Chapter 3 - 

বঙ্গভাষা

( ক ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে কী নামে পরিচিত?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত।

( খ ) কবি মধুসূদনের লেখা ‘বঙ্গভাষা‘ কবিতাটির নাম প্রথমাবস্থায় কী ছিল?

উত্তরঃ কবি মধুসূদনের লেখা ‘বঙ্গভাষা‘ কবিতাটির নাম প্রথমাবস্থায় ‘মাতৃভাষা‘ ছিল।

( গ ) কবির একটি বিখ্যাত নাটকের নাম করো।

উত্তরঃ মধুসূদনের বিখ্যাত নাটকটির নাম ‘কৃষ্ণকুমারী‘।

( ঘ ) মাইকেল মধুসূদনের একটি বিখ্যাত কাব্যের নাম করো।

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদনের একটি বিখ্যাত কাব্যের নাম ‘মেঘনাদবধ কাব্য‘।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

( ক ) মাইকেল মধুসূদন দত্তের দুটি প্রহসনের নাম লেখো।

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের দুইটি প্রহসনের নাম হল – ‘বুড়ো শালিখের ঘায়ে রোঁ‘ আর ‘একেই কী বলে সভ্যতা‘।

( খ ) কুললক্ষ্মী বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ মানুষের গৃহে যে লক্ষ্মীদেবী পূজিতা হন, তিনিই কুললক্ষ্মী। এখানে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা ভাষা লক্ষ্মীর কথা বলেছেন।

( গ ) চতুর্দশপদী কবিতা কী?

উত্তরঃ একটি কবিতায় চৌদ্দটি পংক্তি থাকলে তাকে চতুর্দশপদী কবিতা বলা হয়। ইংরেজিতে একে সনেট (Sonnet) বলে। চতুর্দশপদী কবিতায় দুটি স্তবক থাকে – অষ্টক (প্রথম আট পংক্তি) ও ষটক (শেষ ছয় পংক্তি)।

( ঘ ) ‘পরদেশে ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি‘ – বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তরঃ কবি এখানে বোঝাতে চেয়েছেন যে, নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি অবহেলা করে বিদেশি ভাষা ও সাহিত্য গ্রহণ করা একপ্রকার ভিক্ষাবৃত্তি। কবি মধুসূদন প্রথমে ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পরে বুঝতে পারেন তাঁর প্রকৃত শক্তি বাংলা ভাষাতেই নিহিত।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

( ক ) কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে কীভাবে আধুনিকতার সূচনা করেছিলেন?

উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষাতেই দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের দীনতা দেখে ১৮৫৯ সালে ‘শর্মিষ্ঠা‘ নাটক রচনা করেন। এরপর তিনি ‘কৃষ্ণকুমারী‘, ‘মেঘনাদবধ কাব্য‘, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য‘, ‘একেই কি বলে সভ্যতা‘ প্রভৃতি রচনা করেন। তাঁর কাব্য, নাটক ও প্রহসন বাংলা সাহিত্যকে আধুনিকতার পথে নিয়ে যায়।

( খ ) ‘বঙ্গভাষা‘ কবিতায় কবির আত্ম-অনুশোচনার কারণ নির্দেশ করো।

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছোটবেলা থেকেই ইংরেজি ভাষার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন এবং ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা করে খ্যাতি অর্জন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইংরেজি ভাষায় রচিত তাঁর প্রথম কাব্য ‘The Captive Lady‘ ব্যর্থ হলে তিনি উপলব্ধি করেন মাতৃভাষাই প্রকৃত শক্তির উৎস। বঙ্গভাষার মহিমা উপলব্ধি করে তিনি বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা শুরু করেন এবং আত্ম-অনুশোচনার স্বরূপ এই কবিতায় প্রকাশ করেন।

( গ ) ‘ওরে বাছা মাতৃকোষে রতনের রাজি, এ ভিখারী দশা তবে কেন তোর‘ – এখানে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তরঃ এখানে কবি নিজেকেই সম্বোধন করেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে মাতৃভাষা বাংলা রত্নভাণ্ডারে পূর্ণ, তবুও তিনি ইংরেজি ভাষার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ভিক্ষাবৃত্তির মতো অন্য ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে গিয়েছিলেন।

( ঘ ) ‘মজিনু বিফল তপে অবরণ্যে বরি, কেলিনু শৈবালে ভুলি কমল কানন‘ – মর্মার্থ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ কবি বুঝতে পারেন যে মাতৃভাষা ছেড়ে অন্য ভাষায় সাহিত্য রচনা করা বৃথা সাধনার সমান। তিনি ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা করে সফল হতে পারেননি, তাই তিনি বাংলাকে পদ্মবনের মতো সুন্দর মনে করেন এবং ইংরেজি ভাষাকে শৈবালের সঙ্গে তুলনা করেন।

( ঙ ) ‘মাতৃভাষা রূপ খনি, পূর্ণ মণিজালে‘ – তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ কবি মাতৃভাষাকে এক অপার রত্নভাণ্ডার হিসেবে দেখেছেন। বাংলা ভাষার মধ্যেই অমূল্য সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভাণ্ডার লুকিয়ে আছে, যা তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি। পরে তিনি অনুধাবন করেন যে বাংলা ভাষার মাধ্যমেই তিনি সাহিত্যিক খ্যাতি অর্জন করতে পারবেন।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর:

১। ‘বঙ্গভাষা‘ কবিতাটি কার রচনা?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

২। মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম কবে হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে জানুয়ারি।

৩। মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান কোথায়?

উত্তরঃ বাংলাদেশের যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে।

৪। মধুসূদন দত্তের পিতা-মাতার নাম কী?

উত্তরঃ পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত এবং মাতার নাম জাহ্নবী দেবী।

৫। কত খ্রিষ্টাব্দে মধুসূদন বিলেত যান?

উত্তরঃ ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে।

৬। মাইকেল মধুসূদন দত্তের মৃত্যু কবে হয়?

উত্তরঃ ১৮৭৩ সালের ২৯শে জুন।

৭। বঙ্গের ভাণ্ডারে কী আছে?

উত্তরঃ বঙ্গের ভাণ্ডারে বিবিধ রত্ন আছে।

৮। কবি ইংরেজি ভাষায় বুৎপত্তি লাভের আশায় কিভাবে দিন অতিবাহিত করেছেন?

উত্তরঃ অনিদ্রায় অনাহারে দিন অতিবাহিত করেছেন।

৯। কুললক্ষ্মী কবিকে মাতৃকোষে কী আছে বলে জানিয়েছেন?

উত্তরঃ রতনের রাজি।