Chapter 6 - 

হায় চিল

প্রশ্ন ১। ‘হায়চিল’ কবিতাটির কবির নাম কী?

উত্তর: জীবনানন্দ দাশ।

প্রশ্ন ২। ‘হায়চিল’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তর: ‘হায়চিল’ কবিতাটি ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

প্রশ্ন ৩। ‘হায় চিল’ কবিতায় ‘চিল’ কীসের প্রতীক?

উত্তর: কবিতায় ‘চিল’ হলো বেদনা ও শূন্যতার প্রতীক, যা কবির মনোজগতের একাকীত্ব এবং জীবনের কষ্টের প্রতিফলন।

প্রশ্ন ৪। হায়, চিল _____ ডানার চিল। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তর: সোনালি ডানার চিল।

প্রশ্ন ৫। তুমি আর উড়ে উড়ে কেঁদো নাকো _____ নদীটির পাশে। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তর: ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।

প্রশ্ন ৬। ‘সোনালি ডানার চিল’ কোন্ চিলকে বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘সোনালি ডানার চিল’ কবির প্রিয়ার প্রতীক, যার মাধ্যমে কবি তাঁর হারানো প্রেমিকাকে বোঝাতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন ৭। ধানসিঁড়ি কী?

উত্তর: ধানসিঁড়ি একটি নদী, যা কবির কল্পনায় স্থান পেয়েছে।

প্রশ্ন ৮। ‘ভিজে মেঘের দুপুরে’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: ‘ভিজে মেঘের দুপুরে’ বলতে গা dark ় মেঘমালার ভেতরে অন্ধকার এক মনোভাব এবং বেদনার পরিবেশকে বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন ৯। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে !’- কবি কাকে কাঁদতে বারণ করেছেন?

উত্তর: কবি তাঁর প্রিয়াকে কাঁদতে বারণ করেছেন।

প্রশ্ন ১০। কে কবির হৃদয়ে বেদনা জাগিয়ে তুলেছে?

উত্তর: কবির হৃদয়ে হারানো প্রিয়ার স্মৃতি বেদনা জাগিয়ে তুলেছে।

প্রশ্ন ১১। কবি চিলকে কোন নদীর পাশে উড়ে উড়ে কাঁদতে বারণ করেছেন?

উত্তর: কবি চিলকে ধানসিঁড়ি নদীর পাশে উড়ে উড়ে কাঁদতে বারণ করেছেন।

প্রশ্ন ১২। “_____কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!”

উত্তর: কবি হারানো প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ১৩। ধানসিঁড়ি নদীর পাশে উড়ন্ত চিলটির ডানার রং কী ছিল?

উত্তর: চিলটির ডানার রং ছিল সোনালি।

প্রশ্ন ১৪। ধানসিঁড়ি কী?

উত্তর: ধানসিঁড়ি একটি নদী, যা কবির কল্পনায় স্থান পেয়েছে এবং এটি এখানে একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রশ্ন ১৫। চিলের কান্না কবিকে কী মনে করিয়ে দেয়?

উত্তর: চিলের কান্না কবিকে হারানো প্রেমিকাকে মনে করিয়ে দেয়, যার কান্নার সুর তার মনে গাঁথা।

প্রশ্ন ১৬। রাঙা রাজকন্যা কারা?

উত্তর: রাঙা রাজকন্যা হলেন কবির প্রিয় বা হারানো প্রেমিকা, যার প্রতি কবির গভীর অনুভূতি রয়েছে।

প্রশ্ন ১৭। “তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে।”

উত্তর: এই পংক্তির মধ্যে কবি তাঁর প্রিয়ার ম্লান চোখের কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ১৮। কবিতার হারানো প্রিয়ার চোখকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

উত্তর: কবি হারানো প্রিয়ার চোখকে বেতের ফলের মতন ম্লান চোখের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

প্রশ্ন ১৯। কবি জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?

উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হলো ‘বনলতা সেন’।

প্রশ্ন ২০। কবি জীবনানন্দ দাশকে কখন একাদেমী পুরস্কার দেওয়া হয়?

উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশকে ১৯৫৪ সালে সাহিত্য একাদেমী পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ২১। জীবনানন্দ দাশ কত সালে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন?

উত্তর: ১৯৫৫ সালে জীবনানন্দ দাশ সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ 

 প্রশ্ন ১। “____কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!” – কাব্যাংশটি কোন্ কবিতার অন্তর্গত? কবিতাটি কার রচনা?

উত্তর:  কাব্যাংশটি "হায়চিল" কবিতার অন্তর্গত। কবিতাটি জীবনানন্দ দাশ এর রচনা।

প্রশ্ন ২। “তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে; – “উদ্ধৃতিটি কোন্ কবিতার অংশ? কবি কে? কার কান্নার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর:  উদ্ধৃতিটি "হায়চিল" কবিতার অংশ। কবি জীবনানন্দ দাশ। এখানে চিলের কান্নার কথা বলা হয়েছে।

প্ৰশ্ন ৩। জীবনানন্দ দাশের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর:   জীবনানন্দ দাশের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম:
  1. বনলতা সেন
  2. ঝরা পালক

প্রশ্ন ৪। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!” – কবি কাকে, কোথায় কাঁদতে বারণ করেছেন?

উত্তর:  কবি এখানে চিলকে কাঁদতে বারণ করেছেন, যাকে তিনি ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে উড়ে-উড়ে কাঁদতে বলছেন।

প্রশ্ন ৫। “আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?”- এই উক্তি কার উদ্দেশ্যে? ‘তাহারে’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর:  "আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?" এই উক্তিটি প্রিয়ার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। এখানে 'তাহারে' বলতে কবি তার হারানো প্রিয়াকে বোঝাতে চেয়েছেন, যাকে তিনি আর ফিরে পেতে চান না বা যাকে পুনরায় ফিরে আনতে চাচ্ছেন না।

প্রশ্ন ৬। “কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে।”

– কোন কবিতার অংশ? এখানে কার হৃদয়ের বেদনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  "কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে।" এই উক্তিটি ‘হায়চিল’ কবিতার অংশ। এখানে কবির হৃদয়ের বেদনার কথা বলা হয়েছে, যিনি তার হারানো প্রিয়ার জন্য বেদনায় ভারাক্রান্ত।

প্রশ্ন ৭। চিলের কান্নায় কবির মধ্যে কোন্ অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে?

উত্তর:  চিলের কান্নায় কবির মধ্যে বেদনা ও শূন্যতার অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। চিলের কান্নার সুর কবিকে তার হারানো প্রিয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যা তার হৃদয়ে গভীর বেদনা ও একাকীত্বের সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৮। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।”

– পংক্তিটি কোন কবিতার? কবির নাম কী?

উত্তর:  এই পংক্তিটি হায়চিল’ কবিতার অংশ। কবির নাম জীবনানন্দ দাশ

প্রশ্ন ৯। টীকা লেখো: 

১। ধানসিঁড়ি।

উত্তর:   ধানসিঁড়ি:

ধানসিঁড়ি হলো এক ধরনের জলাশয় বা নদী যেখানে প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদিত হয়। এটি বিশেষভাবে গ্রামের পল্লী অঞ্চলে দেখা যায়, যেখানে জলাশয়গুলির পাড়ে ধান চাষ করা হয়। জীবনানন্দ দাশের ‘হায়চিল’ কবিতায় ধানসিঁড়ি নদীটির উল্লেখ করা হয়েছে, যা একটি সাধারণ কৃষি অঞ্চলের প্রতীক। কবিতায় ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে চিলের কান্নার মাধ্যমে একটি নস্টালজিক এবং দুঃখভারী আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি কাব্যের শোক এবং বেদনার অনুভূতির প্রতীক হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন ১০। “এই ভিজে মেঘের দুপুরে

তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।”

– ‘ধানসিঁড়ি নদী’ কোথায় অবস্থিত? এখানে ‘তুমি’ কে?

উত্তর:   ‘ধানসিঁড়ি নদী’ বাংলাদেশে অবস্থিত।

এখানে ‘তুমি’ কবির প্রিয়জন বা একজন কল্পিত চরিত্র, যার প্রতি কবি সান্ত্বনাসূচক আহ্বান জানাচ্ছেন।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!’

– কার কান্নার কথা এখানে বলা হয়েছে? উদ্ধৃতাংশের বক্তব্য পরিস্ফুট করো।

অথবা, 

“করিতাংশটি কোন্ কবিতার অন্তর্গ? কবি কাকে কাঁদতে নিষেধ করেছেন?

অথবা, 

উদ্ধৃতাংশটি কোন কবিতার অন্তর্গত? কবি কাকে কেন কান্না থামাতে বলেছেন?

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ধানসিঁড়ি নদীর তীরে’ কবিতার অন্তর্গত।

এখানে কবি এক রহস্যময়, কল্পিত ‘তুমি’-র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যিনি হয়তো তাঁর প্রিয়জন, প্রকৃতি, বা প্রতীকী কোনো সত্তা। কবি তাঁকে কাঁদতে নিষেধ করছেন, কারণ তিনি যেন প্রকৃতির সৌন্দর্য ও ধানসিঁড়ি নদীর শান্ত পরিবেশের মাঝে দুঃখ ভুলে যান।

কবিতায় ধানসিঁড়ি নদী এবং তার চারপাশের প্রকৃতি এক নস্টালজিক অনুভূতির সৃষ্টি করে, যেখানে কবি স্মৃতিচারণ করেন এবং প্রিয়জনকে বেদনা থেকে মুক্তির পরামর্শ দেন। অতএব, এখানে কান্নার মাধ্যমে কোনো হারানো অতীত, দুঃখ বা অপূর্ণতা প্রতিফলিত হয়েছে, যা কবি মুছে ফেলতে চান প্রকৃতির সান্ত্বনায়।

প্রশ্ন ২। ‘তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার স্নান চোখ মনে আসে।

পৃথিবীর রাঙা রাজ কন্যাদের মতো সে যে চ’লে গেছে রূপ নিয়ে দূরে; – সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উদ্ধৃত পঙক্তিটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ধানসিঁড়ি নদীর তীরে’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি অতীত স্মৃতিচারণা করেছেন এবং এক অপূর্ব রূপবতী নারীর বিচ্ছেদের ব্যথা প্রকাশ করেছেন।

বিশ্লেষণ: কবি বলেন, “তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার স্নান চোখ মনে আসে।”

 এখানে ‘তুমি’ বলতে কবির প্রিয়জন বা কল্পিত এক নারীর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাঁর কান্নার সুর শুনে কবির মনে পড়ে যায় আরেক নারীর চোখ, যা বেতের-ফলের মতো স্নিগ্ধ ও টলটলে।

পরবর্তী পঙক্তিতে কবি বলেন, “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে।”

 এখানে ‘সে’ বলতে কবির স্মৃতির এক সুন্দরী নারীকে বোঝানো হয়েছে, যিনি রূপের সৌন্দর্যে রাজকন্যার মতো ছিলেন। কিন্তু তিনি কবির জীবন থেকে চিরতরে দূরে চলে গেছেন।

প্রসঙ্গ ও ভাব: এই পঙক্তিগুলোর মাধ্যমে কবি বিচ্ছেদ, স্মৃতি ও সৌন্দর্যের নশ্বরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। কবির মন সেই হারিয়ে যাওয়া রূপসী নারীর কথা স্মরণ করে, যিনি একসময় ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি দূরে চলে গেছেন, হয়তো মৃত্যুর কারণে বা সময়ের প্রবাহে হারিয়ে গেছেন।

এভাবে কবিতায় স্মৃতি, প্রকৃতি এবং বিষাদের এক স্নিগ্ধ মিশ্রণ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। “আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?” – এই উক্তি কার উদ্দেশ্যে? সে যাকে ডেকে আনে তার পরিচয় দাও।

উত্তর:  উক্তিটি কবি জীবনানন্দ দাশৰ কবিতাৰ অংশ। কবিয়ে যেন কাকোবা উদ্দেশ্য কৰি ক'লে, "আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?"

মানে, কবিৰ মনত কোনো এজনী নাৰীৰ স্মৃতি আহি পৰিছে, আৰু তেওঁ সেই স্মৃতিটো আকৌ নতুনকৈ জীয়াই তুলিবলৈ নিষেধ কৰিছে।

যাক ডেকে আনে, তেওঁৰ পৰিচয়: কবিৰ কোনো হাৰাই যোৱা প্ৰেমিকা, যিজন হয়তো মৃত্যুৰ পিছত বা সময়ৰ সোঁতত আঁতৰি গ’ল।

হয়তো সপোন বা কল্পনাত গঢ়ি তোলা কোনো এজনী নাৰী, যাক কবিয়ে মনত পেলাবলৈ নাচাহে, কিন্তু মনত পৰি যায়।

মূল কথা: কবিৰ অন্তৰত স্মৃতি জীয়াই উঠে, আৰু তেওঁ ভাবে— “কিয় আকৌ তাক মনত পেলোৱা? তাক আকৌ উভতি আহিবলৈ কিয় বাধ্য কৰা?”

এয়া কবিৰ নস্টালজিয়া, বিষাদ আৰু বিচ্ছেদৰ অনুভূতিৰ প্ৰকাশ।

প্রশ্ন ৪। “_____ কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা

জাগাতে ভালোবাসে!” – বক্তব্য পরিস্ফুট করো।

অথবা,

– কে, কার উদ্দেশ্যে, কোন প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছেন?

অথবা, 

বক্তব্যটি পরিস্ফুট করো।

উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার একটি অংশ, যেখানে কবি গভীর বিষাদ এবং স্মৃতির যন্ত্রণার কথা ব্যক্ত করেছেন।

বক্তব্যের বিশ্লেষণ:

এখানে কবি একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন— “কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!”

মানে, কোনো ব্যক্তি বা মন কেনো পুরোনো স্মৃতি উস্কাই দিয়ে হৃদয়ের বেদনা পুনরায় জাগাতে চায়?

কে, কার উদ্দেশ্যে, কোন প্রসঙ্গে বলেছেন?

কে বলেছেন? → কবি জীবনানন্দ দাশ।

কার উদ্দেশ্যে বলেছেন? → হয়তো নিজেক উদ্দেশ্যেই কবি কথাটি বলেছেন, কারণ তিনিই বারবার পুরোনো স্মৃতি মনে এনে দুঃখ পাচ্ছেন।

কোন প্রসঙ্গে? → বিচ্ছেদ, নস্টালজিয়া, অতীত স্মৃতি, বা হাৰাই যোৱা কিছুমান মুহূর্তৰ কষ্ট লৈ কবি এই উক্তি কৰিছে।

মূল বক্তব্য:

কবির মনে হয়, কেনো মন অতীতক জীয়াই তুলিবলৈ ভাল পায়? কিয় পুনৰ সেই স্মৃতিৰ কষ্ট মনত আনিবলৈ ওলাই যায়?

এয়া মানৱমনৰ স্বাভাৱিক বৈশিষ্ট্য— আমাৰ মন বহু সময় অতীতৰ দুখ-কষ্টত নিজকে আকৃষ্ট কৰে, যদিও আমি জানো যে তাতে কেবল ব্যথাই থাকে।

এই পঙক্তিটোৰ মাজেৰে কবিয়ে মানৱ হৃদয়ৰ অদ্ভুত আচৰণৰ ওপৰত এক গভীৰ অনুভূতি প্ৰকাশ কৰিছে।

প্রশ্ন ৫। “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চ’লে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;

আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা

জাগাতে ভালোবাসে!”

– কে রূপ নিয়ে দূরে চলে গেছে? কবির বক্তব্য বুঝিয়ে দাও।

অথবা, 

অন্তর্নিহিত ভাব ব্যক্ত করো।

উত্তর:

উদ্ধৃত অংশটি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি একজন হারিয়ে যাওয়া নারীর স্মৃতিকে কেন্দ্র করে নিজের মনোভাব প্রকাশ করেছেন।

কে রূপ নিয়ে দূরে চলে গেছে?

‘সে’ বলতে বোঝানো হয়েছে—

কবির প্রিয়জন বা প্রেমিকা, যিনি কবির জীবন থেকে হারিয়ে গেছেন।

তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন বা সময়ের প্রবাহে দূরে সরে গেছেন।

তিনি এমন একজন নারী, যিনি ছিলেন অপার সৌন্দর্যের অধিকারী, তাই কবি তাঁকে “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো” বলে উল্লেখ করেছেন।

কবির বক্তব্য:

কবি বলতে চান, সেই রূপবতী নারী এখন তাঁর জীবনে নেই। কিন্তু তবুও তাঁর স্মৃতি বারবার ফিরে আসে, যা কবিকে কষ্ট দেয়। তাই তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করেন—

"আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?"

অর্থাৎ, কেনো পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলো? কেনো হারানো অতীতকে মনে করো?

এরপর কবি আবার বলেন—

"কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!"

মানে, কেনো মানুষ তার নিজের মন থেকে পুরোনো কষ্টের কথা তুলে আনে? কেনো সে অতীতের স্মৃতি রক্ষা করে, যা তাকে কষ্ট দেয়?

অন্তর্নিহিত ভাব:

কবিতায় স্মৃতি, বিচ্ছেদ, নস্টালজিয়া ও বিষাদের গভীর অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে।

মানুষের স্বভাবগত প্রবণতা হলো হারিয়ে যাওয়া মানুষ বা অতীতকে স্মরণ করা, যদিও সেটি তাকে কষ্ট দেয়।

কবি বোঝাতে চেয়েছেন, কিছু স্মৃতি হয়তো ভুলে যাওয়াই ভালো, কারণ সেগুলো শুধু দুঃখই বাড়িয়ে তোলে।

এইভাবে কবি মানুষের মনে জমে থাকা অতীতের বেদনা ও স্মৃতির টানাপোড়েনকে তুলে ধরেছেন।

প্রশ্ন ৬। “তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে;”

– উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এই লাইনগুলোর মাধ্যমে কবি তাঁর স্মৃতিচারণা এবং নস্টালজিক অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।

উদ্ধৃতাংশের বিশ্লেষণ:

"তোমার কান্নার সুরে" → এখানে ‘তুমি’ বলতে কবির কোনো প্রিয়জন বা কল্পিত এক নারীকে বোঝানো হয়েছে, যার কান্না কবির মনে পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।

"বেতের-ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে;"

‘তার’ বলতে কবির স্মৃতিতে থাকা একজন হারিয়ে যাওয়া নারীকে বোঝানো হয়েছে।

‘বেতের-ফল’ একধরনের টলটলে ও ফ্যাকাশে রঙের ফল, যা কবি এখানে সেই নারীর বিষণ্ন, ম্লান চোখের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

অর্থাৎ, নারীর চোখ ছিল বিষাদময় ও আবেগঘন, যেন কান্না ভেজা দৃষ্টি।

উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য: কবি যখন ‘তুমি’র কান্না শুনেন, তখন তাঁর মনে পড়ে যায় একজন হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনের বিষণ্ন চোখ।

এই অংশে স্মৃতি, বিচ্ছেদ ও বিষাদের অনুভূতি গভীরভাবে ফুটে উঠেছে।

কবি বোঝাতে চান যে অতীত কখনো মুছে যায় না, বর্তমানের অনুভূতি সেই পুরোনো স্মৃতি আবার জাগিয়ে তোলে।

মূল ভাব: এই লাইনগুলোর মাধ্যমে কবি স্মৃতির গভীরতাকে প্রকাশ করেছেন। কোনো পরিচিত কণ্ঠস্বর বা আবেগ (যেমন কান্না) মানুষকে সহজেই পুরোনো দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। বিষাদময় স্মৃতি ও বিচ্ছেদ কবিতাটির কেন্দ্রীয় ভাব, যা এই উদ্ধৃতাংশে স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৭। ‘হায় চিল’ কবিতায় চিলের উদ্দেশ্যে কবির আবেদন গদ্যে ব্যাখ্যা করো। অথবা, ‘হায় চিল’ কবিতায় কবি চিলকে কান্না থামাতে কেন বলেছেন আলোচনা করো।

উত্তর: ‘হায় চিল’ কবিতায় কবির আবেদন

‘হায় চিল’ কবিতায় কবি চিলের ডাকে এক গভীর বিষাদ ও বেদনাবোধ খুঁজে পান। চিলের করুণ ডাক তাঁর হৃদয়ে বেদনার সুর তোলে, যা তাঁকে ব্যথিত করে। তাই কবি চিলকে কান্না থামানোর জন্য আহ্বান জানান।

কবি চিলকে কান্না থামাতে কেন বলেছেন?

  • কবি মনে করেন, চিলের ডাক প্রকৃতির মধ্যে এক শূন্যতা ও বিষাদের প্রতিচ্ছবি
  • তিনি হয়তো নিজের ব্যক্তিগত দুঃখ ও একাকীত্বের সঙ্গে চিলের ডাককে মিলিয়ে দেখেন।
  • চিলের এই কান্নারত ডাক তাঁকে অতীতের বেদনাদায়ক স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়

তাই কবি যেন করুণভাবে অনুরোধ করেন, “হায় চিল, আর কেঁদো না!”
কারণ, এই কান্না তাঁর মনে গভীর কষ্টের জন্ম দেয়।

মূল ভাব:

‘হায় চিল’ কবিতায় কবি চিলের ডাকে প্রকৃতির শূন্যতা ও মানবমনের একাকীত্বকে প্রতিফলিত করেছেন। চিল যেন এক বিরহী আত্মা, যাকে কবি শান্ত হতে বলেন। এটি প্রকৃতির একটি সাধারণ দৃশ্য হলেও, কবির দৃষ্টিতে এটি বিরহ, শূন্যতা এবং মানবজীবনের বেদনাকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করে

প্রশ্ন ৮। ‘পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে। – পংক্তিটি কোন্ কবিতা থেকে উদ্ধৃত হয়েছে? এখানে ‘সে’ বলতে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে? পংক্তিটির নিহিতার্থ কী তা লেখো।

উত্তর: পংক্তিটির উৎস:

উদ্ধৃত অংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

‘সে’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

  • এখানে ‘সে’ বলতে কবির কোনো প্রিয়জন বা অতীতে হারিয়ে যাওয়া এক নারীকে বোঝানো হয়েছে
  • সেই নারী হয়তো কবির প্রেমিকা, জননী, বা কোনো স্মৃতিময় রূপবতী নারী, যিনি আজ আর কবির জীবনে নেই।
  • কবি তাঁকে “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো” বলে উল্লেখ করেছেন, অর্থাৎ তিনি ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী, রাজকন্যাদের মতো অভিজাত ও মোহময়।

পংক্তিটির নিহিতার্থ:

  • কবি বলতে চান, সেই নারী এখন তাঁর জীবন থেকে চিরতরে দূরে চলে গেছেন
  • ‘রূপ নিয়ে দূরে’— এই বাক্যের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, তিনি শুধু দেহতই নহয়, সৌন্দর্য আৰু স্মৃতি হিচাপে কবিৰ অন্তৰৰ পৰা আঁতৰি গৈছে
  • এটি কবির বিচ্ছেদ ও শূন্যতার অনুভূতি প্রকাশ করে।
  • কবি যেন বিষাদভরে স্বীকার করছেন যে সময় মানুষের কাছ থেকে প্রিয়জনদের কেড়ে নেয়, শুধুমাত্র স্মৃতি রেখে যায়

মূল ভাব:

এই পংক্তিতে কবি বিচ্ছেদ, স্মৃতি ও সৌন্দর্যের নশ্বরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়— সৌন্দর্য, প্রেম, সম্পর্ক, সবই একদিন হারিয়ে যায়, কেবল স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়।

প্রশ্ন ৯। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো। ‘‘আবার তাহারে কেন ডেকে আনো ? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে।”

উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এই পংক্তিতে কবি স্মৃতি, বিচ্ছেদ ও মানসিক যন্ত্রণার গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।

সন্দর্ভ (প্রসঙ্গ):

কবিতায় কবি এমন একজন হারিয়ে যাওয়া মানুষের কথা বলছেন, যিনি একসময় তাঁর জীবনে ছিলেন, কিন্তু এখন কেবল স্মৃতি হয়ে রয়েছেন। কবির মন তাঁকে বারবার স্মরণ করতে চায়, কিন্তু সেই স্মৃতি তাঁর মনে কেবল দুঃখ ও বিষাদ নিয়ে আসে। তাই তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করেন—

“আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?”
অর্থাৎ, কেনো আমি বা আমার মন সেই পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তুলি?

ব্যাখ্যা:

  • ‘তাহারে’ বলতে বোঝানো হয়েছে একজন হারিয়ে যাওয়া নারীকে, যিনি হয়তো কবির প্রেমিকা বা প্রিয়জন ছিলেন।
  • ‘আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?’— কবি যেন নিজেকেই এই প্রশ্ন করছেন, কেন তিনি অতীতকে ভুলতে পারছেন না
  • ‘কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!’—
    • এখানে কবি বলতে চান, মানুষ কেনো নিজের পুরোনো দুঃখগুলোকেই বারবার মনে করে?
    • কেন মানুষ নিজেই নিজের হৃদয়ের ঘা আরও গভীর করে তোলে?
    • এই লাইন মানবমনের এক স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যকেই তুলে ধরে— মানুষ অতীতের স্মৃতিগুলোকে ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না, বরং সেই স্মৃতিগুলোকে আরও বেশি করে স্মরণ করে, যা কেবল কষ্টের সৃষ্টি করে।

নিহিত ভাব:

  • এই পংক্তিতে কবি বিচ্ছেদ, স্মৃতি ও অতীতের দুঃখের চক্র দেখিয়েছেন।
  • মানুষের স্বভাবই এমন যে, সে নিজেই নিজের কষ্ট জাগিয়ে তোলে
  • কবি একদিকে অতীতের টান অনুভব করেন, আবার অন্যদিকে মনে করেন যে সেই স্মৃতি তাঁকে আরও কষ্ট দিচ্ছে
  • এটি বিরহ ও স্মৃতির গভীর বেদনাকে ফুটিয়ে তোলে, যা জীবনানন্দ দাশের কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

মূল বক্তব্য:

এই পংক্তির মাধ্যমে কবি দেখিয়েছেন যে অতীতের প্রিয় স্মৃতিগুলো যতই মূল্যবান হোক না কেন, সেগুলো অনেক সময় আমাদের মনে দুঃখের সৃষ্টি করে। তাই তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করেন— কেন সেই স্মৃতি বারবার মনে করতে চাই? কেন পুরোনো ক্ষত নতুন করে জাগাতে চাই?

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ 

 প্রশ্ন ১। “জীবনানন্দের ‘হায় চিল’ কবিতাটিতে বিষণ্ণতার এক ম্লান আলো ছাড়াইয়া আছে।” – এই উক্তিটির আলোকে কবিতাটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: প্রশ্ন:

"জীবনানন্দের ‘হায় চিল’ কবিতাটিতে বিষণ্ণতার এক ম্লান আলো ছাড়াইয়া আছে।"— এই উক্তিটির আলোকে কবিতাটি বিশ্লেষণ করো।

ভূমিকা:

জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতম কবিদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি, নিঃসঙ্গতা, বিষাদ ও স্মৃতির গভীর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তাঁর ‘হায় চিল’ কবিতাটি বিষণ্ণতা, নিঃসঙ্গতা এবং এক ধরনের শূন্যতার প্রতিচ্ছবি।

এই কবিতার মূল ভাব একটি চিলের ডাকের সঙ্গে কবির মানসিক অবস্থার সংযোগ। কবির মনে হয়, চিলের করুণ ডাক যেন প্রকৃতির নিস্তব্ধতা ভেদ করে এক গভীর একাকীত্ব ও বিষাদময় অনুভূতি জাগিয়ে তোলে

কবিতার বিশ্লেষণ:

১. প্রকৃতি ও বিষাদময় পরিবেশ

  • কবিতার মূল আবহ একটি ম্লান, বিষাদময় প্রকৃতির ছবি
  • কবি চিলের ডাকের মধ্যে একাকীত্ব ও হতাশার প্রতিধ্বনি শুনতে পান।
  • এটি কবির অন্তর্গত যন্ত্রণা ও মানসিক বিচ্ছিন্নতার প্রতিফলন

২. চিলের প্রতীকী ব্যঞ্জনা

  • ‘চিল’ এখানে কেবল এক পাখি নয়, এটি একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতার প্রতীক
  • চিল একাকী আকাশে ওড়ে, তার ডাক শূন্য আকাশে হারিয়ে যায়— এটি কবির নিজের অবস্থারই রূপক
  • চিলের শূন্য আকাশে ওড়া এবং বারবার কেঁদে ওঠা কবির মনে বিষাদের সুর তুলে ধরে।

৩. স্মৃতি ও নস্টালজিয়া

  • কবি মনে করেন, চিলের ডাক যেন পুরোনো স্মৃতির মতো, যা মনের গভীর থেকে উঠে আসে এবং দুঃখ সৃষ্টি করে
  • চিলের কান্না কবিকে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়

৪. কবির আহ্বান: কান্না থামাও!

  • কবি যেন করুণভাবে বলেন, “হায় চিল, আর কেঁদো না!”
  • কবি বোঝাতে চান, এই বেদনাময় ডাক যেন থামে, কারণ এটি কেবল তার মনে আরও দুঃখের সৃষ্টি করছে
  • এটি আসলে কবির নিজের মনের আর্তনাদ— তিনি নিজেকেও বলতে চান, “অতীতের কষ্ট ভুলে যাও, আর কেঁদো না।”

নিহিত ভাব:

  • ‘হায় চিল’ কবিতায় বিরহ, নিঃসঙ্গতা, স্মৃতি ও অতীতের ব্যথা ফুটে উঠেছে।
  • কবির চারপাশের নিঃশব্দ প্রকৃতি ও চিলের ডাক একসাথে মিশে এক বিষাদময় চিত্র সৃষ্টি করেছে
  • কবিতাটিতে নিরাশা, নৈরাশ্য এবং অতীতের প্রতি কবির এক গভীর আকুলতা ও হতাশা প্রকাশ পেয়েছে।

উপসংহার:

জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতি ও মানুষের মনোবিশ্ব একাকার হয়ে যায়। ‘হায় চিল’ কবিতাটি তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিষাদময় কবিতাগুলোর একটি, যেখানে একটি চিলের ডাকের মধ্যে কবি নিজের একাকীত্ব ও হারিয়ে যাওয়া দিনের প্রতিধ্বনি শুনতে পান

এই কবিতার প্রতিটি ছত্রে বিষণ্ণতার এক ম্লান আলো ছড়িয়ে আছে, যা পাঠকের মনে এক গভীর বেদনাময় অনুভূতি সৃষ্টি করে

প্রশ্ন ২। ‘হায় চিল’ কবিতাটির নামকরণের তাৎপর্য বিচার করো।

উত্তর:  ভূমিকা:

জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম আধুনিক ও প্রতীকবাদী কবি। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি, নিঃসঙ্গতা, বিষাদ ও স্মৃতির গভীরতা প্রতিফলিত হয়। ‘হায় চিল’ কবিতাটির নামকরণও প্রতীকী ও অর্থবহ, যা কবিতার মূল ভাব ও আবহকে তুলে ধরে।

নামকরণের তাৎপর্য:

১. ‘হায়’ শব্দের ব্যঞ্জনা:

‘হায়’ শব্দটি সাধারণত আক্ষেপ, দুঃখ বা যন্ত্রণার প্রকাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এখানে ‘হায়’ বলতে বোঝানো হয়েছে কবির মনের গভীর বেদনা ও নিঃসঙ্গতার অনুভূতি।

এটি এমন এক আর্তনাদ, যেখানে কবি যেন প্রকৃতির প্রতিটি ধ্বনিতে নিজের দুঃখের প্রতিধ্বনি খুঁজে পান।

2. ‘চিল’ পাখির প্রতীকী অর্থ:

চিল একাকী শূন্য আকাশে ওড়ে এবং তার ডাক এক গভীর বিষণ্ণতা ও শূন্যতার বার্তা বহন করে।

এটি বিচ্ছেদ, একাকীত্ব ও অন্তর্গত বেদনার প্রতীক।

কবির জীবনেও একাকীত্ব ও নৈরাশ্য বিরাজমান, যা চিলের একাকী ওড়ার সাথে মিলিয়ে দেখা যায়।

৩. কবিতার ভাবের সাথে নামের সম্পর্ক:

পুরো কবিতায় চিলের কান্নার মতো ডাক এক অজানা বিষাদের অনুভূতি সৃষ্টি করে।

কবি নিজেকে ও চিলকে একইসঙ্গে যুক্ত করেন— দুজনেই যেন একাকী, নিঃসঙ্গ ও কষ্টভোগী।

তাই ‘হায় চিল’ নামটি কবিতার গভীর বিষাদময় আবহকে ফুটিয়ে তোলে।

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ 

 প্রশ্ন ১। ‘হায় চিল’ কবিতাটির সারমর্ম লেখো।

উত্তর: ‘হায় চিল’ কবিতার সারমর্ম:

জীবনানন্দ দাশের ‘হায় চিল’ কবিতাটি এক গভীর বিষাদময়তা, নিঃসঙ্গতা এবং হারানোর বেদনার প্রতিচিত্র। এই কবিতায় একটি চিলের কান্নার মতো ডাকের মাধ্যমে কবির মনোবেদনা ও একাকীত্ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে

কবি প্রকৃতির নিস্তব্ধতার মাঝে একটি চিলের করুণ ডাক শুনতে পান। চিল একাকী আকাশে ওড়ে, তার ডাক যেন শূন্যতা ও দুঃখের বার্তা বহন করে। কবির মনে হয়, চিলের সেই কান্না যেন তাঁর নিজের অন্তরের আর্তনাদের প্রতিধ্বনি

কবি চিলকে বলেন, “আর কেঁদো না”— এই বাক্যের মাধ্যমে তিনি যেন নিজেকেও একই কথা বলছেন। তিনি অতীতের স্মৃতির বোঝা থেকে মুক্ত হতে চান, কিন্তু পারেন না। চিলের ডাক তাঁর মনের অতীতের ব্যথাকে জাগিয়ে তোলে, ঠিক যেমন পুরোনো স্মৃতিগুলো মানুষের মনে দুঃখ সৃষ্টি করে।

অতএব, এই কবিতার মাধ্যমে কবি নিঃসঙ্গতা, বিচ্ছেদ ও বেদনার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। চিল এখানে শুধু একটি পাখি নয়, বরং কবির মনের শূন্যতা ও অতীতের দুঃখের প্রতীক

প্রশ্ন ২। ‘হায় চিল’ কবিতার মধ্যে কবির প্রকৃতি চেতনার যে পরিচয় পাওয়া যায় তা আলোচনা করো।

উত্তর: ‘হায় চিল’ কবিতায় কবির প্রকৃতি চেতনা

জীবনানন্দ দাশ বাংলা কবিতায় প্রকৃতির নিস্তব্ধতা, রহস্যময়তা এবং বিষাদময় রূপ অনন্যভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি কেবল দৃশ্যমান প্রকৃতি নয়, এটি মানুষের মানসিক অবস্থার প্রতিফলনও বটে। ‘হায় চিল’ কবিতায়ও প্রকৃতির সঙ্গে কবির অনুভূতি একাকার হয়ে গেছে।

১. প্রকৃতি ও কবির মানসিক অবস্থা কবিতার পরিবেশ নিস্তব্ধ ও বিষণ্ণ, যেখানে চিলের করুণ ডাক ধ্বনিত হচ্ছে। চিলের কান্নার মতো ডাক প্রকৃতির নিস্তব্ধতাকে ভেঙে এক শূন্যতা ও একাকীত্বের অনুভূতি সৃষ্টি করে। এই নিস্তব্ধ ও বিষণ্ণ প্রকৃতির মধ্যে কবি নিজের মনের একাকীত্ব ও বেদনা খুঁজে পান।

২. চিলের ডাক ও প্রকৃতির প্রতীকী ব্যবহার

‘চিল’ এখানে প্রকৃতির একটি সাধারণ উপাদান হলেও এটি কবির জন্য এক গভীর প্রতীক। এটি একাকীত্ব, শূন্যতা ও হারানোর বেদনাকে প্রকাশ করে। চিলের ডাক যেন অতীতের স্মৃতির মতো, যা মানুষ ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না। কবি চিলকে বলেন, “আর কেঁদো না”— যা প্রকৃতপক্ষে তাঁর নিজের মনের অতীতের দুঃখ ভুলে যাওয়ার চেষ্টা।

৩. প্রকৃতির সঙ্গে আত্মার সংযোগ

জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতি মানব-মন ও অনুভূতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। প্রকৃতি এখানে শুধুমাত্র চারপাশের দৃশ্য নয়, এটি মানুষের আবেগ ও যন্ত্রণার প্রতিফলন। কবি প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে নিজের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

৪. প্রকৃতির বিষণ্ণ রূপের চিত্রায়ন

কবিতায় প্রকৃতি উজ্জ্বল ও আনন্দময় নয়, বরং একাকী, বিষাদগ্রস্ত ও নিঃসঙ্গ। চিলের ডাক যেন সমস্ত প্রকৃতির নিস্তব্ধতাকে আরও বেশি গভীর ও করুণ করে তোলে। কবি প্রকৃতির এই দুঃখময় রূপের মাধ্যমে নিজের অন্তরের যন্ত্রণা ফুটিয়ে তুলেছেন।

উপসংহার:

‘হায় চিল’ কবিতায় প্রকৃতি কবির মানসিক অবস্থার প্রতিফলন হিসেবে কাজ করেছে। চিলের কান্নার মতো ডাক প্রকৃতির একটি সাধারণ ঘটনা হলেও এটি কবির জন্য একাকীত্ব, নিঃসঙ্গতা ও অতীতের স্মৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতি চেতনা এখানে স্পষ্ট— প্রকৃতি তাঁর কবিতায় কেবল একটি বাহ্যিক বাস্তবতা নয়, এটি তাঁর অনুভূতির এক গভীর প্রতিফলন।