Chapter 6 -
হায় চিল
প্রশ্ন ১। ‘হায়চিল’ কবিতাটির কবির নাম কী?
উত্তর: জীবনানন্দ দাশ।
প্রশ্ন ২। ‘হায়চিল’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: ‘হায়চিল’ কবিতাটি ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
প্রশ্ন ৩। ‘হায় চিল’ কবিতায় ‘চিল’ কীসের প্রতীক?
উত্তর: কবিতায় ‘চিল’ হলো বেদনা ও শূন্যতার প্রতীক, যা কবির মনোজগতের একাকীত্ব এবং জীবনের কষ্টের প্রতিফলন।
প্রশ্ন ৪। হায়, চিল _____ ডানার চিল। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তর: সোনালি ডানার চিল।
প্রশ্ন ৫। তুমি আর উড়ে উড়ে কেঁদো নাকো _____ নদীটির পাশে। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তর: ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।
প্রশ্ন ৬। ‘সোনালি ডানার চিল’ কোন্ চিলকে বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘সোনালি ডানার চিল’ কবির প্রিয়ার প্রতীক, যার মাধ্যমে কবি তাঁর হারানো প্রেমিকাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
প্রশ্ন ৭। ধানসিঁড়ি কী?
উত্তর: ধানসিঁড়ি একটি নদী, যা কবির কল্পনায় স্থান পেয়েছে।
প্রশ্ন ৮। ‘ভিজে মেঘের দুপুরে’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ‘ভিজে মেঘের দুপুরে’ বলতে গা dark ় মেঘমালার ভেতরে অন্ধকার এক মনোভাব এবং বেদনার পরিবেশকে বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন ৯। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে !’- কবি কাকে কাঁদতে বারণ করেছেন?
উত্তর: কবি তাঁর প্রিয়াকে কাঁদতে বারণ করেছেন।
প্রশ্ন ১০। কে কবির হৃদয়ে বেদনা জাগিয়ে তুলেছে?
উত্তর: কবির হৃদয়ে হারানো প্রিয়ার স্মৃতি বেদনা জাগিয়ে তুলেছে।
প্রশ্ন ১১। কবি চিলকে কোন নদীর পাশে উড়ে উড়ে কাঁদতে বারণ করেছেন?
উত্তর: কবি চিলকে ধানসিঁড়ি নদীর পাশে উড়ে উড়ে কাঁদতে বারণ করেছেন।
প্রশ্ন ১২। “_____কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!”
উত্তর: কবি হারানো প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেছেন।
প্রশ্ন ১৩। ধানসিঁড়ি নদীর পাশে উড়ন্ত চিলটির ডানার রং কী ছিল?
উত্তর: চিলটির ডানার রং ছিল সোনালি।
প্রশ্ন ১৪। ধানসিঁড়ি কী?
উত্তর: ধানসিঁড়ি একটি নদী, যা কবির কল্পনায় স্থান পেয়েছে এবং এটি এখানে একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রশ্ন ১৫। চিলের কান্না কবিকে কী মনে করিয়ে দেয়?
উত্তর: চিলের কান্না কবিকে হারানো প্রেমিকাকে মনে করিয়ে দেয়, যার কান্নার সুর তার মনে গাঁথা।
প্রশ্ন ১৬। রাঙা রাজকন্যা কারা?
উত্তর: রাঙা রাজকন্যা হলেন কবির প্রিয় বা হারানো প্রেমিকা, যার প্রতি কবির গভীর অনুভূতি রয়েছে।
প্রশ্ন ১৭। “তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে।”
উত্তর: এই পংক্তির মধ্যে কবি তাঁর প্রিয়ার ম্লান চোখের কথা বলেছেন।
প্রশ্ন ১৮। কবিতার হারানো প্রিয়ার চোখকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তর: কবি হারানো প্রিয়ার চোখকে বেতের ফলের মতন ম্লান চোখের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রশ্ন ১৯। কবি জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হলো ‘বনলতা সেন’।
প্রশ্ন ২০। কবি জীবনানন্দ দাশকে কখন একাদেমী পুরস্কার দেওয়া হয়?
উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশকে ১৯৫৪ সালে সাহিত্য একাদেমী পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ২১। জীবনানন্দ দাশ কত সালে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন?
উত্তর: ১৯৫৫ সালে জীবনানন্দ দাশ সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
প্রশ্ন ৪। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!” – কবি কাকে, কোথায় কাঁদতে বারণ করেছেন?
উত্তর: কবি এখানে চিলকে কাঁদতে বারণ করেছেন, যাকে তিনি ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে উড়ে-উড়ে কাঁদতে বলছেন।
প্রশ্ন ৫। “আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?”- এই উক্তি কার উদ্দেশ্যে? ‘তাহারে’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: "আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?" এই উক্তিটি প্রিয়ার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। এখানে 'তাহারে' বলতে কবি তার হারানো প্রিয়াকে বোঝাতে চেয়েছেন, যাকে তিনি আর ফিরে পেতে চান না বা যাকে পুনরায় ফিরে আনতে চাচ্ছেন না।
প্রশ্ন ৬। “কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে।”
– কোন কবিতার অংশ? এখানে কার হৃদয়ের বেদনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: "কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে।" এই উক্তিটি ‘হায়চিল’ কবিতার অংশ। এখানে কবির হৃদয়ের বেদনার কথা বলা হয়েছে, যিনি তার হারানো প্রিয়ার জন্য বেদনায় ভারাক্রান্ত।
প্রশ্ন ৭। চিলের কান্নায় কবির মধ্যে কোন্ অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে?
উত্তর: চিলের কান্নায় কবির মধ্যে বেদনা ও শূন্যতার অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। চিলের কান্নার সুর কবিকে তার হারানো প্রিয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যা তার হৃদয়ে গভীর বেদনা ও একাকীত্বের সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন ৮। “তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।”
– পংক্তিটি কোন কবিতার? কবির নাম কী?
উত্তর: এই পংক্তিটি ‘হায়চিল’ কবিতার অংশ। কবির নাম জীবনানন্দ দাশ।
প্রশ্ন ৯। টীকা লেখো:
১। ধানসিঁড়ি।
উত্তর: ধানসিঁড়ি:
ধানসিঁড়ি হলো এক ধরনের জলাশয় বা নদী যেখানে প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদিত হয়। এটি বিশেষভাবে গ্রামের পল্লী অঞ্চলে দেখা যায়, যেখানে জলাশয়গুলির পাড়ে ধান চাষ করা হয়। জীবনানন্দ দাশের ‘হায়চিল’ কবিতায় ধানসিঁড়ি নদীটির উল্লেখ করা হয়েছে, যা একটি সাধারণ কৃষি অঞ্চলের প্রতীক। কবিতায় ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে চিলের কান্নার মাধ্যমে একটি নস্টালজিক এবং দুঃখভারী আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি কাব্যের শোক এবং বেদনার অনুভূতির প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ১০। “এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে।”
– ‘ধানসিঁড়ি নদী’ কোথায় অবস্থিত? এখানে ‘তুমি’ কে?
উত্তর: ‘ধানসিঁড়ি নদী’ বাংলাদেশে অবস্থিত।
এখানে ‘তুমি’ কবির প্রিয়জন বা একজন কল্পিত চরিত্র, যার প্রতি কবি সান্ত্বনাসূচক আহ্বান জানাচ্ছেন।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!’
– কার কান্নার কথা এখানে বলা হয়েছে? উদ্ধৃতাংশের বক্তব্য পরিস্ফুট করো।
অথবা,
“করিতাংশটি কোন্ কবিতার অন্তর্গ? কবি কাকে কাঁদতে নিষেধ করেছেন?
অথবা,
উদ্ধৃতাংশটি কোন কবিতার অন্তর্গত? কবি কাকে কেন কান্না থামাতে বলেছেন?
উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ধানসিঁড়ি নদীর তীরে’ কবিতার অন্তর্গত।
এখানে কবি এক রহস্যময়, কল্পিত ‘তুমি’-র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যিনি হয়তো তাঁর প্রিয়জন, প্রকৃতি, বা প্রতীকী কোনো সত্তা। কবি তাঁকে কাঁদতে নিষেধ করছেন, কারণ তিনি যেন প্রকৃতির সৌন্দর্য ও ধানসিঁড়ি নদীর শান্ত পরিবেশের মাঝে দুঃখ ভুলে যান।
কবিতায় ধানসিঁড়ি নদী এবং তার চারপাশের প্রকৃতি এক নস্টালজিক অনুভূতির সৃষ্টি করে, যেখানে কবি স্মৃতিচারণ করেন এবং প্রিয়জনকে বেদনা থেকে মুক্তির পরামর্শ দেন। অতএব, এখানে কান্নার মাধ্যমে কোনো হারানো অতীত, দুঃখ বা অপূর্ণতা প্রতিফলিত হয়েছে, যা কবি মুছে ফেলতে চান প্রকৃতির সান্ত্বনায়।
প্রশ্ন ২। ‘তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার স্নান চোখ মনে আসে।
পৃথিবীর রাঙা রাজ কন্যাদের মতো সে যে চ’লে গেছে রূপ নিয়ে দূরে; – সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উদ্ধৃত পঙক্তিটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘ধানসিঁড়ি নদীর তীরে’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি অতীত স্মৃতিচারণা করেছেন এবং এক অপূর্ব রূপবতী নারীর বিচ্ছেদের ব্যথা প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষণ: কবি বলেন, “তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার স্নান চোখ মনে আসে।”
এখানে ‘তুমি’ বলতে কবির প্রিয়জন বা কল্পিত এক নারীর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাঁর কান্নার সুর শুনে কবির মনে পড়ে যায় আরেক নারীর চোখ, যা বেতের-ফলের মতো স্নিগ্ধ ও টলটলে।
পরবর্তী পঙক্তিতে কবি বলেন, “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চলে গেছে রূপ নিয়ে দূরে।”
এখানে ‘সে’ বলতে কবির স্মৃতির এক সুন্দরী নারীকে বোঝানো হয়েছে, যিনি রূপের সৌন্দর্যে রাজকন্যার মতো ছিলেন। কিন্তু তিনি কবির জীবন থেকে চিরতরে দূরে চলে গেছেন।
প্রসঙ্গ ও ভাব: এই পঙক্তিগুলোর মাধ্যমে কবি বিচ্ছেদ, স্মৃতি ও সৌন্দর্যের নশ্বরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। কবির মন সেই হারিয়ে যাওয়া রূপসী নারীর কথা স্মরণ করে, যিনি একসময় ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি দূরে চলে গেছেন, হয়তো মৃত্যুর কারণে বা সময়ের প্রবাহে হারিয়ে গেছেন।
এভাবে কবিতায় স্মৃতি, প্রকৃতি এবং বিষাদের এক স্নিগ্ধ মিশ্রণ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্ন ৩। “আবার তাহারে কেন ডেকে আনো?” – এই উক্তি কার উদ্দেশ্যে? সে যাকে ডেকে আনে তার পরিচয় দাও।
উত্তর: উক্তিটি কবি জীবনানন্দ দাশৰ কবিতাৰ অংশ। কবিয়ে যেন কাকোবা উদ্দেশ্য কৰি ক'লে, "আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?"
মানে, কবিৰ মনত কোনো এজনী নাৰীৰ স্মৃতি আহি পৰিছে, আৰু তেওঁ সেই স্মৃতিটো আকৌ নতুনকৈ জীয়াই তুলিবলৈ নিষেধ কৰিছে।
যাক ডেকে আনে, তেওঁৰ পৰিচয়: কবিৰ কোনো হাৰাই যোৱা প্ৰেমিকা, যিজন হয়তো মৃত্যুৰ পিছত বা সময়ৰ সোঁতত আঁতৰি গ’ল।
হয়তো সপোন বা কল্পনাত গঢ়ি তোলা কোনো এজনী নাৰী, যাক কবিয়ে মনত পেলাবলৈ নাচাহে, কিন্তু মনত পৰি যায়।
মূল কথা: কবিৰ অন্তৰত স্মৃতি জীয়াই উঠে, আৰু তেওঁ ভাবে— “কিয় আকৌ তাক মনত পেলোৱা? তাক আকৌ উভতি আহিবলৈ কিয় বাধ্য কৰা?”
এয়া কবিৰ নস্টালজিয়া, বিষাদ আৰু বিচ্ছেদৰ অনুভূতিৰ প্ৰকাশ।
প্রশ্ন ৪। “_____ কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা
জাগাতে ভালোবাসে!” – বক্তব্য পরিস্ফুট করো।
অথবা,
– কে, কার উদ্দেশ্যে, কোন প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছেন?
অথবা,
বক্তব্যটি পরিস্ফুট করো।
উত্তর: উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার একটি অংশ, যেখানে কবি গভীর বিষাদ এবং স্মৃতির যন্ত্রণার কথা ব্যক্ত করেছেন।
বক্তব্যের বিশ্লেষণ:
এখানে কবি একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন— “কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!”
মানে, কোনো ব্যক্তি বা মন কেনো পুরোনো স্মৃতি উস্কাই দিয়ে হৃদয়ের বেদনা পুনরায় জাগাতে চায়?
কে, কার উদ্দেশ্যে, কোন প্রসঙ্গে বলেছেন?
কে বলেছেন? → কবি জীবনানন্দ দাশ।
কার উদ্দেশ্যে বলেছেন? → হয়তো নিজেক উদ্দেশ্যেই কবি কথাটি বলেছেন, কারণ তিনিই বারবার পুরোনো স্মৃতি মনে এনে দুঃখ পাচ্ছেন।
কোন প্রসঙ্গে? → বিচ্ছেদ, নস্টালজিয়া, অতীত স্মৃতি, বা হাৰাই যোৱা কিছুমান মুহূর্তৰ কষ্ট লৈ কবি এই উক্তি কৰিছে।
মূল বক্তব্য:
কবির মনে হয়, কেনো মন অতীতক জীয়াই তুলিবলৈ ভাল পায়? কিয় পুনৰ সেই স্মৃতিৰ কষ্ট মনত আনিবলৈ ওলাই যায়?
এয়া মানৱমনৰ স্বাভাৱিক বৈশিষ্ট্য— আমাৰ মন বহু সময় অতীতৰ দুখ-কষ্টত নিজকে আকৃষ্ট কৰে, যদিও আমি জানো যে তাতে কেবল ব্যথাই থাকে।
এই পঙক্তিটোৰ মাজেৰে কবিয়ে মানৱ হৃদয়ৰ অদ্ভুত আচৰণৰ ওপৰত এক গভীৰ অনুভূতি প্ৰকাশ কৰিছে।
প্রশ্ন ৫। “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চ’লে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;
আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা
জাগাতে ভালোবাসে!”
– কে রূপ নিয়ে দূরে চলে গেছে? কবির বক্তব্য বুঝিয়ে দাও।
অথবা,
অন্তর্নিহিত ভাব ব্যক্ত করো।
উত্তর:
উদ্ধৃত অংশটি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি একজন হারিয়ে যাওয়া নারীর স্মৃতিকে কেন্দ্র করে নিজের মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
কে রূপ নিয়ে দূরে চলে গেছে?
‘সে’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
কবির প্রিয়জন বা প্রেমিকা, যিনি কবির জীবন থেকে হারিয়ে গেছেন।
তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন বা সময়ের প্রবাহে দূরে সরে গেছেন।
তিনি এমন একজন নারী, যিনি ছিলেন অপার সৌন্দর্যের অধিকারী, তাই কবি তাঁকে “পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো” বলে উল্লেখ করেছেন।
কবির বক্তব্য:
কবি বলতে চান, সেই রূপবতী নারী এখন তাঁর জীবনে নেই। কিন্তু তবুও তাঁর স্মৃতি বারবার ফিরে আসে, যা কবিকে কষ্ট দেয়। তাই তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করেন—
"আবার তাহাকে কেন ডেকে আনো?"
অর্থাৎ, কেনো পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলো? কেনো হারানো অতীতকে মনে করো?
এরপর কবি আবার বলেন—
"কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!"
মানে, কেনো মানুষ তার নিজের মন থেকে পুরোনো কষ্টের কথা তুলে আনে? কেনো সে অতীতের স্মৃতি রক্ষা করে, যা তাকে কষ্ট দেয়?
অন্তর্নিহিত ভাব:
কবিতায় স্মৃতি, বিচ্ছেদ, নস্টালজিয়া ও বিষাদের গভীর অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে।
মানুষের স্বভাবগত প্রবণতা হলো হারিয়ে যাওয়া মানুষ বা অতীতকে স্মরণ করা, যদিও সেটি তাকে কষ্ট দেয়।
কবি বোঝাতে চেয়েছেন, কিছু স্মৃতি হয়তো ভুলে যাওয়াই ভালো, কারণ সেগুলো শুধু দুঃখই বাড়িয়ে তোলে।
এইভাবে কবি মানুষের মনে জমে থাকা অতীতের বেদনা ও স্মৃতির টানাপোড়েনকে তুলে ধরেছেন।
প্রশ্ন ৬। “তোমার কান্নার সুরে বেতের-ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে;”
– উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি জীবনানন্দ দাশের "ধানসিঁড়ি নদীর তীরে" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এই লাইনগুলোর মাধ্যমে কবি তাঁর স্মৃতিচারণা এবং নস্টালজিক অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
উদ্ধৃতাংশের বিশ্লেষণ:
"তোমার কান্নার সুরে" → এখানে ‘তুমি’ বলতে কবির কোনো প্রিয়জন বা কল্পিত এক নারীকে বোঝানো হয়েছে, যার কান্না কবির মনে পুরোনো স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।
"বেতের-ফলের মতন তার ম্লান চোখ মনে আসে;"
‘তার’ বলতে কবির স্মৃতিতে থাকা একজন হারিয়ে যাওয়া নারীকে বোঝানো হয়েছে।
‘বেতের-ফল’ একধরনের টলটলে ও ফ্যাকাশে রঙের ফল, যা কবি এখানে সেই নারীর বিষণ্ন, ম্লান চোখের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
অর্থাৎ, নারীর চোখ ছিল বিষাদময় ও আবেগঘন, যেন কান্না ভেজা দৃষ্টি।
উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য: কবি যখন ‘তুমি’র কান্না শুনেন, তখন তাঁর মনে পড়ে যায় একজন হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনের বিষণ্ন চোখ।
এই অংশে স্মৃতি, বিচ্ছেদ ও বিষাদের অনুভূতি গভীরভাবে ফুটে উঠেছে।
কবি বোঝাতে চান যে অতীত কখনো মুছে যায় না, বর্তমানের অনুভূতি সেই পুরোনো স্মৃতি আবার জাগিয়ে তোলে।
মূল ভাব: এই লাইনগুলোর মাধ্যমে কবি স্মৃতির গভীরতাকে প্রকাশ করেছেন। কোনো পরিচিত কণ্ঠস্বর বা আবেগ (যেমন কান্না) মানুষকে সহজেই পুরোনো দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। বিষাদময় স্মৃতি ও বিচ্ছেদ কবিতাটির কেন্দ্রীয় ভাব, যা এই উদ্ধৃতাংশে স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে।