Chapter 7 -
পূব-পশ্চিম
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রথমে কোন ছদ্মনামে কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন?
উত্তর: তিনি প্রথমে ‘নীহারিকা দেবী’ ছদ্মনামে কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন।
(খ) ‘রূপনারায়ণ’ নদী কোন রাজ্যে অবস্থিত?
উত্তর: রূপনারায়ণ নদী পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
(গ) ‘পিয়ালী’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: এটি পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের একটি নদীর নাম।
(ঘ) ‘গম্ভীরা’ বাংলার কোন অঞ্চলে প্রচলিত?
উত্তর: এটি পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় প্রচলিত।
(ঙ) ‘তোমার টাঙ্গাইল আমার ধনেখালি’ – এখানে ‘টাঙ্গাইল’ শব্দে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: টাঙ্গাইল বলতে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল অঞ্চলের বিশেষ নক্সা করা তাঁতের সুতির শাড়িকে বোঝানো হয়েছে।
(চ) ‘আমি তোমার পীরের দরগায় __ জ্বালি।’ (শূন্যস্থান পূরণ করো)
উত্তর: আমি তোমার পীরের দরগায় চেরাগ জ্বালি।
(ছ) ‘কে মুছে দেবে আমাদের মুখের ভাষা আমাদের রক্তের ____।’ (শূন্যস্থান পূরণ করো)
উত্তর: কে মুছে দেবে আমাদের মুখের ভাষা আমাদের রক্তের কবিতা।
(জ) অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কোন পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর: তিনি ‘কল্লোল’ পত্রিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।
(ঝ) অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থ হলো ‘প্রিয়া ও পৃথিবী’।
(ঞ) অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: তিনি ১৯০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের নোয়াখালিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় ‘পূব’ ও ‘পশ্চিম’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘পূব’ বলতে বাংলাদেশ ও ‘পশ্চিম’ বলতে পশ্চিমবঙ্গকে বোঝানো হয়েছে।
(খ) ‘আমাদের খাঁচার ভিতরে একই অচিন পাখির আনাগোনা’ – এখানে ‘খাঁচা’ ও ‘অচিন পাখি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘খাঁচা’ বলতে মানবদেহ এবং ‘অচিন পাখি’ বলতে মানবাত্মা বোঝানো হয়েছে।
(গ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় উল্লেখিত যে কোনো চারটি নদীর নাম লেখো।
উত্তর: ময়ূরাক্ষী, রূপনারায়ণ, শীতলক্ষ্যা, শিলাবতী।
(ঘ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় উল্লিখিত যে কোনো চারটি লোকসংগীতের নাম লেখো।
উত্তর: গম্ভীরা, সারি, জারি, ভাটিয়ালী।
(ঙ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় উল্লিখিত যে কোনো চারটি শাড়ির নাম লেখো।
উত্তর: টাঙ্গাইল, ধনেখালি, জামদানি, বালুচরী।
(চ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতার পূর্ব ও পশ্চিমের অভিন্নতার তিনটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করো।
উত্তর:
১. দুই বাংলার নদীগুলো অভিন্ন।
২. দুই বাংলার লোকসংগীতের সুর এক।
৩. দুই বাংলার গাছপালা ও ফলমূল অভিন্ন।
(ছ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় পূর্ব ও পশ্চিমের অভিন্ন শত্রু কে? সে কী করেছে? সে কী করতে চায়?
উত্তর: যারা স্বার্থসিদ্ধির জন্য বঙ্গদেশকে বিভক্ত করেছে তারাই অভিন্ন শত্রু। তারা দেশকে বিভক্ত করলেও মানুষের ঐক্যকে নষ্ট করতে পারেনি।
(জ) পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার ভাষাগত ব্যবধানকে কবি কীভাবে উপস্থাপন করেছেন?
উত্তর: কবি বলেছেন, উভয় বাংলার মানুষ বাংলা ভাষাতেই কথা বলে। কিছু ধ্বনিগত পার্থক্য থাকলেও মূলত তারা একই ভাষার বাহক।
৩। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
(ক) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় পূর্ব ও পশ্চিমের অভিন্নতার প্রসঙ্গের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর:
কবিতায় বলা হয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার নদী, আকাশ, সূর্য, বাতাস, গাছপালা, লোকসংগীত, পোশাক, কৃষি—সব কিছুই অভিন্ন। যেমন, শীতললক্ষ্যা ও ময়ূরাক্ষীর জলধারা এক, টাঙ্গাইল ও ধনেখালি শাড়ির সৌন্দর্য এক, দুই বাংলার মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনও অভিন্ন।
(খ) ‘পূব – পশ্চিম’ কবিতায় বিভেদ অতিক্রম করে মিলনের যে বার্তা প্রকাশ পেয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:
দেশভাগের ফলে বাংলাকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হলেও প্রকৃতি ও সংস্কৃতি বিভক্ত হয়নি। নদীর জল, বাতাস, লোকসংগীত, পোশাক, কৃষিজ পণ্য—সব কিছুই অভিন্ন। ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন হলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রয়ে গেছে। দুই বাংলার মানুষের মধ্যেকার ঐক্যের শক্তিই প্রধান, যা কোনো বিভেদ নষ্ট করতে পারে না।
৪। ব্যাখ্যা প্রশ্ন:
(ক) ‘তোমার চোখের আকাশের রোদ আমার চোখের উঠোনে এসে বসে, তোমার ভাবনার বাতাস আমার ভাবনার বাগানে ফুল ফোটায়।’
উত্তর: কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার মানুষের চিন্তা, অনুভূতি ও আবেগ অভিন্ন। তারা আলাদা হলেও তাদের মনোজগৎ একসূত্রে গাঁথা।
(খ) ‘তোমার টাঙ্গাইল আমার ধনেখালি, তোমার জামদানি আমার বালুচর। এক সুতো এক ছন্দ, এক লাবণ্যের টানা পোড়েন চলছে একই রূপনগরের হাতছানিতে।’
উত্তর: কবি দেখিয়েছেন যে দুই বাংলার শাড়ির ঐতিহ্য এক, যা তাঁতের একই সুতো ও ছন্দে তৈরি। ফলে, দুই বাংলার সংস্কৃতি একে অপরের পরিপূরক।
(গ) ‘আমরা এক বৃত্তে দুই ফুল, এক মাঠে দুই ফসল, আমাদের খাঁচার ভিতরে একই অচিন পাখির আনাগোনা।’
উত্তর: এই পঙক্তিতে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলা আলাদা হলেও তারা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছে, একই আবেগ ও সংস্কৃতির ধারক।
(ঘ) ‘আমার দেবতার থানে তুমি বটের ঝুরিতে সুতো বাঁধো, আমি তোমার পীরের দরগায় চেরাগ জ্বালি।’
উত্তর: এখানে কবি ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলেছেন। দুই বাংলার মানুষ ধর্মীয় ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও পরস্পরের বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে।
৫। তাৎপর্য বিশ্লেষণ:
(ক) ‘পরস্পর আমরা পর নই, আমরা পড়শী – আর পড়শীই তো আরশি।’
উত্তর: কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে দুই বাংলা দুটি দেশ হলেও তারা একে অপরের প্রতিবিম্ব। একে অপরের সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি হয়ে রয়েছে।
(খ) ‘আমরাই একে অন্যের হৃদয়ের অনুবাদ, মর্মের মধুকর, মঙ্গলের দূত, আমরাই চিরন্তন কুশল সাধক।’
উত্তর: কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে দুই বাংলার মানুষ একে অপরের পরিপূরক। তারা একই অনুভূতির বাহক, যারা মানবতায় একত্রিত।