Chapter 9 - 

 পনেরো আনা

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের লেখকের নাম কী?

উত্তরঃ ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের লেখক হলেন সৈয়দ মুজতবা আলী।

প্রশ্ন ২। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তরঃ ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধটি সৈয়দ মুজতবা আলী-এর "রচনা সমগ্র" গ্রন্থের অন্তর্গত। তবে এটি তাঁর জনপ্রিয় প্রবন্ধ সংকলন "গজানন বিবির পালা" গ্রন্থেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধটি প্রথমে কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধটি প্রথমে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

প্রশ্ন ৪। সম্পদের উদারতা কী প্রমাণ করে?
উত্তরঃ সম্পদের উদারতা মানুষের মহানুভবতা, দানশীলতা ও পরোপকারিতা প্রমাণ করে। এটি ব্যক্তির নিঃস্বার্থ মনোভাব, মানবিকতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধের পরিচায়ক।

প্রশ্ন ৫। “মরার পরে অল্প লোকই অমর হইয়া থাকেন।” উক্তিটি কোন্ পাঠ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে?
উত্তরঃ উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৬। “সংক্ষেপে বলিতে গেলে মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত।”
– এই দুই শেণির নাম লেখো।
উত্তরঃ উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।
এই দুই শ্রেণির নাম হলো:
১. অল্পে তুষ্ট লোক
2. অল্পে তুষ্ট নহে এমন লোক

প্রশ্ন ৭। “আমাদের অফুরান অজস্রতা, আমাদের অহেতুক বাহুল্য দেখিয়া বিধাতার মহিমা স্মরণ করো।” – ‘বাহুল্য’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ ‘বাহুল্য’ শব্দের অর্থ হলো অতিরিক্ততা, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, আধিক্য বা অযথা বৃদ্ধি।

প্রশ্ন ৮। “পৃথিবীতে ঘাসই প্রায় সমস্ত _____ অল্পই।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তরঃ  “পৃথিবীতে ঘাসই প্রায় সমস্ত বৃক্ষ অল্পই।”

প্রশ্ন ৯। “পনেরো আনা ______ এক আনা আবশ্যক।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তরঃ “পনেরো আনা অপ্রয়োজনীয়, এক আনা আবশ্যক।”

প্রশ্ন ১০। “মৃতের সঙ্গে ______ লড়াই বড়ো কঠিন।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)।
উত্তরঃ  “মৃতের সঙ্গে প্রাণের লড়াই বড়ো কঠিন।”

প্রশ্ন ১১। “সকল _______ ধান হয় না।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তরঃ “সকল মাটিতে ধান হয় না।”

প্রশ্ন ১২। “যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী সেই আমাদের_______।” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)
উত্তরঃ “যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী, সেই আমাদের প্রিয়জন।”

প্রশ্ন ১৩। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে কাদের পনেরো আনা বলেছেন?
উত্তরঃসৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে উল্লেখিত উদ্ধৃতি অনুযায়ী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাধারণ মানুষের তুলনায় শিল্পী, সাহিত্যিক ও সৃষ্টিশীল ব্যক্তিদের "পনেরো আনা" বলেছেন। অর্থাৎ, তারা সাধারণ মানুষের চেয়ে কিছুটা আলাদা, ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল, যাদের চিন্তা-ভাবনা ও জীবনধারা সাধারণের তুলনায় ভিন্ন হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ১৪। “নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন।”- ‘নীতিজ্ঞ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ ‘নীতিজ্ঞ’ শব্দের অর্থ হলো নৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, নীতি বা নৈতিকতার জ্ঞান যাঁদের আছে, সুবিচারক বা নীতিশাস্ত্র-বিশারদ।

প্রশ্ন ১৫। যে আমাদের খরচ করিবার _____ সেই আমাদের বন্ধু। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ  “যে আমাদের খরচ করিবার সঙ্গী, সেই আমাদের বন্ধু।”

প্রশ্ন ১৬। যে লোক ধনী, ঘরের চেয়ে তাহার _________ বড়ো হইয়া থাকে। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ “যে লোক ধনী, ঘরের চেয়ে তাহার দালান বড়ো হইয়া থাকে।”

প্রশ্ন ১৭। “আমরাই সংসারের গতি” – এখানে আমরা কারা?
উত্তরঃ “আমরাই সংসারের গতি” উক্তিতে "আমরা" বলতে সেই ব্যক্তিদের বোঝানো হয়েছে, যারা অতিরিক্ত খরচ করে, বাহুল্য উপভোগ করে এবং জীবনকে উপভোগ্য করে তোলে।

প্রশ্ন ১৮। “এই পনেরো আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করিতেছে।” – ‘পনেরো আনা’ কারা?
উত্তরঃ উক্তিতে "পনেরো আনা" বলতে বোঝানো হয়েছে সেসব মানুষকে, যারা অপ্রয়োজনীয় খরচ করে, জীবনকে উপভোগ্য করে তোলে এবং বাহুল্য উপভোগে আনন্দ পায়।

প্রশ্ন ১৯। ‘অনাবশ্যক’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ ‘অনাবশ্যক’ শব্দের অর্থ হলো অপ্রয়োজনীয়, যা আবশ্যক নয়, যা না হলেও চলে।

প্রশ্ন ২০। সংসার রক্ষা করবার জন্য ভগবান কী বলেছেন?
উত্তরঃ সংসার রক্ষা করবার জন্য ভগবান বলেছেন যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ও সম্পদ ব্যয় করা উচিত, কারণ এই অনাবশ্যক খরচই সংসারের গতি বজায় রাখে। 

প্রশ্ন ২১। নদীর অধিকাংশ জল কী কাজে লাগে?
উত্তরঃ নদীর অধিকাংশ জল কোনো কাজেই লাগে না, তা স্রোতের সাথে বয়ে যায়। এটি প্রকৃতির একপ্রকার বাহুল্য, যেমন জীবনে ‘পনেরো আনা’ অপ্রয়োজনীয় হলেও সেটাই সৌন্দর্য ও গতি সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ২২। বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করছে কারা?
উত্তরঃ বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করছে সেই সমস্ত মানুষ, যারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে, বিলাসিতা উপভোগ করে এবং জীবনকে সুন্দর ও গতিময় করে তোলে।

প্রশ্ন ২৩। ঘাস জাতির মধ্যে কে জোর করে ধান হবার চেষ্টা করেছিল?
উত্তরঃ ঘাস জাতির মধ্যে লক্ষ্মী তৃণ জোর করে ধান হবার চেষ্টা করেছিল।

প্রশ্ন ২৪। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আবিষ্কর্তা কে?
উত্তরঃ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আবিষ্কর্তা হলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “ওঠো, জাগো, কাজ করো, সময় নষ্ট করিয়ো না”
– কারা বলেন ? কাদের বলেন ?
উত্তরঃ কারা বলেন? – শিক্ষক ও গুরুজনেরা।
কাদের বলেন? – শিক্ষার্থীদের বা কর্মজীবনে সফল হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের।

প্রশ ২। “মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত”- শ্রেণি দুটি কী কী?
উত্তরঃ শ্রেণি দুটি হলো:
অল্পে তুষ্ট লোক
অল্পে তুষ্ট নহে এমন লোক

প্রশ্ন ৩। “যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী সেই আমাদের বন্ধু।”– বক্তা কে? খরচ করবার সঙ্গী কে?
উত্তরঃ বক্তা: সৈয়দ মুজতবা আলী।
খরচ করবার সঙ্গী: যিনি আনন্দের সঙ্গে অর্থ ব্যয় করেন এবং জীবন উপভোগ করেন, সেই প্রকৃত বন্ধু।

প্রশ্ন ৪। “যে লোক ধনী, ঘরের চেয়ে তাহার বাগান বড়ো হইয়া থাকে।” – ঘর বলতে কী বোঝ? ‘বাগান’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তরঃ ‘ঘর’ বলতে বোঝানো হয়েছে প্রয়োজনীয় বস্তু বা সম্পদ, যা জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে।
‘বাগান’ শব্দের অর্থ অতিরিক্ত সম্পদ বা বিলাসিতা, যা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন ৫। “এই পনেরো আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করিতেছে।” – ‘অনাবশ্যক’ শব্দটির অর্থ কী? এই অংশটি কোন্ প্রবন্ধের অন্তর্গত?
উত্তরঃ ‘অনাবশ্যক’ শব্দটির অর্থ হলো অপ্রয়োজনীয়, যা আবশ্যক নয়, যা না হলেও চলে।
এই অংশটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের অন্তর্গত।

প্রশ্ন ৬। ‘সম্পদের উদারতা অনাবশ্যকেই আপনাকে সপ্রমাণ করে’ – দুটি উদাহরণ দিয়ে বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদাহরণ ১:
নদীর অধিকাংশ জল কোনো কাজে লাগে না, তা স্রোতের সাথে বয়ে যায়। তবুও প্রকৃতিতে এই জলধারা সৌন্দর্য সৃষ্টি করে এবং জীবজগৎকে বাঁচিয়ে রাখে।

উদাহরণ ২:
একটি গাছ হাজার হাজার পাতা ও ফুল তৈরি করে, যার অনেকাংশই পড়ে যায় বা নষ্ট হয়। তবুও এই বাহুল্যই প্রকৃতিকে সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তোলে।

🔹 ব্যাখ্যা: এই দুটি উদাহরণ দেখায় যে প্রকৃতিতে অনেক কিছু অতিরিক্ত বা অনাবশ্যক মনে হলেও, সেটিই সৌন্দর্য, ঐশ্বর্য ও প্রাণের গতিশীলতা প্রমাণ করে। ঠিক তেমনি, মানুষের অতিরিক্ত খরচ, বিলাসিতা বা বাহুল্যও একপ্রকার ঐশ্বর্যের প্রতিচিহ্ন।

প্রশ্ন ৭। ‘নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন। বলেন, আমাদের জীবন বৃথা গেল’ – নীতিজ্ঞেরা আমাদের জীবন বৃথা না যাওয়ার জন্য কী করতে বলেন?
উত্তরঃ নীতিজ্ঞেরা আমাদের জীবন বৃথা না যাওয়ার জন্য বলেন—আমাদের উচিত প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত খরচ না করা, বাহুল্য ও অনর্থক উপভোগে না মেতে ওঠা এবং সংযমী জীবনযাপন করা। তারা মনে করেন, সুদূরপ্রসারী চিন্তা করে, সঞ্চয় করে এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে জীবন পরিচালনা করাই শ্রেয়।

প্রশ্ন ৮। “তাঁহারা আমাদিগকে তাড়না করিয়া বলিতেছেন, ‘ওঠো, জাগো, কাজ করো, সময় নষ্ট করিয়ো না।” – ‘তাঁহারা’ কারা? সময় নষ্ট করলে কী হবে বলে তাঁরা ভাবেন?
উত্তরঃ ‘তাঁহারা’ হলেন নীতিজ্ঞ ও উপদেশদাতা ব্যক্তিরা, যেমন শিক্ষক, গুরুজন বা সমাজের নীতিবোধসম্পন্ন মানুষ।

তাঁরা ভাবেন, যদি মানুষ সময় নষ্ট করে, তবে তার জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে, সে উন্নতি করতে পারবে না এবং সমাজে কোনো মূল্যবান অবদান রাখতে সক্ষম হবে না।

প্রশ্ন ৯। ‘পৃথিবীতে _____ প্রায় সমস্ত ____ অল্পই।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ  “পৃথিবীতে ঘাস প্রায় সমস্ত, বৃক্ষ অল্পই।”

প্রশ্ন ১০। ‘মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত ____ এবং বাকি ____।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ “মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত অল্পে তুষ্ট এবং বাকি অল্পে তুষ্ট নহে।”

প্রশ্ন ১১। আমাদের বন্ধু কে? ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা।
উত্তর: আমাদের বন্ধু সেই ব্যক্তি, যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী।
**উদ্ধৃতি

প্রশ্ন ১২। রবীন্দ্রনাথ কোন কাব্যের জন্য কত খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
উত্তর:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর "গীতাঞ্জলি" কাব্যের জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

প্রশ্ন ১৩। শূন্যস্থান পূর্ণ করো:
“পনেরো আনা শান্ত এবং এক আনা অশান্ত।
পনেরো আনা ____ এবং এক আনা _____।”
উত্তর: “পনেরো আনা অপ্রয়োজনীয় এবং এক আনা আবশ্যক।”

প্রশ্ন ১৪। “তাঁহারা আমাদিগকে তাড়না করিয়া বলিতেছেন, ‘ওঠো, জাগো, কাজ করো, সময় নষ্ট করিয়ো না।” – তাঁহারা কারা? সময় নষ্ট করলে কী হবে বলে তাঁরা জানেন?
উত্তর: ‘তাঁহারা’ হলেন নীতিজ্ঞ, উপদেশদাতা ও গুরুজনেরা, যারা মানুষকে সচেতন করতে চান।

তাঁরা জানেন, যদি মানুষ সময় নষ্ট করে, তবে তার জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে, সে কোনো উন্নতি করতে পারবে না এবং সমাজেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে না।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “ট্রেনের সব গাড়িই যদি রিজার্ভ গাড়ি হইত, তাহা হইলে সাধারণ প্যাসেঞ্জারদের গতি কী হইত।” – কোন্ প্রসঙ্গে লেখক এই উক্তি করেছেন? বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে মানুষের প্রয়োজন ও অতিরিক্ততার মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে এই উক্তিটি করেছেন। তিনি বোঝাতে চান, যদি ট্রেনের সব বগি শুধু ধনী ও রিজার্ভ যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকত, তাহলে সাধারণ মানুষ চলাচলের সুযোগ পেত না।

প্রসঙ্গ ও ব্যাখ্যা:
লেখক এখানে সাধারণ মানুষের প্রয়োজন এবং সমাজে অতিরিক্ত বা অনাবশ্যক জিনিসের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, জীবনে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস থাকলেই হবে না, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু থাকাও দরকার, যা সমাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং মানুষকে জীবন উপভোগ করতে সহায়তা করে।

যদি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয়তাই সবকিছুতে নির্ধারক হতো, তাহলে সমাজ থেকে শিল্প, সাহিত্য, বিনোদন, বিলাসিতা—এসব কিছু হারিয়ে যেত। ট্রেনের উদাহরণ দিয়ে লেখক বুঝিয়েছেন, যদি কেবল প্রয়োজনীয় যাত্রীদের (সাধারণ প্যাসেঞ্জার) জন্যই ব্যবস্থা রাখা হতো, তবে সমাজের অন্য শ্রেণির মানুষের স্বাধীনতা ও জীবনযাত্রার বৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যেত।

এই উক্তির মাধ্যমে লেখক বোঝাতে চেয়েছেন, পনেরো আনা অনাবশ্যকতা জীবনের অপরিহার্য অংশ, যা আসলে বিধাতার ঐশ্বর্য প্রকাশ করে।

প্রশ্ন ২। “আমাদের অধিকাংশের জীবন জীবনচরিত লিখিবার যোগ্য নহে।” – অধিকাংশ মানুষের জীবন কেন জীবনচরিত লেখার যোগ্য নয়?
উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে মানুষের জীবন ও তার গুরুত্ব সম্পর্কে এই উক্তিটি করেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, অধিকাংশ মানুষের জীবন সাধারণ ও একঘেয়ে হয়, যা কোনো উল্লেখযোগ্য কীর্তি বা চমকপ্রদ ঘটনা সৃষ্টি করে না। তাই তাদের জীবন জীবনচরিত (আত্মজীবনী বা জীবনী) লেখার যোগ্য হয় না।

কারণসমূহ:
১. সাধারণ ও একঘেয়ে জীবন:
অধিকাংশ মানুষের জীবন দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে—খাওয়া, পরিশ্রম, বিশ্রাম, ঘুম ইত্যাদির চক্রে ঘুরপাক খায়। এতে বিশেষ কোনো বৈচিত্র্য বা চমক থাকে না, যা একটি আকর্ষণীয় জীবনচরিতের জন্য প্রয়োজন।

অসাধারণ কীর্তির অভাব:
যে সকল ব্যক্তির জীবনচরিত লেখা হয়, তারা সাধারণত সমাজে বড় অবদান রাখেন বা ব্যতিক্রমী কিছু করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ জীবনযাপন করে কেবল নিজেদের প্রয়োজনে, বৃহত্তর সমাজ বা বিশ্বে তাদের প্রভাব সীমিত থাকে।

সংগ্রামের গল্প না থাকা:
জীবনীগ্রন্থ সাধারণত সেইসব মানুষের হয়, যাঁদের জীবন সংগ্রামী, নাটকীয় বা অনুপ্রেরণামূলক। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন তুলনামূলক সরল ও রুটিনমাফিক হওয়ায় সেটি আকর্ষণীয় বা শিক্ষণীয় হয়ে ওঠে না।

বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতা:
বিখ্যাত ব্যক্তিরা ভ্রমণ, আবিষ্কার, গবেষণা বা বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, যা তাদের জীবনকে অনন্য করে তোলে। সাধারণ মানুষ সাধারণত এসব ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন না।

উপসংহার:
লেখকের মতে, বহু মানুষের জীবনচরিত লেখার মতো আকর্ষণীয় না হলেও, তাতে দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, সাধারণ মানুষের মধ্যেই প্রকৃত সমাজের গতি ও সৌন্দর্য বিদ্যমান। যদিও তাদের জীবন বইয়ের পাতায় স্থান পায় না, তবু তারা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

প্রশ্ন ৩। “মৃতের সঙ্গে জীবিতের লড়াই বড়ো কঠিন।” – এই উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: “মৃতের সঙ্গে জীবিতের লড়াই বড়ো কঠিন।” – সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে এই উক্তির মাধ্যমে অতীতের বিশাল প্রভাব ও আধুনিক চিন্তার সঙ্গে তার সংঘাত বোঝাতে চেয়েছেন।

উক্তিটির তাৎপর্য:
১. অতীতের কীর্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা কঠিন:
→ ইতিহাসে অনেক মহান ব্যক্তি এমন কিছু সৃষ্টি করে গেছেন, যা আজও অমর। নতুন কেউ যদি সেই একই ক্ষেত্রে কিছু করতে চায়, তবে তাকে অতীতের সেই বিরাট সাফল্যের বিপরীতে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হয়, যা অত্যন্ত কঠিন।

২. প্রতিষ্ঠিত ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন কঠিন:
→ সমাজে অনেক পুরনো প্রথা ও বিশ্বাস গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত। নতুন বা আধুনিক কোনো মতবাদ প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বিপরীতে গেলে সেটি সহজে গ্রহণযোগ্য হয় না। তাই নতুন চিন্তাধারার প্রচলন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রভাব:
→ অতীতের সাহিত্য, দর্শন, সংস্কৃতি বা শিল্পকর্ম এত সমৃদ্ধ যে নতুন কিছু তৈরি করলেও তা আগের সৃষ্টির ছায়ায় পড়ে যায়। ফলে নতুন কিছু সামনে আনতে হলে সেই অতীতের বিরাট প্রভাবের সঙ্গে লড়াই করতে হয়।

মানুষ সাধারণত অতীতকে বেশি শ্রদ্ধা করে:
→ মৃত ব্যক্তি বা তাদের কাজকে মানুষ সাধারণত বেশি সম্মান ও গুরুত্ব দেয়। জীবিত ব্যক্তি কোনো নতুন মতবাদ বা সৃষ্টি আনলে অনেক সময় সেটিকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়, যা তার পথকে কঠিন করে তোলে।

প্রশ্ন ৪। “সকল ঘাস ধান হয় না।” – তবে ঘাসের জীবনের সার্থকতা কোথায় বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: “সকল ঘাস ধান হয় না।” – এই উক্তির মাধ্যমে লেখক বোঝাতে চেয়েছেন যে, সব মানুষ সমাজে সমান মর্যাদা বা উচ্চতা অর্জন করতে পারে না, কিন্তু প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব গুরুত্ব ও সার্থকতা রয়েছে।

ঘাসের জীবনের সার্থকতা:
১. প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি:
→ যদিও ঘাস ধানের মতো মূল্যবান ফসল উৎপাদন করে না, তবুও এটি পৃথিবীর শোভা বাড়ায়, সবুজ প্রকৃতি তৈরি করে এবং পরিবেশকে সতেজ রাখে।

জীবজগতের খাদ্য:
→ ঘাস অনেক প্রাণীর খাদ্য হিসেবে কাজ করে। গরু, ছাগল, হরিণ, খরগোশসহ অনেক প্রাণী ঘাস খেয়ে বেঁচে থাকে। তাই এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মাটি ক্ষয় রোধ:
→ ঘাসের শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধরে, যা ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং বন্যার সময় মাটি ধসে পড়তে দেয় না।

সাধারণ মানুষের প্রতীক:
→ ঘাস সাধারণ মানুষের প্রতীক। সবাই সমাজের উচ্চস্থানে পৌঁছাতে পারে না, কিন্তু সাধারণ মানুষই সমাজের মূল চালিকা শক্তি। তারা শ্রম দিয়ে, কাজ করে, ছোট ছোট ভূমিকা পালন করেই সমাজকে এগিয়ে নেয়।

প্রশ্ন ৫। “যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী সেই আমাদের বন্ধু।” – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:“যে আমাদের খরচ করবার সঙ্গী, সেই আমাদের বন্ধু।” – সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে এই উক্তির মাধ্যমে প্রকৃত বন্ধুত্বের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন।

উক্তিটির ব্যাখ্যা:
এখানে ‘খরচ করবার সঙ্গী’ বলতে এমন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, যে আমাদের সঙ্গে আনন্দ, দুঃখ, সুখ-বিলাস, সময় ও সম্পদ ভাগ করে নেয়।

বন্ধুত্ব কেবল প্রয়োজনের নয়, ভোগেরও সঙ্গী:
→ প্রকৃত বন্ধুত্ব কেবল দুঃখের ভাগীদার হওয়া নয়, বরং সুখ, আনন্দ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রেও একজন অপরজনের সঙ্গী হয়।

আসল বন্ধু সংকটে নয়, আনন্দেও পাশে থাকে:
→ সাধারণত মানুষ মনে করে, বন্ধুর পরিচয় সংকটের মুহূর্তে পাওয়া যায়। কিন্তু লেখক বোঝাতে চান, যে ব্যক্তি আমাদের আনন্দের মুহূর্তেও সাথে থাকে, সেই প্রকৃত বন্ধু।

সম্পদের ভাগীদার:
→ বন্ধু এমন হওয়া উচিত, যে শুধু উপদেশ দেয় না, বরং আমাদের সঙ্গে সম্পদ ও সুখ ভাগ করে নিতে প্রস্তুত থাকে।

সামাজিক বন্ধনের গুরুত্ব:
→ একা সম্পদ উপভোগ করা বা একা বাঁচার চেয়ে, যদি কেউ পাশে থেকে আমাদের সঙ্গে জীবনের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেয়, তবে সেটাই প্রকৃত বন্ধুত্ব।

প্রশ্ন ৬। “আমরাই সংসারের গতি।” – ‘আমরা’ কারা? কেন তারা সংসারের গতি?
উত্তর:“আমরাই সংসারের গতি।” – এই উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ‘আমরা’ বলতে সাধারণ মানুষ বা সমাজের সেই শ্রেণিকে বোঝানো হয়েছে, যারা জীবনকে উপভোগ করে, বিলাসিতা পছন্দ করে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু ভোগ করাকে দোষের মনে করে না।

‘আমরা’ কারা?
→ ‘আমরা’ সেই মানুষ, যারা কেবল প্রয়োজনের জন্যই বেঁচে থাকে না, বরং জীবনের আনন্দ উপভোগ করে।
→ যারা কেবল অর্থ সঞ্চয় বা কাজের জন্যই জীবন কাটায় না, বরং খরচ করে, ভোগ করে, উৎসব করে, বিনোদন পছন্দ করে।
→ যাদের জীবনের ‘পনেরো আনা’ প্রয়োজনের বাইরে বিলাসিতা, আনন্দ ও সৌন্দর্যের জন্য ব্যয় হয়।

তারা কেন সংসারের গতি?
তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখে:
→ যদি সবাই কেবল প্রয়োজনীয় জিনিস কিনত এবং বিলাসিতা এড়িয়ে যেত, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেত। তাই এই শ্রেণির মানুষই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখে।

সংস্কৃতি ও বিনোদনের প্রসার ঘটে:
→ কেবল প্রয়োজনই যদি সবকিছু নির্ধারণ করত, তাহলে সাহিত্য, সংগীত, শিল্প, নাটক, সিনেমা ইত্যাদির জায়গা থাকত না। তাই যারা এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, তারা সমাজকে সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তোলে।

সামাজিক সম্পর্ক ও উৎসব টিকে থাকে:
→ উপভোগপ্রিয় মানুষেরা বিভিন্ন উৎসব, পারিবারিক অনুষ্ঠান ও সামাজিক মিলনক্ষেত্র তৈরি করে, যা মানুষের মধ্যে সম্পর্ককে দৃঢ় করে।

জীবনকে একঘেয়ে ও শুষ্ক হতে দেয় না:
→ শুধু প্রয়োজন মেটানো নয়, বরং জীবনের সৌন্দর্য, বিনোদন ও উপভোগই সমাজকে প্রাণবন্ত করে তোলে। তাই এই শ্রেণির মানুষই সত্যিকার অর্থে সংসারের গতি সচল রাখে।

প্রশ্ন ৭। “মরার পরে অল্প লোকই অমর হইয়া থাকেন, সেইজন্য পৃথিবীটা বাসযোগ্য হইয়াছে।” অন্তর্নিহিত বক্তব্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:“মরার পরে অল্প লোকই অমর হইয়া থাকেন, সেইজন্য পৃথিবীটা বাসযোগ্য হইয়াছে।” – এই উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে লেখক ব্যঙ্গাত্মক ও গভীর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে মানুষের মৃত্যুর অনিবার্যতা এবং সমাজে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রভাব সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন।

প্রশ্ন ৮। “নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন। বলেন, আমাদের জীবন বৃথা গেল?” – উক্তিটি কোন্ প্রবন্ধের অন্তর্গত? ‘আমাদিগকে’ বলতে লেখক কাদের বুঝিয়েছেন? মন্তব্যটি বিশদ করো। উক্তিটি কোন প্রবন্ধের অন্তর্গত?
উত্তর:“নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন। বলেন, আমাদের জীবন বৃথা গেল?” – উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।

‘আমাদিগকে’ বলতে লেখক কাদের বুঝিয়েছেন?
‘আমাদিগকে’ বলতে লেখক সেই সাধারণ মানুষদের বোঝাতে চেয়েছেন, যারা কেবল প্রয়োজন মেটানোর জন্য জীবনযাপন করে না, বরং আনন্দ-বিলাস, সৌন্দর্য ও বিনোদনকেও জীবনের অংশ হিসেবে দেখে। তারা কেবল অর্থ সঞ্চয় বা কঠোর পরিশ্রমে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং জীবনের রঙিন দিকগুলোকেও উপভোগ করতে চায়।

প্রশ্ন ৯। “জীবন বৃথা গেল, বৃথা যাইতে দাও।”
উত্তর: “জীবন বৃথা গেল, বৃথা যাইতে দাও।” – উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে লেখক জীবন সম্পর্কে প্রচলিত কঠোর দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধিতা করে আনন্দ ও উপভোগের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

উক্তির অন্তর্নিহিত বক্তব্য:
জীবনকে শুধু পরিশ্রম ও সঞ্চয়ের জন্য নয়, উপভোগের জন্যও গড়া হয়েছে:
→ সাধারণত সমাজে বলা হয়, “জীবন বৃথা গেলে তার কোনো মূল্য নেই।”
→ কিন্তু লেখক মনে করেন, জীবনের সার্থকতা শুধু কঠোর পরিশ্রম বা সংযমে নয়, বরং সৌন্দর্য, আনন্দ ও বিলাসিতাতেও রয়েছে।

নীতিজ্ঞদের কঠোর আদর্শের প্রতি বিদ্রূপ:
→ নীতিজ্ঞরা মনে করেন, যারা পরিশ্রম না করে বা শুধুমাত্র বিনোদনে মেতে থাকে, তাদের জীবন বৃথা যায়।
→ কিন্তু লেখক মনে করেন, বিনোদন, বিলাস, আনন্দও জীবনের স্বাভাবিক অংশ, এবং জীবনকে উপভোগ করাও এক ধরনের সার্থকতা।

সংসারের ভারসাম্য বজায় রাখা:
→ যদি সবাই শুধুই কাজ করত, তাহলে পৃথিবী একঘেয়ে ও নিরস হয়ে যেত।
→ তাই কিছু মানুষ যদি বিনোদন, ভোগবিলাস, আনন্দ ও সৌন্দর্য উপভোগ করেও জীবন কাটায়, তাতে ক্ষতি নেই।

সৃষ্টি ও কল্পনার গুরুত্ব:
→ যারা জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে চায়, তারা সাহিত্য, সংগীত, চিত্রকলা, বিনোদন ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজকে রঙিন করে তোলে।
→ কেবল শৃঙ্খলা ও পরিশ্রমই নয়, শিল্প ও বিনোদনও সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

প্রশ্ন ১০। “আমরা যাহাকে ব্যর্থ বলি, প্রকৃতির অধিকাংশ তাই।” – লেখক প্রদত্ত দৃষ্টান্তগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:“আমরা যাহাকে ব্যর্থ বলি, প্রকৃতির অধিকাংশ তাই।”
– উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। লেখক এখানে ব্যর্থতার প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং প্রকৃতির উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন যে যে জিনিসগুলো আমরা অনর্থক বা ব্যর্থ মনে করি, প্রকৃতির দৃষ্টিতে সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য।

পশ্ন ১১। “আমাদের একমাত্র রক্ষা এই যে, ইহাদের সংখ্যা অল্প।” – কাদের সংখ্যা অল্প? এদের সংখ্যা অল্প হওয়ায় লেখক স্বস্তিবোধ করছেন কেন?
উত্তর: “আমাদের একমাত্র রক্ষা এই যে, ইহাদের সংখ্যা অল্প।”
– উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।

কাদের সংখ্যা অল্প?
এখানে "ইহাদের" বলতে নীতিজ্ঞদের (নৈতিক উপদেশদাতা ও কঠোর আদর্শবাদীদের) বোঝানো হয়েছে।
→ এই শ্রেণির মানুষরা মনে করেন, মানুষের জীবন শুধুই কঠোর পরিশ্রম, সংযম ও দায়িত্ব পালনের জন্য।
→ তারা আনন্দ, সৌন্দর্য, বিনোদন, বিলাসিতা এবং অলসতাকে তিরস্কার করেন এবং কেবলমাত্র উৎপাদনশীলতাকে গুরুত্ব দেন।

এদের সংখ্যা অল্প হওয়ায় লেখক স্বস্তিবোধ করছেন কেন?
নীতিজ্ঞদের সংখ্যা কম হওয়ায় লেখক স্বস্তি বোধ করেন, কারণ:

তারা যদি বেশি হতো, তাহলে জীবন কঠিন হয়ে যেত:
→ যদি সমাজে কেবল নীতিজ্ঞদের আধিপত্য থাকত, তাহলে সবাইকে কেবল পরিশ্রম ও সংযমের জীবন বেছে নিতে হতো।
→ মানুষ আনন্দ, বিনোদন, সৌন্দর্য, শিল্প, সংগীত ইত্যাদি থেকে বঞ্চিত হয়ে যেত।

বিনোদন ও বিলাসিতা নিষিদ্ধ হয়ে যেত:
→ নীতিজ্ঞরা মনে করেন, গান-বাজনা, সাহিত্য, শিল্পচর্চা, বিনোদন ও আরাম জীবনকে মূল্যহীন করে তোলে।
→ তারা যদি সংখ্যায় বেশি হতো, তাহলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন কঠিন হয়ে যেত।

সংসারের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব হতো না:
→ লেখক মনে করেন, সমাজের সকল মানুষ যদি শুধুই কঠোর পরিশ্রমী ও সংযমী হতো, তাহলে সৌন্দর্য ও সৃষ্টিশীলতার চর্চা নষ্ট হয়ে যেত।
→ কিছু মানুষ যদি আনন্দ-বিনোদনে মগ্ন থাকে, তাতেও সমাজের ক্ষতি হয় না। বরং তাতে সমাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।

জীবন উপভোগের সুযোগ থাকত না:
→ লেখকের মতে, সফলতার সংজ্ঞা কেবল কাজ বা উপার্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
→ আনন্দ, অলসতা, রসাস্বাদনও জীবনের অংশ।
→ নীতিজ্ঞরা যদি সংখ্যায় বেশি হতো, তবে মানুষের স্বাধীনতা হ্রাস পেত এবং জীবন শুষ্ক হয়ে যেত।

প্রশ্ন ১২। “এই পনেরো আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করিতেছে।” – পনেরো আনা কারা? ঐশ্বর্যের প্রমাণ তিনটি উদাহরণের সাহায্যে দাও৷
উত্তর:“এই পনেরো আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করিতেছে।”
– উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।

❖ ‘পনেরো আনা’ কারা?
→ এখানে "পনেরো আনা" বলতে সেই সমস্ত মানুষদের বোঝানো হয়েছে, যারা কঠোর পরিশ্রম, দায়িত্ব ও প্রয়োজনীয় কাজের বাইরে গিয়ে জীবনকে উপভোগ করে, সৌন্দর্য সৃষ্টি করে এবং বিনোদনমূলক কাজে মগ্ন থাকে।

→ অর্থাৎ, এই শ্রেণির মানুষ কেবল কাজের জন্য বেঁচে থাকে না, বরং বিনোদন, অলসতা, বিলাসিতা, রসাস্বাদন, শিল্প ও সৃষ্টিশীলতার মধ্য দিয়ে জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।

→ বিপরীতে, "এক আনা" হলো তারা, যারা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাজ করে, কঠোর পরিশ্রমে জীবন কাটায় এবং জীবনের সৌন্দর্যের দিকটি অবহেলা করে।

❖ ‘বিধাতার ঐশ্বর্য’ প্রমাণের তিনটি উদাহরণ:
প্রকৃতিতে অধিকাংশই অনাবশ্যক মনে হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও সুন্দর ও প্রয়োজনীয়:
→ পৃথিবীতে ঘাসের পরিমাণ ধানের চেয়ে বেশি।
→ আমরা ঘাসকে মূল্যহীন মনে করলেও, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ।
→ অর্থাৎ, অনাবশ্যক বলে মনে হওয়া অনেক কিছুই প্রকৃতির অপরিহার্য অংশ।

নদীর অধিকাংশ জল সরাসরি মানুষের কাজে লাগে না, তবু তা অপচয় নয়:
→ নদীর বেশিরভাগ জল সমুদ্রে গিয়ে মেশে এবং সরাসরি ব্যবহৃত হয় না।
→ কিন্তু এই জল বাষ্প হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে, যা পরে বৃষ্টি হয়ে ফিরে আসে।
→ অর্থাৎ, অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও প্রকৃতির এই প্রাচুর্যই তার সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য।

গাছ প্রচুর বীজ উৎপন্ন করে, যার বেশিরভাগ নষ্ট হয়, তবু এটি প্রকৃতির সৌন্দর্য:
→ একটি গাছ অসংখ্য বীজ ফেলে, যার খুব সামান্য অংশই অঙ্কুরিত হয়।
→ যদি প্রতিটি বীজ থেকে গাছ জন্মাত, তবে পৃথিবী বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যেত।
→ তাই প্রকৃতির এই প্রাচুর্যই তার ঐশ্বর্যের পরিচায়ক।

প্রশ্ন ১৩। ‘সূর্য কিরণের বেশির ভাগ শূন্যে বিকীর্ণ হয়’ – বক্তব্য পরিস্ফুট করো।
উত্তর:"সূর্য কিরণের বেশির ভাগ শূন্যে বিকীর্ণ হয়।"

এই বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সূর্য থেকে যে বিপুল পরিমাণ আলো ও তাপ পৃথিবীর দিকে আসে, তার বেশিরভাগ অংশ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পৌঁছানোর আগেই ছড়িয়ে পড়ে বা প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যায়।

❖ ব্যাখ্যা:
সূর্যের আলো ও তার বিকিরণ প্রক্রিয়া:
→ সূর্য থেকে আলো সরাসরি পৃথিবীর দিকে আসে, কিন্তু সম্পূর্ণ আলো পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছায় না।
→ এর একটি বড় অংশ মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে বা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রতিসরিত ও প্রতিফলিত হয়।
→ বিজ্ঞানভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় ৩০% সূর্যালোক বায়ুমণ্ডল, মেঘ ও বরফের স্তর দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়।

বিক্ষিপ্ত বা বিকীর্ণ আলো (Scattering of Light):
→ বায়ুমণ্ডলে থাকা গ্যাসের অণু, ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প সূর্যালোকের কিছু অংশ বিকীর্ণ করে দেয়।
→ এই কারণেই আমরা নীল আকাশ দেখি, সূর্যাস্তের সময় আকাশ লালচে দেখায়।

উষ্ণতা ও তাপশক্তির ক্ষতি:
→ সূর্যের বিকীর্ণ তাপের একটি বড় অংশ মহাশূন্যে ফিরে যায় বা ছড়িয়ে পড়ে।
→ যদি পুরো সূর্যালোক পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছে যেত, তাহলে পৃথিবী অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে যেত এবং জীবনের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ত।

প্রশ্ন ১৪। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ অবলম্বনে পনেরো আনা ও এক অবস্থান সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য কী তা বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: ‘পনেরো আনা’ ও ‘এক আনা’ অবস্থান সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বক্তব্য

❖ ‘পনেরো আনা’ ও ‘এক আনা’ ধারণা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর "পনেরো আনা" এবং "এক আনা"– এই দুই অবস্থানের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার দুটি শ্রেণির কথা বলেছেন।
**"পনেরো আনা

প্রশ্ন ১৫। “কাজ না করিয়া অনেকে সময় নষ্ট করে সন্দেহ নাই, কিন্তু কাজ করিয়া যাহারা সময় নষ্ট করে তাহারা কাজও নষ্ট করে সময়ও নষ্ট করে। তাহাদেরই পদভারে পৃথিবী কম্পান্বিত।” – উক্তিটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।
উত্তর:"কাজ না করিয়া অনেকে সময় নষ্ট করে সন্দেহ নাই, কিন্তু কাজ করিয়া যাহারা সময় নষ্ট করে তাহারা কাজও নষ্ট করে সময়ও নষ্ট করে। তাহাদেরই পদভারে পৃথিবী কম্পান্বিত।"

উক্তিটির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝিয়েছেন যে, সঠিকভাবে কাজ না জেনে বা অনর্থক কাজে সময় ব্যয় করাও এক ধরনের সময়ের অপচয়। অনেকে অলস বসে থেকে সময় নষ্ট করে, কিন্তু তার চেয়েও ভয়ংকর হলো তারা, যারা অপ্রয়োজনীয় বা ভুলভাবে কাজ করে, যা সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ক্ষতির কারণও হয়।

প্রশ্ন ১৬। পনেরো আনা মানুষ এক আনার মতো আবশ্যক হয়ে উঠতে চাইলে সংসারে কী ঘটবে?
উত্তর:রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সমাজের মানুষের মধ্যে দুই শ্রেণির কথা বলেছেন—

১. পনেরো আনা মানুষ, যারা সাধারণ জীবনযাপন করে, সৃষ্টিশীলতা বা বড়ো কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে না, কিন্তু তারা সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করে।
২. এক আনা মানুষ, যারা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়, উদ্ভাবন করে, নেতৃত্ব দেয় এবং পরিবর্তন আনে।

❖ পনেরো আনা মানুষ যদি এক আনার মতো আবশ্যক হয়ে উঠতে চায়, তাহলে কী ঘটবে?
১. সমাজে ভারসাম্য নষ্ট হবে
→ প্রকৃতিতে বৈচিত্র্য ও ভারসাম্য প্রয়োজন। সবাই যদি নেতা, উদ্ভাবক, বা সমাজ সংস্কারক হতে চায়, তবে সাধারণ কাজ, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও সমাজের ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাবে।
→ উদাহরণস্বরূপ, সবাই যদি বিজ্ঞানী হতে চায়, তাহলে কৃষক, মজুর, দোকানি, শিক্ষক কে হবে?

২. প্রতিযোগিতা ও সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাবে
→ সমাজের সবাই যদি এক আনার মতো হয়ে নেতৃত্ব দিতে চায়, তাহলে নেতৃত্বের জন্য চরম প্রতিযোগিতা ও সংঘর্ষ তৈরি হবে।
→ সমবেত কাজের ধারণা বিলুপ্ত হবে, কারণ সবাই নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে এবং পরস্পরকে অনুসরণ করার প্রবণতা কমে যাবে।

৩. অপ্রয়োজনীয় উন্নতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে
→ পৃথিবীতে অনেক কিছুই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাকে, যা সমাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
→ কিন্তু সবাই যদি প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে চলতে চায়, তবে সৌন্দর্য, বিনোদন, আরাম ও সাধারণ জীবনের আনন্দ নষ্ট হয়ে যাবে।

৪. সাধারণ কাজ ও শিল্পের অভাব দেখা দেবে
→ যদি সবাই শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী বা রাজনীতিবিদ হতে চায়, তবে কৃষক, শ্রমিক, কারিগর, ব্যবসায়ী বা সাধারণ চাকরিজীবী থাকবে না।
→ এটি অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট করবে এবং অরাজকতা সৃষ্টি করবে।

প্রশ্ন ১৭। “মরার পরে অল্প লোকই অমর হইয়া থাকেন, সেইজন্য পৃথিবীটা রাসযোগ্য হইয়াছে।” – অন্তর্নিহিত বক্তব্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সমাজের সাধারণ মানুষের ভূমিকা এবং অসাধারণ ব্যক্তিদের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই উক্তির মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছেন যে, সমাজের বেশিরভাগ মানুষ মৃত্যুর পর বিস্মৃত হয়ে যায়, কিন্তু অল্পসংখ্যক ব্যক্তি তাঁদের কর্ম ও কীর্তির জন্য অমর হয়ে থাকেন।

প্রশ্ন ১৮। “এই পনেরো আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য সপ্রমাণ করিতেছে।” – ‘অনাবশ্যক’ শব্দটির অর্থ কী? লেখকের নাম উল্লেখ করে ‘পনেরো আনা’ শব্দটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:❖ ‘অনাবশ্যক’ শব্দের অর্থ:
‘অনাবশ্যক’ শব্দের অর্থ যা আবশ্যক বা প্রয়োজনীয় নয়, কিন্তু তবুও বিদ্যমান। এখানে লেখক বোঝাতে চেয়েছেন যে, পৃথিবীতে অনেক কিছুই সরাসরি প্রয়োজনীয় নয়, কিন্তু তা সৃষ্টির সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্যের প্রমাণ বহন করে।

প্রশ্ন ১৯। “ছাগলের যতটুকু শিঙ আছে তাহাতে তাহার কাজ চলিয়া যায়, কিন্তু হরিণের শিঙের পনেরো আনা অনাবশ্যকতা দেখিয়া আমরা মুগ্ধ হইয়া থাকি।” ‘পনেরো আনা অনাবশ্যকতা’ বলতে রবীন্দ্রনাথ কী বোঝতে চেয়েছেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে ‘পনেরো আনা অনাবশ্যকতা’ ধারণার মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন যে, জীবনে অনেক কিছু সরাসরি প্রয়োজনীয় না হলেও তা সৌন্দর্য, আনন্দ ও ঐশ্বর্যের প্রতীক।

❖ ‘পনেরো আনা অনাবশ্যকতা’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
১. প্রয়োজনীয়তা বনাম সৌন্দর্য
→ ছাগলের শিঙ ছোট এবং কেবল আত্মরক্ষার জন্য যথেষ্ট, তাই এটি ‘আবশ্যক’ বা প্রয়োজনীয়।
→ অন্যদিকে, হরিণের শিঙ আকৃতিতে বড় এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত হলেও এর বেশিরভাগ অংশ সরাসরি কাজে লাগে না।

২. অনাবশ্যকতাই প্রকৃতির ঐশ্বর্য
→ প্রকৃতিতে অনেক কিছুই আছে যা কাজের দিক থেকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু সৌন্দর্যের দিক থেকে অপরিহার্য।
→ যেমন— ফুলের সৌন্দর্য, নদীর অতিরিক্ত জল, আকাশের রং, হরিণের শিঙ।
→ এগুলো ছাড়া প্রকৃতি হয়তো চলবে, কিন্তু এই অতিরিক্ত বা ‘অনাবশ্যক’ সৌন্দর্য প্রকৃতিকে সমৃদ্ধ করে।

৩. মানব জীবনে ‘পনেরো আনা’ মানুষের ভূমিকা
→ সমাজের বেশিরভাগ মানুষ (পনেরো আনা) হয়তো বড় কোনো আবিষ্কার বা পরিবর্তন আনেন না, কিন্তু তাঁদের অস্তিত্ব সমাজকে ভারসাম্যপূর্ণ ও প্রাণবন্ত রাখে।
→ যদি কেবল প্রয়োজনীয় মানুষই থাকত, তবে জীবন নিঃস্ব, রুক্ষ ও একঘেয়ে হয়ে যেত।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধ অবলম্বণে সাধারণ মানুষের গৌরব সবিস্তারে লেখো।
উত্তর: সাধারণ মানুষের গৌরব – ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের আলোকে
❖ ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সাধারণ মানুষের গুরুত্ব, ভূমিকা ও গৌরবকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সমাজের বড় অংশই এমন মানুষ, যারা বড় কোনো কীর্তি গড়ে তোলেন না, কিন্তু তবুও তাঁদের উপস্থিতি সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখে। এই ‘পনেরো আনা’ মানুষদের জীবন হয়তো ইতিহাসে লেখা থাকে না, কিন্তু তাঁদের শ্রম, সহিষ্ণুতা ও অস্তিত্বই সমাজের প্রকৃত সৌন্দর্য।

❖ সাধারণ মানুষের গৌরব
১. সমাজের চালিকাশক্তি
→ সমাজের বেশিরভাগ মানুষ বিখ্যাত নন, বড় বিজ্ঞানী, দার্শনিক বা নেতা নন।
→ তবুও তাঁদের পরিশ্রম, জীবনসংগ্রাম ও ছোট ছোট অবদানেই সমাজ টিকে থাকে।
→ চাষি, মজুর, শিক্ষক, দোকানদার, চাকরিজীবী—তাঁরা সবাই সমাজের মূল ভিত্তি।

২. প্রকৃতির নীতি ও সাধারণ মানুষের ভূমিকা
→ প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে বৃক্ষের সব ফুল ফল হয় না, নদীর সব জল ব্যবহৃত হয় না।
→ তেমনি, মানুষের সমাজেও সবাই যদি ব্যতিক্রমী প্রতিভাবান হতে চাইত, তবে ভারসাম্য নষ্ট হতো।
→ সাধারণ মানুষের উপস্থিতিই সমাজকে গঠনমূলক ও স্থিতিশীল রাখে।

৩. অনাবশ্যকতা নয়, সৌন্দর্যের অংশ
→ অনেকেই মনে করেন, সাধারণ মানুষের জীবন অর্থহীন বা বৃথা।
→ কিন্তু লেখক দেখিয়েছেন, এই সাধারণ জীবনধারাই সমাজের সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্যের প্রতীক।
→ যেমন— হরিণের শিংয়ের পনেরো আনা অংশ কাজের জন্য নয়, কিন্তু তা দেখে মানুষ মুগ্ধ হয়।

৪. ঐশ্বর্যের প্রমাণ
→ রবীন্দ্রনাথ বলেন, বিধাতা কেবল প্রয়োজনীয় জিনিস সৃষ্টি করেননি, বরং সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য দিয়েও জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন।
→ সাধারণ মানুষদের অস্তিত্বই প্রকৃতির ঐশ্বর্যের প্রমাণ।

প্রশ্ন ২। “সংক্ষেপে বলিতে গেলে, মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত।” – এই দুই শ্রেণীর মানুষের পরিচয় প্রদান করে একটি নীতিদীর্ঘ আলোচনা লিপিবদ্ধ করো।
উত্তর: মানুষের দুই শ্রেণীর পরিচয় ও তাদের গুরুত্ব
❖ ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে বলেছেন— “সংক্ষেপে বলিতে গেলে, মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত।” এখানে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, সমাজে দুই ধরনের মানুষ আছে—একদল যারা সমাজের নেতৃত্ব দেয়, অন্যদল যারা সাধারণ জীবনযাপন করে এবং সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখে। উভয় শ্রেণীরই সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

❖ মানুষের দুই শ্রেণীর পরিচয়
১. এক আনা মানুষ (নেতৃত্বশীল ও ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব)
→ সমাজের এই শ্রেণীভুক্ত মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
→ তাঁরা অসাধারণ প্রতিভাবান, সৃষ্টিশীল ও সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত।
→ তাঁরা বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, দার্শনিক, নেতা, সংস্কারক ইত্যাদি রূপে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
→ যেমন— আইনস্টাইন, নিউটন, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজি, নেলসন ম্যান্ডেলা প্রমুখ।
→ সমাজের অগ্রগতি ও নতুন নতুন আবিষ্কার এই শ্রেণীর মানুষের হাত ধরেই হয়।

২. পনেরো আনা মানুষ (সাধারণ জনগণ)
→ সমাজের বড় অংশ এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
→ তাঁরা হয়তো কোনো বড় আবিষ্কার করেন না, বা ইতিহাসে নাম লেখান না, কিন্তু তাঁদের শ্রম, জীবনসংগ্রাম ও ছোট ছোট অবদানেই সমাজ টিকে থাকে।
→ তাঁরা কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, গৃহিণী—যাঁরা নীরবে সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলেন।
→ যেমন— একজন কৃষক খাবার উৎপাদন করেন, একজন শিক্ষক শিক্ষা দেন, একজন মজুর নির্মাণকাজ করেন—এভাবেই সমাজ এগিয়ে চলে।
→ তাঁরা সমাজের সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য ও ঐশ্বর্য প্রকাশ করেন।

প্রশ্ন ৩। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তর: ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের নামকরণের সার্থকতা
❖ ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধটি সমাজের সাধারণ মানুষের ভূমিকা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এই নামকরণ সাধারণের প্রতি অবহেলার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং দেখায় যে, সমাজের সৌন্দর্য ও ভারসাম্যের জন্য তাদের অস্তিত্ব অপরিহার্য।

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের মূল বক্তব্য সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর:‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধের মূল বক্তব্য সংক্ষেপে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সমাজের সাধারণ মানুষের ভূমিকা, প্রয়োজনীয়তা ও সৌন্দর্যের ধারণা তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণত মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়—

✔ ‘এক আনা’ মানুষ: সমাজের বিশিষ্ট, সফল ও ব্যতিক্রমী ব্যক্তি (যেমন বিজ্ঞানী, দার্শনিক, নেতা)।
✔ ‘পনেরো আনা’ মানুষ: সাধারণ মানুষ, যাঁরা বিশেষ খ্যাতি অর্জন না করলেও সমাজের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষা করেন।

প্রবন্ধের মূল বক্তব্য হলো—এই পনেরো আনা মানুষদের সাধারণ বলে অবহেলা করা ভুল, কারণ প্রকৃতপক্ষে তাঁরাই সমাজের প্রকৃত চালিকাশক্তি।

মূল ধারণাগুলি:
✅ সাধারণ মানুষের গুরুত্ব: তাঁরাই সমাজের মূল ভিত্তি।
✅ প্রকৃতির সৌন্দর্য ও অনাবশ্যকতা: সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য অনেক সময় কার্যকারিতার চেয়েও বড় হয় (যেমন নদীর জল, সূর্যের আলো, হরিণের শিং)।
✅ অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও অপরিহার্য: পনেরো আনা মানুষদের বাদ দিলে সমাজের সৌন্দর্য ও ভারসাম্য নষ্ট হবে।

রবীন্দ্রনাথ বোঝাতে চেয়েছেন যে, শুধু ব্যতিক্রমী মানুষই নয়, সাধারণ মানুষেরও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন ২। ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ মানুষকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন, এই দুটি শ্রেণি কী কী এবং অনুরূপ শ্রেণিবিভাগ কেন করা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করো।
উত্তর:‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে মানুষের শ্রেণিবিভাগ ও তার তাৎপর্য
❖ ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সমাজের মানুষকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। সাধারণত সমাজে মানুষকে সাফল্যের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়, কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন যে সমাজের সৌন্দর্য ও ভারসাম্যের জন্য উভয় শ্রেণিরই গুরুত্ব রয়েছে।

❖ দুটি শ্রেণির পরিচয়
✔ ১. এক আনা মানুষ:

সমাজের ব্যতিক্রমী, প্রতিভাবান ও কৃতী ব্যক্তি।
বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, নেতা, শিল্পী বা সমাজ সংস্কারকরা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
তাঁদের কাজ সমাজের অগ্রগতি ও পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁরা সংখ্যায় খুব কম।
✔ ২. পনেরো আনা মানুষ:

সমাজের সাধারণ মানুষ, যাঁরা বিশিষ্ট নন কিন্তু সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলেন।
কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ কর্মচারী, ব্যবসায়ী ইত্যাদি এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
তাঁরা সমাজের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষা করেন, যদিও অনেকে তাঁদের অবহেলা করেন।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই শ্রেণিতে পড়ে।
❖ অনুরূপ শ্রেণিবিভাগ কেন করা হয়েছে?
✔ ১. প্রচলিত ধারণার বিপরীতে নতুন উপলব্ধি আনতে:

সাধারণত মানুষ মনে করে, কেবলমাত্র সফল বা প্রতিভাবান ব্যক্তিরাই সমাজের জন্য মূল্যবান।
রবীন্দ্রনাথ দেখিয়েছেন যে পনেরো আনা মানুষদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, কারণ তাঁরা সমাজের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য বজায় রাখেন।
✔ ২. প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের তুলনা টানতে:

প্রকৃতিতেও এই ধরনের বিভাজন রয়েছে।
যেমন, সূর্যের আলো, নদীর জল বা হরিণের শিংয়ের বেশিরভাগই অনাবশ্যক মনে হতে পারে, কিন্তু সেটাই প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
✔ ৩. সমাজের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য ব্যাখ্যা করতে:

যদি সবাই ‘এক আনা’ হতে চায়, তাহলে সমাজের কাঠামো ভেঙে পড়বে।
সাধারণ মানুষের উপস্থিতিই সমাজকে প্রাণবন্ত রাখে।
✔ ৪. সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জাগানোর জন্য:

‘পনেরো আনা’ মানুষদের অনেকেই অবহেলিত বা কম মূল্যায়িত হন।
কিন্তু তাঁদের শ্রম, ভালোবাসা ও ত্যাগেই সমাজ টিকে থাকে।

প্রশ্ন ৩। রবীন্দ্রনাথ পনেরো আনা কাদের বলেছেন? সংসারে এদের সার্থকতার বিষয়ে বরীন্দ্রনাথের অভিমত ব্যক্ত করো।
উত্তর:‘পনেরো আনা’ কাদের বলা হয়েছে ও তাদের সার্থকতা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের অভিমত
❖ ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘পনেরো আনা’ প্রবন্ধে সমাজের সাধারণ মানুষদের গুরুত্ব ও তাদের অপরিহার্য ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেছেন। সাধারণত সমাজে ব্যতিক্রমী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের (যেমন বিজ্ঞানী, দার্শনিক, নেতা) মূল্যায়ন করা হয়, কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন যে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিই সমাজের ভারসাম্য ও সৌন্দর্য বজায় রাখে।

❖ ‘পনেরো আনা’ কাদের বলা হয়েছে?
✔ পনেরো আনা বলতে সাধারণ মানুষদের বোঝানো হয়েছে।
✔ এরা সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ, যারা জীবনে বড় সাফল্য অর্জন না করলেও সমাজের ভিত্তি রচনা করে।
✔ কৃষক, শ্রমিক, দোকানি, সাধারণ কর্মচারী ইত্যাদি এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
✔ তাঁরা সমাজের প্রতিদিনের কাজ চালিয়ে নিয়ে যান এবং জীবনের সৌন্দর্য ও আনন্দ বৃদ্ধি করেন।
✔ তাঁদের জীবন সাধারণ হলেও তাঁদের উপস্থিতি ছাড়া সমাজ চলতে পারে না।

❖ সংসারে ‘পনেরো আনা’ মানুষের সার্থকতা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের অভিমত
✔ ১. সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করে:

শুধু ব্যতিক্রমী মানুষের দ্বারা সমাজ টিকে থাকতে পারে না।
সাধারণ মানুষেরাই সংসার ও সমাজকে স্থিতিশীল রাখে এবং চালনা করে।
✔ ২. প্রকৃতির সঙ্গে তুলনা:

প্রকৃতির মতো মানুষের মধ্যেও অধিকাংশই পনেরো আনা।
যেমন সূর্যের আলো, নদীর জল, হরিণের শিং—এর বেশিরভাগ অংশ অনাবশ্যক মনে হলেও, প্রকৃতির সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য এগুলোর প্রয়োজন।
তেমনি সমাজেও বিশিষ্টদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
✔ ৩. সৌন্দর্য ও আনন্দের উৎস:

কেবল কাজের প্রয়োজনেই সব কিছু হয় না, অনেক কিছুই সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যও হয়।
যেমন গান, কবিতা, উৎসব, শৌখিনতা সমাজকে সুন্দর করে তোলে, যা সাধারণ মানুষের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।
✔ ৪. শৃঙ্খলা ও মানবিকতা বজায় রাখে:

সমাজে প্রতিদিনের কাজ ও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মূল দায়িত্ব সাধারণ মানুষের ওপরই থাকে।
তাঁরা পরিবার, সমাজ ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখেন।
✔ ৫. ব্যতিক্রমী মানুষেরাও সাধারণের ওপর নির্ভরশীল:

এক আনা মানুষেরা (যেমন বিজ্ঞানী, নেতা) সাধারণ মানুষদের সহায়তা ছাড়া সফল হতে পারেন না।
তাই পনেরো আনা মানুষদের অবহেলা করা ভুল।