Chapter 18 -
ধর্মনিরপেক্ষতা
পাঠ্যপুস্তক ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর (Textbook Question Answer)
প্রশ্ন ১: ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ধর্মনিরপেক্ষতা একটি রাষ্ট্রীয় নীতি, যার মাধ্যমে রাষ্ট্র কোন ধর্মের পক্ষপাত করে না এবং সব ধর্মের মানুষকে সমান মর্যাদা ও অধিকার দেয়। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা রাখে এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিষ্ণুতা বজায় রাখে।
প্রশ্ন ২: ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পেছনে প্রধান কারণ কী?
উত্তর: ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতির প্রধান কারণ হল –
-
সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা,
-
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোন ধর্মের প্রতি পক্ষপাত না করা,
-
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা,
-
ধর্ম ও রাজনীতির পৃথকীকরণ।
প্রশ্ন ৩: ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন দিকগুলি প্রতিফলিত হয়েছে?
উত্তর: ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতিফলন দেখা যায় –
-
প্রস্তাবনায় “ধর্মনিরপেক্ষ” শব্দে,
-
মৌলিক অধিকারগুলিতে (বিশেষত ধর্মীয় স্বাধীনতা),
-
অনুচ্ছেদ ২৫-২৮ এর মাধ্যমে,
-
রাষ্ট্র ও ধর্মের পৃথকীকরণে।
প্রশ্ন ৪: ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
উত্তর:
-
রাষ্ট্র কোনও নির্দিষ্ট ধর্মকে সমর্থন করে না।
-
সকল নাগরিককে সমান ধর্মীয় অধিকার প্রদান করা হয়।
-
ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয় না।
-
ধর্মীয় সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পরিবেশ বজায় রাখা হয়।
প্রশ্ন ৫: ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্ব কী?
উত্তর: ধর্মনিরপেক্ষতা সামাজিক ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করে এবং বহুধর্মীয় সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা গড়ে তোলে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর (Additional Question Answer)
প্রশ্ন ১: ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার মধ্যে কী পার্থক্য?
উত্তর: ধর্মনিরপেক্ষতা হল রাষ্ট্রের নীতি, যেখানে সব ধর্ম সমভাবে বিবেচিত হয়। আর ধর্মীয় সহিষ্ণুতা হল ব্যক্তি বা সমাজের মানসিকতা, যেখানে অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা দেখানো হয়।
প্রশ্ন ২: ধর্মনিরপেক্ষতার বিপরীত কী?
উত্তর: ধর্মনিরপেক্ষতার বিপরীত হল ধর্মীয় রাষ্ট্র বা সাম্প্রদায়িকতা। সেখানে রাষ্ট্র একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে সমর্থন করে এবং অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি বৈষম্য করে।
প্রশ্ন ৩: ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে কিভাবে চ্যালেঞ্জ করা হয়?
উত্তর: ধর্মীয় হিংসা, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন, এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বৈষম্যমূলক আচরণ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতাকে চ্যালেঞ্জ করে।
প্রশ্ন ৪: একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের জন্য কী কী শর্ত পূরণ হওয়া জরুরি?
উত্তর:
-
সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা,
-
ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার,
-
বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা,
-
রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ধর্মনিরপেক্ষ আচরণ,
-
শিক্ষায় ধর্মীয় সহিষ্ণুতার শিক্ষা।
প্রশ্ন ৫: “ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের আত্মা” – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভারত একটি বহুধর্মীয় দেশ। এখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ সহ নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করে। এই বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ধর্মনিরপেক্ষতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই একে ভারতের আত্মা বলা হয়।