Chapter 8 - 

 খরা

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

(ক) খরা কবিতাটির কবি কে?
উত্তর:
খরা কবিতাটির কবি হলেন শঙ্খ ঘোষ

(খ) এটি তাঁর কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: এটি তাঁর ‘মূর্খ বড়ো সামাজিক নয়’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

(ক) খরার ফলে কী হয়েছে?
উত্তর:
খরার ফলে চারদিকের নদী, নালা, জলাশয় সব শুকিয়ে গেছে। গাছের পাতা ঝরে পড়েছে, শুধু বালির স্তূপ দেখা যাচ্ছে।

(খ) ‘এইখানে শেষ নয়, এই সবে শুরু’ – উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
উত্তর:
উক্তিটির মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, মানুষ প্রকৃতিকে অবহেলা করছে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করছে। এর ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে এসেছে, যার একটি উদাহরণ ‘খরা’। তবে এটি ধ্বংসের শেষ নয়, বরং সূচনা মাত্র। মানুষ তার মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে যান্ত্রিক সভ্যতার উন্মাদনায় পৃথিবীকে আরও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

৩। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

(ক) "বালি তুলে বালি তুলে বালি তুলে বালি
বালি তুলে বালি।"
– সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: উক্ত পঙক্তিটি শঙ্খ ঘোষের ‘খরা’ কবিতা থেকে গৃহীত। এখানে "বালি তুলে" কথাটির পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, মানুষ প্রকৃতির সম্পদ ধ্বংস করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে।

সভ্যতার নামে মানুষ বৃক্ষচ্ছেদন করছে, নদী-নালা শুকিয়ে ফেলছে, এবং পরিবেশকে বিপর্যস্ত করছে। খরার ফলে চারিদিকে কেবল বালির স্তূপ দেখা যাচ্ছে, অথচ লোভী মানুষ সেই বালিও তুলে নিয়ে মুনাফা করছে। এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলতে থাকলে একদিন প্রকৃতি প্রতিশোধ নেবে এবং ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। কবি মূলত মানুষের স্বার্থপরতা ও প্রকৃতিবিরোধী মানসিকতাকেই এখানে তুলে ধরেছেন।

(খ) ‘খরা’ কবিতাটির মর্মার্থ বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের ‘খরা’ কবিতাটি মূলত মানবসৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে লেখা। মানুষ নগর সভ্যতার লোভে বৃক্ষচ্ছেদন করছে, যার ফলে অনাবৃষ্টি দেখা দিচ্ছে এবং ‘খরা’ সৃষ্টি হচ্ছে।

খরার কারণে নদী-নালা শুকিয়ে যাচ্ছে, চারিদিকে বালি জমছে। কিন্তু স্বার্থপর মানুষ সেই বালিও বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করছে। কবি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যদি মানুষ এভাবে প্রকৃতির শোষণ চালিয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে এবং একদিন প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে পড়বে।

এই কবিতায় ‘খরা’ শুধু অনাবৃষ্টির প্রতীক নয়, এটি মানুষের মানবিকতার অবক্ষয়েরও প্রতীক। সভ্যতার নামে মানুষ প্রকৃতি ও মানবিকতা দুটোই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত মহাপ্রলয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

৪। অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর:

১) সব নদী-নালা-পুকুর কখন শুকিয়ে যায়?
উত্তর: খরার সময় সব নদী-নালা-পুকুর শুকিয়ে যায়।

২) খরার সময় নদী-নালা ছাড়া আর কী শুকিয়ে যায়?
উত্তর: খরার সময় নদী-নালা ছাড়াও গাছের পাতা শুকিয়ে ঝরে যায়।

৩) কারা জল ভরতে এসেছিল?
উত্তর: খরায় বিপর্যস্ত এলাকার মানুষ জল ভরতে এসেছিল।

৪) জল ভরতে এসে মানুষগুলি কী কী দেখেছে?
উত্তর: জল ভরতে এসে মানুষগুলি পাতাহীন গাছ, শুকনো নদী-নালা ও বালির স্তূপ দেখেছে।

৫) কবির মতে খরাই কি সব শেষ?
উত্তর: না, কবির মতে খরাই সব শেষ নয়।

৬) কবির মতে খরাতে আসলে কী সূচনা হয়?
উত্তর: কবির মতে খরাতে আসলে বিশ্বসংসার ধ্বংসের সূচনা হয়।

৭) ‘খরা’ কবিতাটিতে ‘বালি’ শব্দটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: ‘খরা’ কবিতাটিতে ‘বালি’ শব্দটি সাতবার ব্যবহৃত হয়েছে।

৮) ‘খরা’ কবিতায় কোন কোন জলাশয়ের কথা আছে?
উত্তর: ‘খরা’ কবিতায় নদী, নালা এবং পুকুরের কথা উল্লেখ আছে।

৯) বিশ্বসংসার খালি হয়ে যাচ্ছে কেন?
উত্তর: মানুষের মানবিক মূল্যবোধের অভাবে বিশ্বসংসার খালি হয়ে যাচ্ছে।

৫। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:

১) ‘জল ভরতে এসেছিল যারা’ – কারা কোথায় জল ভরতে এসেছিল?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষের ‘খরা’ কবিতাটিতে খরায় বিপর্যস্ত এলাকার মানুষ নদী, নালা ও পুকুর থেকে জল ভরতে এসেছিল।

২) ‘এইখানে শেষ নয়, এই সবে শুরু’ – কবির মতে শুরু এবং শেষ কোথায়?
উত্তর: কবির মতে, খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় পৃথিবী ধ্বংসের সূচনা মাত্র। আরও এমন বিপর্যয় ঘটতে থাকলে একসময় সমগ্র বিশ্বসংসার ধ্বংস হয়ে যাবে, সেটাই হবে শেষ।

৩) ‘বিশ্বসংসার এরকম খালি’ – কবি এখানে কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি এখানে বলতে চেয়েছেন যে, মানুষ মানবিকতা হারিয়ে ফেলেছে, ফলে বিশ্বসংসার এক নৈতিক শূন্যতার মধ্যে পড়ে গেছে।

৪) ‘খরা’ কবিতাটিতে ‘খরা’ কীসের প্রতীক?
উত্তর: ‘খরা’ শুধু অনাবৃষ্টির প্রতীক নয়, এটি মানুষের মানবিকতার অবক্ষয়েরও প্রতীক। মানুষ তার স্বার্থপরতা ও লোভের কারণে শুধু প্রকৃতিকে নয়, নিজের মনুষ্যত্বকেও ধ্বংস করছে।

শব্দার্থ:

খরা – অনাবৃষ্টি।
বিশ্বসংসার – জগৎ সংসার।
পাতাহারা – যে গাছের পাতা নেই।
ঝলমল – চকচক করা।
খালি – শূন্য।