Chapter 4 -
মাতৃহৃদয় – প্রিয়ংবদা দেবী
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) প্রিয়ংবদা দেবীর পৈতৃক পদবি কী ছিল?
উত্তরঃ প্রিয়ংবদা দেবীর পৈতৃক পদবি ছিল 'বাগচী'।
(খ) প্রিয়ংবদা দেবীর মায়ের নাম কী?
উত্তরঃ প্রিয়ংবদা দেবীর মায়ের নাম ছিল প্রসন্নময়ী বাগচী।
(গ) ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতায় কাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে?
উত্তরঃ ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতায় ধরিত্রী মাতাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
(ঘ) প্রিয়ংবদা দেবী বাইবেলের কিছু অংশ অনুবাদ করেছিলেন। সেই গ্রন্থের নাম কী?
উত্তরঃ সেই গ্রন্থের নাম ‘ভক্তবাণী’।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) ‘শিখাও আমায় সে পূণ্য রহস্যমন্ত্র – মার মহিমায়’ – এর ব্যাখ্যা দাও।
উত্তরঃ কবি পৃথিবী মাতার কাছ থেকে মাতৃত্বের মহিমা ও সহনশীলতার শিক্ষা নিতে চান। পৃথিবী মা শত সন্তানের বিয়োগ বেদনাও সহ্য করে সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। কবি সেই রহস্যমন্ত্র অর্জন করতে চান যাতে তিনি মাতৃহৃদয়ের ধৈর্য ও স্থিতিশীলতা রপ্ত করতে পারেন।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) ‘তবু ফুটাতেছে ফুল, জ্বলিছ আলোক উজলিয়া রাত্রিদিন দ্যুলোক-ভূলোক’ – এই পঙ্ক্তির সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি প্রিয়ংবদা দেবীর ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি ধরিত্রী মায়ের অসীম সহনশীলতা এবং সৃষ্টির ধারা অব্যাহত রাখার শক্তির কথা তুলে ধরেছেন। পৃথিবী মা হাজারো সন্তানের বিয়োগ বেদনাও সহ্য করেও সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মাধ্যমে পৃথিবীতে আলো ছড়িয়ে দেন, ফুল ফোটান, আর দ্যুলোক ও ভূলোককে উজ্জ্বল করে রাখেন। কবি এই শিক্ষাই পৃথিবী মাতার কাছ থেকে গ্রহণ করতে চান।
(খ) ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতার সারসংক্ষেপ নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ এই কবিতায় কবি মাতৃহৃদয়ের বিশালতা ও গভীরতা তুলে ধরেছেন। সন্তানের বিচ্ছেদে কবি ব্যথিত ও ব্যাকুল হয়ে পড়েন, যা সহ্য করা তার পক্ষে কঠিন। তিনি ধরিত্রী মাতার কাছে শিক্ষা নিতে চান যে কীভাবে তিনি সহস্র সন্তানের বিয়োগ ব্যথা সহ্য করেও প্রতিনিয়ত নতুন সৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীকে পরিচালিত করেন। কবি মাতৃহৃদয়ের এই অসীম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার রহস্য জানতে চান।
(গ) প্রিয়ংবদা দেবীর সমাজ-সংস্কারমূলক কাজের বিবরণ দাও।
উত্তরঃ প্রিয়ংবদা দেবী একজন কেবল গীতিকবি ছিলেন না, তিনি একজন সমাজ সংস্কারকও ছিলেন। তিনি বেথুন স্কুল ও কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। স্বামীর অকাল মৃত্যু এবং পুত্রশোকে ব্যথিত হয়ে তিনি সমাজসেবা ও নারীশিক্ষা প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি বহু মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ভারত-স্ত্রী মহামণ্ডলের কর্মাধ্যক্ষা হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯১৫ সালে ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং নারীশিক্ষা প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
(ঘ) ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতার নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।
উত্তরঃ এই কবিতার মূল ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু মাতৃত্ব ও তার অসীম সহিষ্ণুতা। কবি ধরিত্রী মাতার অসীম ধৈর্য ও শক্তির রহস্য জানতে চান, যা তাকে মাতৃত্বের প্রকৃত মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। তাই ‘মাতৃহৃদয়’ নামটি কবিতার ভাবনার সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ ও যথার্থ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর:
১। প্রিয়ংবদা দেবী কোন গ্রন্থের অনুবাদ করেছিলেন?
উত্তরঃ তিনি ভাস রচিত ‘স্বপ্নবাসবদত্তা’ অনুবাদ করেছিলেন।
২। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম কী?
উত্তরঃ তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো হলো – ‘রেণু’, ‘তারা’, ‘পত্রলেখা’, ‘অংশু’, ‘চম্পা’ ও ‘পাটল’।
৩। প্রিয়ংবদা দেবীর পিতার নাম কী ছিল?
উত্তরঃ তাঁর পিতার নাম কৃষ্ণকুমার বাগচী।
৪। ‘মাতৃহৃদয়’ কবিতাটি কোন প্রকৃতির কবিতা?
উত্তরঃ এটি একটি গীতিকবিতা।
৫। ‘উজলিয়া রাত্রিদিন দ্যুলোক-ভূলোক’ – এখানে ‘দ্যুলোক-ভূলোক’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? উত্তরঃ এখানে ‘দ্যুলোক-ভূলোক’ বলতে স্বর্গ ও মর্ত্যের কথা বোঝানো হয়েছে।
শব্দার্থ:
ধরিত্রী – পৃথিবী।
জীবধাত্রী – জীবকে ধারণ করেন যিনি।
বক্ষ – বুক।
প্রবাসী – বিদেশে বসবাসকারী।
বিপুল – বিশালাকার।
উজলিয়া – উজ্জ্বল হয়ে ওঠা।
অনন্ত স্পন্দন – চিরন্তন কম্পন।