Chapter 2 

 বিপ্রবেশে অর্জুন


প্রশ্ন ১। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির কবি কে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির কবি হলেন কাশীরাম দাস।

প্রশ্ন ২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কাব্যাংশটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কাব্যাংশটি কাশীরাম দাস রচিত ‘মহাভারত’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

প্রশ্ন ৩। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে কার কথা বর্ণিত হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে অর্জুনের কথা বর্ণিত হয়েছে, যেখানে তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হন।

প্রশ্ন ৪। ‘বাতুল হইল কিবা’ – ‘বাতুল’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘বাতুল’ শব্দটির অর্থ উন্মাদ বা পাগল

প্রশ্ন ৫। “দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি। পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷” – ‘মনসিজ’ শব্দের অর্থ লেখো।

উত্তরঃ ‘মনসিজ’ শব্দের অর্থ কামদেব

প্রশ্ন ৬। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান” – এই দ্বিজ কে?

উত্তরঃ এখানে ‘দ্বিজ’ বলতে অর্জুন কে বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন ৭। “কেউ বলে ব্রাহ্মণেরে না বল এমন।

উত্তরঃ প্রশ্নটি অসম্পূর্ণ রয়েছে। দয়া করে সম্পূর্ণ প্রশ্নটি প্রদান করুন, তাহলে আমি যথাযথ উত্তর দিতে পারবো।

প্রশ্ন ৮। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’- কবিতায় অর্জুনের মূর্তিটি কেমন?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের মূর্তিটি একদম ভিক্ষুক বা ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে বর্ণিত হয়েছে। তিনি ক্ষীণকায়, ম্লানবর্ণ, এবং সাধারণ ব্রাহ্মণের মতো পোশাক পরিহিত ছিলেন, যা দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে তিনি প্রকৃতপক্ষে মহাবীর অর্জুন।

প্রশ্ন ৯। ‘‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল। ______ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ ‘‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল।

বৃহৎ বহুবলী চঞ্চল বিপুল
পায় লাজ নাসিকা অতুল॥”

প্রশ্ন ১০। “দেখ দ্বিজ ______ জিনিয়া মুরতি। পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ “দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি।

পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷”

প্রশ্ন ১১। জলদ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ জলদ শব্দের অর্থ হলো মেঘ

প্রশ্ন ১২। ‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস। – এখানে ‘দ্বিজ’ শব্দে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে ‘দ্বিজ’ শব্দটি অর্জুনকে নির্দেশ করা হয়েছে, যিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।

প্রশ্ন ১৩। “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণে মোরা অল্পে না ছাড়িব।” – নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে 'নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ' বলে অর্জুনকে নির্দেশ করা হয়েছে, কারণ তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে রাজকন্যার প্রতি আকর্ষণ দেখিয়েছিলেন, যা উপস্থিত ক্ষত্রিয়রা উপহাস করছিল।

প্রশ্ন ১৪। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান।” – এখানে কন্যা কে?

উত্তরঃ এখানে 'কন্যা' বলতে দ্রৌপদীকে বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন ১৫। “হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস।” – ক্ষত্রিয় উপহাস করে কেন?

উত্তরঃ ক্ষত্রিয়রা উপহাস করে কারণ তারা এক ব্রাহ্মণকে (অর্জুন, যিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে ছিলেন) দ্রৌপদীর স্বয়ম্ভরে অংশ নিতে দেখে অবাক হয় এবং তাকে অসমর্থ মনে করে। তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে একজন ব্রাহ্মণ এত কঠিন শর্ত পূরণ করে দ্রৌপদীকে জয় করতে সক্ষম হবে। তাই তারা অর্জুনকে উপহাস করছিল।

প্রশ্ন ১৬। ‘‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস। অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস॥” – এখানে কোন্ কার্যকে অসম্ভব বলা হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে দ্রৌপদীর স্বয়ম্ভরে ধনুর্বিদ্যায় লক্ষ্যভেদ করার কার্যকে অসম্ভব বলা হয়েছে। কারণ, অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন, আর উপস্থিত ক্ষত্রিয়রা মনে করেছিল যে একজন ব্রাহ্মণের পক্ষে এত কঠিন ধনুর্বিদ্যা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়া অসম্ভব। তাই তারা অর্জুনের প্রচেষ্টাকে অবাস্তব বা অসম্ভব বলে উপহাস করেছিল।

প্রশ্ন ১৭। “কাশী ভনে হেন জনে কি কৰ্ম অশক্য।” – ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ হলো অসম্ভব বা যা করা সম্ভব নয়

প্রশ্ন ১৮। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।” – অনুপম শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘অনুপম’ শব্দের অর্থ হলো অতুলনীয়, অদ্বিতীয় বা অপরূপ

প্রশ্ন ১৯। ‘পাংশুজ্বালে আচ্ছাদিত’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ  ‘পাংশুজ্বালে আচ্ছাদিত’ শব্দের অর্থ হলো ধূলির আগুনে আবৃত বা ধূলি দ্বারা আচ্ছাদিত। এটি এমন অবস্থাকে বোঝায় যেখানে ধুলোর আস্তরণ বা আগুনের মতো ধূলিকণা কাউকে বা কিছু আচ্ছাদিত করে রেখেছে।

প্রশ্ন ২০। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে কোন রাজসভার কথা উল্লেখিত হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় দ্রুপদ রাজসভার কথা উল্লেখিত হয়েছে।

প্রশ্ন ২১। কাশীরাম দাসের মতে কার অসাধ্য কোনো কর্ম নেই?

উত্তরঃ কাশীরাম দাসের মতে অর্জুনের অসাধ্য কোনো কর্ম নেই।

প্রশ্ন ২২। কবি কাশীরাম দাস কী জন্য বিখ্যাত?

উত্তরঃ  কবি কাশীরাম দাস মূলত "মহাভারত" কাব্যের বাংলা অনুবাদের জন্য বিখ্যাত। তিনি বাংলায় অনুবাদ করা "কাশীদাসী মহাভারত" রচনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা মহাভারত কাব্যগ্রন্থ সহজ ভাষায় রচিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন ২৩। কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত _______। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ "কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত গজেন্দ্র।"

প্রশ্ন ২৪। খগরাজ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ খগরাজ বলতে গরুড়কে বোঝানো হয়েছে। গরুড় হল পাখিদের রাজা এবং বিষ্ণুর বাহন।

প্রশ্ন ২৫। “কাশী ভনে হেন জনে কি কর্ম অশক্য।” – ‘কাশী’ কে?

উত্তরঃ  এখানে ‘কাশী’ বলতে রাজা কাশীরাজকে বোঝানো হয়েছে, যিনি কাশী রাজ্যের রাজা ছিলেন।

প্রশ্ন ২৬। “কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত করিবর।”

“কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত করিবর।”
উত্তরঃ  – এখানে "করিবর" বলতে হস্তী (হাতি) বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আনন্দিত ও মত্ত হয়ে ধীর গতিতে চলা হাতির কথা বলা হয়েছে।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

 প্রশ্ন ১। “কাশী ভনে হেন জনে কি কৰ্ম অশক্য৷৷” ‘কাশী’ কে ? ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর:

  • ‘কাশী’ বলতে অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে।
  • ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ অসম্ভব বা অঘটনযোগ্য
প্রশ্ন ২। “সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল। খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? ‘রাতুল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর:

  • এখানে অর্জুনের রূপের বর্ণনা করা হয়েছে।
  • ‘রাতুল’ শব্দের অর্থ লাল বা রক্তিম
প্রশ্ন ৩। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা। মুখরুচি কত শুচি করিয়াছে শোভা ৷৷” – কোন কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি গ্রহণ করা হয়েছে? ‘অনুপম’ শব্দের অর্থ কী? কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে?
  • উদ্ধৃতিটি ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
  • ‘অনুপম’ শব্দের অর্থ অতুলনীয় বা অপূর্ব
  • একথা অর্জুনের রূপ ও সৌন্দর্য সম্পর্কে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন ৪। ‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস। অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস ৷৷’ – ‘দ্বিজ’ শব্দের অর্থ লেখো। দ্বিজ বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
  • ‘দ্বিজ’ শব্দের অর্থ দ্বিবার জন্মলাভকারী, যা সাধারণত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
  • এখানে ‘দ্বিজ’ বলতে ব্রাহ্মণ রূপী অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন ৫। “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণে মোরা অল্পে না ছাড়িব”। – “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তাকে কারা সহজে ছাড়বেন না বলেছেন?
  • "নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ" বলতে এখানে ব্রাহ্মণ রূপী অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।
  • ক্ষত্রিয়রা বলেছেন যে, তারা তাকে সহজে ছাড়বেন না
প্রশ্ন ৬। “তাহে লক্ষ্য বিন্ধিবারে চলিল ভিক্ষুক৷”- কে, কোন্ লক্ষ্য ভেদের উদ্দেশ্যে সেখানে উপস্থিত হয়েছিল?

উত্তর:

  • এখানে "ভিক্ষুক" বলতে ব্রাহ্মণ রূপী অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে।
  • তিনি দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন লক্ষ্যভেদ করার উদ্দেশ্যে।
প্রশ্ন ৭। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান।”- এখানে কন্যা কে? দ্বিজ আসলে কে ছিলেন?

উত্তর:

  • এখানে "কন্যা" বলতে দ্রৌপদীকে বোঝানো হয়েছে।
  • "দ্বিজ" বলতে ব্রাহ্মণ রূপী অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন ৮। “সুরাসুর জয়ী সেই বিপুল ধনুক। তাহে লক্ষ্য বিন্ধিবারে চলিল ভিক্ষুক ৷” – কোন্ কবিতার অংশ? এখানে ভিক্ষুক কে?
  • উদ্ধৃতিটি "বিপ্রবেশে অর্জুন" কবিতার অংশ।
  • এখানে "ভিক্ষুক" বলতে ব্রাহ্মণ রূপী অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন ৯। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।” – ‘অনুপম’ ও ‘নীলোৎপল আভা’ শব্দ দুটির অর্থ লেখো।
  • অনুপম শব্দের অর্থ: অতুলনীয় বা অনন্য।
  • নীলোৎপল আভা শব্দের অর্থ: নীল পদ্মের মতো দীপ্তি বা নীলচে উজ্জ্বলতা।
প্রশ্ন ১০। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের ঘাড় এবং হাতকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের ঘাড়কে সিংহের গলার (সিংহগ্রীব) সঙ্গে এবং হাতকে বন্ধুজীব (বিশাল ও বলিষ্ঠ) এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১১। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের নাকের কীরকম বর্ণনা দেওয়া হয়েছে?

উত্তর: ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের নাককে তুলনাহীন (অতুল) বলা হয়েছে, অর্থাৎ তার নাসিকা ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও বিশিষ্ট।

প্রশ্ন ১২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের মহাবীর্য সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের মহাবীর্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি ছিলেন অসাধারণ শক্তিশালী ও অতুলনীয় বীর। তার শারীরিক গঠন ছিল অনুপম, এবং তিনি অসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা রাখতেন। তিনি ছিলেন সুরাসুরজয়ী, অর্থাৎ দেবতা ও অসুরদের বিজয়ী বীর।

প্রশ্ন ১৩। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় কবি কাশীরাম দাস অর্জুন সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত পেশ করেছেন?

উত্তর: ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় কবি কাশীরাম দাস অর্জুন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পেশ করেছেন যে, অর্জুন এক অসাধারণ বীর, যিনি শক্তি, সৌন্দর্য ও প্রতিভার অপূর্ব সমন্বয়। তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে রাজসভায় প্রবেশ করলেও তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও বীরত্ব সহজেই প্রকাশ পেয়েছে। কবি উল্লেখ করেন যে, অর্জুন দেব-দানব জয়ী মহাবীর, যিনি যে কোনো অসাধ্য কর্ম সম্পাদনে সক্ষম।

প্রশ্ন ১৪। দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত অর্জুনের সৌন্দর্য বর্ণনা করো।

উত্তর:  দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত অর্জুনের সৌন্দর্য কবি কাশীরাম দাস তাঁর ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় চিত্রিত করেছেন। কবিতায় অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে স্বয়ংবর সভায় প্রবেশ করলেও তাঁর অতুলনীয় সৌন্দর্য ও বীরত্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

 প্রশ্ন ১। “হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস, অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস।” ক্ষত্রিয়েরা কাকে উপহাস করছিলেন? অসম্ভব কার্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: উক্ত লাইনটি কাশীরাম দাসের "বিপ্রবেশে অর্জুন" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভার একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যের বর্ণনা করা হয়েছে, যেখানে অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হন এবং ধনুক উঁচু করে লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করেন।

ক্ষত্রিয়েরা কাকে উপহাস করছিলেন?

এখানে "দ্বিজ" বলতে অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে। যদিও তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন মহাবীর ও ক্ষত্রিয়, তবুও তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন। স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত অন্যান্য রাজারা ও ক্ষত্রিয়গণ তাঁকে দেখে উপহাস করতে থাকেন। তাঁদের ধারণা ছিল, একজন সাধারণ ব্রাহ্মণের পক্ষে এত বিশাল ধনুক তোলা এবং লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব নয়।

অসম্ভব কার্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ:

ক্ষত্রিয়দের দৃষ্টিতে অর্জুনের লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা একটি "অসম্ভব কার্য" বলে মনে হচ্ছিল। কারণ—

  1. ধনুকের বিশালত্ব ও ওজন:

    • স্বয়ংবর সভায় দ্রৌপদীর জন্য যে ধনুক স্থাপন করা হয়েছিল, তা সাধারণ কোনো অস্ত্র ছিল না। এটি ছিল অত্যন্ত ভারী ও শক্তিশালী, যা শুধু প্রকৃত বীরের পক্ষেই উত্তোলন করা সম্ভব ছিল।
    • উপস্থিত বহু পরাক্রমশালী রাজা ও মহাবীরেরা ধনুক উত্তোলনে ব্যর্থ হন।
  2. ব্রাহ্মণের পরিচয়:

    • অর্জুন তখন ব্রাহ্মণের বেশে ছিলেন, যা সভায় উপস্থিত ক্ষত্রিয়দের মনে সন্দেহ ও বিদ্রূপের উদ্রেক ঘটায়।
    • তাঁরা মনে করেছিলেন, একজন ব্রাহ্মণ শুধু শাস্ত্র পাঠ ও ধর্মকর্মে পারদর্শী হতে পারেন; যুদ্ধবিদ্যায় তিনি দক্ষ নন।
    • তাই তাঁরা অর্জুনকে দেখে হাসাহাসি করেন এবং তাঁর প্রচেষ্টাকে অবাস্তব ও অসম্ভব বলে মনে করেন।

সারসংক্ষেপ:

ক্ষত্রিয়গণ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে থাকা অর্জুনকে দেখে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করছিলেন, কারণ তাঁরা মনে করতেন, ব্রাহ্মণের পক্ষে এত বিশাল ধনুক তোলা ও লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব নয়। কিন্তু বাস্তবে অর্জুন ছিলেন প্রকৃত বীর, এবং তিনি নিজের অসাধারণ শক্তি ও দক্ষতা প্রদর্শন করে সকলকে অবাক করে দেন। এই ঘটনা তাঁর পরিচিতি প্রকাশের সূচনা করে এবং দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সম্পন্ন হয়।

প্রশ্ন ২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির মূলভাব সংক্ষেপে লেখো।

‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতার মূলভাব

কাশীরাম দাসের ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় অর্জুনের প্রবেশ, তাঁর রূপ ও শক্তির বর্ণনা এবং ক্ষত্রিয়দের বিদ্রূপের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে স্বয়ংবর সভায় প্রবেশ করেন। সেখানে উপস্থিত রাজারা ও ক্ষত্রিয়গণ তাঁকে দেখে হাসাহাসি ও উপহাস করতে থাকেন, কারণ তাঁদের ধারণা ছিল, একজন ব্রাহ্মণের পক্ষে বিশাল ধনুক উত্তোলন করা এবং লক্ষ্যভেদ করা অসম্ভব। কিন্তু অর্জুন তাঁর অতুলনীয় বীরত্ব ও মহাবীর্য প্রদর্শন করে ধনুক উত্তোলন করেন এবং দক্ষতাপূর্ণভাবে লক্ষ্যভেদ সম্পন্ন করেন। এতে উপস্থিত সকলে বিস্মিত হন, এবং অর্জুনের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ পায়।

এই কবিতার মাধ্যমে কবি দেখিয়েছেন যে বীরত্ব ও দক্ষতা জাতি-পরিচয়ের ওপর নির্ভর করে না, বরং প্রকৃত যোগ্যতাই শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ।

প্রশ্ন ২। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান। বাতুল হইল কিবা করি অনুমান৷” কোন্ কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি গ্রহণ করা হয়েছে? ‘বাতুল’ কাকে বলা হয়েছে, সপ্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উত্তর: উদ্ধৃত পঙ্ক্তিগুলি কাশীরাম দাস রচিত ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

‘বাতুল’ কাকে বলা হয়েছে, সপ্রসঙ্গ আলোচনা:

এখানে ‘বাতুল’ শব্দের অর্থ উন্মাদ বা পাগল। এই কবিতায় ‘বাতুল’ শব্দটি দ্রৌপদীর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গ:
দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হন এবং অত্যাশ্চর্য দক্ষতায় লক্ষ্যভেদ করেন। তখন উপস্থিত রাজারা বিস্মিত হয়ে যান। অর্জুনের এমন অসাধারণ কীর্তি দেখে দ্রৌপদী হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের জন্য যেন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তিনি অনুমান করতে থাকেন যে, এই ব্রাহ্মণ নিশ্চয়ই কোনো সাধারণ ব্যক্তি নন। তাঁর চেহারা, গঠন ও বীরত্ব দেখে দ্রৌপদী বিভ্রান্ত হয়ে যান এবং নিজের ভাগ্য নিয়ে ভাবতে থাকেন। তাই কবি বলেছেন— ‘কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান, বাতুল হইল কিবা করি অনুমান।’

এই অংশে কবি দ্রৌপদীর মানসিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি বিস্মিত, সংশয়াচ্ছন্ন এবং একপ্রকার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।

প্রশ্ন ৩। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা। মুখরুচি কত শুচি করেছে শোভা৷” – সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা:

উদ্ধৃত পঙ্ক্তিগুলি কাশীরাম দাস রচিত ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ:

এই অংশে কবি অর্জুনের সৌন্দর্য ও মহিমার অসাধারণ বর্ণনা দিয়েছেন। অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভায় প্রবেশ করেন, কিন্তু তাঁর রাজকীয় ব্যক্তিত্ব ও অসামান্য শৌর্য গোপন থাকে না।

ব্যাখ্যা:

কবি অর্জুনের রূপ ও ব্যক্তিত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন—

  • ‘অনুপম তনু’ অর্থাৎ তাঁর শারীরিক গঠন অতুলনীয় ও অত্যন্ত মনোহর।
  • ‘শ্যাম নীলোৎপল আভা’ বলতে বোঝানো হয়েছে, তাঁর গাত্রবর্ণ শ্যামবর্ণ এবং তা নীলপদ্মের মতো দীপ্তিময়।
  • ‘মুখরুচি কত শুচি করেছে শোভা’ অর্থাৎ তাঁর মুখমণ্ডল অত্যন্ত নির্মল, উজ্জ্বল ও শোভাময়।

এই বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, অর্জুন শুধুমাত্র শারীরিকভাবে সুন্দরই নন, বরং তাঁর ব্যক্তিত্ব ও আভিজাত্যও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তিনি এক অনন্য মহাবীর, যাঁর সৌন্দর্য ও বীরত্ব মিলিয়ে এক অনুপম মহিমা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। “দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি। পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷” – অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:  অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ

উদ্ধৃত পঙ্ক্তিগুলি কাশীরাম দাস রচিত ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ:

এই অংশে অর্জুনের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের মহিমা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হলেও তাঁর অনন্য সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব ও অসাধারণ মহিমা দৃষ্টিগোচর হয়।

বিশ্লেষণ:

  • ‘দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি’
    এখানে ‘দ্বিজ’ বলতে ব্রাহ্মণবেশী অর্জুনকে বোঝানো হয়েছে। কবি বলছেন, অর্জুনের রূপ দেখে মনে হচ্ছে যেন মনসিজ (কামদেব) স্বয়ং মূর্তিমান হয়েছেন। অর্থাৎ, তিনি কামদেবকেও হার মানানো সৌন্দর্যের অধিকারী।
  • ‘পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি’
    • অর্জুনের চোখকে পদ্মপত্রের মতো বলা হয়েছে, যা সৌন্দর্য ও কোমলতার পরিচয় দেয়।
    • ‘পরশয়ে শ্রুতি’ বলতে বোঝানো হয়েছে, তাঁর সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব দেখে উপস্থিত লোকেরা অভিভূত হয়ে গিয়েছেন।

অন্তর্নিহিত তাৎপর্য:

এই উক্তির মাধ্যমে কবি অর্জুনের শারীরিক সৌন্দর্য ও আভিজাত্য প্রকাশ করেছেন। তাঁর চোখের অভিব্যক্তি, শরীরের গঠন এবং সমগ্র উপস্থিতি এক অনন্য মহিমা বহন করছে। যদিও তিনি একজন ক্ষত্রিয়, তবুও ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হয়েও তাঁর প্রকৃত পরিচয় সম্পূর্ণ লুকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। তার অতুলনীয় সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব সভার সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করে।

অতএব, কবিতার এই অংশে অর্জুনের সৌন্দর্যের সাথে কামদেবের তুলনা করে তাঁর অসাধারণ মহিমা ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।

প্রশ্ন ৫। ‘‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল। খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥” – উদ্ধৃতাংশ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ

উদ্ধৃত অংশটি কাশীরাম দাসের ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ:

এই অংশে অর্জুনের শারীরিক সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হলেও তাঁর গঠন ও সৌন্দর্য এমন অনন্য যে, তা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

বিশ্লেষণ:

  • ‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল’

    • ‘সিংহগ্রীব’ বলতে বোঝানো হয়েছে, অর্জুনের ঘাড় সিংহের মতো দৃঢ় ও শক্তিশালী। এটি তাঁর বীরত্ব ও শক্তির প্রতীক।
    • ‘বন্ধুজীব’ বলতে তাঁর দৃঢ়, বলিষ্ঠ ও সুগঠিত বাহুকে বোঝানো হয়েছে, যা বন্ধুর মতো সর্বদা রক্ষাকর্তা।
    • ‘অধর রাতুল’ অর্থাৎ, তাঁর ঠোঁট লালচে, যা তাঁর রূপের সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যবান চেহারার পরিচয় বহন করে।
  • ‘খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল’

    • ‘খগরাজ’ বলতে ঈগল বা গরুড় বোঝানো হয়েছে, যা সাহস ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টির প্রতীক। এখানে বলা হয়েছে, অর্জুনের নাক এত সুন্দর ও নিখুঁত যে খগরাজ (ঈগল) পর্যন্ত তা দেখে লজ্জা পায়।
    • ‘নাসিকা অতুল’ অর্থাৎ, তাঁর নাক অতুলনীয়, যা সৌন্দর্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

অন্তর্নিহিত তাৎপর্য:

এই অংশে কবি অর্জুনের শারীরিক গঠন ও সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন। তাঁর শক্তিশালী ঘাড়, বলিষ্ঠ বাহু, লালচে ঠোঁট এবং অতুলনীয় নাকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, তিনি শুধু বীরই নন, সৌন্দর্যের দিক থেকেও অতুলনীয়।

অতএব, এই উক্তির মাধ্যমে অর্জুনের সৌন্দর্য, বীরত্ব ও ব্যক্তিত্বের এক অপরূপ চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা সভার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

প্রশ্ন ৬। “দেখ চারু যুগ্ম ভুরু ললাট প্রসার। কি সানন্দ গতি মন্দি মত্ত করিবর৷” – পংক্তি দ্বয় কোন কবিতার অংশ। পংক্তি দুটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ

প্রসঙ্গ:

এই পংক্তি কাশীরাম দাসের ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে অর্জুনের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের বর্ণনা করা হয়েছে, যা সভায় উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে।

বিশ্লেষণ:

  • "দেখ চারু যুগ্ম ভুরু ললাট প্রসার"

    • ‘চারু যুগ্ম ভুরু’ অর্থাৎ অর্জুনের ভ্রু জোড়া অত্যন্ত সুন্দর এবং সুশোভিত। তাঁর ভ্রু দু’টি সুগঠিত, যা সৌন্দর্যের এক বিশেষ নিদর্শন।
    • ‘ললাট প্রসার’ বলতে বোঝানো হয়েছে, তাঁর প্রশস্ত ও দীপ্তিময় কপাল। প্রশস্ত ললাট সাধারণত মেধা, প্রতিভা এবং সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি তাঁর ব্যক্তিত্বের ঔজ্জ্বল্যকে প্রকাশ করছে।
  • "কি সানন্দ গতি মন্দি মত্ত করিবর"

    • ‘কি সানন্দ গতি’ – এখানে অর্জুনের চলার ভঙ্গিমাকে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি এমন এক ভঙ্গিতে চলছিলেন, যা ছিল আত্মবিশ্বাসী ও সৌম্য।
    • ‘মন্দি মত্ত করিবর’ – তাঁর গতি ছিল ধীর, স্থির এবং গম্ভীর, যা এক অভিজাত মহাবীরের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে। এখানে ‘মত্ত করিবর’ বলতে বোঝানো হয়েছে, তাঁর গতি ছিল গজেন্দ্র বা মাতঙ্গের মতো, যা রাজসিক ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রতীক।

অন্তর্নিহিত তাৎপর্য:

এই পংক্তির মাধ্যমে কবি অর্জুনের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর সুশোভিত ভ্রু, প্রশস্ত কপাল, শান্ত-সুস্থির গতি এবং মাতঙ্গসম দৃঢ়তার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, তিনি কেবলমাত্র একজন সাধারণ ব্রাহ্মণ নন, বরং তাঁর মধ্যে এক মহান বীরের রূপ লুকিয়ে আছে।

অতএব, এই অংশের মাধ্যমে অর্জুনের আভিজাত্য, সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের মহিমা তুলে ধরা হয়েছে, যা স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত সবাইকে অভিভূত করে।