Chapter 8 -
ভালবাসার অত্যাচার
প্রশ্ন ১। ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধের রচয়িতা কে?
উত্তর: ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধের রচয়িতা হলেন বুদ্ধদেব বসু।
প্রশ্ন ২। ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধ কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধটি বুদ্ধদেব বসু রচিত ‘স্বদেশ ও সাহিত্য’ গ্রন্থের অন্তর্গত।
প্রশ্ন ৩। “রাজার অত্যাচার নিবারণের উপায় বহুকাল উদ্ভুত হইয়াছে।” – ‘অত্যাচার’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘অত্যাচার’ শব্দের অর্থ হলো নির্যাতন, জুলুম বা অন্যায় আচরণ।
প্রশ্ন ৪। ‘স্নেহের যথার্থ স্বরূপ ______।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তর: ‘স্নেহের যথার্থ স্বরূপ সন্তানের মঙ্গলের জন্য মায়ের কঠোরতা।’
প্রশ্ন ৫। “নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন” ‘নীতিজ্ঞ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘নীতিজ্ঞ’ শব্দের অর্থ হলো নৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি বা নীতি-বিধি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তি।
প্রশ্ন ৬। প্রণয়ের অত্যাচার কীসের দ্বারা দূর করা যায়?
উত্তর: প্রণয়ের অত্যাচার বিবেচনার দ্বারা দূর করা যায়।
প্রশ্ন ৭। “মনুষ্যজীবন _______ অত্যাচারে পরিপূর্ণ।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তর: “মনুষ্যজীবন স্নেহের অত্যাচারে পরিপূর্ণ।”
প্রশ্ন ৮। ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র কত প্রকার অত্যাচারের উল্লেখ করেছিলেন?
উত্তর: ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তিন প্রকার অত্যাচারের উল্লেখ করেছিলেন—
1. রাজনৈতিক অত্যাচার (শাসকের অত্যাচার)
2. সামাজিক অত্যাচার (সমাজের নিয়ম ও সংস্কারের অত্যাচার)
3. প্রণয়ের অত্যাচার (ভালবাসার নামে স্নেহ ও আবেগের চাপ)
প্রশ্ন ৯। “কৈকেয়ী আপনার কোন ইষ্ট কামনা করে নাই; আপনার পুত্রের শুভ কামনা করিয়াছিল।” – কৈকেয়ী কে ছিলেন?
উত্তর: কৈকেয়ী ছিলেন অযোধ্যার রাজা দশরথের অন্যতম স্ত্রী এবং ভরত এর মাতা। তিনি রামায়ণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যিনি নিজের পুত্র ভরতের মঙ্গল কামনা করে রামকে চৌদ্দ বছরের বনবাসে পাঠানোর জন্য রাজা দশরথের কাছে দুইটি বর প্রার্থনা করেছিলেন।
প্রশ্ন ১০। ‘এ অত্যাচারে প্রবৃত্ত অত্যাচারী অনেক।’ – কোন্ অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে প্রণয়ের অত্যাচারের কথা বলা হয়েছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধে তিনি প্রেম বা প্রণয়ের নামে মানুষ যে মানসিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে, সেই অত্যাচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। প্রেমের মধ্যে অযাচিত আবেগ, একতরফা দাবি, মানসিক চাপে ফেলা ইত্যাদি বিষয়কে তিনি অত্যাচার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
প্রশ্ন ১১। জেরেমি বেন্থাম কোন মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন?
উত্তর: জেরেমি বেন্থাম উপযোগিতাবাদ (Utilitarianism) মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন। এই মতবাদ অনুসারে, নৈতিকতার মূল ভিত্তি হলো সেই কার্য যা সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের সর্বোচ্চ সুখ বা মঙ্গল সাধন করে।
প্রশ্ন ১২। মনুষ্য জীবন কীসের অত্যাচারে পরিপূর্ণ?
উত্তর: মনুষ্য জীবন ভালবাসার অত্যাচারে পরিপূর্ণ।
প্রশ্ন ১৩। যে ভালবাসে সেই _____করে। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তর: যে ভালবাসে সেই অত্যাচার করে।
প্রশ্ন ১৪। বঙ্কিমচন্দ্রের মতে, কোন্ প্রকার পীড়ন থেকে নিস্কৃতি নেই?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্রের মতে, ভালবাসার পীড়ন থেকে নিস্কৃতি নেই।
প্রশ্ন ১৫। “পরের অনিষ্ট না ঘটিলেই.ইহা স্বানুবৰ্ত্তিতা’’ – ‘স্বানুবর্ত্তিতা’ শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর: ‘স্বানুবর্ত্তিতা’ শব্দের অর্থ হলো নিজের স্বভাব বা স্বভাবসিদ্ধ আচরণ।
প্রশ্ন ১৬। “ধর্ম্মের যিনি যে ব্যাখ্যা করুন না, ধর্ম _____। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তর: এক।
প্রশ্ন ১৭। যে কর্মে পরের অনিষ্ট হয় তাকে কী বলে?
উত্তর: স্বেচ্ছাচারিতা।
প্রশ্ন ১৮। যে কর্মে পরের অনিষ্ট হয় না তাকে কী বলে?
উত্তর: স্বানুবর্ত্তিতা।
প্রশ্ন ১৯। ‘ধর্মত্যাগ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘ধর্মত্যাগ’ শব্দের অর্থ হল নিজ ধর্ম ত্যাগ করা।
প্রশ্ন ২০। কারা অনন্ত জ্ঞান বিশিষ্ট?
উত্তর: কবিগণ।
প্রশ্ন ২১। ধর্মের অত্যাচার নিবারণ করে কোন শক্তি?
উত্তর: জ্ঞানশক্তি।
প্রশ্ন ২২। মানুষের জীবনে বাহুবলের প্রয়োজন কেন?
উত্তর: মানুষের জীবনে বাহুবলের প্রয়োজন কারণ এটি আত্মরক্ষা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য সহায়ক। সমাজে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে এবং নিজের অধিকার রক্ষা করতে বাহুবলের প্রয়োজন হয়। অতীতে শারীরিক শক্তিই ছিল প্রধান ক্ষমতার উৎস, যদিও বর্তমানে জ্ঞান ও বুদ্ধির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা বেশি গুরুত্ব পায়। তবুও, আত্মরক্ষার জন্য ও শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য বাহুবলের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না।
প্রশ্ন ২৩। ‘হিতাহিত বেত্তাস্বরূপ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ‘হিতাহিত বেত্তাস্বরূপ’ বলতে এমন ব্যক্তিকে বোঝায়, যিনি কি হিতকর আর কি अहিতকর তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন। অর্থাৎ, যিনি ভালো-মন্দ, লাভ-ক্ষতি ও উপযুক্ত-অনুপযুক্ত বিষয়ে যথাযথ জ্ঞান রাখেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হন। এই শব্দগুচ্ছ সাধারণত বিজ্ঞ ও বিচক্ষণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যারা নিজেদের এবং সমাজের কল্যাণের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেন।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। “যে ভালবাসে, সেই অত্যাচার করে।”
– উদ্ধৃতিটি কোন রচনাংশে? লেখক কে?
উত্তর: উদ্ধৃতিটি "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এর লেখক হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন ২। ‘‘আমার মতের বিরুদ্ধে আপন মত প্রবল করিয়া তদানুসারে কার্য করায়, সেই অত্যাচারী।”
– উদ্ধৃতিটি কোন্ রচনার অন্তর্গত? লেখক কে?
উত্তর: উদ্ধৃতিটি "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এর লেখক হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন ৩। ‘মনুষ্য যে সকল অত্যাচারের অধীন, সে সকলের ভিত্তিমূল মনুষ্যের প্রয়োজনে।
– উদ্ধৃতিটি কোন্ রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে? লেখক কে?
উত্তর: উদ্ধৃতিটি "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এর লেখক হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন ৪। “দশরথ সত্য পালনার্থে রামকে বনে প্রেরণ করিয়া ভরতকে রাজ্যাভিষিক্ত করিলেন।”
– দশরথ কে ছিলেন? রাম ও ভরত দশরথের কে হন?
উত্তর: দশরথ ছিলেন অযোধ্যার রাজা এবং রামায়ণের অন্যতম প্রধান চরিত্র।
রাম ছিলেন দশরথের জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং অযোধ্যার রাজকুমার, যিনি পরবর্তীতে রাজা হন।
ভরত ছিলেন দশরথের অন্য এক পুত্র, রামের সৎভ্রাতা।
প্রশ্ন ৫। ভালবাসার অত্যাচার কীরূপে হয়?
উত্তর: ভালবাসার অত্যাচার তখনই ঘটে যখন একজন ব্যক্তি নিজের ভালবাসা অন্যের ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেন বা অন্যের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করে ভালোবাসার নামে তাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। এটি কখনো আবেগপ্রবণ, কখনো মানসিক, আবার কখনো শারীরিক বা সামাজিকভাবে প্রকাশ পায়। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধে বলেছেন যে, যে ভালবাসে, সেই অত্যাচার করে— কারণ ভালবাসার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্যজনের উপর নিজের ইচ্ছা বা মতামতকে চাপিয়ে দিতে চায়।
প্রশ্ন ৬। “এখানে দশরথ স্বার্থপরতা শূন্য নহেন।”
– উক্তিটি কোন রচনার অংশ? দশরথ কে ছিলেন?
উত্তর: উক্তিটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।
দশরথ ছিলেন অযোধ্যার রাজা এবং রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্নের পিতা। তিনি সত্যব্রত ছিলেন এবং কৈকেয়ীর দুটি বর পালনের জন্য রামকে বনবাসে পাঠিয়েছিলেন।
প্রশ্ন ৭। “যদি সতী কুলবতী; কুচরিত্র পুরুষের কাছে ধর্মত্যাগে প্রতিশ্রুতা হয়, তবে সে সত্য কি পালনীয়?”
– উক্তিটি কোন্ পাঠ থেকে গৃহীত হয়েছে? ‘ধর্মত্যাগ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উক্তিটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত "ভালবাসার অত্যাচার" প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে।
‘ধর্মত্যাগ’ শব্দের অর্থ হলো নিজের নীতি, আদর্শ বা ধর্মীয় বিশ্বাস ত্যাগ করা।
প্রশ্ন ৮। কোন্ দুটি অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় না?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতে, প্রেমের অত্যাচার এবং প্রকৃতির অত্যাচার—এই দুটি অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় না।
প্রশ্ন ৯। ‘চিরকাল মনুষ্য অত্যাচারে পীড়িত।’
– উদ্ধৃতিটি কোন পাঠের অন্তর্ভুক্ত? পাঠ অবলম্বনে যে কোনো দুই প্রকারের মনুষ্য দ্বারা অত্যাচারের উল্লেখ করো।
উত্তর: উদ্ধৃতিটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ভালবাসার অত্যাচার’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।
এই পাঠের আলোকে দুই প্রকারের মানুষের অত্যাচারের উল্লেখ করা যায়—
শাসকের অত্যাচার: রাজা বা শাসকরা প্রজাদের ওপর নানা নিয়ম ও শাসন চাপিয়ে দেন, যা অনেক সময় দুঃসহ হয়ে ওঠে।
প্রিয়জনের অত্যাচার: ভালোবাসার মানুষরাই অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজের মতামত বা সিদ্ধান্ত অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়, যা একপ্রকার মানসিক অত্যাচার হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ১০। ‘হিতবাদ’-কে ইংরেজিতে কী বলে? কে এই মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন?
উত্তর: ‘হিতবাদ’-কে ইংরেজিতে Utilitarianism বলে।
এই মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন জেরেমি বেন্থাম (Jeremy Bentham)।
প্রশ্ন ১১। “দুইটি মাত্র মূলসূত্রে সমস্ত মনুষ্যের নীতিশাস্ত্র কথিত হইতে পারে।” – সূত্র দুটি কী কী?
উত্তর: উক্ত দুটি মূলসূত্র হলো—
স্বানুবর্ত্তিতা – অর্থাৎ, যা নিজের জন্য কল্যাণকর, তা অন্যের জন্যও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
পরের অনিষ্ট না ঘটানো – অর্থাৎ, নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যের ক্ষতি না করা।
প্রশ্ন ১২। টীকা লেখো –
(ক) হিতবাদী।
উত্তর: (ক) হিতবাদী:
'হিতবাদী' বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি হিতবাদ (Utilitarianism) মতবাদের অনুসারী। এই মতবাদ অনুসারে, যে কাজ সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের সর্বোচ্চ কল্যাণ সাধন করে, সেটিই নৈতিকভাবে সর্বোত্তম। জেরেমি বেন্থাম এই হিতবাদ মতবাদের প্রবর্তক ছিলেন।