(গ) রজনীকে চটি ছুড়ে মেরেছিল 

(ঘ) নাটক-শেষে তার পায়ে পড়েছিল

 

13. রজনীকান্তের প্রেমিকার মধ্যে কী লুকিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি

(ক) আনন্দের ভাব 

(খ) দুঃখের ভাব 

(গ) চাপা সৌন্দর্য 

(ঘ) আগুন 

 

14. "অন্ধকার রাতে একা একা ভাবলে মনে হত"-প্রেমিকা সম্বন্ধে রজনীকান্তের কী মনে হত

(ক) সে যেন কোনো অচেনা দিনের আলো 

(খ) তার চুল সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো 

(গ) সে ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর 

(ঘ) মরে যাব, তবু ভুলব না, তার সেই আশ্চর্য ভালোবাসা

 

15. "... ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর সে।"-রজনী চট্টোপাধ্যায় কার কথা বলেছেন

(ক) তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা 

(খ) বন্ধু

(গ) তাঁর অভিনীত চরিত্র 

(ঘ) রামব্রিজ

 

16. রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমিকা তাঁকে যে চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছিল-  

(ক) শাজাহান 

(খ) দিলদার 

(গ) আলমগির 

(ঘ) ঔরঙ্গজেব

 

17. 'নানা রঙের দিন' নাটকে অভিনেতাকে যার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে-  

(ক) শিক্ষক 

(খ) অস্পৃশ্য ভাঁড় 

(গ) গাধা

(ঘ) জ্ঞানী

 

18. রজনীকান্তবাবুর মতে অভিনেতা আসলে- 

(ক) সমাজের শিক্ষক 

(খ) বোকা 

(গ) জ্ঞানী 

(ঘ) অস্পৃশ্য ভাঁড় 

 

19. "....তা বলে কি তাঁরা তোমার সঙ্গে আলাপ করবেন না, চা সিগারেট খাওয়াবেন না?”- কাদের কথা বলা হয়েছে

(ক) নাটকের সাধারণ দর্শক

(খ) আত্মীয়স্বজন 

(গ) নামি অভিনেতা

(ঘ) রুচিশীল ব্যক্তিদের

 

20. "আর একদিন তাকে দেখে মনে হয়েছিল"- 

(ক) মোমের আলোর চেয়েও পবিত্র 

(খ) চাঁদের আলোর চেয়েও স্নিগ্ধ 

(গ) ভোরের আলোর চেয়েও সুন্দর

(ঘ) গোধূলির আলোর চেয়েও 



Short Answer Question



1. "...তাতে বয়েসটা ঠিক বোঝা যায় না…"- কীসে 'বয়েস' বোঝা যায় না? অথবা, "...তাতে বয়েসটা ঠিক বোঝা যায় না…"-কার বয়েস কেন বোঝা যায় না?

লম্বা লম্বা চুলে প্রতিদিন হাফ শিশি কলপ লাগিয়ে প্রবীণ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় যেরকম ইয়ার্কি করেন, তাতে তাঁর বয়সটা সঠিক বোঝা যায় না।

 

2. "...এখন শুধু মাঝরাত্তিরের অপেক্ষা..."-এই 'মাঝরাত্তির' কীসের ইঙ্গিত দেয়?

'নানা রঙের দিন' নাটকে উল্লিখিত 'মাঝরাত্তির' আসলে মৃত্যুর প্রতীক। অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় এখানে জীবনের শেষ পর্যায়, মৃত্যুকেই ইঙ্গিত করেছেন।

 

3. "...আমাকে ছেড়ে দিন।"-বক্তা কীসের থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন?

জীবনে মৃত্যুকালের মুখোমুখি হতে চান না বলেই নাটকের শেষ দৃশ্যে অভিনয় করা থেকে বৃদ্ধ রজনীকান্ত তাঁকে ছেড়ে দিতে বলেছেন।

 

4. রজনীবাবু কত বছর বয়স থেকে নাট্যাভিনয় করছেন?

আটষট্টি বছরের রজনীকান্ত যেহেতু পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে নাট্যাভিনয় করেছেন, তাই বলা যায় তিনি (৬৮-৪৫ বছর) ২৩ বছর থেকে নাট্যাভিনয় করছেন।

 

5. "...সব মিলিয়ে যেন একটা শ্মশান..."-'সব মিলিয়ে' কথাটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

"মাতালের এই হচ্ছে বিপদ।"-কী বিপদ?

মাতালের বিপদ হল, মাতাল মদ ছাড়তে চাইলেও মদের কাছ থেকে ছাড়ান পায় না সে।

 

6. "হ্যাঁ, বুড়ো হয়েছেন বই-কি রজনীবাবু..."-রজনীবাবুর বয়স কত হয়েছিল?

রজনীবাবু অর্থাৎ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছিল আটষট্টি।

 

7. "আটষট্টিটা বছর কী নেহাত কম বয়স"-কার বয়সের কথা বলা হয়েছে?

রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের বয়সের কথা এখানে বলা হয়েছে।

 

8. "...সব আছে শুধু..."-কী না থাকার কথা বলা হয়েছে?

সব থাকা সত্ত্বেও 'নানা রঙের দিন' নাটকে রাতের প্রেক্ষাগৃহে কোনো মানুষ না থাকার কথা বলা হয়েছে।

 

9. "...সব ভূতুড়ে বাড়ির মতো খাঁ খাঁ করছে..." কাকে বক্তার 'ভূতুড়ে বাড়ি' বলে মনে হয়েছে?

রাতের অন্ধকারে জনশূন্য প্রেক্ষাগৃহকে বক্তা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের 'ভুতুড়ে বাড়ি' বলে মনে হয়েছে।

 

10. "আপনার মতো বয়েস হয়েছে যাঁদের-আটষট্টিটা বছর," তাঁরা কী করেন?

রজনীকান্তের মতো আটষট্টি বছর বয়সের লোকেরা সময়মতো মাপজোখ করে খাওয়াদাওয়া করেন, সকাল-সন্ধে বেড়াতে যান, সন্ধেবেলা কীর্তন শোনেন এবং ভগবানের নাম করেন।

 

11. "...আর আপনি রজনীবাবু এসব কী করছেন মশাই?"-কে এই মন্তব্য করেছে?

অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের আন্তরসত্তাই এই মন্তব্যটি করেছে।

 

12. "...আর আপনি রজনীবাবু এসব কী করছেন মশাই?"-বক্তার এই মন্তব্যের কারণ কী?

প্রবীণ মানুষেরা নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে তাঁদের জীবন অতিবাহিত করলেও আটষট্টি বছর বয়সি রজনীকান্তবাবুর নেশাগ্রস্ত হয়ে বেহিসেবি দিন কাটানোর প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে।

 

13. "মাঝরাতে দিলদারের পোষাক পরে, পেটভর্তি মদ গিলে, এসব থিয়েটারি ভাষায় কী আবোলতাবোল বলছেন বলুন তো?"- 'দিলদারের পোষাক' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় 'সাজাহান' নাটকে দিলদারের চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে যে পোশাক পরেছিলেন, এখানে তার কথা বলা হয়েছে।

 

14. 'নানা রঙের দিন'-এর 'চরিত্রলিপি' বয়স-সহ উল্লেখ করো।

নানা রঙের দিনের চরিত্রলিপি: রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়-বৃদ্ধ অভিনেতা (বয়স ৬৮ বছর), কালীনাথ সেন-প্রম্পটার (প্রায় ৬০ বছর)

 

15. 'নানা রঙের দিন' নাটকে কালীনাথ সেনের চেহারা ও পোশাক- পরিচ্ছদ কেমন ছিল?

অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নানা রঙের দিন' নাটকে বৃদ্ধ প্রম্পটার কালীনাথ সেনের পরনে ছিল ময়লা পাজামা, গায়ে কালো চাদর, আর তাঁর চুল ছিল এলোমেলো।

 

16. “রজনীবাবু ভয়ে চিৎকার করে পিছিয়ে যান।” কাকে, কী অবস্থায় দেখে রজনীবাবু ভয় পেয়েছিলেন?

পরনে ময়লা পাজামা, গায়ে কালো চাদর এবং এলোমেলো চুলে বৃদ্ধ কালীনাথ সেনকে মধ্যরাতের ফাঁকা অন্ধকার মঞ্চে প্রবেশ করতে দেখে রজনীবাবু ভয় পেয়েছিলেন।

 

17. "তুমি এত রাতে কী করছিলে এখানে?”-উত্তরে শ্রোতা কী বলেছিলেন?

আলোচ্য প্রশ্নের উত্তরে শ্রোতা কালীনাথ সেন জানান যে, শোয়ার জায়গা না থাকায় তিনি প্রতিদিন গোপনে গ্রিনরুমে ঘুমান।

 

18. "আপনি বামুন-মানুষ মিছে কথা বলব না”-বক্তা কোন্ সত্য কথাটি বলেছিল?

বক্তা কালীনাথ রোজ রাত্রে গ্রিনরুমে লুকিয়ে তার ঘুমোনোর কথাটি বলেছিল।

 

19. "....এ কথাটা মালিকের কানে তুলবেন না চাটুজ্জেমশাই,”-কোন্ কথা?

শোয়ার জায়গা না থাকায় প্রম্পটার কালীনাথ সেন যে রোজ রাত্রে লুকিয়ে গ্রিনরুমে ঘুমোন-সেই 'কথা' প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে।

 

24. "...এখন শুধু মাঝরাত্তিরের অপেক্ষা…"-এই 'মাঝরাত্তির' কীসের ইঙ্গিত দেয়?

'নানা রঙের দিন' নাটকে উল্লিখিত 'মাঝরাত্তির' আসলে মৃত্যুর প্রতীক। অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় এখানে জীবনের শেষ পর্যায়, মৃত্যুকেই ইঙ্গিত করেছেন।


Long Answer Question

 

 প্রশ্ন.1 "আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়া গেছে যা হোক।"-'পাগল' বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে? কোন্ পরিস্থিতিতে এই মন্তব্য করেছিলেন?

 

উত্তরঃ উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ-নাটক 'নানা রঙের দিন'-'পাগল' বলতে রামব্রিজের কথা বলা হয়েছে।

 

মন্তব্যের প্রেক্ষিত: আলোচ্য নাটকে গভীর রাতে অভিনয়ের শেষে শূন্য প্রেক্ষাগৃহে মঞ্চের ওপরে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর হাতে ছিল একটা জ্বলন্ত মোমবাতি, পরনে ছিল দিলদারের পোশাক। রজনীকান্তের স্বগতোক্তি থেকে জানা যায় যে,

 

 অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য সেদিন অভিনয়ের পর তিনি গ্রিনরুমেই ঘুমিয়ে। পড়েছিলেন। নিঝুম, অন্ধকার রাতে কেবল নিজের গলাটাই ঘুরেফিরে কানে আসে রজনীকান্তের। তাই তিনি একটু ভয়ও পেয়ে যান। আগের রাতেও ঠিক একই ঘটনা ঘটলেও রামব্রিজ এসে তাঁকে ঘুম থেকে তুলে ট্যাক্সি ডেকে বাড়ি পৌঁছোনোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এই কাজের জন্য সন্ধেবেলাতে রজনীকান্ত তাকে নগদ তিন টাকা বকশিশও দেন। আর এর ফলেই ঘটে বিপত্তি। রজনীকান্তের থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে রামব্রিজ প্রচুর পরিমাণে ধেনো মদ খেয়েছে। তাই সে-ও আজ নেশার ঘোরে আচ্ছন্ন এবং অজ্ঞান হয়ে কোথাও পড়ে আছে। তাই অনেক ডাকার পরও রামব্রিজের দেখা না পাওয়ায় গভীর রাতে রজনীকান্তের পক্ষে বাড়ি যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। আর এই পরিস্থিতিতেই রজনীকান্ত আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন।

 

প্রশ্ন.2 "মুখের ভেতরটা যেন অডিটোরিয়াম-ইন্টারভ্যালে সব দর্শকরা হাঁটাহাঁটি লাগিয়ে দিয়েছে…"-মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

 

উত্তরঃ মন্তব্যের প্রেক্ষাপট: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ-নাটক 'নানা রঙের দিন'-এ এক পেশাদারি থিয়েটারের ফাঁকা মঞ্চে অন্ধকার রাতে শূন্য প্রেক্ষাগৃহে দেখা যায় আটষট্টি বছরের বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে। রজনীকান্তের পরনে দিলদারের পোশাক, হাতে জ্বলন্ত মোমবাতি। রজনীকান্তের কথা থেকে জানা যায়, অভিনয়ের পরে অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে নেশার ঘোরে তিনি গ্রিনরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ঘুম থেকে জেগে উঠে তিনি দেখেন শাজাহান-জাহানারা-সহ বাকি সব চরিত্রাভিনেতা চলে গিয়েছে। গভীর রাতে মঞ্চে তিনি একা রয়েছেন। নিঝুম রাতের শূন্য প্রেক্ষাগৃহে ট্যাক্সি ডেকে দেওয়ার জন্য রামব্রিজকে ডেকেও সাড়া পান না তিনি। তাঁর মনে পড়ে যায় আগের রাতে তাঁকে বাড়ি যাবার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য রামব্রিজকে তিনি তিন টাকা বকশিশ দিয়েছেন। সেই টাকাতেই 'রামধেনো' কিনে তাঁকে দেড় বোতল খাইয়ে গেছে রামব্রিজ এবং সে নিজেও হয়তো কোথাও নেশার ঘোরে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে। অসহায় প্রবীণ রজনীকান্তের মনে হয় অতিরিক্ত মদ্যপানে তাঁর বুকের ভেতরটা থরথর করে কাঁপছে আর শারীরিক কষ্ট হচ্ছে। থিয়েটারে নিবেদিতপ্রাণ রজনীকান্তের অবচেতন মনেও কাজ করে চলে থিয়েটারের দৃশ্যপট। তাই মুখের ভিতরটা শুকিয়ে আসার যে কষ্ট তিনি অনুভব করেছেন, তার সঙ্গে তুলনা করেছেন অডিটোরিয়ামে ইন্টারভ্যাল চলাকালীন দর্শকদের হাঁটাহাঁটির মতো বিশৃঙ্খলার দৃশ্যকে।।

 

প্রশ্ন.3"আমিও তো মানুষ, কালীনাথ।"-প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। বক্তা কেন এরূপ মন্তব্য করেছেন?

 

উত্তর প্রসঙ্গ: অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নানা রঙের দিন' নাটকে বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় যখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মাঝরাতে শূন্য প্রেক্ষাগৃহের ফাঁকা মঞ্চে বিলাপ করছেন তখন সেখানে প্রম্পটার কালীনাথের আগমন ঘটে। হতাশ রজনীকান্তকে সে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু তাতে রজনীকান্তের বিলাপ আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে। একদিকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নিঃসঙ্গতা, অন্যদিকে এক নাট্য অভিনেতার সামাজিক অবস্থান- এই দুইয়ে মিলে তাঁর হতাশা গভীরতর হয়। রজনীকান্তের এই দুঃখ কালীনাথকে বিস্মিত করে, আর তার বিস্ময়ের উত্তরেই রজনীকান্ত এই মন্তব্যটি করেন।

 

উদ্দিষ্ট মন্তব্যের কারণ: ফুরিয়ে আসা অভিনয় জীবন: আটষট্টি বছর বয়সে এসে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ব্যক্তিগত এবং অভিনয় জীবন নিয়ে গভীর হতাশার শিকার হয়েছেন। এখনও তাঁর অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়োলেও অভিনয়ের সোনালি দিনগুলি এখন অতীত। নিঃসঙ্গ জীবন: দীর্ঘ অভিনয়জীবনে রজনীকান্ত উপলব্ধি করেছেন যে, অভিনেতার যাবতীয় কদর

মঞ্চের উপরেই। তারপরে কেউ আর তাকে মনে রাখে না। কোনো অভিনেতার এই অবস্থায় একমাত্র আশ্রয় হতে পারে তার পরিবার। কিন্তু রজনীকান্তের সেটাও নেই। "মরবার সময় মুখে দু-ফোঁটা জল দেয় এমন কেউ নেই আমার।” দর্শক তার জন্য কিছু করবে না, স্ত্রী-সন্তান, সঙ্গীসাথি কেউই নেই তার। অথচ একদিন এই অভিনয়ের জন্যই তিনি পুলিশের চাকরি ছেড়েছিলেন, অভিনয় ছাড়তে পারবেন না বলেই তাঁর জীবনের একমাত্র প্রেম-সম্পর্কটিও ভেঙে গিয়েছিল। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এই একাকিত্ব এবং হতাশা রজনীকান্তের কাছে যেন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।

 


👉Online MCQs Test

👉Download Books PDF

👉Paid Answer (For Membership User) 


 EDITING BY--Liza Mahanta