Chapter 5 -
যুগে যুগে আসাম
পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক প্রশ্নোত্তর (Textbook Questions):
প্রশ্ন ১: ‘প্রাগজ্যোতিষপুর’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: প্রাগজ্যোতিষপুর শব্দের অর্থ “পূর্বের জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চার স্থান”। এটি ছিল প্রাচীন কামরূপ রাজ্যের প্রাচীন নাম।
প্রশ্ন ২: কামরূপ রাজ্যের প্রথম রাজা কে ছিলেন?
উত্তর: কামরূপ রাজ্যের প্রথম রাজা ছিলেন মহিরঙ্গ দানব, পরে নারকাসুর ও তাঁর পুত্র ভগদত্ত উল্লেখযোগ্য শাসক ছিলেন।
প্রশ্ন ৩: ভাস্করবর্মনের অবদান কী?
উত্তর: ভাস্করবর্মন হর্ষবর্ধনের সমকালীন ছিলেন এবং চীনা পর্যটক হিউয়েন সাঙ-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি কামরূপ রাজ্যের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।
প্রশ্ন ৪: কামরূপ নামটি কোথা থেকে এসেছে?
উত্তর: ‘কামরূপ’ নামটি পুরাণ এবং তন্ত্র সাহিত্য থেকে এসেছে, এটি কামদেবের পুনর্জন্মের কাহিনির সঙ্গে সম্পর্কিত।
প্রশ্ন ৫: কামরূপ রাজ্যের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: কামরূপ রাজ্যের রাজধানী ছিল প্রাগজ্যোতিষপুর (বর্তমান গুয়াহাটি) এবং পরে এটি মন্দ্রচিলা বা তেজপুরেও স্থানান্তরিত হয়।
প্রশ্ন ৬: হিউয়েন সাঙ কামরূপ সম্পর্কে কী লিখেছেন?
উত্তর: হিউয়েন সাঙ কামরূপ রাজ্যকে শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ বলেই বর্ণনা করেছেন। তিনি ভাস্করবর্মনের অতিথি হিসেবে কামরূপে অবস্থান করেছিলেন।
প্রশ্ন ৭: পাল বংশের শাসন কবে থেকে শুরু হয়?
উত্তর: প্রাগজ্যোতিষ কামরূপে পাল বংশের শাসন ৯ম শতকের মধ্যভাগ থেকে শুরু হয়।
প্রশ্ন ৮: শংকরদেব কোন যুগে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: শংকরদেব জন্মগ্রহণ করেন ১৫শ শতকে। তিনি ভক্তি আন্দোলনের অন্যতম প্রবর্তক ছিলেন।
প্রশ্ন ৯: আহোম বংশ কত সালে আসামে আগমন করে?
উত্তর: আহোমরা ১২২৮ খ্রিস্টাব্দে সুকাফার নেতৃত্বে আসামে প্রবেশ করে।
প্রশ্ন ১০: সুকাফা কে ছিলেন?
উত্তর: সুকাফা ছিলেন আহোম বংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মঙ্গোলীয় জাতির অন্তর্গত ছিলেন এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় একটি শক্তিশালী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর (Additional Questions):
প্রশ্ন ১১: প্রাচীন কামরূপের আর্থ-সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: কামরূপে কৃষিনির্ভর সমাজ ছিল, জমিদার ও কৃষকদের মধ্যে শ্রেণিবিভাগ ছিল। শিল্প, বাণিজ্য এবং তান্ত্রিক ধর্মচর্চাও চলত।
প্রশ্ন ১২: কামরূপ রাজ্যে কোন কোন ধর্ম প্রচলিত ছিল?
উত্তর: বৈদিক হিন্দুধর্ম, তান্ত্রিক মতবাদ, বৌদ্ধ ধর্ম এবং পরে বৈষ্ণব ধর্ম প্রচলিত ছিল।
প্রশ্ন ১৩: তান্ত্রিক মতবাদের প্রভাব কোথায় বেশি ছিল?
উত্তর: কামাখ্যা মন্দিরসহ কামরূপ অঞ্চলে তান্ত্রিক মতবাদের ব্যাপক প্রভাব ছিল।
প্রশ্ন ১৪: শংকরদেবের বৈষ্ণব ধর্ম কী পরিবর্তন আনে?
উত্তর: শংকরদেবের একেশ্বরবাদী বৈষ্ণব ধর্ম আসামের সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে। তিনি নাট্য, কীর্তন, নামঘর প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন ১৫: আহোম শাসনের বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উত্তর: আহোমরা দক্ষ প্রশাসন, ‘পাইক’ ব্যবস্থা, সুসজ্জিত সেনাবাহিনী, ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। তাঁরা ভূমি সংস্কার ও কূটনৈতিক বিবাহ কৌশলও গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন ১৬: ‘বুরঞ্জি’ কী?
উত্তর: ‘বুরঞ্জি’ হলো আহোম আমলের সরকারিভাবে রচিত ইতিহাস বা ঘটনাপঞ্জি, যা আসামের ইতিহাস লেখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।
প্রশ্ন ১৭: আহোমদের শাসনকাল কতদিন স্থায়ী ছিল?
উত্তর: আহোমদের শাসন প্রায় ৬০০ বছর ধরে চলেছিল (১২২৮-১৮২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত)।
প্রশ্ন ১৮: আহোমদের ধর্মীয় নীতি কেমন ছিল?
উত্তর: আহোমরা শুরুতে তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক ধর্ম পালন করত, পরে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করে এবং তান্ত্রিক ও বৈষ্ণব ধর্মের পৃষ্ঠপোষক হয়।
প্রশ্ন ১৯: মুগলদের সঙ্গে আহোমদের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর: মুগলরা বারবার আসাম আক্রমণ করলেও আহোমরা কৌশলে তাদের পরাস্ত করে। ১৬৭১ সালে 'সারাইঘাট যুদ্ধ' মুগলদের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় ছিল।
প্রশ্ন ২০: যুগে যুগে আসামের ইতিহাস থেকে কী শিক্ষাগ্রহণ করা যায়?
উত্তর: বহুজাতিক সংস্কৃতির সহাবস্থান, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা, ও প্রতিরোধের মনোবল – এসব আমাদের শিখায়।