Chapter 5
নিরপেক্ষ ন্যায়
-------------------
MCQ
1. ন্যায় অনুমানের দ্বিতীয় নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে দোষের উদ্ভব হয়, তা হল-
a) অব্যাপ্য হেতু দোষ
b) চতুষ্পদঘটিত দোষ
c) অবৈধ সাধ্য দোষ
d) অবৈধ পক্ষ দোষ
উত্তর: b) চতুষ্পদঘটিত দোষ
2. অনেকার্থক হেতু দোষ যে দোষের প্রকার, তা হল-
a) অব্যাপ্য হেতু দোষ
b) অবৈধ সাধ্য দোষ
c) অবৈধ পক্ষ দোষ
d) চতুষ্পদঘটিত দোষ
উত্তর: b) চতুষ্পদঘটিত দোষ
3. ন্যায়ের তৃতীয় নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে দোষের আবির্ভাব হয়, তা হল-
a) অবৈধ সাধ্য দোষ
b) চারিপদঘটিত দোষ
c) অবৈধ পক্ষ দোষ
d) অব্যাপ্য হেতু দোষ
উত্তর: d) অব্যাপ্য হেতু দোষ
a) অবৈধ সাধ্য দোষ
b) অবৈধ পক্ষ দোষ
c) অব্যাপ্য সাধ্য দোষ
d) অব্যাপ্য হেতু দোষ
উত্তর: a) অবৈধ সাধ্য দোষ
5. পক্ষপদটি যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হলে যে দোষের উদ্ভব হয়, সেটি হল-
a) অবৈধ সাধ্য দোষ
b) অবৈধ পক্ষ দোষ
c) হেতু দোষ
d) চতুষ্পদঘটিত দোষ
উত্তর: b) অবৈধ পক্ষ দোষ
a) সদর্থক বাক্যজনিত দোষ
b) দুটি নঞর্থক বাক্যজনিত দোষ
c) নঞর্থক অব্যাপ্য হেতু দোষ
d) অবৈধ সাধ্য দোষ
উত্তর: b) দুটি নঞর্থক বাক্যজনিত দোষ
7. অবৈধ সাধ্য ও অবৈধ পক্ষ দোষ যে নিয়মের লঙ্ঘনে হয়, তা হল-
a) প্রথম নিয়ম
b) দ্বিতীয় নিয়ম
c) তৃতীয় নিয়ম
d) চতুর্থ নিয়ম
উত্তর: d) চতুর্থ নিয়ম
8 . যুধিষ্ঠির হয় দুর্যোধনের বন্ধু (A)
দুর্যোধন হয় শকুনির বন্ধু (A)
.: যুধিষ্ঠির হয় শকুনির বন্ধু (A)
যুক্তিটিতে যে দোষ হয়, তা হল-
a) অব্যাপ্য হেতু দোষ
b) অবৈধ সাধ্য দোষ
c) অবৈধ পক্ষ দোষ
d) চতুষ্পদঘটিত দোষ
উত্তর: d) চতুষ্পদঘটিত দোষ
a) নিরপেক্ষ ন্যায়ের উদ্দেশ্য
b) নিরপেক্ষ ন্যায়ের অর্থ
c) নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মভঙ্গজনিত দোষ
d) ন্যায়ের উৎস সম্পর্কিত বিষয়
উত্তর: c) নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মভঙ্গজনিত দোষ
a) একটি
b) চারটি
c) তিনটি
d) দুটি
উত্তর: b) চারটি
a) হেতুপদের
b) সাধ্যপদের
c) পক্ষপদের
d) যে-কোনো পদের
উত্তর: a) হেতুপদের
a) একটি
b) দুটি
c) তিনটি
d) চারটি
উত্তর: d) চারটি
a) প্রথম
b) দ্বিতীয়
c) তৃতীয়
d) চতুর্থ
উত্তর: d) চতুর্থ
a) প্রথম
b) দ্বিতীয়
c) তৃতীয়
d) চতুর্থ
উত্তর: c) তৃতীয়
a) গুণের
b) পরিমাণের
c) গুণ ও পরিমাণের
d) এদের কোনোটিরই নয়
উত্তর: c) গুণ ও পরিমাণের
a) 16 টি
b) 256 টি
c) 64 টি
d) 108 টি
উত্তর: b) 256 টি
16. ন্যায়ের বৈধ মূর্তির সংখ্যা কতগুলি?
a) 4 টি
b) 18 টি
c) 19 টি
d) 24 টি
উত্তর: c) 19 টি
a) চার
b) পাঁচ
c) ছয়
d) সাত
উত্তর: a) চার
a) 2 টি
b) 4 টি
c) 5 টি
d) 6 টি
উত্তর: b) 4 টি
a) 4 টি
b) 6 টি
c) 5 টি
d) 3 টি
উত্তর: b) 6 টি
a) তিনটি
b) চারটি
c) পাঁচটি
d) ছয়টি
উত্তর: c) পাঁচটি
প্রশ্ন 1 নিরপেক্ষ ন্যায় কাকে বলে? উদাহরণ-সহ ব্যাখ্যা করো। অথবা, উপযুক্ত উদাহরণ সহকারে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো: নিরপেক্ষ ন্যায়।
উত্তর:
প্রশ্ন 2 নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈশিষ্ট্য বা প্রকৃতি লেখো।
উত্তর : নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈশিষ্ট্য বা প্রকৃতি
নিরপেক্ষ ন্যায়ের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেই সংজ্ঞাকে বিশ্লেষণ করলে নিরপেক্ষ ন্যায়ের কতগুলি বৈশিষ্ট্য বা স্বরূপ ফুটে ওঠে। সেই স্বরূপ বা বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
[1] মাধ্যম অনুমান হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: নিরপেক্ষ ন্যায় হল একটি মাধ্যম অনুমান। কারণ, এখানে পরস্পর সম্পৃক্ত দুটি যুক্তিবাক্য থেকে একটি সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। অর্থাৎ, প্রধান যুক্তিবাক্য থেকে অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মাধ্যমে সিদ্ধান্তটি প্রতিষ্ঠিত। এই অপ্রধান যুক্তিবাক্য তথা পক্ষবাক্যের মাধ্যম ছাড়া সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করা আদৌ সম্ভব নয়। সেকারণেই এরূপ অনুমানকে মাধ্যম অনুমানরূপে গণ্য করা হয়।
[2] অবরোহ অনুমান হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: প্রকৃতিগত দিক থেকে
ন্যায় অনুমান হল এক ধরনের অবরোহ অনুমান (deductive argument)। অবরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি কখনোই যুক্তিবাক্যের ব্যাপকতাকে অতিক্রম করে না। এখানেও সিদ্ধান্তটির ব্যাপকতা যুক্তিবাক্যের ব্যাপকতার চেয়ে কখনোই বেশি নয়। সেকারণেই নিরপেক্ষ ন্যায়কে অবরোহাত্মক অনুমানরূপে গণ্য করা হয়।
[3] যুক্তিবাক্য দুটির অনিবার্য পরিণতি হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়:
নিরপেক্ষ ন্যায়ের সিদ্ধান্তটি যুক্তিবাক্য দুটি থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত। অর্থাৎ, যুক্তিবাক্য দুটির অনিবার্য পরিণতি হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়ের সিদ্ধান্তটিকে উল্লেখ করা যায়। কারণ, ন্যায়ের সিদ্ধান্তটিতে এমন কিছুই প্রমাণ বা প্রতিষ্ঠা করা হয় না, যা যুক্তিবাক্য দুটির মধ্যে নিহিত নয়। যুক্তিবাক্য দুটির মধ্যে অস্পষ্ট বিষয়টিই আরও স্পষ্টরূপে সিদ্ধান্তে গৃহীত ও প্রমাণিত হয়।
[4] ত্রি-অবয়বী হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: প্রত্যেকটি নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রকৃতিতে তিনটি অবয়ব বচন লক্ষ করা যায়। এই তিনটি অবয়ব বচনের মধ্যে প্রথম দুটিকে বলা হয় যুক্তিবাক্য এবং শেষেরটিকে বলা হয় সিদ্ধান্ত। যুক্তিবাক্য দুটির প্রথমটিকে বলা হয় প্রধান যুক্তিবাক্য বা সাধ্যবাক্য এবং দ্বিতীয়টিকে বলা
হয় অপ্রধান যুক্তিবাক্য বা পক্ষবাক্য। এই পক্ষবাক্যের সাহায্যে সাধ্যবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত
হয়।
[5] তিনটি পদের দ্বিত্ব প্রয়োেগ হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: প্রত্যেকটি নিরপেক্ষ ন্যায়ের প্রকৃতিতে সাধ্য, পক্ষ এবং হেতু-এই তিনটি পদের অবস্থান দেখা যায়। এই তিনটি পদ আবার দুবার করে ব্যবহৃত হয়। যাকে প্রমাণ করা হয়, তাকে বলে সাধ্যপদ। যেখানে সাধ্যকে প্রমাণ করা হয়, তাকে বলে পক্ষপদ। আর যে পদের দ্বারা সাধ্যকে পক্ষে প্রমাণ করা হয়, তাকে বলে হেতুপদ। যুক্তিবাক্য দুটিতে হেতুপদ একবার সাধ্য ও আর-একবার পক্ষপদের সঙ্গে মিলিত হয়। সিদ্ধান্তে কিন্তু হেতুপদের কোনো স্থান নেই। সেখানে থাকে শুধু পক্ষপদ ও সাধ্যপদ।
[6] আকারগত সত্যতার নির্ণায়ক হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: নিরপেক্ষ ন্যায়ের আরও একটি লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য এই যে, তা শুধু যুক্তি বা অনুমানের আকারগত বৈধতার (formal validity) ওপরই সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে, কখনোই বস্তুগত সত্যতার (material validity) ওপর নয়। কারণ, নিরপেক্ষ ন্যায়ে কেবল দেখা হয় যে, সিদ্ধান্তটি যুক্তিবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়েছে কি না। বস্তুগতভাবে যুক্তিটি সত্য কি না, তা আদৌ বিচার করা হয় না।
[7] বৈধ ও অবৈধ হিসেবে নিরপেক্ষ ন্যায়: যে-কোনো নিরপেক্ষ ন্যায় সবসময়ই বৈধ (valid) অথবা অবৈধ (invalid)-রূপে গণ্য। নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মগুলিকে যদি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়, তবে তা বৈধরূপে গণ্য হয়। আর নিয়মগুলিকে যদি যথাযথভাবে অনুসরণ করা না হয়, তবে তা অবৈধ বা দোষযুক্ত রূপে গণ্য হয়। নিরপেক্ষ ন্যায়কে তাই কখনোই সম্ভাব্য (probable) রূপে গণ্য করা যায় না।
প্রশ্ন 3 নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠন আলোচনা করো।
উত্তর:
প্রশ্ন 4 নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের ভূমিকা কী? আলোচনা করো।
উত্তর: নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের ভূমিকা
নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলি হল-
[1] মাধ্যম অনুমানের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদ: নিরপেক্ষ নায় অনুমানে যে তিনটি পদ স্বীকৃত হয়েছে, তাদের মধ্যে হেতুপদ হল অন্যতম। আরমা হেতুপদের ভূমিকা ছাড়া ন্যায় অনুমানের বিষয়টিকে কখনোই কল্পনা করা যায় না। আমরা জানি যে, ন্যায় অনুমান হল একপ্রকার মাধ্যম অনুমান। কারণ, এখানে অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মাধ্যমে প্রধান যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর এখানে মাধ্যম হিসেবে যে পদটি কাজ করে থাকে, তা হল হেতুপদ। এই হেতুপদের জন্যই নিরপেক্ষ ন্যায়কে অমাধ্যম অনুমান থেকে পৃথক করা সম্ভব।
[2] প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদ:নিরপেক্ষ ন্যায়ের ক্ষেত্রে আমরা তিনটি নিরপেক্ষ বচন লক্ষ করে থাকি। এই তিনটি নিরপেক্ষ বচনের প্রথম দুটিকে বলা হয় যুক্তিবাক্য (premises)। যুক্তিবাক্য দুটির প্রথমটিকে বলা হয় প্রধান যুক্তিবাক্য বা সাধ্যবাক্য এবং দ্বিতীয় যুক্তিবাক্যটিকে বলা হয় অপ্রধান যুক্তিবাক্য বা পক্ষবাক্য। হেতুপদ একবার প্রধান যুক্তিবাক্যে এবং আর-একবার অপ্রধান যুক্তিবাক্যে অবস্থান করে। অর্থাৎ, হেতুপদ প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মধ্যে সাধারণ পদ (common) রূপে গণ্য। সেকারণেই কোনো নিরপেক্ষ বচন দুটি যুক্তিবাক্যরূপে গণ্য, তা আমরা সহজেই চিনতে পারি। সুতরাং, দাবি করা যায় যে, প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবশ্যই আছে।
[3] পক্ষপদ ও সাধ্যপদের মিলনকারীরূপে হেতুপদ: যে-কোনো নিরপেক্ষ ন্যায়-অনুমানে আমরা তিনটি পদ লক্ষ করে থাকি। এই তিনটি পদ আবার দু-বার করে ব্যবহৃত হয়। এই তিনটি পদ হল সাধ্যপদ (P), পক্ষপদ (S) এবং হেতুপদ (M)। নিরপেক্ষ ন্যায়ে সাধ্যপদকে পক্ষে হেতুপদ দ্বারা প্রমাণ করা হয়। প্রত্যেকটি নিরপেক্ষ ন্যায়ের সিদ্ধান্তে পক্ষপদ (S) এবং সাধ্যপদ (P)-এর অবস্থান দেখা যায়। অর্থাৎ, সিদ্ধান্তে পক্ষপদ ও সাধ্যপদের মিলন ঘটে। এদের মিলন সম্ভব হয় একমাত্র হেতুপদের জন্যই। কারণ, এই হেতুপদ একবার প্রধান যুক্তিবাক্যে সাধ্যপদের (P) সঙ্গে মিলিত হয়, এবং আর-একবার অপ্রধান যুক্তিবাক্যে পক্ষপদের (S) সঙ্গে মিলিত হয়। এভাবেই সিদ্ধান্তে নিজে অনুপস্থিত থেকে পক্ষ (S) ও সাধ্য (P) পদের মিলন ঘটাতে সমর্থ হয়। অর্থাৎ, হেতুপদই মাধ্যম হিসেবে পক্ষপদ (S) ও সাধ্যপদ (P)-কে সিদ্ধান্তে সংযুক্ত করে।
[4 ] নিরপেক্ষ ন্যায়ের সংস্থান নির্ণায়করূপে হেতুপদ: হেতুপদই হল নিরপেক্ষ ন্যায়ের সংস্থান নির্ণায়ক। কারণ, ন্যায়ের সংস্থানের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায় অনুমানের যে বিশেষ বিশেষ রূপ বা আকৃতি হয়-তাকেই বলে ন্যায়ের সংস্থান। হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায়ের সংস্থানেরও পরিবর্তন হয়। এই সংস্থান হল চার প্রকার-প্রথম সংস্থান, দ্বিতীয় সংস্থান, তৃতীয় সংস্থান ও চতুর্থ সংস্থান। এই চারপ্রকার সংস্থানের ক্ষেত্রে হেতুপদের অবস্থানও চার রকমের। প্রথম সংস্থানে হেতুপদ প্রধান যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যের বিধেয় স্থানে অবস্থান করে। দ্বিতীয় সংস্থানে হেতুপদ প্রধান ও অপ্রধান-উভয় যুক্তিবাক্যেরই বিধেয় স্থানে অবস্থান করে। তৃতীয় সংস্থানে হেতুপদ উভয় যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য স্থানে অবস্থান করে। আর চতুর্থ সংস্থানে প্রধান যুক্তিবাক্যের বিধেয় স্থানে
এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য স্থানে অবস্থান করে। সুতরাং দেখা যায় যে, হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী
ন্যায়ের সংস্থানও নির্ণীত হয়। ন্যায় অনুমানের এই সংস্থানগুলি যে চারটি ভিন্নভিন্ন রূপ বা আকৃতিকে উপস্থাপিত
করে তা প্রখ্যাত তর্কবিদ কার্ভেথ রিড (Carveth Read) নীচের ছকগুলির সাহায্যে তুলে ধরেছেন।
প্রশ্ন 5. নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মসমূহ
নিরপেক্ষ ন্যায় যাতে যথাযথভাবে সম্পন্ন হতে পারে, তার জন্য তর্কবিদগণ কতকগুলি নিয়মের উল্লেখ করেছেন। এই সমস্ত নিয়মকেই বলা হয় ন্যায় অনুমানের সাধারণ নিয়ম (general rules of categorical syllogism)। নিয়মগুলির সংখ্যা হল দশটি এবং সেকারণেই এগুলিকে বলা হয় ন্যায় অনুমানের দশটি বিধি বা নিয়ম (ten rules of syllogism)। এই নিয়মগুলিকে যথাযথভাবে মেনে চললে ন্যায় অনুমান বৈধ বা যথার্থ রূপে গণ্য হয়। আর এগুলিকে অনুসরণ করে না চললে ন্যায় অনুমান দোষযুক্ত বা অবৈধ (fallacious) রূপে গ্রাহ্য হয়। নিরপেক্ষ ন্যায়ের এই নিয়মগুলি হল-
প্রথম নিয়ম: প্রত্যেকটি ন্যায় অনুমানে কেবল তিনটি পদই থাকবে (A valid syllogism must have three terms only)। এই তিনটি পদের বেশি বা কম পদ থাকবে না। তিনটি পদের কম বা বেশি পদ থাকলে তা দোষযুক্ত হবে।
দ্বিতীয় নিয়ম: প্রত্যেকটি ন্যায় অনুমানে কেবল তিনটি বচন থাকবে (A valid syllogism must have three propositions only)। তিনটি বচনের বেশি বা কম বচন থাকতে পারে না। এরূপ হলে তা দোষযুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।
তৃতীয় নিয়ম: হেতু পদটিকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে একবার ব্যাপ্য হতেই হবে (The middle term must be distributed atleast once in the premises)। তা নাহলে ন্যায় অনুমানটি দোষযুক্ত হবে।
চতুর্থ নিয়ম: যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয়, সেই পদ কখনোই সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারে না (No term can be distributed in the conclusion unless it is distributed in the premises)। যদি তা হয়, তাহলে ন্যায় অনুমানটি দোষযুক্ত হয়ে পড়ে।
পঞ্চম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য দুটি যদি নঞর্থক হয়, তাহলে তা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না (From two negative premises no conclusion can be drawn)। যদি তা করা হয়, তাহলে ন্যায় অনুমানটি দোষযুক্ত হয়ে পড়ে।
ষষ্ঠ নিয়ম: আশ্রয়বাক্য দুটির একটি নঞর্থক হলে সিদ্ধান্তটি অবশ্যই নঞর্থক হবে। অথবা বলা যায় যে, সিদ্ধান্তগুলি নঞর্থক হলে আশ্রয়বাক্য দুটির একটি নঞর্থক হবে (If one of the premises is negative, conclusion must be negative and certainly vice-versa)।
সপ্তম নিয়ম: দুটি আশ্রয়বাক্যই যদি সদর্থক হয়, তাহলে সিদ্ধান্তও সদর্থক হবে, অথবা সিদ্ধান্ত সদর্থক হলে আশ্রয়বাক্য দুটিই সদর্থক হবে (If both the premises be affirmative, the conclusion must be affirmative, and vice-versa)।
অষ্টম নিয়ম: দুটি বিশেষ আশ্রয়বাক্য থেকে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না (No conclusion can be drawn from two particular premises)।
নবম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য দুটির একটি বিশেষ হলে সিদ্ধান্তটিও বিশেষ হবে (If one premise be particular, concluion must be particular)।
দশম নিয়ম: প্রধান আশ্রয়বাক্য বিশেষ এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে, কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না (If the major premise be particular and minor premise be negative, no conclusion can be drawn)।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মগুলির প্রকৃতি
নিরপেক্ষ ন্যায়ের যে দশটি সাধারণ নিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলির প্রকৃতি বা স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, নিয়মগুলিকে মোটামুটিভাবে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- [1] গঠনগত নিয়ম [2] বৈধতা সম্পর্কিত নিয়ম এবং [3] অনুসিদ্ধান্তমূলক নিয়ম। দশটি নিয়মের মধ্যে প্রথম দুটিকে গঠন সংক্রান্ত নিয়মের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। তৃতীয় থেকে সপ্তম নিয়ম পর্যন্ত নিয়মগুলিকে বলা হয় অনুমান সংক্রান্ত বা বৈধতা সংক্রান্ত নিয়ম। আর অষ্টম থেকে দশম-এই শেষের তিনটি নিয়মকে অনুসিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নিয়মরূপে উল্লেখ করা হয়।
👉Paid Answer (For membership User)
Editing by- Rita Moni Bora