(a) পর্টার
(b) নোয়াম
(c) চমস্কিন ✔
(d) সোস্যুর ব্লুমফিল্ড
2. শৈলী' শব্দের অপর
(a) অভিনবত্ব
(b) রীতি ✔
(c) নির্মাণ
(d) ঘরূপভেদ
3. ভারতের অভিধান রচনার সূত্রপাত-
(a) স্যার থমাস এলিয়টের লাতিন-ইংরেজি অভিধান থেকে
(b) যাস্কের 'নিরুক্ত' থেকে ✔
(c) অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান থেকে
(d) গারল্যান্ডের অভিধান থেকে
4. রূপতত্ত্বের প্রধান আলোচ্য বিষয়-বিন্যাসকরণ
(a) শব্দধ্বনির গঠন বিশ্লেষণ
(b) শব্দের গঠন প্রণালী বিশ্লেষণ ✔
(c) শব্দার্থ পরিবর্তন ও রীতি বিশ্লেষণ
(d) শব্দের দল
5. বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত হয়েছিল-
(a) বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ✔
(b) উনিশ শতকের শেষের দিকে
(c) সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমে
(d) আঠারো শতকের শেষে
6. 'চিন্তার পোশাক' (The dress of thought) মতবাদটির প্রবক্তা-
(a) স্যামুয়েল ওয়েসলি ✔
(b) নোয়াম চমস্কি
(c) পবিত্র সরকার
(d) ঘফের্দিনী দ্য সোস্যুর
7. বিশেষ থেকে সাধারণের দিকে ভাষাবিজ্ঞানের যে গতি তার পদ্ধতিটি হল-
(a) বিশ্লেষণ
(b) নথিভুক্তকরণ
(c) অবরোহমূলক
(d) আরোহমূলক ✔
8. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষা সম্পর্কে আলোচনার প্রথম ধাপ হল-
(a) যাচাই
(b) তথ্যসংগ্রহ ✔
(c) বিচারবিশ্লেষণ
(d) অনুমান
9. ভাষাবিজ্ঞানের বহুলপ্রচলিত শাখার সংখ্যা-
(a) তিন ✔
(b) চার
(c) পাঁচ
(d) ছয়
10. স্যার উইলিয়াম জোন্স তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেছিলেন-
(a) ১৭৬৮ খ্রি.
(b) ১৭৭৬ খ্রি.
(c) ১৭৮৬ খ্রি. ✔
(d) ১৮৭৬ খ্রি.
11. বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের মতে কোনো ভাষার আলোচনার প্রধান বিষয়ক
(a) তিনটি
(b) চারটি ✔
(c) ছয়টি
(d) সাতটি
12, " মস্তিষ্ক হল ভাষা শেখার ব্যবস্থা”- মতটির প্রবক্তা-
(a) উইলিয়াম জোন্স
(b) নোয়াম চমস্কি ✔
(c) উইলিয়াম কেরি
(d) স্যামুয়েল ওয়েসলি
13. LAD-এর পূর্ণ রূপটি কী?
(a) Language Alert Device
(b) Language Addition Device
(c) Language Acquisition Device ✔
(d) Acquaint Device Language
14. বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের লিখন শৈলীর পার্থক্য নির্ণয় করা যায় কীসের দ্বারা?
(a) বহুরুপতা
(b) মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী ✔
(c) বর্ণনামূলক শৈলী
(d) প্রমুখন
15. রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি-এর সঙ্গে শেষের কবিতা উপন্যাসের শৈলীর তফাত নির্ণয় করা যায় কী দ্বারা?
(a) বর্ণনামূলক শৈলী ✔
(b) বহুরূপতা
(c) মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী
(d) প্রমুখন
16. ভাষার বিভিন্ন উপাদান ও উপাদানগুলির পারস্পরিক সম্পর্কের জালবিস্তারের নাম
(a) বহুরূপতা
(b) লাঙ্গ ✔
(c) পারোল
(d) প্রমুখন
17. লাঙ্ (Langue)-এর নামকরণ করেন-ক
(a) ফেদিনাঁ দ্য সোস্যুর ✔
(b) উইলিয়াম কেরি
(c) নোয়াম চমস্কি
(d) যাস্ক
18. ভাষা ব্যবহারের উপাদান নির্বাচন ও প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে নিজস্ব একটি বিন্যাসে স্পষ্ট ও প্রকট বাচনক্রিয়াই হল-
(a) বহুরুপতা
(b) লাঙ্
(c) পারোল ✔
(d) প্রমুখন
19. 'আলংকারিক নির্বাচন' (Rhetorical Choice)-এর প্রবক্তা-
(a) চমস্কি
(b) যাস্কপ
(c) জোন্স
(d) মিলিচ ✔
20. শৈলী বিচার করার ক্ষেত্রে যে প্রকরণ (Tool)-গুলি ব্যবহূত হয়, তার সংখ্যা-
(a) তিন
(b) চার
(c) পাঁচ ✔
(d) ছয়
Short Question Answer
1. Linguistics-কে বাংলায় 'ভাষাবিজ্ঞান' বলা হয় কেন?
উত্তব়ঃ Linguistics শব্দটির অর্থ হল Science of Language বা ভাষার বিজ্ঞান। এখানে ভাষা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আলোচনা করা হয় বলে একে 'ভাষাবিজ্ঞান' বলে।
2. তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত কে করেছিলেন?
উত্তব়ঃ স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেছিলেন।
3.'থিসরাস' শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?
উত্তব়ঃ 'থিসরাস'-এই ইংরেজি শব্দটি এসেছে গ্রিক thesaurus শব্দ (অর্থ 'ভাণ্ডার') থেকে। 'থিসরাস' শব্দের অর্থ 'সমার্থ শব্দকোশ', অর্থাৎ তা প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দের কোশগ্রন্থ।
৪. 'থিসরাস' কী?
উত্তব়ঃ থিসরাস হল 'সমার্থ শব্দকোশ', অর্থাৎ তা সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দের কোশগ্রন্থ।
5. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষা সম্পর্কে আলোচনার ধাপগুলি কী?
উত্তব়ঃ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষাচর্চার প্রথম ধাপ হল তথ্যসংগ্রহ ও নথিভুক্তকরণ। তারপর সেই প্রাপ্ত তথ্যকে বিশ্লেষণ করে তার যথাযথ বর্ণনা করা হয়।
6. ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের মূল কাজ কী?
উত্তব়ঃ ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান পদ্ধতিতে ভাষাবিশেষের উৎস, ইতিহাস, ক্রমবিবর্তনের রূপরেখা আলোচনা বা বিশ্লেষণ করা হয়।
7. LAD-এর সম্পূর্ণ রূপটি কী?
উত্তব়ঃ LAD-এর সম্পূর্ণ রূপটি হল Language Acquisition Device |
8. LAS-এর সম্পূর্ণ রূপটি কী?
উত্তব়ঃ LAS-এর সম্পূর্ণ রূপটি হল Language Acquisition System |
9. বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়গুলি কী কী?
উত্তব়ঃ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে সমকালে প্রচলিত কোনো ধ্বনি, 'শব্দ, বাক্য, বাক্যাংশ ইত্যাদির স্বরূপ ও গঠনগত দিক বিশ্লেষিত হয়, এগুলির অতীতের রূপ নির্ণয় করা হয় না।
10. সর্বজনীন ব্যাকরণ (Universal Grammar) কী?
উত্তব়ঃ মানুষের মস্তিষ্কে ভাষা শেখার সামর্থ্যটি প্রি-প্রোগ্রামড অবস্থায় থাকে বলে মানব-মস্তিষ্কে থাকা সেই ব্যাকরণকে নোয়াম চমস্কি বলেন সর্বজনীন ব্যাকরণ।
11. স্নায়ুভাষাবিজ্ঞানকে ক-ভাগে ভাগ করা যেতে পারে এবং কী কী?
উত্তব়ঃ স্নায়ুভাষাবিজ্ঞানকে দু-ভাগে ভাগ করা যেতে পারে- (১) ভাষা শেখা ও প্রক্রিয়াকরণ এবং (২) ভাষাগত সমস্যার সংস্কার।
12. 'চিন্তার পোশাক' (The dress of thought) কথাটি কার? কথাটির অর্থ কী?
উত্তব়ঃ ►'চিন্তার পোশাক' কথাটি স্যামুয়েল ওয়েসলির।
► একজন লেখক তাঁর চিন্তাভাবনাকে যেভাবে সাজিয়ে ভাষায় প্রকাশ করেন, সেই ভাষারীতিকেই বলা হয় চিন্তার পোশাক।
13. পাশ্চাত্যে কে প্রথম বর্ণনামূলক ধারার সূত্র প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তব়ঃ সুইস ভাষাবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য সোস্যুর পাশ্চাত্যে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনিই প্রথম বর্ণনামূলক ধারার সূত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
14. প্রথাগতভাবে শৈলীকে ক-ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী?
উত্তব়ঃ প্রথাগতভাবে শৈলীকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়- (১) মূল্যায়নভিত্তিক (Evaluative) শৈলী এবং (২) বর্ণনামূলক (Descriptive) শৈলী।
15. ভাষাবিজ্ঞানের ইতিহাসে স্যার উইলিয়াম জোন্স বিখ্যাত কেন?
উত্তব়ঃ স্যার উইলিয়াম জোনসের হাত ধরেই ভাষার তুলনামূলক চর্চা শুরু হয়। তাঁর মতে সংস্কৃত, প্রাচীন গ্রিক, লাতিন, ফরাসি ইত্যাদি ভাষা আদিতে একই ভাষাবংশ থেকে সৃষ্ট হয়েছিল।
16. মূল্যায়নাভিত্তিক শৈলী কাকে বলে?
উত্তব়ঃ কোনো দোখার শৈলীর বৈশিষ্ট্যসমুহের প্রকাশকেই বলে মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী। এতে দুজন লেখকের লিখনশৈলীর প্রভেদ নিরূপণ করা হয়।
17. বর্ণনামূলক শৈলী কাকে বলে?
উত্তব়ঃ একানো লেখকের কোনো রচনার শৈলীর বিবরণ দেওয়াকেই বলা হয় পর্দামুলক শৈলী। এই জাতীয় শৈলীতে কোনো লেখকের দুটি একজাতীয় জনার শৈলীর প্রভেদ নিরূপণ করা যায়।
18. Dictionaries' শব্দটি অভিধান বোঝাতে প্রথম কে ব্যবহার করেন? •
উত্তব়ঃ ত্ৰয়াদশ শতাব্দীতে জন গারল্যান্ড অভিধান বোঝাতে প্রথম Dictionaries? শব্দটি ব্যবহার করেন।
19. একভাষিক ও দ্বিভাষিক অভিধান কাকে বলে?
উত্তব়ঃ এক ভাষার শব্দকে সেই ভাষাতেই ব্যাখ্যা করা হয় যে অভিধানে, তাকে জাহয় একভাষিক এবং একভাষার শব্দ যখন অন্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়, তখন তাকে বলা হয় দ্বিভাষিক অভিধান।
20. ইতিহাসভিত্তিক অভিধান কাকে বলে?
উত্তব়ঃ একটি শব্দের প্রথম প্রচলন কবে হয়েছিল, প্রথম প্রচলনের সময় তার বদান-উচ্চারণ এবং অর্থ কী ছিল, পরে যখন তার বানান-উচ্চারণ-অর্থের বদল রাঁল এবং শব্দটির বর্তমান রূপ ও অর্থ কী-এইভাবে শব্দের বর্ণনা দেওয়া হয় যে অভিবানে তাই-ই ইতিহাসভিত্তিক অভিধান।
21. সমাজভাষাবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও।
উত্তব়ঃ ভাষা কীভাবে সমাজে কাজ করে এবং সমাজ কীভাবে ভাষার ওপর প্রভাব বিস্তার করে, তা যে শাস্ত্র আলোচনা করে, সেটিই সমাজভাষাবিজ্ঞান।
22. নৃভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?
উত্তব়ঃ একটি ভাবিক সমাজে ভাবার সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক-ওই সমাজের ঐতিহ্য, বিশ্বাস, প্রথা, পারিবারিক সংগঠন প্রভৃতির সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক আলোচনা করা নৃভাষাবিজ্ঞানের কাজ।
23. ভাষাতত্ত্বে মনস্তত্বকে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোন্ দিকের ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করা হয়?
উত্তব়ঃ যে মানসিক বাধ্যবাধকতা থেকে ভাষা ব্যবহৃত হয় সেই মানসিক প্রক্রিয়াসমূহ, ভাষার উৎপাদন, প্রত্যক্ষকরণ ও উপলব্ধি-ক্ষমতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
24. শৈলীবিজ্ঞানী শৈলী বিচারবিশ্লেষণে যেসব প্রকরণ (Tool) ব্যবহার করেন, সেগুলি কী কী?
উত্তব়ঃ শৈলী বিচারবিশ্লেষণে শৈলীবিজ্ঞানী যে প্রকরণগুলি ব্যবহার করেন, সেগুলি হল- (1) প্রমুখন (Foregrounding), (2) বিচ্যুতি (Deviation), (3) সমান্তরালতা (Parallelism), (4) কোড-বদল (Code-switching), (5) বহুস্বরতা বা বহু-ধ্বনিময়তা (Polyphony) |
25. একটি ইতিহাসভিত্তিক অভিধানের নাম লেখো।
উত্তব়ঃ একটি ইতিহাসভিত্তিক অভিধান হল-The Shorter Oxford English Dictionary
26 . বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনাও কোন্ পদ্ধতিতে হয়?
উত্তব়ঃ ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনা হয় আরোহমূলক পদ্ধতিতে, অর্থাৎ বিশেষ (Particular) থেকে সাধারণ (General)-এর দিকে।
28.আরোহমূলক বা আরোহী পদ্ধতি কাকে বলে?
উত্তব়ঃ বিশেষ (Particular) থেকে সাধারণ (General)-এর দিকে এগোনো হয় যে পদ্ধতিতে, তাকে বলে আরোহমূলক পদ্ধতি।
29. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষা সম্পর্কে আলোচনার দ্বিতীয় ধাপে কী করা হয়?
উত্তব়ঃ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষা সম্পর্কে আলোচনার দ্বিতীয় ধাপে ইতিপূর্বে পাওয়া তথ্যকে বিশ্লেষণ (Analysis) করে তার যথাযথ বর্ণনা (Objective Description) দেওয়া হয়।
30. ভাষাবিজ্ঞানের অনুসন্ধানের বিষয় কী?
উত্তব়ঃ মানুষের মুখের ভাষা হল ভাষাবিজ্ঞানের অনুসন্ধানের বিষয়।
31. ভাষাবিজ্ঞানীরা কেন লিখিত ভাষার পরিবর্তে মৌখিক ভাষার ওপর গুরুত্ব দেন?
উত্তব়ঃ লিখিত ভাষা মৌখিক ভাষার তুলনায় নবীনতর ও সংকীর্ণতর এবং মৌখিক ভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি। তাই ভাষাবিজ্ঞানীরা মৌখিক ভাষাকেই গুরুত্ব দেন।
32. স্যার উইলিয়াম জোন্স ভাষার মধ্যে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়ে কোন্ সিদ্ধান্তে এসেছিলেন?
উত্তব়ঃ উইলিয়াম জোন্স সংস্কৃত, গ্রিক, লাতিন, ফরাসি ইত্যাদি ভাষার মধ্যে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, সেগুলি একটি মূল ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
33. তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?
উত্তব়ঃ তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে একাধিক ভাষার সাদৃশ্য আবিষ্কার করে তাদের উৎস-ভাষার বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করা হয়।
34. উনিশ শতকে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের চর্চা কোথায় হয়েছিল?
উত্তব়ঃ উনিশ শতকে সমগ্র ইউরোপ মহাদেশ এবং পরের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের চর্চা হয়েছিল।
35. ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?
উত্তব়ঃ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার যে বিবর্তন ঘটে এবং সেই বিবর্তনের ফলে ভাষার সংগঠনে যে পরিবর্তন দেখা যায়-তা নির্দেশ করাই ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ।
36.রেজিস্টার কী?
উত্তব়ঃ ভাষা-ব্যবহারের সময়কালীন পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী অর্থাৎ উপলক্ষ্য অনুযায়ী উপভাষা বা মৌখিক ভাষার যে পরিবর্তন হয়, তাকেই বলা হয় রেজিস্টার।
37. কোড কাকে বলে?
উত্তব়ঃ কোনো ব্যক্তি ভাষা-ব্যবহারে বিশেষ উপভাষার যে বিশেষ রীতি ব্যবহার করে, তাকেই বলা হয় কোড।
38.কোড-বদল কাকে বলে?
উত্তব়ঃ কোনো ব্যক্তি পরিস্থিতি তথা উপলক্ষ্য অনুযায়ী তার 'কোড' (বিশেষ উপভাষার বিশেষ রীতি)-এর যে পরিবর্তন করে, তাকে বলা হয় কোড-বদল।
39. পরিবর্তমান সমাজভাষাবিজ্ঞানের কাজের ধারা কী?
উত্তব়ঃ কোনো বিশেষ সমাজভাষার উদ্ভব, বিবর্তন এবং বিস্তার বা সংকোচনই পরিবর্তমান সমাজ-ভাষাবিজ্ঞানের কর্মধারা।
40. বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ কী?
উত্তব়ঃ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান কোনো ভাষার অতীত রূপ নিয়ে কোনোপ্রকার আলোচনা না করে তার সমকালীন রূপেরই বিচারবিশ্লেষণ করে।
Long Question Answer
প্রশ্ন.1 ভাষাবিজ্ঞান বলতে কী বোঝ? ভাষাবিজ্ঞানের স্বরূপ আলোচনা করো।
উত্তব়ঃ ভাষার বিজ্ঞানই হল ভাষাবিজ্ঞান।
▶ বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মতো ভাষাবিজ্ঞানও নিত্য প্রগতিশীল এবং নিত্য সক্রিয় একটি বিদ্যা (Discipline)। বিজ্ঞান যেমন প্রতিদিন নতুন তথ্য আবিষ্কার করে এবং সেই নব-আবিষ্কৃত তথ্যের আলোয় পুরোনো তথ্যকে সংশোধন ও পরিমার্জন করে, ভাষাবিজ্ঞানেও তেমনটিই ঘটে। বিজ্ঞানের পদ্ধতি হল আরোহী পদ্ধতি, তা সর্বদাই বিশেষ (Particular) থেকে সাধারণ (General)-এর দিকে ধাবিত হয়। ভাষাবিজ্ঞানও এর ব্যতিক্রম নয়।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ভাষা সম্পর্কিত আলোচনার প্রথম ধাপ হল তথ্যসংগ্রহ (Data Collection) এবং তার নথিভুক্তকরণ (Record)। দ্বিতীয় ধাপে সেই তথ্যের যথাযথ বর্ণনা (Objective Description) ও বিশ্লেষণ (Analysis) করা হয়। ভাষার উপাদানগুলির বারংবার বিশ্লেষণ থেকে যখন দেখা যায় যে, একই রকমের কারণ (Cause) থাকলে বারবার একই রকমের ফল (Effect) আসছে, অথবা একই রকমের পরিস্থিতিতে একই রকমের প্রতিক্রিয়া (Reaction) দেখা যাচ্ছে, তখন পরবর্তী ধাপে সেই ব্যাপারটিকে সাধারণীকৃত (Generalisation) করা হয়। সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌঁছে আমরা ভবিষ্যৎবাণী (Prediction) বা অনুমান (Hypothesis) খাড়া করি। সেই ভবিষ্যৎবাণীকে বা অনুমানকে আরও কিছু দৃষ্টান্তের মাধ্যমে যাচাই (Verify) করতে সক্ষম হলেই সেই সাধারণ সিদ্ধান্ত পরিণত হয় ভাষাতাত্ত্বিক সূত্রে (Linguistic Law)। এভাবেই ভাষাবিজ্ঞানে ভাষা নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত চর্চা করা হয়। সুতরাং, ভাষাবিজ্ঞান বিজ্ঞানই।
প্রশ্ন.2 ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় কী কী? ভাষাবিজ্ঞান কেন মানুষের মৌখিক ভাষাকেই প্রধান্য দেয়?
উত্তরঃ ভাষাবিজ্ঞানে সামগ্রিকভাবে ভাষার গঠন, প্রকৃতি এবং পদ্ধতির বিজ্ঞানসম্মত চর্চা করা হয়। ভাষাবিজ্ঞানে কোনো একটি বা দুটি ভাষা আলোচিত হয় না, ভাষাবিজ্ঞান সাধারণভাবে ভাষার আলোচনা করে। এ ছাড়াও ভাষার সঙ্গে মনুষ্যসমাজ, মানবমন, মানব-স্নায়ুতন্ত্র, নৃতত্ত্ব, কম্পিউটার ও সাহিত্যের ভাষা প্রভৃতির পারস্পরিক সম্পর্ক, অভিধান-সংকলন প্রভৃতিও ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। অর্থাৎ ভাষার বিজ্ঞানসম্মত আলোচনাই শুধু নয়, মানবসমাজ ও মানবসভ্যতায় ভাষার কার্যকলাপও ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়।
▶ সাধারণভাবে মানুষ কথ্য ভাষার থেকে লিখিত ভাষাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করলেও ভাষাবিজ্ঞান মূলত কথ্য ভাষাকেই প্রাধান্য দেয়। প্রথমত, লক্ষ লক্ষ বছর ধরে মানুষ কথা বলে চললেও খুব বেশি হলে ছয়-সাত হাজার বছর আগে মানুষ লিখতে শুরু করেছে। সুতরাং, কথ্য ভাষা আদি এবং প্রাচীন এবং বালেখ্য ভাষা নবীনতর। দ্বিতীয়ত, মুখের ভাষাকে যথাযথভাবে লেখার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করা যায় না, তাতে অনেক কৃত্রিমতাও থাকে। তৃতীয়ত, সমগ্র পৃথিবীতে যত ভাষা প্রচলিত আছে, তার অধিকাংশের কোনো লিখিত রূপ অর্থাৎ লিপি নেই। মাত্র কয়েকটি উন্নত ভাষারই লেখ্য রূপ আছে। চতুর্থত, পৃথিবীর যেসব ভাষার লিখিত রূপ আছে, সেইসব ভাষাভাষীদেরও একটা বড়ো অংশই লিখতে-
পড়তে জানে না। এসব কারণে মুখের ভাষাকেই ভাষাবিজ্ঞানীরা প্রকৃত ভাষা বলে মানেন।
প্রশ্ন.3 ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার বহুলপ্রচলিত শাখাগুলির নাম উল্লেখ করে যে-কোনো দুটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
অথবা, ঐতিহাসিক ও বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্বন্ধে যা জান সংক্ষেপে লেখো।
উত্তব়ঃ ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার বহুলপ্রচলিত শাখা হল তিনটি-তুলনামুলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানেব় সংক্ষিপ্ত আলোচনাই আমব়া কব়ব
▶ প্রতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান: ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় কোনো ভাষার প্রচীনতম রূপ থেকে আধুনিক রূপ পর্যন্ত ধারাবাহিক বিবর্তনের রূপরোয়া আলোচিত হয়, তাকে বলে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান (Historical Linguistics)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার যে বিবর্তন হয়, সেই বিবর্তনের ফলে ভাষার সংগঠনে যে পরিবর্তন দেখা যায়, তা নির্দেশ করাই ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। অর্থাৎ কোনো ভাষার ধারাবাহিক রূপান্তরের বিস্তৃত আলোচনা করাই এই ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। ভাষার ধ্বনিপরিবর্তনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা তাই এই ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য।
▶ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান: একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো ভাষার বৈশিষ্টাবলির যে চর্চা করা হয়, তাকেই বলে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Linguistics)। যে ভাষার কোনো অতীত নিদর্শন নেই, অথবা, যে ভাষা এখনও অবধি মৌখিক ভাষা-সেই ভাষার আলোচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান অনুযায়ী ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় চারটি ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং শব্দার্থতত্ত্ব। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান তাই ভাষার সাংগঠনিক আলোচনাকেই প্রাধান্য দেয়।
প্রশ্ন.4 তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান সম্বন্ধে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করো।
উত্তরঃ সমগোত্রজ একাধিক ভাষার গঠনগত রূপের (ধ্বনিগত, রূপগত এবং এক্যগঠনগত) তুলনামূলক বিচারবিশ্লেষণের সাহায্যে তাদের পূর্বতন রূপকে (অর্থাৎ উৎস ভাষাকে) পুনর্গঠিত করে যে ভাষাবিজ্ঞান, তাই-ই হল তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Comparative Linguistics) |
স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত করেছিলেন। জোন্স সংস্কৃত, গ্রিক, লাতিন, ফারসি-প্রভৃতি ভাষার মধ্যে প্রচুর মিল খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, এই পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ভাষাগুলি একটি আদিম ভাষা থেকে উদ্ভূত। উনিশ শতকের প্রথমদিকে কয়েকজন ইউরোপীয় ভাষাবিজ্ঞানী প্রমাণ করেন যে, জোন্স অভ্রান্ত। তাঁরা বলেন যে, সংস্কৃত, গ্রিক, লাতিন প্রভৃতি ভাষার মূল ভাষাটি থাকলেও তার কোনো নমুনা নেই। ওইসব ভাষার তুলনামূলক চর্চার মাধ্যমে সেই উৎস-ভাষার একটি কাঠামো তৈরি করা যায়। তাঁরা সেই ভাষাটির নাম দেন ইন্দো-ইউরোপীয়ান ভাষা। সমগ্র উনিশ শতক জুড়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান চর্চিত হয়।
প্ৰশ্ন.6 ভাষাবিজ্ঞানের শাখার মধ্যে বহুলপ্রচলিত শাখা কয়টি ও কী কী? সেগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তব়ঃ ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনার বহুলপ্রচলিত শাখা হল তিনটি-তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান।
▶ তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান: সমগোত্রজ একাধিক ভাষার গঠনগত রূপের (ধ্বনিগত, রূপগত ও বাক্যগঠনগত) তুলনামূলক বিচারবিশ্লেষণের সাহায্যে তাদের পূর্বতন বা আদি রূপকে (অর্থাৎ উৎস-ভাষাকে) পুনর্গঠিত করে যে ভাষাবিজ্ঞান, তাই-ই হল তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Comparative Linguistics )
ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান: ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় কোনো ভাষার প্রাচীনতম রূপ থেকে আধুনিক রূপ পর্যন্ত ধারাবাহিক বিবর্তনের রূপরেখা আলোচিত হয়, তাকে বলে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান (Historical Linguistics) | সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার যে বিবর্তন হয়, সেই বিবর্তনের ফলে ভাষার সংগঠনে যে পরিবর্তন দেখা যায়, তা নির্দেশ করাই ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। অর্থাৎ কোনো ভাষার ধারাবাহিক রূপান্তরের বিস্তৃত আলোচনা করাই এই ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। ভাষার ধ্বনিপরিবর্তনের কারণ ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা তাই এই ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য।
বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান: একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো ভাষার বৈশিষ্ট্যাবলির যে চর্চা করা হয়, তাকেই বলে বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Linguistics)। যে ভাষার কোনো অতীত নিদর্শন নেই, অথবা, যে ভাষা এখনও অবধি মৌখিক ভাষা-সেই ভাষার আলোচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান অনুযায়ী ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় চারটি-ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব এবং শব্দার্থতত্ত্ব। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান তাই ভাষার সাংগঠনিক আলোচনাকেই প্রাধান্য দেয়।
প্রশ্ন.7 ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় তিনটি বহুলপ্রচলিত শাখা কী কী? যে-কোনো একটি শাখা সম্বন্ধে আলোচনা করো।
অথবা, ভাষা কাকে বলে? ভাষাবিজ্ঞানের বহুলপ্রচলিত তিনটি শাখার নাম উল্লেখ করো। যে-কোনো একটি শাখা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তব়ঃ মনের ভাবপ্রকাশের জন্য কোনো বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত বাধ্বনি নিষ্পন্ন শব্দসমষ্টিকে বলে ভাষা।
▶ ভাষাবিজ্ঞানের বহুলপ্রচলিত তিনটি শাখার নাম হল-তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান এবং বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান।
▶ বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান: একটি নির্দিষ্ট সময়কালের কোনো ভাষার বৈশিষ্ট্যাবলির চর্চা করা হয় যে ভাষাবিজ্ঞানে, তাকে বলা হয় বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Linguistics)। এই ভাষাবিজ্ঞান কোনো এক বা একাধিক ভাষার বা সামগ্রিকভাবে ভাষার অতীত রূপ বা ইতিহাস নিয়ে কোনো আলোচনা করে না। বরং সমকালীন কোনো প্রচলিত ভাষার গঠন ও বৈশিষ্ট্যের বিচারবিশ্লেষণ করে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের সূত্রপাত হয় ইউরোপ ও ∎- আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে, বিশ শতকের প্রথমদিকে। যেসব ভাষার লিপি নেই অথবা যেসব ভাষা লিপিবদ্ধ হয়নি-সেইসব ভাষার আলোচনার জন্য বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। এই শাখার মতানুযায়ী ভাষাবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় চারটি (১) ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব, (২) রূপতত্ত্ব, (৩) বাক্যতত্ত্ব এবং (৪) শব্দার্থতত্ত্ব। বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে কীভাবে বাধ্বনি উচ্চারিত হয়, তা আলোচনা করে ধ্বনিবিজ্ঞান। ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনিসমূহের বিচারবিশ্লেষণ করা হয় ধ্বনিতত্ত্বে। রূপ (Morph) এবং পদের গঠন ও কার্যাবলি আলোচনা করে রূপতত্ত্ব। বাক্যের সার্বিক আলোচনা ও বিচারবিশ্লেষণ করা হয় বাক্যতত্ত্বে। শব্দের অর্থ পর্যালোচনা করা হয় শব্দার্থতত্ত্বে। বর্ণনামূলক ভাষাবিজ্ঞান ভাষার গঠনগত আলোচনাকে প্রাধান্য দেয়।
প্রশ্ন.8 ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা এবং তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক আলোচনা করো।
উত্তব়ঃ ভাষাবিজ্ঞানের মূল আলোচ্য বিষয় হল মানুষের ভাষা এবং ভাষার সঙ্গে মানবজীবনের বিভিন্ন দিকের পারস্পরিক সম্পর্ক। তাই ভাষাবিজ্ঞানের প্রধান শাখা দুটি-(১) প্রধান ভাষাবিজ্ঞান এবং (২) ফলিত ভাষাবিজ্ঞান।
প্রধান ভাষাবিজ্ঞানে ভাষার কেন্দ্রীয় চরিত্র, বিন্যাস এবং ভাষার গঠনপ্রণালী আলোচিত হয়। এটি (১) ধ্বনিবিজ্ঞান, (২) ধ্বনিতত্ত্ব, (৩) রূপতত্ত্ব, (৪) বাক্যতত্ত্ব এবং (৫) শব্দার্থতত্ত্ব-এই পাঁচ ভাগে বিভক্ত। বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে কীভাবে বাধ্বনি উচ্চারিত হয়, তা আলোচিত হয় ধ্বনিবিজ্ঞানে। ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনিসমূহের বিচারবিশ্লেষণ করা হয় ধ্বনিতত্ত্বে। রূপ (Morph) এবং পদের গঠন ও কার্যাবলি আলোচিত হয় রূপতত্ত্বে। বাক্যের সামগ্রিক আলোচনা ও বিচারবিশ্লেষণ করা হয় বাক্যতত্ত্বে। আর, শব্দার্থতত্ত্বে করা হয় শব্দের অর্থের পর্যালোচনা।
ভাষার সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক এবং ভাষার সঙ্গে অন্যান্য বিদ্যার সম্পর্ক বিচারবিশ্লেষণ করা হয় ফলিত ভাষাবিজ্ঞানে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাষার অবদান ও প্রয়োগ আলোচিত হয় এখানে। এই ভাষাবিজ্ঞান (১) সমাজভাষাবিজ্ঞান, (২) মনোভাষাবিজ্ঞান, (৩) স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান, (৪) নৃভাষাবিজ্ঞান, (৫) শৈলী-বিজ্ঞান এবং (৬) অভিধান বিজ্ঞান-এই ৬টি শ্রেণিতে বিভক্ত। সমাজের সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক হল সমাজভাষাবিজ্ঞান। মানবমনের সঙ্গে ভাষার সম্পর্ক হল মনোভাষাবিজ্ঞান। মানব-মস্তিষ্কের গঠন ও বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ভাষার সম্পর্কই হল স্নায়ুভাষাবিজ্ঞান। নৃতত্ত্বের সঙ্গে ভাষার সর্ম্পক হল নৃভাষাবিজ্ঞান। শৈলীবিজ্ঞানে সাহিত্যিক ভাষার নান্দনিক দিকটি আলোচিত হয়। অভিধান রচনা ও সংকলনের বিজ্ঞানসম্মত চর্চা করা হয় অভিধান বিজ্ঞানে।
প্রশ্ন.9 বর্ণনাত্মক সমাজভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করো। অথবা, বর্ণনাত্মক সমাজভাষাবিজ্ঞান বলতে কী বোঝ?
উত্তব়ঃ সমাজভাষাবিজ্ঞানের অন্যতম বিভাগ হল বর্ণনাত্মক সমাজ-ভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Sociolinguistics)। বর্ণনাত্মক সমাজ-ভাষাবিজ্ঞান ভাষার বৈচিত্র্যের বর্ণনা করে। এই ভাষাবিজ্ঞান বলে যে, বক্তা (Sender), শ্রোতা (Receiver) এবং উপলক্ষ্য (Setting)- এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে সমাজভাষার রূপ। এই তিনটিই হল ভাষারূপের নিয়ামক উপাদান (Conditioning Factor)। প্রথমেই আমাদের জানতে হয় বক্তার সামাজিক পরিচয়-তাঁর বয়স, লিঙ্গগত পরিচয়, শিক্ষাগত পরিচয়, পেশাগত তথা শ্রেণিগত পরিচয়, সম্প্রদায়গত পরিচয় ইত্যাদি। বক্তার মতো শ্রোতারও সামাজিক পরিচয় জানা জরুরি। কারণ, শ্রোতা অনুযায়ী বক্তা তার ভাষার পরিবর্তন ঘটান। আমরা বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলি, সমবয়স্ক বা বয়ঃকনিষ্ঠদের সঙ্গে সে ভাষায় নয়। বাংলাতে তো সম্ভ্রমার্থক, সাধারণ এবং তুচ্ছার্থক (আপনি, তুমি, তুই) ভেদ আছে। সুতরাং, শ্রোতার সামাজিক পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ। আর পরিস্থিতি ও বক্তার উদ্দেশ্য অনুযায়ী তার ভাষা যে পালটে যায়, (Ur তা আলোচিত হয় উপলক্ষ্য-এর ওপর। সভাসমিতিতে, শ্রেণিকক্ষে, আদালতে ঝগড়ায়-প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভাষার ধরন আলাদা। বাঙালি ছাত্ররা স্কুলে মান্য- বাংলা বললেও বাড়িতে কিন্তু কোনো-এক উপভাষাতেই কথা বলে। উপলক্ষ্য অনুযায়ী ভাষা বা উপভাষার যে বদল ঘটে, তাকে সমাজভাষাবিজ্ঞানীরা বলেন রেজিস্টার (Register) |
প্রশ্ন.10 সমাজভাষাবিজ্ঞান বলতে কী বোঝ? সমাজভাষাবিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তব়ঃ একই ভাষাসম্প্রদায়ের অন্তর্গত মানুষের মধ্যে সামাজিক অবস্থানভেদে ভাষার যে বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়, তাই-ই সমাজভাষা। সমাজ, ভাষাবিজ্ঞান সেই সমাজভাষারই বিজ্ঞান।
▶ সমাজভাষাবিজ্ঞানের মূল ভাগ তিনটি (১) বর্ণনাত্মক সমাজভাষাবিজ্ঞান (Descriptive Sociolinguistics), (২) পরিবর্তমান বা সচল সমাজভাষাবিজ্ঞান (Dynamic Socio linguistics) ও (৩) প্রয়োগমূলক সমাজভাষাবিজ্ঞান (Applied Sociolinguistics) | বর্ণনাত্মক সমাজভাষাবিজ্ঞান ভাষার বৈচিত্র্যের বর্ণনা করে। এই ভাষাবিজ্ঞান বলে যে, বক্তা (Sender), শ্রোতা (Receiver) এবং উপলক্ষ্য (অর্থাৎ পরিস্থিতি বলেস্তার উদ্দেশ্য) (Setting)-এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে সমাজভাষার রূপ।
পরিবর্তমান সমাজভাষাবিজ্ঞানে কোনো বিশেষ সমাজভাষার উদ্ভব, বিবর্তন এবং বিস্তার বা সংকোচনের ধারাটি আলোচিত হয়। দ্বিভাষিকতা (Bilingualism), দ্বিবাচন (Triglossia), মিশ্রভাষা (Mixed Language) (যেমন পিজিন ও ক্রেওল)-ইত্যাদি বিষয় এই ভাষাবিজ্ঞানের অন্তর্গত। প্রয়োগমূলক সমাজভাষাবিজ্ঞানে সামাজিক কল্যাণের লক্ষ্যে সমাজভাষাকে ব্যবহার করা হয়। এখানে মাতৃভাষা ও দ্বিতীয় ভাষা শেখানোর পদ্ধতি, অনুবাদ-নীতি নির্ধারণ, লিপি-প্রণালীর উদ্ভাবন, পরিমার্জনা ও সংশোধন, বানান-সংস্কার, বহুভাষী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা ও সংযোগকারী ভাষা নির্ধারণ-প্রভৃতি আলোচিত হয়।
EDITING BY-- Liza Mahanta